Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025

    মহাস্থবির জাতক – প্রেমাঙ্কুর আতর্থী

    September 24, 2025

    হিউয়েন সাঙের দেখা ভারত – প্রেমময় দাশগুপ্ত

    September 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচিত গল্পসংগ্রহ

    লেখক এক পাতা গল্প1108 Mins Read0

    ফুলের বাস

    গল্পের কোনো কোনো চরিত্র আমাকে কুহকে ফেলে দেয়। গল্পে সে কিছুতেই ঠিকঠাক উঠে আসে না। তাকে ঠিক ধরা যায় না। কাহিনি হয়, কিন্তু সত্য প্রকাশ হয় না। আমার সৃষ্ট চরিত্র বাদশা মিঞা মাঝে মাঝে এভাবে তাড়া করে। তখনই মনে হয় গল্পে তার প্রতি এতটা নিষ্ঠুর না হওয়াই ভালো ছিল। বাদশা আমার সঙ্গে একই জাহাজে সমুদ্র সফরে বের হয়েছিল। তবে আমার নতুন সফর। জাহাজে তার সফরের সংখ্যা গোনাগুণতিতে শেষ ছিল না। কখনো কড় গুনে বেলত দেড় কুড়ি আবার সোয়া কুড়ি—তবু আন্দাজে বুঝেছিলাম, বিশবাইশ সফর সে করেছে।

    আমার তখন বয়েস কম। বাড়িঘর ছেড়ে খুব বেশি একটা বাইরে যাইনি। কলেজে সবে ঢুকেছি—অভাব-অনটনের সংসারে কলেজে পড়া বিলাসিতার পর্যায়ে পড়ে ভাবতেই রুজিরোজগারের আশায় বাড়ি থেকে নিখোঁজ হই।

    কপাল-ফেরে আমার চাকরিজীবন শুরু জাহাজে। কী করে, কেমন করে তার গল্প এখন নয়। বলা অকারণ হবে বলেই বাদ দিচ্ছি।

    সেসব কবেকার কথা। আবছা সব মনে পড়ে। বাদশার বয়েসটাকে প্রায় ধরে ফেলেছি। এ-বয়েসে চুপচাপ বসে থাকলে দেখতে পাই জাহাজটা যেন নিরবধিকাল ধরে চলছে। মালবাহী জাহাজের নাবিক আমরা।

    আমরা এখন নেমে গেছি, যে যার বন্দরে। ঘরসংসার করছি—অথচ জাহাজটা যায়, আমার নির্জন একাকীত্বের মধ্যে টের পাই জাহাজটা সমুদ্রে ভেসে যায়। কেমন তখন ঘোরের মধ্যে পড়ে যাই। সব স্পষ্ট মনে করতে পারি।

    লেখালেখি-জীবনে এসে প্রথমেই বাদশা মিঞাকে নিয়ে পড়েছিলাম। গল্পটার কী যে খামতি থেকে গেল, জমল না।

    আবার লিখলাম, মনে হল বাদশাকে অপমান করেছি গল্পটা লিখে। মূল কাহিনি থেকে যাচ্ছে ঠিক, কিন্তু শুধু কাহিনি তো গল্প হতে পারে না। কিছু গোপন ইঙ্গিত অথবা আভাস থাকে, অথবা কোনো রহস্যময়তা, যা আলো এবং সলতের ফারাক। সলতেটা কাহিনি, আলো লেখকের হাতে। জ্বেলে দিলেই চলবে। সলতেটা বার বার তুলছি, কিন্তু আলো জ্বালা যাচ্ছে না। সলতেটা পর্যন্ত কাহিনি, আলো জ্বলে উঠলে গল্প।

    এবারের চেষ্টা, আলো জ্বালার। নিজের দিকে তাকালে বুঝি বাদশা সত্যি নিরপরাধ। জাহাজে তাকে কত না ধিক্কার দিয়েছি। ফুল কে না ভালোবাসে।

    এক লজঝড়ে জাহাজে বের হয়ে পড়েছিলাম। দেশে আবার কবে ফিরব জানি না। জাহাজে ওঠার সময় আমরা আলাদা সব মানুষ। কেউ পূর্বপরিচিত না। অথচ জাহাজে থাকতে থাকতে কী করে যে এত ঘনিষ্ঠ হয়ে গেলাম সবার!

    বাদশা ছিল আমার অকৃত্রিম সুহৃদ।

    বয়েসের ফারাক ছিল অনেক। একজন তরুণ যুবা, অন্যজন প্রৌঢ়।

    বাদশা ছিল এনজিন-রুমের ছোটো টিণ্ডাল। তার পরী’তেই আমার কাজ। জাহাজে এনজিন-ক্রুদের চার ঘন্টা করে ওয়াচ। জাহাজিরা ওয়াচ বলত না। বলত ‘পরী’। মানুষটা দিলখোলা। পান জর্দা আর দোক্তাপাতা ছাড়া অন্য কোনও নেশা ছিল না। অবশ্য আর একটা নেশা ছিল-বাদশার অন্তরঙ্গ না হলে তা জানা যেত না। এখন নিজের প্রায় প্রৌঢ় বয়েসে বুঝি নেশাটা না থাকলে মানুষের বেঁচে থাকা অর্থহীন। তাই নিয়ে এই গল্প।

    মানুষটা শুধু দিলখোলা বললে ভুল হবে, প্রচণ্ড ধর্মভীরু। পাঁচওয়াক্ত নামাজ কাজের ফাঁকে সেরে নিত।

    সেই কবে থেকে জাহাজে সফর করছে ঠিকঠাক বলতে পারে না। তবে যুদ্ধের আগে থেকে করছে এটা বলতে পারত। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে, ডারবানের কাছে কিছুদিন আটক ছিল এমনও খবর দিয়েছে। হেন বন্দর নেই যেখানে সে যায়নি। ক্ল্যান লাইন, সিটি লাইন সব লাইনেই সে কাজ করেছে।

    সেবারে সে আমার সঙ্গে ব্যাঙ্ক লাইনের জাহাজে উঠে এসেছিল। আমাদের জাহাজটার নাম এসএস টিবিড ব্যাঙ্ক। সে আমার ওয়াচের টিণ্ডাল। ওয়াচে স্টিম ঠিক রাখার দায়িত্ব তার। মোষের মতো খাটতে পারে। ঝড়ের সমুদ্রে এনজিন রুমে স্টিম নিয়ে মারমার কাটকাট অবস্থা—স্টিম নেমে যাচ্ছে, টন টন কয়লা হাঁকড়েও বয়লারের স্টিম ঠিক রাখা যাচ্ছে না। তখন বাদশা মিঞা কেমন পাগলের মতো ছোটাছুটি করত। ফায়ারম্যানদের গালিগালাজ করত। উপরে সিঁড়ি বেয়ে কয়লার বাঙ্কারে ঢুকে যেত। কয়লা সুটে ফেলে দম নিতে পারছি না, হড় হড় করে কয়লা নেমে যাচ্ছে। তখন বাদশা ছিল আমার কাছে ঈশ্বরের মতো। সে বেলচায় কয়লা তুলে বলত, যা নিয়ে যা। মেডিসিন-কার ভরতি করে দিত কয়লায়। আমি ঠেলে নিয়ে সুটে ফেলতাম। ঝড়ে জাহাজ টালমাটাল—দাঁড়াতে পারছি না, টলছি, কখনো উপুড় হয়ে পড়ে যেতাম, বাদশা টেনে তুলত আমাকে। সে আমার হয়ে সুটে কয়লা ফেলত। বলত, উঁইগুলোলের নীচে বসে হাওয়া খা। গতরে জোর পাবি।

    আবার নীচে ছুটত। ফার্নেসে গনগনে আঁচ। স্লাইস মেরে কিংবা র্যাগ ঢুকিয়ে কয়লা উলটে পালটে দিয়েও রেহাই নেই। হাওয়া ভালব ছেড়ে দিয়ে এক দৃষ্টে তাকিয়ে থাকত স্টিম গ্যাজের দিকে। পলক পড়ত না চোখে। জাহাজে ওঠার সময় বাদশাকে পাত্তা দিইনি। মাস্তারে দাঁড়িয়েছি। সবে ভদ্ৰাজাহাজে ট্রেনিং-এর পর সি ডি সি হাতে এসেছে। জাহাজে ওঠার ছাড়পত্র। কিন্তু ছাড়পত্র থাকলেই জাহাজে ওঠা যায় না। টের পেলাম দিনের পর দিন মাস্তারে দাঁড়িয়ে। সিপিং অফিসের লাগোয়া রাস্তা পার হয়ে বড়ো বড়ো টিনের চালা প্ল্যাটফর্মের মতো। সামনে সবুজ ঘাসের মাঠ। কিছু গাছপালা। এপ্রিল মে-র মাঝামাঝি সময় দুপুরের ঠাঠা রোদুরে গিয়ে দাঁড়াই। শিপিং অফিসের বোর্ডে কে লিখে যায়, ক্ল্যান লাইনের জাহাজের নাম।

    রিক্রুট হবে।

    বোর্ডে নাম দেখে সবাই দৌড়োয়। এবং লাইনে গিয়ে দাঁড়ালে দেখতে পায়, জাহাজ থেকে সাহেবসুবো মানুষ নেমে এসেছেন। নুয়ে নলি (সি ডি সি) দেখছেন। কার কত সফরের অভিজ্ঞতা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছেন। কে কোন পদে ক-টা সফর দিয়েছে জাহাজে, নলিতে’ সব উল্লেখ থাকে। জাহাজের কাপ্তান কিংবা চিফ ইঞ্জিনিয়ার নলি দেখেন, অভিজ্ঞতা দেখেন, শরীর দেখেন, তাগদ কত আছে লক্ষ করেন—তারপর পছন্দ হলে লাইনে চিরকুট ধরিয়ে দেন, পছন্দ না হলে দেন না।

    জাহাজের নাম কখনো বোর্ডে সপ্তাহকাল আগে লিখে দেওয়া হত। শিপিং অফিসে ঘোরাঘুরি। কখন কোন জাহাজে কোন অফিসার খুশি হয়ে চিরকুট ধরিয়ে দেবেন সেই আশায় ঘোরাঘুরি।

    আমিও ঘুরছি।

    রোজ বেলেঘাটা থেকে সকালে হেঁটে চলে যাই। ফিরি বিকেলে।

    কেউ আমাকে পছন্দ করে না। জাহাজ পাই না।

    বলতে গেলে জাহাজে কুলিকামিনের কাজ—একজন ভদ্রঘরের সম্ভ্রান্ত মুখচোখের আঠারো–উনিশ বছরের তরুণকে সাহেবদের মনে ধরতে নাই পারে। পারবে না। বড় হাড্ডাহাডিড়। কয়লার জাহাজ হলে তো আরও কঠিন। জাহাজে উঠে শেষে এটা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলাম।

    এনজিন জাহাজিদের কাজ কয়লা মারা, স্টিম ঠিক রাখা। সারেঙ, বড়ো টিণ্ডাল, ছোটো টিণ্ডালের ওয়াচ। চার ঘন্টা করে দিনে আট ঘন্টা ‘পরী’।

    জাহাজ আর পাই না। রোজ মাস্তারে দাঁড়াই। পোশাকে-আশাকে ভদ্র একজন তরুণকে কে নেবে কুলিকামিনের কাজে।

    ছোটো টিণ্ডাল বাদশা মিঞা লাইনে দাঁড়াল আর হয়ে গেল। তার পোশাকের কথা এখনও মনে আছে। সে পরেছিল খোপকাটা লুঙ্গি। ফুলহাতা কাচা শার্ট। গলায় গামছা মাফলারের মতো। পায়ে বুটজুতো তালিমারা। এত খারাপ লাগছিল। মনমরা হয়ে গাছতলায় বসে আছি।

    দেখি বাদশা আমার দিকেই আসছে। মুখভর্তি পান জর্দা। আর পিক ফেলছে যখন তখন। মাথার চুল ছোটো করে ছাঁটা। একটা সিগারেট ধরিয়েছে। জাহাজ পেয়ে যাওয়ায় সে সিগারেটের বিলাসিতা দেখাচ্ছে আমাকে।

    আমার মন খারাপ।

    রোজ লাইনে দাঁড়াই। সবাই জাহাজ পেয়ে যায়। আমার কপালে জাহাজ জোটে না। মন তো খারাপ হবেই। কোনো কম্মের না। হাতে সি ডি সি, দেখতেও মন্দ না। বেশ দীর্ঘকায়ও বলা যায়। তবে রোগাপানা—এটাই হয়তো অপছন্দের কারণ।

    সে যা হোক, আমিও নাছোড়বান্দা। জাহাজে সমুদ্রসফরের কোনো উল্লেখ না থাকলে নয়া আদমি লাইনে ভাবতেই পারে। জাহাজে কী মারমার কাটকাট—তাও ঠিক জানি না। তবে বুঝে ফেলেছি এ আমার কম্ম নয়। আমাকে জাহাজে তুলে লাভ নেই। তখনই দেখলাম বাদশা মিঞা আমার পাশে এসে গাছতলায় বসল। বলল, কি রে জাহাজ পাইলনি!

    বললাম, না চাচা। তোমার তো হয়ে গেল। তখনও আমি বাদশার নাম জানি না। তার কী কাজ জানি না। জাহাজে নতুন উঠলে কোলবয়ের কাজ পাব জানি। ছোটো টিণ্ডাল, বড়ো টিণ্ডাল সারেঙ থাকে জাহাজে তাও জানি। ভদ্ৰাজাহাজে ট্রেনিং-এর সময়ই বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, কী কাজ করতে হবে জাহাজে। কয়লার এনজিন হলে, কয়লা টানতে হবে। তেলের জাহাজ হলে এনজিন-রুমের প্লেট মোছামুছির কাজ। শিরিষ কাগজ মেরে রেলিং সিঁড়ি ঝকঝকে রাখার কাজ। তবে বরাত জোরে ফায়ারম্যানও হয়ে যেতে পারি। সফরে কেউ না কেউ পালায়। বন্দরে নেমে আর ফিরে আসে না। তখন কপাল খুলে যায়।

    কত কথা ভাবছি।

    আর তখনই বাদশা মিঞা বলল, ফালতু হইবা।

    সব শুনেছি, কিন্তু জাহাজে ফালতু বলে কোনো কাজ আছে জানতাম না। ফালতু বিষয়টা কী! মনে মনে আঁচ করার চেষ্টা করছি। তখন গাছ থেকে একটা কাক আমার মাথায় হেগে দিল।

    বাদশা বলল, যা গেল তোমার জামাখানা গেল।

    সে তার গলার গামছা দিয়ে পিঠ থেকে ময়লা মুছে দিল। তারপর কল থেকে জল এনে জামার সেই নোংরা অংশ ধুয়ে দিল। বাদশাকে পাত্তা দিচ্ছিলাম না। লোকটা এত নিজের বুঝতে পারিনি। আগেও দেখেছি শিপিং অফিসের ক্যান্টিনে গুলতানি মারছে। টুলে পা তুলে বসে বিড়ি টানছে। বাদশার আচরণ আমার পছন্দ হত না। কত কিসিমের মানুষজন যে থাকে! অথচ এতদিন মাস্তার দিচ্ছি, জাহাজ পাচ্ছি না, কেউ কোনো খোঁজখবর করেনি, কেবল ভদ্ৰাজাহাজ থেকে আমাদের যে ব্যাচটা বের হয়ে এসেছে তারাই আমার সুহৃদ ছিল। সবাই একে একে জাহাজও পেয়ে গেছে। একমাত্র আমার কপালেই জাহাজ জোটেনি।

    খারাপ লাগে না! কত না আশা! মাস গেলে প্রথম সফরে নববই টাকা মাইনে। খাওয়া থাকা পোশাক-আশাকের খরচ কোম্পানির। একটা সফর দিয়ে ফিরতে পারলে, হাজার বারোশো টাকা হয়ে যাবে। কত কিছু কেনাকাটা করব ভেবে রেখেছি, মাসে মাসে বাবার নামে মাসোহারা যাবে। বাবা টের পাবেন তাঁর নিখোঁজ পুত্র এখন জাহাজে। কোনো বন্দরে নেমে চিঠি লিখব ভেবেছি। বাবা অবাক হয়ে যাবেন, তাঁর পুত্রটি তবে বহুদূরের কোনো বন্দর থেকে তাঁকে চিঠি দিয়েছে। তিনি প্রতিবেশীদের খবর দেবেন, খোঁজ পাওয়া গেছে। জাহাজের চাকরি নিয়ে তাঁর পুত্র এখন দেশান্তরী। ফিরলে হয়! নানা রোমাঞ্চকর স্বপ্ন যখন মনে ঘোরাফেরা করছে, তখন মাস পার হয়ে যাওয়ায় একেবারেই ভেঙে পড়েছিলাম।

    বাদশা বলেছিল, জাহাজ পাইলা না ব। ফালতু হইতে রাজি? সারেঙসাব ফালতু খুঁজছেন? যদি রাজি হও জাহাজে উঠতে পার।

    বলেছিলাম, ফালতু আবার কী?

    হায় আল্লা, ফালতু বোঝ না! জাহাজে কাম করতে আইছ!

    মনে নানা আশঙ্কা। জাহাজে সমকামিতার রোগ থাকে। ফালতু তুলে নেওয়া কেন। প্রথমে বিরক্তই হয়েছিলাম। এমনকী পারলে বাদশাকে তেড়েও যেতাম। কিন্তু জাহাজ না পেয়ে এতই বিচলিত যে যা থাকে কপালে, ফালতু, ফালতুই সই। কোল বয় না, ফায়ারম্যান না, সব আশা আকাঙক্ষা ভেঙে চুরমার।

    বললাম, বলবেন তো চাচা, ফালতুটা কী আবার। আমাদের ট্রেনিং-এ ফালতু বলে কিছু ছিল না।

    আরে সারেঙসাবের পান তামুক সাজাইবা। গরমজল কইরা রাখবা। সারেঙসাবের ফোকসাল ঝাট দেবা। কাম কিছু বেশি না। আরাম আছে।

    কপালে মানুষের যে কী লেখা থাকে, নাহলে ফালতু হতেই বা রাজি হয়ে গেলাম কেন!

    আর কী করতে হবে। জামাকাপড় সারেঙসাবের কাচাকাচির কাজ। তবে বাবুর্চির কাজ করতে হবে না জানি। গ্যালিতে সবার রান্না হয় একসঙ্গে। সব জাহাজেই তিনটে গ্যালি থাকে। এনজিন-রুম-জাহাজিদের গ্যালি, ডেক-জাহাজিদের গ্যালি। সবচেয়ে ইজ্জতের গ্যালি চিফ কুকের। জাহাজের অফিসারদের খাবার তৈরি হয় চিফ কুকের গ্যালিতে। সে যাহোক রাজি হয়ে গেলে বাদশা বলল, লেখাপড়া জানা আছে!

    লেখাপড়া দিয়া কি হইব!

    আরে ব্যাডা বাঙ্গালিবাবু তুমি, লেখাপড়া জান না!

    তা কিছু কিছু জানি।

    খত লিখতে পারবা ত।

    কার খত।

    সারেঙসাবের। আমার, বড়ো টিণ্ডালের একজন লিখাপড়া আদমি না থাকলে খত লিখব কেডা কও!

    লেখাপড়া জানলে কদর বাড়বে জেনেই যেন বলা ‘তা আর বেশি কি! ও লিখে দিতে পারব।’

    ব্যাস, কাম ফতে। ওঠ। পাকা কথা হইয়া যাউক।

    বাদশা আমাকে সারেঙের কাছে টেনে নিয়ে গেছিল। তিনি বসেছিলেন জেটির ধারে। তাঁর সাঙ্গপাঙ্গদের সঙ্গে। একই জাহাজে সফর করবে। টিবিড ব্যাঙ্ক জাহাজের সারেঙ। এ-সফরে তিনি এনজিন-জাহাজিদের মাথা। তাঁর সঙ্গেই কাজ কাম নিয়ে জাহাজের সেকেণ্ড ইঞ্জিনিয়ারের কথা হবে। তিনি তাঁর লোকজনদের দিয়ে কাজ তুলে দেবেন। যতদিন সফর ততদিন মজুরি। জাহাজ দেশে ফিরে

    এলে কিংবা সফর শেষ হলে মজুরি খতম।

    সারেঙসাব বেশ মৌজে আছেন। দেশ থেকে এসে জাহাজ সঙ্গে সঙ্গে মিলে যাওয়ায় খুশি। কিছুটা দরাজ দিলেরও মানুষ। পরে তা টের পেয়েছিলাম।

    সাদা দাড়ি, মাথায় নামাজি টুপি। লেসের কারুকাজ করা। ফিনফিনে আদ্দির পাঞ্জাবি গায়ে। নীচে কালো রঙের গেঞ্জি। গলায় তাবিজ। বয়েস বাদশা মিঞার কাছাকাছি।

    আমাকে সামনে দাঁড় করিয়ে বলল, দ্যাখেন মিঞাসাব পছন্দ।

    সারেঙসাব আমাকে দেখছিলেন, তারপর বলেছিলেন, পারবা, বাঙ্গালিবাবুরা ক্যান যে ঝাঁকে ঝাঁকে জাহাজে আসছে বুঝি না। আরে মুসলমানের জান চাই, গোস্ত না খাইলে জানে কুলাইব না। বাদশা বলল, জববর লেখাপড়া জানে। খত লেখার অসুবিধা থাকব না।

    তবে সারেঙসাব বোধহয় জানতেন, বাঙ্গালিবাবুরা লেখাপড়া জানা আদমি। আমি যে খত লিখতে পারব—তাতে কোনো অবিশ্বাস নেই। কিন্তু মনের মধ্যে কোনো সংকোচ কাজ করলে যা হয়–বললেন, নাম কীরে ব।

    ‘ব’টা হলগে লজ। কথার শেষে ‘ব’ আগে ‘ব’। তখন সবে দেশভাগ হয়েছে। কলকাতা বন্দরের জাহাজিরা সবাই পূর্ব-পাকিস্তানের। যে-কোনো সময় বন্দর অচল করে দিতে পারে ভেবেই সরকার ভদ্ৰাজাহাজে জাহাজি ট্রেনিং দিয়ে হিন্দু ছেলেদের ছেড়ে দিচ্ছে। আমিও সেই দলের। তিন মাসের ট্রেনিং। তিন সাল ধরে চলছে। আমি সবে ট্রেনিং শেষে বের হয়েছি।

    অবশ্য জাহাজে উঠে সারেঙসাবই একদিন ডেকে বললেন, জাহাজে আইছ, কাম কাজ না শিখলে হইব কি কইরা ফালতু থাকলে নসিব খুলব না। যাও পরী দাও গা। বাদশার পরীতে কাম করবা।

    সেই থেকে বাদশা আমার ওপরওয়ালা। খত লিখে দেবার সময় আমি তার সব। এমন সব গোপন খবর খত না লিখলে জানতেও পারতাম না। বাদশা যে এত রসিক, তাও জানতাম না। ওর বিবিকে নিয়ে ইয়ার্কি ফাজলামিও কম করিনি। সেই থেকে ভাব। এবং বাদশার এত সব গুহ্য কথা জেনে ফেলায় দুজনের মধ্যে তুইলোকারি সম্পর্কও গড়ে উঠল।

    সেই বাদশা মিঞা আবার স্টকহোলডে বাঘের মতো তেড়ে আসত। সেই আবার ফোকসালে আমাকে বাঘের মতো ভয় পেত। এনজিন-রুমের তিনটে দৈত্যাকার বয়লারের পাশে বাদশা আর এক ছোটোখাটো দৈত্য। কাজ কামে সামান্য ত্রুটি থাকলেই তেড়ে আসত। চিৎকার করে বলত, ‘ক্যাডা কইছিল তরে জাহাজে আইতে। কয়লার সুট খালি, চিৎ হইয়া পইড়া আছস! ভরব ক্যাডা শুনি! আর ফোকসালে ফিরে এলে সেই বাদশা দরজায় টোকা মেরে বলত, ‘অ ব্যানার্জী মেহেরবানি হইব! আর একখানা যে কথা আছে!’ কখনো এনজিন-রুমের রাগ পুষে রাখতাম। তার জের পোহাতে হত বাদশাকে। বলতাম, না হবে না। পারব না। আমি এখন ঘুমোব। তর আর একখানা কথা শোনার সময় নাই।

    তখন হাহা করে হেসে উঠত সে। অরে ব্যানার্জী জাহাজ হইল গিয়া ইবলিশ। বোঝলা কিছু ইবলিশ কারে কয় বোঝ? শয়তান! শয়তানের পেটে আমরা ঢুইকা গেছি। গরমে মাথা ঠিক রাখতে পারি না। হাড্ডাহাড্ডি লাইগাই থাকে। কাজে কামে গাফিলাতি হইলে কসুর হয় রে ব্যানার্জী। বোঝস না ক্যান? দে খতখানা লিখা। জবাব আসে না ক্যান বুঝি না? আর একখানা কথা লিখা দে।

    নিরক্ষর মানুষটির জন্য তখন আমার কেমন মায়া হত। দেশে বিস্তর জমিজমা, পুকুর, দুই বিবি। গালমন্দ করলেই সে ব্যাজার হয়ে যায়।…তর লজ্জা করে না, বুড়া বয়সে শাদি করতে। একটা নাবালিকার জীবন নষ্ট করে দিলি! তুই মানুষ?

    তখনই সে বলত, পরানডা বড়ো কান্দে রে! কবে যে দেশে ফিরমু! ছোটো বিবি আমারে পাগল কইরা দিছে।

    ব্যানার্জী লিখা দে, আমরা বুনোসাইরিস যাইতেছি। সেখানে গিয়া বিবি তর খত না পাইলে মরমে মইরা যামু। লিখা দে ব্যানার্জী দিল আমার আনচান করে। পুকুরঘাটে তুই বইসা থাকস, চক্ষে তর কান্দন ঝরে, আমি ফিরা গেলে দুনিয়া উপুর কইরা দিমু তর কইলজার ভিতরে।

    এই নিয়ে পরপর দু-খানা খত গেছে কলম্বোর ঘাটে। তৃতীয় খতটি লিখলাম কেপটাউনের ঘাটে। বাদশা চিঠিখানা গোপনে পোস্ট করে আসত। কারো হাতে দিত না। বাদশার এই কুকীর্তির কথা আমিই জানি। দু-হাত জড়িয়ে ধরে বলেছে, কাউরে কইস না। নসিব আমার। শেষ বয়সে মাইয়াখানের মিষ্টি মুখ দেইখা দিলে যে কি হইল রে ভাই! জমিজমা লিখা দিছি, দেনমোহরের টাকা দিছি। অর বাপের ভিটায় ঘর তুইলা দিছি। কি করি নাই ক! এক একটা বাক্য শেষ করে থম মেরে বসে থাকত বাদশা।

    কী হল!

    না, আর একখানা কথা আছে। লিখা দে ছোটো বিবিরে, দেশে ফিরা গিয়াই আববুর শাদি দিমু।

    আববুটা আবার কে?

    আমার ছোটো পোলা। শেষ কাম। পোলার শাদি দিলে আল্লার কাছে মোনাজাত করা ছাড়া আর কিছু কাম থাকব না! চিঠিটা তারপর হাতে দিতে গেলে সে নিল না। বলল, সবটা পড়। শুনি। সবটা পড়ার পর সে কী ভাবল কে জানে—বলল, আর একখানা কথা বাকি আছে।

    তোমার মুণ্ডু আছে। থাকল তোমার চিঠি! এ কি রে শেষ হয় না। আর একখানা কথা বাকি আছে? বাদশা তোমার কথা ইহজীবনে আর শেষ হবে না! কে তোকে মাথার দিব্যি দিয়েছিল, বুড়া বয়সে বালিকার মুণ্ডু চিবাতে তোর বিবেকে বাঁধল না!

    ‘অরে ব্যানার্জী, মাথা গরম করিস না। ফুলের বাস কে বা না নেয় রে ব্যানার্জী। আমার ইজ্জত নিয়ে টানাটানি করিস না, দোহাই আল্লার–শুনতে পাইব কেউ। আমার কেন যে মাথা গরম হয়ে গেল সহসা বুঝি না। আসলে এই বয়েসে বাদশার এক বিবি থাকতে আবার শাদি করা অনুচিত কাজ হয়েছে ভেবে মনে মনে কি আমি তার প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে গেছি। সেই বালিকাবধূর ছবি চোখ বুজলে আমিও যেন দেখতে পেতাম। এক পাল মুরগি তাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে, পায়ে মল, কানে মাকড়ি, নাকে নোলক। এক গ্রাম্য বালিকা গাছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে সবুজ শস্যখেত মাড়িয়ে, কোথাও যেতে চেয়েছিল। বাদশা তাকে জবাই করেছে। সে চিঠির জবাব দেবে কেন! আমার মনে হত ক্ষোভে জ্বালায় সে অস্থির।

    বাদশা আমার বাঙ্কের পাশে মাথা নীচু করে বসে আছে। সে জাহাজে ওঠার আগে দেশে শাদি করে এসেছে আমি বাদে জাহাজের কেউ জানে না। সে জানে, এই গোপন খবর ফাঁস হয়ে গেলে তার ইজ্জত থাকবে না। ইমানদার মানুষ ভাববে না।

    তবু কেন যে ওর সরল সাদাসিধে মুখ দেখে আমার মায়া হল বুঝি না। বললাম, দে। বল, আর কী লিখতে হবে।

    সে বলল, ‘লেখ। কথা মোতাবেক দেনমোহরের টাকা তর বাপের কাছে গচ্ছিত আছে। কথা মোতাবেক তিন কানি জমি লিখা দিছি। কথা মোতাবেক দেশে ফিরা আর অ তিন পদ গহনা দিমু। তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘বাদশা কথার খেলাপ জানে না বুঝলি!’

    ‘তোর কি মায়া দয়া নেই। কথার খেলাপ হয়। তার কাছে তোর কথার দাম কী! সে তো শেষ হয়ে গেছে।‘

    বাদশার চোখ ছলছল করে উঠল। বলল, মায়া দয়া আমার নাই! পরানডা বুড়া বয়সে তবে কান্দে ক্যান ক।

    বুঝলাম, কথা বাড়িয়ে লাভ নেই। বললাম, আর তো কথা নাই!

    সে চুপ। বুঝলাম ওর আরও একখানা কথা আছে। সে কীভাবে তা প্রকাশ করবে বুঝতে পারছে না। একটা চিঠি তার দু-একদিনে শেষ হতে চায় না। হয়তো এখন চিঠিটা নিয়ে উঠে যাবে,আবার কী মনে পড়বে, অথবা প্রকাশের ভাষা খুঁজে পাবে, তখন তরতর করে নীচে নেমে আসবে। এলও ঠিক। পরদিন সকালে এসেই বলল, অ ব্যানার্জী কথা আছে দু-খান।

    বল, এবারে দু-খান কথা!

    হ। লেখ, তুই আমার বুকের ছিনা।

    লিখে বললাম, বল। সে বলল, লেখ তুই আমার বুকের লৌ। ছিনা বুঝি না লৌ বুঝি না, না পেরে বললাম, লৌ মানে!

    লৌ বুঝিস না? তুই কী করে! তুই না কলেজ পাস? তুই লৌ কারে কয় জানস না?

    না জানি না। বড় জ্বালাতে পারিস!

    ‘ইবলিশ জানস না, লৌ কারে কয় জানস না! তুই কি পাস তবে!’ আমি চুপ করে থাকায় সে খানিকটা দমে গেল। তারপর অপরাধী মুখে বলল, ‘লৌ হইল ছিনার রক্ত। বিবির বাপজান কইল, টিণ্ডাল সাব আমার মাইয়াডার শাদি দিবার বাসনা হইছে। আপনে এলেমদার মানুষ সাব। যদি তিন কানি জমি লিখা দ্যান আপনের লগে শাদি দেই।

    আর তুই রাজি হইয়া গেলি?

    রাজি না হইয়া পারি রে ব্যানার্জী। লৌ জল করা টাকা। আট বেটা বিটি। কেবল দেও দেও। বেটারা ওৎ পাইতা আছে—কবে বাজানের ইন্তেকাল হইব। আমার কথা কেউ ভাবে না রে!

    বুড়ো হলে লোক ফালতু হয়ে যায় বুঝিস না?

    আমি ফালতু!

    ফালতু ছাড়া কী? চিঠির জবাব, পরের ঘাটেও পাবি না। মাথা কুটে মরবি।

    বিবির মুখের মিষ্টি হাসিখান দেখলে অ-কথা মুখে তর আইত না। পেটি মাথার রওনা হলে তার কি কান্দন। আমারে কার কাছে রাইখা গ্যালেন মিঞাসাব!

    এরপর কথা বলা বৃথা।

    ‘তবে লিখা দে, বুনোসাইরিসের ঘাটে বিবি তর খত না পাইলে পরান আমার উড়াল দিব। আমার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘জানের ভয় থাকলে ঘাবড়াইয়া যাইতে পারে। কী কস। চিঠি না দিয়ে থাকতে পারব না। কী কস?’

    না, বাদশা মিঞা বুনোসাইরিসের ঘাটে চিঠি পায়নি। কার্ডিফেও না। পোর্ট অফ জার্সিতেও না। ঘাটে জাহাজ ভিড়লে সে সবার আগে দৌড়োয়। এজেন্ট অফিস থেকে সবার চিঠি দিয়ে গেছে। সবার চিঠি আসে—তার চিঠি আসে না। সে চিঠির আশায় সারেঙের ঘরে ঢোকে সবার আগে, ফেরে সবার শেষে।

    প্রতি ঘাটেই তার এই চিঠি লিখে দেওয়া ছিল আমার কাজ। তবে তার কাছ থেকে একটা খবর গোপন করে গেছি। চিঠি এসেছিল। সারেঙসাব আমাকেই দেন, চিঠি বিলি করতে। চিঠি পড়ে দিতে। বাদশা মিঞার নামেও চিঠি এসেছিল। আমার কেন যে মনে হয়েছিল, এ-চিঠি কোনো দুঃসংবাদ বয়ে এনেছে। চিঠি আগে পড়ে দেখা দরকার। দেখলামও। মিলে গেছে। তার বালিকাবধূ আর ছোটোবেটা নিখোঁজ। জানি না কেন তাকে চিঠিটা দিতে সাহস পাইনি। বাদশা পৃথিবীতে যে তবে সত্যি ফালতু হয়ে যাবে। আমার এই প্রবীণ বয়সে বার বারই মনে পড়ে, ফুলের বাস কে বা না ভালোবাসে। বয়স বড়ো তীর্যক গতি। তার ক্ষমতা ফুরোয়, তবু ফুলের বাস কে বা না ভালোবাসে। বাদশাকে কত গালাগালি করেছি। তাকে খুনি বলেছি। এখন ভাবলে বড়ো খারাপ লাগে। যা সহজে এবং নিয়মের মধ্যে লেখা থাকে, এবং যতই বয়স হোক, মানুষের এই প্রতিক্রিয়ার শেষ নেই। বাদশাকে সেদিন ফালতু ভাবতে পারি। এখন কেন যে মনে হয় বাদশার কথাই ঠিক, ফুলের বাস কে বা না ভালোবাসে। ভাবলে আজকাল আমারও মন খারাপ হয়ে যায়। ফুরিয়ে আসছে সব।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleনানা রসের ৬টি উপন্যাস – অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়
    Next Article ৩০০ বছরের কলকাতা : পটভূমি ও ইতিকথা – ডঃ অতুল সুর

    Related Articles

    তসলিমা নাসরিন

    সেইসব অন্ধকার – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    আমার প্রতিবাদের ভাষা – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    অগ্রন্থিত লেখার সংকলন – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    বন্দিনী – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    নির্বাসন – তসলিমা নাসরিন

    August 20, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    নেই, কিছু নেই – তসলিমা নাসরিন

    August 20, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025
    Our Picks

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025

    মহাস্থবির জাতক – প্রেমাঙ্কুর আতর্থী

    September 24, 2025

    হিউয়েন সাঙের দেখা ভারত – প্রেমময় দাশগুপ্ত

    September 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }