Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    অহিংসা – মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়

    উপন্যাস মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় এক পাতা গল্প288 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ১১. দিন কাটিয়া যায়

    দিন কাটিয়া যায়, আশ্রম হইতে বিপিনও আসে না, কোনো শিষ্যও আসে না। সদানন্দ আকাশপাল ভাবে মন খারাপ করিয়া। শিষ্যদের না আসিবার কারণটা যে সদানন্দ মোটামুটি অনুমান করিতে পারে না, তা নয়। বিপিনের কোনো কারসাজি আছে নিশ্চয়। কিন্তু আশ্রমে কি এমন ভক্ত তার একজন নাই, বিপিনের কোনো কথায় কান না দিয়া যে তার সঙ্গে দেখা করিতে আসাটা দরকার মনে করে? মুখখানা তার বড় বিমর্ষ দেখায়। কেউ সেটাকে ভাবে গাম্ভীর্য, কেউ মনে করে গভীর চিন্তার ছাপ। যে বুঝিতে পারে সাধু সদানন্দের মুখখানা বিষণ্ণ দেখাইতেছে, সে ভাবে, সাধু-সন্ন্যাসী মানুষের আবার মন খারাপ হওয়া কেন? মাধবীলতা মনের দুঃখে মাথা নাড়িয়া ভাবে, নাঃ, লোকটার একটুও মনের জোর নেই।

    একদিন রাত্রি প্রায় আটটার সময় বিনা খবরে রত্নাবলী আসিয়া হাজির হয়। সঙ্গে কেউ নাই। কার একটা মোটা বাঁশের লাঠি হাতে করিয়া একাই এতখানি রাস্তা হাঁটিয়া আসিয়াছে।

    মাধবীলতা চোখ কপালে তুলিয়া বলে, কি করে এলি!

    রত্নাবলী হাসিয়া বলে, এলাম।

    মাধবীলতা খুঁতখুঁত করিয়া বলে, দিনের বেলা এলেই হত, নয়তো কাউকে সঙ্গে নিয়ে—

    চুপি চুপি এলাম যে লুকিয়ে।

    কেন, লুকিয়ে কেন?

    বিপিনবাবু টের পেলে তাড়িয়ে দেবে না আশ্রম থেকে?

    দেয় দেবে তাড়িয়ে, এখানে এসে থাকবি তুই।

    আহা, সেটা জানতে হবে তো আগে? এখানে থাকতে পাব কিনা, না জেনে আগে থেকে ওখানকার আশ্রয়টা তো আর ঘুচিয়ে দিতে পারি না।

    রত্নাবলী গোড়া হইতে হাসিতেছিল, এবার হাসিল শশধরের দিকে তাকাইয়া।

    ঘরে অনেক লোক, কিছুক্ষণ আগে মহেশ চৌধুরীর চেষ্টায় এ ঘরে বাড়ির সকলের ঘরোয়া মজলিস বসিয়াছে। হাতে-পায়ে ধরিয়া সদানন্দকে মহেশ এ মজলিসে টানিয়া আনিয়াছে। সতরঞ্চি বিছানো প্ৰকাণ্ড চৌকিতে অন্য সকলে বসিয়াছে, কিছু তফাতে অন্য একটি ছোট চৌকিতে ঘরে বোনা সুদৃশ্য আসনে সদানন্দের বসিবার ব্যবস্থা। আশ্রমে সদানন্দের কুটিরে মাঝে মাঝে শিষ্য ও ভক্তদের মজলিসে সদানন্দ উপস্থিত থাকিত, নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করা, সদানন্দকে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা, এসব অধিকার ভক্তদের কিছু কিছু থাকিত, তবু সে মজলিসের সঙ্গে এ। মজলিসের অনেক তফাত। যেটুকু স্বাভাবিক হওয়ার স্বাধীনতা সেখানে সকলকে দেওয়া হইত, সদানন্দের সামনে সেটুকু স্বাধীনতা কাজে লাগানোর সাহস কারো হইত না, সকলে কথা বলিত ভয়ে ভয়ে। এখানে মহেশ নিজেই বাজে গল্প আরম্ভ করিয়া দিয়াছিল, রত্নাবলী যখন ঘরে ঢোকে, বিভূতি রস দিয়া জেলের কাহিনী বলিতেছে, সকলে মন দিয়া শুনিতেছে তার কথা, সদানন্দের দিকে কারো নজর নাই! বিপিন সদানন্দকে আড়ালে রাখিত তার অসাধারণত্ব অটুট রাখিবার জন্য, মহেশের সব ব্যবস্থাই যেন উল্টা, সে যেন সকলের সামনে আনিয়া আনিয়া সদানন্দের কৃত্রিম অসাধারণত্বের আবরণটি ঘুচাইয়া দিতে চায়। বিভূতির গল্প শুনিতে শুনিতে সদানন্দ এই কথাটাই ভাবিতেছিল। বিভূতির মাও ঘরে আসিয়াছে, ছেলের দুর্দশার রসালো কাহিনী শুনিতে শুনিতে তার চোখ ছলছল করিতেছিল। ঘরে আসে নাই কেবল শশধরের ঘোমটা-টানা বৌ। তবে তার অনুপস্থিতিটা কেউ একবার খেয়াল করিয়াছে কিনা সন্দেহ। বাড়ির কারো চেতনায় নিজের অস্তিত্বের সাড়া না তুলিয়া বাঁচিয়া থাকিবার কঠিন সাধনায় বৌটি প্রায় সিদ্ধিলাভ করিয়া ফেলিয়াছে।

    রত্নাবলীর কথার জবাবে মহেশ চৌধুরী বলিল, তুমি তো আমার মেয়ে, মা? এখানে থাকতে পাব কিনা তাতে তো তোমার সন্দেহ থাকা উচিত নয় মা!

    রত্নাবলী এবার হাসিল না।–না না, এমনি কথাটা বলছিলাম মাধুকে তামাশা করে। থাকতে পাব বৈকি এখানে।

    তুমি এখানে এসে থাকলে আমরা বড় সুখী হব মা।

    আমি তো যখন খুশি আসতে পারি, কেবল উমা-মাসির জন্যে, রত্নাবলী একটু হাসিল।

    মহেশ বলিল, প্রভু যখন এখানে আছেন, ওঁকে বললে উনি এসে এখানে থাকতে রাজি হবেন। না?

    মনে তো হয় না। উনি বড় চটেছেন।

    রত্নাবলী আসিয়া সদানন্দকে প্রণাম করে নাই। সদানন্দ এতক্ষণ চুপ করিয়া বসিয়াছিল, এবার জিজ্ঞাসা করিল, উমা চটেছে কেন?

    আজ্ঞে, আপনি সন্ন্যাস ছেড়ে দিলেন বলে।

    সন্ন্যাস ছেড়ে দিলাম? সন্ন্যাস ছেড়ে দিলাম মানে?

    সন্ন্যাস ছেড়ে দিয়ে চলে আসেন নি আপনি?

    বিপিন বলেছে বুঝি?

    রত্নাবলী ঘাড় নাড়িয়া সায় দিল, বলিল, তাছাড়া, সন্ন্যাস না ছাড়লে গেরস্তের বাড়ি তিন রাত্রির বেশি বাস করছেন কি করে।

    সদানন্দের তীব্র দৃষ্টিপাতে রত্নাবলী মথা হেঁট করে, সকলে স্তব্ধ হইয়া থাকে। মহেশ চোখ বুজিয়া হাঁটুতে হাত বুলায়। মাধবীলতা চাহিয়া দেখিতে থাকে সকলের মুখের দিকে।

    হঠাৎ সদানন্দ বলিল, তাই বুঝি তুমি আজ আমার প্রণাম করলে না?

    রত্নাবলী মাথা হেঁট করিয়া রাখিয়াই বলিল, আজ্ঞে না। আমার আজ কাউকে প্রণাম করতে নেই।

    ওঃ! বলিয়া সদানন্দ অনেকক্ষণ চুপ করিয়া রহিল। আর কি বলেছে বিপিন আমার নামে?

    মহেশ চৌধুরী হাত জোড় করিয়া বলিল, প্ৰভু?

    সদানন্দ অধীর হইয়া বলিল, না মহেশ, আমায় শুনতে দাও। বল রতন, বল আর কি বলেছে বিপিন?

    রত্নাবলী বলিল, আমি আর কি বলব, ও তো সবাই জানে।

    তবু তুমিই বল না শুনি।

    রত্নাবলী মুখ তুলিয়া সবিস্ময়ে জিজ্ঞাসা করিল, আপনি জানেন না কিছু?

    সদানন্দ বলিল, না। কি জানি না?

    তবে তো সত্যি নয়! খুব সম্ভব রত্নাবলীর বিস্ময় আরো বাড়িয়া যায়, কিন্তু সেটা মুখে ভালো করিয়া ধরা পড়ে না, হাসি ছাড়া আর কিছুই রত্নাবলীর মুখে ভালো করিয়া পরিস্ফুট হয়। না।–ওমা, আমি তো সত্যি কিনা জানতেই ছুটে এলাম! সত্যি নয় তবে! কি কাণ্ড মা, এ্যা! এমন করেও বলতে পারেন বিপিনবাবু!

    কি ছ্যাবলামি করছ রতন? কি সত্যি নয়? কি বলেছে বিপিন?

    সদানন্দের ধমকে রত্নাবলী মুষড়িয়া গেল, আমতা আমতা করিয়া বলিল, আর আমি তা উচ্চারণ করতে পারব না! সত্যি যখন নয় ছি ছি…

    কিন্তু আর কি এখন উচ্চারণ না করিলে চলে? কদিন ধরিয়া আশ্রম আর বিপিনের কথা ভাবিতে ভাবিতে সদানন্দের মাথা গরম হইয়া গিয়াছে, তার উপর রত্নাবলীর এতক্ষণের ভণিতা! সদানন্দ সিধা হইয়া বসিয়া ডাকে, রতন!–আর সে ডাক শুনিয়া ঘরের সকলের বুক কাঁপিয়া ওঠে।

    আমার দিকে মুখ করে বোসো।

    রত্নাবলী সদানন্দের দিকে মুখ করিয়া বসে।

    চোখের দিকে তাকাও আমার।

    রত্নাবলী সদানন্দের চোখের দিকে তাকায়।

    এইবার বল।

    রত্নাবলী বলে, তবে বলার আগে চোখ নামাইয়া নেয়। প্রথমে আশ্রমে রটিয়াছিল সদানন্দ। সন্ন্যাস ত্যাগ করিয়াছে। তারপর কয়েকদিন আগে রটিয়াছে, সদানন্দ নাকি মাধবীলতাকে বিবাহ করিয়া সংসারী হইবে। সন্ন্যাস ত্যাগ করার উদ্দেশ্যও তাই। খবরগুলি অবশ্য রত্নবালী সোজাসুজি বিপিনের কাছে শোনে নাই। তবে আশ্রমে বিপিন ছাড়া এসব খবর আর কে ছড়াইবে?

    আশ্রমের কেউ আসে নাই কেন? বিপিন একদিন আশ্রমের সকলকে একত্র করিয়া বলিয়া দিয়াছে, যে কারণেই হোক, সদানন্দ যখন কারো কাছে বিদায় না নিয়া আশ্রম ছাড়িয়া চলিয়া গিয়াছে, তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার সঙ্গে দেখা করিতে যাওয়া উচিত হইবে না। যতই হোক, এতদিন তো সদানন্দ তাদের শ্রদ্ধেয় গুরুদেব ছিলেন। যুক্তিটার জন্য যত না থোক, বিপিনের হুকুমের বিরুদ্ধে কেউ আসিতে সাহস পায় নাই। বিপিন এই রকম ভাবেই হুকুম দেয়। তাছাড়া, মনেও সকলের প্রচণ্ড আঘাত লাগিয়াছে। কয়েকজন খুব কাঁদিয়াছে।

    সদানন্দ সিধা হইয়াই বসিয়া থাকে কিন্তু নিজেকে তার বড়ই দুর্বল অসহায় মনে হইতে থাকে। সে ছাড়া এ জগতে আর সকলেই কি অবস্থা বুঝিয়া হিসাব করিয়া নিজেকে বাঁচাইয়া নিজের কাজ হাসিল করিয়া চলিতে পারে, সে-ই কেবল সব সময় ঠকিয়া যায়, না পারে গুছাইয়া কোনো একটা কাজ করিতে, না পারে নিজেকে বিপদের হাত হইতে বাঁচাইয়া চলিতেঃ বিপিন যখন ওদিকে তার নামে নানা কথা রটাইয়া আটঘাট বাঁধিয়া নিতেছে, সে তখন ভাবিতেছে কখন বিপিন আসিবে হাতে-পায়ে ধরিয়া তাকে ফিরাইয়া নিতে অনুতপ্ত, লাঞ্ছিত বিপিন। বিপিন যে বলিয়াছিল বাস্তব জগতে তার কোনো দাম নাই, কথাটা তো মিথ্যা নয়। কত হিসাব করিয়া বিপিন কাজ করে, প্রত্যেকটি সুযোগ সুবিধা কিভাবে কাজে লাগায়, সে শুধু বসিয়া বসিয়া আকাশপাতাল ভাবে। গৃহস্থের বাড়ি তিনরাত্রির বেশি বাস করা যে সন্ন্যাসত্যাগের কত বড় একটা প্রমাণ সাধারণ মানুষের কাছে, আর এক্ষেত্রে সন্ন্যাসত্যাগের কারণ হিসাবে মাধবীলতাকে বিবাহ করিয়া সংসারী। হওয়ার উদ্দেশ্য যে কত জোরালো সমর্থক যুক্তি, কিছুই বিপিনের ভাবিতে বাকি থাকে নাই। আর এখানে আসিবার পরে তার শুধু একবার খেয়াল হইয়াছিল মাত্র যে, মাধবীলতার সঙ্গে তার নাম জড়াইয়া বিপিন কুৎসা রটনার সুযোগ পাইবে।

    এখন সদানন্দ বুঝিতে পারে, এর চেয়ে কুৎসা রটানো ঢের ভালো ছিল। কারো কারো মনে একটু খটকা লাগিত মাত্ৰ। মহেশ চৌধুরীর এ বাড়িতে আজ কত যুগ ধরিয়া একটি পারিবারিক জীবনের ধারা বহিতেছে, বাড়িতে গৃহিণী আছে, একটি বৌ আছে, মেয়েরা মাঝে মাঝে আসা-যাওয়া করে, এখানে মাধবীলতা আর সাধু সদানন্দের বাস করাটাই তো নিন্দনীয় হইতে পারে না। মাধবীলতার পিছনে পিছনে সদানন্দও মহেশ চৌধুরীর বাড়িতে আসিয়া হাজির হইয়াছে, কুৎসার স্বপক্ষে শুধু এই যুক্তি। কিন্তু ও যুক্তি বাতিল হইয়া যাইত দুদিনে, সদানন্দ যখন ঘোষণা করিয়া দিত আশ্রম সে ত্যাগ করিয়া আসিয়াছে অনাচার ও ব্যভিচারে ভরা বিপিনের টাকা রোজগারের উপায় সে আশ্রম। কিন্তু বিপিন তার নিন্দা করে নাই, তার বিরুদ্ধে কোনো কথা বলে। নাই, কেবল এত বড় সাধু সদানন্দ তার সন্ন্যাস ত্যাগ করিয়া সংসারী হওয়ার ইচ্ছার জন্য বড় দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়াছে। এ গুজবও মিথ্যা প্রমাণিত হইয়া যাইবে, কিন্তু লোকের মনে একটা ছাপ থাকিয়াই যাইবে। কত কথাই মনে হইবে লোকের। কেউ ভাবিবে, কোনো কারণে বিবাহ ভাঙিয়া গেল। কেউ ভাবিবে, বিবাহটা বোধহয় দরকার হইল না, বিবাহ ছাড়াই

    মাধবীলতা সদানন্দের সম্পত্তি, সদানন্দের কোনো রোমাঞ্চকর গোপন সাধনার জন্য। মাধবীলতাকে প্রয়োজন হয়, এসব কল্পনাও যে ইতিমধ্যে অনেকের মনে দেখা দিয়াছে আশপাশের গ্রামে, সে খবরটা সদানন্দ জানি না। নিজে সাধু বনিয়া থাকিয়া সাধু-সন্ন্যাসীর সম্বন্ধে সাধারণ লোকের ধারণা যে কি রকম, সে বিষয়ে সদানন্দের পরিষ্কার ধারণা নাই। স্ত্রী সঙ্গে থাকিলেও সাধু-সন্ন্যাসীর কিন্তু আসিয়া যায় না, স্ত্রীও যদি সন্ন্যাসিনী সাজিয়া থাকে। তখন লোকে তাকে বলে মাতাজী এবং ঢিপঢিপ করিয়া তার পায়েও প্রণাম করে। সাধু-সন্ন্যাসীর নামে স্ত্রীলোক সংক্রান্ত কুৎসা বলিয়া কিছু হয় না। সাধু-সন্ন্যাসী তো সামাজিক জীব নয়, সাধারণ মানুষ নয়। তাদের কথাই আলাদা। স্ত্রীলোক ছাড়াও তাদের সাধনা চলে, স্ত্রীলোক নিয়াও সাধনা চলে। যে সিদ্ধিলাভ করিয়াছে, যে মুক্ত পুরুষ, তার আবার ব্যভিচার কিসের? কত বদমেজাজী সাধু থাকে, কথায় কথায় রাগে আগুন হইয়া অকথ্য ভাষায় গালাগালি দেয়, মারিতে ওঠে কিন্তু সেজন্য কে মনে করে এই সাধুটি ক্রোধ রিপুর বশ, রিপুই যখন দমন করিতে পারে নাই, এ আবার সাধু কিসের? রাগারাগি গালাগালির জন্যই বরং লোকের ভয়ভক্তি আরো বাড়িয়া যায়। কামও তো একটা তুচ্ছ রিপুমাত্র।

    তবে জটা-ভস্ম-বিবর্জিত, প্রচলিত কুসংস্কার ও রীতিনীতির বিরুদ্ধে প্রচারকারী আদর্শবাদী সাধু সম্বন্ধে লোকের মনে অনেক রকম খুঁতখুঁতানি থাকে। এসব সাধু চমকপ্ৰদ কিছু করে না কিনা, ওষুধ দেয় না, রোগ ভালো করে না, মরা মানুষকে বাঁচায় না, ভবিষ্যৎ গুনিয়া দেয় না, বৃষ্টি নামায় না, হিমালয়ের দুর্গম গুহায় দিনযাপনের কাহিনী শোনায় না, মাটির নিচে কিছুদিনের জীবন্ত সমাধির পর জ্যান্ত হইয়া আসে না–এক রকম কিছুই করে না। শুধু বলে, এই কোরো না, ওই কোরো না।

    তবে সদানন্দকে লোকে অবিকল এই ধরনের সাধুর পর্যায়ে ফেলে না। সদানন্দের কিছু কিছু অলৌকিক শক্তি আর কার্যকলাপের বিজ্ঞাপন বিপিন আগে প্রচার করিয়াছিল।

    সকলের আগে কথা বলিল মহেশ চৌধুরী।

    বিয়ের কথাটা মিথ্যে নয় মা। তবে বিপিনবাবু একটু ভুল শুনেছেন। মাধুর বিয়ে হবে আমাদের বিভূতির সঙ্গে।

    মাধবীলতার সঙ্গে সদানন্দের বিবাহের গুজব রটিয়াছে শুনিয়া সকলে হতবাক হইয়া গিয়াছিল, মহেশ চৌধুরীর কথা শুনিয়া চমকাইয়া গেল। সকলে এমনভাবে মুখ ফিরাইল মহেশ চৌধুরীর দিকে যে, ঘাড়ে একটু ঝাঁকুনি লাগিল সকলেরই, বিভূতির পাট করা চুলের কিছু অংশ সিঁথির লাইন। ডিঙাইয়া ও-পাশে চলিয়া গেল, মাধবীলতার কানে বিভূতির মার আদর করিয়া পরাইয়া দেওয়া দুল দুটি কানের সামনে আর পিছনে জোরে জোরে আঘাত করিয়া দুলিতে লাগিল, রত্নাবলীর এলো খোপা খুলিয়া গেল।

    তারপর খোপা ঠিক করিতে করিতে রত্নাবলী বলিল, সত্যি?

    মহেশ চৌধুরী হাসিয়া বলিল, সত্যি বৈকি মা। এখন একটি শুভদিন দেখে—

    দিন ঠিক হয় নি?

    বিয়ে ঠিক হয়ে গেলে আর দিন ঠিক হতে কতক্ষণ লাগে মা?

    অন্য সকলে এতক্ষণ চুপ করিয়া ছিল। এবার সদানন্দ বলিল, মহেশ।

    প্রভু?

    সদানন্দ কিছুই বলিল না।

    রত্নাবলী বলিল, কিন্তু তুই কি মাধু? আমায় জানাস নি কিছু!

    মাধবীলতাও কিছু বলিল না।

    রত্নাবলী একবার এদিক-ওদিক চাহিয়া উঠিয়া দাঁড়াইল, মাধবীলতার হাত ধরিয়া টানিয়া তুলিয়া এক রকম টানিতে টানিতেই তাকে সঙ্গে নিয়া ঘরের বাহির হইয়া গেল।

    তখন বিভূতি গম্ভীরমুখে ডাকিল, বাবা?

    মহেশ চৌধুরী বলিল, বুঝেছি, তুমি কি বলতে চাও। কিন্তু এখন নাই বা বললি? ভেবেচিন্তে কথা বলতে কিছু দোষ আছে? যদি কিছু বলার থাকে, কাল না হয় পরশু বলিস, কেমন?

    বিভূতি খুব সম্ভব বলার কথাটা ভাবিয়া দেখার বদলে, কথাটা এখনই বলিয়া ফেলিবে না। ভাবিয়া চিন্তিয়া কাল পরশু বলিবে, গম্ভীরমুখে প্রচণ্ডভাবে তাই ভাবিতে আরম্ভ করিয়া দিল। সদানন্দ বলিল, তোমার ব্যাপার কিছু বুঝতে পারছি না মহেশ।

    প্রভু?

    মুখখানা একবার একটু বিকৃত করিয়া সদানন্দ উঠিয়া দাঁড়াইল, বাহিরের দিকে চলিতে আরম্ভ করিয়া বলিল, ঘরে গেলাম মহেশ। ঘণ্টাখানেক পরে একবার শুনে যেও।

    মিনিটি দুই বসিয়া থাকিয়া বিভূতিও উঠিয়া গেল।

    বিভূতির মা তখন বলিল, তুমি আর মেয়ে পেলে না?

    কেন, মাধু তো বেশ মেয়ে।

    আমার অমন ছেলে, তার জন্যে কুড়োনো মেয়ে!

    অন্য মেয়েকে তোমার ছেলে বিয়ে করলে তো। দ্যাখ, হয়তো শেষ পর্যন্ত না বলে বসবে। কথাটা ভেবে দেখতে রাজি হয়েছে, এইটুকু যা ভরসা। আমি তো ভাবলাম, মুখের উপরেই বুঝি বলে বসে, চোখ বুজিয়া মহেশ একটা নিশ্বাস ফেলিল। পরক্ষণে চোখ মেলিয়া বিভূতির মার। ডান হাতটি বুকের উপর রাখিয়া বলিল, এখনো বুক কাঁপছে দ্যাখ।

     

    রত্নাবলীকে আশ্রমের সীমানা পর্যন্ত পৌঁছিয়া দিয়া আসিতে গেল শশধর। এতক্ষণে মাধবীলতা যেন এত রাতে লুকাইয়া রত্নাবলীর একা এখানে আসার কারণটা বুঝিতে পারি। একা আসিলেও তাকে যে কেউ পৌঁছিয়া দিয়া আসিতে যাইবে, তা কি আর রত্নাবলী জানিত না? এবং সঙ্গে যে যাইবে, তার শশধর হইতেই বা বাধা কি?

    অন্য সময় মাধবীর মনে ব্যাপারটা পাক খাইয়া বেড়াইত, আজ তার এমন একটা বিষয়েও মাথা ঘামানোর ক্ষমতা ছিল না। কি উদ্ভট মানুষ মহেশ চৌধুরী! কেমন অনায়াসে বলিয়া বসিল বিভূতির সঙ্গে তার বিবাহ ঠিক হইয়া গিয়াছে! কাউকে একবার জিজ্ঞাসা করাও দরকার মনে করিল না। এক মুহূর্ত আগে এ রকম একটা সম্ভাবনার কথা কি কারো কল্পনাতে ছিল?

    অথবা আগেই কথাটা সকলে আলোচনা করিয়াছিল, সে-ই কিছু জানে না? তাকে না জানাইয়াই সকলে তলে তলে বিভূতির সঙ্গে তার বিবাহ ঠিক করিয়া ফেলিয়াছে? কিন্তু তাও কি সম্ভব।

    কি হইবে এবার? মহেশ চৌধুরী তো যা মুখে আসিল বলিয়াই খালাস, ফলটা দাঁড়াইবে কি? সদানন্দ কি করিবে? কি করিবে সদানন্দ সদানন্দের সেদিনকার সেই কথাটাই ঘুরিয়া ফিরিয়া মাধবীলতার মনে ভাসিয়া আসিতে থাকে, আমাকে মহাপুরুষ না ভেবে তো তোমার উপায় নাই, তোমাকে যে তাহলে দ্বিচারিণী হতে হবে!।

    সদানন্দের ভয়টাই মাধবীলতার মনে সবচেয়ে বড় হইয়া দেখা দেয়। বিভূতিকে বিবাহ করার কথাটা সে কখনো ভাবে নাই, এ রকম একটা সম্ভাবনার কথা তার কল্পনাতেও আসে নাই। আজ এ বিষয়ে মাথা ঘামানোই তার পক্ষে উচিত ও স্বাভাবিক ছিল সব চেয়ে বেশি, কিন্তু কথাটা যে বিবেচনা করা দরকার, নিজের মনে তারও যে এ বিষয়ে একটা মীমাংসা করিয়া ফেলিতে হইবে আজকালের মধ্যে, এটা যেন তার খেয়ালও হইল না। বিভূতির জীবনসঙ্গিনী হইতে সে রাজি আছে। কি নাই, নিজেই সে তা এখনো জানে না। তবু সদানন্দ কি ভাবিবে, সদানন্দ কি বলিবে, সদানন্দ কি করিবে, কল্পনা করিয়া সর্বাঙ্গে যেন রীতিমতো অপরাধমূলক ভয়ের ঢিপটিপানি অনুভব করিতে থাকে।

    নিজের ঘরে বিছানায় শুইয়া মাধবীলতা ভাবিতেছিল, কে যেন পাশে আসিয়া বসিল সন্তৰ্পণে, চোরের মতো। মুখ ফিরাইয়া মাধবীলতা দেখিল শশধরের বৌ ঘোমটা কমাইয়া দিয়াছে, তবু কপাল প্রায় সবখানিই ঢাকা।

    দিদি?

    আজ সে প্রথম ঘোমটা কমাইয়া মাধবীলতার সঙ্গে কথা কহিল, এতদিন কয়েকবার চেষ্টা করিয়াও মাধবীলতা তাকে কথা বলাইতে পারে নাই। হাত দেখিয়াই বোঝা যায় বৌটির রং খুব সুন্দর, মুখের রং আরো টুকটুকে।

    ঠাকুরপোর সঙ্গে তোমার বিয়ে হবে দিদি?

    এমন সুন্দর মুখের এত আনন্দের কথা কি যে বিশ্রী শুনাইল, বলিবার নয়। বৌটি ফোক্‌লা!

     

    সদানন্দ বলে, তবে কি তুমি বলতে চাও, ওদের মধ্যে কোনো কথাই হয় নি, বিভূতি আর মাধুর মধ্যে?

    মহেশ বলে, আজ্ঞে না। তবে দুজনে বেশ ভাব হয়েছে সেটা তো বোঝাই যায়।

    সদানন্দ বলে, ভাব তো আর প্রণয় নয় মহেশ। দুজনে সর্বদা মেলামেশা করছে, এদের ভাব হওয়াটা আশ্চর্য কি। কিন্তু বিয়ে হল আলাদা ব্যাপার। সকলের সামনে কথাটা বলার আগে ওদের একবার জিজ্ঞাসা করা তো তোমার উচিত ছিল? আমার সঙ্গেও তো পরামর্শ করতে পারতে একবার?

    সময় পেলাম না যে প্ৰভু? আপনার নামে অমন একটা কুৎসিত কথা রটেছে শুনে মনে হল, বিয়ে যখন এদের হবেই, আর দেরি না করে মেয়েটিকে কথাটা জানিয়ে দেওয়াই ভালো। মাধুর সম্পর্কে আপনার নামে আর কোনো কথাই তাহলে উঠতে পাবে না।

    বিয়ে যখন ওদের হবেই মানে?

    আজ্ঞে আপনার আশীর্বাদে বিয়েটা ওদের নির্বিঘ্নে হয়ে যাবে প্ৰভু। ছেলেটার মাথাও একটু ঠাণ্ডা হবে, মেয়েটাও সুখী হবে।

    শুনিলে মনে হয় না, বিভূতি আর মাধবীলতার বিবাহ যে হইবেই, সে বিষয়ে মহেশ চৌধুরীর কিছুমাত্র সন্দেহ আছে। কারো মত জিজ্ঞাসা করা হয় নাই, কারো সঙ্গে পরামর্শ করা হয় নাই, যাদের বিবাহ দুঘণ্টা আগেও তাদের ইঙ্গিতেও ব্যাপারটা জানানো হয় নাই, তবু যেন মহেশ চৌধুরী জানে, এ বিবাহ হইয়া যাইবে। রাগে সদানন্দের গা যেন জ্বলিয়া যায়। একটু ভয়ও হয়। মহেশ চৌধুরীর একগুঁয়েমির কিছু কিছু পরিচয় সে পাইয়াছে।

    জান মহেশ, তোমার ব্যাপার ভালো বুঝতে পারছি না। বিভূতির একটা বিয়ে দিতে চাও, ভালো কথা। কিন্তু মাধুর সঙ্গে বিয়ে হবে কি করে? মাধু আশ্রমে এসেছে, সংসার ওর ভালো লাগে। নি বলে, সেবা আর আধ্যাত্মিক সাধনা নিয়ে ওর জীবনটা কাটিয়ে দেবার ইচ্ছা। আমি ওকে দীক্ষা দেব, নিজে ওকে সাধনপথে চালিয়ে নিয়ে যাব। ওর বিয়ের প্রশ্নই তো উঠতে পারে না।

    প্রভু?

    তুমি বুঝতে পার না মহেশ, ও মেয়েটির মধ্যে খাঁটি জিনিস আছে? আমি কি সাধে ওকে। বেছে নিয়েছি! একদিন ও অনেক উঁচুতে উঠে যাবে, হাজার হাজার মানুষের জীবনে একদিন ও সুখশান্তি এনে দেবে। এমন একটা খাঁটি জিনিস নষ্ট হতে দেওয়া যায়!

    প্রভু?

    বল না, কি বলতে চাও? আলোচনা করবার জন্যই তো ডেকেছি তোমায়!

    বিয়ে না হলে মেয়েটির মন শান্ত হবে না, প্রভু। বিয়ের জন্য মেয়েটি ছটফট করছে।

    সদানন্দ ব্যঙ্গ করিয়া বলে, তোমায় বলেছে নাকি, তাড়াতাড়ি আমার বিয়ে দিয়ে দিন, বিয়ের জন্য আমি ছটফট করছি মহেশবাবু?

    মহেশ হাত জোড় করিয়া বলে, আপনার তো অজানা কিছু নেই প্রভু! কেন মনে কষ্ট দিচ্ছেন। আমার কোনো মেয়ে অমন করে বলেও না, পারেও না। কিন্তু মেয়েমানুষের মন কি বোঝা যায় না? রাজাসায়েবের ছেলে তো ওকে বিয়ের লোভ দেখিয়ে বার করে এনেছিল!

    ছেলেমানুষ হঠাৎ একদিন মনের ভুলে কি করেছিল–

    আজ্ঞে হ্যাঁ, আমিও তো তাই বলি। নইলে নিজের ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিতে চাইতাম? বিয়ে। করে সংসারী হবার ইচ্ছা মেয়েটির মনে প্রবল।

    কিন্তু মহেশ–

    আজ্ঞে হ্যাঁ। বিয়েটা হয়ে যাক, দুজনকেই আপনি দীক্ষা দিয়ে পায়ের তলে আশ্রয় দেবেন। যেমন চান তেমনি করে গড়ে তুলবেন দুজনকে। আপনার কাজে দুজনে জীবন উৎসর্গ করবে। ওরা তো আপনারই সন্তান প্রভু?

    সদানন্দের মনে হয়, মহেশ যেন তাকে ভক্তিমাখা চাবুক মারিয়াছে।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleচতুষ্কোণ – মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    Next Article পুতুল নাচের ইতিকথা – মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়

    Related Articles

    উপন্যাস বুদ্ধদেব গুহ

    কোয়েলের কাছে – বুদ্ধদেব গুহ

    May 23, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    রবার্টসনের রুবি – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    বোম্বাইয়ের বোম্বেটে – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    রয়েল বেঙ্গল রহস্য – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    যত কাণ্ড কাঠমাণ্ডুতে – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    ফেলুদা এণ্ড কোং – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }