Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025

    ওডিসি – হোমার

    October 13, 2025

    প্রেমের প্রান্তে পরাশর – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    October 13, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    অ্যানিমেল ফার্ম – জর্জ অরওয়েল

    জর্জ অরওয়েল এক পাতা গল্প95 Mins Read0

    অ্যানিমেল ফার্ম – ৮

    আট

    কয়েক দিন পর, নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের ধকল যখন কাটিয়ে ওঠা গেল; জন্তুদের কারও কারও মনে পড়ল, জন্তু মতবাদের ছয় নম্বর নীতিটা ছিল ‘জন্তুরা একে অপরকে হত্যা করতে পারবে না।’ যদিও শুয়োর-কুকুরদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পেল না। তবুও তাদের মনে হতে লাগল-কয়েক দিন আগের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে এই নীতি মেলে না। ক্লোভার বেনজামিনকে ছয় নম্বর নীতিটা পড়ে শোনাতে অনুরোধ করল। বেনজামিন পড়তে অস্বীকার করায় সে ধরল মুরিয়েলকে।

    মুরিয়েল দেয়ালের লেখাটা পড়ে শোনাল। সেখানে উজ্জ্বল অক্ষরে লেখা আছে—‘জন্তুরা একে অপরকে বিনা কারণে হত্যা করতে পারবে না।’ কেন যেন তাদের ‘বিনা কারণে’ কথাটা মনে ছিল না। সবাই স্বস্তি পেল, নিয়ম লঙ্ঘিত হয়নি; স্নোবলের সঙ্গে যোগ দেবার উপযুক্ত শাস্তিই পেয়েছে অভিযুক্তরা। গত বছরের চেয়ে বেশি পরিশ্রম করল জন্তুরা। আবার উইণ্ডমিল বানাল, সেই সঙ্গে খামারের নিয়মিত কাজগুলো করা—সব মিলিয়ে খুবই খাটুনি গেল।

    মাঝে মাঝে জন্তুদের মনে হয়, এখন তারা আগের চেয়ে অনেক বেশি কাজ করে কিন্তু খেতে পায় জোনসের সময়ের মত। এক রোববার সকালে স্কুয়েলার দু’পায়ের মাঝখানে এক কাগজ ধরে রেখে এ বছর উৎপাদিত শস্যের হিসেব পড়ে শোনাল। তার হিসেবে খাদ্য উৎপাদন আগের চেয়ে একশো, দুইশো, তিনশো এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে পাঁচশো গুণ পর্যন্ত বেড়েছে। জন্তুদের এই তথ্য অবিশ্বাস করার কোন কারণ নেই। বিদ্রোহের আগে খামারে কি পরিমাণ ফসল ফলত তা কারোই মনে নেই।

    সব রকম কাজের নির্দেশ দেয়া হত স্কুয়েলার কিংবা অন্য কোন শুয়োরের মাধ্যমে। নেপোলিয়ন মাসে দু’একবার জন্তু সমক্ষে আসে। যখন আসে, তাকে ঘিরে রাখে কুকুরগুলো। একটা কালো মোরগ সামনে থেকে ‘কক্-কক্’ শব্দে তার আগমন বার্তা ঘোষণা করে। এখন ফার্ম হাউসেও সে এক ঘরে একা থাকে, একা খায়—সর্বক্ষণ তাকে পাহারা দেয় দুটো কুকুর। দামী বাসনে খায় সে, যেগুলো এতদিন সাজানো ছিল ড্রইং রূমের শোকেসে। ঘোষণা করা হয়েছে, এখন থেকে নেপোলিয়নের জন্মদিনেও তোপধ্বনি করা হবে।

    নেপোলিয়নকে এখন আর শুধু নেপোলিয়ন ডাকা হয় না। নামের আগে নেতা, কমরেড যোগ করে আনুষ্ঠানিক ভঙ্গিতে উচ্চারণ করা হয়। এ ছাড়া শুয়োরেরা আরও কিছু বিশেষণ ব্যবহার করে। যেমন ‘মানবতার শত্রু’, ‘ভেড়াদের ত্রাণকর্তা,’ ‘হাঁসের-বন্ধু’ ইত্যাদি। স্কুয়েলার বক্তৃতা দেবার সময় চোখের পানিতে বুক ভাসিয়ে নেপোলিয়নের উদার হৃদয়, জন্তুদের প্রতি তার ভালবাসার কথা বর্ণনা করত।

    প্রতিটি সাফল্যের পেছনে নেপোলিয়নের অবদানের কথা স্বীকার করে সবাই। মুরগিরা বলে, ‘কমরেড নেপোলিয়নের আশীর্বাদে আমরা ছয়দিনে পাঁচটা ডিম পেড়েছি। গাভীরা চৌবাচ্চার পানি খেয়ে বলে, ‘কমরেড নেপোলিয়নের যোগ্য নেতৃত্বের জন্যই পানি এত মিষ্টি।’ জন্তুদের অনুভূতির কথা শুয়োর কবি মিনিমাস তার রচিত ‘কমরেড নেপোলিয়ন’ নামের এক কবিতায় তুলে ধরেছে এভাবে:

    ‘ফেণ্ড অভ ফাদারলেস
    ফাউন্টেন অভ হ্যাপিনেস
    অর্ড অভ দ্যা সুইল বাকেট! ওহ হাউ মাই সোল ইজ অন
    ফায়ার, হোয়েন আই গেজ অ্যাট দাই
    কাম অ্যাণ্ড কমাণ্ডিং আই
    লাইক দি সান ইন দ্যা স্কাই।

    দাউ আর্ট দ্যা গিভার অভ
    অল দ্যাট দাই ক্রিয়েচারস লাভ,
    ফুল বেলি টোয়াইস এ ডে, ক্লীন স্ট্র টু রোল আপন
    এভরি বিস্টস গ্রেট অর স্মল
    স্লীপস অ্যাট পীস ইন হিস স্টল
    দাও ওয়াচেস্ট ওভার অল কমরেড নেপোলিয়ন।

    হ্যাড আই আ সার্কিং পিগ
    অর হি হ্যাড গ্রোন অ্যাজ বিগ
    ইভেন অ্যাজ আ পাইণ্ট বটল অর অ্যাজ আ রোলিং পিন
    হি উড হ্যাড লার্নড টু বি
    ফেইথফুল অ্যাণ্ড টু টু দ্যা
    ইয়েস, হিজ ফার্স্ট স্কুইক শুড বি
    কমরেড নেপোলিয়ন।

    কবিতাটা বার্নের দেয়ালে সাত নীতিমালার পাশে বড় অক্ষরে লিখে রাখা হলো। তার ওপর আঁকা হলো সাদা রঙে নেপোলিয়নের ছবি। আঁকল স্কুয়েলার।

    ওদিকে মি. হুয়িম্পারের মধ্যস্থতায় মি. ফ্রেডরিক ও মি. পিলকিংটনের সঙ্গে জটিল আলোচনা চালাচ্ছে নেপোলিয়ন। গাছের গুঁড়িটা এখনও বিক্রি হয়নি। মি. ফ্রেডরিকই কিনতে বেশি আগ্রহী, কিন্তু দাম বলছেন কম। এ সময় গুজব রটে গেল, মি. ফ্রেডরিক জন্তু খামার আক্রমণের ফন্দি আঁটছেন। তিনি নাকি উইণ্ডমিলের ধ্বংস দেখতে চান। আরও জানা গেল, স্নোবল তার আশ্রয়েই আছে। গ্রীষ্মের মাঝামাঝি সময়ে নেপোলিয়নকে হত্যার নতুন এক ‘ষড়যন্ত্র’ উদ্ঘাটিত হলো। তিনটে মুরগি এই ষড়যন্ত্রের দায়িত্ব স্বীকার করল। তৎক্ষণাৎ তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলো।

    নেপোলিয়নের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আবার ঢেলে সাজানো হলো। রাতের বেলা তাকে এখন পাহারা দেয় চারটে কুকুর। আর শুয়োর পিংকি তার খাবারে বিষ মেশানো হয়েছে কি না পরীক্ষা করে। কিছুদিন পর সবাই শুনল, মি. পিলকিংটনের কাছে গুঁড়িটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মি. হুয়িম্পারের মাধ্যমে সব আলোচনা চললেও নেপোলিয়ন ও মি. পিলকিংটনের মধ্যে প্রায় বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠল মানুষ হিসেবে সে মি. পিলকিংটনকে অবিশ্বাস করত, কিন্তু মি. ফ্রেডরিককে করত রীতিমত ঘৃণা

    গ্রীষ্মকাল বয়ে চলল, উইণ্ডমিলের কাজও প্রায় শেষের দিকে। জন্তু খামার আক্রমণের গুজবটা দিনে দিনে আরও জোরাল হচ্ছে। শোনা যায়, ফ্রেডরিক বিশজন লোক আর ছয়টা বন্দুক নিয়ে আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। পুলিস ও স্থানীয় ম্যাজিস্ট্রেটকে ঘুষ দিয়ে হাত করেছে যাতে সে জন্তু খামার আক্রমণ করলেও তারা কোন ব্যবস্থা না নেয়। আরও শোনা গেল, নিজ খামারের জন্তুদের ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতন চালাচ্ছে সে। একটা ঘোড়াকে মেরে ফেলেছে, দুটো গরুকে না খাইয়ে রেখেছে, একটা কুকুরকে আগুনে পুড়িয়ে মেরেছে।

    বিকেলে মোরগের পায়ে ছুরি বেঁধে দিয়ে মোরগ লড়াইয়ের আয়োজন করছে। স্বজাতির ওপর এমন অত্যাচারের খবর শুনে জন্তুদের রক্ত টগবগিয়ে উঠত। তারা পিঞ্চফিল্ড আক্রমণ করে জন্তুদের মুক্ত করার জন্য নেপোলিয়নের অনুমতি চাইল। কিন্তু স্কুয়েলার তাদের ধৈর্য ধরার উপদেশ দিল। দিনে দিনে ফ্রেডরিকের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ বাড়তেই লাগল। যে সব কবুতর বিদ্রোহের বার্তা নিয়ে পিঞ্চফিল্ডে যেত; তাদের সেখানে বসতে নিষেধ করা হলো। মানুষের মৃত্যু হোক’ পোগান বদলে করা হলো, ‘ফ্রেডরিকের মৃত্যু হোক”।

    গ্রীষ্মের শেষ দিকে স্নোবলের আরেকটা ষড়যন্ত্র ধরা পড়ল। গমের খেতে অজস্র আগাছা জন্মেছে। তদন্ত করে জানা গেল, রাতের বেলা স্নোবল গমের বীজের সাথে আগাছার বীজ মিশিয়ে রেখে গেছে। রাজহাঁস এই কাজে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আত্মহত্যা করল। সবাই এখন বিশ্বাস করে, স্নোবল কখনও ‘বীর’ উপাধি পায়নি। এটা একটা ভুয়া খবর; সম্ভবত স্নোবল নিজেই রটিয়েছিল।

    যদ্দূর বোঝা গেছে, যুদ্ধের সময় সে কাপুরুষতার পরিচয় দিয়েছে। কিন্তু কেউ কেউ এ খবরে এখনও অবিশ্বাস পোষণ করে। স্কুয়েলারের মতে, তাদের আসলে সব কথা মনে নেই। শরতের ফসল ঘরে তোলার আগেই উইণ্ডমিলের কাজ শেষ হলো। সব যন্ত্রপাতি অবশ্য জোগাড় হয়নি তখনও। মি. হুয়িম্পার সেগুলো বাজার থেকে সংগ্রহ করার চেষ্টা করছেন। বাকি সব কাজ মোটামুটি শেষ হয়েছে। প্রতি পলে সমস্যা, অনভিজ্ঞতা, স্নোবলের ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও সুষ্ঠুভাবেই সম্পন্ন হলো সব। উইণ্ডমিলের চারধারে ঘুরে ঘুরে জন্তুরা নিজেদের কাজ দেখে নিজেরাই মুগ্ধ। তাদের মতে, প্রথমবারের চেয়ে এবারেরটা বেশি সুন্দর হয়েছে, আর দেয়ালটা গাঁথা হয়েছে দ্বিগুণ পুরু করে। ঝড় কিংবা বিস্ফোরক সহজে এর ক্ষতি করতে পারবে না।

    আগের দিনের কথা মাঝে মাঝে ভাবে জন্তুরা। উইণ্ডমিল গড়তে তারা কত কষ্ট করেছে, কতবার নিরাশ হয়ে হাল ছেড়ে দিয়েছে। আর এখন! এখন এই উইণ্ডমিলের পাখা ঘুরবে, ডায়নামো চলবে, খামারে আলো জ্বলবে—ভাবতেই এত দিনের ক্লান্তি কোথায় উবে গেল। বুনো উল্লাসে উইণ্ডমিল ঘিরে নাচতে শুরু করল সবাই। নেপোলিয়ন ও কুকুর শোভাযাত্রা সহকারে সেই উল্লাসে যোগ দিল। এরকম একটা মহৎ কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাল সে। স্কুয়েলার ঘোষণা করল, উইণ্ডমিলের নামকরণ করা হবে ‘নেপোলিয়ন মিল।’

    দু’দিন পর বার্নে সভা ডাকা হলো। জন্তুরা বিস্ময়ে বোবা হয়ে শুনল, নেপোলিয়ন ফ্রেডরিকের কাছে গুঁড়িটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরের দিন ফ্রেডরিকের লোকজন এসে গুঁড়িটি নিয়ে যাবে। সে আগাগোড়া পিলকিংটনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখলেও ফ্রেডরিকের কাছেই গুঁড়িটা বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

    ফক্স উডের সঙ্গে সব সম্পর্কের ইতি ঘটল, পিলকিংটনের কাছে অপমানজনক বার্তা পাঠানো হলো। কবুতরদের নিষেধ করা হলো ফক্সউডের দিকে যেতে। স্লোগানটা বদলানো হলো আবারও, এবারের স্লোগান—‘পিলকিংটনের মৃত্যু হোক।’ নেপোলিয়ন জন্তুদের আশ্বস্ত করল, ফ্রেডরিকের আক্রমণের খবর ঠিক নয় আর জন্তুদের ওপর তার অত্যাচারের খবরও ভুয়া। এতদিনে জানা গেল; আসলে পিঞ্চফিল্ডে নয়, স্নোবল লুকিয়ে আছে ফক্স উডে সেখানে পিলকিংটন তাকে সুখেই রেখেছে।

    শুয়োরেরা নেপোলিয়নের বুদ্ধিমত্তায় বিস্মিত, পিলকিংটনের সঙ্গে বন্ধুত্বের ভান করে সে ফ্রেডরিককে গাছের গুঁড়ির দাম বারো পাউণ্ডে তুলতে বাধ্য করেছে। কিন্তু স্কুয়েলারের মতে তার বুদ্ধিমত্তার সবচেয়ে বড় নিদর্শন হলো, সে দেখিয়েছে কাউকে বিশ্বাস করতে নেই। সে এমন কি ফ্রেডরিককেও বিশ্বাস করে না। ফ্রেডরিক দাম পরিশোধ করতে চেয়েছিল ‘চেক’ নামক এক প্রকার কাগজে, যাতে কেবল টাকার সংখ্যা লেখা থাকে। কিন্তু নেপোলিয়নের বুদ্ধির সঙ্গে সে পেরে ওঠেনি। নেপোলিয়ন নগদ টাকা দাবি করল গুঁড়ি সরবরাহের আগে। এই টাকায় উইণ্ডমিলের যন্ত্রপাতি কেনা হবে।

    ফ্রেডরিকের লোকজন গাছের গুঁড়ি নিয়ে যাবার পর আরেকটা সভা ডাকা হলো, জন্তুদের নগদ টাকা দেখার সুযোগ দিতে। নেপোলিয়ন জন্তুসুলভ ব্যসনে সজ্জিত হয়ে, বুকে পদক লাগিয়ে খড়ের বিছানায় শুয়ে আছে, পাশেই চিনা মাটির প্লেটে রাখা টাকা। জন্তুরা সার বেঁধে একে একে টাকা দেখল। বক্সার টাকার কাছে নাক নিয়ে নিঃশ্বাস ছাড়ল, হালকা পাতলা সাদা রঙের জিনিসটা তার নিঃশ্বাসের হাওয়ায় নড়ে চড়ে উঠল।

    তিনদিন পর জানা গেল, মহা সর্বনাশ হয়ে গেছে। মি. হুয়িম্পার ফ্যাকাসে মুখে ফার্ম হাউসে ঢুকলেন। এর কয়েক মুহূর্ত পরই নেপোলিয়নের ঘর থেকে আর্তনাদ শোনা গেল। পুরো খামারে দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ল খবরটা— ফ্রেডরিকের দেয়া টাকাগুলো জাল! সে জাল টাকা দিয়ে গাছের গুঁড়ি নিয়ে গেছে। তৎক্ষণাৎ এক জরুরী সভা ডেকে ফ্রেডরিকের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করল নেপোলিয়ন ধরতে পারলে তাকে জ্যান্ত সেদ্ধ করা হবে। এবং আরও একবার সবাই শুনল, ফ্রেডরিক খামার আক্রমণেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

    খামারের চারদিকের নিরাপত্তা ব্যবস্থা মজবুত করা হলো। চারটে কবুতর পিলকিংটনের কাছে গেল বন্ধুত্বের বার্তা নিয়ে। বার্তায় আশা প্রকাশ করা হলো, দুই খামারের মধ্যে পুনরায় বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠবে। পরদিন সকালে সত্যি সত্যি আক্রমণ এল। তখন জন্তুরা নাশতা করছে। কবুতরেরা খবর নিয়ে এল ফ্রেডরিকের লোকজন সদর দরজা দিয়ে খামারে ঢোকার চেষ্টা করছে। সাহসের সঙ্গে তাদের মোকাবিলা করার জন্য এগিয়ে গেল জন্তুরা। কিন্তু এবার আর গো—শালার যুদ্ধের মত সহজে বিজয় এল না। সব মিলিয়ে পনেরো জন লোক, হাতে বন্দুক-খামারের সীমানায় প্রবেশ করা মাত্রই গুলি ছুঁড়তে শুরু করল তারা।

    তুমুল গুলির মুখে টিকতে না পেরে জন্তুরা নেপোলিয়ন ও বক্সারের ভরসায় পিছু হটল। ইতিমধ্যে যারা আহত হয়েছে, তারা ফার্মহাউসের পেছনে আত্মগোপন করল। বিস্তৃত ফসলের খেত, উইণ্ডমিল এখন শত্রুদের দখলে। দেখে শুনে মনে হচ্ছে তাদের পরাজয় সুনিশ্চিত। নেপোলিয়ন পিছিয়ে এসে আশার দৃষ্টিতে তাকাল ফক্সউডের দিকে। পিলকিংটন যদি সাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসে তবে এখনও জয়ের সম্ভাবনা আছে। সেই মুহূর্তে কবুতরেরা ফিরে এল। তারা পিলকিংটনের কাছ থেকে বার্তা বয়ে নিয়ে এসেছে। তাতে লেখা— ‘আমরা তোমাদের পাশে আছি।’ এক সময় ফ্রেডরিকের লোকজন উইণ্ডমিল ঘিরে ফেলল। আতঙ্কের ঢেউ বয়ে গেল জন্তুদের মাঝে। ক্রো-বার আর হাতুড়ি নিয়ে এল দুই শত্রু—পিটিয়েই ভাঙবে তারা উইণ্ডমিল।

    ‘অসম্ভব,’ চিৎকার করে উঠল নেপোলিয়ন। দেয়ালটা খুব মজবুত, এত সহজে ওটা ধ্বংস হবে না।’

    বেনজামিন সতর্ক দৃষ্টিতে লোকগুলোকে লক্ষ করছিল। ততক্ষণে তারা ক্রো—বার আর হাতুড়ির সাহায্যে উইণ্ডমিলের ভিতে একটা গর্ত করে ফেলেছে। বাতাসে কিসের যেন গন্ধ পেয়ে মাথা নাড়ল বেনজামিন। ‘যা ভেবেছিলাম,’ বলল সে। ‘বুঝতে পারছ, কি করছে ওরা? ওই গর্তে এবার বারুদ ভরা হবে।’

    আতঙ্কে স্থির হয়ে আছে জন্তুরা, এ পরিস্থিতিতে আড়াল থেকে বের হওয়াও বিপজ্জনক। একটু পর লোকগুলো পড়িমরি করে ছুট লাগাল। এরপর শোনা গেল প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ, কবুতরগুলো বাতাসে কেঁপে উঠল। নেপোলিয়ন বাদে আর সবাই পেটের ভেতর মুখ গুঁজে শুয়ে পড়ল। যখন মুখ তুলল; দেখল, যেখানে উইণ্ডমিল ছিল সেখানে এখন কেবল কালো ধোঁয়ার পর্দা। ধীর বাতাসে সে পর্দা এক সময় সরে গেল কিন্তু উইণ্ডমিলটিকে আর দেখা গেল না।

    এই দৃশ্য দেখে জন্তুরা সাহস ফিরে পেল। একটু আগের আতঙ্ক নিমেষে উধাও হয়ে গেল, প্রতিশোধ স্পৃহা জেগে উঠল সবার মনে। কারও নির্দেশের অপেক্ষা না করে একযোগে শত্রুদের আক্রমণ করতে ছুটল সবাই। লড়াইটা হলো জান্তব, জন্তুরা মানুষের কাছাকাছি আসতেই তারা আবার গুলি চালাল। একটা গরু, তিনটে ভেড়া আর তিনটে হাঁস মারা গেল গুলিতে। আহত হলো প্রায় সবাই। এমনকি নেপোলিয়ন; যে আড়াল থেকে যুদ্ধ পরিচালনা করছিল, তারও লেজে গুলি লাগল।

    অবশ্য মানুষেরাও অক্ষত রইল না। বক্সারের লাথিতে তিনজনের মাথা ফাটল, একজনের পেটে গরু গুঁতো মারল, জেসী ও রুবেলের আক্রমণে আরেকজনের প্যান্ট ছিঁড়ল। নয়টি কুকুর ঘিরে ধরল মানুষদের। তাদের ভয়ঙ্কর, রক্ত পিপাসু মূর্তি দেখে ভয় পেয়ে গেল মানুষেরা। ফ্রেডরিক চিৎকার করে সবাইকে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে বলল, পর মুহূর্তে কাপুরুষের মত পালাতে শুরু করল তারা। জন্তুরা খামারের সীমানা পর্যন্ত তাদের ধাওয়া করল, পেছনে থেকে লাথি মেরে কাঁটা ঝোপের উপর ছুঁড়ে দিল।

    শেষ পর্যন্ত ব্যথা আর রক্তপাতের মধ্য দিয়ে বিজয় এল। ধীরে ধীরে স্তিমিত হয়ে এল সব কোলাহল। ঘাসের ওপর বন্ধুদের মৃতদেহ দেখে চোখে পানি এসে গেল সবার। বিষণ্ন মনে উইণ্ডমিলের পাশে দাঁড়িয়ে রইল সবাই, এত পরিশ্রমে গড়া উইণ্ডমিলের কোন চিহ্নই নেই। এমনকি ভিত্ পর্যন্ত ধ্বংস হয়ে গেছে। এত কষ্টে চূর্ণ করা পাথরের টুকরোগুলোরও কোন খোঁজ পাওয়া গেল না। বিস্ফোরণের ধাক্কায় কয়েকশো গজ দূরে দূরে ছড়িয়ে পড়েছে সেসব, দেখে মনে হচ্ছে, এখানে কোন কালেই কোন উইণ্ডমিল ছিল না।

    ফার্মে দেখা মিলল স্কুয়েলারের, যুদ্ধের মাঠে তাকে দেখা যায়নি। সে এল লেজ দুলিয়ে লাফাতে লাফাতে। জন্তুরা শুনল, ফার্মের দিক থেকে বন্দুক দাগার শব্দ ভেসে আসছে।

    ‘বন্দুকের শব্দ কেন?’ বক্সারের জিজ্ঞাসা।

    ‘বিজয়ের আনন্দ প্রকাশের জন্য,’ জবাব দিল স্কুয়েলার।

    ‘কিসের বিজয়?’ জিজ্ঞেস করল বক্সার। হাঁটুতে গুলিবিদ্ধ হয়েছে সে। ক্ষত থেকে তখনও রক্ত ঝরছে। খুরের খানিকটা উড়ে গেছে।

    ‘কিসের বিজয় মানে? আমরা কি খামার শত্রু মুক্ত করিনি?’

    ‘কিন্তু ওরা উইণ্ডমিলটা গুঁড়িয়ে দিয়ে গেছে। গত দু’বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করেছি আমরা ওটা তৈরি করতে।’

    ‘তাতে কি হয়েছে? আবার উইণ্ডমিল তৈরি হবে। দরকার হলে ছয়টা উইণ্ডমিল বানাব। আমরা কত বড় গৌরবের একটা কাজ করেছি। কমরেড নেপোলিয়নের নেতৃত্বে শত্রুর কবল থেকে নিজেদের খামার উদ্ধার করেছি। যোগ্য নেতৃত্বের জন্য কমরেড নেপোলিয়নের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।’

    ‘তারমানে, যা আমাদেরই ছিল—তাই আবার আমরা ফিরে পেয়েছি। তাই না?’ অনিশ্চিত গলা বক্সারের, সে ব্যাপারটা ঠিক বুঝতে পারছে না।

    ‘এটাই তো বিজয়,’ উৎফুল্ল স্কুয়েলার।

    বক্সারের পা ভীষণ ব্যথা করছিল। কল্পনায় নিজেকে নতুন করে উইণ্ডমিল গড়তে দেখল সে। কিন্তু বাস্তবে মনে হলো, তার বয়স হয়েছে। বারো বছরের পুরানো পেশীগুলোতে আর আগের মত জোর নেই। এরপর আবার সবুজ পতাকা উড়ল। সাতবার তোপধ্বনি করা হলো। বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য জন্তুদের অভিনন্দন জানাল নেপোলিয়ন। নেপোলিয়নের অভিনন্দন বার্তা শুনে সবার মনে হলো, তারা সত্যিই বড় রকমের বিজয় অর্জন করেছে। যুদ্ধে নিহত জন্তুদের জন্য গাম্ভীর্যপূর্ণ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আয়োজন করা হলো।

    বক্সার ও ক্লোভার মৃতদেহগুলো বয়ে চলল। নেপোলিয়ন রইল শবযাত্রার পুরোভাগে। পরের দু’দিন চলল বিজয় উৎসব—নাচ, গান, বক্তৃতা, আর তোপধ্বনি। সবাইকে একটা করে আপেল, পাখিদের দুই আউন্স শস্য আর কুকুরদের তিনটে করে বিস্কুট দেয়া হলো এ উপলক্ষে। যুদ্ধের নাম দেয়া হলো ‘উইণ্ডমিলের যুদ্ধ।’ নেপোলিয়ন নিজেকে ‘সবুজ ফিতে’ সম্মানে ভূষিত করল। যুদ্ধ জয়ের আনন্দে সবাই ফ্রেডরিকের জাল টাকার শোক ভুলে গেল।

    ফার্ম হাউসের সেলারে এক কেস হুইস্কি খুঁজে পেল শুয়োরেরা। এতদিন এসবের খোঁজ মেলেনি। সে রাতে ফার্ম হাউসে হৈ চৈ আর বেসুরো গলার গান শোনা গেল। সবাই খুব অবাক হয়ে শুনল নিষিদ্ধ ‘বিস্টস অভ ইংল্যাণ্ডের সুর ভেসে আসছে। রাত সাড়ে ন’টায় নেপোলিয়নকে দেখা গেল পেছনের দরজায়, উঠানে তিড়িং বিড়িং নাচ জুড়ে দিয়েছে সে। কিন্তু পরদিন সকালে ফার্ম হাউসে কারও সাড়া পাওয়া গেল না, কোন শুয়োরের দেখা মিলল না।

    বেলা ন’টার দিকে বের হলো স্কুয়েলার, ধীরে ধীরে, টলতে টলতে। তার চোখ ঢুলু ঢুলু, লেজ ঝুলছে আলগা ভাবে— দেখে মনে হচ্ছে বড় রকম অসুখ করেছে। একটা মর্মান্তিক দুঃসংবাদ দিল সে, কমরেড নেপোলিয়ন মৃত্যু শয্যায়। কান্নার রোল পড়ে গেল জন্তুদের মাঝে। অশ্রু ভেজা চোখে একে অপরকে জিজ্ঞেস করল, নেতা চলে গেলে তাদের কি হবে? শোনা গেল, স্নোবল নেপোলিয়নের খাবারে বিষ মিশিয়ে দিয়েছে। বেলা এগারোটায় নতুন ঘোষণা নিয়ে জন্তু সমক্ষে উপস্থিত হলো স্কুয়েলার। কমরেড নেপোলিয়নের শেষ নির্দেশ, মদ পানের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।

    বিকেলের দিকে নেপোলিয়নের অবস্থার খানিকটা উন্নতি হলো। পরদিন সকালে স্কুয়েলার জানাল, কমরেড নেপোলিয়ন আশঙ্কামুক্ত, তিনি দ্রুত সেরে উঠছেন। বিকেলের মধ্যেই নেপোলিয়ন কাজে যোগদান করল। কাজে যোগদানের পরপরই সে. মি. হুয়িম্পারকে ‘মদ তৈরির প্রক্রিয়া ও বিশুদ্ধকরণ’ বইটি কেনার নির্দেশ দিল। এক সপ্তাহ পর ঘোষণা করা হলো, অবসরপ্রাপ্ত জন্তুদের জন্য বরাদ্দকৃত চারণ ভূমিতে বার্লির চাষ করা হবে।

    এরই মাঝে অদ্ভুত কিছু ঘটনা ঘটল, যার অর্থ বুঝল না কেউ। মাঝরাতে উঠানে বেশ গোলমাল শোনা গেল। বিছানা ছেড়ে জন্তুরা উঠানে জড়ো হলো। সেদিন ছিল জ্যোৎস্না রাত। বার্নের দেয়াল, যেখানে নীতিগুলো লেখা ছিল, তার নিচে দু টুকরো হয়ে পড়ে আছে মই। মাটিতে হাত-পা ছড়িয়ে অজ্ঞান স্কুয়েলার, পাশে উল্টে আছে লণ্ঠন, রঙের ব্রাশ, গড়াগড়ি খাচ্ছে রঙের টিন। কুকুরগুলো দ্রুত ঘিরে ফেলল স্কুয়েলারকে। জ্ঞান ফিরে পাওয়ার পর তাকে পাহারা দিয়ে ফার্ম হাউসে নিয়ে যাওয়া হলো। কি হয়েছে কেউ বুঝল না। শুধু বেনজামিন নীরবে মাথা ঝাঁকাল

    ক’দিন পর নীতিগুলো পড়তে গিয়ে মুরিয়েল দেখল, সবাই পাঁচ নম্বর নীতির খানিকটা ভুলে গেছে। তাদের ধারণা নীতিটা ছিল—‘কোন জন্তু মদ স্পর্শ করবে না।’ অথচ এখন সেখানে লেখা ‘কোন জন্তু অতিরিক্ত মদ পান করবে না।’

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Article১৯৮৪ (নাইন্টিন এইটি-ফোর) – জর্জ অরওয়েল
    Next Article শ্যামাঙ্গীর ঈশ্বর সন্ধান – জর্জ বার্নাড শ

    Related Articles

    জর্জ অরওয়েল

    ১৯৮৪ (নাইন্টিন এইটি-ফোর) – জর্জ অরওয়েল

    August 11, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025
    Our Picks

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025

    ওডিসি – হোমার

    October 13, 2025

    প্রেমের প্রান্তে পরাশর – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    October 13, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }