Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    অনড় দাঁড়ালাম – তসলিমা নাসরিন

    তসলিমা নাসরিন এক পাতা গল্প352 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ১৩০. চীনের অভিজ্ঞতা

    ১৩০. চীনের অভিজ্ঞতা

    চীনের বর্তমান অবস্থা বোঝার জন্য আমাকে মোটা মোটা বই পড়তে হয়নি, অগুনতি প্রবন্ধ নিবন্ধ পড়তে হয়নি, নানান তথ্যচিত্র দেখতে হয়নি, সারা চীন ঘুরে ঘুরে তদন্ত করতে হয়নি, আমার এক প্রশ্ন শুনে আমার দোভাষী চৈনিক ভদ্রমহিলার যে প্রতিক্রিয়া দেখেছিলাম, তাতেই যা বোঝার বুঝেছিলাম। তিয়ানানমান স্কোয়ারে দাঁড়িয়ে আমি শুধু জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘আচ্ছা, এখানে সেদিন, ১৯৮৯ সালে, মোট কতজন মানুষকে মারা হয়েছিল?’ সঙ্গে সঙ্গে ভদ্রমহিলা ছিটকে সরে গেলেন, থরথর করে কাঁপতে লাগলেন, কাঁপতে কাঁপতে বললেন, ‘কিছু জানি না, কিছু জানি না, আমরা কিছু জানি না সেদিন কী ঘটেছিল, আমরা কিছু দেখিনি, কিছু পড়িনি, কিছু শুনিনি, কিছু জানি না।’

    দু’দিন আগে বাংলাদেশের এক লোককে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকাকালীন মোহাম্মদ নাসিম নাকি স্বাস্থ্য পরিষেবা, হাসপাতাল ইত্যাদির বারোটা বাজিয়েছেন? স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ টাকা নাকি দলবল মিলে নিজেদের পকেটে ভরেছেন? এটা কি সত্যি যে নিজের অসুখ হলে দেশে চিকিৎসা না ক’রে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে চেয়েছিলেন?’ লোকটি আমার প্রশ্ন শুনে মুহূর্তে ফ্যাকাসে হয়ে গেলেন। গলা কাঁপছিল যখন বলছিলেন যে কাক পক্ষী যেন না জানে আমার এই প্রশ্নগুলো তিনি শুনেছেন। আরে প্রশ্ন তো আপনি করেননি, করেছি আমি! না এতেও তাঁর ভয় কাটেনি। বুঝতে পারলাম সরকার সম্পর্কে সমালোচনা করা তো অপরাধই, সমালোচনা শোনাও অপরাধ, এমনকি সরকারকে নিয়ে কারও কোনও প্রশ্ন শোনাও অপরাধ।

    চীনের বেলায় অন্ন বস্ত্র বাসস্থান, স্বাস্থ্য শিক্ষা নিরাপত্তা দিচ্ছি, বিনিময়ে বাক স্বাধীনতা কেড়ে নিচ্ছি।

    বাংলাদেশের বেলায় চাটুকার ছাড়া কাউকে কিছুই দিচ্ছি না, বাকস্বাধীনতা তো দিচ্ছিই না।

     ১৩ ১. দুই বাংলা

    দুই বাংলা ভাই ভাই। দুটো বাংলাই আমার সঙ্গে যে ব্যবহার করেছে, তা অবিকল একই ব্যবহার। হিন্দু মুসলমানে ঝগড়া লড়াই হয়, পূর্ব-পশ্চিম ভাগ হয়ে যায়। কিন্তু আমার ব্যাপারে পূর্ব আর পশ্চিমের চিন্তাভাবনা এক, সিদ্ধান্ত এক, তারা মিলে মিশে একাকার হয়ে যায়।

    একসময় বাংলার পূর্ব পারে আমার জনপ্রিয়তা আকাশ ছুঁতো, মানুষ দূর দূর শহর থেকে আমাকে একটিবার চোখের দেখা দেখতে আসতো। এক বইমেলাতেই কুড়ি পঁচিশ হাজার বই বিক্রি হয়ে যেত। প্রকাশকদের অগ্রীম রয়্যাল্টি রেখে কুল পেতাম না। সেই দেশে হঠাৎ শুনি ধর্মান্ধরা ফুঁসছে, ধর্মান্ধরা তো ফুঁসবেই, আমি যে ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে লিখি। এরপর শুনি পুরুষতান্ত্রিকরা ফুঁসছে। এর পেছনেও যুক্তি আছে, আমি নারীর সমানাধিকারের পক্ষে কথা বলি, ওরা ফুঁসবেই। এরপর শুনি শিল্পী সাহিত্যিকরা ফুঁসছে। ও বাবা, তা কেন? আমি তো দেশের একটিও পুরস্কার পাইনি, প্রতাপশালী প্রভাবশালী কারও সঙ্গে ওঠা বসা নেই। বইও ব্যান করে দেয় সরকার। তাহলে রাগটা কেন? বই বিক্রি হত বলে?

    সে তো অতীতে, এখন তো বই ছাপাও হয় না, বিক্রিও হয় না, তাহলে এখনও ফুঁসছে কেন? আত্মজীবনীতে সত্য কথা লিখেছি বলে? তাহলে ২/১ জন ফুঁসলেও ফুঁসতে পারে, সবাই কেন? ২৫ বছর হয়ে গেল দেশ থেকে বের করেছে সরকার, আমার অনুপস্থিতিতে যে যার খুশিমতো আমার বিরুদ্ধে রাশি রাশি মিথ্যে লিখে কাগজ বিক্রি করেছে। আমাকে নিষিদ্ধ করেছে সর্বত্র। দেশের চেহারাও এর মধ্যে পালটে গেছে। মেয়েদের মাথায় হিজাব উঠেছে, পুরুষের কপালে নামাজের কালো দাগ পড়েছে। ধর্মান্ধতা, মৌলবাদ, পুরুষতন্ত্র, নারীবিদ্বেষ, সাম্প্রদায়িকতা এখন দেশের সম্পদ। এই দেশে নিষিদ্ধ হওয়াও বোধহয় বড় এক প্রাপ্তি।

    পশ্চিমবঙ্গেও একই ঘটনা ঘটেছে। তুমুল জনপ্রিয় আমি। আমার নাম মুখে আনা মানে জাতে ওঠা। তারপর সরকার বলা নেই কওয়া নেই রাজ্য থেকে তাড়ালো আমাকে। অত্যন্ত অন্যায় আচরণ করলো। তছনছ করে দিল বাংলায় বাস করার আমার সব স্বপ্ন। ব্যস অমনি এক তুড়িতে জনপ্রিয়তা হাওয়া হয়ে গেল। আমার নাম মুখে আনলে এখন জাত যায় লোকের। কেউ কেউ বলে এক প্রখ্যাত সাহিত্যিক নাকি আমাকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে তাড়াবার চিত্রনাট্য লিখেছিলেন, বড় রাজনীতিক এবং বড় প্রকাশক শুধু মঞ্চে এসে অভিনয় করে গেছেন। কিন্তু আমি তো বড় কোনও পুরস্কার পাইনি। সাহিত্য একাডেমি, পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ ইত্যাদি কিছুই তো পাইনি, তাহলে রাগ কেন? সাহিত্যিকদের শখের রাগ! মাঝে মাঝে লোকে যখন আমার উদ্দেশে বলে, ‘ও তো কোনও সাহিত্যিকই নয়’, তখন বেশ স্বস্তি পাই। সাহিত্যিক নই বলে সাহিত্যিকের ওইসব শখের রাগও নেই আমার। আমি যে কতকিছু থেকে মুক্ত!

    কেউ কেউ আবার বলে দেশে পুরস্কার না পেলেও বিদেশ থেকে কত পুরস্কার পেয়েছি! সেইজন্য রাগ? কিন্তু বিদেশ তো স্বেচ্ছায় ত্যাগ করেছি আমি। যোগাযোগও সব বন্ধ করে দিয়েছি। বিদেশে পুরস্কার পাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই এখন। আমি তো সেইখানে এসে নোঙর ফেলেছি, যেখানে আমি নিষিদ্ধ। সেইখানে এসে থেমেছি যেখানে পায়ের তলায় কোনও মাটি নেই। আমার এত পতন, এত না-পাওয়া তাদের তো অন্তত খুশি করতে পারে!

     ১৩২. ভালোবাসা

    মানুষের ভালোবাসাই আমার পুরস্কার। আমি বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক, স্বাধীনতা পদক, এই সাহিত্য সেই সাহিত্য পুরস্কার কিছুই পাইনি। এতে আমার কোনও দুঃখ নেই। বিরাট সংখ্যক মানুষ আমার প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করে, বিরাট সংখ্যক মানুষ আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে, বিরাট সংখ্যক মানুষ আমার কিছু না জেনেই আমার সবকিছু জানে বলে বিশ্বাস করে, বিরাট সংখ্যক মানুষ আমাকে ঠান্ডা মাথায় খুন করতে চায়, সরকার আমার প্রাপ্য অধিকার কেড়ে নিয়েছে, আমার মানবাধিকার লংঘন করছে। এই অপমানিত, উপেক্ষিত, অত্যাচারিত, অসম্মানিত, লাঞ্ছিত, অধিকার-বঞ্চিত মানুষটিকে দেশের অল্প কিছু মানুষ ভালোবাসে। এটিই আমার জন্য অনেক।

     ১৩৩. করোনা পুজো

    পশ্চিমবঙ্গে, আসামে, বিহারে, আর কোন কোন রাজ্যে জানি না, করোনা ভাইরাসকে দেবী মনে করে পুজো চলছে। ন’টা লাড্ডু, ন’টা লবঙ্গ, ন’টা ফুল দেবীকে দেওয়া হয়। পুজোর মূল উদ্দেশ্য, করোনা দেবী যেন চলে যান, মানুষ যেন মহামারী থেকে বাঁচে। একজন বলেছেন, স্বপ্নে এই পুজো করার আদেশ এসেছে। বেশ, ভালো কথা, আদেশ মানা হয়েছে। এই পুজোটা কিন্তু সংক্রামক। বিহারের কোথাও হচ্ছে বলে শিলিগুড়িতে হল, শিলিগুড়িতে হল বলে কলকাতায় হল, কলকাতায় হল বলে গৌহাটিতে হল। কেউ পিছিয়ে থাকতে চাইছে না। আমি এই পুজোর খবর পেয়ে মোটেও অবাক হইনি। এর চেয়ে আরো ভয়ংকর কুসংস্কার আমি দেখেছি। এ পুজো তো অশিক্ষিত অল্প-শিক্ষিত নিরীহ মহিলারা করছে। আমরা কি লেখাপড়া জানা ভদ্রলোকদের করোনা থেকে বাঁচতে গোমূত্র পান করতে দেখিনি, সারা গায়ে গোবর লেপে বসে থাকতে দেখিনি? আমরা বড় বড় তারকা, বড় বড় রাজনীতিক, বড় বড় ধনকুবেরদের কি মানুষ ঠকানোর ব্যবসায়ী গুরুদের পায়ে মাথা ঠেকাতে দেখিনি! আমরা কি রকেট ছাড়ার আগে নারকেল ভাঙতে বা মন্দিরে মিনিয়েচার রকেট নিয়ে বিজ্ঞানীদের পুজোয় বসতে দেখিনি? পুজো-আচ্চা নিয়ে থাকা কিছু মহিলা, যারা বিজ্ঞান মনস্ক হওয়ার কোনওরকম সুযোগ পায়নি জীবনে, তারা করোনা পুজো করেছে, বিজ্ঞানের বিরাট বিরাট বই পড়ে পণ্ডিত হওয়া ভদ্রলোকদের কুসংস্কারের তুলনায় এ কিছুই নয়।

     ১৩৪. ভাইরাস

    ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে মানুষ আমেরিকায়। সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে আমেরিকায়। অথচ এই আমেরিকায় করোনা ভাইরাসের ভয় ডর উড়িয়ে দিয়ে হাজার হাজার মানুষ বেরিয়ে পড়েছে রাস্তায়। লকডাউন মানছে না, সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং মানছে না। ভাইরাসে মরতে হয় মরবে কিন্তু জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার প্রতিবাদ করতেই হবে, অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতেই হবে। জর্জ ফ্লয়েড লোকটি কালো, কোনও একটি দোকানে কিছু কিনতে গিয়ে ২০ টাকার জাল নোট দিয়েছিল বলে দোকানিরা পুলিশ কল করে, পুলিশ এসে হাতকড়া পরিয়ে জর্জকে নিয়ে যায়। এটুকু পর্যন্ত ঠিক ছিল। কিন্তু পুলিশের এক লোক হঠাৎ হাতকড়া পরা জর্জকে মাটিতে শুইয়ে তার গলা পিষতে থাকে হাঁটু দিয়ে। পুলিশের অন্য লোকগুলো দেখে গেছে শুধু, জর্জকে বাঁচাবার চেষ্টা করেনি। ভিডিওতে হত্যার নির্মম দৃশ্যটি দেখার পরও পুলিশগুলোকে গ্রেফতার করা হয়নি। প্রতিবাদ হচ্ছে দেখে মামলা করা হয়েছে, কিন্তু ফার্স্ট ডিগ্রি নয়, থার্ড ডিগ্রি মার্ডারের জন্য । থার্ড ডিগ্রি, এর মানে হত্যা করার উদ্দেশে পুলিশের লোকটি জর্জের গলা আট মিনিট ধরে পেষেনি!!

    জর্জ ফ্লয়েডকে যেভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে পুলিশ, তার বিরুদ্ধে সব ধর্মের, সব বর্ণের, সব শ্রেণির মানুষ আজ রুখে উঠেছে। বর্ণবৈষম্যের প্রতিবাদে গর্জে উঠেছে আজ আমেরিকা। তবে যারা বেরিয়েছে ঘর থেকে, সবাই প্রতিবাদের উদ্দেশে বের হয়নি। কেউ কেউ বেরিয়েছে ভায়োলেন্স করতে, কেউ কেউ বেরিয়েছে দোকানপাট লুঠ করতে। যে কোনও আন্দোলনেই এমন কিছু অসৎ লোক থাকে, যারা মিছিলে যায় না, শুধু লুঠ করতেই ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এদিকে কিছু মিডিয়া শুধু ভাঙচুর, আর জ্বালানো পোড়ানোর কথাই বলছে, লুঠের কথাই বলছে, বৈষম্যের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ মিছিলগুলোর কথা বলছে না। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকে শেষ অবধি অন্যায় বলে প্রমাণ করার জন্য ওরা মরিয়া হয়ে উঠেছে। কিন্তু বাম হও, ডান হও, সাদা হও, কালো হও, সবচেয়ে বড় কাজ এই মুহূর্তে নিরপেক্ষ থাকা।

    আমেরিকায় বর্ণবাদ আগের চেয়ে অনেক কম, এবং বর্ণবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আগের চেয়ে অনেক বেশি। যে কোনও অন্যায়ের প্রতিবাদ হওয়া অত্যন্ত জরুরি। প্রতিবাদ না হলে সমাজে অন্যায়গুলোই খুব স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়ায়। তখন অন্যায়গুলোকে আর অন্যায় বলে মনে হয় না। এই যে প্রতিবাদ হচ্ছে আমেরিকায়, জ্বালানো পোড়ানো আর লুঠের ঘটনা বাদ দিলে এ প্রতিবাদ অত্যন্ত জরুরি প্রতিবাদ।

    মিছিলে বা শহরে শহরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গত দুদিনের যে চিত্রটি দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি, তা হল সাদাদের উপস্থিতি। শুধু কালো নয়, সাদারাও প্রতিবাদ করছে, তাদের হাতেও ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ লেখা প্ল্যাকার্ড, তারাও স্লোগান দিচ্ছে, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে তারাও যাচ্ছে। আসলে সত্যি বলতে, অধিকাংশ মিছিলে কালোর চেয়ে সাদার সংখ্যাই বেশি। কালোদের বিরুদ্ধে বৈষম্য ঘোচানোর জন্য যে সাদারা করোনার ঝুঁকি নিয়ে আজ আন্দোলন করছে, তাদের জন্যই এই পৃথিবীটা সুন্দর। আসলে ইউরোপ আর আমেরিকার সমাজে বর্ণবাদ যেমন সাদারা এনেছে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে আইন জারি করা, সমাজ থেকে একে দূর করার আন্দোলন সাদারাই করেছে। সংখ্যালঘুরা একা আন্দোলন করলে কোনও ফল পেতো না।

    ভারতীয় উপমহাদেশে এরকম দৃশ্যই দেখতে চাই। হিন্দুর ওপর অত্যাচার হলে মুসলমান প্রতিবাদ করবে, মুসলমানের ওপর হলে হিন্দু করবে প্রতিবাদ। এই সহযোগিতা, এই সহমর্মিতাই পৃথিবীকে সুন্দর করবে।

     ১৩৫. কাজ

    আমার সঙ্গে প্রায়ই এক লেখক-বন্ধুর ফোনে কথা হয়। কী করলে সারাদিন জিজ্ঞেস করলে বলে, সারাদিন লিখেছি বা সারাদিন পড়েছি।

    আজও বললো।

    তুমি কী করলে? সেও জিজ্ঞেস করলো।

    আমি বললাম, আমি রান্না করলাম, বাসন মাজলাম, কাপড় কাচলাম, ঘর ঝাঁট দিলাম, ঘর মুছলাম, ডাস্টিং করলাম, গাছে জল দিলাম, মিনুকে খাওয়ালাম। তারপর লিখতে বসলাম। কিন্তু এত টায়ার্ড যে লিখতে পারলাম না, কম্পিউটারের সামনেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। তোমার ফোনের শব্দে উঠলাম।

    —ও।

    —তোমার বাড়িতে কাজের লোক এসেছে?

    —আরে না। আমাদের কম্পাউন্ডে তো কাজের লোকদের ঢুকতেই দেওয়া হচ্ছে না।

    —ভ্যাক্সিন না নিয়ে পার্ট টাইম কাজের লোক রাখা ঠিক নয়। ওরা যে ভাইরাস নিয়ে বাড়িতে ঢুকবে না তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। তোমারও তো আমার মতো ডায়বেটিস, বয়সও একই। ইমিউন সিস্টেম খুবই উইক, ভাইরাসের সঙ্গে ফাইট করে আমরা বাঁচতে পারবো না।

    —হু।

    —কতটা লিখেছো?

    —একটা বই হয়ে যাবে।

    —বাহ। আমারও তো ইচ্ছে ছিল বই লেখার। কিন্তু… আচ্ছা তোমার বাড়িতে কি তোমাকে কিছু করতে হয় না?

    —মানে?

    —মানে রান্না করা, বাসন মাজা

    —না।

    —ঘর ঝাঁট দেওয়া, ঘর মোছা

    —না।

    —ডাস্টিংও না?

    —না।

    —কাপড় কাচা, কাপড় রোদে শুকোতে দেওয়া, ফোল্ড করে আলনায় বা আলমারিতে রাখা, কিচ্ছু না?

    —না।

    —গাছে জল দেওয়া?

    —না।

    —কে করে সব?

    —কে আবার! ওয়াইফ করে।

    —তোমার ওয়াইফ তো ফিজিক্সের টিচার।

    গানও তো করেন বলেছিলে। এখন কি গান গাওয়ার টাইম পান?

    —তা জানি না।

    —দেখলে তো, মেয়েরা সংসারের সব কাজ করে, তাই পুরুষের জন্য ক্রিয়েটিভ কাজ করাটা কত সহজ! যে লেখক সে লেখার টাইম পায়, যে গায়ক সে গান গাওয়ার টাইম পায়, যে আর্টিস্ট সে আর্ট করার টাইম পায়। কিন্তু আমাদের তো টাইম হয় না।

    —বাজে কথা বোলো না।

    —বাজে কথা বলেছি?

    — হ্যাঁ বলেছো। বর্ডারে পুরুষেরা যুদ্ধ করছে, দেশকে রক্ষা করতে গিয়ে নিজেরা মরছে, তাদের জন্য ফীল করো?

    —কথা হচ্ছিল বাড়িতে তোমার ক্রিয়েটিভ কাজের সুবিধে নিয়ে, হঠাৎ বর্ডারের আর্মির কথা পাড়লে কেন? ওদের জন্য নিশ্চয়ই ফীল করি। যুদ্ধ, মৃত্যু এসব তো কাম্য নয়। ওরা তো শখ করে যায় না, চাকরি করে বলে বাধ্য হয়ে যায়। মেয়েরাও তো আর্মিতে, পুলিশে, মেয়েরাও তো মরছে। মেয়েদের যুদ্ধ তো শুধু দেশ রক্ষার জন্য নয়, সমাজ, সংসার, পরিবার, এমনকি নিজেদের রক্ষার জন্যও।

    —উফ।

    —আচ্ছা, তুমি যে ঘরের কোনও কাজ করো না, এটা কি পুরুষেরা বর্ডার রক্ষা করছে বলে?…

    বন্ধুটির খুব রাগ হল। ফোন কেটে দিল।

     ১৩৬. করোনা

    আর ভালো লাগছে না করোনা নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে। যা হবার হবে। আমেরিকার লক ডাউন ভেঙে প্রচুর মানুষ পথে নামছে। সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং কেউ আর মানছে না। পুলিশি বর্বরতার প্রতিবাদ করা জরুরি আবার ভাইরাস থেকে বাঁচাটাও জরুরি। একটি করলে আরেকটি হয় না। জানি না পৃথিবী কোনদিকে যাচ্ছে। ভারতে ভেবেছিলাম করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা কমবে, এখানেও ভয়ংকর বাড়ছে। কোনও কোনও বিজ্ঞানী বলছেন, জুলাইয়ের শেষদিকে ভারতের ৬৫ কোটি লোকের শরীরে করোনা ঢুকবে। ভ্যাক্সিন হয়তো আসবে, কিন্তু করোনা রয়ে যাবে। করোনার সঙ্গে যুদ্ধ করে যারা বাঁচার তারা বাঁচবে, যারা মরার, তারা মরবে। এই সত্যটি মেনে নিলে দুশ্চিন্তা, হতাশা, ভয় ইত্যাদি কম হয়।

    কমই হচ্ছে কিন্তু টেলিভিশন দেখতে গেলেই আবার হতাশারা উড়ে আসে। যখন ওই সাদা পুলিশটি হাঁটু দিয়ে চেপে ধরেছিল কালো লোকটির গলা, কালো লোকটি বলছিল সে শ্বাস নিতে পারছে না, তারপরও সাদা পুলিশটি হাঁটু সরাচ্ছে না, দেখছিলাম আর আমার শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। সত্যি শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল যেন আমারই শ্বাসনালীতে চাপ পড়ছে। পরিযায়ী শ্রমিকেরা যখন হাজার কিলোমিটার হাঁটছিল, মনে হচ্ছিল আমিই বোধহয় পেটে ক্ষিধে নিয়ে হাঁটছি, মাথায় ভারি বোঝা নিয়ে হাঁটছি, আমার চপ্পলের বোধহয় ফিতে ছিঁড়ে গেছে। কিন্তু হাঁটছি, হন হন করে। চপ্পল পড়ে রয়েছে পথে, আমি হাঁটছি।

    আমার আর করোনার খবর দেখতে ইচ্ছে করে না আজকাল। আমার আর মানুষের কষ্ট যন্ত্রণা মৃত্যু দেখতে ইচ্ছে করে না। আমার আর হতাশায় ডুবে থাকতে ইচ্ছে করে না। যে কটাদিন জীবনের বাকি, সে কটাদিন আনন্দময় একটি জীবনযাপন করতে ইচ্ছে করে। কিন্তু আনন্দ কোথায় পাবো! আনন্দ নির্বাসনে গেছে। দক্ষিণ কোরিয়া লকডাউন উঠিয়ে নিয়েছিল, করোনা নতুন করে হামলা করেছে বলে ফের বন্ধ করে দিতে হয়েছে সব। জানিনা উপমহাদেশের কী হাল হবে লকডাউন উঠিয়ে নিলে।

    এই পৃথিবী দিন দিন অচেনা পৃথিবী হয়ে উঠছে।

     ১৩৭. ঈদ

    ১২/১৩ বছর বয়স অবধি নতুন জামা জুতো পরা, বান্ধবী আর আত্মীয়দের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া, আর সারাদিন পোলাও মাংস সেমাই জর্দা খাওয়াটাই ছিল ঈদ। তারপর ঈদ হল বাবা মা ভাই বোনের সঙ্গে এক বাড়িতে মিলিত হওয়া, হই হুল্লোড় আর এক টেবিলে সকাল দুপুর রাতের ভূরিভোজ। একসময় নির্বাসনে পাঠানো হল আমাকে। সেদিন থেকে জীবনে পোলাও মাংসও নেই, নতুন জামাকাপড়ও নেই, গেট টুগেদারও নেই। ঈদ কবে আসে, কবে যায়, জানতেও পারি না। যে ধর্ম মানে না, তার আবার ঈদ কী! ঈদ বলে আমার কিছু নেই। তবে ঈদ শব্দটি শুনলে মা বাবা ভাইদের কথা বড় মনে পড়ে। বড় বিষণ্ণ বোধ করি। সময় হয়নি, বয়স হয়নি, দুম করে একেকজন চলে গেল। আমার জগৎটা বড় ফাঁকা।

    আজ আমার দিনটি যে কোনও দিনের মতোই দিন। পরশু কিছু সবজি রান্না করেছিলাম, সেগুলো ক্ষিধে পেলে খাবো। আর কাজ কর্ম অন্য দিনগুলোর মতোই করবো। ঈদ মানে তো গেট টুগেদার, মানুষের সঙ্গে গেট টুগেদার হওয়ার জো নেই, তবে ভাবনাগুলোর কিন্তু ঠিকই গেট টুগেদার হয়, হাহাকারগুলোরও।

     ১৩৮. মৃত্যু

    করোনা ভাইরাস মানুষ মারছে। তার ওপর সাইক্লোন, তার ওপর বিমান দুর্ঘটনা। যেন কিছুতেই আর যথেষ্ট হচ্ছে না। মৃত্যুর মতো এত সহজ জিনিস বোধহয় আর কিছু নেই। বেঁচে থাকাটা কঠিন। মৃত্যুটাই সহজ। পাইলট যখন বলছিলেন মেডে মেডে মেডে, আমি বুঝিনি মেডের কী মানে। পাইলট তখন বিপদের কথা জানাচ্ছিলেন। মানুষটি তখন জানেন আর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে তিনি জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাবেন। রীতিমতো তরতাজা সুস্থ মানুষের ঠিক কেমন বোধ হয় যদি টের পান আর কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি মারা যাচ্ছেন! শুধু তিনি নন, বিমানের প্রায় সবাই!

    সাইক্লোনেও মরতে হয় মানুষকে! এরকম নয় যে হঠাৎ করেই কেউ বোঝার আগেই সাইক্লোন এসেছে। মানুষ তো জানতোই আসছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে চিরকাল গরিবকেই মরতে হয়। শ্রমিকেরা কেমন হাজার মাইল হাঁটতে হাঁটতে লরির ধাক্কায় মরে গেল, ট্রেনের তলায় মরে গেল, ডিহাইড্রেশনে মরে গেল, ক্ষিধেয় মরে গেল!

    করোনা ভাইরাসে আর কতকাল মরতে হবে কে জানে। এত মৃত্যু আর ভালো লাগছে না।

     ১৩৯. সুইডেন

    সুইডেনকে জানতাম মানবাধিকারের সর্বশ্রেষ্ঠ দেশ হিসেবে। আর আজ কিনা বিবিসির খবরে শুনি সুইডেনের বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে যখন করোনা ধরেছিল, যখন শ্বাসকষ্টে ভুগছিল রোগিরা, রোগিদের জন্য ডাক্তার ডাকা, রোগিদের হাসপাতালে পাঠানো, অক্সিজেন দেওয়া কিছুরই অনুমতি ছিল না নার্সদের। নার্সরা নিরুপায় দাঁড়িয়ে ওঁদের মৃত্যু দেখেছেন। সুইডেন কি তবে বৃদ্ধদের স্বাস্থ্যসেবা, অবসরভাতা ইত্যাদির খরচ বাঁচাতে জেনে বুঝেই ওঁদের মরতে দিয়েছে? এত বড় মানবাধিকার লঙ্ঘন তো ইউরোপের অন্য কোনও দেশ করেনি!

    সুইডেনে যত মানুষ করোনায় মরেছেন, তার অর্ধেকই বৃদ্ধাশ্রমের মানুষ। বৃদ্ধাশ্রমে শুধু সত্তরোর্ধ মানুষ ছিলেন না, ৬৫ বছর বয়সী নারী-পুরুষও ছিলেন, চিকিৎসা পেলে তাঁরা আরও অনেক বছর বেঁচে থাকতে পারতেন। এর চেয়েও বড় কথা, সবারই, সব বয়সের মানুষেরই চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার আছে। সুইডেন লকডাউনে যায়নি। শুধু লোকদের উপদেশ দিয়েছে কী করে চলতে হবে, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, হাত ধোয়া ইত্যাদি। না, মাস্ক পরার উপদেশ কিন্তু নেই। বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে বাইরের কেউ যেন ভিজিট না করে সেই উপদেশ কি সরকারের পণ্ডিত ব্যক্তিরা দিয়েছিলেন? না দেননি। শরীরে করোনা ভাইরাস নিয়ে বিনা মাস্কে হায়ার রিস্ক গ্রুপের বৃদ্ধদের দেখতে গিয়েছেন আত্মীয়-বন্ধুরা। ভিজিট না করার উপদেশ ঠিকই দেওয়া হয়েছে এখন, তবে বৃদ্ধাশ্রমের মানুষেরা মরে সাফ হয়ে যাওয়ার পর। এও কি জেনেবুঝে করা?

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleফেরা – তসলিমা নাসরিন
    Next Article ফরাসি প্রেমিক – তসলিমা নাসরিন

    Related Articles

    তসলিমা নাসরিন

    লজ্জা – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    আমার মেয়েবেলা – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    উতল হাওয়া – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    দ্বিখণ্ডিত – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    কিছুক্ষণ থাকো – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    ভালোবাসো? ছাই বাসো! – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }