Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025

    ওডিসি – হোমার

    October 13, 2025

    প্রেমের প্রান্তে পরাশর – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    October 13, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    অসাধু সিদ্ধার্থ – জগদীশ গুপ্ত

    জগদীশ গুপ্ত এক পাতা গল্প138 Mins Read0

    অসাধু সিদ্ধার্থ – ১৮

    ।। আঠার ॥

    অজয়া তাহার বাবার ও মায়ের তৈলচিত্রের সম্মুখে নতশির হইয়া বসিয়াছিল। মনে মনে বলিতেছিল,―হৃদয় আসনস্থ দেবতা, আমার প্রণাম গ্রহণ করো। আমার স্বর্গত জনক-জননীর আত্মা তোমাতে বিলীন হয়ে বিরাজ করছেন। তোমার কণ্ঠে তাঁদের স্বর চিরমুখর হয়ে ফুটে আছে। তাঁরা তোমার কণ্ঠে আমার কুশল প্রার্থনা করেছেন―তাঁদের আশীর্বাদ সার্থক হোক।

    তারপর মুখ তুলিয়া বলিতে লাগিল,–না, তোমার গভীর স্নেহার্দ্র চক্ষু আমার পানে চেয়ে হাসছে। পিতার হস্তের কল্যাণস্পার্শ আমার মাথার উপর নেমে এসেছে।  আশীর্বাদ করো না, যেন তাঁর বলিষ্ঠ উদার হৃদয়ের যোগ্য হই। তোমার মত পুণ্যবৃতী হই। আশীর্বাদ করুন পিতা, যেন আপনার পুরুষকার, নিষ্ঠা এবং শক্তি আমাদের দু’জনাতে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। আপনার অসমাপ্ত কর্ম যেন আমরা দু’জনায় সমাপ্ত করতে পারি; যেন জীবনে শান্তিলাভ করি, যেন আপনার নামটিকে কখনো লজ্জা না দিই।―বলিয়া মাটিতে মাথা ঠেকাইয়া প্রণাম করিয়া অজয়া প্রোজ্জ্বলস্মিত বদনে উঠিয়া দাঁড়াইল।

    বলা বাহুল্য, এ বিবাহ হইবেই। অজয়ার এই প্রার্থনা সেই সম্পর্কে।

    নিজেরই প্রার্থনার সুরের রেশ অজয়ার দ্বিধা-চিন্তাহীন অন্তরে তৃপ্তির মধুবৃষ্টি করিতে লাগিল।

    ননী আসিয়া খবর দিল,–একটি বৃদ্ধ ভদ্রলোক দেখা করতে এসেছেন। তোমাদের চেনেন।

    –বুড়ো মানুষকে দাঁড় করিয়ে রেখে এসেছিস বুঝি? শীগির ওপরে নিয়ে আয়। দাদাকে খবর দিস।

    কিন্তু দরজার সম্মুখেই ননীর সঙ্গে আগন্তুকের দেখা হইয়া গেল।

    .

    তোমার নামটি কি অজয়? তা’হলে তুমি আমার দিদি। আমি সিদ্ধার্থর মাতামহ।

    অজয়া সৌম্যমূর্তি বৃদ্ধের পদধূলি গ্রহণ করিল।

    অজয়ার মাথার উপর হাত রাখিয়া কাশীনাথ আশীর্বাদ করিলেন,―সৌভাগ্যবতী হও, ধন্য পুরুষ তোমাদের বংশধর হোক। রজতবাবু কোথায়?

    ―বসুন, তিনি আসছেন।

    ―বসি। কিন্তু এই যে বসলাম, কবে যে উঠবো তার কিন্তু ঠিক নেই। কাগজে পড়লাম সিদ্ধার্থকে তুমি বেঁধেছ। ভাবলাম, সিদ্ধার্থকে যে বেঁধেছে, সে কেমন মেয়ে একটিবার তা দেখে আসি। তাই এলাম―তোমাকে আর সিদ্ধার্থকে নিয়ে যাবো ব’লে। দিদিমা বুড়িকে একটা প্রণাম ক’রে আসবে না? বুড়িও সঙ্গে আসবে ব’লে কোমর বেঁধে ছিল। সঙ্গে ক’রে তোমাদের নিয়ে যাবো শপথ করে তাকে থামিয়ে রেখে এসেছি।

    অজয়া নতুন একটা আবেগ অনুভব করিতেছিল।

    অচেনা এক নিমেষেই অন্তরঙ্গ হইয়া উঠিতেছে। মানুষকে আপন করিবার সহজ বুভুক্ষা তৃপ্ত হইয়া সেই তৃপ্তির আনন্দ হিল্লোল অজয়াকে যেন আকুল করিয়া তুলিল।

    কতদিক হইতে আনন্দ আসিতেছে তাহার ঠিক নাই।

    পৃথিবী পরম সুন্দর। মানুষ পরম মিত্র।

    অভিমানের সুরে বলিল,―তাঁকেও কেন নিয়ে এলেন না, দাদামশাই বেশ হ’ত।

    –সে অনেক ঝঞ্ঝাট, অনেক কথা। ক্রমশ শুনবে।

    রজত তার সেই পুরাতন চোখের জলের নলটা হাতে করিয়াই আসিয়া দাঁড়াইল।

    অজয়া বলিল,–দাদা, ইনি সিদ্ধার্থ বাবুর মাতামহ।

    নমস্কারাদির পর রজত বলিল,-এসেছেন বেশ হয়েছে; একটা মাথা পাওয়া গেল –বন্দোবস্ত দেখতে দেখতে ঠিক হয়ে যাবে। আপনি কোথা থেকে আসছেন?

    ―রাজনগর থেকে।

    –সিদ্ধার্থ বাবু ত’ আপনার কথা কখনো বলেননি!

    –কেন বলবে? আমরা যে তার বন্ধন! আমাদের কথা ত’ সে মুখে আনবে না। কিন্তু এইবার―

    বলিয়া কাশীনাথ অজয়ারা মুখের দিকে চাহিয়া সকৌতুকে হাসিতে লাগিলেন।

    রজত বলিল,―এবার তাঁর অনেক পরিবর্তন দেখবেন।

    ―স্পর্শমণি ছুঁয়েছে যে, পরিবর্তন ত’ হবেই।

    –আপনি কোথায় পেলেন এ খভর?

    খবরের কাগজে। আমি তাকে নিয়ে যেতে এসেছি―শুধু তাকে কেন―ফাঁদ-শিকার দু’টিকেই। সিদ্ধার্থ আমাদের বড় আদরের পাত্র। আমাদের পুত্র সন্তান নেই; দু’টি কন্যা। তার একটি স্বর্গে, একটি বিধবা। রক্তের ধারা পুরুষের মধ্যে কেবল সিদ্ধার্থর দেহে বইছে; সেই ধারা বন্ধ হয়ে যাবে এই ভয়ে আমার রক্ত শুকিয়ে আসছিল―এমন সময় এই খবরটি পেয়ে বড় আনন্দে ছুটে এসেছি। তোমাদের দুটিকে দেখে আমার আসা সার্থক হয়েছে।–বলিয়া তিনি অজয়ার মাথার উপর পুনর্বার হাত রাখিলেন।

    অজয়া বলিল,―দাদা, উনি দিদিমাকে কেন সঙ্গে আনেনি জিজ্ঞাসা করো। দিদিমা এলে কেমন আমোদ হ’ত।

    যে যেখানে আছে সবাইকে সে আজ একান্ত নিকটে চাহিতেছে।

    কাশীনাথ বলিলেন,―তা হ’ত। সে কথা থাক। তোমাদের কাছে আমার একটি প্রস্তাব আছে―মনে থাকতে ব’লে রাখি। ভেবো না যেন, বুড়ো গাছে না উঠতেই এক কাঁদির স্বপ্ন দেখছে।

    রজত বলিল,―বলুন। আপনি আমাদের গুরুজন।

    –বেঁচে থাকো, সুখী হও। আমি জীবনে অনেক শোক পেয়েছি; ছেলে-মেয়ে―জামাতায় আমার পাঁচটি চিতায় উঠেছে।–বলিয়া একটু থামিয়া কাশীনাথ বলিতে লাগিলেন,–আমার কেউ ছিল না। তোমরা আমার পরমাত্মীয় হ’লে। সিদ্ধার্থ আমার উত্তরাধিকারী―আমার স্থাবর-অস্থাবর যে সম্পত্তি আছে তার মুনাফায় একটি পরিবারের রাজার হালে চলে। তোমাদের হাতে সম্পত্তি তুলে দিয়ে বিধবা মেয়েটিকে নিয়ে আমরা কাশীবাসী হ’তে চাই। বলো দিদি, সিদ্ধার্থকে সঙ্গে নিয়ে সম্পত্তি দখল ক’রে বসবে?

    অজয়া বলিল,―বসবো, আপনাকে ছুটি দেব; কিন্তু সে কথা এখন কেন দাদামশাই!

    ―বলিয়ে নিলাম, যদি পরে সময় না পাই। মনে হচ্ছে এই কথা ক’টি কারো কানে ব’লে বাবার জন্যেই বেঁচেছিলাম।

    ―বলেছেন ভাল ই করেছেন। কিন্তু আমায় আপনার ক্ষমা করতে হবে।―বলিয়া রজত অত্যন্ত কুণ্ঠিত ভাব ধারণ করিল।

    কাশীনাথ কহিলেন,―অপরাধ?

    ―অপরাধ আমি করেছি। সিদ্ধার্থ বাবু গৃহহীন–নিঃসম্বল ব’লে এ বিবাহে আন্তরিক মত আমার ছিল না।

    অজয়া বলিল,―আমাকে ত’ তা বলনি, দাদা!

    –না বলেছিলেন, ভালই করেছিলেন, বৃথা একটা অশান্তির সৃষ্টি হ’ত। এখন যদি মত হয়েছে তবে আয়োজন শেষ ক’রে ফেলো―আমার তর সইছে না।

    .

    বিমল রাস্তার দিককার বারান্দায় দাঁড়াইয়া ছিল। সুরেনের আসিবার কথা আছে, তাহারই প্রতীক্ষায়।

    সে সেখানে হইতে বলিয়া উঠিল,―দিদি, সিদ্ধার্থ বাবু আসছেন।

    শুনিয়া কাশীনাথ আকুল হইয়া উঠিলেন―“কই, কই” করিতে করিতে তাড়াতাড়ি উঠিয়া গেলেন, রজতও গেল।

    কাশীনাথ রাস্তার দু’দিকে চাহিয়া বলিলেন,―কই?

    রজত বলিল,–ঐ যে তিনি আসছেন। আপনি চেনেন না তাঁকে? অমন করছেন কেন?

    কাশীনাথ থরথর করিয়া কাঁপিতেছিলেন। মুখাবয়ব এমনই শুষ্ক যেন তাঁর আয়ুষ্কাল দুঃসহ ক্ষিপ্রগতিতে নিঃশেষিত হইয়া আসিতেছে―তাঁর লোমচর্মের উপর দিয়া নিদারুণ একটা কষ্টকতরঙ্গ বহিয়া গেল।

    অজয়াও সেখানে আসিয়া দাঁড়াইয়াছিল। কাশীনাথের কণ্ঠে হিক্কার মত দু’বার কঠিন দুটি শব্দ হইয়া স্বর যখন বাহির হইল, তখন তাঁহার মন যেন বিকৃত।

    হঠাৎ বলিয়া উঠিলেন,―আমি পালাই।

    পরক্ষণেই বলিলেন,―না পালাব না। বলিতে বলিতে যে রকম তিনি করিতে লাগিলেন সে ছট্‌ফটানির বর্ণনা নাই।

    অজয়া ও রজত্ব অপার বিস্ময়ে অবাক হইয়া তচাঁহার দিকে চাহিয়া রহিল। কাশীনাথ বলিলেন,–সিদ্ধার্থকে তুমি খুব ভালবাসো? বলো লজ্জা কি? আমি যে তোমার দাদামশাই!

    বৃদ্ধের যেন কিছুরই দিশা নাই। অজয়া নিরুত্তরে মাথা নত করিয়া রহিল।

    বৃদ্ধ হাত চাপড়াইয়া বলিতে লাগিলেন,―কিন্তু সিদ্ধার্থর যে আর একদণ্ড পরমায়ু; সে যে বাঁচবে না।

    অজয় চমকিয়া উঠিল,―সে কি? কি বলছেন আপনি?

    হঠাৎ অজয়া বৃদ্ধকে পাগল ঠাওরাইয়া বসিল।

    ―অদৃষ্ট আমার, বলতে হচ্ছে, কিন্তু মিথ্যে বলছিনে। ভগবান, দুষ্টের দমন কি, তুমি এইভাবে করছ! দিদি, আমার আরো কাছে এসো―তোমার মুখখানি ভাল ক’রে দেখি। বিধাতা, এত বড় আঘাতটা এই ফুলের বুকে নিক্ষেপ না করলে কি তোমার রাজত্ব অচল হয়ে যেত!―বলিতে বলিতে কাশীনাথ কাঁদিয়া ফেলিলেন

    এইসব উচ্ছ্বাসের রজতের খুব বিরক্ত বোধ হইতেছিল―সে মুখ ফিরাইয়া দাঁড়াইয়া রহিল। অজয়া বলিল,―শান্ত হোন। আমরা কিছুই বুঝতে পারছিনে। কি হয়েছে বলুন।

    –বলবো বই কি; বলাতেই ত’ ভগবান আমায় সময় উত্তীর্ণ না হতে দিয়ে টেনে এনে তোমাদের মধ্যে ফেলেছেন।

    সিদ্ধার্থের পায়ের শব্দ সিঁড়িতে শোনা গেল।

    কাশীনাথ একেবারে আলুথালু হইয়া উঠিলেন; বলিলেন―তোমরা থাকো―আমিই এগিয়ে যাই।

    .

    সিদ্ধার্থের চোখের জ্যোতিঃটা ফিরিতেছিল। বৃদ্ধ কাশীনাথকে সহসা সম্মুখে দেখিয়া সেইটাই আগে দপ্ করিয়া নিবিয়া গেল।

    তারপর ত্রাসে কি কিসে কে জানে তাহার মূর্তি এমন বেপমান বিবর্ণ হইয়া উঠিল যেন সে রোগশয্যা ছাড়িয়া এইমাত্র উঠিয়া দাঁড়াইয়াছে।

    কিন্তু দেখিতে দেখিতে ভিতরকার যে পশুটাকে এতদিন সে সযত্নে ঘুম পাড়াইয়া রাখিয়াছিল সেইটাই জাগিয়া উঠিয়া গা-ঝাড়া দিয়া দাঁড়াইল।

    এত কাণ্ড ঘটিতে মাত্র এক মুহূর্ত সময় গেল।

    রজত বলিল,―সিদ্ধার্থ বাবু, চিনতে পারছেন না। ইনি আপনার মাতামহ।

    বৃদ্ধ সিদ্ধার্থর মাতামহ নন। কিন্তু তাহাকে সে চিনিয়াছে। এবং তনুহূর্তেই সে বুঝিয়াছে যে, তাহার এখানকার লীলার উপর শেষ যবনিকা নামিয়া আসিয়াছে।

    সে মরিয়া হইয়া উঠিল; বলিল,―চিনেছি। চিঠিগুলি সব আমার কাছেই আছে।

    শুনিয়া কাশীনাথ হা হা করিয়া হাসিয়া উঠিলেন। মানুষ কদাচিৎ নিঃশেষে রিক্ত হয়। মনের নিভৃততম কোণে এতটুকু ভাগ্য পরিবর্তনের আশা তার বুঝি থাকেই।

    কিন্তু যে নিঃশেষে রিািক্ত হয় তার উল্লাসের বীভৎসতা এত কঠোর যে, অপরে তার আকস্মিক প্রকাশ সহ্য করিতে পারে না। বৃদ্ধের হাসির শব্দে রজত আর অজয়া উভয়েরই বুক কাঁপিতে লাগিল।

    খানিক হাসিয়া কাশীনাথ যখন থামিলেন, তখন তাঁহার শ্লথচর্ম দৃঢ় আর চোখের দৃষ্টি শানিত হইয়া উঠিয়াছে; বলিলেন,―তোমরা সিদ্ধার্থ বলছ কাকে? ওর নাম নটবর। বৈষ্ণবীর গর্ভে এক ব্রাহ্মণণের জারজপুত্র ও।

    অজয়া আর্তনাদ করিয়া উঠিল,―কি? কি?

    ―পরিচয় দেয়া এখনো শেষ হয়নি। এক বৃদ্ধা বেশ্যার শয্যাচর ছিল, অর্থলোভে ও তার পরিচর্যা করতো।

    অজয়া বলিল, –উত্তেজিত হবেন না। ইনিই কি সেই লোক? ভুল করেননি ত’?

    কিন্তু ভুল তিনি করেন নাই। আদ্যন্ত ইতিহাস তিনি বলিয়া গেলেন।

    আপন বিধবা কন্যার প্রেমপাত্র ছিল যে ও, সে কথাটিও বাদ দিলেন না।

    বলিলেন,―কেবল ভালোবেসেছিল সে, দেখা হয়নি। তারই চিঠি ওর কাছেই আছে, সেই ভয় দেখাচ্ছিল―ধরো ধরো, অজয়া প’ড়ে যাচ্ছে।

    রজত অজয়াকে ধরিয়া চৌকিতে বসাইয়া দিলো।

    বলিল,–আর কোনো প্রমাণ আছে?

    ―আছে। ওর জানার আস্তিন তুলে দেখ, ওর নামের আর সেই বেশ্যার নামের আদ্যক্ষর দু’টি হাতের চামড়ায় লেখা আছে।

    রজত নটবরকে জিজ্ঞাসা করিল,―সত্য?

    নটবর বলিল,―সত্য।

    কাশীনাথ কাঁপিতে কাঁপিতে বলিতে লাগিলেন,–তুই কেন এ কাজ করলি? কেন তুই মানুষের সর্বনাশ ক’রে বেড়াচ্ছিস? বল্ সিদ্ধার্থ কোথায়? তার নাম আর পরিচয় তুই কোথায় পেলি?

    নটবর সে কথা কানেও তুলিল না। রজতের দিকে চাহিয়া অসঙ্কোচে বলিল,―ভগবান জানেন আমি নিরপরাধ। নিয়তির চক্রান্তে ভালবেসেছিলাম। ভালবাসার তাড়নায় আর প্রতিদানের লোভে মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছি। কিন্তু আমি ত’ সেই মানুষ!

    রজত বলিল,–তুমি এত বড় অভ্যস্ত পাষণ্ড যে কোথায় তোমার অপরাধ তা তোমার চোখে পড়ছে না। যাও!

    –কিন্তু তার কি ক্ষমা নেই!

    অজয়ার বুকের ভিতর কি ঘটিতেছিল তাহা তার অন্তর্যামীই জানেন। সে মুখ ফিরাইয়া চোখ বন্ধ করিয়াছিল, বলিল,-দাদা, ওঁকে যেতে বলো।

    ―যাই। ―বলিয়া নটবর প্রস্থানোদ্যত হইল।

    কাশীনাথ লাফাইয়া উঠিলেন।

    –ব’লে যা শয়তান, আমার সিদ্ধার্থ কোথায়?

    –কোথায় তা জানিনে, স্বর্গ কি নরকে; তবে সে বেঁচে নেই।

    ―বেঁচে নেই।

    নটবর যাইতে যাইতে মুখ না ফিরাইয়াই বলিয়া গেল,―না।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleপোকা-মাকড় – জগদানন্দ রায়
    Next Article অব্যক্ত – জগদীশচন্দ্র বসু
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025
    Our Picks

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025

    ওডিসি – হোমার

    October 13, 2025

    প্রেমের প্রান্তে পরাশর – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    October 13, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }