Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025

    ওডিসি – হোমার

    October 13, 2025

    প্রেমের প্রান্তে পরাশর – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    October 13, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    অ্যাডগার অ্যালান পো রচনাসমগ্র / অনুবাদ : জাকির শামীম

    জাকির শামীম এক পাতা গল্প1512 Mins Read0

    দ্য মাস্ক অব দ্য রেড ডেথ

    লাল মৃত্যু!

    বহুদিন আগেই লাল মৃত্যু দেশটাকে একেবারে তছনছ করে দিয়েছিল।

    আজ পর্যন্ত অন্য কোনো মহামারীই লাল মৃত্যুর মতো ভয়ঙ্কর রূপ নিয়ে দেখা দেয়নি।

    রক্ত! টকটকে লাল রক্ত! রক্তের লাল রং আর ভয়াবহতাই–তার অবতাররূপে গণ্য হয়।

    গোড়ার দিকে ভয়ানক ব্যথা বেদনা আর আকস্মিক ঝিমুনি ভাব দেখা দেয়। তারপর তা দ্রুত বেড়ে যেতে থাকে। তারপরই লোমকুপ থেকে গল গল করে রক্তক্ষরণ শুরু হয়ে যায়। এভাবেই অনিবার্য মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে হয়। রোগাক্রান্ত ব্যক্তির সর্বাঙ্গে, বিশেষ করে মুখাবয়বে রক্তাভ গোল গোল দাগের জন্যই আত্মজনরা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে তার কাছ থেকে দূরে চলে যায়। তার প্রতি কেউ-ই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় না, কারো সহানুভূতিই তার বরাতে জোটে না।

    ভয়ঙ্কর এ রোগটা আক্রমণ করার পর তার ব্যাপ্তি আর মৃত্যু সবকিছুই মাত্র আধ। ঘণ্টার মধ্যে মিটে যায়।

    রাজপুত্র ভ্রস্পোরো কিন্তু বাস্তবিকই সুখি, নির্ভিক আর চালাক চতুর।

    রাজ্যের মোট জনসংখ্যা সাবাড় হয়ে যাবার পর পারিষদদের আর রূপসিদের ভেতর থেকে এক হাজার সদাহাস্যময় আর নম্র স্বভাবের বন্ধু বান্ধবদের তলব করে নিয়ে এলো। তারপর তাদের সঙ্গে করে প্রাচীরে ঘেরা দুর্গের মতো একটা নির্জন নিরালা মঠে গিয়ে মাথা গুঁজল।

    মঠটা যেমন বড়সড় তেমনি তার গঠন বৈচিত্র্যে আর ভাস্কর্য শিল্প রাজপুত্রের খেয়ালি অথচ মহান রুচির অনন্য সৃষ্টি। আকাশ-ছোঁয়া সুদৃঢ় প্রাচীর মঠটাকে বেষ্টন করে রেখেছে। আর সামনের দিকে একটা লোহার মজবুত দরজা।

    পারিষদরা মঠে ঢুকেই মঠে ঢোকা ও বেরোনোর পথ বন্ধ করার জন্য সম্ভাব্য যাবতীয় ব্যবস্থা করতে লেগে গেলেন। তারা প্রথমেই উনুন আর কয়েকটা ইয়া ভারী হাতুড়ি যোগাড় করলেন। তারপর হাতুড়ি দিয়ে দমাদম হুড়কোগুলোর পিঠে ওপর ঘা মেরে মেরে জুড়ে দিলেন, কাউকে মঠে ঢুকতে ও বেরোতে না দেওয়ায় তারা কঠিন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ব্যাপারটা এমন দাঁড়াল মনের আকস্মিক ও পুঞ্জিভূত হতাশা, যাকে মস্তিষ্ক বিকৃতি বলা যেতে পারে–শিকার হয়েই তারা এমন ব্যস্ততার সঙ্গে কাজটা সেরে ফেলল।

    মঠ থেকে যাতে বাইরে বেরোতে না হয় সে জন্য তারা আগেই ভাগেই প্রচুর পরিমাণে খাদ্যবস্তু গুদামজাত করে রেখেছেন। এর ফলে বাইরে থেকে রোগ জীবাণু ঢুকে যাতে রোগ সংক্রামিত হতে না পাওে, সে ব্যবস্থা পাকাপাকিভাবে সম্পূর্ণ করা হল।

    এদিকে মঠের প্রাচীরের বাইরে যে জগষ্টা রয়ে গেল তার নিরাপত্তার ব্যবস্থা সে নিজেই গ্রহণ করতে সক্ষম হবে। এ মুহূর্তে এ নিয়ে আফসোস বা ভাবনা-চিন্তা করা। নিরর্থক।

    তাই বলে আমোদ আহ্লাদকে তো আর বিসর্জন দেওয়া সম্ভব নয়। এ দিকটা নিয়ে প্রিন্সই ভাবিত। তিনিই বাজনা বাদ্যি আর নামকরা কলের ব্যালে-নাচের ব্যবস্থা আর রূপালি তম্বী যুবতিদের এনে জড়ো করেছেন। আর সে সঙ্গে পিপা ভর্তি দামি দামি মদ তো রয়েছেই। এসব ব্যবস্থাদির সবকিছুর সঙ্গেই কঠোর নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থার দিকে সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। অতএব কার্যত দেখা গেল প্রাচীরবেষ্টিতে মঠের ভেতরে লাল-মৃত্যুকে প্রতিরোধের জন্য কঠোর ব্যবস্থা, আর লালমৃত্যুর জন্য রাখা হলো প্রাচীরের বাইরের অঞ্চল।

    আসলে বাসস্থানের পঞ্চম বা ষষ্ঠ মাসের শেষের দিক। তখন প্রাচীরবেষ্টিত মঠের বাইরে তখন মহামারী ভয়ঙ্কর রক্তচক্ষু মেলে প্রচণ্ড রকম দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।

    রাজপুত্র প্রম্পেররা তখন প্রাচীরবেষ্টিত মঠ-চত্বরে হাজার পারিষদদের আনন্দ দানের উদ্দেশ্যে অভাবনীয় জাঁকজমকপূর্ণ নামকরা এক মুখোশধারী দলের বল-নাচের ব্যবস্থা করলেন।

    মুখোশধারী দলর সমবেত বল-নাচের আসরে জাঁকজমক আর হৈ-হল্লাতে ভরপুর এক বিলাসবহুল দৃশ্য সৃষ্টি করা হয়েছে।

    কিন্তু একই সঙ্গে তো আর মঠের সবকটা ঘরের মনোরঞ্জনের ব্যবস্থাদির বিবরণ দেওয়া সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়েই যে সব ঘরে নাচের আসর জমজমাট হয়ে উঠেছে। সে বিবরণই আগে দিচ্ছি।

    ঘরের সংখ্যা সাত। প্রতিটা ঘরই রাজকীয় কায়দায় মনোরম করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে।

    বহু রাজপ্রাসাদেই এরকম ঘরগুলো পাশাপাশি লম্বা সারিবদ্ধভাবে অবস্থান করে আর সাজানোও থাকে চমৎকারভাবেই।

    ঘরগুলোর দরজা এমন কায়দায় তৈরি যে, সেগুলোকে খুলে দেওয়ামাত্র দুদিকের দেওয়ালের গায়ে গায়ে সেঁটে যায়। ফলে কেবলমাত্র খুব যে শোভন হয় তাই নয়, জায়গাও নষ্ট হয় খুবই কম। আর এতে ঘরের পুরো দৃশ্যটা দেখতে সামান্যতম অসুবিধাই হয় না।

    এ মঠের ব্যবস্থাদি কিন্তু সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ধরনের। রাজপুত্রের আকর্ষণ অদ্ভুত কোনোকিছুর প্রতি অনুরাগ যা আশা করা যেতে পারে। এমন অগোছালভাবে ঘরগুলো তৈরি আর সাজানো যে এক সঙ্গে তাদের একটার বেশি অন্য কোনো ঘরের ভেতরের দৃশ্য দেখার সামান্যতম সুযোগও নেই।

    এখানকার আর যা-কিছু লক্ষ্যণীয় তা হচ্ছে, প্রতি বিশ বা ত্রিশ গজ দূরে দূরে একটা করে খাড়া বাঁক গড়ে রোখা হয়েছে, যার জন্য প্রত্যেক বাঁকে অদ্ভুত ফল হয়েছে। বাঁ আর ডাইনের প্রত্যেক দেওয়ালের গায়ে একটা করে লম্বা ও সরু জানালা বসানো রয়েছে। এগুলোতে গণিক শিল্প-কৌশল অবলম্বিত হয়েছে। আর এগুলো এমনভাবে বসানো হয়েছে যে, প্রত্যেক জানালার পিছনে একটা করে বদ্ধবারান্দা ঘরগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি করা হয়েছে। আর জানালাগুলোতে রঙিন কাঁচ বসানো। আরও একটা ব্যাপার লক্ষ্যণীয় যে, ঘরের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে মিলিয়ে জানালাগুলোর কাঁচের রং নির্বাচন করা হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে একেবারে পূব দিককার ঘরটার কথা বলা যেতে পারে–ঘরটার ভেতরে নীল রং করা, তাই জানালায় রঙের ব্যবহার করা হয়েছে নীল রঙের কাঁচ।

    আর দ্বিতীয় ঘরটার পর্দা থেকে শুরু করে সবকিছুর রং লাল। তাই জানালার কাঁচের রংও লাল রক্তের মতো গাঢ় লাল।

    আর তৃতীয় ঘরটার সবকিছুই সবুজাভ, তাই জানালায় ও সবুজ কাঁচ লাগানো হয়েছে। চতুর্থ ঘরটার ভেতরের সবকিছুই সবুজ রংবিশিষ্ট তাই জানালার কাঁচ সবুজই।

    চতুর্থ ঘরের রং এবং অন্যান্য যাবতীয় সাজসজ্জা কমলা রংয়ের, জানালাও তাই। পঞ্চম ঘরের যাবতীয় রং ও ভেতরের অন্যান্য সবই সাদা, জানালার কাঁচও সাদাই ব্যবহার করা হয়েছে। আর ষষ্ঠ ঘর জানালার কাঁচসহ সবকিছু সাদা।

    আর সপ্তম ঘরটার কালো রংয়েরই একাধিপত্য লক্ষিত হয়। এর সিলিং থেকে নেমে-আসা কালো ভেলভেটের পর্দা দিয়ে দেয়ালগুলো মুড়ে দেওয়া হয়েছে। আর সেগুলো মেঝের কালো কার্পেটের ওপর চমৎকারভাবে ভাঁজ হয়ে পড়ে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। আর বসার আসন থেকে শুরু করে ঘরে আর যা-কিছু আছে সবই কালো। কিন্তু ব্যতিক্রম কেবলমাত্র জানালার কাঁচগুলোতে। এগুলো নিয়মমাফিক কালো না হয়ে গাঢ় লাল রং বিশিষ্ট।

    এ সাতটা ঘরের মেঝেতে হরেক রকম জিনিসপত্র আবার ছাদ থেকে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে প্রচুরসংখ্যক সোনালি রঙের প্রলেপ দেওয়া অনেক কিছু। কিন্তু কোনো ঘরেই বাতিদান নেই। ফলে কোনো ঘরের ভেতরের জ্বলন্ত মোমবাতির আলো জানালার রঙিন কাঁচ ভেদ করে উঁকি দিচ্ছে না বা বাইরে এসে লুটিয়ে পড়ছে না।

    তবে প্রতিটি জানালার পিছন দিককার বারান্দায় একটা করে ভারী তে-পায়া রাখা আছে। তাদের প্রতিটার ওপর রক্ষিত চুল্লি থেকে ঠিকরে বেরিয়ে-আসা আলোক ছটা রঙিন কাঁচ ভেদ করে ঘরের ভেতরের সবকিছু গায়ে আভা ছড়িয়ে দিয়ে উদ্ভাসিত করেছে। এভাবে সম্পূর্ণ বাড়িটা বিচিত্র রঙে নিজেকে সাজিয়ে তুলেছে।

    এ তো গেল পশ্চিম দিকের বা কালো ঘরটা ছাড়া অন্যান্য ঘরগুলোর বিবরণ। কিন্তু কালো ঘরটার চুল্লি থেকে ঠিকরে বেরিয়ে আসা আলোকচ্ছটার ফল দাঁড়িয়েছে সম্পূর্ণ অন্যরকম।

    লাল রংয়ের কাঁচ ভেদ করে চুল্লির আলো ঠিকরে বেরিয়ে এসে ঘরের ঝুলন্ত যাবতীয় আসবাব পত্রের ওপর পড়ার ফলে এক অলৌকিক রংয়ের উদ্ভব হয়েছে। শুধু কি এ-ই? যারাই এ ঘরে ঢুকছে, তাদের মুখের ওপরই সে আলোকচ্ছটা পড়ায় এমন অমানবীয় দৃশ্যের অবতারণা করেছে যা প্রত্যক্ষ করে অন্য কেউ-ই সে ঘরে ঢুকতে উৎসাহি হচ্ছে না, কারো সাহসে কুলাচ্ছে নাও বলা যেতে পারে।

    আর সে ঘরটার পশ্চিমের দেয়ালটার গায়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে আবলুস কাঠের সুবিশাল একটা ঘড়ি। কুচকুচে তার রং। অনবরত টিটিক আওয়াজ করে তার পেন্ডুলামাটা এদিক-ওদিক দুলেই চলেছে। মিনিটের কাটাটা ঘুরতে ঘুরতে এক ঘণ্টা পর পর যখন ঘড়িটা বেজে উঠছে, সে মুহূর্তেই তার ধাতব গর্ভস্থল থেকে বেরিয়ে আসছে গুরুগম্ভীর কিন্তু সুরেলা ধ্বনি।

    কিন্তু ঘড়িটার মিষ্টি মধুর সুরেলা ধ্বনিটার তাল ও তীব্রতা এমনই আকর্ষণীয় যে প্রতি এক ঘণ্টা পর পর অর্কেস্ট্রা বাদ্যকররা সে মনোলোভা ধ্বনি শোনার জন্য বাজনা বন্ধ করে উকৰ্ণ হয়ে থাকে। আর বাজনা বন্ধ করার জন্য, লোভনীয় আওয়াজটা শোনার জন্য আগ্রহান্বিত হয়ে নাচ থামিয়ে থমকে আচমকা দাঁড়িয়ে না পড়ে পারে না। তাই আনন্দপ্রিয় বাজনা আর নাচ-গানের সম্পূর্ণ দলটাই কয়েক মুহূর্তের জন্য হলেও তাল হারিয়ে না ফেলে পারে না।

    ঠিক তখনই অকল্পনীয় একটা ব্যাপার ঘটতে দেখা যায়। ঘড়িটা তখনও সমান তালে বাজতেই থাকে। তখনই চোখে পড়ে যাদের মধ্যে চাঞ্চল্য, ছিল তাদের মুখে যেন হঠাই কেমন চকের মতো ফ্যাকাশে ছাপ ফুটে ওঠে। আর সে মুহূর্তেই বুড়ো আর অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা জ্বতে আঙুল বুলাতে আরম্ভ করে। তাদের বাব দেখে মনে হয় তারা যেন দিবাস্বপ্নে বিভোর হয়ে পড়েছে, নইলে ধ্যানমগ্ন হয়ে রয়েছে।

    বাদ্যকররা নিজেদেরনির্বুদ্ধিতা এবং স্নায়ুবিক দুর্বলতাবশত একে অন্যের মুখের দিকে তাকিয়ে ফিক ফিক্‌ করে হাসে আর অনুচ্চ কণ্ঠে পরস্পরের কাছে প্রতিজ্ঞা করে–ঘড়িটা যখন পরবর্তীকালে আবার বেজে উঠবে তখন তারা কিছুতেই যেন এমন বেহাল হয়ে পড়ে, কিছুতেই না। কিন্তু মাত্র ষাট মিনিট, যা উড়ে যাওয়ার সময়ের তিন হাজার দুশো সেকেন্ডের সমান সময় পার হওয়া মাত্র আবার যখন ঘড়িটার ঘণ্টাধ্বনি হতে শুরু করে তখনই চোখে পড়ে আগের মতোই বে-সামাল, চঞ্চল, শরীর দোলানি, দিবাস্বপ্নে বিভোর আর ধ্যান-ধ্যানভাবে সবাই নিজেদের ডুবিয়ে দিয়েছে।

    কিন্তু এত কিছু করার ফলেও সে নাচ-গান-বাজনা আর হৈ চৈ আনন্দ ফুর্তির আসরটা আগের মতোই আনন্দোচ্ছল হয়ে উঠল।

    আসরটার পরিকল্পনা অকল্পনীয় দুঃসাহসিকতা আর অগ্নিময়তায় ভরপুর। তার ভাবগতিতে একটা বল্গাহীন বর্বরতা প্রকাশ পাচ্ছে।

    এমনও হতে পারে, কেউ তাকে পাগল, বদ্ধ পাগল ভাবছে। তা হোক গে, তার অনুচররা তো আর ভুলেও এটা ভাবে না।

    একটা কথা, তার যে মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটেনি, পাগল হয়ে পড়েননি, এ ব্যাপারে নিসন্দেহ হতে হলে তার কথা শুনতে হবে, চোখের সামনে দেখতে হবে আর তাকে ছুঁতে হবে। অন্যথায় তার সম্বন্ধে সবকিছু ভালোভাবে জানা কিছুতেই সম্ভব নয়।

    এ জাঁকজমকপূর্ণ উৎসব অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে এ সাতটা ঘরের অস্থাবর সাজ সরঞ্জামগুলোকে এদিক-ওদিক সরানো হয়েছে।

    রাজপুত্রের মর্জি আর মার্জিত রুচি অনুযায়ী অনুষ্ঠানটি পরিচালনার উকর্ষতার জন্যই মুখোশধারীদের আচার আচরণে নতুনতর বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পাচ্ছে।

    সত্যি করে বললে অস্বীকার করার উপায় নেই যে, মুখোশধারীরা সবারই চেহারা, বিশেষ করে মুখাবয়ব খুবই কদাকার। তাদের চেহারায় ঔজ্জ্বল্য, চটক, তীব্রতা আর অলৌকিকতা মধ্যে যা-কিছু লক্ষিত হয়েছিল তার অধিকাংশ বর্তমান। আর সে সঙ্গে অদ্ভুত আর বিশেষ সাজসজ্জাও রয়েছে। আর এমন বহু উন্মাদসুলভ চিন্তা-ভাবনার খেলা চোখে পড়ে যা কেবলমাত্র বিকৃত মস্তিষ্কদের পক্ষে করা সম্ভব।

    আরও আছে। এখানে এমন বহু চমঙ্কার, বহু কামপরায়ণ, বহু কিছু কদাকার, একটু আধটু মারাত্মক, আর বিরক্তি উদ্রেককারী যা-কিছু বর্তমান তাকেও নগণ্য জ্ঞান। করা যায় না।

    একের পর এক করে সাত-সাতটা ঘরময় অগণিত স্বপ্ন যেন অনবরত চক্কর মেরে বেড়াচ্ছে। আর এসব স্বপ্নরা হেলেদুলে নেচে নেচে এ-ঘর থেকে ও-ঘরে যাতায়াত করছে। নানা ঘরের রংয়ের প্রলেপ গায়ে মেখে। আর বার বারই যেন মনে হচ্ছে।

    অর্কেস্ট্রার উন্মত্ত সুরগুলো হয়তো বা তাদেরই পদচারণার প্রতিধ্বনি।

    ওই ওই যে, ভেলভেটের চাদরে মোড়া হলঘরটার দেয়ালে ঝোলানো আবলুস কাঠে মিশমিশে কালো ঘড়িটা ঢং ঢং আওয়াজ করে বাজবে। ব্যস, আওয়াজটা বন্ধ হতেই মুহূর্তের জন্য সবকিছু একেবারে স্তব্ধ–শুনশান। একমাত্র ঘড়িটার টিক্ টিক্‌ আওয়াজ ছাড়া আর কোনো শব্দই নেই।

    স্বপ্নগুলো নিশ্চল হয়ে পড়েছে, যেন জমাটবাঁধা বরফের মতো স্তব্ধ। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যেই ঘড়িটার ওই টিক্ টিক্ শব্দের প্রতিধনি মিলিয়ে গেল। পর মুহূর্তেই সে প্রতিধ্বনিটাকে অনুসরণ করে, তাকে পিছনে ঠেলে দিয়ে একটা চাপা হাসি যেন বাতাসের কাঁধে ভর দিয়ে এগিয়ে এলো ধীরে ধীরে একইভাবে ভাসতে ভাসতে দূরে, শ্রুতির বাইরে চলে গেল।

    অর্কেস্ট্রা বাদকরা আবার সক্রিয় হল, আবার বাজনা বেজে উঠল। স্বপ্নগুলো এক এক করে মাথা চাড়া দিয়ে উঠল।

    তেপায়ার চুল্লির আলোর অদ্ভুত স্রোতে স্বপ্নগুলো মাখামাখি হয়ে হেলেদুলে উল্লসিত পদচারণার মাধ্যমে এ-ঘর থেকে ও-ঘরে ঘুরে বেড়াতে লাগল।

    মুখোশধারীরা এক-এক করে সবগুলো ঘরেই গেল। কিন্তু পশ্চিম দিককার একেবারে শেষ প্রান্তের ঘরটায় কেউই ঢুকতে সাহসি হলো না। রক্তিম কাঁচ ভেদ করে অত্যুজল লাল আলোর রেখা ঠিকরে বেরিয়ে আসছে। দোদুল্যমান কালো পর্দাগুলো ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। অদূরবর্তী আবলুস কাঠের ঘড়িটা থেকে যে শব্দ কানে এসে বাজছে, সেটা দূরবর্তী অন্য সব ঘরের তুলনায় এ-ঘরটায় ঢুকছে অনেক, অনেক বেশি গুরুগম্ভীর আওয়াজ হয়ে তার কানে বাজছে।

    অন্যান্য ঘরগুলো কিন্তু মানুষের ভিড় উপচে পড়ছে, তিল ধারণের জায়গাটুকু পর্যন্ত নেই। সে সব ঘরে প্রাণের স্পন্দন সবচেয়ে তীব্র সুরে বেজে চলেছে।

    আনন্দোল্লাস যখন একনাগাড়ে একই তালে চলছে ঠিক তখনই আবলুস কাঠের ঘড়িটায় ঢং ঢং করে মাঝ রাতের ঘণ্টা বেজে উঠল।

    ব্যস, আর এক মুহূর্তও নয়, সঙ্গে সঙ্গে বাদ্যকররা বাজনা থামিয়ে দিল। পায়ের তালে তালে আওয়াজ করে করে ওয়ালেজ নাচনেওয়ালিদের পায়ের তাল থেমে গেল। শুধু কি এই? অস্বস্তিকর আর যা-কিছু সবই মুহূর্তের মধ্যেই থেমে গেল।

    এবার ঘড়িটা ঘণ্টাধ্বনির মাধ্যমে বারোটা বাজার কথা ঘোষণা করতে লাগল।

    এদিকে হৈ হুল্লাকারীদের মধ্যে যারা একটু বেশিমাত্রায় ভাবুক তাদের মাথায় ঢুকল আরও বেশি চিন্তা, আর সেগুলো জট পাকাতে লাগল।

    এভাবে ঘড়িটার শেষ ধ্বনিটার প্রতিধ্বনিটা একেবাওে নিঃশেষ মিলিয়ে যাবার আগেই ভিড় করে অবস্থানরত লোকগুলোর মধ্য থেকে কয়েকজনের দৃষ্টি এমন এক মুখোশধারীর ওপর পড়ল যাকে ইতিপূর্বে কেউই কোনোদিন দেখেনি।

    এ নতুন মুখোশধারীর কথা মুখে-মুখে সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ামাত্র একটা চাপা ফিসফিসানি শুরু হয়ে গেল, যা শেষপর্যন্ত ভয়ানক ভয়, তীব্র আতঙ্ক আর অভাবনীয় বিরক্তির উচ্ছ্বাসে পরিণত হয়ে গেল। সংক্ষেপে যাকে ঘোরতর আপত্তি আর বিস্ময়ের হৈ হুল্লা আখ্যা দেওয়া যেতে পারে।

    সত্যি কথা বলতে কি, সে রকমের অলৌকিক সমাবেশের বর্ণনা আমি তুলে ধরেছি তাতে সহজেই অনুমান করা যেতে পারে যে কোনো সাধারণ মানুষের উপস্থিতি লোগুলোকে এত বেশি আতঙ্কিত ও উত্তেজিত করে তুলতে কিছুতেই সক্ষম হত না।

    আসল ব্যাপারটা হচ্ছে, মুখোশধারী নাচের আসরে যোগদান করে আনন্দোল্লাস করার জন্য দিল খোলসা করে অনুমতি দেয়া হয়। কিন্তু অপরিচিত মুখোশধারী নাচিয়েটা রাজপুত্রের নির্ধারিত বিধি-নিষেধকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সবাইকে ডিঙিয়ে চলে গেল। ব্যাপারটা উপস্থিত দলের সবাই অনুভব করল, পোশাক পরিচ্ছদ আর আচার আচরণ কোনো দিক থেকেই নতুন মুখোশধারী লোকটা বুদ্ধিসত্তা বা ভদ্রতার কোনো পরিচয়ই দিতে পারেনি।

    মুখোশধারী নবাগত লোকটা ছিপছিপে লম্বা, আর তার পা থেকে মাথা অবধি সারা দেহ কবরের পোশাকে মোড়া। যে পোশাক-পরিচ্ছদ সে নিজেকে ঢেকে নিয়েছে সেটা এত বেশি শক্ত দেখাচ্ছে যার একমাত্র তুলনা চলতে পারে মড়ার মুখের সঙ্গে, যেটাকে খুব ভালো করে লক্ষ্য না করলে কিছুতেই বোঝার জো নেই। খুবই কষ্টকর।

    তা সত্ত্বেও আনন্দোচ্ছল হৈ হুল্লাকারী মানুষগুলো হয়তো সবকিছুই বরদাস্ত করেনিত। কিন্তু ইতিমধ্যেই মুখে মুখে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে যে, নবাগত এ মুখোশধারীই ‘লাল মৃত্যু। নবাগত মুখোশধারীকে লাল-মৃত্যু ভাববার কারণও রয়েছে যথেষ্টই। তার পোশাক পরিচ্ছদে রক্ত মাখামাখি, ইয়া বড় চোখের ওপরে চওড়া জ্ব। নাক-মুখ সবকিছুতেই রক্তিম আতঙ্কের ছাপ সুস্পষ্ট। মুহূর্তের জন্য চোখ ফেরালেই গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে, বুকের ভেতরে শুরু হয়ে যায় ঢিবঢিবানি।

    নবাগত মুখোশধারী বাজখাই গলায় গর্জে উঠল-কার এত স্পর্ধা!’ আমাকে এমন অপবিত্র উপহাসের মাধ্যমে অপমান করার মতো এতবড় বুকের পাটা কার, জানতে চাই। তাকে ধর, জোর করে মুখোশটা খুলে ফেল। আমরা তার মুখটা একবার দেখতে চাই। তাকে চিনতে চাই, কাল সূর্য ওঠার আগেই তাকে ফাঁসির দড়িতে লটকে দিতে হবে। ধর তাকে, মুখোশটা খুলে ফেল।’

    পূর্ব দিকের, নীল রং বিশিষ্ট ঘরে দাঁড়িয়ে রাজপুত্র বজ্রগম্ভীর স্বরে কথাগুলো ছুঁড়ে দিলেন। তার তীব্র কণ্ঠস্বর সাতটা ঘর থেকেই স্পষ্ট শোনা গেল। কারণ রাজপুত্র দুর্দান্ত সাহসি, আর গায়ে শক্তিও ধরে যথেষ্টই। আর তার হাতের ইশারায় মুহূর্তের মধ্যেই যাবতীয় বাজনা বন্ধ–স্তব্ধ হয়ে গেছে। টু-শব্দটিও কারো মুখে নেই।

    নীল-ঘরটায় রাজপুত্রের পাশে একদল পারিষদ বিমর্ষমুখে দাঁড়িয়ে। তাদের কারো মুখেও কোনো কথা নেই,নির্বাক-নিস্পন্দ।

    রাজপুত্রের মুখের হুকুমটা শোনামাত্র একদল লোক তীব্র আক্রোশে নবাগত মুখোশধারীর দিকে তেড়ে গেল। সে-ও অদূরেই দাঁড়িয়ে রয়েছে। সে এবার লম্বা লম্বা পায়ে রাজপুত্রের কাছে এগিয়ে এসে একেবারে কাছাকাছি চলে এলো।

    দলের কিছু লোক রাজপুত্রের হুকুমে তার দিকে তীব্র আক্রোশে তেড়ে গেল বটে, কিন্তু কাছে যেতেই সবাই অজানা আতঙ্কে রীতিমত মিইয়ে গেল। ফলে তার গায়ে হাত দিতেই কারোরই সাহসে কুলালো না।

    আর এরই ফলে সে বিনা বাধায় আরও দু পা এগিয়ে একেবারে রাজপুত্রের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে পড়ল। উভয়ের ব্যবধান মাত্র এক গজ।

    পরিস্থিতি প্রতিকূল বিবেচনা করে উপস্থিত পারিষদরা চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ এঁকে এক সঙ্গে ঘরের মাঝখান থেকে যন্ত্রচালিতের মতো পিছাতে পিছাতে একেবারে দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে বুকে জমাটবাঁধা আতঙ্ক নিয়ে প্রতিটা মুহূর্ত কাটাতে লাগল। আর নবাগত মুখোশধারী তখন নির্বিবাদে দৃঢ় পদক্ষেপে নীল রংয়ের ঘর থেকে বেরিয়ে লাল রংয়ের ঘরে, লাল রংয়ের ঘর থেকে সবুজ রংয়ে, সবুজ রংয়ের ঘর থেকে কমলা রংয়ের ঘরে ঢু মারল। তারপর সেখান থেকে বেরিয়ে বীরদর্পে সাদা রংয়ের ঘরে, তারপর এমনকি বেগুনি রংয়ের ঘরটা ঘুরে সে আরও এগিয়ে চলল।

    কিন্তু কার্যত দেখা গেল রাজপুত্রের হুকুম তামিল করতে কেউই তাকে বন্দি করা তো দূরের ব্যাপার, এমনকি এক পা এগোতেও সাহসি হলো না।

    ব্যাপারটা যা-ই ঘটুক না কেন, ঠিক সে মুহূর্তেই রাজপুত্র প্রস্পেরো নিজের আকস্মিক ও সাময়িক ভীতি, রাগ ও লজ্জায় মিইয়ে গিয়ে একের পর এক করে ছয় ছয়টা ঘরের ভেতর দিয়ে ছুটোছুটি করতে লাগলেন।

    পরিস্থিতি সুবিধার নয় দেখে ভীত-সন্ত্রস্ত পারিষদদের কেউ-ই রাজপুত্রের সঙ্গনিল । তারা সে ঘরটায় দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে আগের মতোই পরমাধ্যকে স্বরণ করতে লাগল।

    নবাগত মুখোশধারী আগের মতোই বীরদর্পে এগিয়ে চলল। এদিকে রাজপুত্র সুতীক্ষ্ম লকলকে ছুরি হাতে মুঠো করে ধরে লম্বা লম্বা পায়ে এগিয়ে তার তিন চারফুটের মধ্যেই পৌঁছে গেলেন।

    ইতিমধ্যে নবাগত মুখোশধারীও ভেলভেটের পর্দায় মোড়া ঘরটার একেবারে শেষপ্রান্তে হাজির হয়ে আচমকা ঘুরে দাঁড়িয়ে পড়ল। আর অনুসরণকারীরা রাজপুত্রের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে পড়ল।

    ব্যস, মুহূর্তে তার কান্নার স্বর উত্থিত হল। আর তার হাতের ছুরিটা কালো কার্পেটের ওপর দুম্ করে আছড়ে পড়ল। তার ওপর চুল্লির অত্যুজ্জ্বল আলোকচ্ছটা পড়ে রীতিমত ঝলমল করতে লাগল।

    মুহূর্তের মধ্যেই রাজপুত্ৰ প্ৰম্পেররা-র দেহটা নিষ্ঠুর মৃত্যুর কোলে এলিয়ে পড়ল।

    পরিস্থিতি খারাপ দেখে ঠিক সে মুহূর্তেই আনন্দোল্লাসকারীদের পুরো দলটা অন্তহীন হতাশা আর হাহাকার সম্বল করে উন্মাদের মতো সাহসে ভর করে তীব্র আক্রোশে হুড়মুড় করে কালো ঘরটায় ঢুকে পড়ল। তারপর সবাই রাগে গ গস্ করতে করতে নবাগত মুখোশধারীকে জাপ্টে ধরে ফেলল। দীর্ঘদেহ অমিত শক্তিধর লোকটা আবলুস কাঠের কুচকুচে ঘড়িটার ছায়ায় অটল অনড়ভাবে দাঁড়িয়ে রইল,

    আর ক্রোধোন্মত্ত আক্রমণকারীরা অনুসন্ধিৎসু নজরেনিরিখ করে যখন বুঝতে পারল যে, কবরের কালো পোশাক পরিচ্ছদে আবৃত দেহ আর মড়ার মুখোশে ঢাকা মুখের মালিককে তারা সবাই মিলে এমন ঠেসে ধরেছে, এমন নির্মম-নিষ্ঠুরভাবে চেপে ধরেছে যা দেখে সবাই তো বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যাবার যোগাড় হল। তারা নিঃসন্দেহ হলো কবরের পোশাক আর মুখোশের আড়ালে সত্যিকারের ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য’ দেহের লেশমাত্রও নেই। ব্যাপারটা বোঝামাত্র সবাই নীরব আতঙ্কে বাশক্তি হারিয়ে ফেলল। কারো ভেতরে টু-শব্দটি করার মতোও ক্ষমতা নেই।

    অত্যাশ্চর্য লোকটার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সবাই বুঝতে পারল–সম্পূর্ণ নিঃসন্দেহ হলো দীর্ঘাকৃতি কালো কবরের পোশাক আর মড়ার মাথার খুলির মুখোশের আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রাখা লোকটার নির্ঘাৎ ‘লাল-মৃত্যু।

    রাতের অন্ধকারে চোরের মতো সন্তর্পণে সে এখানে হাজির হয়েছে।

    মুহূর্তের মধ্যে অবিশ্বাস্য ভয়ঙ্কর একটা ব্যাপার ঘটতে লাগল। আনন্দোল্লাসকারীরা একে একে রক্তাপুত মেঝের ওপর আছড়ে পড়তে লাগল। আর পড়ামাত্রই সবাই নিষ্ঠুর মৃত্যুর শিকার হয়ে পড়ল।

    সব শেষের পারিষদটার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ামাত্রই আবলুস কাঠের কুচকুচে ঘড়িটার প্রাণ-বায়ুও খাঁচাছাড়া হয়ে গেল। আর সে সঙ্গে তেপায়ার ওপরের চুল্লির আগুন নিভে যাওয়ায়, আলোকচ্ছটাও দুম্ করে নিভে গেল! অন্ধকারের কালো পর্দা সবার ওপর ছড়িয়ে পড়ল। ধ্বংস আর ‘লাল-মৃত্যু-র শাসনদণ্ড। আর সে সঙ্গে অবসান ঘটল যাবতীয় আতঙ্ক–মৃত্যুভয়।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleগোল্ডেন লায়ন – উইলবার স্মিথ / জাইলস ক্রিস্টিয়ান
    Next Article লাভ ক্যান্ডি – জাফর বিপি
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025
    Our Picks

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025

    ওডিসি – হোমার

    October 13, 2025

    প্রেমের প্রান্তে পরাশর – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    October 13, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }