Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    অ্যানিমেল ফার্ম – জর্জ অরওয়েল

    জর্জ অরওয়েল এক পাতা গল্প95 Mins Read0

    অ্যানিমেল ফার্ম – ১

    এক

    ‘ম্যানর ফার্মের’ মালিক মি. জোনস মাতাল অবস্থায় মুরগির খাঁচার দরজা বন্ধ করলেন। কিন্তু পপ-হোলগুলো বন্ধ করতে ভুলে গেলেন, লণ্ঠন হাতে টলতে টলতে রান্নাঘরের মদের পিপে থেকে এক গ্লাস বিয়ার ঢেলে রওনা হলেন শোবার ঘরের দিকে। মিসেস জোনস তখন বিছানায় নাক ডাকাচ্ছেন।

    শোবার ঘরের আলো নিভতেই সারা খামার জুড়ে শুরু হলো চিৎকার আর ডানা ঝাপটানোর শব্দ। ক’দিন আগে খামারের বুড়ো শুয়োর মেজর একটা স্বপ্ন দেখেছে। সে তার স্বপ্নের কথা জন্তুদের শোনাতে চায়। ঠিক হয়েছে মি. জোনসকে কোনমতে ফাঁকি দিতে পারলেই সবাই বার্নে সমবেত হবে। বুড়ো মেজরকে (এই নামেই সে সবার কাছে পরিচিত, কিন্তু সে প্রদর্শনীতে নামত ‘উইলিংডন সুন্দরী’ নামে) সবাই শ্রদ্ধার চোখে দেখে। তাই রাতের এক ঘণ্টা ঘুম কামাই করে তার কথা শুনতে কেউ অমত করেনি।

    বার্নের শেষ মাথায় উঁচুমত একটা প্ল্যাটফর্ম, তার ওপরে কাঠের বরগার সাথে বাঁধা একটা লণ্ঠন। লণ্ঠনের নিচে খড় বিছিয়ে মেজরের জন্য বিছানা তৈরি হলো। মেজরের বয়স বারো, বয়সের সঙ্গে একটু মুটিয়ে গেছে দেহ। কিন্তু এখনও সে যথেষ্ট সুন্দরী, সব সময় চুপচাপ থাকে বলে বিজ্ঞ মনে হয় তাকে। জন্তুরা একে একে বার্নে জড়ো হতে শুরু করল। নিজ নিজ ভঙ্গিতে আরাম করে বসল সবাই। প্রথমে এল তিনটে কুকুর-–ব্লুবেল, জেসী আর পিনশার। এরপর এল শুয়োরের দল, তারা দখল করল মেজরের সামনের খড় বিছানো জায়গা।

    মুরগিরা বসল উইণ্ডোসিলে, কবুতরগুলো ছাদের বরগায় বসে ডানা ঝাপটাতে লাগল। ভেড়া আর গরুর পাল শুয়োরদের পেছনে শুয়ে জাবর কাটতে শুরু করল। লাঙ্গলটানা ঘোড়া বক্সার আর ক্লোভার এসে খুব সাবধানে বিশাল পা গুটিয়ে বসল যাতে খড়ের ভেতর লুকিয়ে থাকা খুদে কোন প্রাণী ব্যথা না পায়। ক্লোভার মাঝবয়সী মোটাসোটা মাদী ঘোড়া, তবে চতুর্থ শাবকটি প্রসবের পর সে বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছে। বক্সার বিশাল দেহী, যে কোন ঘোড়ার চেয়ে দ্বিগুণ শক্তি ধরে দেহে। নাকের ওপর সাদা দাগটা তার চেহারায় বোকা বোকা ভাব এনে দিয়েছে।

    তার বুদ্ধিশুদ্ধিও আসলে তেমন নেই, কিন্তু পরিশ্রমী আর দৃঢ় চরিত্রের বলে তার সুনাম আছে। ঘোড়াদের পরে এল সাদা ছাগল মুরিয়েল, এল গাধা বেনজামিন। বেনজামিন এই খামারের সবচেয়ে পুরানো আর বদরাগী জন্তু। সে কথা বলে কম, এবং যা বলে তার সবটাই প্যাঁচালো। সে বলে, ঈশ্বর তাকে লম্বা লেজ দিয়েছেন মাছি তাড়াবার জন্য।

    কিন্তু শিগগিরই তার কোন লেজ থাকবে না এবং কোন মাছিও থাকবে না। সে কখনও হাসে না, বলে—হাসার কোন কারণ দেখে না। স্বীকার না করলেও বোঝা যায়, বক্সারকে সে পছন্দ করে। রোববারে তারা দু’জনে পেছনের জমিতে নিঃশব্দে চরে বেড়ায়। মা হারা একদল হাঁসের বাচ্চা দুর্বল গলায় ডেকে ডেকে ডানা ঝাপটাচ্ছিল আর এদিক-সেদিক তাকিয়ে একটা নিরাপদ জায়গা খুঁজছিল, যেখানে বসলে কেউ তাদের মাড়িয়ে দেবে না।

    বক্সার তার বিশাল পা দিয়ে একটা দেয়াল বানিয়ে দিল। হাঁসের বাচ্চারা সেই দেয়ালের ভেতর এসে বসল এবং অল্পক্ষণের মধ্যেই ঘুমিয়ে গেল। এরপর এল মলি, বোকা-সুন্দরী ঘোড়া; তাকে মি. জোনস ফাঁদ পেতে ধরেছিলেন। সে এল সুস্বাদু চিনির দলা চুষতে চুষতে। সামনের দিকে বসে আনমনে ঘাড়ের কেশর দোলাতে লাগল, যাতে সবাই তার ঘাড়ের সুন্দর লাল ফিতেটা দেখতে পায়।

    সবশেষে এল বেড়াল, স্বভাব মত চারদিকে তাকাল একটা উষ্ণ জায়গার খোঁজে। তারপর বক্সার ও ক্লোভারের মাঝখানের জায়গাটুকুতে চেপে বসল। মেজরের বক্তৃতা শোনার বদলে সে অনবরত মিউ মিউ করে চলল।

    পোষা দাঁড় কাক মোজেস ছাড়া সবাই এসে গেছে। সে ঘুমাচ্ছিল দরজার ওপর বসে। মেজর দেখল, সবাই উপস্থিত। সে গলা খাঁকারি দিয়ে শুরু করল, ‘বন্ধুরা, তোমরা সবাই আমার স্বপ্নটার কথা শুনেছ। স্বপ্নটার কথা আমি পরে বলব, তার আগে আরও কিছু কথা বলার আছে। আমার আয়ু ফুরিয়ে এসেছে, মৃত্যুর আগে আমার একমাত্র কর্তব্য হলো নিজের জ্ঞান সবার মাঝে বিলিয়ে যাওয়া। দীর্ঘ একটা জীবন যাপন করেছি আমি, অবসর সময়ে প্রচুর চিন্তা ভাবনা করেছি। জন্তুদের জীবন-যাপনের প্রকৃতি নিয়ে আমি আজ তোমাদের কিছু বলতে চাই।

    ‘বন্ধুরা, আমাদের জীবনটা কেমন? আমাদের জীবনটা হলো দুঃখ কষ্টে পরিপূর্ণ, আর আমাদের আয়ুও খুব কম। জন্মের পর শুধুমাত্র বেঁচে থাকার জন্য ন্যূনতম খাদ্য পাই আমরা। সেই খাদ্যের বিনিময়ে মানুষেরা আমাদের দিয়ে সাধ্যের অতিরিক্ত কাজ করিয়ে নেয়। কাজ করার শক্তি ফুরিয়ে গেলে কসাই খানায় বিক্রি করে দেয়। ইংল্যাণ্ডের কোন জন্তুই জন্মের একবছর বয়সের পর থেকে সুখের মুখ দেখে না। আমাদের জীবন কেবল কষ্টের—এই হলো আসল সত্য।

    ‘কিন্তু এটাই কি প্রকৃতির নিয়ম? ইংল্যাণ্ডের জমি কি এতই অনুর্বর যে, মানুষের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের যোগান দিতে পারে না? না, বন্ধুরা। আসল ব্যাপার তা নয়, ইংল্যাণ্ডের মাটি উর্বর, আবহাওয়া চমৎকার, আমাদের প্রয়োজনের চেয়ে অনেক গুণ বেশি খাদ্য উৎপাদনের ক্ষমতা রাখে এই মাটি। এই ফার্মেই একডজন ঘোড়া, বিশটা গরু, শ’খানেক ভেড়াকে আরও অনেক আরামে রাখা যায়; যা কল্পনারও অতীত। তবে কেন আমরা এত কষ্ট করব? আমাদের শ্রমে উৎপন্ন শস্যের সবটুকুই গ্রাস করে মানুষেরা। এক কথায় বলা যায়, মানুষ—মানুষই হচ্ছে আমাদের একমাত্র শত্রু। মানুষকে সরিয়ে দাও, তাহলেই আর কোন খিদে-কষ্ট থাকবে না।

    ‘মানুষই একমাত্র জীব, যারা কোনরকম পরিশ্রম না করেই সুখে দিন কাটায় মানুষ দুধ দেয় না, ডিম পাড়ে না, লাঙ্গল টানে না, এমনকি খরগোশ ধরার জন্য দ্রুত দৌড়াতেও পারে না। অথচ তারাই সবার প্রভু। অন্য জন্তুদের দিয়ে কাজ করিয়ে নিয়ে বিনিময়ে তাদের প্রাণ ধারণের জন্য সামান্য খেতে দেয়, বাকিটুকু গ্রাস করে নিজেরা। গরুদের বলছি, গত ক’বছরে তোমরা কত হাজার গ্যালন দুধ দিয়েছ? তোমাদের বাছুরদের শক্ত সমর্থ হয়ে বেড়ে ওঠার জন্য যে দুধ ব্যয় হবার কথা ছিল, কোথায় গেল সেগুলো? এর প্রতিটি ফোঁটা আমাদের শত্রুদের তৃষ্ণা মিটিয়েছে।

    ‘মুরগিরা, গত ক’বছরে তোমরা যতগুলো ডিম পেড়েছ, তার ক’টা থেকে বাচ্চা ফোটাতে পেরেছ? বাকি ডিমগুলো বিক্রি করা হয়েছে জোনস ও তার লোকদের পয়সার যোগান দিতে। এই যে, ক্লোভার, তোমার চারটে বাচ্চার কি হলো, যাদের কথা ছিল এই বুড়ো বয়সে তোমাকে সঙ্গ দেবার? এদের প্রত্যেককেই মাত্র এক বছর বয়সে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। তুমি আর কখনোই তাদের দেখতে পাবে না। ভেবে দেখো, সারাজীবন লাঙ্গল টানার বিনিময়ে তুমি কি পেলে?

    ‘এত কষ্টের জীবন যাপনের পরেও স্বাভাবিক মৃত্যু আমাদের ভাগ্যে জোটে না। নিজের কথা বলছি না, আমি হচ্ছি সৌভাগ্যবানদের একজন যারা স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পেরেছে। আমার বয়স বারো, বাচ্চা প্রায় চারশো—এটাই শুয়োরদের স্বাভাবিক জীবন। কিন্তু কোন জন্তুই শেষ পর্যন্ত কসাইদের ছুরির হাত থেকে রেহাই পায় না। তোমরা, যুবক শুয়োরেরা, আমার সামনে যারা বসে আছ, আগামী এক বছরের মধ্যেই সবাই মারা পড়বে। একই ভয়ঙ্কর পরিণতি হবে গরু, ভেড়া, মুরগি, সবার। ঘোড়া কিংবা কুকুরদের ভাগ্যেও এর চেয়ে ভাল কিছু নেই।

    ‘বক্সার, তোমার পেশী যেদিন দুর্বল হয়ে পড়বে সেদিন তোমাকেও কসাইদের কাছে বিক্রি করা হবে। তোমাকে টুকরো টুকরো করে তারা কুকুরের খাদ্য বানাবে। কুকুরেরা, তোমরা যখন বুড়ো হবে, দাঁত পড়ে যাবে, জোনস তখন তোমাদের গলায় ইট বেঁধে পুকুরে ডুবিয়ে দেবে।

    ‘বন্ধুরা, এটা কি পরিষ্কার নয়, যে আমাদের সুন্দর জীবন-যাপনের পথে একমাত্র বাধা এই মানব জাতি? শুধুমাত্র মানুষের হাত থেকে মুক্তি পেলেই আমাদের উৎপাদিত সম্পদ আমরা নিজেরা ভোগ করতে পারব। ধনী আর স্বাধীন হতে পারব। কিন্তু এখন আমাদের করণীয় কি? মানুষের সেবায় দিনরাত পরিশ্রম করে যাওয়া? না, বন্ধুরা, আমরা বিদ্রোহ করব। জানি না, কবে এই বিদ্রোহ সফল হবে, হয়তো এক সপ্তাহে, হয়তো একশো বছরে। কিন্তু আমি জানি, আমার পায়ের নিচের খড় যেমন সত্য, তেমনি বিদ্রোহও সত্য। তোমরা সজাগ হও, বন্ধুরা। জীবন যত ক্ষুদ্রই হোক, তোমাদের উত্তরসুরিদের কাছে আমার এই বার্তা পৌঁছে দিও। যাতে তারাও হাল না ছাড়ে।

    ‘বন্ধুরা, কখনও মনোবল হারিয়ো না। কোন দ্বিধা যেন তোমাদের পথে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়। মানুষের মিষ্টি কথায় ভুলো না। মানুষ ও জন্তু একে অপরের উপর নির্ভরশীল—একথা ঠিক নয়। মানুষেরা কখনও অন্যের কথা ভাবে না। যে কোন মূল্যে আমাদের একতা আর বন্ধুত্ব অটুট রাখতে হবে। সব মানুষই আমাদের শত্রু। জন্তুরা সবাই একে অপরের বন্ধু।

    এমন সময় পেছন থেকে সোরগোল শোনা গেল। চারটে ধাড়ি ইঁদুর গর্ত থেকে মাথা বের করে মেজরের বক্তৃতা শুনছিল। কুকুরগুলো দেখতে পেয়ে তাদের তাড়া করেছে। বেচারা ইঁদুরগুলো লম্বা লাফে তাদের গর্তে ফিরে গিয়ে প্রাণে রক্ষা পেল। মেজর ক্ষুর উঁচু করে সবাইকে শান্ত হতে অনুরোধ করল।

    ‘বন্ধুরা,’ বলল সে, ‘একটা ব্যাপার আমাদের এখনই মীমাংসা করতে হবে। বুনো ইঁদুর, খরগোশ-এরা আমাদের বন্ধু, না শত্রু? ব্যাপারটি ভোটে দেয়া হোক। এই প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য আমি সভায় পেশ করছি—“এরা কি আমাদের বন্ধু?”

    ভোট গ্রহণ করা হলো তৎক্ষণাৎ। বিপুল ভোটে সিদ্ধান্ত গৃহীত হলো—‘ইঁদুরেরা বন্ধু।’ বিপক্ষে পড়ল মাত্র চার ভোট। কুকুর তিনটে আর বিড়াল বিপক্ষে ভোট দিয়েছিল। পরে দেখা গেল, বিড়াল দু’পক্ষেই ভোট দিয়েছে। মেজর বলল, ‘আমার আর বেশি কিছু বলার নেই। আবারও বলছি, মানুষের সব কাজে বাধা দেয়া আমাদের কর্তব্য। দু’পেয়ে যে কোন জীবই আমাদের শত্রু।

    ‘চার পেয়ে, পাখাওয়ালা সবাই আমাদের বন্ধু। যারা মানুষের বিরুদ্ধাচরণ করে তাদের আমরা সমর্থন করব। তোমাদের বিদ্রোহ যখন সফল হবে, তখন মানুষকে ক্ষমা কোরো না। জন্তুরা কখনও ঘরে বাস করবে না, বিছানায় ঘুমাবে না, কাপড় পরবে না, মদ খাবে না, ধূমপান করবে না, টাকা-কড়ি ছোঁবে না বা ব্যবসা করবে না। মানুষের সব অভ্যাসই খারাপ। সবচে’ বড় কথা, জন্তুরা স্বজাতির ওপর অত্যাচার করবে না। দুর্বল-শক্তিশালী, বোকা-চালাক সবাই ভাই ভাই। জন্তুরা জন্তুদের হত্যা করবে না—আমরা সবাই সমান।

    ‘বন্ধুরা, এখন আমি স্বপ্নটার কথা তোমাদের বলব। স্বপ্নটা ছিল এমন এক পৃথিবীর, যেখানে কোন মানুষ থাকবে না। স্বপ্নটা আমাকে শৈশবের একটা ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। আমি যখন শিশু ছিলাম, আমার মা, একটা গান গাইত। সব শুয়োরই এই গানের সুর আর প্রথম তিনটে শব্দ জানত। ছোট বেলায় আমি সেই সুর শুনেছি, এর কথাগুলোও জেনেছি, জন্তুরা এখন সেই গান ভুলে গেছে, আমি তোমাদের সেই গানটা শেখাব। আমার গলা ভাল নয়, আমার বিশ্বাস, শিখিয়ে দিলে তোমরা আমার চেয়ে অনেক ভাল গাইতে পারবে। গানটার নাম, “বিস্টস অভ ইংল্যাণ্ড”।’ মেজর গলা পরিষ্কার করে গান ধরল।

    বিস্টস অভ ইংল্যাণ্ড, বিস্টস অভ আয়ারল্যাণ্ড
    বিস্টস অভ এভরি ল্যাণ্ড অ্যাণ্ড ক্লাইম
    হেরকন (লিসেন) টু মাই জয়ফুল টাইডিংস
    অব দ্যা গোল্ডেন ফিউচার টাইম।

    সুন অর লেট দ্যা ডে ইজ কামিং
    টাইরান্ট ম্যান শ্যাল বি ওভারথ্রোন
    অ্যাণ্ড দ্যা ফ্রুটফুল ফিল্ডস অভ ইংল্যাণ্ড
    শ্যাল বি ট্রড বাই বিস্টস অ্যালোন।

    রিংস শ্যাল ভ্রানিস ফ্রম আওয়ার নোজেস
    অ্যাণ্ড দ্যা হার্নেস ফ্রম আওয়ার ব্যাক
    বিট অ্যাণ্ড স্পার শ্যাল রাস্ট ফর এভার
    ক্রুয়েল হইপ্‌স্ নো মোর শ্যাল ক্র্যাক।

    রিচেস মোর দ্যান মাইও ক্যান পিকচার
    হুইট অ্যাণ্ড বার্লি ওটস্ অ্যাণ্ড হে
    ক্লোভার, বীনস্ অ্যাও ম্যাংগেল-উরজেলস
    শ্যাল বি আওয়ারস আপ অন দ্যাট ডে।

    ব্রাইট উইল শাইন দ্যা ফিল্ডস অভ ইংল্যাণ্ড
    পিওরার শ্যাল ইস্ ওয়াটার বি
    সুইটার ইয়েট শ্যাল ব্রো ইটস ব্রীজেস
    অন দ্যা ডে দ্যাট সেটস আস্ ফ্রি।

    ফর দ্যাট ডে উই অল মাস্ট লেবার
    দো উই ডাই বিফোর ইট ব্রেক
    কাউ’জ অ্যাণ্ড হর্সেস, সী’জ অ্যাণ্ড টার্কিজ
    অল মাস্ট টয়েল ফর ফ্রীডম’স সেক।
    বিস্টস অভ ইংল্যাণ্ড, বিস্টস অভ আয়ারল্যাণ্ডে
    বিস্টস অভ এভরি ল্যান্ড অ্যাণ্ড ক্লাইম
    হেরকন ওয়েল অ্যাণ্ড স্প্রেড মাই টাইডিংস
    অভ দ্য গোল্ডেন ফিউচার টাইম।

    গানের সুর জন্তুদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে দিল। মেজরের সঙ্গে গলা মিলিয়ে তারা গাইতে শুরু করল, জন্তুদের মধ্যে সবচেয়ে বোকা জনও সুরটা আয়ত্ত করে ফেলল। চালাক জন্তু যেমন-কুকুর, শুয়োর এরা পুরো গানটা মুখস্থ করে ফেলল। পুরো খামার ‘বিস্টস অভ ইংল্যাণ্ড’-এর সুরে ফেটে পড়ল। গরুরা গাইল হাম্বা হাম্বা, কুকুরেরা ঘেউ ঘেউ। ভেড়া গাইল ভ্যাঁ, ভ্যাঁ, ঘোড়া চিঁহি, চিঁহি আর হাঁসেরা ডাকল প্যাঁক প্যাঁক, আনন্দের চোটে বারপাঁচেক গাওয়া হলো গানটা, আরও হয়তো অনেকবার গাওয়া হত, যদি না বাধা পড়ত।

    দুর্ভাগ্যক্রমে তাদের হট্টগোলে মি. জোনসের ঘুম ভেঙে গেল। বিছানা ছেড়ে সিক্সশুটার হাতে নিয়ে তিনি দেখতে বেরুলেন খামারে শেয়াল ঢুকেছে কিনা জন্তুরা দ্রুত সভা শেষ করে অন্ধকারে গা ঢাকা দিল। সবাই নিজের শোবার জায়গায় ফিরে গেল। পাখিরা ফিরল নীড়ে, জন্তুরা খড়ের গাদায় মুখ গুঁজল, পুরো খামারে বিরাজ করতে লাগল অটুট নিস্তব্ধতা।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Article১৯৮৪ (নাইন্টিন এইটি-ফোর) – জর্জ অরওয়েল
    Next Article শ্যামাঙ্গীর ঈশ্বর সন্ধান – জর্জ বার্নাড শ

    Related Articles

    জর্জ অরওয়েল

    ১৯৮৪ (নাইন্টিন এইটি-ফোর) – জর্জ অরওয়েল

    August 11, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.