Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025

    ওডিসি – হোমার

    October 13, 2025

    প্রেমের প্রান্তে পরাশর – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    October 13, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    অসাধু সিদ্ধার্থ – জগদীশ গুপ্ত

    জগদীশ গুপ্ত এক পাতা গল্প138 Mins Read0

    অসাধু সিদ্ধার্থ – ৮

    ॥ আট ॥

    রজত ও অজয়ার পিসতুত ভাই বিমল আসিয়াছে এবং তাহার আসা লইয়া অজয়া উঠিতে বসিতে এমন অসহিষ্ণুতা প্রকাশ করিতেছে যে, বিমলের নাকে কান্না, অশান্তি আর অভিযোগের অন্ত নাই।

    বিমল বলিতেছিল―দাদা শুনে ত’ কিছু বললে না। কিন্তু তুমি শাসন করছ যেন আমি ফেরারী আসামী।

    অজয়া বলিল―পিসিমা কত ভাবছেন বল তো! হয়তো তিনি নাওয়া-খাওয়া ত্যাগ ক’রে ব’সে আছেন, যারা তোকে খুঁজতে বেরিয়েছিল, তারা একে একে এসে খবর দিচ্ছে পাওনা গেল না―তাঁর তখনকার কষ্টটা তুই ভাবছিস না?

    ―ভাবছি বই কি! তবে এতক্ষণে তাঁর ছট্‌ফটানি থেমে গেছে, টেলিগ্রাম পৌঁছে গেছে।

    ―এক কাপড়ে বেরিয়ে এলি, যদি পুলিসে ধরতো?

    ―ধরতো ধরতোই, কিন্তু রাখতে পারতো না বেশীক্ষণ।

    ―কেন?

    ―মামার নাম করলেই ছেড়ে দিতে পথ পেত না!

    ―গাড়ীভাড়া কোথায় পেলি?

    ―ঐটে বাদে দিদি; ঐ কথাটা জিজ্ঞেস করো না।

    ―বই বেচে?

    ―সে মতলবটাও যে মাথায় না এসেছিল এমন নয়; কিন্তু সাহস হ’ল না―গেলাম এক বন্ধুর কাছে। সে বললে, দিতে পারি যদি গিয়েই পাঠিয়ে দাও। আমি তখন পেলে বাঁচি; তাতেই রাজি হয়ে টাকা নিয়ে কিছুদূর এসেই কি মনে ক’রে হঠাৎ পকেটে হাত দিয়ে দেখি টাকা নেই! আমার ত’ বোঁ ক’রে মাথা ঘুরে গেল―গলির ভেতর নিশ্চয় কেউ পকেট মেরেছে! ছুটতে ছুটতে গেলাম ফের যে টাকা দিয়েছিল তার কাছে; সে বললে―কি হে, ফিরে এলে যে? আমি ধপ্ ক’রে বসে পড়লাম, বললাম―টাকা ভাই, হারিয়ে গেছে; কে পকেট মেরেছে। বলেই কেঁদে ফেললাম। সে বললে―টাকা তুমি নিয়েই যাওনি, তা হারাবে কি? আমি বললাম―নিয়েই যাইনি কি রকম? স্পষ্ট মনে আছে―সে বললে,–না হে, না। টাকা তোমার হাতে দিলাম, তুমি ফরাসের ওপর নামিয়ে রেখে গল্প জুড়ে দিলে―তারপর ‘আসি ভাই’ ব’লে তাড়াতাড়ি উঠে গেলে, টাকা পড়ে রইলো। ভাবলাম, ফিরতে হবে বাছাধনকে; তাই ব’সে ভাবছি আর মনে মনে হাসছি―এমন সময় তুমি এসে হাজির।-তখন দু’জনে খুব খানিকটা হেসে নিলাম। তারপর টাকা আবার গুণে, পকেটে রেখে, পকেটে ঠিক রাখলাম কি না দু’চারবার ভাল ক’রে দেখে চলে এলাম।

    বিমলের মুখচোখ নাড়া দেখিয়া অজয়ার হাঁসি পাইতেছিল; কিন্তু জিজ্ঞাসা করিল গম্ভীরভাবেই,―তারপর?

    ―তারপর, তার পরদিন কাউকে কিছু না ব’লে বেরিয়ে পড়লাম। তোমাকে বেশীদিন না দেখে থাকতে পারিনে যে, দিদি।

    ―বন্ধুর ঋণ পরিশোধের কি হবে?

    ―সে দায় তোমার আমি এসে খালাস।

    রজতের চায়ের তৃষ্ণা প্রবল হইয়া উঠিয়াছিল। সে হাতের কাজ চাপা দিয়া এই ঘরে আসিয়া দাঁড়াতেই অজয়া বলিল,―শোনো, দাদা, বিমলের কথা–ও এসে খালাস, ওর ঋণ পরিশোধের দায় আমার।

    বিমল বলিল,―দাদা, তুমিই বলো, দিদিকে না দেখে যে আমি বেশীদিন থাকতে পারিনে সে কি আমার দোষ?

    ―না অজয়া, তোমার ঐ দোষটা তুমি অস্বীকার করতে পারছো না। কিন্তু ঋণ পরিশোধের দামটা কোত্থেকে এল?―বলিয়া রজত আসন লইলো।

    ―পুরোনো বইয়ের দোকানে পিসেমশায়ের বই বাঁধা রেখে বিমল গাড়ীভাড়া যোগাড় করেছে, তাই―

    বিমল লাফাইয়া উঠিল―মিছে কথা, দাদা। দিদি আমায় রাগাচ্ছে। এক বন্ধুর কাছে টাকা ধার নিয়ে এসেছি। সে টাকা দিদি দেবে বলেছে।

    ―দেব বলেছি?

    ―কথায় বলনি, হেসে বলেছ। তুমি না দিলে আমি কোথায় পাবো? শেষে কি বন্ধুর কাছে চোর ব’নবো?

    রজত বলিল,―সেইটেই আগে ভাবা উচিত ছিল। তা যাক―বড় একটা কাজে তোমাদের চুক হয়ে গেছে―কেউ বোধ লক্ষ্য করনি যে আজ আমি ভাল ক’রে চা খাইনি―একবার নিয়ে এলো―একেবারে ঠাণ্ডা। আর একবার নিয়ে এলো এত মিষ্টি দিয়ে যে, ননীর সঙ্গে সঙ্গে পিঁপড়ের সার আমার পায়ের গোড়ায় এসে উপস্থিত। ননী ক্ষুণ্ণ হবে ব’লে খেলাম বটে, কিন্তু তৃপ্তি আদৌ পাইনি। বিমল বুঝি চা খাসনি?

    ―ছেড়ে দিয়েছি।

    ―অদৃষ্ট মন্দ। যে চা খায় না সে সংসারের অর্ধেক সুখে বঞ্চিত। মেজাজ ঠাণ্ডা রাখতে অমন জিনিস আর নেই।

    ―মাষ্টার মশায় বলেন চায়ের কাজ গরম দুধেই হয়।

    ―কিছুই হয় না। দুধ শিশু বৃদ্ধ আর রোগীর পথ্য। ননী, দিদিটি, পিঁপড়ের সা’র ইত্যাদি বলে যে মিথ্যে গল্পটা বলেছি তা যদি না শুনে থাকো―

    ননী পাশের ঘর হইতে বলিল,―শুনিনি। হয়ে গেছে; আনছি।

    .

    ―ননী, চায়ে কি আফিঙ দিয়ে থাকো?―বলিয়া রজত সম্মুখের চায়ের কাপের দিকে এমন সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে চাহিয়া রহিল যেন তাহার ভিতর আফিঙেরই সন্ধান সে করিতেছে।

    ননীর বুকটা হঠাৎ ধড়াস করিয়া উঠিল।

    ভয় ত’ পাইবারই কথা। আফিঙ জিনিসটার গুণাগুণের সঙ্গে ননীর ঘনিষ্ঠ পরিচয় নাই। তবে দূর্বশ্য জানোয়ারকে নেশা ধরাইয়া বশীভূত করিতে আফিঙের ব্যবহার হয় তাহা সে শুনিয়াছে। এবং যে কথাটা আরো সাংঘাতিক তাহা এই যে―আফিঙ বিষ।

    ননীর ঠোঁট কাঁপিতে লাগিল। বিবর্ণমুখে বলিল,―সে কি! চায়ে আফিঙ―

    বলিয়া রজত হাসিতে লাগিল। কিন্তু ননীর মুখ লাল হইয়া উঠিল। সন্দেহ নাই, অত্যন্ত বুক ধড়ফড় করিয়া ননীকে অতি অকস্মাৎ নিদারুণ একটা মানসিক পীড়া সহ্য করিতে হইয়াছে।

    তাহার প্রতিক্রিয়া একেবারেই নিষ্ফলে গেল না। “দাদাবাবুর কথাবার্তা ভাল নয়” বলিয়া সে রাগ করিয়া চলিয়া গেল।

    রজত একটু অপ্রস্তুতই হইল।

    কিন্তু অপ্রতিভ হইয়া বেশীক্ষণ কর্তব্যে অবহেলা করা তার অভ্যাস নাই; বলিল,―বিমল, তোর দিদির গান কতদিন শুনিসনি তা মনে আছে?

    বিমল বলিল―অনেক দিন।

    ―অজয়া, শোনো বিমলের কথাটা। ননী বুঝলে না, আমি ঠিক জানি, চোখ বুজলে যে কান সজাগ হয় তার কারণ আর কিছুই নয়, কেবল ভগবানের রাজ্যে শক্তির একটা সামঞ্জস্য রাখা। অজয়া, ওঠো।

    অজয়া হাসিয়া বলিল,―তবু ভাল, ঘুরিয়ে এনে ফেলেছ ঠিক।

    ―বৈজ্ঞানিকের বুদ্ধি যে!―বলিয়া রজত গানের আশায় দেহ শ্লথ করিয়া তুলিল।

    .

    অজয়ার গান অর্ধেক অগ্রসর হয় নাই―এমন সময় সিদ্ধার্থ হঠাৎ প্রবেশ করিল। কিন্তু সে ব্যতীত আর কেহ জানে না যে, এইমাত্র সে জাল ছিঁড়িয়া বাহির হইয়াছে। দরজার বাহিরেই সে দাঁড়াইয়া ছিল―অন্ধকারে। কিন্তু এত নিকটে থাকিয়াও গানের সুর বোধগম্য হওয়া দূরে থাক, গানের একটি বর্ণও তার কর্ণে প্রবেশ করে নাই।

    কেবলি পিছন ফিরিয়া সে সভয়ে চাহিয়া চাহিয়া দেখিয়াছে, কেহ আসিয়া পড়িল কি-না।

    দ্বিধাগ্রস্ত মনে পা উঠিয়া উঠিয়া থামিয়া পিছাইয়া গেছে।

    তারপর হঠাৎ একসময় অসাড়-মস্তিষ্ক আচ্ছন্নের মত ভিতরে যখন সে প্রবেশ করিল, তখন তাহার এই জ্ঞানটুকু মাত্র সজীব আছে যে, সময়োপযোগী কিছু বলিতেই হইবে।

    এবং সে সুযোগ তার মিলিল।

    তাহাকে দেখিয়াই অজয়ার গান থামিয়া গেল। এবং সেই বিরামে বিস্মিত হইয়া রজত চোখ খুলিয়া বলিয়া উঠিল,―আসুন, আসুন।

    সকলে নীরব থাকিলে সিদ্ধার্থ বোধ হয় যেমন আসিয়াছিল তেমনই পলায়ন করিত; কিন্তু রজতের অভ্যর্থনায় নয়, শুধু তার কণ্ঠস্বর যে আবহাওয়ার সৃষ্টি করিল, তাহারই মধ্যে সিদ্ধার্থর মন শঙ্কায় চঞ্চল বিকৃতি কাটিয়া একটা আশ্রয় পাইয়া স্থিতিশীল হইয়া দাঁড়াইল। বলিল,-তা আসছিল। কিন্তু এসে হঠাৎ কাঁটার মত বিঁধে পড়েছি যে! আনন্দে তদ্‌গত হয়েছিলেন, আমি এসে তা ভূমিস্যৎ ক’রে দিয়েছি। ইস্, যেন তপোবনে ব্যাধের উৎপাত!―বলিতে বলিতে সিদ্ধার্থ মূর্তিমান অপরাধের মত যেন কুণ্ঠায় লজ্জায় মাটির সঙ্গে মিশিয়া গেল।

    রজত বলিল,―আপনার অনুমান দু’টিই অমূলক। আনন্দে ছিলাম বটে; কিন্তু আপনাকে দেখে তার কিছুমাত্র হ্রাস হয়নি। যদি অনুমতি করেন ত’ নিমন্ত্রণ করি―আপনিও তপোবনের একজন অধিবাসী হয়ে বসুন।

    সিদ্ধার্থ মাথা নাড়িতে লাগিল,―আর হয় না। যে শান্তি ভেঙে দিয়েছি তাকে আবার তেমনি ক’রে গ’ড়ে তোলা কঠিন হবে।―বলিয়া সে এমনি ম্লান হইয়া বসিয়া রহিল যেন শান্তিভঙ্গের দরুন তার জরিমানা কি জেল হইবে তাহার কিছুই ঠিক নাই। তারপরই সিদ্ধার্থ বলিল,―এ বালকটি কে?

    ―আমাদের পিসতুত ভাই, নাম বিমল। বাড়ীতে না ব’লে চ’লে এসেছে। দিদির বড় ভক্ত―দিদিকে না দেখে থাকতে পারে না নাকি!

    ইহাতে প্রশংসনীয় কৃতিত্ব কাহারো নাই―যে না দেখিয়া থাকিতে পারে না তাহারও নাই, যাহাকে না দেখিয়া আর একজন থাকিতে পারে না তাহারও নাই। তবু ইহার কোথায় যেন একটু লজ্জা আছে।

    বিমল হাসিয়া মুখ ফিরাইয়াছিল।

    অজয়া চোখ নত করিয়াছিল। কিন্তু চোখ তুলিয়া সে দেখিল, সিদ্ধার্থর মুখমণ্ডল অসাধারণ উদ্দীপ্ত হইয়া উঠিয়াছে। বিমলের দিকে চাহিয়া সে বলিতেছে,―উপভোগ্য জিনিস! ভক্তির টানে ঘর ছেড়ে পালিয়ে আসা খাসা! এসো ত’ ভাই, হাতের ভেতর তোমার হাতখানা একটিবার অনুভব ক’রে নিই।―বলিয়া অতিশয় মনোজ্ঞ ভঙ্গীতে হাত বাড়াইয়া দিলো।

    বিমল লজ্জিত মুখে অগ্রসর হইয়া গেল।

    সিদ্ধার্থ দুই হাতের মুষ্টির মধ্যে বিমলের হাত জড়ো করিয়া লইয়া বলিতে লাগিল –-দিদির চেয়েও বড় মা–সাতকোটি সন্তানের যিনি জননী। দিদির টানে এক ঘর ছেড়ে এসে আর এক ঘরে ঢুকেছ―কিন্তু মায়ের টানে জীবনভোর যে পথে পথে বেড়াতে হবে। পারবে ত’?

    বিমল বলিল,–আপনার কথা আমি বুঝতে পারছিনে।

    সিদ্ধার্থ একটু হাসিল। বলিল-নিজের মন বোঝোনি। সে কি আকর্ষণ! উপড়ে তুলে উড়িয়ে নিয়ে কোথায় ফেলবে, পড়বার আগে তা কেউ জানতে পারে না।―বলিয়া সিদ্ধার্থ বিমলের হাত ছাড়িয়া দিয়া এমন অন্যমনস্ক হইয়া গেল যেন তার আনত দৃষ্টি পৃথিবীর স্থূল-পৃষ্ঠ ভেদ করিয়া গেছে এবং কোথায় গেছে তাহা তার জানা নাই।

    রজত মনে মনে হাসিয়া বলিল,―সিদ্ধার্থ বাবু, আপনি বুঝি বিরক্ত-সন্ন্যাসী?

    প্রশ্নের উত্তরে সিদ্ধার্থ হঠাৎ উঠিয়া দাঁড়াইল। বলিল,-বিদায় চাইছি। আজকার মত আসি।

    এবং কেহ কিছু বলিবার পূর্বেই ইজমালি একটা নমস্কার করিয়া সে চট্ পট্ বাহির হইয়া গেল।

    বিরক্ত-সন্ন্যাসী কাহাকে বলে, আর তার লক্ষণ কি―এবং তাহার বিপরীত আসক্ত―সন্ন্যাসীর আচার-ব্যবহার কিরূপ হওয়া সম্ভব তাহা জিজ্ঞাসা করিয়াও জানিবার উপায় এখন নাই।

    কাজেই রজতের মনে হইল, লোকটার মাথায় স্ক্রু কোথাও ঢিলে আছে―এত বিরাগ আর আবেগ অধিকৃত মস্তিষ্কে দেখা যায় না।

    কিন্তু অজয়ার মনে হইল, সাতকোটি সন্তানের যিনি জননী তিনিই সিদ্ধার্থ বাবুকে গৃহত্যাগী করিয়াছেন। জননীর ভাষাতীত আহ্বান, আর তাঁরই দেওয়া নিঃশব্দ গভীর বেদনা তাঁহাকে মুহূর্তমাত্র সুস্থির হইতে দিতেছে না। ভাবিতে ভাবিতে অজয়া একটু সহানুভূতি অনুভব করিল।

    রজত বলিল,―অজয়া, বুঝলে কিছু?

    অজয়া কথা কহিল না।

    সিদ্ধার্থর সর্বাঙ্গের মূর্তিটা সে স্মরণ করিতেছিল―সিদ্ধার্থর চিন্তাস্রোতটাও যেন সম-অনুভূতির সূত্র ধরিয়া তাহাকে ধীরে ধীরে স্পর্শ করিয়া যাইতেছিল।

    বিমল বলিল,―আমার ভয় করছিল দাদা, তার গোল গোল চাউনি দেখে, আর কথা শুনে। মনে হচ্ছিল, যেন আমায় হিড়হিড় ক’রে টেনে নিয়ে বেড়াচ্ছে।

    ―–তা জানিনে, তবে ভদ্রতা ক’রে বাড়িয়ে বলেনি। আজকার চা-টা সত্যিই মাটি ক’রে দিয়ে গেল। হচ্ছিল গান―নিয়ে এলো তার মধ্যে কে উড়তে পারে, আর―

    কিন্তু রজতকে থামিতে হইল।

    অজয়া তাহার কথায় রাগ করিয়া উঠিবার উদ্যোগ করিতেছে দেখিয়া সে বলিল,–রাগ ক’রে যেতে হবে না। আমি শপথ করছি পরনিন্দা আর কখনো করব না।

    তাপর মনে মনে বলিল,―তোমার সামনে।

    অজয়া বলিল,―কতবার এই শপথ করেছ তা বোধ হয় তোমার মনেও নেই। তা থাক আর না থাক, এখন ওঠো, মাণিক এসে একবার উঁকি মেরে গেছে।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleপোকা-মাকড় – জগদানন্দ রায়
    Next Article অব্যক্ত – জগদীশচন্দ্র বসু
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025
    Our Picks

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025

    ওডিসি – হোমার

    October 13, 2025

    প্রেমের প্রান্তে পরাশর – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    October 13, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }