Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    অহিংসা – মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়

    উপন্যাস মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় এক পাতা গল্প288 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ১৮. নেতা হওয়া যে এত সহজ

    নেতা হওয়া যে এত সহজ আর নেতৃত্ব করা এমন কঠিন, বিভূতি তা জানি না। এবার সে ব্যাপারটা ভালো করিয়া বুঝিতে পারে। শ্রীধরের দোকানে বসিয়া মাত্র কয়েকজনের কাছে সে আবেগের সঙ্গে ঘোষণা করিয়াছিল যে নন্দনপুরের যাত্রার আসরে সামনে বসিবার অধিকার সে তাদের আদায় করিয়া দিবে। জন্মাষ্টমীর দিন দেখা গেল নানা বয়সের প্রায় দেড় শ মানুষ তার এই অধিকার আদায়ের অভিযানে যোগ দিয়াছে। শ্রীধর বা রামলোচনের মত যারা অন্তত ফতুয়া গায়ে দিয়া যাত্রা শুনিতে যায়, এদের অধিকাংশই সমাজের সে-স্তরের মানুষও নয়। এর যাত্রা শুনিতে যায় গামছা কাঁধে, আসরে সামনের দিকে ভদ্রলোকদের মাঝে বসিতে পাইলে বোধহয় রীতিমতো অস্বস্তিই বোধ করে। শ্ৰীধর, রামলোচন প্রভৃতির মতো চাঁদা দিয়াও সামনে বসিতে না পাওয়ার অপমানে এরা ক্ষুব্ধ হয় নাই। চাদাই বা এদের মধ্যে কজন দিয়াছে কে জানে! কোথা হইতে দিবে? খাজনা দিতে যাদের অনেকের ঘটিবাটি বাধা দিতে হয়, চাঁদা দেওয়ার বিলাসিতা তাদের কাছে প্রশ্রয় পায় না।

    তবু তার নেতৃত্বে যাত্রার আসর আক্রমণের জন্য সকলে যেন উৎসুক হইয়া উঠিয়াছে। নন্দনপুরের স্থায়ী আটচালার নিচে সর্বসাধারণের যাত্রার আসর। চাঁদা দিক বা না দিক, গায়ে ফতুয়া থাক বা না থাক, এদের সকলেরই অবশ্য সে আসরে সামনে বসিবার অধিকার আছে। কিন্তু এরা কি তাই চায়? সেজন্যই কি এরা সকলে জড়ো হইয়াছে? বাঁচিবার অধিকার সম্বন্ধে মাঝে মাঝে এদের সে যে সব কথা বলিয়াছে, এ কি তারই প্রতিক্রিয়া?

    এই প্রশ্ন বিভূতিকে পীড়ন করিতে থাকে। তার বক্তৃতা আর উপদেশ এতগুলি মানুষের মধ্যে সাড়া জাগাইয়াছে, এ কথা বিশ্বাস করিতে ভালো লাগে কিন্তু নিঃসন্দেহে বিশ্বাস করিতে পারা যায়। না। গ্রামের সঙ্গে গ্রামের প্রতিযোগিতা থাকে, মনোমালিন্য থাকে–এক গ্রাম অন্য গ্রামকে অনায়াসে হিংসা করে। কে জানে এরা নন্দনপুরের অধিবাসীদের একটু জব্দ করিতে চলিয়াছে কিনা? শ্ৰীধর, রামলোচন আর অন্যান্য কয়েকজন ফতুয়াধারী হয়তো নিজেদের কোনো উদ্দেশ্যসিদ্ধির জন্য এই সব অশিক্ষিত সরল মানুষগুলিকে ক্ষেপাইয়া দিয়াছে। যাত্রার আসরে হয়তো আজ একটা বিশ্রী ব্যাপার ঘটিয়া যাইবে।

    কিন্তু এখন আর পিছাইবার উপায় নাই, মরিয়া গেলেও না। বিভূতি বার বার সকলকে আসল কথাটা বুঝাইয়া দেয়। গালাগালি, হাতাহাতি চলিবে না। ধীরস্থির শান্তভাবে সকলে সামনের দিকে আঁকিয়া বসিয়া পড়িবে, কিছুতেই আর সেখান হইতে উঠিবে না।

    একজন প্রশ্ন করে, ওরা যদি গাল দেয়, অপমান করে? যদি মারে? বিভূতি জবাব দেয়, তবু চুপ করে বসে থাকবে, কথাটি কইবে না। আমাদের ভদ্র ব্যবহারে ওরাই লজ্জা পাবে। ওরা যদি ছোটলোকমি করে, আমরা কেন ছোটলোক হতে যাব?

    বিভূতি ইচ্ছা করিয়াই সকলকে সঙ্গে নিয়া যাত্ৰা আরম্ভ হওয়ার অনেক আগে আসরে গিয়া হাজির হইল। মানুষ তখন জমা হইয়াছে অনেক, তবে বসিবার স্থানও যথেষ্ট ছিল। সামনের বিশেষ স্থানগুলি রাখা হইয়াছিল বিশিষ্ট ভদ্রলোকদের জন্য। সকলে দল বাঁধিয়া সেই স্থানগুলি দখল করিয়া বসিবার উপক্রম করিবামাত্র কয়েকজন ভলান্টিয়ার আসিয়া প্রতিবাদ করিল। বিভূতি যেখানে খুশি বসুক, বিভূতির দু-একজন বন্ধুবান্ধবও বসুক, কিন্তু সকলে বসিলে চলিবে কেন?

    বিভূতি খুব অহিংসভাবেই জিজ্ঞাসা করিল, কেন চলবে না? এরা সকলেই আমার বন্ধু।

    একজন ভলান্টিয়ার, বয়স তার আঠার-উনিশের বেশি হইবে না, একগাল হাসিয়া বলিল, আর আমরা বুঝি আপনার শত্ৰু?

    না, তা বলছি না–

    একজন তিন চার হাত তফাত হইতে বিভূতির মুখগহ্বরটিকে পিকদানি হিসাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করিল। মুখ ভাসাইয়া পানের পিক বুকে গড়াইয়া পড়িতে লাগিল, বিভূতি মুছিবার চেষ্টাও করিল না। এক লাফে সামনে আগাইয়া গিয়া এক হাতে অপরাধীর গলাটা টিপিয়া ধরিয়া অন্য হাতে তাকে মারিতে লাগিল কিল, চড়, ঘুসি। আরেকজন চট করিয়া বসিয়া পড়িয়া পিছন হইতে বিভূতির পা ধরিয়া মারিল এক হাচকা টান, বিভূতি মুখ থুবড়াইয়া পড়িয়া গেল।

    একজন চিৎকার করিয়া উঠিল, মার শালাদের।

    অনেকের মুখে প্রতিধ্বনি শোনা গেল : মার! মার! মার!

    অধিকাংশ লোক যেন দাঙ্গার জন্যই প্রস্তুত হইয়া আসিয়াছিল, দেখিতে দেখিতে এমন দাঙ্গা বাঁধিয়া গেল বলিবার নয়। কোথা হইতে যে এত লাঠি, ইট, পাটকেল আসিয়া জুটিল! কয়েকটা মাথা ফাটিয়া গেল, অন্যভাবে আহত হইল অনেকে। হৈ হৈ রৈ রৈ, হল্লা, ছোটাছুটি মারামারি এক গ্রামের লোক যেভাবে পারিতেছে অন্য গ্রামের লোককে আঘাত করিতেছে। নিয়ম নাই, শৃঙ্খলা নাই, ভালো করিয়া দল বাঁধিয়া দাঙ্গা করিবার মতো কাণ্ডজ্ঞান পর্যন্ত কারো নাই। একজন হয়তো পেছন হইতে অন্য একজনের মাথায় লাঠি মারিবার আয়োজন করিয়াছে, এমন সময় তৃতীয় এক ব্যক্তি লোহার একটা মুখসরু শিক তার পিঠের মধ্যে ঢুকাইয়া দিল। এ ধরনের অস্ত্র কেউ কেউ দু-একটা সঙ্গে আনিয়াছিল। কেবল আজ নয়, আগের দুদিনও আনিয়াছিল। মারামারিটা যে আজ হঠাৎ লাগে নাই এ তার একটা মস্ত বড় প্রমাণ।

    শেষ পর্যন্ত বিভূতির স্থাপিত ব্যায়াম-সমিতিগুলির সদস্যেরা আসিয়া সেদিনকার মতো সেখানকার হাঙ্গামাটা থামাইয়া দিল। মারামারিটা হইতেছিল এক গ্রামের লোকের সঙ্গে আরেক গ্রামের লোকের এবং বিভূতি ব্যায়াম-সমিতি স্থাপন করিয়াছিল এক এক গ্রামে একটা করিয়া। কিন্তু এমনই আশ্চর্য ব্যাপার, মারামারিটা বন্ধ করিল ভিন্ন ভিন্ন গ্রামের ব্যায়াম-সমিতিগুলির সদস্যেরা একসঙ্গে মিলিয়া। অধিকাংশই মাথা-গরম যুবক, কিন্তু তাদের মধ্যে এমন ঘোরতর মিল দেখা গেল, ঠাণ্ডামাথা বুড়োদের মধ্যে যা সম্ভব হয় না।

    আহত বিভূতিকে তারা গরুর গাড়িতে বাড়ি পাঠাইয়া দিল। বিভূতির আঘাত বিশেষ গুরুতর নয়, অন্তত দেহের আঘাত নয়। অন্যান্য যারা আহত হইয়াছিল, তাদের কয়েকজনকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হইল, কিন্তু অধিকাংশ আহত মানুষ যে কোথায় উধাও হইয়া গেল, তার আর কোনো পাত্তাই মিলিল না।

    মারামারি কিন্তু সেইখানেই শেষ হইল না।

    এক গ্রামের কয়েকজন অন্য গ্রামের একজনকে একা পাইলে ধরিয়া পিটাইয়া দিতে লাগিল। মারামারির পরদিন সকালে নন্দনপুরে গিয়া মহেশ চৌধুরী মার খাইয়া অজ্ঞান হইয়া গেল। মাথাটা তার ফাটিয়া গেল এবং দাঁত ভাঙিয়া গেল কয়েকটা।

    বিভূতি আহত অবস্থায় বাড়ি ফিরিলে মহেশ চৌধুরী জিজ্ঞাসা করিয়াছিল, তুমি গিয়ে দাঙ্গা দাঙ্গা করে এসেছ?

    বিভূতি বলিয়াছিল, না। যাতে দাঙ্গা না বাধে তার চেষ্টা করেছিলাম।

    কথাটা মহেশ বিশ্বাস করে নাই, কিন্তু তখনকার মতো কিছু আর বলেও নাই। পরদিন সকাল। হইতে আসল ব্যাপারটা জানিবার জন্য নিজে ছুটিয়া গিয়াছিল। কিন্তু খোঁজখবর নেওয়ার সুযোগটাও সে পায় নাই। তাকে দেখিয়াই নন্দনপুরের জনপাঁচেক বদমেজাজী মানুষ বলিয়াছিল, বিভূতির বাপ ব্যাটা এসেছে রে!

    বলিয়াই তাকে পিটাইতে আরম্ভ করিয়াছিল।

    অনেক বেলায় খবর পাইয়া বিভূতি তাকে আনিতে গেল! বাপের অবস্থা দেখিয়া মুখ তার। অন্ধকার হইয়া গেল। যাদের সে যাচিয়া আগের দিন যাত্রার আসরে সঙ্গে নিয়া গিয়াছিল, মারামারির জন্য তাদের উপরেও তার বিরক্তির এতক্ষণ সীমা ছিল না। এরকম একটা কুৎসিত কাণ্ড ঘটার জন্য মনে মনে তার বড়ই খারাপ লাগিতেছিল। সে ভাবিতেছিল, এইরকম বর্বর যদি তার দেশের মানুষ হয়, আর এইরকম কারণে অকারণে পরস্পরকে হিংসা করে আর পরস্পরের সঙ্গে কলহ বাধায়, দেশের তবে হইবে কি? আজ আহত বাপকে দেখিয়া সৰ্বাগ্রে তার মনে হইল, যারা। তার বাপকে এ ভাবে মারিয়াছে তাদের কিছু উত্তম-মধ্যম না দিলে জীবনধারণ করাই বৃথা।

    কিন্তু কে যে মহেশ চৌধুরীকে মারিয়াছে, কেউ তা জানে না। অত সকালে আটচালার দিকে। বড় কেউ যায় নাই। একটু বেলায় মহেশকে রাস্তায় পড়িয়া থাকিতে দেখিয়া গ্রামে একটা গোলমাল বাঁধিয়া যায়। তখন নন্দনপুর ব্যায়াম-সমিতির সদস্যেরা তাকে সযত্নে তুলিয়া আনিয়া সেবাযত্নের ব্যবস্থা করিয়াছে।

    ডাক্তার দেখাইয়া পাল্কিতে করিয়া মহেশকে বাড়ি নিয়া যাওয়া হইল। সারাদিন সারারাত বিভূতি মহেশের শিয়রে বসিয়া রহিল, বিভূতির মা বসিয়া রহিল পায়ের কাছে। মাধবীলতা ওইরকমভাবেই রাতটা কাটাইবার আয়োজন করিয়াছিল, বিভূতির জন্য পারিয়া উঠিল না। মাঝরাত্রে বিভূতি তাকে এমন একটা অপমানজনক ধমক দিয়া ন্যাকামি করিতে বারণ করিয়া দিল যে, কাঁদিয়া ফেলিয়া মাধবীলতা উঠিয়া গেল।

     

    মহেশ চৌধুরীর জ্ঞান ফিরিল পরদিন সকালে।

    উদ্‌ভ্রান্ত ভাবটা একটু কাটিয়া আসিলে বিভূতি মৃদুস্বরে তাকে জিজ্ঞাসা করিল, তোমায় কে মেরেছে বাবা?

    মহেশ চৌধুরী বলিল, একজন কি মেরেছে–চার-পাঁচজনে।

    কেন মারল?

    তোমার জন্যে। পাপ করলে তুমি, তোমার বাপ বলে আমি তার প্রায়শ্চিত্ত করলাম।

    উত্তেজিত হওয়ার ফলে হঠাৎ ব্যথায় মহেশ একটু কাতর হইয়া পড়িল। কিছুক্ষণ সকলে চুপচাপ।

    তুমি আমার বাবা বলে তোমায় মারল? কে কে মারল?

    মহেশ চৌধুরী চোখ বুজিয়া বলিতে লাগিল, ওরা সবাই ভালো লোক, অকারণে কখনো মারত না। যোগেন, দীন, কালীপদ, রামনাথ আর নগেনের সেজমামা ছিল–কি যেন নাম। লোকটার? আমি তো ওদের কোনোদিন ক্ষতি করি নি, মিছিমিছি কেন ওরা আমায় দেখামাত্র পিটাতে আরম্ভ করবেঃ

    নড়িতে গিয়া মৃদু একটা আর্তনাদ করিয়া মহেশ চৌধুরী চুপ করিয়া গেল।

    বিভূতি দাতে দাতে ঘষিয়া বলিল, আমি যদি ওদের তোমার মতো অবস্থা না করি, তোমার ব্যাটা নই আমি।

    কাতরাইতে কাতরাইতে চোখ মেলিয়া মহেশ চৌধুরী বলিল, তুমি যদি আবার ওদের পিছনে লাগতে যাও, তোমায় আমি জন্মের মতো ত্যাগ করব বলে রাখছি।

    তা তুমি ত্যাগ কর। তাই বলে ঘাড় খুঁজে এ অন্যায় সহ্য করা–

    কিসের অন্যায়? যদি করেই থাকে অন্যায়, তোর কি? মেরেছে আমাকে, তোমাকে তো মারে নি, তোমার মাথা ঘামাবার দরকার?

    বাঃ বেশ! বলিয়া বিভূতি খানিকটা হতভম্বর মতোই বসিয়া রহিল। মহেশ চৌধুরী বলিতে লাগিল, তুমি ওদের পেছনে লাগবে, বদনাম রটবে আমার। সবাই বলবে আমি তোমায় দিয়ে। ওদের মারিয়েছি।

    বিভূতি বলিল, তুমি এমন কাপুরুষ!

    কাপুরুষঃ

    নয় তো কি? লোকে নিন্দে করবে ভয়ে মুখ বুজে এত বড় অন্যায় সহ্য করে যাবে? লোকের নিন্দা-প্রশংসা দিয়ে তোমার নীতি ঠিক হয়, আর কিছু নেই তার পেছনে?

    বিভূতির মা ব্যাকুলভাবে বলিল, চুপ কর না বিভূতি? কি যে তোরা আরম্ভ করেছিস?

    বিভূতি কথাটা গ্রাহ্য করিল না, চুপচাপ একটু ভাবিয়া বলিল, নিন্দা-প্রশংসা তো আমারও আছে। আমার বাপকে ধরে পিটিয়ে দিল, আমি যদি চুপ করে থাকি, লোকে আমায় অপদার্থ বলবে। ভীরু কাপুরুষ বলবে।

    মহেশ সভয়ে বলিল, কি করব তুই?

    বিভূতি বলিল, ওদের বুঝিয়ে দেব, মারতে কেবল ওরা একাই জানে না।

    তাতে লাভ কি হবে?

    ভবিষ্যতে আর এ রকম করবে না।

    আরো বেশি করে করবে। তার চেয়ে সেরে উঠে আমি যদি গিয়ে হাসিমুখে এদের সঙ্গে কথা বলি, ভাই বলে জড়িয়ে ধরি, ওরা কি রকম লজ্জা পাবে বল তো?

    ছাই পাবে। ভাববে, আবার মার খাবার ভয়ে খাতির করছ।

    মহেশ শ্রান্ত হইয়া পড়িয়াছিল, আর তার তর্ক করার ক্ষমতা ছিল না। তখনকার মতো সে চুপ করিয়া গেল। কিন্তু বিভূতি উঠিয়া যাইবার উপক্রম করিতেই আবার তাকে ডাকিয়া বসাইয়া বুঝাইবার চেষ্টা আরম্ভ করিয়া দিল। রাগ করিয়া, মিষ্টি কথা বলিয়া, মিনতি করিয়া, কতভাবে যে সে বিভূতিকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করি। যতই সে কথা বলিতে লাগিল, বিভূতির কাছে ততই স্পষ্ট হইয়া উঠিতে লাগিল তার ভয়ের পরিচয় মার খাইয়া মহেশ চৌধুরী মার ফিরাইয়া দিয়াছে, মানুষের কাছে এইরকম অসভ্য বর্বররূপে পরিগণিত হওয়ার ভয়! মহেশ চৌধুরীকে এমন দুর্বল বিভূতি আর কখনো দেখে নাই। শেষে বিরক্ত হইয়া সে বলিল, আচ্ছা সে দেখা যাবে। বলিয়া ঘর ছাড়িয়া চলিয়া গেল।

    নিজের ঘরে গিয়া বিছানায় শুইয়া পড়িয়া সে ভাবিতে লাগিল। হাতাহাতি মারামারি সে নিজেও কোনোদিন পছন্দ করে না, ও সমস্ত সত্যই নীচতা। কিন্তু সব ক্ষেত্রেই কি তাই? মহেশ চৌধুরী কোনো অপরাধ করে নাই, কেবল তার বাবা বলিয়া তাকে যারা মারিয়াছে, উদারভাবে তাদের ক্ষমা করাটা কি উচিত? তাকে কি উদারতা বলে? তার চেয়ে ছোটলোকের মতো ওদের ধরিয়া কিছু উত্তম-মধ্যম লাগাইয়া দেওয়াই কি মহত্ত্বের পরিচয় নয়, মনুষ্যত্বের প্রমাণ নয়? ভাবিতে ভাবিতে বিভূতি বুঝিতে পারি, মাধবীলতা ঘরে আসিয়া দাঁড়াইয়াছে। গতরাত্রে মাধবীলতাকে বিশ্রী ধমক দিয়া কাঁদানোর কথাটা মনে পড়ায়, ভাব করার উদ্দেশ্যে হঠাৎ সে মাধবীলতার কাছে পরামর্শ চাহিয়া বসিল।

    মাধবীলতা চোখ বড় বড় করিয়া বলিল, ওদের মেরে ফেলা উচিত, খুন করে ফেলা উচিত। বিভূতি হাসিয়া বলিল, সত্যি? কিন্তু ওরা যদি আমায় মেরে ফেলে?

    বিভূতি হাত বাড়াইয়া দিতে মাধবীলতা তার বুকের মধ্যে ঝাঁপাইয়া পড়িল। এতক্ষণ যেন। অধীর আগ্রহে সে এইজন্যই অপেক্ষা করিতেছিল। বিকারের সঙ্গে ভালবাসার তীব্রতা বাড়িয়া গিয়াছে। বিকার ছাড়া স্বাভাবিক মায়ামমতা জোরালো হয় না। এক রাত্রির অভিমান-সংক্ষুব্ধ বিরহ মাধবীলতাকে অধীর করিয়া দিয়াছে।

    হাঙ্গামার ফলে নন্দনপুরে যাত্রা আর কীর্তন বন্ধ হইয়া গেল, সেই যাত্ৰা আর কীর্তন প্রভৃতির ব্যবস্থা করা হইল আশ্রমে। বুদ্ধিটা মাথায় আসিল কয়েকটি গ্রামের মাতব্বরদের। তারা ভাবিয়া দেখিল, আশ্রমে সব গ্রামের লোকের সমান অধিকার, সেখানে বিশেষ সুবিধাও কেউ দাবি করিতে পারিবে না, বদমাইশি করিয়া গোলমাল সৃষ্টি করার জন্য সাহসও কারো হইবে না। যেদিন সকালে মহেশ চৌধুরীর জ্ঞান ফিরিয়া আসিল, সেইদিন দুপুরে আরম্ভ হইল শ্রীকৃষ্ণের জন্মলীলাকীর্তন। রাত্রি আটটা নটার সময় যাত্রাভিনয় আরম্ভ হইবে এবং সমস্ত রাত চলিবে।

    বিভূতি যখন দল বাঁধিয়া বাপের প্রহারকারীদের খোজে বাহির হইল, তখন পুরাদমে কীর্তন চলিতেছে। বাছা বাছা কয়েকজন ভক্তকে সঙ্গে করিয়া পাঁচটি অপরাধীর খোঁজ করিতে গিয়া বিভূতি শুনিল, তারা সকলে কীর্তন শুনিতে গিয়াছে। বিভূতি তখন সোজা আশ্রমে চলিয়া গেল।

    আসর লোকে ভরিয়া গিয়াছে। কীর্তনের দলটি নামকরা, প্রধান কীর্তনীয়ার গলাটি মধুর আর আবেগ রোমাঞ্চকর শ্ৰীকৃষ্ণ কেন জন্মিবেন, যুগে যুগে তপস্যা করিয়া যোগী ঋষিরা যার হদিস পায় না, তিনি কেন নিজে মানুষের মধ্যে মানুষের রূপ ধরিয়া আসিবেন, এই কথাটা সুর করিয়া বুঝাইয়া বলিতে বলিতেই সে সকলকে একেবারে মাতাইয়া দিয়াছে–গদগদ করিয়া তুলিয়াছে। কয়েকজনের চোখে জলও দেখা দিয়াছে।

    সদানন্দের কিছু তফাতে অপরাধী পাঁচজন বসিয়াছিল। মনে তাদের একটু ভয় ঢুকিয়াছে, মহেশ চৌধুরী যদি মরিয়া যায়! কাছাকাছিই বসিয়া চুপি চুপি ইঙ্গিতে তারা এ বিষয়ে প্রথমে একটু আলাপ করিয়াছিল, তারপর চুপ করিয়া কীৰ্তন শুনিতেছে। দলবলসহ আসিয়া বিভূতি যখন আসরের একপ্রান্তে দাঁড়াইয়া তাহাদের খেজেই চারিদিকে দৃষ্টি সঞ্চালন করিতেছে, তার উপর পঁচজনেরই নজর পড়িল।

    পাঁচজনকে দেখিয়া বিভূতি সঙ্গীদের বলিল, ওই যে ওরা।

    সঙ্গীদের একজন একটু দ্বিধাভরে বলিল, এত লোকের মাঝখান থেকে টেনে আনা কি উচিত হবে?

    বিভূতি বলিল, প্রথমে ডাকব, যদি আসে ভালোই। না এলে ঘাড় ধরে টেনে আনতেই হবে। শাস্তিটা সকলের সামনে দিতে হবে!

    ইতিমধ্যে সদানন্দ বিভূতিকে ডাকিতে লোক পাঠাইয়া দিয়াছে মহেশের খবর জানিবে। বিভূতিকে আশ্রমে দেখিয়া সদানন্দ সত্যই খুশি হইয়াছিল। বিভূতি মুখ তুলিয়া তার দিকে চাইতে সে একটু হাসিল। বিভূতি হাসিল না, হাসিবার মতো মনের অবস্থা তার তখন নয়, শুধু মাথা একটু কাৎ করিয়া হাসির জবাব দিল।

    লোকটিকে বলিল, বলগে, একটু কাজ সেরে আসছি।

    পূর্ণেন্দু নামে একটি যুবককে বিভূতি অপরাধী পঁচজনের কাছে পাঠাইয়া দিল। পূর্ণেন্দু গিয়া বলিল, মহেশবাবুর ছেলে বিভূতিবাবু আপনাদের একটু বাইরে ডাকছেন–বিশেষ দরকার।

    যোগেন ভড়কাইয়া গিয়া বলিল, আমাদের ডাকছে? কেন ডাকছে?

    দরকার আছে, আসুন।

    আমাদের ডাকছে? আমাদের কাদের?

    পূর্ণেন্দু একে একে আঙুল দিয়া পাঁচজনকে দেখাইয়া দিল, আপনাকে—আপনাকে—আপনাকে—আপনাকে–আপনাকে।

    পাঁচজনেই ভড়কাইয়া গেল। আসর ছাড়িয়া কি যাওয়া যায়? দরকার থাকিলে বিভূতি আসুক না?

    চৌধুরী মশায় কেমন আছেন জান?

    পূর্ণেন্দু বলিল, ভালো নয়।

    শুনিয়া পাঁচজনে আরো ভড়কাইয়া গেল এবং আরো স্পষ্টভাবেই জানাইয়া দিল যে, কীর্তন যখন চলিতেছে, আসর ছাড়িয়া যাওয়া কোনোমতেই সঙ্গত হইবে না। আশপাশের দু-একজন এতক্ষণে গোলমালের জন্য অসহিষ্ণু হইয়া বিরক্তি প্রকাশ করিতে আরম্ভ করিয়াছিল। পূর্ণেন্দু উঠিয়া গেল।

    তারপর ঘটিল অতি খাপছাড়া নাটকীয় ব্যাপার। লোকজনকে ঠেলিয়া সরাইয়া বিভূতি আর তার সঙ্গীরা অপরাধী পঁচজনের কাছে আগাইয়া গেল! চার-পাঁচজনে মিলিয়া এক একজনকে ধরিয়া হাচকা টান মারিয়া দাঁড় করাইয়া দিল। পাঁচজনের মুখ তখন পাংশু হইয়া গিয়াছে। কীর্তন বন্ধ হইয়া গেল, সকলে অবাক হইয়া ব্যাপার দেখিতে লাগিল।

    বিভূতি সোজা হইয়া দাঁড়াইয়া সকলকে সম্বোধন করিয়া, এই পাঁচটি গুণ্ডা মিলে কাল সকালে আমার বাপকে বিনা দোষে মেরে প্রায় খুন করে ফেলেছে। আজ সকাল পর্যন্ত বাবা অজ্ঞান হয়ে ছিলেন। আপনাদের সকলের সামনে আমি এদের শাস্তি বিধান করছি, চেয়ে দেখুন বলিয়া একদিন সদানন্দের মুখে যেরকম ঘুসি লাগাইয়াছিল, কালীপদর মুখে সেইরকম একটা ঘুসি বসাইয়া দিল। তারপর সকলে মিলিয়া পাঁচজনকে মারিতে আরম্ভ করিল। আরম্ভ করিল বটে, কিন্তু মারটা তেমন জমিল না। ভয়ে যারা আধমরা হইয়া গিয়াছে, চোখ বুজিয়া গোঙাইতে আরম্ভ করিয়াছে, হাত তুলিয়া একটা আঘাত ফিরাইয়া দিবার চেষ্টা পর্যন্ত যাদের নাই, একতরফা তাদের কঁহাতক পিটানো যায়? এমনি মারিতে হাত উঠিতেছে না দেখিয়া, বিভূতি একজনের একটা ছড়ি কুড়াইয়া নিল, তারপর সেই ছড়ি দিয়া পঁচজনকে মারিতে আরম্ভ করিল।

    এতক্ষণে চারিদিকে হৈচৈ আরম্ভ হইয়া গিয়াছে। মারের ভয়ে আশপাশের সকলে তফাতে। সরিয়া গিয়াছে এবং সেখানে নিরাপদে দাঁড়াইয়া চিল্লাইতেছে। সদানন্দই বোধহয় সকলের আগে তাদের কাছে আগাইয়া আসিল। সদানন্দকে আগাইতে দেখিয়া তখন অগ্রসর হইল আশ্রমের অধিবাসীরা।

    সদানন্দ বিভূতিকে ধরায় বিভূতি তাকে ধাক্কা দিয়া ঠেলিয়া সরাইয়া দিল। তখন সকলের দিকে চাহিয়া বজ্ৰকণ্ঠে সদানন্দ বলিতে লাগিল, আমার আশ্রমে এসে একজন গুণ্ডা গুণ্ডামি করছে, আমায় অপমান করছে, তোমরা চুপ করে দাঁড়িয়ে তাই দেখছ? আমাকে মারল, এ অপমান তোমাদের সহ্য হচ্ছে? আমার যদি একজন ভক্ত এখানে থাকে।

    উত্তেজনা অনেকের মধ্যেই সঞ্চারিত হইয়াছিল, তার উপর সদানন্দের অনুপ্রেরণা। একটা গৰ্জনের মতো আওয়াজ উঠিয়া এলোমেলো গোলমালটা একেবারে ঢাকিয়া দিল। শ চারেক লোক আগাইয়া গেল বিভূতি আর তার সঙ্গীদের দিকে। বিভূতিরা দলে যে বিশেষ ভারি নয়, সেটা টের পাইয়া সকলের মধ্যেই অনেকটা সাহসের সঞ্চার হইয়াছিল। বাকি পাঁচ শ ছ শ লোকের মধ্যে তিন চার শ স্ত্রীলোক আর্তনাদ করিতে লাগিল, বাকি সকলে দাঁড়াইয়া দাঁড়াইয়া দেখিতে লাগিল মজা।

    মাঝে মাঝে শোনা যাইতে লাগিল মার শালাদের। এই মহামন্ত্ৰ উচ্চারণ না করিয়া বাঙালি দাঙ্গাহাঙ্গামা, মারামারি আরম্ভ করিতে পারে না।

    জনতা যখন আক্রমণ করে, তখন দেরি হয় শুধু আরম্ভ করিতে, একজন যতক্ষণ আসল ব্যাপারটা হাতেনাতে শুরু করিয়া না দেয়, ততক্ষণ চলিতে থাকে শুধু হৈচৈ আস্ফালন। তবে এরকম অবস্থায় আরম্ভ হইতেও যে খুব বেশি দেরি হয় তা নয়–দু-এক মিনিটের মধ্যেই কারোর না কারোর উত্তেজনা চরমে উঠিয়া যায়। ব্যাপার যে কি রকম গুরুতর হইয়া পঁড়াইয়াছে, বিভূতি আর তার সঙ্গীরা ভালো করিয়াই টের পাইয়াছিল। সকলে মিলিয়া আরম্ভ করিলে কয়েক মিনিটের মধ্যেই তাদের ছিড়িয়া টুকরা টুকরা করিয়া ফেলিবে। কিন্তু এখন আর উপায় কি? পালানোর চেষ্টা করিলে কয়েকজন বাঁচিয়া যাইতে পারে, কিন্তু পালানোর চেষ্টা তো আর করা চলে না। তার চেয়ে উন্মত্ত জনতার হাতে মরাই ভালো।

    পালানোর চেষ্টা করা চলে না কেন? বিভূতির ভক্তরা সকলে কি মনে করিবে! মানুষের নিন্দা প্রশংসা সম্বন্ধে মহেশ চৌধুরীর দুর্বলতা দেখিয়া সেদিন সকালে বিভূতির লজ্জা আর দুঃখ হইয়াছিল, এখন সে চোখের পলকে বুঝিতে পারে, অনুগত যুবক-সমাজের নিন্দা-প্ৰশংসার ভাবনাই তাকে নিশ্চিত মৃত্যুর সামনে আড়ষ্ট করিয়া দিয়াছে। যাদের এত বড় বড় কথা শুনাইয়াছে, অপরাধীকে শাস্তি দেওয়ার জন্য বুক ফুলাইয়া যাদের সঙ্গে করিয়া এখানে নিয়া আসিয়াছে, এখন বিপদ দেখিয়া তাদের ফেলিয়া পালানোর কথা ভাবিতেই হাত-পা অবশ হইয়া আসিতেছে। অথচ এ ভাবে মরণকে বরণ করা নিছক বোকামি। রেললাইনে ট্রেনের সামনে দাঁড়াইয়া সাহস দেখানোর মতো।

    সদানন্দও নিমেষের মধ্যে ব্যাপারটা অনুমান করিতে পারিয়াছিল। দুহাত মেলিয়া বিভূতিকে আড়াল করিয়া দাঁড়াইয়া সকলকে ঠেকানোর কল্পনাটা মনের মধ্যে আসিয়াই অন্য একটা কল্পনার তলে মিলাইয়া গেল। চোখের সামনে এমন একটা ভীষণ কাণ্ড ঘটিতে যাইতেছে, অথচ এই অবস্থাতেও সদানন্দের মনে পড়িয়া গেল যে, এ জগতে মাধবীলতার একজনমাত্র মালিক আছে, তার নাম বিভূতি। বিভূতির যদি কিছু হয়, মাধবীলতার তবে কেউ আর কর্তা থাকিবে না। চিন্তাটা মনে। আসিতেই সদানন্দ একটু সরিয়া দাঁড়াইল।

    এমন সময় ঘটিল আরেকটা কাণ্ড। হাতে আর মাথায় ব্যাণ্ডেজবাধা মহেশ চৌধুরী খোঁড়াইতে খোঁড়াইতে পাগলের মতো আসিয়া হাজির হইল। খানিকটা তফাত হইতেই সে প্রাণপণে চেঁচাইতে লাগিল, ওরে, রাখ্‌, রাখ্‌। ওরে বিভূতি রাখ্‌।

    সকলে স্তব্ধ হইয়া গেল। কতকটা বিস্ময়ে, কতকটা কৌতূহলে, কতকটা সহানুভূতিতে। বিভূতি প্রথমে সকলকে শুনাইয়া যা বলিয়াছিল, মহেশ চৌধুরীকে দেখিয়া সেই কথাগুলি সকলের মনে পড়িয়া গিয়াছে।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleচতুষ্কোণ – মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    Next Article পুতুল নাচের ইতিকথা – মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়

    Related Articles

    উপন্যাস বুদ্ধদেব গুহ

    কোয়েলের কাছে – বুদ্ধদেব গুহ

    May 23, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    রবার্টসনের রুবি – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    বোম্বাইয়ের বোম্বেটে – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    রয়েল বেঙ্গল রহস্য – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    যত কাণ্ড কাঠমাণ্ডুতে – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    ফেলুদা এণ্ড কোং – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }