Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    অদ্বৈতপ্রকাশ – ঈশান নাগর

    ঈশান নাগর এক পাতা গল্প282 Mins Read0

    অদ্বৈতপ্রকাশ – ৯

    নবম অধ্যায়

    জয় জয় শ্রীচৈতন্য জয় সীতানাথ।
    জয় নিত্যানন্দরাম ভক্তগণ সাথ।।
    একদিন ঠাকুর শ্রীব্রহ্মহরিদাস।
    সদৈন্যে প্রভুরে কহে মন অভিলাষ।।
    অহে প্রভু আজ্ঞা দেহ যাঙ বিরলেতে।
    অবিশ্রান্ত হরিনামামৃত আস্বাদিতে।।
    প্রভু কহে তো বিচ্ছেদে মোর বুক ফাটে।
    নিষেধিতে না পারি ভজনের বিঘ্ন ঘটে।।
    হরিদাস প্রভু পদে দন্ডবৎ কৈলা।
    প্রেমাবেশে প্রভু তারে গাঢ় আলিঙ্গিলা।।
    হরিদাস কহে মুঞি অস্পৃশ্য পামর।
    মোর অঙ্গ ছুঁই কেনে অপরাধী কর।।
    প্রভু কহে নাহি বুঝি সজ্জাতি দুৰ্জ্জাতি।
    যেই কৃষ্ণ ভজে সেই শ্রীবৈষ্ণব জাতি।।
    উত্তমাধম বাহ্য হয় কৰ্ম্ম অনুসারে।
    যেই কৃষ্ণভজে সর্ব্বোত্তম কহি তারে।।
    তুহু শুদ্ধ ভাগবত-গণের উত্তম।
    তব স্পর্শে জীব হয় ভক্তি বীজোদ্দাম।।
    হরিদাস কহে প্রভু সকলি সম্ভবে।
    তুয়া সুনিৰ্ম্মল কৃপা যদি হয় জীবে।।
    এত কহি করযোড়ে প্রভু আজ্ঞা লঞা।
    ফুলিয়া গ্রামেতে গেলা হরি সঙরিয়া।।
    সেই নগরবাসী যত ব্রাহ্মণের গণ।
    হরিদাসে দেখি সভার দ্রব হৈল মন।।
    তহি রামদাস নামে সুবিজ্ঞ ব্রাহ্মণ।
    ধৰ্ম্মশাস্ত্রবেত্তা সদা ধৰ্ম্মপরায়ণ।।
    হরিদাসে দেখি তার ভক্তি উপজিল।
    দৈন্য করি মিষ্ট ভাষে কহিতে লাগিল।।
    সাধু তুয়া আগমনে মোরা হৈনু ধন্য।
    না জানি গ্রামের কত ছিল পূৰ্ব্ব পুণ্য।।
    সাধু সমাগমে গৃহ মন্ত্ৰপুত হয়।
    ইহাঁ বাস করো প্রভু হইয়া সদয়।।
    ব্রহ্মহরিদাস কহে ওহে দ্বিজবর।
    বেদোক্তি ব্রাহ্মণ মাত্রে বিষ্ণু কলেবর।।
    মুঞি নীচ জাতি হঙ নহে স্পর্শ যোগ্য।
    তুয়া সঙ্গ পাইনু মোর এই মহাভাগ্য।।
    রামদাস কহে সাধু কাহে কর দৈন্য।
    ঈশ্বরানুরাগীজনের জাতি নহে পণ্য।
    যৈছে স্পর্শমণির স্পর্শে লৌহ হয় স্বর্ণ।।
    ঈশ্বরোপাসনে শ্রেষ্ঠ তৈছে সৰ্ব্ব বর্ণ।
    মনুষ্যের প্রশংসা কিবা প্রশংসা তার ধর্ম্মে।।
    উচ্চ নীচ বাচ্য হয় নিজ কৃতকর্ম্মে।।
    সংসার বাসনা ত্যাগী ঈশ্বরানুরাগী।
    সেই সৰ্ব্ব জীবে শ্রেষ্ঠ হয় মুক্তিভাগী।।
    হরিদাস কহে তুহুঁ সাধু সনাতন।
    সর্ব্বজীবে সাধুরূপে করহ দর্শন।।
    জ্ঞানযোগে ঈশ্বরোপাসনা যেই করে।
    মুক্তি মাত্র প্রাপ্তি জ্ঞানের শক্তি অনুসারে।।
    সুচতুর সাধু মুক্তি বাঞ্ছা নাহি করে।
    নিত্য মুক্তি না পায় জীব জ্ঞান যোগ দ্বারে।।
    দ্বিজ কহে জ্ঞান বিনু আছে কিবা আর।
    যাহে প্রাপ্তি হয় পরব্রহ্ম সারাৎসার।।
    ব্রহ্মহরিদাস কহে ভক্তিযোগ সার।
    তাহে লভ্য হয় নিত্যব্রহ্ম সর্ব্বেশ্বর।।
    ভক্তি স্বভাবে হয় দাস্য অভিমান।
    দাস্যে হরি নিত্য সিদ্ধ তনু করে দান।।
    নিত্য ব্রহ্ম বস্তু হয় স্বয়ং ভগবান।
    সচ্চিৎ আনন্দময় সৰ্ব্বশক্তিমান।।
    হরিনাম হয় শুদ্ধ ভক্তির কারণ।
    অবিশ্রান্ত জপে পায় নিত্য প্রেমধন।
    ক্ৰমে প্রেম গাঢ় হৈলে গোপীভাব পায়।
    শ্রীমাধুর্য্য রসে রাধাকৃষ্ণ প্ৰাপ্তি হয়।।
    শুনি দ্বিজ হঞা রোমাঞ্চিত কলেবর।
    কহে মোরে দয়া করি করহ সংস্কার।।
    তাহা শুনি হরিদাস প্রেম পূৰ্ণ হৈঞা।
    হরিনাম দিলা দ্বিজে শক্তি সঞ্চারিয়া।।
    মহাবস্তু পাঞা দ্বিজের ঝোরে দুনয়ন।
    হরিদাসে প্রণমিয়া করিলা স্তবন।।
    ক্রমে সাধু সঙ্গে দ্বিজের বৈষ্ণবতা হৈল।
    হৃদিক্ষেত্রে ভক্তি-কল্পলতা উপজিল।।
    দ্বিজের সাহায্যে এক ঝুপরী বান্ধিয়া।
    ব্রহ্মহরিদাস রহে আনন্দিত হঞা।।
    হরিনামামৃত সদা করে আস্বাদন।
    তান ভক্ত হৈলা যত গ্রামবাসীজন।।
    একদিন হরিদাসের মনে চিন্তা হৈল।
    একস্থানে বহুদিন বাস নহে ভাল।।
    আলাপ সংসর্গে হয় মায়ার সম্বন্ধ।
    ক্রমে সংসার আসক্তিতে জীব হয় অন্ধ।।
    উদাসীনের ধর্ম্ম তাহে না হয় রক্ষণ।
    অতএব জনসঙ্গ ত্যাগ সর্ব্বোত্তম।।
    এত ভাবি রাত্রিশেষে গৃহত্যাগ কৈলা।
    হরিনাম গাই তিঁহো বেনাপোলে গেলা।।
    তথি মহারণ্য মধ্যে করে সংকীৰ্ত্তন।
    গ্রামের লোক আসি তাঁরে করয়ে পূজন।
    যেই মহাভাগ্যবন্তে কৃষ্ণ কৃপা হয়।
    তাঁরে দেখি জীবমাত্রের ভক্তি উপজয়।।
    ব্রহ্মহরিদাসের সঙ্গে দেখি তেজোরাশি।
    ক্ৰমে তান ভক্ত হৈল যত গ্রামবাসী।।
    সেই বেনাপোলের বনে গ্রাম্যভক্তগণ।
    কুটীর বান্ধিয়া দিলা করিয়া যতন।।
    তাঁহা রহি সাধু করে তুলসী সেবন।
    একমাসে কোটি নাম করয়ে গ্রহণ।।
    বৈষ্ণব দ্বিজের গৃহে করে মুষ্টিভিক্ষা।
    দয়ার স্বভাবে জীবে নীতি দেয় শিক্ষা।।
    একদিন বেশ্যা এক রূপে বিদ্যাধরী।
    হরিদাস পাশে আইলা বেশভূষা করি।।
    কুটীর দ্বারেতে বসি অঙ্গভঙ্গী করে।
    হরিদাস মিষ্টবাক্যে পুছিলা তাহারে।।
    সন্ধ্যাকালে আইলো ইহাঁ কিবা প্ৰয়োজন।
    বেশ্যা কহে তেঁাঁহে দেখি মুগ্ধ হৈল মন।।
    অপরূপ রূপ তোঁহার নবীন যৌবন।
    সুখভোগ কর ছাড়ি নাম সংকীৰ্ত্তন।।
    শুনি হরিদাস কহে সহাস্য বদনে।
    ইহা হৈতে আজি তুহুঁ করহ প্রস্থানে।।
    যে জন তুলসী কন্ঠী না করে ধারণ।
    যেই নাহি করে ভালে তিলক রচন।।
    যার মুখে কৃষ্ণনাম না হয় স্ফুরণ।
    সেই সভ জন হয় পাষন্ডী অধম।।
    নির্য্যাস জানিহ তারা কৃষ্ণ বহির্মুখ।
    কভু সাধু নাহি দেখে তা সভার মুখ।।
    ঐছে সদ্‌বেশ করি যদি কর আগমন।
    তবে কৃষ্ণ তোর বাঞ্ছা করিব পূরণ।।
    এত কহি সাধু করে নাম সংকীৰ্ত্তন।
    তবে বেশ্যা নিজ ঘরে করিলা গমন।।
    পরদিন গলে দিয়া তুলসীর মালা।
    গোপী-চন্দন দিয়া ভালে তিলক রচিলা।।
    অঙ্গে হরিনাম লিখি বৈষ্ণবী সাজিলা।
    তবে সন্ধ্যাকালে হরিদাস স্থানে আইলা।।
    বৃন্দা নমস্করি বলি কুটির দুয়ারে।
    ছলে বেশ্যা হরি হরি কহে উচ্চৈঃস্বরে।।
    সাধুসঙ্গের অলৌকিক অপার শক্তি হয়।
    ছলে সদ্‌বেশ ধরি জীব জীবন্মুক্তি পায়।।
    যৈছে চন্দনের সঙ্গ পাইলে বৃক্ষচয়।
    গন্ধ প্রবেশিলে সারে চন্দনত্ব পায়।।
    অবিশ্রান্ত হরিনাম বেশ্যা মুখে শুনি।
    প্রেমানন্দে প্রশংসে বৈষ্ণব-চূড়ামণি।।
    প্রতিষ্ঠা শুনিয়া বেশ্যা কহে হরিদাসে।
    প্রভু মোরে কৃপা কর আইনু যেই আশে।।
    শুনি হরিদাস কহে আসিয়াছ ভাল।
    বদন ভরিয়া একবার হরি হরি বল।।
    এত কহি করে তিঁহো নামসংকীৰ্ত্তন।
    গাইতে শুনিতে বেশ্যা ফিরি গেল মন।
    সৎসঙ্গ হিল্লোলে তার হইল চৈতন্য।
    বেশ্যাবৃত্তি পাপ ভোগ মধ্যে কৈলা গণ্য।।
    হরিদাসে প্রণমিয়া কহে যোড়করে।
    তুহুঁ চুম্বুক মহামণি আকর্ষিলা মোরে।।
    তুহুঁ প্রভু গুরু দয়াময় কল্পবৃক্ষ।
    মোক্ষ ফল দেহ মোরে হইয়া স্বপক্ষ।
    বেশ্যার ধর্ম্মানুরাগ-নিষ্ঠ বাক্য শুনি।
    প্রেম-রসাবিষ্ট হঞা সাধু শিরোমণি।।
    প্রায়শ্চিত্ত রূপ তার মাথা মুণ্ডাইয়া।
    হরিনাম দিলা কর্ণে শক্তি সঞ্চারিয়া।।
    হরিনামে প্রাপ্ত্যে তার প্রেমাঙ্কুর হৈল।
    হরিদাস তার নাম কৃষ্ণদাসী থুইল।।
    সাধু কহে ইহাঁ রহি কর হরিনাম।
    কৃষ্ণকৃপা বলে সিদ্ধ হৈব মনস্কাম।।
    নামব্রহ্মে পরব্রহ্মে হয় তুল্য শক্তি।
    নামে কৃষ্ণ প্রাপ্তি নামাভাসে হয় মুক্তি।।
    এত কহি হরিদাস গেলা অন্যস্থানে।
    কৃষ্ণদাসী কৃষ্ণনাম জপে নিশি দিনে।।
    অত্যাশ্চর্য্য সাধু কৃপার অবিচিন্ত্য বলে।
    বিষবৃক্ষে ধরে অলৌকিকামৃত ফলে।।
    এবে শুন হরিদাসের অপূৰ্ব্ব বিলাস।
    যৈছে বহু যবনে করিলা কৃষ্ণদাস।।
    ফুলিয়া গ্রামবাসী যত বৈষ্ণবের গণ।
    হরিদাসে দেখি হৈলা আনন্দ মগন।।
    সভে মিলি করে সদা নাম সংকীর্ত্তন।
    পাষন্ডীর হৃদে হয় শেল আরোপণ।।
    হরিদাসের তত্ত্ব জানি যবনের পতি।
    মহাক্রোধে কহে নিজ দাসগণ প্রতি।।
    ফুলিয়াতে হরিদাস নামে একজন।
    হিন্দুয়ানি কার্য্য করে হইয়া যবন।।
    আখের খাইল লোকে হৈল উপহাস।
    ক্রমশঃ যবন ধৰ্ম্ম হইবে বিনাশ।।
    অতএব ধরি আনি করহ শাসন।
    আজ্ঞা পাঞা ধাঞা চলে দুষ্ট দাসগণ।।
    তবে হরিদাসে ধরি নিগ্রহ করিঞা।
    দরবারে আনিলেক হাতে দড়ি দিঞা।।
    হরিদাসে দেখি কহে যবনের পতি।
    কাহে হিন্দুয়ানি কর হঞা উত্তম জাতি।।
    স্বধৰ্ম্ম ছাড়িয়া যেই করে মহা যোগ।
    দেহান্তে নিশ্চয় তার হইব দোযোগ।।
    যদি ভেস্ত প্রাপ্তি বাঞ্ছা থাকে তোর মনে।
    কলমা পড়িয়া কর পাপের দমনে।।
    শুনি হরিদাস কহে সুগম্ভীর স্বরে।
    যুক্তিমূলক যেই শাস্ত্র শ্রেষ্ঠ কহি তারে।।
    যুক্তিযুক্ত শাস্ত্র অনুযায়ী যেই হয়।
    সৰ্ব্ববর্ণে সেই শ্রেষ্ঠ শাস্ত্রে ইহা কয়।।
    যবনের শাস্ত্র হয় যুক্তি বিরুদ্ধাভাস।
    সেই শাস্ত্রচরী যবন রূপেতে প্রকাশ।।
    তাহার প্রমাণ দেখ গো হয় মাতা পিতা।
    সেই গো হিংসা করণ যুক্তি বিরোধিতা।।
    তন্মাংস ভক্ষণ হয় পিতৃ মাংস সম।
    সেই গো বধিতে যার শাস্ত্রের নিয়ম।।
    সেই ভ্রষ্ঠচারিগণের জয় বৃদ্ধি পায়।
    নিজ কৰ্ম্মফলে নানা যোনিতে বেড়ায়।।
    সর্ব্বস্বরূপ পরব্রহ্ম অনাদি-বিগ্রহ।
    ষড়ৈশ্বর্যাপূর্ণ শুদ্ধ সত্ত্বময় দেহ।।
    যে শাস্ত্রে তাঁহারে কহে নিরাকার নিরীহ।
    তেন শাস্ত্র পঠনে বাঢ়য়ে মায়ামোহ।।
    বস্তুতত্ত্বে ঈশ্বরে জীবেতে নাহি ভেদ।
    অগ্নির সত্তা যৈছে সৰ্ব্ব দীপেতে অভেদ।।
    তথাপি মূল অগ্নির যৈছে হয় প্রাধান্যতা।
    তৈছে সর্ব্বেশ্বর হরি সকলের ধাতা।।
    হরিকে ভজিলে জীবের মায়া লোপ হয়।
    সেই লোভে মুঞি কৈলা হরি-পদাশ্রয়।।
    সাধু মুখে শুনি যুক্তি সঙ্গত প্ৰমাণ।
    সভে পরি বলি তানে কৈলা অনুমান।।
    হেন কালে সাধু কৈলা ঐশ্বর্য প্রকাশ।
    তাহা দেখি ম্লেচ্ছগণ পাইলা তরাস।।
    দন্তে তৃণ ধরি কহে যবনের পতি।
    অহে সাধু কৃপা কর মো অধম প্রতি।।
    মুঞি মুর্খ দুরাচর না চিনিয়া তোরে।
    করিয়াছোঁ অপরাধ ক্ষমহ আমারে।।
    তুয়া পদে রহ মোর কোটি নমস্কার।
    নিজগুণে কর এবে মো ছারে উদ্ধার।।
    শুনি হরিদাসের মনে দয়া উপজিল।
    কৃষ্ণে মতি হউ বলি আশীৰ্ব্বাদ কৈল।।
    উর্ধ্ববাহু হঞা কহে বোল হরি হরি।
    কৰ্ম্মবন্ধ ছিণ্ডি লভ: হৈব ভক্তি তরি।।
    এত শুনি সভার মনে ভক্তি উপজিল।
    হরি হরি বুলি সবে নাচিতে লাগিল।।
    ঐছে হরিদাস করি যবন উদ্ধার।
    তাঁহা হৈতে চলি আইলা কুলিয়া নগর।।
    ব্রহ্মহরিদাসের মহিমার নাহি পার।
    দেবগণে নাহি জানে মুঞি কোন ছার।।
    যাঁর সঙ্গগুণে গোসাঞি রঘুনাথ দাস।
    ভক্তিবীজ পাই হৈল চৈতন্যে বিশ্বাস।।
    যাঁর কৃপাবলে সর্প জীবন্মুক্তি পায়।
    তিঁহো যবন উদ্ধরিবে ইথে কি বিস্ময়।।
    এবে কহি সংক্ষেপে সেই সর্পোদ্ধার তত্ত্ব।
    যাহা শুনি স্ফূর্ত্তি পায় বৈষ্ণবমাহাত্ম্য।।
    গোফায় বসি হরিনাম করে হরিদাস।
    শুনি গ্রামের লোক সভ আইলা তাঁর পাশ।।
    সাধুর প্রেম নামে রুচি দেখি সৰ্ব্বজন।
    তান সহ করে নিত্য নামসংকীৰ্ত্তন।।
    হেনকালে এক কাল সর্প দীর্ঘতম।
    শিরে দিবামণি জলে দিনমণি সম।।
    হরিদাস আগে তিঁহো কৈলা অবস্থান।
    কুণ্ডলী করিয়া বসি শুনে হরিনাম।।
    তাহা দেখি সব হঞা ভয়ে কম্পমান।
    কহে সাধুবর আজি হারাইবে প্রাণ।।
    তবে সাধু নির্ভয়ে সেই সৰ্প কন্ঠে ধরি।
    হরিনাম দিলা তারে স্বশক্তি সঞ্চারি।।
    করতালি দিয়া তেঁহো হরিনাম গায়।
    তাহা শুনি সৰ্প প্রেমে নাচিয়া বেড়ায়।।
    অবিশ্রান্ত অশ্রুধারা বহে দুনয়নে।
    পুন পুন শির নেওয়ায় বৈষ্ণব-চরণে।।
    বৈষ্ণবের পদরজ করিয়া ধারণ।
    আর হরিনাম ব্রহ্ম করিয়া শ্রবণ।।
    দেখিতে দেখিতে সর্প সিদ্ধ দেহ পাঞা।
    দিব্য বৃন্দাবনে গেলা চতুৰ্ভুজ হঞা।।
    লোক সব দেখি সেই অচিন্ত্য মহত্ত্ব।
    বৈষ্ণব হইয়া হরি-নামে হৈলা রত।।
    দিন কত পরে সাধুর উৎকণ্ঠা হইল।
    শ্রীপাট শান্তিপুরে আসি উদয় হইল।।
    শ্রীঅদ্বৈত প্রভু দেখি প্রিয় হরিদাসে।
    আইস বাপ বলি প্রেমানন্দ-রসে ভাসে।।
    শ্রীপাদ প্রভুরে দেখি ব্রহ্মহরিদাস।
    অষ্ট অঙ্গে প্রণমিয়া কহে দৈন্যভাষ।।
    প্রভু তারে আলিঙ্গিয়া কহে মিষ্টবাণী।
    দৈন্যছাড় তোহে মুঞি প্রাণ সব মানি।।
    দোঁহে ইষ্ট আলাপনে প্রেমে মগ্ন হৈলা।
    হরি বলি বাহু তুলি নাচিতে লাগিলা।।
    হেন মতে নিতি নিতি মহোৎসব বাঢ়ে।
    কুলীন ব্রাহ্মণগণ কহে পরস্পরে।।
    হরিদাসের সঙ্গ যদি না ছাড়ে আচার্য্য।
    সমাজেতে সেই সত্য হইবেক বর্জ্জ।
    আচাৰ্য্য তাহাতে নাহি মনোযোগ কৈলা।
    প্রভুরে পাষন্ডিগণ বর্জ্জন করিলা।।
    প্রভু কহে ভাল ভাল অসৎসঙ্গ গেল।
    আমাতে শ্রীভগবান্ দয়া প্ৰকাশিল।।
    একদিন শুনহ অপূৰ্ব্ব বিবরণ।
    শান্তিপুরে ধনী এক কুলীন ব্রাহ্মণ।।
    তার ঘরে এক শুভ ক্রিয়ার নিমন্ত্রণে।
    শতাধিক বিপ্র আইলা অতি হৃষ্টমনে।।
    সম্মান পাইয়া সভে বসিলা আসনে।
    হেনকালে ন্যাসী এক আইলা সেই স্থানে।।
    প্রভাকর সম তান তেজস্বিনী মূৰ্ত্তি।
    তাঁর অঙ্গে কান্ত্যে সৰ্ব্বদিগ পায় স্ফূৰ্ত্তি।।
    বৃক্ষতলে বসি তিঁহো না কহয়ে বাত।
    লোক সভ আসি তানে করে প্রণিপাত।।
    অন্ধ মুক আদি যত সাধুস্থানে আইলা।
    তাঁর পাদপদ্ম-রজ সৰ্ব্বাঙ্গে মাখিলা।।
    সাধু-পদরেণু স্পর্শে ব্যাধি দূরে গেলা।
    মহানন্দে তারা সভে নাচিতে লাগিলা।।
    অন্ধগণে পাইলা চক্ষু পঙ্গু পাইলা পদ।
    বোবাতে কহয়ে কথা ঘুচিল আপদ।।
    আশ্চৰ্য্য দেখিয়া যত কুলীন ব্রাহ্মণ।
    পণ্ডিতাভিমাণী আর পাষন্ডীগণ।।
    সভে আসি সাধুপদে করয়ে প্রণতি।
    গলে বস্ত্র বান্ধি করে বহুবিধা স্তুতি।।
    সাধুর সেবার লাগি করে বহু দৈন্য।
    সাধু কহে নাহি থাঙ বিষ্ণুপ্রসাদ ভিন্ন।।
    বিষ্ণুর প্রসাদ হয় পরম পবিত্র।
    বিষ্ণুর অনিবেদ্য দ্রব্য যৈছে মল মূত্র।।
    দেবলোক পিতৃলোক আদি সাধুজন।।
    বিষ্ণুর নৈবেদ্য বিনু না করে গ্রহণ।
    এই নিত্য শ্রুতিবাক্য করিলে হেলন।
    ঘোর নরকেতে তার অবশ্য পতন।
    কর্ম্মকর্তা করে মোর গৃহে নারায়ণ।।
    তাহান প্রসাদ তোঁহে করোঁ সমর্পণ।
    তথাস্তু বুলিয়া সাধু স্বীকার করিলা।।
    ব্রাহ্মণ সমাজে তবে তাঁরে বসাইলা।
    নক্ষত্র মণ্ডলী মধ্যে যৈছে সুধাকর।।
    ব্রাহ্মণ মণ্ডলী মাঝে যৈছে সাধুবর।
    সাধুরে যতন করি অন্ন সমৰ্পিলা।।
    পিছে দ্বিজগণে অন্ন পারশ করিলা।
    ব্রাহ্মণ ভোজন যবে হৈল সমাধান।।
    হেনকালে প্রভু তথি করিলা পয়ান।
    অন্তর্যামী শ্রীঅদ্বৈত জগতের গুরু।।
    শুদ্ধ ভকতের হয় বাঞ্ছাকল্পতরু।
    ব্রাহ্মণ সমাজে দেখি ব্রহ্মহরিদাসে।।
    ঈষৎ হাসিয়া প্রভু করে মৃদুভাষে।
    প্রিয় হরিদাস কিবা ভাব প্রকাশিলা।।
    বহুত ব্রাহ্মণগণের জাতিনাশ কৈলা।
    হরিদাস কহে প্রভু মোর ইচ্ছা নহে।
    বসিয়াছোঁ দ্বিজবর্গের বিশেষ আগ্রহে।
    এত কহি তুরিতে করিয়া আচমন।
    প্রভুরে প্রণমি বহু করিলা স্তবন।।
    তাহা দেখি দ্বিজগণের হৈল চমৎকার।।
    কহয়ে আচার্য্যে সাক্ষাৎ বিষ্ণু অবতার।
    যার সঙ্গদোষে ইঁহার করিলাঙ বর্জ্জন।।
    সেই হরিদাসের হয় অলৌকিক গুণ।
    হরিভক্ত মনের বিশুদ্ধ কলেবর।।
    তাহে জাতিবুদ্ধি হয় মহাপাপকর।
    শ্রীঅদ্বৈত-পদে মোরা কৈলোঁ অপরাধ।।
    শিক্ষাইলা ভক্তদ্বারে করিয়া প্রসাদ।
    এত কহি দ্বিজগণ যুড়ি দুই কর।।
    গলে বস্ত্ৰ বান্ধি আইলা আচার্য্য গোচর।
    তবে দয়া করি প্রভু দেখায় স্বরূপ।।
    মহাবিষ্ণু সদাশিব দুই এক রূপ।
    রূপ দেখি দ্বিজগণের হৈল ভাবোদগম।
    অশ্রু কম্প পুলক ধরে কদম্বের সম।।
    কহে তুয়া পদে প্রভু লইনু শরণ।।
    অপরাধ ক্ষমি মাথে দেহ শ্রীচরণ।
    অষ্টাঙ্গে প্রণতি তবে করিলা স্তবন।।
    প্রভুর পাদোদক পান কৈলা সৰ্ব্বজন।
    প্রভু কহে দ্বিজগণ না করিহ ভয়।।
    হরি নামের অবিচিন্তা মহাশক্তি হয়।
    সেই নামব্রহ্ম জপ কর সংকীৰ্ত্তন।।
    অনায়াসে হৈব সভার অভীষ্ট পূরণ।
    এক কহি শ্রীঅদ্বৈত নিজ গৃহে গেলা।।
    মহিভোগ্যে দ্বিজগণ বৈষ্ণব হইলা।
    শ্রীবৈষ্ণবপাদের হয় অনন্ত মহিমা।।
    মুঞি ছার নাহি জানোঁ তার বিন্দু কণা।
    ভাগ্যোদয়ে ম্লেচ্ছ যদি কৃষ্ণ ভক্তি পায়।।
    ব্রাহ্মণত্ব লভে সেই বেদে ইহা গায়।
    যৈছে কোন রসযোগে কাংশ্য স্বর্ণ হয়।।
    তৈছে ভক্তিযোগে শুদ্ধ সত্ত্ব উপজয়।
    কদর্য্য স্বভাব দ্বিজগণের আছিল।।
    বৈষ্ণব প্রভাবে তাহা বিশুদ্ধ হইল।
    অজ্ঞে জানাইতে প্রভু বৈষ্ণব-মহত্ত্ব।।
    দ্বিজ থুইঞা হরিদাসে দিলা শ্রাদ্ধপাত্র।
    হরিদাস যোড় করে প্রভুরে কহিলা।।
    ব্রাহ্মণে না দিয়া কাহে মোরে পাত্র দিলা।
    প্রভু কহে শ্রীবৈষ্ণবের অলৌকিক বল।।
    তুমি খাইলে হয় কোটি ব্রহ্ম ভূজ্যের ফল।
    হরিদাস কহে তুহুঁ শ্রীবৈষ্ণবাচার্যা।।
    তব আজ্ঞা হয় ধৰ্ম্মশাস্ত্র রূপে ধার্য্য।
    শ্রীবৈষ্ণবাচার্য্য নাম শুনি প্রভু বর।।
    প্রেমাবিষ্ট হঞা উচ্চ করয়ে হুঙ্কার।
    হরিদাসে সঙ্গে তান বাঢ়িল উল্লাস।।
    সদা করে হরিনাম কীৰ্ত্তন বিলাস।
    এক দিন হরিদাস কহে প্ৰভুস্থানে।।
    নিত্য ধর্ম্ম নষ্ট করে দুষ্ট ম্লেচ্ছগণে।
    দেবতা প্রতিমা ভাঙ্গি করে খন্ড খন্ড।।
    দেব-পূজার দ্রব্য সব করে লন্ড ভন্ড।
    শ্রীমদ্ভাগবত আদি ধৰ্ম্মশাস্ত্রগণে।।
    বল করি পোড়াইয়া ফেলায় আগুনে।
    ব্রাহ্মণের শঙ্খ ঘন্টা কাড়ি লঞা যায়।।
    অঙ্গের তিলক মুদ্রা বলে চাটি খায়।
    শ্রীতুলসী বৃক্ষে মুতে কুকুরের সমে।।
    দেবগৃহে মলত্যাগ করে দুষ্টমনে।
    পূজায় বসিলে দেয় কুলকুচা জল।।
    সাধুরে তাড়না করে বলিয়া পাগল।
    হেন মতে কত শত দুষ্ট ব্যবহারে।।
    অবহেলে সৰ্ব্ব ধৰ্ম্ম কৰ্ম্ম নষ্ট করে।
    কৃষ্ণের প্রতিজ্ঞা দৃঢ় আছে শাস্ত্রে জানি।।
    যেই যেই কালে হয় সত্যধর্ম্মের গ্লানি।
    যেইকালে হয় অধর্ম্মের প্রাদুর্ভাব।।
    সেই সেই কালে কৃষ্ণ হয় আবির্ভাব।
    এবে সেই কাল আসি হৈল উপস্থিত।।
    ইথে কাহে কৃষ্ণচন্দ্ৰ না হৈলা উদিত।
    কিমতে হইব প্রভু ধর্ম্মের রক্ষণ।।
    তাহা ভাবি সদা মোর উৎকণ্ঠিত মন।
    প্রভু কহে এই কলি কাল ব্যবহার।।
    কৃষ্ণের প্রকট বিনু নাহি প্রতিকার।
    কৃষ্ণ প্রকটিয়া নাম করোঁ সুবিস্তার।।
    অনায়াসে উদ্ধারিমু সকল সংসার।
    এত করি হুঙ্কার করতে ঘনে ঘনে।।
    হরিদাস প্রেমাবেশে করয়ে নর্তনে।
    যদ্যপি অদ্বৈতচন্দ্ৰ সৰ্ব্বতত্ত্ব জানে।।
    তথাপি প্রতিজ্ঞা কৈলা লৌকিক বিধানে।
    শ্রীচৈতন্য শ্রীঅদ্বৈত পদে যার আশ।।
    নাগর ঈশান কহে অদ্বৈত প্ৰকাশ।

    ইতি শ্রীঅদ্বৈত প্রকাশে নবমোহধ্যায়ঃ।।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleজেমস বন্ড সমগ্র – ইয়ান ফ্লেমিং
    Next Article ভ্রান্তিবিলাস – ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.