Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    অগ্নিনিরয় – কৌশিক মজুমদার

    কৌশিক মজুমদার এক পাতা গল্প336 Mins Read0

    পঞ্চম পরিচ্ছেদ—ঘটনা-চক্র

    অফিসার মুখার্জির কথা শুনে এক লহমায় বিশ্বাস করতে পারিনি। বলে কী লোকটা? এই সাতে নেই, পাঁচে নেই, আধবুড়ো, খোঁড়া নিশীথ দত্ত নাকি এত নৃশংস খুনটা করেছে। ধরলাম করেছে। তাহলে কাপড়ের দোকানের বিশ্বজিৎকে খুন করল কে? আমি নিশ্চিত, সেদিন নিশীথ দত্ত বাড়িতেই ছিলেন। কোথাও একটা কিছু গণ্ডগোল হচ্ছে। এদিকে নিশীথ দত্তের মুখের দিকে চেয়ে আরও অবাক হয়ে গেলাম। বিস্ময়, আতঙ্ক, বেদনা- কোনও কিছুর চিহ্নমাত্র নেই তাঁর মুখে, বরং অদ্ভুত এক প্রশান্তি ছড়িয়ে আছে।

    নিশীথ দত্ত হাসলেন। প্রথমে মুচকি হাসি। তারপর হাসির দমক বাড়তে বাড়তে তাঁর গোটা দেহকে গ্রাস করে ফেলল। এক অদ্ভুত উন্মাদ হাসির নেশায় ওই পিছমোড়া অবস্থাতেই দুলে দুলে হেসে চলেছেন তিনি। হাসতে হাসতে দুচোখ দিয়ে জল বেরোচ্ছে। তবু হাসি থামছে না। আমরা দুজন স্থির তাকিয়ে তাঁর দিকে। গোটা ঘরে সেই হাসির আওয়াজ ছাড়া অন্য কোনও আওয়াজ নেই। হাসির শেষে যেমন হয়, কাশতে শুরু করলেন নিশীথ দত্ত। আমি অফিসারের অনুমতির তোয়াক্কা না করেই দৌড়ে গিয়ে খুলে দিলাম তাঁর হাতের বাঁধন। টেবিল থেকে নিয়ে এগিয়ে দিলাম বোতল ভরা জল। দুই এক ঢোঁক জল খেয়ে একটু শান্ত হলেন ভদ্রলোক।

    .

    অমিতাভ মুখার্জি অস্বস্তিতে। তিনি ঠিক এই রি-অ্যাকশান আশা করেননি। তিনিও দেখলাম কিচ্ছুটি না বলে অপেক্ষা করছেন, কখন নিশীথবাবু স্বাভাবিক হন। আরও মিনিট দু-এক পর চেয়ারে বসেই হাত পা ঝেড়ে নিশীথ দত্ত বললেন, “দেবাশিসকে খুন করব আমি? এও সম্ভব! আপনার বিন্দুমাত্র আইডিয়া আছে দেবাশিস কে ছিল? কী ছিল?”

    “আইডিয়া একেবারে নেই তা না। অবশ্যই আছে কিছু। কিন্তু আপনার বিরুদ্ধে পাথুরে প্রমাণ আছে। আপনি ছাড়া অন্য কেউ দেবাশিস গুহকে খুন করতেই পারেন না।”

    “তাই বুঝি? কী সেই প্রমাণ?”

    অফিসার এবার সোজা আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, “তুমি তো এই বাড়িতে বহুকাল আছ। এঁর কাজকম্মো নিয়ে জানতে না? দেবাশিস গুহ কোনও দিন এঁর কথা বলেননি?”

    নিজেকে ভয়ানক বোকা বলে মনে হচ্ছিল। এমনকি এই ঝামেলা চুকেবুকে গেলে ক্লাইভ স্ট্রিটের অফিসে পার্মানেন্ট তালা মেরে চেনা অচেনা সব আইটি কোম্পানিতে সিভি জমা দেব, সেটাও ঠিক করে ফেললাম মনে মনে। যতবারই মনে হয় সমাধানের সামনে এসেছি, গোটা ব্যাপারস্যাপার কেমন জট পাকিয়ে যায়। চেনা মানুষগুলোকেও তেমনভাবে চেনা যায় না। এই যেমন এখন হচ্ছে।

    “তুমি কিছু জানতে না তুর্বসু?” এবার ভদ্রলোক সরাসরি আমায় প্রশ্ন করলেন।

    আমি থতোমতো। আমি দেবাশিসদাকে চিনতাম। মানে ভাবতাম যে চিনি। কিন্তু তাঁর খুনের পরে যে সমস্ত অদ্ভুত বিষয় উঠে আসছে, তাতে চিনতাম না বলাই বরং সমীচীন হবে।

    পাশাপাশি মাথা নাড়লাম, “কিচ্ছু জানতাম না আমি।”

    এবার নিশীথ দত্তের মুখে অদ্ভুত এক বেদনা ফুটে উঠল। মাত্র কয়েক মুহূর্তের ব্যবধানে একটা মানুষের মধ্যে এতটা পরিবর্তন আসতে পারে, না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। খেয়াল করে দেখলাম তাঁর দুচোখে জল। আমার দিকে চেয়ে বললেন, “তোমার বাবা বিরূপাক্ষকে আমি কথা দিয়েছিলাম, এই জীবনে তোমায় কিচ্ছু জানাব না। যে অভিশাপ আমরা বয়ে নিয়ে চলেছি এতকাল ধরে, তা আমাদের জেনারেশনের সঙ্গেই শেষ হবে, এটাই ঠিক ছিল। হয়তো তা হতও। কিন্তু দেবাশিস… ও কারও কথা শুনলে তো!”

    অফিসার মুখার্জি এবার একটু বিরক্ত হচ্ছিলেন। বেশ কড়াভাবেই বললেন, “এতক্ষণ তো মুখে কুলুপ এঁটে বসেছিলেন। এবার যা বলার তাড়াতাড়ি বলুন। তারপর থানায় যেতে হবে। আপনার বিরুদ্ধে প্রমাণ আছে। আমি ফোর্সকে ফোন করেছি। ফোর্স আসছে। এই ফাঁকে নিজের সপক্ষে সত্যিমিথ্যে যা বলার বলে ফেলুন।”

    “নিজের সপক্ষে আমার কিচ্ছু বলার নেই। প্রমাণ যখন পেয়েছেন, তদন্ত করবেন। সে আপনাদের কাজ। তদন্তে আমি সহায়তাও করব। কিন্তু কিছু জিনিস বলে যাই, যেটা তুর্বসুর জানা উচিত। হয়তো আগেই বলতাম, কিন্তু বিরূপাক্ষের মুখে চেয়ে…”

    “কী কথা?” আমিই প্রশ্ন করলাম।

    “তুমি তো জানো, তোমার প্রপিতামহ তারিণীচরণ রায় ছিলেন কলকাতার প্রথম বাঙালি প্রাইভেট ডিটেকটিভ। তাঁর অফিসেই এখন তুমি বসো। আজ থেকে প্রায় একশো বছর আগে কলকাতার বুকে ভয়ানক কোনও অপরাধের ষড়যন্ত্র হয়েছিল। অপরাধের ধরন ঠিক কী, তা একমাত্র তোমার পরিবার ছাড়া কেউ জানে না। তোমার প্রপিতামহ তাঁর ডায়রির পাতায় সে খবর বিস্তারিত লিখে গেছিলেন। সঙ্গে এটাও লিখেছিলেন, তোমাদের পরিবার বাদে কেউ যেন সেই ঘটনা না জানতে পারে।”

    “এই গোপনীয়তার কারণ?”

    “বিস্তারিত আমাকে বিরূপাক্ষও জানায়নি। তবে এটুকু বলেছিল, সব ইতিহাসে একটা ভূত থাকে। সেই ভূত কখনও জেগে থাকে, কখনও ঘুমায়। এখন সে ভূত ঘুমাচ্ছে। ভুল লোকের হাতে পড়লে ভূত জাগতে পারে। আর তাহলেই সর্বনাশ হবে।”

    “আপনার সঙ্গে আমাদের পরিবারের সম্পর্ক কীভাবে?”

    “তোমার প্রপিতামহ ছিলেন কলকাতার প্রথম ম্যাসনিক লজের সদস্য। সত্যি বলতে সেসময় তিনি বাদে অন্য কোনও হিন্দু এই লজের সদস্য ছিল না। বাকি সবাই সাহেব, আধা সাহেব বা দেশীয় খ্রিস্টান। সেই থেকে তোমাদের পরিবারের সঙ্গে ম্যাসনদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ। এর অন্য একটা কারণও আছে। তোমাদের সেই পারিবারিক গোপন তথ্য। যেটা প্রকাশ পেলে ম্যাসনিক ব্রাদারহুড ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।”

    “সেটা কী?”

    “কী করে বলব? গোপন জিনিসের মজাটাই এখানে। সেটা গোপন। ব্রাদারহুডে এটা আমরা সবাই মেন্টেন করি। করতাম। যতদিন না আমাদের দেবাশিস যুক্ত হল।”

    “দেবাশিসদার সঙ্গে আপনাদের পরিচয়?”

    “ম্যাসনিক ব্রাদারদের নানারকম নিয়মকানুনের বেড়াজাল থাকে। সব কাজ ইচ্ছেমতো করা যায় না। তাই আমরা একটা এনজিও খুলেছিলাম। নাম নীবার I ম্যাসনিক ব্রাদাররাই সেটা চালাতাম। সদস্য অনেকেই ছিল। সবাই সব কিছু জানত না। সবাই ব্রাদারহুডের ছিলও না। একদিন সেখানেই দেবাশিস বলল হিজড়া আর বেশ্যাদের নিয়ে কাজ করতে চায়। উৎসাহী ছেলে। পড়াশুনো করা। আমরাও রাজি হলাম। তখন বুঝিনি….” বলে একটু থামলেন নিশীথ দত্ত।

    আমরা কেউ কিছু বলছিলাম না। অপেক্ষায় ছিলাম উনি কী বলেন।

    “দেবাশিস ছুঁচ হয়ে ঢুকেছিল। কিছুদিন পরেই বোঝা গেল ওর হাত অনেক দূর অবধি ছড়ানো। লন্ডন, পারি, এডিনবরা, এমনকি আমাদের এলাহাবাদের ফ্রিম্যাসন হাউসদের সঙ্গে ও নিয়মিত যোগাযোগ রাখে। প্রথমে আমরা খুশিই হয়েছিলাম। এমন একটা উদ্যোগী ছেলেই তো চাই! কিন্তু যতদিন যেতে লাগল, বুঝলাম ওর আসল উদ্দেশ্য অন্য কিছু।”

    “সেটা কী?”

    “ও কিছু একটার সন্ধানে ছিল। খুব সম্ভবত সেই গোপন তথ্য, যা তোমাদের পরিবারে লুকোনো আছে। তোমাদের বাড়িটা এখন চুঁচুড়ার যেখানে, সেখানে আজ থেকে চারশো বছর আগে কী ছিল জানো?”

    মাথা নাড়লাম। জানি না।

    “হুগলি জেলার প্রথম ফ্রিম্যাসন লজ। ডাচদের স্থাপন করা। নাম ছিল কনকর্ডিয়া। পরে ডাচরা চলে যায়। লজ উঠে যায়। তারিণীর পাঠানো টাকায় এক ওলন্দাজ সাহেবের থেকে বাড়িটা কিনে নেন তাঁর বাবা। এমনিতে হয়তো হত না, কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট রডনি সাহেব খুব সাহায্য করেছিলেন। এ সবই তোমার বাবার থেকে শোনা।”

    আমিও শুনেছি। শুধু কনকর্ডিয়া নামের মানেটা বুঝতে পারিনি

    “পরে তারিণী সপরিবারে চুঁচুড়া গিয়ে ওঠে। তারপর বহুকাল তোমাদের খোঁজ কেউ জানত না। আমি নীবার তৈরির সময় পুরোনো দলিল দস্তাবেজ ঘেঁটে তোমাদের ঠিকানা উদ্ধার করি। খবর পাই তোমার জেঠু ওই বাড়িতেই থাকেন। তিনিই তোমার বাবার কথা আমায় জানান। বলেন পারিবারিক ইতিহাসে তাঁর কোনও আগ্রহ নেই। ওসব যা দেখার তোমার বাবা দেখেন। তখন তোমরা অন্য বাড়িতে ভাড়া থাকতে। জানি না তোমার মনে আছে কি না।”

    “আছে। আহিরীটোলায়। গঙ্গার ধারে।”

    “এগজ্যাক্টলি। তাহলে এটাও নিশ্চয়ই মনে আছে সেই বাড়ি কেন ছাড়তে হল?”

    “ওই এলাকা ভালো ছিল না। একদিন অফিসফেরতা লোডশেডিং-এ একদল গুন্ডা বাবার উপরে চড়াও হয়। বাবার মানিব্যাগ ছিনতাই করে।”

    “আচ্ছা!” সামান্য হাসি ফুটল নিশীথ বাবুর মুখে। “তোমাদের তাই বলেছিল? সত্যিটা অন্য। চুঁচুড়া থেকে কলকাতা আসার সময় বিরূপাক্ষ দুটো ডায়রি গোপনে সঙ্গে করে নিয়ে আসে।”

    “তারিণীর ডায়রি?”

    “একদমই তাই। লুকিয়ে রেখে দেয় আমাদের নীবারের অফিসে। নিজের পার্সোনাল লকারে। ভেবেছিল সেফ থাকবে। ভুল ভেবেছিল। একদিন রাতে সেই লকার ভাঙার চেষ্টা হল। চোর প্রায় সফল হয়েই গেছিল, শেষ মুহূর্তে দারোয়ান টের পাওয়ায় চোর পালায়। শুধু বিরূপাক্ষই নয়, আমিও নিশ্চিত, চোর জানত এই লকারে যা আছে তার গুরুত্ব কী। লকারে ওই দুটো ভাষার ছাড়া আর কিচ্ছু ছিল না।”

    “তারপর?” এবার প্রশ্ন করলেন অফিসার মুখার্জি। তিনি যে এই ঘরে আছেন, তা ভুলেই গেছিলাম।

    “আমিই বিরূপাক্ষকে বলি ডায়রি সরিয়ে ফেলতে। পুরোনো বাড়ি ছেড়ে আমার বাড়িতে উঠে আসতে। বিরূপাক্ষ তাই করে। কিন্তু সেদিন রাতেই ওর উপরে হামলা হয়। যারা হামলা করেছিল তারা ভেবেছিল ডায়রি ওর কাছে আছে।”

    “কিন্তু ছিল না?”

    “না। বিরূপাক্ষ প্রচণ্ড বুদ্ধিমান। ডায়রি এমন জায়গায় সরিয়ে দেয়, যেখানে চাইলেও কোনও ফ্রিম্যাসন ঢুকতেই পারবে না।”

    “সেটা কোথায়?”

    “১৭৩৮ সাল অবধি বহু ম্যাসন ব্রাদাররা ক্যাথলিক চার্চের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তারপরেই আচমকা একদিন পোপ ফ্রিম্যাসনদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেন। এমনকি যদি চার্চের কোনও ক্যাথলিককে ম্যাসনদের সঙ্গে যুক্ত বলে জানা যেত তবে Latae sententiae আইনে চার্চ তাঁকে বহিষ্কার করত। ফলে একটা জায়গা যা এখনও ম্যাসনদের নাগালের বাইরে, তা হল ক্যাথলিক চার্চ। চার্চেও অনেকে আছেন, যাঁরা আমাদের প্রতি সহানুভূতিশীল, কিন্তু কেউই সরাসরি ব্রাদারহুডে যোগ দিতে পারেন না।”

    “তার মানে, বাবা সেই ডায়রি কোনও ক্যাথলিক চার্চে লুকিয়ে রেখেছেন?”

    “কোনও ক্যাথলিক চার্চ না। বাংলার প্রাচীনতম ক্যাথলিক গির্জাদের মধ্যে একেবারে সেরা যেটা, সেখানে।”

    “ব্যান্ডেল চার্চ?”

    “ইয়েস! ব্যাসিলিকা অফ দি হোলি রোসারি।”

    লজ্জায় আমার দেওয়ালে মাথা ঠুকতে ইচ্ছে হচ্ছিল। সব খবর ছিল দেবাশিসদার কাছে। শুধু আমিই কিছু জানতাম না। শুধুমাত্র আমার রিঅ্যাকশন দেখার জন্যেই একদম প্রথম দিন ব্যাসিলিকা অফ দি হোলি রোজারির নাম করেছিলেন। হয়তো দেখতে চাইছিলেন আমি কিছু জানি কি না। আর আমি ভাবছিলাম উনি আমায় ইমপ্রেস করতে এসব বলছেন!

    “তবে কীভাবে আর কোথায় সে ডায়রি লুকানো, তা বিরূপাক্ষ আমায় বলেনি। আমিও জানতে চাইনি।”

    আমি আর কোনও কথা বলার অবস্থায় ছিলাম না। কথা বললেন অফিসার মুখার্জিই।

    “সেসব ইতিহাস তো হল, কিন্তু গত উনিশে জুন, রাতের বেলা আপনি দেবাশিস গুহকে আচমকা খুন করতে গেলেন কেন? সেটা বলবেন কি?”

    আমার অবাক মুখের দিকে চেয়ে অফিসার মোবাইল এগিয়ে দিলেন।

    “এই দ্যাখো। প্রমাণ ছাড়া কথা বলছি না। দেবাশিস গুহর বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে গলির মুখে একটা গুদাম আছে। খেয়াল করেছ?”

    “হ্যাঁ। সেই তুলো-টুলো কীসব যেন পাওয়া যায়।”

    “সেই গুদামের বাইরে একটা সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল। শুরুর দিন থেকেই আমরা চেষ্টা চালাচ্ছিলাম ফুটেজের। কিন্তু মালিক নাকি সপরিবারে বিদেশ ঘুরতে গেছে। কন্ট্যাক্ট করা যাচ্ছিল না। আজ চুঁচুড়া গোরস্থানে তোমার সঙ্গে কথা বলার পরেই অফিস থেকে কল এল। সেই মালিক ফিরেছে। ফুটেজ জোগাড় করা গেছে। ওরা আমায় হোয়াটসঅ্যাপে পাঠাল। এবার নিজেই দ্যাখো।”

    দেখলাম একটা ভিডিও ক্লিপ। তলায় ডিজিটাল সময় আর তারিখ।

    ১৯ জুন, রাত ১১.৫৫ একটা কালো লম্বাটে গাড়ি এসে দাঁড়াল গলির মুখে। গাড়ির নম্বর প্লেট পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে না। ছবি বেশ ঝাপসা। কিন্তু এই গাড়ি আমার চেনা। নিচের গ্যারাজে রোজ দাঁড়িয়ে থাকে। আজ নেই। উর্ণাদের নিয়ে বেরিয়েছে। গাড়ি থামতে সেখান থেকে নামলেন এক ভদ্রলোক। মুখ দেখা যাচ্ছে না। পিছন থেকে মনে হল ইনি নিশীথ দত্ত। কাঁধে ঝোলা ব্যাগ। সামান্য ঘুড়িয়ে চলেন। ভদ্রলোক গাড়ি থেকে নেমে এদিক ওদিক তাকিয়ে সোজা চলে গেলেন দেবাশিসদার বাড়ির দিকে।

    “এবার একটু টেনে দিচ্ছি”, বলে মুখার্জি ভিডিওটা এগিয়ে দিলেন খানিকটা। ২০ জুন, ১.০৫। আবার ফিরে এসেছেন নিশীথ বাবু। তবে এবার চালচলনে বেশ একটা সন্ত্রস্ত ভাব। দ্রুতগতিতে গাড়িতে ঢুকেই গাড়ি ঘুরিয়ে বেরিয়ে গেলেন।”

    “দেখলে?”

    “আর কেউ আসেনি সেদিন?”

    “রাত দশটার পর অন্তত আসেনি। আর খুন হয়েছে রাত এগারোটার পরে। অবশ্য এখানে একটা সমস্যা আছে। দোকানের ক্যামেরাটা খারাপ হয়ে গেছিল। লোক সারিয়ে দিয়ে যখন যায়, তখন সন্ধে সাড়ে সাতটা। তাও ছবি খুব একটা পরিষ্কার না। ফলে এর আগে কী হয়েছে বলা মুশকিল। এমনকি দেবাশিসদা কখন ঢুকেছেন সেটাও আমরা জানি না।”

    “কাজের লোক ঘরে ঢুকল কেমন করে?”

    “তার কাছে ডুপ্লিকেট চাবি থাকে, যাতে দেবাশিসদা না থাকলেও সে কাজ করে চলে যেতে পারে। সে তো পরের দিন সকালে এসেছিল।”

    “তাহলে সেদিন রাতে ঠিক কী হয়েছিল?”

    অদ্ভুত উদাসীনভাবে অফিসার বললেন, “এই সময়ের মধ্যে শুধু ওঁকেই ওই বাড়ির দিকে যেতে দেখা গেছে। সুতরাং উনিই জানেন।”

    আবার হাসলেন নিশীথ দত্ত, “অফিসার, আর ইউ শিওর? আমি যে দেবাশিসের বাড়িতেই গেছি তার প্রমাণ কোথায়? এই ঝাপসা ছবি দিয়ে আমাকে ধরে রাখতে পারবেন তো?”

    নিচে কতগুলো গাড়ি থামার আওয়াজ পেলাম। পুলিশ ফোর্স এল বোধহয়।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleজু – অৎসুইশি
    Next Article নীবারসপ্তক – কৌশিক মজুমদার

    Related Articles

    কৌশিক মজুমদার

    নোলা : খাবারের সরস গপ্পো – কৌশিক মজুমদার

    August 4, 2025
    কৌশিক মজুমদার

    সূর্যতামসী – কৌশিক মজুমদার

    August 4, 2025
    কৌশিক মজুমদার

    আঁধার আখ্যান – কৌশিক মজুমদার

    August 4, 2025
    কৌশিক মজুমদার

    নীবারসপ্তক – কৌশিক মজুমদার

    August 4, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.