Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    কাঙাল মালসাট – নবারুণ ভট্টাচার্য

    September 1, 2025

    লুব্ধক – নবারুণ ভট্টাচার্য

    September 1, 2025

    হারবার্ট – নবারুণ ভট্টাচার্য

    September 1, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    অগ্রন্থিত লেখার সংকলন – তসলিমা নাসরিন

    তসলিমা নাসরিন এক পাতা গল্প818 Mins Read0

    বিয়ের প্রয়োজনীয়তা আদৌ আছে কি?

    মানুষ বিয়ে করে কেন? নির্বিঘ্নে যৌন সম্পর্ক করা, সন্তান জন্ম দেওয়া-–এর জন্য বিয়ের তো দরকার নেই! মানুষ ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোনও প্রাণীর মধ্যে বিয়ের কোনও রীতি নেই, অথচ দিব্যি তারা একত্রবাস করছে, সন্তান জন্ম দিচ্ছে, সন্তানকে খেটে খুটে বড় করছে। পরস্পরেরর প্রতি বিশ্বস্ত থাকার জন্যও বিয়েটা জরুরি নয়। অনেক প্রাণী আছে যারা যৌবনের শুরুতে যে সঙ্গী বেছে নেয়, সেই সঙ্গী নিয়েই দিব্যি সুখে শান্তিতে বাকি জীবন কাটিয়ে দেয়। অন্য কারও জন্য লোভ করে না, কাউকে নিয়ে আবার নতুন সংসার পাতার কোনও স্বপ্ন আর দেখে না। অবিশ্বাস্যরকম বিশ্বস্ত, একগামী। যত দূরেই যাক, যত সমুদ্রই পেরোক, যত বয়সই বাড়ুক, ঘরে ফিরে পুরোনো সেই সঙ্গীকেই চুমু খায়, তার বুকেই মাথাটা রাখে। পরকীয়া কাকে বলে, বহুগামিতা কাকে বলে, বিশ্বাসঘাতকতা কাকে বলে জানেই না। অ্যালবাট্রোস, রাজহাঁস, কালো শকুন, ন্যাড়া ঈগল, টার্টল পায়রা, ডিক-ডিক হরিণ, বনেটমাথা হাঙ্গর, গিবন, ফ্রেঞ্চ এঞ্জেলফিস, ছাইরঙা নেকড়ে, প্রেইরি ভোল–এদের কথা বলছি।

    মানুষ তো বিয়ে করে একসঙ্গে সুখে শান্তিতে সারা জীবন কাটানোর জন্য কিন্তু ক’জন পারে, শুনি? বেশির ভাগের বিয়েই হয় ভেঙে যায়, অথবা টিকে থাকলেও ভালোবাসাহীন টিকে থাকে। টিকিয়ে রাখতে হয় সন্তানের অসুবিধে হবে বা অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে যাবে, বা লোকে কী বলবে ভয়ে। এভাবে টিকে থাকাকে ঠিক টিকে থাকা বলে না। ঘরে স্ত্রী রেখে বা স্বামী রেখে দিব্যি অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্ক গড়ছে মানুষ। সেই সম্পর্কও ভেঙে যায়, আবার নতুন সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মানুষ ন্যাড়া ঈগল নয়, বা কালো শকুন নয়। একগামিতা মানুষের চরিত্রে নেই। মানুষ বহুগামী। মানুষ বহুগামী, এও কিন্তু হলফ করে বলা যায় না। মানুষ আসলে জটিল এবং বিচিত্র। একগামী, বহুগামী, অসমকামী, সমকামী, উভকামী– মানুষ অনেক কিছুই। নতুন কিছুতে অভ্যস্ত হতে, পুরোনো স্বভাব পাল্টাতেও মানুষের জুড়ি নেই।

    প্রায় সব ধর্মই বিয়েকে পুরুষ আর নারীর ‘পবিত্র মিলন’ বলে ঘোষণা করেছে। ঈশ্বরই নাকি আগে থেকে সঙ্গী নির্বাচন করে রাখেন। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আর যা কিছু ঘটুক, বিচ্ছেদ যেন না ঘটে, ঈশ্বর সতর্ক করে দিয়েছেন। তাতে কী! প্রচণ্ড ঈশ্বর ভক্তরাও ঈশ্বরের এই উপদেশ আজকাল আর মানেন না। ঈশ্বরের নির্বাচিত সঙ্গীকে দিব্যি তালাক দিয়ে নিজে সঙ্গী নির্বাচন করেন। ‘ম্যাচমেকার’ হিসেবে ঈশ্বর পুরো মার খেয়ে গেছেন, এ খবর কে না জানে! প্রায় সব ধর্মই বিয়েতে নাক গলিয়েছে। বয়স, লিঙ্গ, জাত, বিশ্বাস কী হওয়া চাই, স্বামী-স্ত্রীর কর্তব্য এবং দায়িত্বই বা কী হওয়া উচিত–এ নিয়ে বিস্তর উপদেশ দিয়েছে, কঠোর কঠোর নিয়মও তৈরি করেছে। বিয়ে যদিও ব্যক্তিগত ব্যাপার, কিন্তু ধরে বেঁধে একে সামাজিক করে ফেলা হয়েছে। পুরুষদের না করা হলেও মেয়েদের করা হয়েছে সামাজিক সম্পত্তি। বিয়ের আগে মেয়েটা কারও সঙ্গে প্রেম করেছে কি না, ঠিকঠাক কুমারী ছিল কি না, বিয়ের পর স্বামী ছাড়া আর কারও সঙ্গে সম্পর্ক গড়েছে কি না, কার সঙ্গে বাড়ির বাইরে বেরোচ্ছে, কখন ফিরছে, বাইরের কোনও পুরুষলোক বাড়িতে ঢুকেছে কি না, এসব শুধু বাড়ির নয়, বাড়ির বাইরের লোকও লক্ষ রাখছে। সমাজের দশটা লোক দেখছে বলেই পান থেকে চুন খসলে মেয়েদের নিয়ে সমাজে মুখ দেখাতে পারে না বাবারা, ভাইয়েরা, কাকারা। মেয়েদের খুন করে পরিবারেরর ‘সম্মান’ রক্ষা করে।

    সভ্য শিক্ষিত বিশ্ব থেকে বিয়ে প্রায় উঠে যাচ্ছে। কিছু লোক অবশ্য করছে বিয়ে! এভারেস্টটা আছে বলে যেমন অনেকে এভারেস্টে চড়ে, বিয়েটা আছে বলেই অনেকে বিয়েটা করে। বিয়ের চল চলে গেলে আর করবে না। যে প্রথা চলছে, অধিকাংশ লোক সেই প্রথাকেই চালিয়ে নিয়ে যায়। আর, যার প্রচলন নেই, তাকে চালু করতে খুব অল্প ক’জনই উদ্যোগ নেয়। অনেক প্রেমিক-প্রেমিকা বিয়ে না করেও দিব্যি সংসার করছে বছরের পর বছর। বিয়ে না করেই সন্তান জন্ম দিচ্ছে। বিয়ের পিতৃতান্ত্রিক চরিত্র নিয়ে বিস্তর হাসাঠাট্টা করছে। কিন্তু ধর্ম যেমন মিথ্যে প্রমাণিত হওয়ার পরও টিকে আছে, বিয়েটাও ওই ধর্মের মতোই। যুক্তিহীন, কিন্তু টিকে আছে। কুসংস্কার যেমন হাজার বছর ধরে বেঁচে থাকে! তবে ওরা ধীরে ধীরে বিলুপ্তও হয়ে যায় বটে। বিয়েরও বিলুপ্তি ঘটবে। উত্তর- ইওরোপের দেশগুলোয় বিয়ে করার পেছনে গোপন একটি কারণও অবশ্য আছে, বিয়ে করলে ট্যাক্স কম দিতে হয়, সন্তানাদি পোষার খরচ সব রাষ্ট্রই দেয়। মানুষ বিয়ে করছে না, বাচ্চাকাচ্চাতেও খুব একটা কারওর উৎসাহ নেই, বিয়ের প্রথাটি ভেঙে গেলে সন্তান উৎপাদন যে হারে কমছে, সেটি আরও কমে যাবে, উত্তর-ইওরোপীয়দের অস্বিস্ত্বই ভবিষ্যতে থাকবে না, এই ভয়ে বিয়েতে উৎসাহ দিতে জনগণের নাকের ডগায় ট্যাক্স কমানোর মুলো ঝুলিয়েছে সরকার। সুযোগ সুবিধের আশায় বিয়ে করছে বটে কিছু লোক, তবে বেশির ভাগ লোকই হয় একা থাকে, নয়তো বিনে-বিয়ে’য় একত্রবাস করে।

    ষাট দশকের শেষ দিকে সমাজের বাধা নিষেধ উপেক্ষা করে ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষ বেরিয়ে এসেছিল পুরোনো রাজনীতি আর পুরোনো সমাজব্যবস্থা আমূল পাল্টে ফেলতে। ভালো মেয়ে হতে হলে কৌমার্য, সতীত্ব, মাতৃত্ব ইত্যাদি বজায় রাখতে হয় — পুরোনো এই ধারণাটির গায়েও কুড়োল বসিয়েছিল। রীতিমত বিয়ে করাই বন্ধ করে দিয়েছিল সেদিনকার হিপিরা। অনেকে একবাড়িতে বাস করতো, সবার সঙ্গে সবারই সেক্স হত, বাচ্চাকাচ্চা হলে সবাই মিলে দেখাশোনা করতো। সেই ‘কমিউন’ জীবন বেশি বছর টেকেনি। হিপিরা জয়ী হলে আজ বিয়েটা ইতিহাসের পাতায় স্থান পেতো, সমাজে নয়।

    অনেক কবি সাহিত্যিক দার্শনিক বিয়ে সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন, বিয়েটা যে অনর্থক একটা জিনিস, তা বেশ কায়দা করে বুঝিয়েও দিয়েছেন। ‘নিজের বিয়েয় আর অন্তেষ্টিক্রিয়ায় পার্থক্য একটাই, বিয়ের ফুলগুলোর গন্ধ পেতে পারো, আর অন্তেষ্টির ফুলগুলোর পারো না’। অস্কার ওয়াল্ড বলতেন, ‘সবসময় প্রেম ভালোবাসায় ডুবে থাকা উচিত। সে কারণেই কখনও বিয়ে করা উচিত নয়’। ক্যাথারিন হেপবার্ন সে আমলেও নারী পুরুষের এক বাড়িতে বাস করার পক্ষে ছিলেন না। বলেছিলেন, ‘একটা নারী আর একটা পুরুষ পরষ্পরের সব কিছু পছন্দ করছে? যদি এরকম ঘটনা ঘটেই থাকে, তবে সবচেয়ে ভালো হয় তারা যদি একই পাড়ায় থাকে, মাঝে মাঝেই দেখা হবে!’ এও বলেছিলেন, ‘একটা লোক অপছন্দ করবে বলে যদি অনেক পুরুষের প্রেমকে তুচ্ছ করতে চাও ,তা হলে যাও, গিয়ে বিয়ে করো’। সুন্দর কিছু মন্তব্য করেছেন ক’জন ব্যাক্তিত্ব। ‘বিয়েটা চমৎকার আবিস্কার, ঠিক যেমন সাইকেল মেরামত করার যন্ত্রটাও চমৎকার আবিস্কার’। ‘বিয়েটা একটা খাঁচা, খাঁচার বাইরের লোকেরা খাঁচায় ঢোকার জন্য ব্যাকুল, আর খাঁচার ভেতরের লোকেরা খাঁচা থেকে বেরোবার জন্য ব্যাকুল’। ‘বিয়েটা শুধু তাদের জন্য ভালো, যারা একা ঘুমোতে ভয় পায়’। সব মন্তব্যই বিয়ের বিপক্ষে নয়। পক্ষেও কিছু মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ। যেমন, ‘যদি এমন কোনও ধনকুবের পুরুষের দেখা পাই, যে প্রতিজ্ঞা করবে তার সহায় সম্পত্তির অর্ধেকটা আমায় লিখে দেবে, লিখে দিয়ে এক বছরের মধ্যে মরে যাবে, তবে তাকে আমি নিশ্চয়ই বিয়ে করবো’। অন্য আরও ক’জন বলেছেন, ‘বিয়েটা চমৎকার ইনস্টিটিউশন। কিন্তু কে চায় ইনস্টিটিউশনে বাস করতে?’ ‘প্রেমিকের স্নায়ুতন্ত্র পুরোটা উপড়ে তুলে নিলে যেটা পড়ে থাকে, সেটা স্বামী’। ‘বিয়েটা ঘুষ, যেন বাড়ির চাকরানী নিজেকে বাড়ির মালিক বলে মনে করতে পারে’। ফরাসি লেখক বালজাক বলেছিলেন, ‘বেশির ভাগ স্বামীকে দেখলেই আমার সেই ওরাংওটাংটির কথা মনে পড়ে, যে খুব বেহালা বাজানোর চেষ্টা করছিল’।

    পাশ্চাত্যে যখন হিপি বিপ্লব, নারী স্বাধীনতার আন্দোলন, প্রাচ্যে তখনও মেয়েদের হাতেপায়ে অদৃশ্য শেকল, যৌনাঙ্গে অদৃশ্য সতীত্ববন্ধনী। বিয়েটা যে কারণে শুরু হয়েছিল, প্রাচ্যের বেশির ভাগ পুরুষ এখনও সেই কারণেই বিয়ে করে। একটা জরায়ু দরকার, যে জরায়ু একটা নির্দিষ্ট পুরুষের ঔরসজাত সন্তান ধারণ করবে। পিতৃত্বের নিশ্চয়তাই বিয়ের মূল উদ্দেশ্য। পুরুষের স্বার্থে পুরুষকে বিয়ে করে পুরুষতান্ত্রিক ব্যবস্থা হাজার বছর ধরে টিকিয়ে রাখছে মেয়েরা। মেয়েরা বেঁকে বসলে পুরুষতন্ত্রের বিরাট বেলুনটি সশব্দে চুপসে যেত কবেই!

    বাঙালি সমাজে দেখেছি, বিয়ের পর মেয়েদের ডানাটা গোড়া থেকে কেটে দেওয়া হয়। নিজের ঘরদোর-আত্মীয়স্বজন-বন্ধুবান্ধব-পরিবেশপ্রতিবেশ-শহরবন্দর সব ছাড়তে হয় মেয়েদের। নিজের নামের শেষে স্বামীর পদবী জুড়তে হয়। শ্বশুর বাড়িতে বাস করতে হয়। মেয়ে প্রাপ্ত-বয়স্ক হলেও, শিক্ষিত হলেও, সে চাকরি করবে কি করবে না সেই সিদ্ধান্ত স্বামী এবং স্বামীর আত্মীয় স্বজন নেয়। একসময় তো প্রচলিত ছিলই, এখনও অনেকে বলে, যে, ‘বিয়ের পর চাকরি করা চলবে না’। সতী-সাবিত্রী থাকার জন্য ঘরে থাকাটা ভালো, ঘরের কাজকর্ম করবে, বাড়ির সবার সেবা করবে, সন্তান বড় করবে! গ্লোরিয়া স্টাইনেম একটা চমৎকার কথা বলেছিলেন, ‘সে-ই স্বাধীন মেয়ে, যে বিয়ের আগে যৌন সম্পর্ক করে, আর বিয়ের পরে, চাকরি’। অধিকাংশ বাঙালি মেয়ে স্বাধীনতার সঠিক অর্থই জানে না।

    কলকাতায় স্বামী-স্ত্রীর প্রেমহীন সম্পর্ক দেখে আঁতকে উঠতাম মাঝে মাঝে। প্রায়ই জিজ্ঞেস করতাম, ‘বিয়েটা ভেঙে যেতে চাইলে ভেঙে যেতে দাও, জোর করে দাঁড় করিয়ে রাখছো কেন?’ ভালো কোনও উত্তর কখনও পেতাম না। অসুখী জীবনে বহুদিন থাকতে থাকতে মেয়েরা অভ্যস্তও হয়ে যায়। যে সন্তানের জন্য বিয়ে না ভাঙা, সেই সন্তান সংসারের অশান্তি দেখতে দেখতে বড় হয়। এমন সংসারে সন্তানের গড়ে ওঠায় লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি। আসলে, মেয়েদের অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা আর নিরাপত্তা সমাজে না থাকলে একা বাস করা বা একা সন্তান মানুষ করা দুরূহ। কিন্তু তাই বলে কি অত্যাচারী স্বামীর সঙ্গে আপোস করতে হবে! বধু নির্যাতন আর বধু হত্যা যে হারে বাড়ছে, তা দেখে গা শিউরে ওঠে। পুরুষতন্ত্রের বীভৎস নারীবিদ্বেষ আর নারীঘৃণা কী উৎকটভাবেই না প্রকাশ পায়!

    যে সমাজে শিক্ষিত, স্বনির্ভর, সচেতন মেয়ের সংখ্যা বেশি, সেই সমাজে বিচ্ছেদের সংখ্যাটা বেশি, বিয়ের সংখ্যাটা কম।

    ভারতীয় উপমহাদেশে অবশ্য উপার্জনহীন পরনির্ভর মেয়েদের মতো পুরুষতন্ত্রের মন্ত্র মেনে চলা স্বনির্ভর শিক্ষিত মেয়েরাও অত্যাচারী বা বহুগামী স্বামীর সঙ্গে সংসার করছে মুখ বুজে। এধরণের সমাজে, বিয়েটা নিতান্তই পুরুষের ক্ষেত্রে অর্জন, মেয়েদের ক্ষেত্রে বিসর্জন। বিয়ে কাউকে একাকীত্ব থেকে মুক্তি দেয়, কারও পায়ে পরায় নির্মম শেকল। এখনও সমাজে দেদার বর্বরতা চলে, চলে জাত বর্ণের হিসেব, পণের হিসেব, স্ত্রীকে নিতান্তই যৌনসামগ্রী, ক্রীতদাসী আর সন্তান উৎপাদনের যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা, সন্তান বিশেষ করে পুত্র সন্তান জন্ম দেওয়ার চাপ, কন্যাভ্রুণকে জন্মাতে না দেওয়া, জন্মালেও পুঁতে ফেলা, পুত্র না জন্মালে তালাক, পুনর্বিবাহ।

    নিয়ম মেনে চলার লোক যেমন প্রচুর আছে, নিয়ম ভাঙার লোকও কিন্তু আছে। মানুষ যত সভ্য হচ্ছে, বিয়ের পুরোনো নিয়মগুলো তত ভেঙে পড়ছে। সমাজ বদলায় হাতে গোনা কিছু লোক। সমাজের সব লোক দল বেঁধে সমাজ বদলায় না। বেশির ভাগ লোক বরং দল বেঁধে প্রাচীন নীতি রীতি শক্ত করে আকঁড়ে রাখে। বিয়ের পর মেয়েদের চাকরি বাকরি ব্যাবসা বাণিজ্য চলবে না, স্বামীর আদেশ নিষেধ অমান্য করা চলবে না, বিধবা বিবাহ চলবে না– এই নিয়মগুলো প্রাচ্যের কিছু সাহসী মেয়ে এখন আর মানে না।

    বিয়ের বিবর্তন ঘটেছে। বিয়ের উদ্দেশ্য পাল্টেছে, ধরণ পাল্টেছে। পাশ্চাত্যে, যেখানে মেয়েদের স্বাধীনতা আর অধিকারের সংগ্রাম দীর্ঘকাল চলেছে, এবং শেষ পর্যন্ত মেয়েরা অনেকটাই সমানাধিকার ভোগ করছে, সেখানে বিয়েটা এখন আর সন্তানের পিতৃ পরিচয়ের নিশ্চয়তার জন্য নয়, মেয়েদের দিয়ে সংসার আর সন্তান দেখাশোনার কাজ কৌশলে করিয়ে নেওয়া নয়। সন্তান না জন্মালেও ক্ষতি নেই। সম্পর্ক আর সংসার সুখময় করার জন্য যে জিনিসের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, তা বিয়ে নয়, তা হলো, পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা আর শ্রদ্ধাবোধ। এ দুটো থাকলেই মানুষ পরস্পরের প্রতি বিশ্বস্ত থাকে। বিয়ে যদি বিশ্বস্ত রাখতে পারতো, তাহলে এত পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে উঠতো না।

    বিয়ে না করে যারা সংসার করছে তাদের মধ্যেও পরস্পরের প্রতি বিশ্বস্ব থাকার একই অলিখিত শর্ত থাকে।

    সব দম্পতিই যে একগামিতা বা বিশ্বস্ততা চায়, তা নয়। কিছু স্বামী-স্ত্রী পরষ্পরকে ভালোবেসেও একঘেয়েমি দূর করতে ভিন্ন নারী ও পুরুষকে নিজেদের যৌনসঙ্গমে সঙ্গী হতে আমণ্ত্রণ জানায়। কোনও লুকোচুরি নেই, নিজেদের শোবার ঘরে, নিজেদের বিছানায়, দুজনের সঙ্গে যোগ হয় এক দুই তিন বা চার বা তারও চেয়ে বেশি। এই দলবদ্ধ যৌনতা দাম্পত্যজীবনে বৈচিত্র আনে, সম্পর্ককে তাজা রাখে। কিছু দার্শনিক গুচ্ছ-বিয়েকে বেশ জোরেসোরে সমর্থন করেছেন। বিয়ের বিচ্ছেদ না ঘটিয়ে সন্তানের সুবিধের কথা ভেবে গুচ্ছ-বিয়েই নাকি মেনে নেওয়াই নাকি বুদ্ধিমানের কাজ। গুচ্ছ-বিয়েটা অনেকগুলো নারী পুরুষেরা সমাহার, যারা সকলেই সকলের স্ত্রী বা স্বামী। গুচ্ছপ্রেম বা ‘পলিয়ামোরি’ বলেও একধরণের সম্পর্ক আছে। একাধিক নারী পুরুষ, প্রত্যেকে পরস্পরেরর প্রেমিক বা প্রেমিকা। বহুবিবাহ তো দীর্ঘকাল প্রচলিত ছিলই, এক স্বামীর বহু স্ত্রী। আবার আরেক ধরনেরও বহুবিবাহও কিছু কিছু সমাজে চলে, এক স্ত্রীর বহু স্বামী। দুনিয়াতে সবকিছুরই চর্চা হয়েছে, এখনও হচ্ছে। কিন্তু সব ছাপিয়ে এক-স্বামী-এক-স্ত্রীর বিয়েই এখন পর্যন্ত রাজত্ব করছে। ছড়ি ঘোরানোটা এই সম্পর্কে বড় সুবিধে বটে।

    বিয়েটা মূলত যৌন সঙ্গমের লাইসেন্স। এই লাইসেন্সটাই ঢাক ঢোল পিটিয়ে নেওয়া হয়। নিতান্তই প্রাচীন, পিতৃতান্ত্রিক, অযৌক্তিক একটি প্রথা। এই প্রথাটির জীবিত থাকার কোনও কারণ নেই। অনেক প্রথাই মরে গেছে বা যাচ্ছে, যেমন সতীদাহ, যেমন ডাইনি-হত্যা, যেমন অগুনতি বিয়ে, আত্মীয়ের মধ্যে বিয়ে। অর্থহীন অনেক প্রথাই ভয় দেখিয়ে, বোধবুদ্ধির লোপ পাইয়ে দিয়ে চালু রাখা হচ্ছে বটে, তবে বড় জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রথার ব্যবহার না হতে থাকলে, প্রথা ধীরে ধীরে মরে যেতে বাধ্য। যেহেতু শতাব্দী ধরে প্রমাণ হচ্ছে বিয়ে কোনও নির্ণায়ক বিষয় নয় সম্পর্ক টেকানোর, তাই এটিরও ভবিষ্যত খুব উজ্জ্বল নয়। বিবর্তন আমাদের পূর্ব-পুরুষের লেজ খসিয়েছে প্রয়োজন নেই বলে। বিবর্তন আমাদের সমাজ থেকে বিয়ে নামক একটি অপ্রয়োজনীয় সংস্কার দূর করবে না, এ কোনও কথা? এককালের দার্শনিক নিৎসে, কান্ট, হেগেল প্রবল নারীবিরোধী ছিলেন। দর্শনেরও বিবর্তন ঘটেছে, নারীর প্রতি অমন তীব্র ঘৃণা নিয়ে আজকাল দার্শনিক বনার কোনও উপায় নেই।

    নারীর প্রতি ঘৃণার কারণে জন্ম নিয়েছে পুরুষতন্ত্র। পুরুষতন্ত্র জন্ম দিয়েছে অনেক নারীবিরোধী প্রথা, এর মধ্যে বিয়ে একটি। পুরুষতন্ত্র যত পরাজিত হবে, যত পর্যুদস্ত হবে, নারী যত তার স্বাধীনতা ফিরে পাবে, যত সে আত্মবিশ্বাসী হবে, যত সে নারীবিরোধী ধর্ম আর সংস্কারকে সমাজ থেকে ঠেলে সরাতে পারবে, বর্বরতাকে যত দূর করতে পারবে সমাজ, যত সভ্য হবে সমাজ, যত সভ্য হবে পুরুষ, পুরুষতান্ত্রিক প্রথার গায়েও তত মরচে ধরবে। আমরা এর মধ্যেই দেখছি সভ্য সমাজে বিয়ে কমে যাচ্ছে। অসভ্য-অশিক্ষিত-সমাজে বিয়ে প্রথা চলছে। কিন্তু একটি সমাজ তো চিরকাল অসভ্য আর অশিক্ষিত থেকে যায় না! সমাজও বিবর্তিত হয়। সমাজ সভ্য হয়েছে কখন বুঝবো? যখন দেখবো নারী আর ধর্ষিতা হচ্ছে না, নির্যাতিতা হচ্ছে না, পুরুষের দাসী বা ক্রীতদাসী বা যৌনদাসী কোনওটাই নয় নারী, তুমুল প্রেমে পড়ে একত্রবাস করছে কিন্তু বিয়ে নৈব নৈব চ, অথবা বিয়ে নামক জিনিসটিই বিলুপ্ত হয়ে গেছে, তখন।

    বিয়ের বিপক্ষে কথা বলেছেন অনেক নারীবাদী লেখক। আন্দ্রিয়া ডোরকিন তো মনেই করতেন, বিয়েটা স্রেফ ধর্ষণ করার জন্য। আর একজন বেশ চমৎকার বলেছিলেন, বিয়েটা নিতান্তই ‘ইনটিমেট কলোনাইজেশন’। অনেকেই মনে করেন, বিয়ের বাধাটা দূর না হলে মেয়েদের সত্যিকার স্বাধীনতা অনেকটা অসম্ভব। প্রায় সব নারীবাদীই বিশ্বাস করতেন, এখনও অনেকে করেন, যে, পুরুষতন্ত্র টিকিয়ে রাখার জন্য বিয়েটা বেশ অসাধারণ একটা প্রথা। নারীবাদীদের কেউ কেউ প্রেম নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন, প্রেমটা নাকি একরকম রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র, মেয়েরা সেই ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে বিয়ে করতে অর্থাৎ শত্রুর কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। নারীবাদীদের কাছে বিয়েটা এত আপত্তিকর হতো না, স্ত্রীর ভূমিকা যদি এমন দাসী-বাঁদির না হতো।

    গ্লোরিয়া স্টাইনেমকে একবার জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘এই যে বিয়ের বিরুদ্ধে এত গীত গেয়েছো, শেষে নিজেই যে বুড়ো বয়সে একটা বিয়ে করে বসলে, কারণটা কি?’ গ্লোরিয়া যে বন্ধুটিকে বিয়ে করেছিলেন, ওঁর নাকি খুব বড় অসুখ করেছিল, বিয়ে করলে গ্লোরিয়ার স্বামী হিসেবে স্বাস্থ্য বীমা পেতে সুবিধে হবে ওঁর, সে কারণেই বিয়ে। গ্লোরিয়ার জায়গায় আমি হলে বন্ধুকে সাহায্য করার বিকল্প ব্যবস্থা নিতাম, কিন্তু বিয়ে নামক পুরুষতান্ত্রিক ব্যবস্থার সঙ্গে কিছুতেই আপোস করতাম না। বিয়ে যে জীবনে আমি করিনি তা নয়, করেছি, তখন করেছি যখন জানতাম না যে বিয়েটা আসলে নারীর ওপর পুরুষের প্রভুত্ব কায়েম করার একটা সামাজিক চুক্তিপত্র ছাড়া কিছু নয়। কেউ কেউ ঘা খাওয়ার আগে শেখে, কেউ কেউ আবার ঘা খেয়ে শেখে। আমার না হয় একটু ঘা খেয়েই শেখা হল। কিন্তু শেখা তো হল। কত কাউকে দিনরাত দেখছি, কোনওকিছুই যাদের কোনওকিছু শেখাতে পারে না।

    যখন সভ্য অসমকামীরা বিয়ে থেকে বেরিয়ে আসছে, তখন সভ্য সমকামীরা বিয়ের অধিকারের জন্য আন্দোলন করছে। সভ্য দেশগুলো ধীরে ধীরে সমকামীদের বিয়ে করার অধিকার দিচ্ছে। সভ্য মানুষেরা, এমনকী যারা বিয়েতে বিশ্বাসী নয়, তারাও সমকামীদের বিয়ের অধিকারের পক্ষে, যেহেতু সমকামীদের বিয়েটা সমাজের বেশির ভাগ লোক মেনে নেয় না। সমকামীদের বিয়ে সমর্থন করা মানে, ধর্মের শাসনকে আর রক্ষণশীল সমাজের চোখ রাঙানোকে মধ্যম আঙুল দেখানো। এ কথা ঠিক, সমকামীদের বিয়েতে সম-অধিকারের সম্ভাবনা অসমকামীদের চেয়ে বেশি কারণ ওদের মধ্যে লিঙ্গ-বৈষম্যের বালাই নেই। তবে এটা ঠিক, একসময় যখন সমকামীদের বিয়ে অসমকামীদের বিয়ের মতো ডাল-ভাত হয়ে উঠবে, তখন সমকামীরাও, যারা আজ বিয়ের জন্য মরিয়া হয়ে উঠছে, অর্থহীন এই বিয়ে ব্যবস্থাটির বিরুদ্ধে মুখ খুলবে।

    বিয়ে নামের অপ্রয়োজনীয় একটি প্রথা মরে পড়ে থাকবে একদিন। আগামী দিনের সমাজবিজ্ঞানীরা ইতিহাস খুঁড়ে বিয়ের ফসিল আবিস্কার করবেন, আলোকিত মানুষকে পুরোনো দিনের গল্প শোনাবেন। –‘পৃথিবীতে একটি যুগ ছিল, সে যুগের নাম অন্ধকার যুগ। সেই অন্ধকার যুগে একটি প্রথা দীর্ঘদীর্ঘকাল টিকে ছিল, প্রথাটির নাম বিয়ে’। বিয়েটা কী এবং কেন, এসব বোঝাতে গিয়ে পুরুষতন্ত্রের প্রসঙ্গ উঠবে, তখন নিশ্চয়ই ভবিষ্যতের সেই সব মানুষের গা কেঁপে উঠবে বীভৎস একটা সমাজ কল্পনা করে।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81 82 83 84 85 86 87 88 89 90 91 92 93 94 95 96 97 98 99 100 101 102 103 104 105 106 107 108 109 110 111 112 113 114 115 116 117 118 119 120 121 122 123 124 125 126 127 128 129 130 131 132 133 134 135 136 137 138 139 140 141
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleবন্দিনী – তসলিমা নাসরিন
    Next Article আমার প্রতিবাদের ভাষা – তসলিমা নাসরিন

    Related Articles

    তসলিমা নাসরিন

    সেইসব অন্ধকার – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    আমার প্রতিবাদের ভাষা – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    বন্দিনী – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    নির্বাসন – তসলিমা নাসরিন

    August 20, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    নেই, কিছু নেই – তসলিমা নাসরিন

    August 20, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    ফেরা – তসলিমা নাসরিন

    August 20, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    কাঙাল মালসাট – নবারুণ ভট্টাচার্য

    September 1, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    কাঙাল মালসাট – নবারুণ ভট্টাচার্য

    September 1, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    কাঙাল মালসাট – নবারুণ ভট্টাচার্য

    September 1, 2025

    লুব্ধক – নবারুণ ভট্টাচার্য

    September 1, 2025

    হারবার্ট – নবারুণ ভট্টাচার্য

    September 1, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.