Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    October 28, 2025

    অ্যারিস্টটলের পলিটিক্স ও অন্যান্য প্রসঙ্গ – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025

    আলস্যের জয়গান – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    অ্যারিস্টটলের পলিটিক্স ও অন্যান্য প্রসঙ্গ – বার্ট্রান্ড রাসেল

    বার্ট্রান্ড রাসেল এক পাতা গল্প92 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ৪. লজিক

    ৪. লজিক

    অ্যারিস্টটলের প্রভাব অনেক বিষয়ে বিরাট। তবে তার প্রভাব সবচেয়ে বেশি লজিকে। প্রাচীনকালের শেষ পাদে যখন অধিবিদ্যার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন প্লেটো তখন লজিকে সর্বজনস্বীকৃত কর্তৃত্ব ছিল অ্যারিস্টটলের এবং তার এই অবস্থান পুরো মধ্যযুগ বজায় ছিল। শুধু ত্রয়োদশ শতাব্দীতে এসেই খ্রিস্টান দার্শনিকরা অধিবিদ্যায় অ্যারিস্টটলকে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করেন। অধিবিদ্যায় অ্যারিস্টটলের এই একাধিপত্য বহুলাংশে খর্ব হয় রেনেসাঁর পরে, কিন্তু লজিকে তার শ্রেষ্ঠত্ব তেমনি রয়ে যায়। এমনকি আজকের দিনেও দর্শনের সব ক্যাথলিক গুরু ও অন্য আরো অনেকে একগুয়েভাবে আধুনিক যুক্তিশাস্ত্রের আবিষ্কারগুলো প্রত্যাখ্যান করেন এবং অদ্ভুত এক জেদসহ এমন একটি তত্ত্বের প্রতি তারা অবিচল যা কিনা টলেমির জ্যোতির্বিদ্যার মতোই সেকেলে। এ কারণে অ্যারিস্টটলের প্রতি ঐতিহাসিক ন্যায়বিচার করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আজকের দিনে তার প্রভাব স্বচ্ছ চিন্তার পক্ষে এতটাই ক্ষতিকর যে, প্লেটোসহ তার সব পূর্বসূরিকে অতিক্রম করে তিনি যে অগ্রগতি সাধন করেছিলেন তা স্মরণ করাই কঠিন; যুক্তিশাস্ত্রে তার কাজকে বেশ প্রশংসনীয় মনে হতে পারত যদি, তা একটি মৃত পরিসমাপ্তি না হয়ে ধারাবাহিক অগ্রগতির একটি পর্যায় বলে বিবেচিত হতে (প্রকৃতপক্ষে অ্যারিস্টটলের যুক্তিশাস্ত্রের কাজ ছিল একটি ধারাবাহিকতারই পর্যায়)। অথচ তার কাজকে যুক্তিশাস্ত্রের ক্ষেত্রে সর্বশেষ কাজ মনে করা হয়েছে, ফলে পরবর্তী দুই সহস্রাধিক বছর যুক্তিশাস্ত্রে এক বদ্ধ, নিশ্চল অবস্থা বিরাজ করেছে। অ্যারিস্টটলের পূর্বসূরিদের ব্যাপারে বলতে গেলে, পাঠকদেরকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই যে, তারা যুক্তি-তর্কের ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ নন। তাই কেউ তাদের যোগ্যতার প্রশংসা করলেই এ রকম মনে করার কারণ নেই তিনি তাদের সব মতবাদ সমর্থন করছেন; তা না করেও যে কেউ তাদের যোগ্যতার প্রশংসা করতে পারেন। বিপরীতে, অ্যারিস্টটল বিশেষ করে লজিকে, এক যুদ্ধক্ষেত্র। এবং বিশুদ্ধ ঐতিহাসিক মনোভাব নিয়ে তাকে বিচার করা যায় না।

    লজিকে অ্যারিস্টটলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো ন্যায় তত্ত্ব (doctrine of syllogism)। ন্যায় হলো একটি যুক্তি, যার তিনটি অংশ থাকে। যথা : প্রধান প্রতিজ্ঞা, অপ্রধান প্রতিজ্ঞা এবং সিদ্ধান্ত। বিভিন্ন প্রকারের ন্যায় আছে, প্রত্যেক প্রকারের ন্যায়ের একটি করে নাম আছে, এই নামগুলো দিয়েছেন তর্কবিদগণ। সবচেয়ে পরিচিত ধারার ন্যায়টির নাম বারবারা। তা এ রকম–

    সব মানুষ মরণশীল (প্রধান প্রতিজ্ঞা)।
    সক্রেটিস একজন মানুষ (অপ্রধান প্রতিজ্ঞা)
    অতএব, সক্রেটিস মরণশীল (সিদ্ধান্ত)

    অথবা এ রকম–

    সব মানুষ মরণশীল
    সব গ্রিক হয় মানুষ
    অতএব, সব গ্রিক মরণশীল।

    (এই দুই ধরনের ন্যায়ের মধ্যে অ্যারিস্টটল কোনো পার্থক্য করেননি। পরবর্তী। আলোচনায় আমরা দেখতে পাব যে, এ দুটির মধ্যে পার্থক্য না করা একটি ভুল)

    ন্যায়ের অন্য ধরনগুলো এ রকম–

    কোনো মাছ বিচার-বুদ্ধিসম্পন্ন নয়,
    সব হাঙর হয় মাছ।
    অতএব, কোনো হাঙর বিচার-বুদ্ধিসম্পন্ন নয়। (এ ধরনের ন্যায়কে বলা হয় Celarent)।

    সব মানুষ বিচার-বুদ্ধিসম্পন্ন। (এই ন্যায়ের নাম Darii)

    কোনো গ্রিক কালো নয়,
    কিছু মানুষ হয় গ্রিক
    অতএব, কিছু মানুষ কালো নয়। (এ রকম ন্যায়কে বলা হয় Ferio)

    এই চার ধরনের ন্যায় মিলে গঠিত হয়েছে প্রথম কাঠামো। অ্যারিস্টটল যুক্ত করেছেন একটি দ্বিতীয় ও একটি তৃতীয় কাঠামো। আর শাস্ত্রব্যাখ্যাতা ধর্মবেত্তাগণ যুক্ত করেছেন চতুর্থ কাঠামো। দেখানো হয়েছে যে, পরবর্তী তিনটি কাঠামোকে বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করে প্রথম কাঠামোতে পরিণত করা যায়।

    এমন কতক অনুমান আছে যা একটিমাত্র প্রতিজ্ঞা থেকে পাওয়া যেতে পারে। কিছু মানুষ নশ্বর-এই প্রতিজ্ঞা থেকে আমরা এই অনুমানে পৌঁছুতে পারি যে, কিছু নশ্বর হয় মানুষ। অ্যারিস্টটলের মতে সব মানুষ নশ্বর-এই প্রতিজ্ঞা থেকেও ওই রকম অনুমানে পৌঁছা যায়। কোনো দেবতা নশ্বর নয়-এই প্রতিজ্ঞা থেকে আমরা অনুমান করতে পারি কোনো নশ্বর (প্রাণী) দেবতা নয়। কিন্তু কিছু মানুষ গ্রিক (জাতি) নয় থেকে এটা সত্য হয় না যে, কিছু গ্রিক মানুষ নয়।

    অ্যারিস্টটল এবং তার অনুসারীগণ মনে করতেন, উপরে উল্লিখিত অনুমানগুলো বাদে সব অবরোহমূলক অনুমান-যখন সুস্পষ্ট ও নির্দিষ্টভাবে বিবৃত হয়-নৈয়ায়িক। সব ধরনের প্রমাণসিদ্ধ ন্যায় দ্বারা তর্ক শুরু করলে এবং যেকোনো প্রস্তাবিত তর্ক নৈয়ায়িকভাবে শুরু করা হলে সব ধরনের ভ্রান্তি এড়ানো সম্ভব।

    এই পদ্ধতি ছিল ফরমাল লজিকের সূচনা এবং সে হিসেবে তা ছিল একই সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রশংসনীয়। কিন্তু পদ্ধতিটিকে ফরমাল লজিকের সূচনা হিসেবে বিবেচনা না করে সমাপ্তি হিসেবে বিবেচনা করলে তা তিন ধরনের সমালোচনার শিকার হবে। যথা

    ১. খোদ পদ্ধতিটির ভেতরে আকারগত ত্রুটি আছে।

    ২. অবরোহমূলক যুক্তির অন্যান্য প্রকারের চেয়ে ন্যায়কে বেশি মূল্য দেওয়া হয়।

    ৩. তর্কের একটি রূপ হিসেবে অবরোহকে বেশি মূল্য দেওয়া হয়।

    এ তিনটি সমালোচনার প্রত্যেকটি সম্পর্কে কিছু কথা বলা আবশ্যক।

    ১. আকারগত ত্রুটি: আরম্ভ করা যাক এই দুটি বিবৃতি দিয়ে : সক্রেটিস একজন মানুষ, এবং সব গ্রিক হয় মানুষ। এ দুটি উক্তির মধ্যে একটি তীক্ষ্ণ পার্থক্য করা প্রয়োজন, অ্যারিস্টটলের লজিকে যা করা হয়নি। সব গ্রিক হয় মানুষ এই উক্তি সাধারণভাবে ইঙ্গিত করে যে গ্রিকদের অস্তিত্ব আছে। এই ব্যঞ্জনার্থ ছাড়া অ্যারিস্টটলের কিছু কিছু ন্যায় সিদ্ধ হয় না। উদাহরণস্বরূপ

    সব গ্রিক হয় মানুষ,
    সব গ্রিক হয় সাদা,
    অতএব, কিছু মানুষ হয় সাদা।

    গ্রিকদের অস্তিত্ব থাকলেই কেবল এই ন্যায় সিদ্ধ হবে, অন্য কোনোভাবে নয়। যদি আমি বলি

    সব সোনার পাহাড় হয় পাহাড়,
    সব সোনার পাহাড় হয় সোনার,
    অতএব, কিছু পাহাড় হয় সোনার।

    তাহলে আমার সিদ্ধান্ত হবে মিথ্যা, যদিও কিছু অর্থে আমার প্রতিজ্ঞাগুলো সত্য। যদি সম্পূর্ণভাবেও পরিষ্কার করে বলতে চাই, তাহলে সব গ্রিক হয় মানুষ এই একটি উক্তিকে দুই ভাগে ভাগ করতে হবে। একটি হবে : গ্রিকদের অস্তিত্ব আছে এবং অন্যটি হবে যদি কোনো কিছু গ্রিক হয় তবে তা একটি মানুষ। দ্বিতীয় উক্তিটি পুরোপুরি আনুমানিক। এটা এই নিহিতার্থ বহন করে না যে, গ্রিকদের অস্তিত্ব আছে।

    এভাবে সব গ্রিক হয় মানুষ-এ উক্তিটি সক্রেটিস একজন মানুষ-এই উক্তির চেয়ে গঠনের দিক থেকে অনেক অনেক বেশি জটিল। সক্রেটিস একজন মানুষ-বাক্যটিতে কর্তা হিসেবে আছে সক্রেটিস। কিন্তু সব গ্রিক হয় মানুষ বাক্যটিতে সব গ্রিক কর্তা নয়। কারণ গ্রিকদের অস্তিত্ব আছে বা যদি কোনো কিছু গ্রিক হয় তবে তা একটি মানুষ-এই দুই উক্তির কোনোটিতেই সব গ্রিক সম্বন্ধে কিছু বলা হয়নি।

    পুরোপুরি আকারগত এই ক্রটি অধিবিদ্যা ও জ্ঞানবিষয়ক তত্ত্বে ত্রুটির উৎস ছিল। সক্রেটিস মরণশীল এবং সব মানুষ মরণশীল-এই দুটি উক্তির ব্যাপারে আমাদের জ্ঞানের অবস্থা কী তা বিবেচনা করে দেখা যাক। সক্রেটিস মরণশীল এই উক্তির সত্য জানার ব্যাপারে অধিকাংশ লোকই নির্ভর করবেন প্রামাণিক সাক্ষ্যের ওপর, আর সাক্ষ্যকে নির্ভরযোগ্য মনে করতে হলে আমাদের এমন একজনের কাছে ফিরে যেতে হবে যিনি সক্রেটিসকে জানতেন এবং তাকে মৃত দেখেছেন। সক্রেটিসের মৃতদেহ প্রত্যক্ষ করার ঘটনা এবং ওই লোকটির নাম সক্রেটিস ছিল-এই জ্ঞান সক্রেটিসের মরণশীলতা সম্পর্কে আমাদেরকে নিশ্চিত করার জন্য যথেষ্ট। কিন্তু যখন বলা হবে সব মানুষ মরণশীল তখন ব্যাপারটা ভিন্ন রকম। এ রকম সাধারণ প্রতিজ্ঞা সম্বন্ধে আমাদের জ্ঞানের প্রশ্ন একটি অত্যন্ত কঠিন প্রশ্ন। কখনো কখনো তা নেহায়েত বাচনিক; সব গ্রিক হয় মানুষ-এ কথা জানা আছে কারণ মানুষ না হলে কোনো কিছুকেই একজন গ্রিক বলা হয় না। এ রকম সাধারণ উক্তি অভিধান থেকে নিরূপণ করা যায়। শব্দ কীভাবে ব্যবহৃত হয় তা ছাড়া শব্দ সম্পর্কে অভিধানগুলো আর কিছুই বলে না। কিন্তু সব মানুষ মরণশীল উক্তিটি এ রকম নয়। একজন অমর মানুষ সম্বন্ধে যৌক্তিকভাবে স্ববিরোধী কিছু নেই। এই প্রতিজ্ঞা আমরা বিশ্বাস করি আরোহ এর ভিত্তিতে, কারণ কোনো মানুষের (ধরা যাক) ১৫০ বছরের বেশি বেঁচে থাকার সুপ্রমাণিত ঘটনা নেই। এতে উক্তিটি শুধু সম্ভাব্যই হয়, নিশ্চিত হয় না। যত দিন পর্যন্ত জীবন্ত মানুষের অস্তিত্ব থাকবে তত দিন তা নিশ্চিত হতে পারে না।

    সক্রেটিস মরণশীল-এই উক্তিতে যে অর্থে সক্রেটিস কর্তা সেই একই অর্থে সব মানুষ মরণশীল-এ সব মানুষ কর্তা মনে করার মধ্য দিয়ে অধিবিদ্যক ত্রুটির সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে, কিছু অর্থে এটা মনে করা সম্ভব হয়েছে যে, সক্রেটিস যে স্বতন্ত্র অস্তিত্ব নির্দেশ করে, সব মানুষও সে রকম একটি স্বতন্ত্র অস্তিত্ব নির্দেশ করে। এ কারণেই অ্যারিস্টটল বলতে পেরেছেন যে, এক অর্থে একটি প্রজাতি হচ্ছে এক সারবস্তু। এই উক্তির সীমিত ব্যবহারের ব্যাপারে তিনি সতর্ক থেকেছেন। কিন্তু তার অনুসারীগণ, বিশেষত পরফিরি, সতর্কতা দেখিয়েছেন অল্পই।

    এই ভুলের মধ্য দিয়ে অ্যারিস্টটল যে আরো একটি ভ্রান্তিতে পড়েছেন তা হলো এই যে, তিনি মনে করেছেন একটি বিধেয়র বিধেয় আদি কর্তাটির বিধেয় হতে পারে। যদি বলি, সক্রেটিস গ্রিক, সব গ্রিক হয় মানুষ এখানে অ্যারিস্টটল মনে করেন মানুষ হলো গ্রিক-এর বিধেয়, আর গ্রিক হলো সক্রেটিস-এর বিধেয়, অতএব স্পষ্টতই মানুষ সক্রেটিস-এর একটি বিধেয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে মানুষ গ্রিক-এর বিধেয় নয়। এভাবে নাম ও বিধেয়র মধ্যকার পার্থক্য বা অধিবিদ্যার ভাষায় বললে, বিশেষ ও সার্বিকের মধ্যকার পার্থক্য মুছে ফেলা হয়েছে, যার ফলে দর্শনের ভীষণ ক্ষতি হয়েছে। এর ফলে সৃষ্ট বিভ্রান্তিগুলোর একটি ছিল এই : মনে করা হয়েছে যে, একটি মাত্র সদস্য নিয়ে গঠিত একটি শ্রেণি ওই একটি সদস্যের অনুরূপ। এর ফলে এক সংখ্যা সম্পর্কে কোনো নির্ভুল ধারণা পাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে এবং তা একতা সম্পর্কে সীমাহীন মন্দ অধিবিদ্যার জন্ম দিয়েছে।

    ২. ন্যায়ের অতিমূল্যায়ন : ন্যায় হলো অবরোহমূলক যুক্তির একটি ধরনমাত্র। গণিত, যা সম্পূর্ণ অবরোহমূলক বিষয়, তার ন্যায় নেই বললেই চলে। তবে গাণিতিক যুক্তি নৈয়ায়িক আকারে অবশ্যই লেখা সম্ভব। কিন্তু তা হবে অতিমাত্রায় কৃত্রিম, তাতে করে গাণিতিক যুক্তির অকাট্যতা একটুও বাড়বে না। উদাহরণ হিসেবে নেয়া যাক পাটিগণিত। আমি যদি ১৩ আনা ২ পয়সার জিনিস কিনে ১ টাকার একটি নোট দোকানিকে দিই তাহলে আমার ফেরত পাওনা কত হবে? এই সাধারণ অঙ্কটি নৈয়ায়িক আকারে স্থাপন করা হবে উদ্ভট একটি ব্যাপার এবং তা যুক্তিটির প্রকৃত স্বরূপকে এড়ানোর চেষ্টা করবে। আবার, লজিকের মধ্যে কিছু অ-নৈয়ায়িক অনুমান থাকে, যেমন : ঘোড়া একটি প্রাণী, অতএব একটি ঘোড়ার মাথা হলো একটি প্রাণীর মাথা। সিদ্ধ ন্যায়গুলো বস্তুত সিদ্ধ অবরোহগুলোরই কিছু কিছু। অন্যগুলোর থেকে সেগুলোর কোনো যৌক্তিক অগ্রগণ্যতা নেই। অবরোহ পদ্ধতিতে ন্যায়কে অধিকতর প্রাধান্য দেওয়ার চেষ্টার ফলে দার্শনিকরা গাণিতিক যুক্তির স্বভাব সম্পর্কে বিভ্রান্তির শিকার হয়েছেন। কান্ট-যিনি দেখতে পেয়েছিলেন যে গণিত নৈয়ায়িক নয়-সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিলেন যে, গণিত এমন কিছু যুক্তিবহির্ভূত নীতি প্রয়োগ করে যেগুলোকে তিনি লজিকের নীতিগুলোর মতোই নিশ্চিত মনের করতেন।

    ৩, অবরোহের অতিমূল্যায়ন : জ্ঞানের উৎস হিসেবে অবরোহ পদ্ধতিকে আধুনিক দার্শনিকরা যত গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন, গ্রিকরা তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করতেন। এ ব্যাপারে প্লেটোর চেয়ে অ্যারিস্টটলের দোষ ছিল অপেক্ষাকৃত কম। অ্যারিস্টটল বারবার আরোহর গুরুত্ব স্বীকার করেছেন এবং যথেষ্ট মনোযোগসহ এই প্রশ্ন নিয়ে ভেবেছেন যে, যেখান থেকে অবরোহ শুরু হবে সেই প্রথম প্রতিজ্ঞাটি আমরা কীভাবে জানি? তবে এ রকম প্রশ্ন নিয়ে ভাবা সত্ত্বেও অন্য সব গ্রিকের মতো তিনিও তার জ্ঞানবিষয়ক মতবাদে অবরোহ পদ্ধতিকে অতিরিক্ত প্রাধান্য দিয়েছেন। আমরা জানি যে, জনৈক মিস্টার স্মিথ মরণশীল এবং আমরা মোটামুটি বলতে পারি যে, মিস্টার স্মিথ মরণশীল এ কথা আমরা জানি কারণ আমরা জানি যে সব মানুষই মরণশীল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আমরা যা জানি তা সব মানুষ মরণশীল নয়। বরং আমরা এ ধরনের একটি কিছু জানি যে, দেড় শত বছর আগে জন্মলব্ধ সব মানুষ মরণশীল, এবং দেড় শত বছরের বেশি আগে জন্মলব্ধ প্রায় সব মানুষই তাই। স্মিথ যে মারা যাবেন তা ভাবার কারণ হলো এই। কিন্তু এই যুক্তিটি অবরোহ নয়, বরং আরোহ। অবরোহ-এর চেয়ে এর অকাট্যতা কম। এ থেকে কেবল সম্ভাব্যতাই পাওয়া যায়, নিশ্চিতি পাওয়া যায় না। কিন্তু অন্যদিকে এ থেকে নতুন জ্ঞান পাওয়া যায়, যা অবরোহ থেকে পাওয়া যায় না। লজিক ও বিশুদ্ধ গণিতের বাইরে সব গুরুত্বপূর্ণ অনুমান আরোহমূলক, অবরোহমূলক নয়। ব্যতিক্রম শুধু আইন ও ধর্মতত্ত্ব। এ দুয়ের প্রত্যেকটিই উৎপত্তি লাভ করে একটি প্রশ্নাতীত টেক্সট থেকে, অর্থাৎ সংবিধিবদ্ধ গ্রন্থ থেকে বা ধর্মগ্রন্থাদি থেকে।

    অ্যারিস্টটল ন্যায় সম্বন্ধে আলোচনা করেছেন তার The Prior Analytics গ্রন্থে। এটি ছাড়া তার আরো কিছু রচনা আছে, দর্শনের ইতিহাসে সেগুলোর গুরুত্ব উল্লেখযোগ্য। The Catagories নামক নাতিদীর্ঘ কাজটি সেগুলোর অন্যতম। নয়াপ্লেটোবাদী পরফিরি এ বইটি সম্বন্ধে একটি আলোচনা লিখেছিলেন। মধ্যযুগের দর্শনে সে আলোচনা খুবই উল্লেখযোগ্য প্রভাব ছিল। কিন্তু এ মুহূর্তে আমরা পরফিরিকে গুরুত্ব না দিয়ে শুধু অ্যারিস্টটলকে নিয়ে আলোচনা সীমিত রাখব।

    আমাকে স্বীকার করতেই হবে যে আমি কখনো বুঝতে সক্ষম হইনি অ্যারিস্টটলের বা কান্ট এবং হেগেলের রচনায় ক্যাটাগরি বলে যে শব্দটি পাওয়া যায় তা দ্বারা সঠিক কী বুঝতে পাওয়া হয়েছে বা কী বোঝাত। আমি নিজে মনে করি না যে ক্যাটাগরি শব্দটি দর্শনে কোনো পরিষ্কার ধারণা প্রকাশ করার ক্ষেত্রে কোনোভাবে দরকারি। অ্যারিস্টটলে ১০টি ক্যাটাগরি আছে, যথা : বস্তুসার, পরিমাণ, গুণ, সম্পর্ক, স্থান, কাল, অবস্থান, অবস্থা, ক্রিয়া ও প্রীতি। ক্যাটাগরি শব্দটির একটি মাত্র যে সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তা হলো : এমন কিছু অভিব্যক্তি যা কোনোভাবেই অর্থ উৎপাদনের অংশ নয়। এই সংজ্ঞা দেওয়ার পরেই উপরোল্লিখিত তালিকাটি দেওয়া হয়েছে। এর অর্থ মনে হয় এই যে, প্রত্যেকটি শব্দ, যার অর্থ অন্যান্য শব্দের অর্থের সঙ্গে সংযুক্ত নয়, তা একটি বস্তুসার, বা একটি পরিমাণ বা এ রকম কিছু নির্দেশ করে। দশটি ক্যাটাগরির এই তালিকা কী নীতির ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে সে-ব্যাপারে অ্যারিস্টটল কোনো ইঙ্গিত দেননি।

    বস্তুসার হলো মূলত তাই যা কোনো কর্তার বিধেয় হতে পারে না, বা যা কোনো কর্তার মধ্যে বিদ্যমান থাকে না। একটি বস্তু একটি কর্তার মধ্যে বিদ্যমান বলা হয় তখনই যখন, তা ওই কর্তার অংশ না হলেও, ঐ কর্তা ছাড়া থাকতে পারে না। এ ব্যাপারে দৃষ্টান্ত দেখাতে গিয়ে অ্যারিস্টটল একটি ব্যাকরণগত জ্ঞানের কথা বলেছেন যে জ্ঞান একজন মানুষের মনে বিদ্যমান থাকে এবং এক ধরনের ফরসা রঙের কথা বলেছেন যা একজন মানুষের শরীরে থাকতে পারে। উপরে উল্লিখিত প্রাথমিক অর্থে, একটি বস্তুসার হচ্ছে পৃথক একটি বস্তু বা একজন মানুষ বা একটি পশু। কিন্তু দ্বিতীয় একটি বিবেচনায়, একটি প্রজাতি একটি গন (genus)-অর্থাৎ একজন মানুষ বা একটি পশু-কেও একটি বস্তুসার বলা যেতে পারো। এই দ্বিতীয় বিবেচনাটিকে অমার্জনীয় বলে মনে হয়; পরবর্তীকালের লেখকদের সামনে তা আরো খারাপ অধিবিদ্যার দরজা খুলে দিয়েছে।

    অ্যারিস্টটলের The Posterior Analytics রচনাটি প্রধানত এমন একটি প্রশ্ন সম্পর্কিত যা যেকোনো অবরোহমূলক তত্ত্বকে সমস্যায় ফেলে। প্রশ্নটি হলো, প্রথম প্রতিজ্ঞাগুলো কীভাবে পাওয়া যায়? যেহেতু অবরোহ অবশ্যই কোনো একটি বিন্দু থেকে শুরু করতে হয়, তাই এমন কিছু দিয়ে আমাদের শুরু করতে হয় যা অপ্রমাণিত, যা জানতে হবে প্রত্যক্ষ প্রমাণের দ্বারা নয়, অন্য কোনোভাবে। অ্যারিস্টটলের মতবাদটির বিস্তারিত বর্ণনায় যাব না, কারণ তা সারসত্তা নামক ভাবনাটির ওপরে দাঁড়ানো। তিনি বলছেন, সংজ্ঞা হলো একটি বস্তুর মৌলিক প্রকৃতি সম্পর্কে বিবরণ। আধুনিক যুগের পূর্ব পর্যন্ত সারসত্তার ধারণা অ্যারিস্টটল-পরবর্তী সব দর্শনের একটি নিবিড় অংশ। আমার মতে, সারসত্তার ধারণা অতিশয় জট পাকানো একটি ধারণা, কিন্তু এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। সে কারণেই এ সম্পর্কে কিছু কথা বলা প্রয়োজন।

    মনে হয়, একটি জিনিসের সারসত্তা বলতে বোঝানো হয়েছে ওই জিনিসটির সেইসব বৈশিষ্ট্য, যেগুলো ওই জিনিসটির স্বাতন্ত্র না হারানো পর্যন্ত পরিবর্তিত হয় না। উদাহরণস্বরূপ সক্রেটিসকে নেওয়া যাক। সক্রেটিস কখনো সুখী, কখনো দুঃখী, কখনো সুস্থ, কখনো অসুস্থ। এই বৈশিষ্ট্যগুলো যেহেতু তিনি সক্রেটিস হিসেবে বিলুপ্ত না হয়েই পরিবর্তন করতে পারেন অতএব এগুলো তার সারসত্তার অংশ নয়। কিন্তু অ্যারিস্টটল মনে করেন যে, সক্রেটিস মানুষ-এই মনুষ্যত্ব সক্রেটিসের সারসত্তা। তবে একজন পিথাগোরাসবাদী, যিনি পুনর্জন্মে বিশ্বাস করেন, তিনি এটা স্বীকার করবেন না। আসলে সারসত্তার প্রশ্নটি শব্দাবলির ব্যবহারের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি প্রশ্ন। বিভিন্ন সময়ে নানা ঘটনায় একটি মাত্র বস্তু বা ব্যক্তির প্রকাশ হিসেবে আমরা একই নাম ব্যবহার করি। বস্তুত এটি একটি বাচনিক হাতিয়ার মাত্র। সক্রেটিসের সারসত্তা সেসব বৈশিষ্ট্য নিয়ে গঠিত সেগুলোর অনুপস্থিতিতে আমরা সক্রেটিস নামটি ব্যবহার করতে পারব না। প্রশ্নটি পুরোপুরি ভাষাগত। একটি শব্দের সারসত্তা থাকতে পারে, একটি জিনিসের তা থাকতে পারে না।

    সারসত্তার ধারণার মতো বস্তুসারের ধারণাটি চলে গেছে অধিবিদ্যায়। তা কেবলই একটি ভাষাগত হাতিয়ার। জগৎ বর্ণনা করতে গিয়ে আমরা সক্রেটিসের জীবনের কিছু ঘটনা এবং মিস্টার স্মিথের জীবনের ঘটনার মতো কিছুসংখ্যক ঘটনার বিবরণ দেওয়া সুবিধাজনক দেখতে পাই। এ থেকে সক্রেটিস বা মিস্টার স্মিথ সম্বন্ধে আমাদের এমন ধারণা হয় যা কিছু সময় ধরে টিকে থাকা কিছু একটি নির্দেশ করে। সেটাকে মনে হয় সক্রেটিসের বা মিস্টার স্মিথের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর চেয়ে বেশি সিদ্ধ ও বাস্তব। যদি সক্রেটিস কখনো অসুস্থ হন, আমরা মনে করি যে অন্য সময় তিনি সুস্থ থাকেন। সুতরাং সক্রেটিসের অস্তিত্ব তার অসুস্থতানিরপেক্ষ। বরং অসুস্থতা ব্যাপারটির জন্যই একজন মানুষের অস্তিত্ব দরকার, যিনি অসুস্থতানিরপেক্ষ। বরং অসুস্থতা ব্যাপারটির জন্যই একজন মানুষের অস্তিত্ব দরকার, যিনি অসুস্থ হন। যদি মনে করা হয় যে, সক্রেটিস কখনোই অসুস্থ হন না বা তার অস্তিত্ব প্রমাণের জন্য তার অসুস্থ হবার প্রয়োজন নেই, তা হলেও তার অস্তিত্ব আছে মনে করা হলে তার যে কিছু একটি ঘটেই-এ কথাও ঠিক। সুতরাং তার যা কিছু ঘটে সেসবের চেয়ে তিনি আসলে বেশি নির্ভরযোগ্য নন।

    শুরুত্বের সঙ্গে ভাবা হলে দেখা যাবে বস্তুসার এমন একটি ধারণা যাকে জটিলতা থেকে মুক্ত করা অসম্ভব। একটি বস্তুসারকে গুণাবলির কর্তা মনে করা হয়, এবং তা এমন একটি কিছু যা ওই কর্তার সব গুণাবলি থেকে স্বতন্ত্র। কিন্তু যখন গুণাবলিকে সরিয়ে নেওয়া হয় এবং বস্তুসারকে বস্তুসার দিয়েই কল্পনা করার চেষ্টা করা হয় তখন দেখা যায় কিছুই থাকে না। অন্যভাবে বিষয়টি বললে প্রশ্নটা দাঁড়ায়, একটি বস্তুসার থেকে অন্য একটি বস্তুসারের পার্থক্যটা কী? কী দ্বারা একটি বস্তুসার অন্য একটি বস্তুসার থেকে আলাদা হয়? গুণাবলির পার্থক্য দ্বারা নয়, কারণ বস্তুসারের যুক্তি অনুসারে গুণাবলির পার্থক্য আলোচ্য বস্তুসারগুলোর মধ্যে সংখ্যাগত বিভিন্নতা নির্দেশ করে। সুতরাং দুটি বস্তুসার নিশ্চয়ই স্রেফ দুটি বস্তুসার, যারা নিজের গুণে আলাদাভাবে শনাক্তযোগ্য নয়। তাহলে আমরা কীভাবে নির্ণয় করব যে তারা দুটো এক বা অভিন্ন নয়?

    বস্তুত বস্তুসার হলো বিভিন্ন ঘটনা সগ্রহ করে একত্রিত করার একটু সুবিধাজনক উপায় মাত্র। মিস্টার স্মিথ সম্পর্কে আমরা কী জানতে পারি? যখন আমরা তার দিকে তাকাই তখন একধরনের রং দেখতে পাই, যখন আমরা তাকে কথা বলতে শুনি তখন এক সারি ধ্বনি শুনতে পাই। আমরা মনে করি যে আমাদের মতো তারও চিন্তা ও অনুভূতি আছে। কিন্তু এইসব ঘটনা বাদ দিলে মিস্টার স্মিথ কী? কেবলই একটি কাল্পনিক আঁকশি, যেখানে ঘটনাবলি ঝুলে থাকে বলে মনে হয়। ভর দেওয়ার জন্য পৃথিবীর যেমন একটি হাতির প্রয়োজন পড়েছে, ঘটনাবলির জন্য, আসলে, একটি আঁকশির প্রয়োজন তার চেয়ে বেশি নয়। অনুরূপভাবে, একটি ভৌগোলিক অঞ্চলের ক্ষেত্রে যে কেউ দেখতে পাবে যে, (ধরা যাক) ফ্রান্স শব্দটি একটি ভাষাগত হাতিয়ার মাত্র। ফ্রান্স নামে কোনো জিনিস ওই দেশের কোনো অংশে নেই। মিস্টার স্মিথের ব্যাপারেও তাই। মিস্টার স্মিথ হলো কতকগুলো ঘটনার একটি সমষ্টিবাচক নাম। মিস্টার স্মিথ বলে আমরা যদি অন্য কিছুকে বিবেচনা করি, তবে তা এমন একটা কিছুকে নির্দেশ করবে যা সম্পূর্ণরূপে জানার অযোগ্য এবং সে কারণে আমাদের জ্ঞাত বিষয়গুলো প্রকাশ করার জন্য তা প্রয়োজনীয় নয়।

    এককথায়, বস্তুসার একটি অধিবিদ্যক ভুল। এই ভুলের উৎপত্তি হয়েছে উদ্দেশ্য ও বিধেয়র সমন্বয়ে গঠিত বাক্যাবলির গঠনবিষয়ক আলোচনা থেকে জগতের গঠনসংক্রান্ত আলোচনায় স্থানান্তরের ফলে।

    পরিশেষে বলব, এ অধ্যায়ে অ্যারিস্টটলের যেসব মতবাদ আলোচনা করা হলো তা পুরোপুরি ভ্রান্ত। শুধু ন্যায়-এর আকারগত তত্ত্বটি ছাড়া। কিন্তু তা গুরুত্বহীন। বর্তমানকালে লজিক শিখতে ইচ্ছুক যেকোনো ব্যক্তি যদি অ্যারিস্টটল বা তার যেকোনো শিষ্যকে পাঠ করে তাহলে তার শুধুই সময় নষ্ট হবে। কিন্তু তা সত্ত্বেও অ্যারিস্টটলের লজিকবিষয়ক রচনায় বেশ যোগ্যতার পরিচয় মেলে। বুদ্ধিবৃত্তিক মৌলিকত্ব যখন সক্রিয় ছিল সে সময়ে যদি সেগুলোর আবির্ভাব ঘটত তাহলে মানবজাতি উপকৃত হতো। দুঃখের বিষয়, অ্যারিস্টটলের লজিকের আবির্ভাব ঘটে গ্রিক চিন্তার সৃজনশীল যুগের একেবারে শেষ পর্বে। সে কারণেই তা প্রশ্নাতীত ও প্রামাণিক বলে গৃহীত হয়েছে। যুক্তিশাস্ত্রে মৌলিক চিন্তা ফিরে আসতে যে সময় লেগেছে সে সময়ের মধ্যে অ্যারিস্টটলের দুই সহস্রাধিক বছরের কর্তৃত্ব এমন অবাধ হয়েছে যে তাকে উৎখাত করা খুব কঠিন হয়ে পড়েছে। আধুনিক যুগে বিশেষ করে বিজ্ঞানে, লজিকে বা দর্শনে অগ্রসর হতে গিয়ে প্রত্যেকটি ধাপে অ্যারিস্টটলের অনুসারীদের দিক থেকে তীব্র বিরোধিতার মুখোমুখি হতে হয়েছে।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleআলস্যের জয়গান – বার্ট্রান্ড রাসেল
    Next Article সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    Related Articles

    বার্ট্রান্ড রাসেল

    আলস্যের জয়গান – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025
    বার্ট্রান্ড রাসেল

    প্লেটোর ইউটোপিয়া ও অন্যান্য প্রসঙ্গ – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025
    বার্ট্রান্ড রাসেল

    সক্রেটিসের আগে – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025
    বার্ট্রান্ড রাসেল

    পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাস – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    October 28, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    October 28, 2025
    Our Picks

    সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    October 28, 2025

    অ্যারিস্টটলের পলিটিক্স ও অন্যান্য প্রসঙ্গ – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025

    আলস্যের জয়গান – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }