Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    অদৃশ্য ঘাতক – কাজী মায়মুর হোসেন

    কাজী মায়মুর হোসেন এক পাতা গল্প170 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    অদৃশ্য ঘাতক – ৫

    ০৫.

    সন্ধে নেমে আসছে, চল্লিশ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে রলিন্সে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছে নেই প্যাট্রিক হলের। বিউয়েলদের র‍্যাঞ্চের দিকে, উত্তর-পুবে রওয়ানা হলো সে। শুনেছে ওখানে টাকার বিনিময়ে কট ভাড়া দেয়া হয়। আর কোনও উপায় না দেখলে সে ওখানের পোস্ট অফিসে টেলিগ্রামটাও রেখে যাবে। পরে র‍্যাঙ্কার সংগ্রহ করে নিতে পারবে।

    সাঁঝের শেষ আলোয় বিউয়েলদের স্টোরের সামনে ঘোড়া থেকে নামল সে। মাঝ বয়েসী চুলপাকা এক লোক স্টোর থেকে বেরিয়ে এসে ঘোড়াটা বার্নে নিয়ে গেল। ফিরে এসে বলল, ভেতরে গিয়ে তাড়াতাড়ি হাত মুখ ধুয়ে নাও, মিস্টার, এখনই সাপার খাওয়ার জন্য ডাক পড়বে।

    স্যাডল রোল হাতে স্টোরে ঢোকার পর মিষ্টি করে হেসে প্যাট্রিককে স্বাগতম জানাল এক তরুণী। তুমিই বোধহয় ডেপুটির সাথে এসেছ? বলল সে, ডেপুটি ভেবেছিল আজ রাতটা তুমি বক্স বিতেই কাটাবে।

    সে এখানেই থাকবে, নিজের নাম জানিয়ে বলল প্যাট্রিক হল।

    মই বেয়ে উঠতে হবে ওপরে, স্টোর কাউন্টারে দাঁড়ানো একজন যুবককে দেখাল তরুণী। বার্ট দেখিয়ে দেবে কোথায় থাকবে তুমি। আজ রাতে তুমিই একমাত্র বোর্ডার।

    ডাইনিঙ রূমে ঢুকে বার্ট আর্থারের পিছু পিছু মই বেয়ে ওপরের হল ঘরে পৌঁছুল প্যাট্রিক। ঘরে চারটা কট। এককোণে একটা ওয়াশস্ট্যাণ্ড। দিনের শেষ আলো আসছে ছোট একটা জানালা দিয়ে। ওখান থেকে নিচে তাকালে বার্নের পেছন দিকটা দেখা যায়।

    সাপারের জন্য তাড়াতড়ি আসতে বলে নিঃশব্দে মই বেয়ে নেমে গেল বার্ট আর্থার।

    ওয়াশস্ট্যান্ডে গিয়ে গা-হাত-পা পরিষ্কার করল প্যাট্রিক। জানালা দিয়ে দেখল স্যাডল খুলে করালে ঘোড়া রাখছে চুল পাকা লোকটা। জানালা গলে সহজেই নিচে নেমে যাওয়া যাবে, চার ফুট নিচেই লাগোয়া কিচেনের ছাদ। একটা পরিকল্পনা আকৃতি নিতে শুরু করল প্যাট্রিকের মাথায়।

    মই বেয়ে নিচে নেমে যখন বারে এল তখনও সে চিন্তা করছে একই। ব্যাপারে। দুটো ড্রিঙ্ক নিল সে মাথা পরিষ্কার করার জন্যে। তারপর ডাইনিঙ রূম থেকে বেলের আওয়াজ পেয়ে সাপারের জন্য ওখানে গেল।

    টেবিলে চারজনের জন্য প্লেট রাখা হয়েছে। খেতে বসার পর অলিভা জিজ্ঞেস করল, ডেপুটি তোমাকে নিশ্চয়ই হিউ হুবার্টের কথা বলেছে। বলেছে না?

    হ্যাঁ, অন্যমনস্কভাবে উত্তর দিল প্যাট্রিক। প্লেট থেকে চোখ তুলে তাকাল অলিভার দিকে। এখান থেকে ডেপুটি কোথায় গেছে, তোমাদের এখানে রাত কাটাবে না?

    চিঠিটা গায়েব হওয়ার আগে যারা এখানে ছিল তাদের সবার নামের লিস্ট নিয়েই চলে গেছে। কোথায় যাবে বনে যায়নি।

    হিউ হুবার্টই নিশ্চয়ই চিঠিটা নিয়ে গেছে, বলল-পাকা চুলো। হেনরিখ বিউয়েল। কিন্তু লোকটা কে হতে পারে?

    দুবছর আগে জুন মাসে লিস্টের পনেরো জন কে কোথায় ছিল খবর নেবে ডেপুটি স্ট্যানলি, বলল অলিভা, প্রথমে যাবে টম ওয়েস্টের ওখানে, তারপর কাল সকালে সুইটওয়াটারের জেফারসন আর অন্যান্যদের র‍্যাঞ্চে।

    তাহলে ডেপুটি বক্স বিতেও খোঁজ নেবে, মন্তব্য করল প্যাট্রিক নিরাসক্ত গলায়।

    ওমাহা থেকে ক্রুরা ফেরার আগে না, মাথা নাড়ল হেনরিখ বিউয়েল।

    প্লেট ধধায়ার সময় ইচ্ছে করলে আমাকে সাহায্য করতে পারো, বার্ট, খাওয়া শেষ হওয়ার পর বিরাট সুযোগ দিচ্ছে এমন ভঙ্গিতে যুবকের দিকে তাকাল অলিভা।

    টেবিল ছেড়ে উঠে বারে চলে এল প্যাট্রিক আরেক পেগ গেলার জন্য। সবকিছু গভীর ভাবে ভাবতে হবে। মেয়েটার পেছনে ঘুর ঘুর করা বার্ট আর্থার রাতে আবার থেকে যাবে না তো? অনেকক্ষণ পর বাইরে বেরিয়ে করাল আর বার্নের সামনে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করল সে। ঘোড়াটা আর স্যাডল কোথায় রাখা হয়েছে দেখে। আরেকবার নিশ্চিত হলো। লক্ষ করল বাড়ি থেকে একশো গজ দূরে। করালের পেছন দরজা।

    ফিরে এসে দেখল স্টোরের দরজায় দাঁড়িয়ে বিষণ্ণ চেহারায় যুবতীর কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছে বার্ট আর্থার। সে চলে যাওয়ার খানিক পরে দরজায় আঁচড়ানোর শব্দ হতে এগিয়ে এসে দরজা খুলে দিল হেনরিখ বিউয়েল। একটা মাদি কুকুর প্রবেশ করল ঘরে। বয়স হয়ে গেছে, সেজন্যে এখানেই থাকে, লজ্জিত হেসে ব্যাখ্যা করল অলিভা।

    সকালে দেখা হবে, আড়মোড়া ভেঙে বলল প্যাট্রিক হল। ব্রেকফাস্টের সময় তোমাদের বোধহয় ঘুম থেকে টেনে তুলতে হবে আমাকে। অনভ্যস্ত শরীরে রলিন্স থেকে এতদূর ঘোড়ায় চড়ে এসে শেষ। হয়ে গেছি।

    মই বেয়ে ওপরে উঠে গেল সে, গা এলিয়ে শুয়ে পড়ল কটে। কিছুক্ষণ পর উঠে বসে লণ্ঠন জ্বালল। স্যাডল রোল খুলে নতুন শার্ট প্যান্ট, মোজা, শেভিঙ কিট, স্নিকার আর একটা ৪৫ সিক্সগান বের। করল। .৩৮ সিক্সগানটা শোল্ডার হোলস্টার থেকে খুলে মেঝেতে নামিয়ে রাখল সে। .৪৫টা বালিশের তলায় রেখে আবার শুয়ে পড়ল।

    নিচে শুতে যাওয়ার আগে টুকিটাকি কাজ সারছে বিউয়েলরা, ঠুকঠাক আওয়াজগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনল সে।–তারপর একসময়। চারদিকে পিন পতন নীরবতা নামল। আজ রাতে একটা প্রাণীও ডাকছে না কেন যেন। লণ্ঠনটা নিভিয়ে দিল প্যাট্রিক।

    .

    রাত একটার সময় বিছানা ছাড়ল। অন্ধকারে জামাকাপড় পরে বুট জোড়া হাতে নিয়ে নিঃশব্দে গিয়ে দাঁড়াল জানালার কাছে। বালিশের নিচ থেকে বের করে বেল্টে খুঁজে নিয়েছে ৪৫ সিক্সগান। জানালা পথে কিচেনের। ছাদে লাফিয়ে নামল সে। সেখান থেকে মাটিতে। বার্নে নিয়ে গিয়ে ঘোড়ায় স্যাডল চড়াল। আওয়াজ যাতে না হয় সেজন্যে জন্তুটাকে। হাঁটিয়ে নিয়ে গেল আধমাইল। তারপর স্যাডলে উঠে ঘোড়া ছোটাল। বিলি বেঞ্চলি মারা গেলে সব টাকা জোডি পাবে। ওর কাছ থেকে ব্ল্যাকমেল করে পুরো টাকা খসিয়ে নেয়া কঠিন হবে না।

    বক্সবি র‍্যাঞ্চের গেটের খুঁটিতে ঘোড়া বেঁধে হেঁটে এগুলো অন্ধকার বাড়িটা লক্ষ করে। পোর্টে উঠে সদর দরজায় নক করল। ঘরের ভেতর থেকে খালি পায়ে কেউ হেঁটে আসছে শব্দ পেল সে।

    কে? ভেতর থেকে ঘুম জড়ানো কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল র‍্যাঞ্চার।

    টেলিগ্রাম, মিস্টার বেঞ্চলি, বামহাতে নাক টিপে ধরে বলল প্যাট্রিক। তার ডানহাতের ৪৫ কোল্ট দরজার দিকে তাক করা। শীতল হাসি খেলে গেল ঠোঁটে। সত্যিই একটা টেলিগ্রাম নিয়ে এসেছে সে। র‍্যাঞ্চারও জানে ওমাহা থেকে টেলিগ্রাম আসবে গরু বিক্রির খবর নিয়ে।

    একমিনিট, ঘরের ভেতরে লণ্ঠন জ্বলে উঠল। বোল্ট খুলে খোলা দরজায় এসে দাঁড়াল নাইট শার্ট পরা বিলি বেঞ্চলি।

    কোঁচকানো বিছানা, জুলন্ত লণ্ঠন এবং নাইট শার্ট এই তিনটেই প্রমাণ করবে খুনী রাতে এসেছিল। ট্রিগার টানতে শুরু করল প্যাট্রিক হল, চেম্বার খালি হওয়ার আগে থামল না। ঝাঁকি খেয়ে পিছিয়ে গেল র‍্যাঞ্চার, ঘরের মধ্যে চিত হয়ে আছড়ে পড়ল। প্যাট্রিক পরীক্ষা করে নিশ্চিত হলো মারা গেছে বিলি বেঞ্চলি। ঘরে ঢুকে একটা টেবিলের ওপর টেলিগ্রামটা নামিয়ে রাখল। তদন্তের সময় স্বাভাবিকভাবেই সবাই মনে করবে বিকেলে ওটা দিয়ে গেছে সে। দশঘণ্টা পরের এই ঘটনার জন্য কেউ ওকে দায়ী ভাববে না।

    সন্তুষ্ট মনে গেট পর্যন্ত হেঁটে এল সে, ট্রাক মোছার ঝামেলায় গেল, ট্র্যাক পেলেও কেউ বলতে পারবে না বিকেলের পর রাতেও সে এসেছিল। স্যাডলে উঠে ঘোড়াটাকে দ্রুতগতিতে ছোটাল সে বিউয়েল স্টোরের উদ্দেশে। অর্ধেক পথ এসে একটা গর্তে সিক্সগানটা ফেলে দিল।

    স্টোরের সামনে দিয়ে ঘোড়া হাঁটিয়ে করালে রাখল সে। স্যাডলটাও খুলে একই জায়গাতে ঝোলাল। একটা রেন ব্যারেলের ওপরে দাঁড়িয়ে অনেক কষ্টে কিচেনের ছাদে উঠল। যেখান থেকে। জানালা দিয়ে ঘরে ঢুকে কাপড় জামা ছাড়ল। কটে শুয়ে ভাবতে লাগল। কোনও ভুল করেছে কিনা।

    কাউন্টির সবচেয়ে নামকরা ডেপুটি খুনীকে খুঁজতে এই অঞ্চলে এসেছে, এই হত্যাটাকে সে কি ওই হিউ হুবার্টের কাজ বলেই ধরে, নেবে? হুবার্টের কীর্তি মনে করলেই বা কি, না করলেই বা কি ওর নিজের জোরাল অ্যালিবাই আছে। আপনমনে হাসল প্যাট্রিক হল।

    .

    সকালে হেনরিখ বিউয়েল এসে ডাকার পরও কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে পড়ে থাকল সে। দ্বিতীয়বার ধাক্কা দেয়ার পর ঘুম ভাঙার অভিনয় করে উঠে বসে আড়মোড়া ভাঙল। জানালা দিয়ে উজ্জ্বল সূর্যরশ্মি ঢুকছে ঘরে। উঠে পড়ো, মিস্টার হল, বিশ মিনিটের মধ্যে ব্রেকফাস্ট, তাকে চোখ মেলতে দেখে বলল বিউয়েল।

    এমন ঘুম জীবনে ঘুমাইনি, হাই তুলে মুখে হাত চাপা দিল প্যাট্রিক। আসলে সারারাতে এক ফোঁটা ঘুমও হয়নি তার।

    বিশ মিনিট পর শেভ ও মুখ-হাত ধোয়া শেষে খোঁড়াতে খোঁড়াতে–নাস্তার টেবিলে এসে বসল সে। অলিভার উদ্দেশে নড় করে বলল, এত পথ ঘোড়ায় চড়ে একেবারে মারা পড়েছি। আগামী কালের আগে আর রলিন্স ফিরতে পারব না। বক্স বির ঘটনাটা জানাজানি হওয়ার আগে; এখান থেকে চলে যেতে সাহস পাচ্ছে না সে। কেউ যদি কিছু সন্দেহ করে বসে?

    হেনরিখ বিউয়েল খাওয়া থামিয়ে বোদ্ধার মত মুচকি হেসে মাথা। ঝাঁকাল। চল্লিশ মাইল অভ্যেস না থাকলে অনেক দূরের পথ।

    রলিন্স থেকে স্টেজ আসে কবে? জানতে চাইল প্যাট্রিক হল।

    সপ্তাহে দুই দিন আসে। বারের ঠিক নেই, চিঠি আর রসদপত্রের প্রয়োজনের ওপর নির্ভর করে ব্যাপারটা।

    ওদের ব্রেকফাস্ট শেষ হয়নি, একটা ঘোড়া ছুটে এসে থামল স্টোরের সামনে। দরজায় টোকার শব্দ হলো। ডেপুটি স্ট্যানলি আছে এখানে? বাইরে থেকে ব্যস্ত কণ্ঠে জানতে চাইল আগন্তুক।

    ক্যান্টলিন র‍্যাঞ্চের কাউহ্যাণ্ডের গলা মনে হচ্ছে, অনুচ্চ স্বরে বলল হেনরিখ বিউয়েল, তারপর গলা চড়িয়ে ডাকল, কি ব্যাপার, ভেতরে এসো!

    ঘরে যে লোকটা ঢুকল তার চেহারা দেখে বোঝা যায় খারাপ খবর। নিয়ে এসেছে। স্ট্যানলি কোথায়?

    ক্রীকের তীরের কোনও র‍্যাঞ্চে রাত কাটিয়েছে সে। কেন?

    বসের কাছ থেকে একটা খবর নিয়ে ভোর বেলায় বক্স বিতে গিয়েছিলাম। ওখানে গিয়ে দেখি ডোরওয়েতে বিলি বেঞ্চলি মরে পড়ে আছে। মাঝরাতে ঘুম থেকে ডেকে তুলে কে যেন তার বুক ঝাঁঝরা করে দিয়েছে।

    ০৬

    খুনী জোসেফ ওয়েন ছাড়া আর কেউ না, জেমস ওয়াটের ফোরম্যান বলল ডেপুটিকে। অন্যান্য কয়েকটা র‍্যাঞ্চেও এই একই কথা শুনেছে স্ট্যানলি। ওরা সবাই হিউ হুবাটের অদৃশ্য হয়ে যাওয়া চিঠির ব্যাপারে বলাবলি করছে, বিলি বেঞ্চলির হত্যার খবর ওরা কেউ এখনও জানে না।

    লিস্টটা আরেকবার দেখল স্ট্যানলি। পনেরোটা নাম আছে কাগজটায়। জোসেফ ওয়েনের নামও রয়েছে। ফোরম্যানের দিকে তাকাল। ওই লোকের কথা কেন মনে হচ্ছে তোমার?

    কথার সাথে তার কাজের কোনও মিল নেই। নিজের পরিচয় দেয়। ক্যাটল বায়ার বলে, অথচ কেউ তাকে ক্যাটলের খোঁজ নিতেও দেখেনি। কখনও। কেউ জানে না লোকটা কোথকে এসেছে। কেউ যদি হয় তো ওই জোসেফ ওয়েনই ছদ্মবেশী হিউ হুবার্ট।

    লোক্টা থাকে কোথায়?

    ঠিক নেই, তবে জুয়ার টেবিলের ধারে কাছে। প্রায় সিক্সগান চালানোর সমানই দক্ষতা আছে তার কার্ড খেলায়।

    পরের র‍্যাঞ্চটায় খানিকটা নিশ্চিত তথ্য পেল স্ট্যানলি, ওয়েন? কয়েকদিন আগে টম বুচারের কেবিনে গেছে সে। পথের হদিসও বাতলে দিল র‍্যাঞ্চার।

    দ্রুতগতিতে সুইটওয়াটারের দক্ষিণ পাড় ধরে ডেভিলস গেটের দিকে ঘোড়া ছোটাল স্ট্যানলি। বিকেলে কেবিনটা চোখে পড়ল ওর। দেখে মনে হয় না কেউ থাকে। কোনও ঘোড়া বা জন মানুষের চিহ্ন নেই ধারে কাছে। কেবিন থেকে কিছুটা দূরে ঝোঁপের মধ্যে ঘোড়া বেঁধে হেঁটে এগুলো সে।

    উইলো কাঠের কেবিন। দরজাটা নদীর দিকে। নক করতে গিয়েও থমকে দাঁড়াল, হোলস্টার থেকে সিক্সগান বের করে ডানহাতে নিল। ওয়েনই যদি হুবার্ট হয়, ওকে দেখার সাথে সাথেই গুলি করবে লোকটা।

    ভেতর থেকে নকের জবাব দিল না কেউ। দরজা ঠেলা দিয়ে খুলে ঘর খালি দেখল সে। তবে মানুষ বাস করে এখানে। বাঙ্কে পড়ে আছে রোল করা একটা ব্লাংকেট। স্টোভের লোহা ঠাণ্ডা হয়নি এখনও। পাশে। মেঝেতে পড়ে আছে চ্যালা কাঠ আর খাবারের একটা ঝুলি।

    পুরো ঘর সার্চ করল স্ট্যানলি। ওর জানা হয়ে গেল জোসেফ ওয়েন এখানেই বাস করে। দেয়ালে জুলসবার্গ, কলোরাডোর লেবেল লাগানো একটা কোট ঝুলতে দেখল সে। একটা পকেটে খুঁজে পেল জোসেফ ওয়েনের নাম লেখা ওয়ালেট।

    ওই কোটেরই ভেতরের একটা পকেটে যা খুঁজছিল পেয়ে গেল স্ট্যানলি। মাইলস সিটি, মনট্যানা থেকে হিউ হুবার্টের নামে লেখা হয়েছিল চিঠিটা। নিশ্চিত হয়ে গেল ডেপুটি, হুবার্ট ছাড়া এই চিঠি আর কারও দরকার হতে পারে না।

    এনভেলপ খুলে চিঠিটা পড়ল সে। বাড লরেন্স লিখেছে টাকা ধার চেয়ে। ফাঁসির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে এডমণ্ড হুপার সত্যি কথাই বলেছে প্রাণের ভয়ে। ওয়েনই তাহলে হুবার্ট, আর কোনও সন্দেহ থাকল না স্ট্যানলির মনে। এখানেই অপেক্ষা করতে হবে ওকে, খুনীটাকে জীবিত ধরার চেষ্টা করতে হবে।

    কাজটা সহজ হবে না। সিক্সগানে হুবার্টের হাত ভয়ঙ্কর চালু। মরার আগমুহূর্ত পর্যন্ত লড়বে লোকটা। সে জানে লিঞ্চিও মবের হাতে মারা না পড়লেও কোর্টে তার ফাঁসি হবে। কার্বনে লরেন্সের কপালে কি ঘটেছে এতদিনে নিশ্চয়ই জেনে গেছে সে।

    কেবিন থেকে বেরিয়ে একশো গজ দূরে আরেকটা ঝোঁপের আড়ালে ঘোড়া বেঁধে ট্র্যাক মুছতে মুছতে কেবিনে ফিরে এল স্ট্যানলি। দরজা বন্ধ করে দিল, তারপর সিক্সগানটা হাতে নিয়ে দরজার দিকে মুখ করে একটা চেয়ারে বসে পড়ল। অপেক্ষা করতে আপত্তি নেই ওর।

    .

    বাইরে সন্ধের ছায়া নেমে এল, তবু ফিরল না জোসেফ ওয়েন। লোকটা শেষ পর্যন্ত ফিরবে কিনা সন্দেহ দেখা দিল স্ট্যানলির মনে। এই এলাকায় খবর বাতাসের আগে ছোটে। ডেপুটি শেরিফ তাকে খুঁজছে জেনে যায়নি তো জোসেফ ওয়েন ওরফে হুবার্ট? সেক্ষেত্রে বাকি জীবন অপেক্ষা করলেও আসবে না আর লোকটা। কাউন্টি ছেড়ে পালিয়ে যাবে মালপত্র ফেলে রেখে।

    রাত নামতেই বেশ ঠাণ্ডা পড়ল। স্টোভে আগুন জ্বেলে হুবার্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করার ঝুঁকি নিল না স্ট্যানলি, কট থেকে ব্ল্যাংকেট এনে চাদরের মত করে গায়ে জড়াল। সারারাত অপেক্ষা করবে সে। সবাই বলেছে। জুয়া খেলার বদঅভ্যেস আছে ওয়েনের। হয়তো মাঝরাত করে ফিরবে লোকটা।

    জুয়ার ব্যাপারটা মনে আসতেই ডেপুটির চিন্তার মোড় ঘুরে গেল। রলিন্স থেকে আসার পথে প্যাট্রিক হল নামের এক লোকের সাথে আলাপ হয়েছিল গতকাল। চেহারা-পোশাক দেখেই বোঝা যায় জুয়াড়ী। কোটের নিচে লোকটার বাম বগলের কাছটা উঁচু হয়ে ছিল। সম্ভবত ছোট ক্যালিবারের কোনও হ্যাণ্ডগান।

    চমৎকার চেহারার একটা মেয়ে বগি থেকে নামার কিছুক্ষণ পর ট্রেন থেকে এই লোককে নামতে দেখেছে সে। অন্যমনস্ক ডেপুটির চিন্তাসোত অন্যদিকে ঘুরে গেল অজান্তে। মেয়েটা কে? ওরকম কালো মায়াবী চোখ আর চুড়ো করে বাঁধা মেঘের মত কালো চুল আগে কখনও দেখেনি সে। রলিন্সে ফিরে আবার তাকে দেখতে পাবে কিনা আনমনে ভাবল স্ট্যানলি। মেয়েটা অপূর্ব-..। নদীর তীরে একটা অস্বাভাবিক শব্দ ওর চটকা ভেঙে দিল। হুবার্ট

    কেবিনে ঢোকার আগে চারপাশ পরখ করে দেখছে? লোকটা স্ট্যানলির ঘোড়াটা খুঁজে পেলে তার সামনে দুটো পথ খোলা থাকবে। ঘোড়া নিয়ে সরে পড়তে পারে সে, অথবা ঘোড়ার মালিকের মুখ বন্ধ করে দেয়ার জন্য আসতে পারে সিক্সগান হাতে।

    নদীর পানি বয়ে যাওয়ার মৃদু শব্দ ছাড়া আর কোনও আওয়াজ নেই। দশ মিনিট পেরিয়ে গেল। তারপর প্রায় নিঃশব্দে ঘুরতে শুরু করল দরজার নব। ফাঁক দিয়ে তারার আলো ঢোকায় স্ট্যানলি বুঝল খুলে গেছে দরজা। একজন লোক ঢুকল ঘরে। তার পেটে সিক্সগান তাক করে স্টানলি বলল, তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম, জোসেফ, তোমাকে…

    কথা শেষ হওয়ার আগেই গর্জে উঠল লোকটার সিক্সগান। না। দেখেই শুধু শব্দ শুনে গুলি করেছে ওয়েন। কেবিনের পেছন দেয়ালে ঠক শব্দে গাঁথল বুলেট। দেরি করার ঝুঁকি না নিয়ে ট্রিগার টানল স্ট্যানলি। হাঁটু ভাঁজ হয়ে গেল ওয়েনের।

    আগে লোকটার সিক্সগান সংগ্রহ করল ডেপুটি অন্ধকার হাতড়ে। তারপর লণ্ঠন জ্বালল। আলো জ্বলে উঠতে লোকটার ব্যথায় বিকৃত চেহারা দেখতে পেল সে। বাম হাত রক্তাক্ত, কাঁধের মাংসপেশী খুঁড়ে বেরিয়ে গেছে বুলেট। তুমি তো হিউ হুবার্ট না বলে উঠল ওয়েন। লোকটার আচরণ অস্বাভাবিক লাগল ডেপুটির কাছে।

    আমি না, তুমি হিউ হুবার্ট, শান্ত স্বরে বলল সে।

    ভুল বললে, তিক্ত চেহারায় মাথা নাড়ল ওয়েন।

    পরে কথা হবে। লোকটাকে ধরে কটে শুইয়ে দিল স্ট্যানলি। রক্তপড়া বন্ধ করতে হবে। ওয়েনের শার্টের হাতা ছিড়ে ওটা দিয়ে কাঁধে ব্যান্ডেজ বেঁধে দিল। মন্তব্য করল, হাড়ে পিছলে অন্য দিক দিয়ে বেরিয়ে গেছে।

    আমার হ্যাটটা দেখ, ওটাও এফোঁড় ওফোঁড় করে দিয়েছে, হাসার চেষ্টা করল ওয়েন।

    হ্যাট পরীক্ষা করল স্ট্যানলি। উঁচু ক্রাউন ফুটো করে বেরিয়ে গেছে। একটা বুলেট। কে? কৌতূহলী হয়ে উঠল ডেপুটি।

    হিউ হুবার্ট।

    একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকল স্ট্যানলি। বোঝাতে চাইছ তুমি হিউ হুবার্ট না?

    তিক্ত, বিরক্ত চেহারায় ডেপুটির শ্যেনদৃষ্টি ফিরিয়ে দিল ওয়েন। গতসপ্তাহে দুবার আমাকে খুন করার চেষ্টা করেছে হিউ হুবার্ট। সে জানে আমাদের দুজনের একজনকে মরতেই হবে। আজকে উইলোর বনে তোমার ঘোড়াটা দেখে মনে করেছিলাম সে-ই এসেছে।

    সন্দেহের দোলায় দুলে উঠল স্ট্যানলির মন। ওরা দুজনই দুজনকে হিউ হুবার্ট মনে করে ভুল করে বসেনি তো! কিন্তু তাহলে হিউ হুবার্টের চিঠিটা? পকেট থেকে বের করে চিঠিটা দেখাল সে। ফেরিস পোস্ট অফিস থেকে চুরি না করলে এটা তোমার কাছে কোত্থেকে এল?

    চিঠি সরিয়েছি, স্বীকার করল ওয়েন। সরিয়েছি ওর খোঁজ পাব। বলে। দুবছর ধরে ওকে খুঁজছি আমি। সামনাসামনি লোকটাকে দেখিনি কখনও, শুধু জানি সে ফেরিসে আছে।

    হুঁ, গম্ভীর চেহারায় মাথা দোলাল ডেপুটি। প্রমাণ করতে পারবে জোসেফ ওয়েন তোমার আসল নাম?

    পারব।

    দুবছর আগে জুন মাসে কোথায় ছিলে?

    জুলসবার্গ, কলোরাডোর জেসি র‍্যাঞ্চে।

    লোকটার বলার ভঙ্গিতে দৃঢ়তা দেখে পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে স্ট্যানলি বুঝল মিথ্যে বলছে না ওয়েন। কটের ধার থেকে উঠে স্টোভের সামনে এসে বসল সে। স্টোভ জ্বেলে কফি তৈরি করল।

    আগুনের আঁচে ঘরটা গরম হয়ে উঠার পর কফি কাপ হাতে মুখোমুখি বসল ওরা দুজন। এবার বলো হিউ হুবার্টকে কেন খুঁজছ তুমি, জানতে চাইল স্ট্যানলি।

    কয়েক বছর আগে, গম্ভীর চেহারায় কিছুক্ষণ মনে মনে কথা গুছিয়ে নিয়ে বলতে শুরু করল ওয়েন, জুলসবার্গ শহরের শেষ প্রান্তে একটা কটেজে নামকরা একজন ডাক্তার আর তার বউ থাকত। এক রাতে। নকের শব্দ শুনে দরজা খুলে দেয় ডাক্তার। দেখে সামনে দাঁড়িয়ে আছে দুজন লোক। একজন আহত, অন্যজন ডাক্তারের পেটে সিক্সগান চেপে, ধরে সঙ্গীর চিকিৎসা করতে বলে। চিকিৎসা করে ডাক্তার। যাওয়ার আগে ডাক্তার আর তার বউকে খুন করে যায় ওরা মুখ বন্ধ রাখার জন্যে।

    নড করল জেরাল্ড স্ট্যানলি। মনে হচ্ছে ডেনভারের কোনও পেপারে ঘটনাটা পড়েছি আমি। কিন্তু ওই খুনের সাথে ভোমার কি সম্পর্ক?

    ডাক্তার আমার চাচা। বাবা। ছোট বেলায় মারা যাওয়ায় ওদের কাছেই বড় হয়েছি আমি, লেখাপড়া শিখিয়েছে ওরা আমাকে।

    নিচু করে শিস দিল ডেপুটি। ব্যাপারটা আইনের হাতে ছেড়ে দাও।

    আইন দুবছর সময় পেয়েছে, এখনও ঘুরে বেড়াচ্ছে সে, বন্য হিংস্রতা ফুটে উঠল ওয়েনের গলার স্বরে। হিউ হুবার্টকে খুন করার অধিকার আছে আমার। দুবছর ধরে আমি বেঁচে আছি প্রতিহিংসার আগুন নেভাব বলে।

    দুটো সিগারেট বানিয়ে আগুন জ্বেলে একটা ওয়েনের দিকে বাড়িয়ে ধরল স্ট্যানলি। ওই লোক হিউ হুবার্ট ছিল তুমি বুঝলে কি করে?

    প্রতিবেশীরা এসে দেখে চাচী মারা গেছে, কিন্তু চাচা তখনও বেঁচে ছিল। লোকগুলোর ব্যাপারে মরার আগে কথা বলতে পেরেছিল চাচা। একজনের বাঁ ঊরুতে এক সপ্তাহের পুরানো বুলেটের ক্ষত ছিল। সে হিউ নামে সঙ্গীকে ডেকেছিল।

    তোমার চাচা আর কিছু বলে যেতে পারেনি, ওখান থেকে কোথায়। যাবে ওরা, বা আর কিছু?

    না, আমি পেপার খুঁজে বের করি এক সপ্তাহ আগে কোথায় কোথায় গোলাগুলি হয়েছে। কার্বন কাউন্টি, ওয়াইয়োমিঙে পাসির ওপর হামলা আমার দৃষ্টি কাড়ে। লরেন্স আর হুপারকে চিনে ফেলে ওরা, বাকি দুজনকে চিনতে পারেনি। এর একসপ্তাহ পরে চাচার কটেজে আসে দুজন লোক। তাদের একজন আহত। এর বেশি সূত্র আমার হাতে ছিল না, কাজেই ওদের খুঁজতে শুরু করলাম আমি।

    সিগারেটে শেষ টান দিয়ে মেঝেতে টিপে নেভাল জোসেফ ওয়েন। ফেরিসের চিঠিটা ছাড়াও আরেকটা চিঠি আছে আমার কাছে। শাইয়্যানে পোস্ট মাস্টারকে ঘুস দিয়ে বের করেছি। বুকপকেট থেকে চার ভাঁজ করা একটা কাগজ বের করে ডেপুটির দিকে বাড়িয়ে ধরল সে।

    কাগজের ভাঁজ খুলল স্ট্যানলি। মেয়েলি হাতের লেখা। চিঠিটায় লেখা আছে:

    গ্যানন,

    রলিন্স।

    হুবার্ট ফেরিসে। মধ্য সেপ্টেম্বরে কাজটা হবে, বলেছে মাসের প্রথমেই আসতে হবে তোমাকে। হেয়েস হোটেলে উঠবে। অনেক মজা হবে তখন।

    লরা।

    চিন্তিত চেহারায় থুতনি ডলল স্ট্যানলি। এ ধরনের মেয়েদের আপত্তিকর অবস্থায় পাকড়াও করে প্রায়ই কোর্টে চালান দিই আমরা। কিন্তু লরা নামটা আগে শুনেছি বলে মনে পড়ছে না।

    আমিও মেয়েটাকে খুঁজে পাইনি, বলল জোসেফ ওয়েন। যাই হোক হুবার্টকে আমার দরকার, দুটো বুলেট পায় সে আমার কাছে। তুমি বলেছ দুইবার তোমাকে খুন করার চেষ্টা করেছে হুবার্ট। কিন্তু তুমি ওকে খুঁজছ সেটা সে কি করে জানবে?

    বুদ্ধি খাটাও, ডেপুটি। সবাই বলাবলি করছে ফেরিস পোস্ট অফিস থেকে হুবার্টই চিঠিটা সরিয়েছে। কিন্তু হুবার্ট জানে কাজটা অন্য কারও। সেসময় স্টোরে যারা ছিল তাদের মধ্যে আমার নামও আছে। জুলসবার্গের সেই ঘটনার পর যদি সে পেপার পড়ে থাকে আমার নাম পরিচিত ঠেকবে তার কাছে, ডাক্তারের ভাতিজার নাম ফলাও করে ছাপা হয়েছিল। দুইয়ে দুইয়ে চার মেলাতে না পারার মত বোকা না হিউ হবার্ট।

    হঠাৎ লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়াল স্ট্যানলি ঘোড়ার খুরের শব্দ শুনে। তারপর মাথা নেড়ে বলল, হিউ হুবার্ট আওয়াজ করে জানান দিয়ে আসত না।

    কেবিনের সামনে ঘোড়া থেকে নামল আগন্তুক, চেঁচিয়ে জিজ্ঞেস করল, ডেপুটি, ভেতরে আছ?

    বাড স্যাণ্ডক্রীকের গলা চিনতে পারল স্ট্যানলি। এসো, বাড।

    দরজা খুলে কেবিনের ভেতরে ঢুকল উত্তেজিত র‍্যাঞ্চহ্যাণ্ড। কে যেন গতকাল রাতে ঘুম থেকে ডেকে তুলে খুন করেছে বিলি বেঞ্চলিকে!

    ০৭.

    সকালে রলিন্স জেলের একটা সেল থেকে বেরিয়ে এল শহরের সবচে নামকরা লইয়ার, জ্যাক হিগিনস। উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়েছে, বন্দী হুপারের। স্বীকারোক্তি নিতে পারেনি সে।

    ফিফথ স্ট্রীট পেরিয়ে মারফি বিল্ডিঙের দোতলায় নিজের অফিসে চলে এল সে। ছোট দুকামরার অফিস। জেলের উল্টোদিকে। রিসেপশনে ঢুকে থমকে দাঁড়াল। গত তিনদিনে আমূল বদলে গেছে ঘর দুটোর চেহারা।

    গুড মর্ণিঙ, আঙ্কল জ্যাক, হাসিমুখে বলল রোসা হিগিনস। বাবা মারা যাওয়ায় তিন দিন আগে একমাত্র চাচার কাছে চলে এসেছে সে।

    কেউ এসেছিল, রোসি?

    মিস্টার ফ্রান্সিস। জানতে চেয়েছে তুমি তার ব্যাংকের বোর্ড অত ডিরেকটরে থাকতে রাজি আছ কিনা।

    তাকে হ্যাঁ বলে দাও।

    কার্বন কাউন্টি জার্নাল থেকে একটা টেলিগ্রাম এসেছে। ওরা,–জিজ্ঞেস করেছে তুমি হুপারের হয়ে কেস লড়বে কিনা।

    ওদের না বলে দাও,ভেতরের অফিসে ঢুকে পড়ল জ্যাক হিগিনস। টেবিলের ওপর ফুলদানীতে একগুচ্ছ ফুল দেখে চওড়া হাসি ফুটল তার ঠোঁটে। চেয়ারে বসে পড়ে ভাবল অফিসটা আর চেনাই যায় না। মাত্র তিনদিন হলো এসেছে রোসা, এরইমধ্যে একশো একটা কাজ নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে। ভাতিজির বিয়ে হয়ে যাবে ভেবে মন খারাপ হয়ে যাওয়ায় টাক চুলকাল বুড়ো লইয়ার। ভাল পাত্র খুঁজতে হবে।

    দ্রুতগামী ঘোড়ার শব্দ শুনে চেয়ার ছেড়ে উঠে জানালার পাশে গিয়ে বাইরে তাকাল সে। ডেপুটি স্ট্যানলিকে শহরে ঢুকতে দেখে চিন্তায় পড়ে চাদি চুলকাল দ্বিতীয়বার। মাঝরাতে রওনা না হয়ে থাকলে এত সকাল সকাল শহরে পৌঁছতে পারত না ডেপুটি। লইয়ার জানে হুবার্টকে গ্রেফতার করতে ডেপুটিকে ফেরিসে পাঠিয়েছে শেরিফ। হিউ হুবার্ট নামে সত্যিই কি কেউ আছে? জ কুঁচকে মাথায় হাত বোলাল জ্যাক হিগিনস।

    হুপার তার জবানবন্দী প্রত্যাহার করার পর হবার্ট লোকটার অস্তিত্ব নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে অনেকের মনে। আজ সকালে হুপার জানিয়েছে চাপের মুখে প্রাণ বাঁচাতে মিথ্যে বলেছে সে। তারপরও হুপারের হয়ে কোর্টে দাড়াতে রাজি হয়নি জ্যাক হিগিনস।!

    জানালার নিচে হিচর‍্যাকে ডেপুটিকে ঘোড়া বেঁধে নামতে দেখে আবার এসে চেয়ারে বসল সে।

    .

    সিঁড়ি বেয়ে দ্রুত পায়ে কেউ উঠে আসছে, শুনতে পেয়ে টেবিলে স্থূপ। হয়ে থাকা কাগজপত্রের ওপর থেকে চোখ তুলল রোসা হিগিনস। সশব্দে দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করতে দেখল বিশালদেহী ডেপুটি স্ট্যানলিকে। চিনতে অসুবিধা হলো না, শহরের সবাই গত কয়েকদিন ধরে এই লোকের কথা বলাবলি করছে। রলিন্সে এলে জেরাল্ড স্ট্যানলিকে না চিনে উপায় নেই, মনে মনে বলল রোসা।

    লইয়ারের অফিসে বহু আকাঙ্ক্ষিত মেয়েটাকে দেখতে পেয়ে মুহূর্তের জন্য কেন এসেছে ভুলে গেল স্ট্যানলি। বোকার মত তাকিয়ে থাকল কিছুক্ষণ। তারপর হাত দিয়ে গালের খোঁচা খোঁচা দাড়ির স্পর্শ নিয়ে লাজুক হাসল।

    নীরবতা ভাঙল রোসা, আঙ্কল জ্যাকের কাছে এসেছ?

    হ্যাঁ, জরুরী কথা আছে।

    বলে ফেলো, গলার আওয়াজ পেয়ে নিজের অফিস থেকে বেরিয়ে এসেছে লইয়ার।

    তোমার ক্লায়েন্ট বিলি বেঞ্চলিকে খুন করা হয়েছে, ঘুরে দাঁড়িয়ে গভীর চেহারায় বলল স্ট্যানলি।

    বাধা না দিয়ে ডেপুটির কাছ থেকে পুরো ঘটনা শুনল জ্যাক হিগিনস। তারপর ভাতিজির দিকে তাকাল। রোসি, দুটো টেলিগ্রাম লিখে এখনই পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

    ধীরে ধীরে টেলিগ্রামের বক্তব্য বলে গেল লইয়ার, রোসা লিখল। প্রথম টেলিগ্রামটা অ্যাডাম বেঞ্চলির জন্য, দ্বিতীয়টা হেফটন লাইভ স্টক কোম্পানীতে ওমাহা, নেব্রাস্কায়।

    .

    অজানা আততায়ীর হাতে তোমার বাবা নিহত হওয়ায় আমরা আন্তরিক দুঃখিত স্টপ কবর দেয়ার ব্যবস্থা করব স্টপ জোডির ঠিকানা জানলে তাকেও জানাও।

    জ্যাক হিগিনস।

    .

    দ্বিতীয় টেলিগ্রামে ক্যাটল কোম্পানীকে র‍্যাঞ্চারের মৃত্যু সংবাদ জানিয়ে আরও বলা হলো:

    অ্যাডাম পশ্চিমে ক্যাটল সহ রওয়ানা হয়ে গিয়ে থাকলে দয়া করে ট্রেনের কণ্ডাক্টরের মাধ্যমে খবরটা ফরোয়ার্ড করে দেয়ার ব্যবস্থা কোরো।

    .

    অ্যাডাম খবরটা পেলে মালগাড়ি ছেড়ে মেইল ট্রেনে চলে আসতে পারবে ফিউনারালের আগেই, ডেপুটিকে ব্যাখ্যা দিল লইয়ার।

    টেলিগ্রাম দুটো পাঠাতে রোসা অফিস ছেড়ে চলে যাওয়ার পর স্ট্যানলি জিজ্ঞেস করল সে কোনও সাহায্য করতে পারে কিনা।

    তুমি জানো জোডি বেঞ্চলি কোথায়?

    মাথা নাড়ল ডেপুটি। ডেনভার থেকেও একজন এসেছে ওকে খুঁজতে। বক্স বিতেও গিয়েছিল। কিন্তু এমনকি বিলি বেঞ্চলিও জানত না। তার ছোট ছেলে কোথায়।

    ডেনভারের লোকটার নাম কি?

    প্যাট্রিক হল। লোকটা বোধহয় জোডির কাছে টাকা পায়। র‍্যাঞ্চার মারা যাওয়ার দশ ঘণ্টা আগে বক্স বিতে গিয়েছিল সে।

    হুম, টাক চুলকাল লইয়ার। ওই লোকও র‍্যাঞ্চারকে খুন করে থাকতে পারে।

    উঁহু, মাথা নাড়ল স্ট্যানলি। আমি বিউয়েলদের জিজ্ঞেস করে জেনেছি ওদের ওখানেই রাত কাটিয়েছে প্যাট্রিক হল। লোকটা .৩৮। ব্যবহার করে, কিন্তু র‍্যাঞ্চার খুন হয়েছে .৪৫-এর গুলিতে। তাছাড়া…

    তাছাড়া কি?

    হিউ হুবার্টকে ধরতে পারিনি। ধরন দেখে মনে হয় কাজটা তার। দুবছর আগে জুলসবার্গেও এক ডাক্তার আর তার বউকে ঠাণ্ডা মাথায় খুন করেছিল লোকটা। এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে এই কাউন্টিতে। সে যদি মনে করে থাকে র‍্যাঞ্চার তার পরিচয় জেনে ফেলেছে।

    প্যাট্রিক হল লোকটা এখনও ফেরিসেই আছে? থামিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করল জ্যাক হিগিনস।

    না, রলিন্সে এসে হোটেল ম্যাক্সওয়েলে উঠেছে। পকেট থেকে, একটা কাগজ বের করে লইয়ারের দিকে বাড়িয়ে ধরল সে। প্যাট্রিক হল ট্রেন থেকে নামার পর টেলিগ্রাফার তাকে এটা দিয়েছিল বিলি বেঞ্চলিকে পৌঁছে দেয়ার জন্য। পৌঁছে দিয়েছে সে। তদন্তের জন্য আমি যখন যাই টেলিগ্রামটা ভোলা অবস্থায় হলঘরের টেবিলে পড়ে ছিল।

    কাগজের লেখাগুলো পড়ার পর কালো হয়ে গেল জ্যাক হিগিনসের চেহারা। টাক চুলকে বলল, স্ট্যানলি, আরেকবার বলো ঠিক কখন কোন্‌দিন মারা গেছে বিলি বেঞ্চলি।

    বারো তারিখ, আন্দাজ রাত তিনটার দিকে।

    খারাপ ব্যাপার হয়ে গেল, স্ট্যানলি, খুব জঘন্য আইনের প্যাচে পড়ে। গেলাম, মাথা চুলকে বলল লইয়ার। জোডি চলে যাওয়ার পর অসুখে পড়ে আমাকে দিয়ে উইল লিখিয়েছিল র‍্যাঞ্চার। ক্যাটল আর র‍্যাঞ্চ বড়। ছেলে অ্যাডাম আর সমস্ত টাকা ছোট ছেলে জোডিকে দিয়ে গেছে সে। মরার সময় র‍্যাঞ্চারের ক্যাটল বেচা টাকা ছিল প্রচুর, কিন্তু ক্যাটল ছিল না একটাও।

    লইয়ারের কাছ থেকে টেলিগ্রামটা নিয়ে আরেকবার পড়ল স্ট্যানলি। মনে তো হয় টাকাগুলো দিয়ে ক্যাটল কেনা হয়ে গেছে। ট্রেনে করে ওগুলোকে পাঠিয়েও দেয়া হয়েছে।

    তাতে কিছু যায় আসে না, আইন দেখবে মরার সময় র‍্যাঞ্চারের সম্পত্তি কোন অবস্থায় ছিল। আমাকে আইনগত ঝামেলা মেটাতে উইলে দায়িত্ব দেয়া আছে। ঘটনা যা দাঁড়াচ্ছে তাতে তো বাবার সম্পত্তি থেকে অ্যাডাম বেঞ্চলি বঞ্চিত হবে, র‍্যাঞ্চের কয়েক একর জমি ছাড়া সবকিছুই পাবে জুয়াড়ী জোডি বেঞ্চলি।

    ওদের দুজনকে সমান ভাগ দেয়ার কোনও রাস্তা নিশ্চয়ই আছে, বিড়বিড় করল স্ট্যানলি।

    থাকলেও আমার জানা নেই। জোডি চাইলে সবকিছুই অ্যাডামের কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারে। বাবা মরায় তার তো লাভই হয়েছে!

    তুমি বলতে চাইছ জোডির হাত ছিল?

    আমি কিছুই বলতে চাইছি না, আর কারও তো কোনও স্বার্থ দেখছি না।

    পাওনাদারের স্বার্থ আছে, চিন্তিত কণ্ঠে বলল স্ট্যানলি। প্যাট্রিক হল। শক্ত অ্যালিবাই আছে লোকটার, কিন্তু হিউ হুবার্টকে টাকা দিয়ে কাজটা করিয়ে নিয়ে থাকতে পারে।

    প্যাট্রিক হলের ব্যাপারে আলাপ করছিলে তোমরা?খোলা দরজায় দাঁড়িয়ে কৌতূহল প্রকাশ করল রোসা। এইমাত্র টেলিগ্রাম দুটো পাঠিয়ে দিয়ে ফিরে এসেছে সে।

    ভাতিজির প্রশ্নে ভ্রূ কুঁচকে গেল লইয়ারের। তুমি তাকে চেনো? হ্যাঁ, আমরা একই ট্রেনে এসেছি। এইমাত্র রাস্তায় তার সাথে আবার দেখা হলো। রলিন্সে কদিন থাকবে জিজ্ঞেস করাতে বলল জোডি বেঞ্চলি আসার আগ পর্যন্ত আছে।

    তাহলে বোধহয় বহুদিন থাকতে হবে ওকে, রোসার দিকে তাকিয়ে হাসল লইয়ার।

    মিস্টার হলের ধারণী ডেনভার বা শাইয়্যানের পেপারে খবরটা। পড়ে ছুটে আসবে জোডি বেঞ্চলি।

    লোকটার ধারণা ভুল নয়, স্বীকার করল স্ট্যানলি।

    লইয়ারও মাথা ঝাঁকাল। ওয়াইয়োমিঙের সবচেয়ে বড় র‍্যাঞ্চারের খুন হওয়া পেপারগুলোর ভাগ্য! হেডলাইন করবে ওরা বড় টাইপে। খবরটা চোখে পড়তেই কত টাকা বাগানোনা যাবে জানতে ছুটে আসবে জোডি। প্যাট্রিক হল ঠিকই বলেছে, রলিন্সে থাকলেই বড়শিতে মাছ গাঁথতে তার সুবিধা হবে।

    ফেরিসে আরও অনেক কিছু ঘটে গেছে, নীরবতা ভাঙল স্ট্যানলি। গোলাগুলির ব্যাপারটা খুলে বলে জোসেফ ওয়েনের সংগ্রহ করা প্রথম চিঠিটা লইয়ারকে দেখাল।

    চিঠি পড়া শেষে মুখ তুলে তাকাল জ্যাক হিগিনস। লরা নামের কোনও মেয়েকে চেনো?

    না, বিনা কারণে গাল দুটো রক্তিম হয়ে উঠল স্ট্যানলির। সম্ভবত রোসার সামনে প্রশ্নটা করা হয়েছে বলেই। প্রত্যেকটা র‍্যাঞ্চে গিয়ে তদন্ত করেছি আমি, দুটো তারিখ মিলিয়ে দেখেছি। র‍্যাঞ্চার খুন হওয়ার সময় কে কোথায় ছিল খবর নিয়েছি। দুবছর আগে কে কোথায় ছিল, তাও জানার চেষ্টা করেছি। পকেট হাতড়ে লইয়ারকে একটা কাগজ দিল স্ট্যানলি। এখানে সাতজনের নাম আছে যাদের খুনী হিসেবে সন্দেহ করা যায়। এদের কোনও অ্যালিবাই নেই।

    সবার সাথে তুমি কথা বলেছ?

    সময় ছিল না। র‍্যাঞ্চারা আমাকে কথা দিয়েছে এই সাতজন আজ বিকেলের মধ্যে রলিন্সে এসে শেরিফের অফিসে রিপোর্ট করবে।

    সাতজনের একজন যদি সত্যিই হিউ হুবার্ট হয়, তোমার কি ধারণা আসবে সে রলিন্সে? জিজ্ঞেস করল রোসা।

    না এসে উপায় নেই, কেউ সরে পড়ার চেষ্টা করলেই তাকে হুবার্ট বলে মনে করবে সবাই। ওই সাতজনকে আমরা হুপারের সেলের সামনে দাঁড় করিয়ে দেখব হুপার মুখ খোলে কিনা।

    খুলবে না, মাথা নাড়ল লইয়ার। হুপার জবানবন্দী প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এখন হুবার্টের ব্যাপারে কোনও কথা বলা মানে তার আগের স্বীকারোক্তি ঠিক ছিল সেটা মেনে নেয়া।

    দেখা যাক কি হয়, বলল স্ট্যানলি। বিদায় নিয়ে বেরিয়ে এল অফিস থেকে, সিঁড়ি বেয়ে নামতে শুরু করল দ্রুত পায়ে। শেরিফ রস লেম্যানের কাছে পুরো ঘটনা আবার খুলে বলতে হবে ওকে। বিকেল তিনটের দিকে ওমাহা থেকে একটা টেলিগ্রাম এল।

    জ্যাক হিগিনস
    রলিন্স, ওয়াইয়োমিঙ

    আমরা আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি স্টপ তোমার টেলিগ্রাম পাবার আগেই নয়শো হেফার এবং বিশটা সেরা ষাড় নিয়ে অ্যাডাম বেঞ্চলি রওয়ানা হয়ে গিয়েছে স্টপ তোমার মেসেজ ফরোয়ার্ড করে দেয়া হলো।

    হেফটন লাইভ স্টক কমিশন কোং।

    দূরের একটা শহর থেকে দ্বিতীয় টেলিগ্রামটা এল শেষ বিকেলে।

    জ্যাক হিগিনস
    রলিন্স, ওয়াইয়োম

    ট্রেন বদল করছি স্টপ কাল বিকেলে পৌঁছে যাব

    অ্যাডাম বেঞ্চলি।

    *

    টেলিগ্রামগুলো পড়ে টেবিলে রাখার পর জানালা দিয়ে বাইরে তাকাল রোসা। পুরো শহরে উত্তেজনার ছোঁয়া লেগেছে, স্যাণ্ডক্রীকে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো আলোচিত হচ্ছে সবখানে। লোকজন চার পাঁচজন করে জটলা করছে রাস্তায়। সবার মনে একই প্রশ্ন, হিউ হুবার্ট কে?

    তারপুলিনের ছাদ দেয়া একটা ওয়্যাগন ফার্নিচার স্টোরের সামনে থামতে দেখল রোসা। কম্বল মোড়া একটা শরীর বয়ে নিয়ে যাওয়া হলো। স্টোরের ভেতর। পশ্চিমে অনেক জায়গাতেই ফার্নিচার ডিলাররা করোনারের কাজও করে।

    বিকেল পাঁচটায় শহরের সব গুঞ্জন, হৈহট্টগোল থেমে গেল। দূর থেকে ভেসে আসছে কয়েকটা ঘোড়ার খুরের শব্দ। আসছে ওরা! সাতজনই! রাস্তা থেকে কর্কশ কণ্ঠে চেঁচাল কে যেন।

    ঘাম আর ধুলোয় মোড়া সাতজন রাইডার এসে ঘোড়া থামাল–শেরিফের অফিসের সামনে। পঁচজনের চেহারা গম্ভীর। বাকি দুজনের একজন বোকার মত হাসছে, অন্যজনের চেহারা অনুভূতিশূন্য। সবারই স্যাডলে কারবাইন। প্রত্যেকেই উরুর সাথে নিচু করে বাধা হোলস্টারে সিক্সগান ঝুলিয়েছে।

    আমরা এসেছি, শেরিফ, লুকিয়ে বসে আছ কোথায়, গম্ভীর চেহারার একজন চেঁচাল তিক্ত কণ্ঠে।

    ০৮.

    শেরিফ লিভারি স্টেবলেরও পার্টনার। সাতজন রাইডারকেই চেহারায়। চেনে সে। এদের মধ্যে পাঁচজন ভবঘুরে। অফিস থেকে বেরনোর আগে ডেপুটির দেয়া লিস্টে চোখ বোলাল রস লেম্যান।

    ম্যাভরিক প্লামার, বার হানড্রেডের স্ট্রেম্যান
    জস হারমার, কারট হুইলের
    স্যাণ্ডি পেকোস, র‍্যাফটার অ্যাণ্ড র‍্যাফটারের
    কিরন হার্পার, জে বারের
    বিল লেপম্যান, ফ্রাই প্যানের র‍্যাঙলার

    বাকি দুজন হচ্ছে অক্স বোর স্ট্রেম্যান জুডাস অ্যাডলার এবং লু মেয়ার। শেরিফকে অফিস থেকে বেরিয়ে আসতে দেখে এই দুজন ছাড়া বাকিরা চেঁচামেচি জুড়ে দিল। সবচে উত্তেজিত বার হানড্রেডের প্লামার। শেরিফের উদ্দেশে চেঁচাল সে, তোমার বুকে ওই ব্যজিটা না থাকলে এতক্ষণে পিটিয়ে রাস্তায় শুইয়ে ফেলতাম, রস! অন্যদের চেহারা দেখে বোঝা যায় তাদের মনেও একই ইচ্ছে জেগেছে।

    হাত তুলে লোকগুলোকে চুপ করতে ইশারা করল শেরিফ। তারপর বলল, তোমাদের বিরুদ্ধে কোনও চার্জ আনা হয়নি। আমি হিউ হুবার্টকে খুঁজছি। এডমণ্ড হুপার তাকে চেনে, দেখি তোমাদের দেখে হুপার কি বলে। ভেতরে চলো।

    শেরিফের পেছন পেছন পাথরের জেলভবনে ঢুকল সবাই। একপাশে দাঁড়িয়ে আছে ডেপুটি স্ট্যানলি। তীক্ষ্ণ নজরে দেখছে লোকগুলোর চেহারায় কোনও পরিবর্তন হয় কিনা।

    সেলের শিকে নাক ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এডমণ্ড হুপার। লোকগুলোর ওপর চোখ বোলাল সে একবার। চেহারায় কোনও পরিবর্তন নেই। স্ট্যানলি দেখল রাইডারদের চেহারাও নির্বিকার।

    এদের মধ্যে হিউ হুবার্ট আছে? কণ্ঠস্বরে হতাশা লুকাতে পারল না শেরিফ।

    হুবার্ট বলে কেউ নেই। জান বাঁচাবার জন্য মিথ্যে বলেছিলাম, ঘুরে দাঁড়িয়ে কটে গিয়ে বসল হুপার মুখ ফিরিয়ে।

    রাইডারদের চেহারায় স্বস্তির আভাস খুঁজল স্ট্যানলি। নেই। হুপার মিথ্যে বলছে জেনেও করার কিছু দেখতে পেল না শেরিফ। রাইডারদের দিকে তাকিয়ে বলল, তোমাদের অযথা বিরক্ত করেছি বলে দুঃখিত।

    লোকগুলোর পিছু নিয়ে জেলহাউস থেকে বের হলো স্ট্যানলি। রাস্তায় অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। বেশিরভাগই লোক। পেছনে দাঁড়িয়ে মজা দেখছে মহিলারা। ওরা হতাশ হলো শেরিফের অফিস থেকে সাতজনকেই বেরতে দেখে। সবার ওপর চোখ বোলাল ডেপুটি। মহিলারা অপরিচিতা নয় কেউ, এদের মধ্যে লরা নামের রহস্যময়ী থাকতে পারে না।

    তবে শহরেই কোথাও আছে লরা। হিউ হুবার্টের পরিচয় জানে মেয়েটা। সাতজন রাইডারের মধ্যে যদি হিউ হুবার্ট থাকে লরার সঙ্গে হয়তো সন্ধের পর দেখা করবে সে। চল্লিশ মাইল পথ পেরিয়ে এসেছে লোকগুলো, আজ রাতে অন্তত আবার ফিরতি পথ ধরবে না।

    ওদের ওপর নজর রাখতে হবে, অনুচ্চস্বরে পাশে দাঁড়ানো শেরিফকে বলল স্ট্যানলি। প্যাট্রিক হলকেও হিসেবের বাইরে রাখা যাবেনা।

    ওসব আমি দেখব। তুমি অনেক খেটেছ, এখন ঘুমাতে চলে যাও, জবাব দিল রস লেম্যান। কণ্ঠে স্নেহ।

    .

    ম্যাক্সওয়েল হোটেলে দোতলায় এক রূম ভাড়া নিয়ে থাকে ডেপুটি স্ট্যানলি। ঘরে ঢুকে ঘুমানোর চেষ্টা করল সে। পারল না। ওকে তাড়া। করে বেড়াচ্ছে কয়েকটা নাম। হিউ হুবার্ট। প্যাট্রিক হল। জোসেফ, ওয়েন। অ্যাডাম আর জোডি বেঞ্চলি। লরা নামের অদৃশ্য মেয়েটার কথাও ভাবল সে। তবে অনেক পরে ঘুমের ঘোরে স্বপ্নে দেখল শুধু রোসাকে।

    হোটেল বয়ের ডাকে যখন ঘুম ভাঙল, স্ট্যানলির মনে হলো আধঘণ্টাও ঘুমাতে পারেনি সে। একটা মেসেজ, স্যার, গলা ফাটিয়ে চেঁচাচ্ছে ছোঁকরা।

    ল্যাম্প জ্বেলে বিছানা ছাড়ল স্ট্যানলি। দরজা খুলে কাগজটা হোটেল বয়ের হাত থেকে নিয়ে পড়ল। শহরের সবচেয়ে বড় সেলুনের মালিক ডেভিড মুর লিখেছে:

    স্ট্যানলি,

    ফ্রেইটার ম্যাক্স ব্র্যাণ্ড মাতাল। বলছে গ্যানন উইলিস শাইয়্যানে খুন হওয়ার সময় সে ওখানে ছিল। আউট-ল সম্বন্ধে কি সব যেন তোমাকে সকালে জানাবে বলছে। নেশা কেটে গেলে বোধহয় আর নাও বলতে পারে, আমার মনে হয় এখনই ওর সাথে তোমার আলাপ করা উচিত।

    ডেভিড মুর

    তাড়াতাড়ি জামাকাপড় পরে হোটেল ছেড়ে বেরল স্ট্যানলি। ডেভিড মুর। ঠিকই বলেছে, এখনই ফ্রেইটারের সাথে কথা বলা উচিত। হিউ হুবার্ট যদি শহরেই থাকে তাহলে বারে বসে গ্যানন উইলিসের ব্যাপারে বকবক করা লোকটার জন্য বিপজ্জনক।

    ডিপো আর খবরের কাগজের অফিস ছাড়িয়ে বোর্ডওয়াক ধরে হেঁটে ডেভিড মুরের সেলুন ড্রিমল্যাণ্ডের সামনে পৌঁছে গেল স্ট্যানলি, ব্যাটউইঙের দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকল। জাকজমক আছে সেলুনের। বিশাল একটা ঘর। এক কোণে পিয়ানো বাজাচ্ছে নিগ্রো বাদক। রোজউডের কাউন্টারের সামনে পিঠ উঁচু সুইভেল টুল। একা যারা। নিজের ভাবনায় ডুবে যেতে চায় তাদের জন্য টেবিল-চেয়ারও আছে।

    ডেভিড মুরকে কোথাও দেখতে পেল না স্ট্যানলি। লোকটাকে। পছন্দ করে সে। র‍্যাঞ্চ আর সেলুন আছে ডেভিড মুরের, শহরে নিজ খরচায় একটা স্কুলও চালায়। রস লেম্যান কাজ ছেড়ে দিলে শেরিফ পদের জন্য নির্বাচনে দাঁড়াবে সবাইকে জানিয়েছে সে।

    তোমার জন্য অপেক্ষা করছে, বুড়ো আঙুল দিয়ে পেছনের দরজা দেখিয়ে স্ট্যানলিকে বলল বারটেণ্ডারদের একজন।

    ছোট্ট অফিসে ডেস্কের পেছনে বসে আছে ডেভিড মুর। ঘরে ঢুকেই প্রশ্ন ছুঁড়ল স্ট্যানলি, ফ্রেইটার কোথায়?

    একঘণ্টা আগে বেরিয়ে গেছে। চুরুটে টান দিয়ে একমুখ ধোয়া ছাড়ল বুলডগের মত ভোবড়ানো চেহারার সেলুন মালিক। আমার মনে হয় না এখন আমি জানি না তেমন কিছু জানে ম্যাক্স ব্র্যাণ্ড।

    সেলুনে ড্রিংক করার সময় গ্যানন উইলিস তাকে বড়াই করে বলেছিল রলিন্সে আশি হাজার ডলারের একটা কাজ পেয়েছে।

    আশি হাজার ডলার! শিস দিল স্ট্যানলি শহরের সবার টাকা এক করলেও অত হবে না। ইউ. পি. পে কার লুট করলে? ভ্রূ কোঁচকাল ডেভিড মুর, তারপর নিজেই জবাব দিল, শেরিফের কাছে লরা নামের এক মেয়ের কথা শুনলাম। সে তো লিখেছে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের কথা। অথচ ওই বিশেষ ট্রেন এখান দিয়ে যায় মাসের শেষে।

    দুবছর আগে ব্যর্থ হওয়ার পর একই কাউন্টিতে আবারও একই চেষ্টা করবে না ওরা, মাথা নাড়ল স্ট্যানলি। গ্যানন উইলিসের সাথে ম্যাক্স ব্র্যাণ্ডের পরিচয় কিভাবে হলো বলেছে কিছু?

    হ্যাঁ। দুবছর আগে শাইয়্যানের একটা বারে পরিচয়। ম্যাক্স ব্র্যাণ্ড তখন জানত না লোকটা আউট-ল, আজকে রলিন্সে ফিরে লোকজনের মুখে শুনেছে।

    ম্যাক্স ব্র্যাণ্ড কোথায় গেছে জানো?

    মাথা নাড়ল সেলুনমালিক।

    ডেভিড মুরের ওখান থেকে বেরিয়ে আরও কয়েকটা সেলুনে ঢুঁ মারল স্ট্যানলি। কোথাও নেই ম্যাক্স ব্র্যাণ্ড। গোল্ড রূমের কথা মনে পড়ল ওর। গোটা শহরে একমাত্র ওই সেলুনেই জুয়ার সবরকম ব্যবস্থা আছে।

    উত্তর দিকে চলে যাওয়া রাস্তায় দুই ব্লক পুরে সেলুনটা। মাঝ রাত পেরিয়ে গেছে সেজন্য প্রায় খালি। একটা টেবিলে বসে মদ গিলছে এক ফ্রেইটার, তার সামনে গিয়ে দাঁড়াল ডেপুটি। চারদিকে চোখ বুলিয়ে সেলুনের প্রধান আকর্ষণ সিসিলিয়াকে দেখতে পেল। মেয়েটার সামনে ডবসা রূপমুগ্ধ লোকটার পিঠ ওর দিকে হলেও গলাটা চিনতে পারল স্ট্যানলি। প্যাট্রিক হল বলছে, তোমার জীবনটা এখানে নষ্ট কোরো না, সিলিয়া, আমার সাথে ডেনভারে চলো।

    ম্যাক্স ব্র্যাণ্ড কোথায় জানো তুমি? ওদিক থেকে চোখ সরিয়ে ফ্রেইটারকে জিজ্ঞেস করল স্ট্যানলি।

    স্টার রূমিঙ হাউস,ফ্রেইটারকে ভরা গ্লাসে চুমুক দিতে দেখে। ডেপুটি বুঝল আর কোনও কথা বলে সময় নষ্ট করতে নোকটা রাজি না।

    বাফেলো স্ট্রীটে আধ ব্লক দূরে দোতলা কাঠের বাড়িতে স্টার জমি হাউস। কম পয়সায় ভাড়া দেয়া হয় টয়লেট সাইজের ঘরগুলো। সামনের হলওয়েতে একটা টিমটিমে আলো জ্বলতে দেখল স্ট্যানলি। ময়লা কাঁচের লণ্ঠনটার পাশেই একটা ঘণ্টি রাখা আছে কাউন্টারের ওপর। লণ্ঠনের সামনে ফেলে রাখা হয়েছে একটা জীর্ণ বোট। ওতে লেখা: সার্ভিস বেল।

    স্ট্যানলি ঘণ্টি বাজানোর খানিক পরে নোঙরা চেহারার হোটেল ক্লার্ক এসে হাজির হলো খালি গায়ে।রূম? ঘুম জড়ানো স্বরে হাইয়ের ফাঁকে জিজ্ঞেস করল।

    না। ম্যাক্স ব্র্যাণ্ড কোথায়?

    দুই তলায় দুইশো পাঁচ নম্বর রূমে খুঁজে দেখো। সে ফিরেছে বলে মনে হয় না। ঘুমাতে চলে গেল হোটেল ক্লার্ক। দোতলায় উঠে ম্যাক্স ব্র্যাণ্ডের ঘর খুঁজে বের করল স্ট্যানলি। নক করে কোনও সাড়া-শব্দ পেল না। দরজা লক করেনি ফ্রেইটার, জোরে নক করার ধাক্কাতেই ক্যাঁচকোঁচ শব্দ তুলে দরজা খুলে দিয়ে কর্তব্য সারল মরচে ধরা পুরানো কব্জাগুলো।

    ঘরের ভেতর একনজর তাকিয়েই ম্যাক্স ব্র্যাণ্ড এখনও ফেরেনি। বুঝতে পারল স্ট্যানলি। দরজা বন্ধ করে নিচে নেমে এসে বিল্ডিঙের সামনে বোর্ডওয়াকে দাঁড়াল। অপেক্ষা করাই ভাল, মাতাল ফ্রেইটার ঘুমাতে আসবেই। অপেক্ষার সময়টা পার করতে সিগারেট ধরাল ডেপুটি, মন দিয়ে আঁকার চেষ্টা করল রোসার নিখুঁত ছবি।

    অনেকক্ষণ পর তৃতীয় সিগারেট সবে ধরাবে এমন সময় রাস্তার কোনা ঘুরে ম্যাক্স ব্র্যাণ্ডকে আসতে দেখল সে। বেঁটে একটা লোক। একহাত দাড়ির জঙ্গলে মুখ ঢেকে আছে। অল্প অল্প টলছে নেশার ঘোরে। ডেপুটির বিশাল দেহ হোটেলের দরজায় ঠেস দিয়ে আছে দেখে সামনে দাঁড়িয়ে মুখ তুলে তাকাল সে। চিনতে পেরে কুমড়োর হলুদ বিচিগুলো দেখাল। জড়ানো গলায় বলল, তোমাকেই খুঁজছিলাম, স্ট্যানলি, দারুণ। খবর আছে।

    বলে ফেললো।

    মাথা ঝাঁকিয়ে কথা শুরু করল মাতাল ফ্রেইটার। যা বলল তার মধ্যে নতুন কিছু নেই, ডেভিড মুরের কাছে এসব কথা আগেই শুনেছে স্ট্যানলি।

    আর কোনও কথা বাদ পড়েনি তো, হতাশ গলায় জানতে চাইল, সে।

    না। সেদিন বিকেলেই তো একলোকের সাথে গানফাইটে মারা গেল গ্যানন। আর কি কথা হতে পারে, তুমিই বলো?

    ডেভিড মুর বলল, গ্যাননের সাথে দুবছর আগে তোমার পরিচয় হয়েছে। কিন্তু তুমি বলছ তিন বছর। কোনটা ঠিক? জ কুঁচকে জিজ্ঞেস করল ডেপুটি।

    আমার চেয়ে ডেভিড মুর বেশি জানে নাকি, নিজের বুকে টোকা দিল ম্যাক্স ব্র্যাণ্ড। বড় লোক ইংরেজগুলোকে নিয়ে শিকারে গিয়েছিলাম যে, তখন আমার সাথে যেতে চেয়েছিল। আমি নিইনি। ফ্রেইটার উঁ দিয়ে ফুসফুসের বাতাস বের করায় সস্তা মদের গন্ধে এক পা সরে দাঁড়াতে বাধ্য হলো স্ট্যানলি। তার একবছর পরে শাইয়্যানে গ্যাননের সাথে আবার দেখা হলো একটা সেলুনে। গ্যানন আর তার সঙ্গী..

    ওদের মাথার ওপরে দুইশো পঁচ নম্বর রুমের জানালা থেকে গর্জে উঠল একটা সিক্সগান। বাড়িঘরের দেয়ালে প্রচণ্ড শব্দটার প্রতিধ্বনি মিলিয়ে যাওয়ার আগেই হাঁটু ভাঁজ হয়ে স্ট্যানলির পায়ের কাছে পড়ে গেল ম্যাক্স ব্র্যাণ্ড। একপলক তাকিয়েই ডেপুটি বুঝতে পারল মারা গেছে। হতভাগ্য বাচাল ফ্রেইটার।

    সিক্সগান হাতে দৌড়ে রূমিঙ হাউসের ভেতরে ঢুকল সে। একেকবারে চার ধাপ সিঁড়ি টপকে উঠে এল দোতলায়। এবারও দুইশে পাঁচ নম্বর রূমে কাউকে দেখতে পেল না। বাতাসে ভাসছে পোড়া করডাইটের গন্ধ। কাজটা কার বুঝতে পারছে সে, কিন্তু কোন্ নামের আড়ালে লুকিয়ে আছে হিউ হুবার্ট? চেষ্টা করেও লোকটাকে এখন আর ধরা যাবে না, এতক্ষণে নিশ্চয়ই পেছনের গলি দিয়ে অনেক দূরে চলে গেছে সে। স্যাণ্ডক্রীকের সাতজন রাইডারদের মধ্যে হয়তো হুবার্টও একজন।

    তিক্ত মনে নিচে নেমে এল স্ট্যানলি, শেরিফের অফিসে গিয়ে ডিউটিরত দুজন কনস্টেবলকে পাঠিয়ে দিল লাশ ফার্নিচার স্টোরের মালিকের কাছে পৌঁছে দিতে।

    ০৯.

    বাকি রাত আর ঘুমাল না, শেরিফের সাথে আলোচনা করে কাটিয়ে দিল। সকালে ক্লান্ত কণ্ঠে বলল, গ্যানন আর তার সঙ্গী… কি বলতে চেয়েছিল ম্যাক্স ব্র্যাণ্ড? গ্যাননের সঙ্গী বাড লরেন্স বা হুপার হতে পারে না। ওদের পরিচয় প্রকাশ হয়ে যাওয়ায় এই কাউন্টিতে আসার সাহসই পেত না ওরা। তার মানে দাঁড়ায় গ্যাননের সঙ্গী যে লোকটা শিকারী দলের সাথে যেতে চেয়েছিল সে-ই সম্ভবত হিউ হুবার্ট।

    হতে পারে,শেরিফের চেহারা উজ্জ্বল হয়ে উঠল। ম্যাক্স ব্র্যাণ্ডের আততায়ী চায়নি গ্যাননের সঙ্গী সম্পর্কে তাকে কথা বলার সুযোগ দিতে। গত দুবছরে হান্টি পার্টির সাথে কারা গেছে খোঁজ নাও। গ্যাননকে ভাড়া করেছিল তেমন একজন হান্টারকে খুঁজে বের করতে পারলে গ্যাননের সঙ্গীর চেহারা সুরত কেমন জানা যাবে।

    দ্রুত পায়ে অফিস থেকে বেরিয়ে এল স্ট্যানলি, খিদেয় পেট জ্বলছে, কিন্তু নাস্তা করার ধৈর্য নেই তার।

    দুবছর আগে শহরের একমাত্র হোটেল ছিল হেয়েস। ওখানেই আগে গেল ডেপুটি। মিস্টার হেয়েস ধুলোয় মোড়া কাভারের একটা লেজার বের করে দিল। দুবছর আগে সেপ্টেম্বর আর অক্টোবর মাসে শিকারে যাবার উদ্দেশ্যে কারা হোটেলে উঠেছিল লেজার উল্টেপাল্টে দেখল স্ট্যানলি।

    আরেকটা স্টোরের লেজার ঘেঁটে আরও দুজনকে পাওয়া গেল। যারা শিকারের রসদ কিনেছে দুবছর আগে। হোটেল লেজার থেকে পাওয়া নামগুলোর মধ্যেও আছে এদের নাম। ভার্জিনিয়া হতে আগত চার্লি রবিনসন আর নেলসন আর্চার।

    লিভারি বার্নেও খোঁজ নিল স্ট্যানলি। বার্নের মালিক শেরিফ আর। শেরিফের ভাইরা। ওখানে কোনও তথ্য পেল না সে, কিন্তু হফের বার্নের খাতায় গুরুত্বপূর্ণ একটা এন্ট্রি চোখে পড়ল। ছুটতে ছুটতে লইয়ারের অফিসে ঢুকল সে। অফিসে রোসা ছাড়া আর কেউ নেই। আঙ্কল জ্যাক অ্যাডাম বেঞ্চলিকে রিসিভ করতে গেছে, হাসল রোসা বিধ্বস্ত ডেপুটিকে দেখে, আমি কোনও সাহায্য করতে পারি?

    পারো, ক্লান্ত স্বরে বলল স্ট্যানলি। ভার্জিনিয়ায় একটা চিঠি পাঠাতে হবে। লোকের নাম জানি শুধু, ঠিকানা জানি না। পুলিশ চীফকে লিখতে হবে খোঁজ নিতে বলে।

    ডেপুটির কাছ থেকে একটা কাগজের টুকরো নিয়ে নামগুলোর ওপর চোখ বোলাল রোসা। কাজ হবে মনে হয়?

    বোধহয় হবে। দুবছর আগে ভার্জিনিয়া থেকে আসা পার্টির জন্য। হফের কাছ থেকে ঘোড়া ভাড়া করেছিল গ্যানন উইলিস। আমার কপাল ভাল হফ কথাটা এতদিন পরেও মনে রেখেছে!

    পুলিশ চীফ হান্টারদের খুঁজে বের করলে তারপর?

    গ্যানন উইলিসের সঙ্গীর চেহারা কেমন ছিল জিজ্ঞেস করবে। হফের ওখানে লোকটা আসেনি। গ্যাননের সঙ্গী ছিল সম্ভবত হবার্ট। শিকার করতে চার্লি রবিনসন আর নেলসন আর্চারকে বেশিদূর নিয়ে। যায়নি ওরা, কারণ স্টোরের লেজার অনুযায়ী মাত্র দশদিনের রসদ নিয়েছিল ভার্জিনিয়ান হান্টাররা। এলক শিকারে র‍্যাটস্নেক মাউন্টিন বা উইও রিভার রেঞ্জে যায়নি, গিয়েছিল ফেরিস রেঞ্জ বা সেমিনো মাউন্টিনে।

    চিঠি লেখা শেষ করল রোসা। মুক্তোর মত হস্তাক্ষরে একবার চোখ। বুলিয়ে রোসাকে ধন্যবাদ দিয়ে অফিস থেকে বেরল স্ট্যানলি। দ্রুত পায়ে হেঁটে পৌঁছে, গেল রেল ডিপোতে।

    জ্যাক হিগিনস উকিলের কালো কোট পরে রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে–আছে প্ল্যাটফর্মে। দূরের রেলওয়ে ট্রাকের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ তার। অ্যাডাম বেঞ্চলির সাথে এই পরিস্থিতিতে দেখা করার দায়িত্ব ঘাড়ে এসে চাপায় অস্বস্তি বোধ করছে লইয়ার। ট্রেন লেট, ডেপুটি পাশে এসে দাড়ানোয় বলল সে।

    অ্যাডাম আসছে জানি, কিন্তু জোডিও কি এই ট্রেনেই আসবে? আলাপ চালানোর খাতিরে জানতে চাইল ডেপুটি। অ্যাডামকে উইলের ব্যাপারটা বলবে?

    যতক্ষণ না বলে পারা যায় বলব না, টাক চুলকাল হিগিনস। তাছাড়া অ্যাডামকে চিনি, সে এসব ব্যাপারে কোনও কথা তুলবে না, ট্রেন থেকে নেমেই খুঁজতে শুরু করবে বাবার খুনীকে।

    ওকে দেরি করিয়ে দেয়ার চেষ্টা কোরো। ভার্জিনিয়ায় পুলিশ চীফের কাছে চিঠি পাঠানোর ব্যাপারটা খুলে বলল স্ট্যানলি।

    ওদের চারপাশে লোক গমগম করছে। কেউ এসেছে পরিচিতদের রিসিভ করতে, কেউ এসেছে ট্রেন ধরার জন্য। পরিচিত বুড়ো ব্যাগেজম্যানকে দেখতে পেয়ে কদিন আগের কথা মনে পড়ল স্ট্যানলির। সেদিনও একই ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিল ও, কিন্তু উদ্দেশ্য ছিল ভিন্ন।

    ল্যারামি থেকে পাচজন পালিয়েছিল, বাকি চারজনের কোনও খবর? জানো? গতকালের পেপারে দেখলাম ওদের তিনজন ধরা পড়েছে, বলল। লইয়ার, স্পাইক হান্না এখনও পলাতক। তাকে শেষ দেখা গেছে ওয়ার্ম স্প্রিংসের কাছে।

    প্ল্যাটফর্মের এককোণে প্যাট্রিক হলকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখল, স্ট্যানলি। জোডির জন্য অপেক্ষা করছে লোকটা, নাকি পালিয়ে যেতে চায় ট্রেনে উঠে? প্যাট্রিক হল জানে তাকেও সন্দেহ করা হবে। জানে রলিন্সে কিরকম জনপ্রিয় ছিল বিলি বেঞ্চলি–মানুষজনের মুখে নিশ্চয়ই। শুনেছে। ভালমত খেয়াল করে দেখল ডেপুটি, লোকটার কাছে প্ল্যাটফর্মে কোনও মালপত্র নেই, ব্যাগেজ এখনও হোটেলেই আছে তো?

    নিশ্চিত হবার জন্য দ্রুত পায়ে হেঁটে ডিপো থেকে বেরিয়ে এল সে। ম্যাক্সওয়েল হাউসে ঢুকে ক্লার্ককে জিজ্ঞেস করল, প্যাট্রিক হল হোটেল ছেড়ে দিয়েছে? ক্লার্ক মাথা নাড়ানোয় বলল, আমার চাবিটা অন্য প্যান্টের পকেটে রয়ে গেছে, জেস, পাস কীটা দাও।

    ক্লার্কের কাছ থেকে পাস কী নিয়ে দোতলায় উঠে এল স্ট্যানলি। নিজের দরজায় ব্যবহার না করে প্যাট্রিক হলের ঘরের তালা খুলে ফেলল। ওর ঘরের দুটো ঘর পরের এই রূম থেকে ডেনভারের জুয়াড়ীকে বেরতে দেখেছে সে, ঘর চিনতে অসুবিধা হলো না।

    বিছানার পাশে খোলা লাগেজ এলোমেলো পড়ে আছে মেঝেতে। চেয়ারের ওপর একটা কোঁচকানো শার্ট আর টাই। ড্রেসারের ওপর একটা কাগজের বাক্সে রাখা আছে কাফ লিঙ্ক, স্টাড আর টাই পিন। চলে যাবার ইচ্ছে থাকলে এসব এভাবে ফেলে রাখত না প্যাট্রিক হল।

    পুরো ঘর ভালমত সার্চ করল স্ট্যানলি। সন্দেহজনক কিছু না পেলেও মন থেকে খুঁতখুঁতে ভাবটা দূর করতে পারল না। গুরুত্বপূর্ণ যা। কিছু নিজের সাথেই রাখবে জুয়াড়ী।

    ট্রেন রলিন্সে পৌঁছে গেছে কাজে ব্যস্ত ডেপুটি টেরও পায়নি। দরজা। খুলে যাওয়ার শব্দও শুনতে পেল না সে। সার্চ ওয়ারেন্ট নিয়ে এসেছ?

    চমকে উঠল পেছন থেকে প্যাট্রিক হলের প্রশ্নে। অপ্রস্তুত চেহারায় ঘুরে দাঁড়িয়ে মাথা নাড়ল।

    সময় নষ্ট করছ, আমার লুকানোর কিছু নেই, রাগে লাল চেহারায় বলল জুয়াড়ী।

    ড্রেসারের ওপর চোখ আটকে গেল স্ট্যানলির। জিনিসটা ঘরে ঢুকেও দেখেছে, তাৎপর্য বুঝতে পারেনি তখন। আঙুল তুলে ড্রেসারের ওপর রাখা বাক্সটা দেখাল। তুমি বলেছিলে .৪৫ ক্যালিবারের সিক্সগান নেই তোমার।

    ঠিক। মাথা দোলাল বিস্মিত প্যাট্রিক হল।

    কিন্তু ছিল, গম্ভীর গলায় বলল ডেপুটি, নাহলে .৪৫ ক্যালিবারের বুলেটের বাক্স তোমার কাছে কেন?

    একসময় ছিল। এখন এটা ব্যবহার করি, কোটের ভেতর হাত ঢুকিয়ে একটা .৩৮ বের করে কক করল সে। তারপর লক্ষ্যস্থির করল। ডেপুটির মাথায়। অনধিকার প্রবেশ করেছ, তোমাকে খুন করলেও কারও কিছু বলার নেই।

    স্ট্যানলি বুঝতে পারেনি লোকটা ড্র করবে। অবাক হলেও তার চেহারায় কোনও ছাপ পড়ল না। খুন করতে পারো, তবে পার পাবে না। সবাই মনে করবে তোমার সম্বন্ধে আমি গুরুত্বপূর্ণ কিছু জেনে ফেলেছিলাম সেজন্যই খুন করেছ।

    প্যাট্রিক হলের পেছনে খোলা দরজায় একজন কাউহ্যাণ্ডকে এসে দাঁড়াতে দেখল সে। পরিস্থিতি বুঝে সময় নষ্ট করল না কাউহ্যাও। সিক্সগান হোলস্টার মুক্ত করে সজোরে নামিয়ে আনল জুয়াড়ীর মাথায়। কাটা কলাগাছের মত মেঝেতে আছড়ে পড়ল প্যাট্রিক হল।

    পাশের ঘরটায় উঠেছি আমি। তোমাদের ঝগড়া শুনে দেখতে। এসেছিলাম কি হচ্ছে, ব্যাখ্যা দিল কাউহ্যাণ্ড।

    অসংখ্য ধন্যবাদ, জুয়াড়ীর .৩৮ উবু হয়ে তোলার ফাঁকে বলল স্ট্যানলি।

    ওর কি ব্যবস্থা করবে? কাউহ্যাণ্ড কৌতূহল প্রকাশ করল।

    থাকুক পড়ে এখানে, জ্ঞান ফিরলে যে মাথা ব্যথাটা থাকবে সেটাই ওর শাস্তি, হাসল স্ট্যানলি। জুয়াড়ীকে জেলে ভরে রাখার মত কোনও তথ্য প্রমাণ ওর হাতে নেই, খামোকা ঝামেলা না বাড়ানোই ভাল। চলো, বিল, ক্লার্ককে বলে ওর জ্ঞান ফেরানোর ব্যবস্থা করতে হবে, কাউহ্যাণ্ডকে ঘর থেকে বেরতে ইশারা করল সে।

    কাউহ্যাণ্ডের পাশে সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় তিক্ত হাসল। মজার ব্যাপার হচ্ছে একজন সন্দেহভাজন আরেকজনের হাত থেকে তাকে বিপদমুক্ত করেছে। ফ্রাই প্যানের বিল লেপম্যানও স্যাণ্ড ক্রীক থেকে আসা সাতজন রাইডারের একজন।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleমাসুদ রানা ৪৬৮ – স্বর্ণলিপ্সা
    Next Article দ্য ম্যাজিক অব রিয়েলিটি – রিচার্ড ডকিন্স

    Related Articles

    কাজী মায়মুর হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৬৮ – স্বর্ণলিপ্সা

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    ধাওয়া – কাজী মায়মুর হোসেন

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    মৃত্যু উপত্যকা – কাজী মায়মুর হোসেন

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    খুনে ক্যানিয়ন – কাজী মায়মুর হোসেন

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৪৮ – মৃত্যুঘণ্টা

    July 25, 2025
    কাজী মায়মুর হোসেন

    মাসুদ রানা ৪৫৮ – মহাপ্লাবন

    July 25, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }