Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    আজাজেল্‌ – আইজাক আসিমভ

    লেখক এক পাতা গল্প281 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    যুক্তি তো যুক্তিই

    জর্জ এমন কাপুরুষ ছিল না যে, মনে মনে ভাববে, যেহেতু সে খাবারের দাম দিচ্ছে না, সেহেতু, খাবারের সমালোচনা করা তার অধিকারের

    বাইরে। তার সাথে, তার পক্ষে যতটা নরম করে বলা সম্ভব, সে ভাবেই আমার কাছে ব্যক্ত করছিল কিংবা হতেও পারে, আমি যতটা প্রাপ্য বলে মনে করি সেই হিসেবে! যদিও দুটো এক জিনিস নয়।

    ‘খাবারের সঙ্গে সঙ্গে যেগুলো সাজিয়ে দিয়েছে, তা নিকৃষ্টমানের,’ জর্জ বলল, ‘মাংসের বড়া তেমন গরম নয়। হেরিং মাছে লবণ কম। চিংড়ি তেমন মচমচে নয়। চীজ্‌ ভাজা নয়, শয়তান ডিমগুলোতে যথেষ্ট মরিচ দেয়নি—’

    আমি বলি, ‘জর্জ, এটা তোমার তিন নম্বর থালা ভর্তি হয়েছে। আর এক কামড়ও খেলে, তোমাকে পাচক চাপ কমাতে কাটাছেঁড়ায় যেতে হবে। এইসব নিকৃষ্ট খাবার এত খাচ্ছ কেন?

    জর্জ ফুঁসে উঠে বলল, ‘আমি কি নিমন্ত্রণকারীর খাবার প্রত্যাখ্যান করে তার অপমান করব?’

    ‘এটা তো আমার খাবার নয়, রেস্তোরাঁর খাবার।

    ‘এই জঘন্য বাড়ির কর্তার কথা বলছি, বন্ধু, বল আমায়, তুমি কোনো অভিজাত ক্লাবের সদস্য নও?’

    ‘আমি? অনিশ্চিত পরিমাণ পাওনার জন্য একরাশ খরচ কর!’

    ‘আমি বলছি, কোনো উৎকৃষ্ট ক্লাব, যেখানে আমি তোমার সম্মানিত অতিথি হয়ে গেলে, পরিবর্তে মহার্ঘ্য খাদ্য মেলা সম্ভব।’ কিন্তু না, ‘সন্দেহের সুরে বলল, ওটা মন্দ স্বপ্ন। কোন্ ভাল ক্লাব তোমাকে সভ্য করার সমঝোতায় নিজেকে মর্যাদাহানি করবে!’

    ‘যে ক্লাব তোমাকে অতিথিরূপে অনুমোদন দেবে, নিশ্চয়ই আমাকেও অনুমতি দেবে—’ আমি শুরু করেছিলাম, কিন্তু জর্জ তৎপূর্বেই স্মৃতিচারণে ডুবে গেছে।

    ‘আমার মনে পড়ে,’ বল্ল আর তার চোখ চক্‌চক্ করে উঠল, যখন অন্তত মাসে একবার এক ক্লাবে আমি ডিনার করতে যেতাম, সে বিলাসের চূড়ান্ত, উপচে পড়া ব্যুফে টেবিলকে ভারাক্রান্ত করেছে এমন প্রাচুর্য্য প্রাচীন রোমের লুকালাস এর গৌরবময় যুগ থেকে আজ পর্যন্ত কেউ দেখেনি।

    আমার মনে হয়, তুমি নিশ্চয় কারো অতিথি হয়ে বিনা পয়সায় খেয়ে এসেছিলে?’

    ‘জানি না এটা ধরে নেওয়াটাই জরুরী কিনা। তবে দৈবাৎ তোমার ধারণা ঠিক হয়েছে। সে ছিল অ্যালিস্টেয়ার টোবাগো ক্রাম্প ষষ্ঠ, আসল সভ্য এবং তার চেয়ে বেশি দরকারী, প্রায়ই আমাকে নিমন্ত্রণ করত।’

    ‘জর্জ,’ আমি বলি, ‘এটা কি আরেকটি গল্পের সূচনা, যেখানে তুমি আর আজাজেল্ এক সঙ্গে হয়ে, তোমাদের ত্রুটিপূর্ণ প্রচেষ্টায় কোনো গোবেচারা আত্মাকে সাহায্য করতে গিয়ে, দুঃখ ও হতাশায় নিক্ষেপ করেছ?’

    ‘জানি না তুমি ঠিক কী বলতে চাইছ! শুধুমাত্র মানুষকে ভালবাসার খাতিরে আর নিছক দয়াপরবশ হয়ে, আমরা তার মনোবাঞ্ছা পূরণ করেছিলাম অবশ্যই। কিছুটা সর্বাঙ্গ সুন্দর ব্যুফের প্রতি আমার প্রীতির জন্যও বটে। কিন্তু আমাকে শুরু থেকে গল্পটা বলতে দাও।’

    .

    অ্যালিস্টেয়ার টোবাগো ক্রাম্প ষষ্ঠ ‘ইডেন’-এর সভ্য হয়েছিল জন্ম থেকেই। কারণ তার বাবা অ্যালিস্টেয়ার টোবাগো ক্রাম্প পঞ্চম, এক ব্যক্তিগত নিরীক্ষায় জানতে পেরেছিলেন, ডাক্তারের প্রাথমিক পরীক্ষায় শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণ সঠিক এবং সঙ্গে সঙ্গে পুত্রের নাম ক্লাবের খাতায় উঠিয়ে দিয়েছিলেন। অ্যালিস্টেয়ার টোবাগো ক্রাম্প পঞ্চম ঠিক তেমনিভাবে তার পিতা কর্তৃক প্রবেশাধিকার পান আর আরো পিছিয়ে গেলে, বিলক্রামণ অল্প মাতাল অবস্থাতে বৃটিশ নৌবাহিনীতে জবরদস্তি প্রবেশ করতে বাধ্য হন, জাহাজের নাবিকবৃন্দের অনিচ্ছুক সদস্য হিসেবে যখন, ১৬৬৪ তে ওলন্দাজদের থেকে নিউ আমস্টারডাম অবরোধ করা হয়েছিল।

    ইডেন, ঘটনাচক্রে উত্তর আমেরিকার বিশিষ্ট এক ক্লাব। এতই উগ্রচেতনার ক্লাব এটি, যে এর অস্তিত্বের কথা শুধু সভ্যরা আর তাদের কতিপয় অতিথি ছাড়া কেউই জানত না। এমন কি এটির ঠিক ঠিকানাও আমি বলতে পারব না। কারণ সব সময়েই আমি অস্বচ্ছ জানলার এক দুচাকার গাড়িতে চোখ বাঁধা অবস্থায় গিয়েছি। চালক ছিল গাড়ির পিছনে। শুধু এইটুকু বলতে পারি, প্রায় পৌঁছানোর কাছাকাছি, পাথর বাঁধানো রাস্তার ওপর ঘোড়ার খুরের শব্দ হচ্ছিল।

    পূর্ব পুরুষের দিকে হিসেব করলে, যদি ঔপনিবেশিক কাল পর্যন্ত, পিতৃকূল, মাতৃকূল উভয় দিকে বংশধারা বিস্তৃত না থেকে থাকে, তবে ইডেন এর সভ্য হওয়া চলে না। শুধু মাত্র বংশ ধারাবাহিকতাই একমাত্র বাঞ্ছনীয় নয়। কুল মর্যাদায় কোনো কলঙ্ক থাকা চলবে না। জর্জ ওয়াশিংটন সর্বসমর্থনে বহিষ্কৃত হন, যেহেতু অনস্বীকার্যভাবে তিনি তৎকালীন সম্রাটের বিরুদ্ধে গিয়েছিলেন।

    একই চাহিদা অতিথিদের বেলাতেও রাখা হত। কিন্তু তাতে আমি বাদ পড়ি না, অবশ্যই। আমি তোমার মতন একজন প্রথম প্রজন্মের অভিবাসী নই, ডবরুজডা বা হার্জিগোভিনা বা ঐ রকম কোনো বদ্‌খত্ জায়গার। আমরা বংশপরম্পরায় নিষ্পাপ, কারণ আমার পূর্বপুরুষগণ সপ্তদশ শতক থেকে এই দেশের অধিবাসী এবং তারা কেউই বিদ্রোহ বা বিশ্বাসঘাতকতার পাপ করেনি। আমেরিকার জাতীয়তাবোধে বিপ্লব ও নগর যুদ্ধের সময় উভয় পক্ষের সৈন্যবাহিনীর কুচকাওয়াজের সময় নিরপেক্ষভাবে উল্লাস জানিয়েছে।

    আমার বন্ধু অ্যালিস্টেয়ার তার সভ্য পদের জন্য অত্যধিক গর্বিত ছিল। বারবার প্রায়ই আমাকে বলত (তার সঙ্গ ছিল একঘেয়ে। আর একই কথার পুনরাবৃত্তি করত) ‘জর্জ, ইডেন হল আমার সত্তার অস্থি ও সমস্ত শক্তির উৎস, অস্তিত্বের মণিকোঠা। যদি আমার সমস্ত ঐশ্বর্য ও ক্ষমতা আমাকে সব দিত, কিন্তু ইডেন না থাকত, তবে আমি পুরোপুরি ব্যর্থ।’

    অবশ্যই অ্যালিস্টেয়ারের সবই ছিল, যা তাকে ঐশ্বর্য ও ক্ষমতা দিয়েছিল, কারণ ‘ইডেন’ এর সভ্যপদের জন্য আর একটি আবশ্যকীয়তা ছিল, তা হল অঢেল ঐশ্বর্য।

    আর কিছু না হোক, বার্ষিক চাঁদার জন্যই সেটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ছিল। আবার শুধু এটুকুই যথেষ্ট ছিল না। ঐশ্বর্য, তোমার উত্তরাধিকারসূত্রে থাকতে হবে, উপার্জন

    করা চলবে না।

    ডলারের পরিবর্তে কোনো কাজ করার প্রমাণ পাওয়া গেলে, তাকে সভ্যপদ থেকে বিতাড়িত হতে হবে। আমার বাবা কোনোরকম চিন্তা না করে, আমার জন্যে কয়েক নিযুত ডলার রেখে যাননি। যার জন্য আজ আমি ক্লাবের বাইরে, নইলে আমি কিন্তু কখনো অর্থ উপার্জনের জন্য কাজ করার হীনমন্যতায় যাইনি।

    বন্ধু, বলো না যে ‘আমি তা জানি।’ তোমার জানার কোনো উপায়ই নেই।

    কোনও সভ্য যদি চমকপ্রদ উপায়ে নিজের আয় বাড়ায়, যাতে শ্রমের পরিবর্তে অর্থ উপার্জনের প্রশ্ন নেই, স্বভাবত সেখানে আপত্তিও নেই। এ রকম অনেক জিনিস রয়েছে, যেমন স্টক মার্কেটের কুশলতা, আয়কর ফাঁকি দেওয়া, বিক্রেতাদের প্রভাবিত করা, এবং আরো অন্যান্য চতুর পন্থা আছে, যেগুলি ধনী হওয়ার দ্বিতীয় দ্বার।

    এসবই, ‘ইডেন’-এর সদস্যদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এমন ইডেনাইট রয়েছে যারা মুহূর্তের নিষ্কারণ সততার আক্রমণে অর্থ ক্ষতি সয়ে নিয়ে, ধীরে ধীরে উপবাস থেকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়া ভাল মনে করেছে। তবু সভ্যপদ ছাড়তে পারেনি। তাদের নাম আজও চুপি চুপি স্বরে উল্লেখ করা হয় আর তাদের সম্মানার্থে ক্লাবের ঘরে ফলক রাখা আছে।

    না, বন্ধু। তারা সহসভ্যদের কাছ থেকে কিছু ধার নিতেও পারে না। তুমি হয়তো এমনই প্রস্তাব দিতে। ইডেন-এর প্রতিটি সদস্য জানে, তুমি ধনীদের কাছ থেকে ঋণ নিতে পার না, যেখানে এ কারণে, গরীব উদ্বেগ নিয়ে লাইনে অপেক্ষা করে রয়েছে, প্রতারিত হওয়ার সুযোগ পেতে। বাইবেল আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ‘তোমার সঙ্গে সততই দরিদ্রজন রয়েছে,’ এবং ইডেন-এর সদস্যগণ কিছুই নয়, যদি তারা অসাধু হয়।

    এবং তবু, অ্যালিস্টেয়ার পুরোপুরি সুখী ছিল না, কেননা দুর্ভাগ্যের বিষয়, ইডেনের সভ্যপদ তাকে এড়িয়ে যেতে চাইত। আগেই বলেছি, তার সঙ্গ ছিল বিরক্তিকর। তার কথোপকথনের ভাঁড়ার ছিল শূন্য। না ছিল চাতুর্য, না ছিল কোনো বিশেষ ধারণা। প্রকৃতপক্ষে সদস্য পদের সার্বিক বুদ্ধির ভাণ্ডার যেখানে বিদ্যালয়ের নিম্নশ্রেণীর মানে, সেখানেও তাকে উল্লেখযোগ্য নির্বোধ ভাবা হতো।

    ইডেনে ভীড়ের মধ্যে রাতের পর রাত একলা বসে থাকতে থাকতে, তার হতাশা কোথায় পৌঁছেছিল, তুমি কল্পনা করতে পারবে না। কথামালার সমুদ্র যেমন হয়, তাকে ধুইয়ে নিয়ে, শুষ্ক করে ছেড়ে যেত। তবু ক্লাবের একটা রাত্তিরও সে বাদ দিত না। এমন কি ভয়ঙ্কর আমাশায় আক্রান্ত হয়েও, সে ক্লাবে যেতে ছাড়েনি। শুধুমাত্র তার ‘লোহার মানুষ ক্রাম্প’ নামের রেকর্ড বজায় রাখতে। এটা সদস্যদের একটা প্রশংসনীয় দিক, কিন্তু সর্বজন সমর্থিত নয়।

    ইডেনে, আমাকে অতিথিরূপে পাবার সুযোগ প্রায়ই অ্যালিস্টয়ারের হত। আমার বংশপরম্পরা ছিল নিষ্পাপ। অর্থ উপার্জনে আমি প্রত্যাশী নই, এটি প্রমাণিত সত্য, এটা আমার আভিজাত্যের নিদর্শন, সকলের কাছে প্রশংসনীয়। পরিবর্তে উৎকৃষ্ট খাদ্য ও ঘনবুনট বাতাবরণ সেই ক্রাম্পের খরচে। আমাকে তার সঙ্গে কথাবার্তা চালাবার ও যথার্থ রদ্দি রসিকতায় হাসবার কষ্ট করতে হচ্ছিল। আমার সমস্ত হৃদয়ের অন্তস্তল থেকে দরিদ্রকে অনুকম্পা করতে শিখলাম।

    যেভাবেই হোক, কিছু পথ তো থাকা উচিত। যাতে করে তাকে উৎসবের প্রাণপুরুষ, ইডেনের মধ্যমণি করে দেওয়া যেতে পারে, যার সঙ্গে সদস্যরা থাকতে চাইবে। আমি মনে মনে ছকে ফেললাম। বয়স্ক, শ্রদ্ধেয় সব ইডেনাইটরা সান্ধ্য ভোজে অ্যালিস্টেয়ারের পাশে বসার জন্য ঘুষোঘুষি করছে।

    যতই হোক, অ্যালিস্টেয়ার শ্রদ্ধারই প্রতিচ্ছবি এবং ইডেনাইটের যা হওয়া উচিত, সবটাই তাই। সে দীর্ঘ, কৃশকায়। মুখখানা জাবর চিবানো ঘোড়ার মতন। তার লম্বা ও পাতলা সোনালি চুল, বিবর্ণ নীল চোখ আর চিরাচরিত অন্ধ গোঁড়ামির ভোঁতা চাউনি, যার পূর্বপুরুষগণ খুব ভেবেচিন্তে নিজেদের গোষ্ঠির মধ্যেই বিয়ে সারে। মনোযোগ আকর্ষণ করার মতো কিছু বলার বা করার ক্ষমতার একান্ত অভাব দেখা যেত।

    কিন্তু এটা তো করে দেওয়া যেতেই পারে। এতো আজাজেলের এক্তিয়ার।

    .

    একবারই রহস্যময় জগৎ থেকে ডেকে আনার জন্য আজাজেল্‌ বিরক্ত হল না। মনে হয়, সে কোনো ভোজ উৎসবে ছিল, আর তার পালা ছিল বিল মেটাবার। কিন্তু বিল আসার পাঁচ মিনিট আগেই আমি তাকে ডেকে নিয়েছি। সে উচ্চৈঃস্বরে চিৎকার করে ব্যঙ্গের হাসি হাসল কারণ জানইতো, সে মাত্র দুই সে.মি. লম্বা জিন।

    সে বলল, ‘আমি পনেরো মিনিট পর ফিরবো আর ততক্ষণে, অন্য কেউ বিল মেটাবার দায়িত্ব নিয়ে নেবে।’

    বললাম, ‘তোমার অনুপস্থিতির কী হিসেব তুমি দেবে?’

    তার হ্রস্ব উচ্চতায় নিজেকে টান টান খাড়া করল, লেজে মৃদু টান দিয়ে।

    বলল, ‘আমি তাদের সত্যি কথাই বলব। বলব, গ্যালাক্সি বহির্ভূত এক দৈত্য যে অসাধারণ নির্বোধ, তার ভীষণভাবে বুদ্ধির দরকার। তা তুমি এবার আমার কাছে কী চাও?’

    আমি তাকে বললাম, আর অবাক কাণ্ড, সে কেঁদে ফেলল। অন্ততপক্ষে তার চোখ থেকে ছিটকে এল ছোট্ট ছোট্ট লাল ফোঁটা। ভেবেছিলাম, বুঝি চোখের জল। একটা ফোঁটা আমার মুখে ঢুকে গেল, কিম্ভুত আস্বাদ অনেকটা সস্তা লাল ওয়াইনের মতন কিংবা হয়তো সস্তা লাল ওয়াইন অমনই স্বাদের।

    ‘কী দুঃখের ব্যাপার!’ সে বলল।

    ‘আমি একজন যোগ্য ব্যক্তিকে জানি যে, প্রতিনিয়ত অন্যদের দ্বারা নিগৃহীত হয়, যারা তার থেকে অনেক নিকৃষ্ট। আমার মনে হয় না, এর চেয়ে দুঃখের আর কিছু আছে!’

    ‘কে হতে পারে! লোকটি নিগৃহীত, তাইতো।’

    ‘আমি?’ সে বলল, তার ছোট্ট বুক চাপড়িয়ে, তারপর চিঁ চিঁ করে উঠল।

    ‘আমি ভাবতেই পারি না,’ আমি বলি ‘তুমি?’

    ‘নাও হতে পারি।’ সে বলল, ‘কিন্তু সত্যি কথা, একই রকম। তোমার বন্ধু আর কী করে? কোনো অর্থপূর্ণ শখ!’

    ‘হ্যাঁ, সে কৌতুক করে। অথবা চেষ্টা করে। সেগুলো বীভৎস। একবারে টেনে আনে সব, কেউ কথায় লক্ষ্যহীন ঘোরে, তারপর ভুলে যায়। আমি প্রায়ই দেখেছি তার কোনো রঙ্গরসিকতা এক একজন কঠিন হৃদয় পুরুষকেও কাঁদিয়ে দিয়েছে।’

    আজাজেল্ মাথা নাড়ল, ‘মন্দ, অতি মন্দ। ঘটনাক্রমে আমি একজন উৎকৃষ্ট রসিক। তোমাকে আমি তখনকার কথা বলেছি, যখন একজন প্লক্স আর এক জিন্নিরাম নিজেদের মধ্যে রসালাপে মগ্ন ছিল, একজন বলছিল- ‘

    ‘হ্যাঁ, বলেছ,’ অস্বস্তিতে বলে উঠি, ‘কিন্তু আমরা এখন ক্রাম্পের ব্যাপারে আলোচনা করি, এসো।’

    আজাজেল্ বলল, ‘কৌতুক পরিবেশনের মান বাড়াতে কোনো সরল প্রক্রিয়া আছে কি!’

    ‘অবশ্যই, আজাজেল্ বলে, কণ্ঠনালীর গঠনে একটু এদিকওদিক করলেই হয়ে যাবে, অবশ্য তোমাদের মতন অসভ্যদের যদি ওটা থেকে থাকে।’

    ‘হ্যাঁ, রয়েছে। আর তাহলে, অবশ্যই উচ্চারণের কায়দা ভাল।’

    ‘উচ্চারণের কায়দা!’

    ‘নিম্নমানের ইংরাজী। বিদেশীরা, যারা শিশুকাল থেকে ভাষাটা শেখেনি, পরে পড়ে নিয়ে পরিণত বয়সে রপ্ত করেছে, স্বরবর্ণর ভুল উচ্চারণ করবেই করবে। কথা সাজাতে গোলমাল করবে, ব্যাকরণের নিয়ম নীতি ভাঙবে, এই রকম আর কী!’

    আজাজেলের ছোট মুখমণ্ডলে আতঙ্কের ছায়া খেলে গেল। ‘এতো বড় রকমের অপরাধ,’ সে বলল।

    ‘না, আমাদের পৃথিবীতে নয়, আমি বলি, ‘হওয়া উচিত, কিন্তু হয়নি।’

    আজাজেল্ বিষণ্নভাবে মাথা নাড়ল। ‘তোমার বন্ধু কি এই সব দুষ্কর্মের কথা কখনো শুনেছে, যাকে তুমি উচ্চারণের কায়দা বলছো।’

    ‘নিশ্চয়ই। নিউ ইয়র্কের যে কেউ সব সময়, সব রকমের উচ্চারণ শুনছে। এটা শুদ্ধ ইংরাজী যেমন আমার নিজের, যা কদাচই শোনা যায়।’

    ‘আঃ’ আজাজেল্‌ বলল, ‘তাহলে তো মাত্র স্মৃতিকে Scapulate করার অপেক্ষা।’

    ‘স্মৃতিকে কী করতে হবে?’

    ‘Scapulate এক ধরনের ধারালো করে দেওয়া। Scapo শব্দ থেকে এসেছে, যা Zum খেকো dirigin-এর দাঁতকে নির্দেশ করে।’

    ‘আর, সেটা তাকে উচ্চারণের কায়দায় কৌতুক পরিবেশনে সাহায্য করবে?’

    ‘শুধু যে ধরনের উচ্চারণ সে সারা জীবনে শুনে এসেছে। আমার ক্ষমতা তো আর অসীম নয়।

    ‘তাহলে Scapulate করে দাও।’

    .

    সপ্তাহখানেক বাদে আমি অ্যালিস্টেয়ার টোবাগো ক্রাম্প ষষ্ঠকে তিপান্নতম স্ট্রীটে পঞ্চম এভিনিউতে দেখা করে বৃথাই তার মুখে কোনো নবীন জয়ের চিহ্ন খুঁজলাম।

    ‘অ্যালিস্টেয়ার’ আমি বলি, ‘ইতিমধ্যে তুমি কি কোনো কৌতুক পরিবেশন করেছ?’

    ‘জর্জ,’ সে বলল, ‘কেউ শুনবে না। সময় সময় ভাবি, গড়পড়তা সাধারণ লোকের চেয়ে ভাল কিছু রসিকতা আমি পারি না।’

    ‘আচ্ছা, তাহলে আমি তোমাকে বলি। একটা ছোটখাটো জমায়েতে যেখানে আমার জানাশোনা আছে, তুমি আমার সঙ্গে এসো। আমি একটা কৌতুকপ্রদ ভূমিকা দিলে, তুমি উঠে দাঁড়াবে আর যা মনে আসবে বলে যাবে।

    বন্ধু, নিশ্চিত করে বলতে পারি, তাকে এটা করায় প্ররোচিত করা সহজ ছিল না। আমার চুম্বকতুল্য ব্যক্তিত্বের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে হল। যদিও পরিণামে আমার জিত।

    আমি তাকে একটা অত্যন্ত নোংরা জায়গায় নিয়ে গিয়েছিলাম। জায়গাটার সবচেয়ে ভাল বর্ণনা দেওয়া যাবে, এই বলে, তুমি যেখানে যেখানে আমাকে ডিনারে নিয়ে যাও, সেইসব জায়গার কথাই মনে করিয়ে দেয়।

    ম্যানেজারের সঙ্গেও আমার চেনাজানা ছিল। সেই একটা মস্ত সুবিধা আর তাকে আমি প্ররোচিত করলাম, যাতে আমাকে পরীক্ষার সুযোগটা দেয়।

    রাত এগারোটায় যখন জান, ভোজন উৎসব চরমে, আমি উঠে দাঁড়ালাম, আর জোর মহিমায় দর্শকদের ভয় পাইয়ে দিলাম। মাত্র এগারোজন লোক উপস্থিত ছিলেন তবে আমার মনে হল, পরীক্ষা করার পক্ষে সংখ্যা যথেষ্ট।

    ‘ভদ্র মহোদয়া ও ভদ্রমহোদয়গণ,’ আমি বললাম, ‘এখানে আমাদের মধ্যে উপস্থিত রয়েছেন মহান বুদ্ধিজীবী, আমাদের ভাষার কর্ণধার, যার সঙ্গে সবাই পরিচিত হতে চাইবেন। ইনি হচ্ছে অ্যালিস্টেয়ার টোবাগো ক্রাম্প ষষ্ঠ, আর কলম্বিয়া কলেজের ইংরেজির Emersonian অধ্যাপক এবং ‘কেমন করে প্রকৃত ইংরাজি বলতে হয়’ পুস্তকের রচয়িতা। অধ্যাপক ক্রাম্প, আপনি একটু উঠে আসবেন, আর সমবেত বুদ্ধিজীবীদের উদ্দেশে কিছু বলবেন?’

    ‘ক্রাম্প উঠে দাঁড়াল, খানিক বিহ্বল দেখাচ্ছিল ওকে। উচ্চারণের কায়দায় সে বল্‌ল ‘লিসন ডেস্ক ইউ আল ভার মচ্ ভার মচ্।’ (অর্থাৎ, থ্যাঙ্ক ইউ অল, ভেরি মাচ, ভেরি মাচ)

    আচ্ছা বন্ধু। আমি তোমাকে কৌতুকী বলতে শুনেছি, যা ইড্ডিস উচ্চারণের মতো শোনায়, তাতে লোকে তোমাকে হার্ভার্ড স্নাতক ভেবে বসবে, ক্রাম্পের তুলনাতে।

    আসলে, একজন ইংরাজি Emersonian অধ্যাপককে কেমন দেখতে হবে আশা করা যায়, ক্রাম্পকে একদম তেমনই দেখতে। তার হতাশা-পীড়িত বিধ্বস্ত মুখের দিকে তাকিয়ে আর বিশুদ্ধ ইড্ডিস উচ্চারণ শুনে, প্রত্যেকে নিঃশ্বাস ফেলে একসাথে। আর সাথে সাথে সুরামিশ্রিত পেঁয়াজের গন্ধে ঘরের বাতাস এমন ভরে উঠল, বিশ্বাস করতে পারবে না। তার সাথে হাস্যরোল, পরে যা হিষ্টিরিয়ায় পরিণত হল।

    মৃদু আশ্চর্যের ছায়া ঘুরে গেল, ক্রাম্পের মুখমণ্ডলে। সে আমাকে সুইডিশ গানের সুরে বলতে লাগল, আমি ঠিক সেটাই গাইতে চাইছি না।

    ‘আমি সচরাচর এমন তীব্র প্রতিক্রিয়া পাই না।

    ‘কিছু মনে কোরো না, চালিয়ে যাও।’

    তার মানে, হাসি থামার জন্য অপেক্ষা, আর তারপর সে কৌতুক পরিবেশন শুরু করল, স্কটিশ উচ্চারণে, কক্‌নি ঢঙে, মিট্টেলইউরোপীয়ান কায়দায়, স্প্যানিশ এবং গ্রীক উচ্চারণের কায়দায় (তার বিশেষত্ব ছিল পরিষ্কার ব্রুকলিনিজ্ স্টাইলে) আর বন্ধু, তোমার তো মহান্ গ্রাম্য উচ্চারণ!

    তারপর থেকে আমি তাকে প্রত্যেক সন্ধ্যায় ইডেনে কয়েক ঘণ্টা কাটাতে নিয়ে যেতাম আর নৈশভোজনের পর আমি সেই প্রতিষ্ঠানে তাকে সঙ্গে নিতাম। কথায় কথা বাড়ে। প্রথম রাত্রিতে যেমন বলেছিলাম শ্রোতামণ্ডলী ছিল স্বল্প, কিন্তু বাইরে থেকে লোকেরা প্রবেশ করার জন্য হট্টগোল বাধিয়ে দিত, কিন্তু কোনো ফল হত না।

    ক্রাম্প এটা খুব শান্তভাবে গ্রহণ করল। তাকে হতাশ দেখাচ্ছিল।

    ‘দেখ, এইসব চমৎকার মালমশলা, গেঁয়ো লোকদের বিতরণ করার কোনো মানেই নেই। আমার দক্ষতা আমি আমার ইডেনের সভ্য বন্ধুদের দেখাতে চাই। ওরা আমার কৌতুকী শুনত না, কারণ আমি আঞ্চলিক বাচনভঙ্গীতে কখনো মুখ খুলিনি। আসলে আমি বুঝিনি, আমি পারতাম, যা দেখা যাচ্ছে তা হল অবিশ্বাস্য আত্মমূল্যায়নের অভাব, যা আমার মতন একজন চতুর্থ ও প্রকৃত রসিক পুরুষকে ঘায়েল করতে পারে। শুধুমাত্র এই কারণে যে, আমি বলিয়ে কইয়ে নই এবং নিজেকে সামনে ঠেলে দিতে পারি না।

    ইডেনের সভ্যদের ঐশ্বর্যের কথা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজারকে বলেছিলাম, তবে তারা যতই ধনী, ততই হিসাবী, সে কথার উল্লেখ করিনি। ম্যানেজার একটু গড়িমসি করে, সৌজন্য টিকেট পাঠিয়ে দিল। তাদের প্রলুব্ধ করতে, এটা আমারই উপদেশ ছিল, কারণ ভালভাবেই জানতাম, প্রকৃত ইডেনাইট কখনোই ফ্রি শো বাদ দিতে পারবে না। বিশেষত বুদ্ধি করে গুজব ছড়িয়ে দিয়েছিলাম যে, ব্যবসা সংক্রান্ত চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।

    দলে দলে সদস্যদের দেখা গেল। এই দৃশ্যে ক্রাম্পেরও বুক ফুলে উঠল 1

    ‘এখন আমি পারি,’ সে বলল, ‘আমার কোরিয়ান উচ্চারণের কায়দা জানা আছে,

    তাতে সব একেবারে কাত হয়ে পড়বে।

    বিশ্বাস করা শক্ত হলেও, তার উচ্চারণের কায়দায় দক্ষিণী টান এবং Maine নাকি সুরের ঢঙ দুইই আসত।

    মাত্র কয়েক মিনিট, ইডেনের লোকজন প্রস্তর তুল্য নিস্তব্ধতায় বসেছিল আর আমার ভয়ানক আশঙ্কা হচ্ছিল। তারা ক্রাম্পের সূক্ষ্ম কৌতুকসমূহ বুঝছিল না। কিন্তু তারা বিস্ময়ে সম্মোহিত হয়ে গিয়েছিল আর বিস্ময় উবে যাওয়া মাত্র, সবাই হাসতে আরম্ভ করল।

    বিশাল ভুঁড়ি সকল কাঁপছিল। নাকের ডগায় আটকে থাকা কেতাদুরস্ত চশমা গড়াগড়ি খাচ্ছিল, হাওয়ায় উড়ছিল মাংসের চপ। অস্বাভাবিক জোরে বকবকানি থেকে স্যাঁতসেঁতে অস্পষ্ট, যত রকমের সম্ভাব্য কিম্ভুত আওয়াজ হতে পারে, যা জীবনকে বীভৎস করে তুলতে পারে, কিছুই বাদ ছিল না।

    এই যথার্থ সমর্থনে ক্রাম্প ফুলে উঠল আর ক্রাম্প সাফল্যের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে, জেনেও ম্যানেজার পরোয়া করল না। বিরতির সময়ে দৌড়ে গেল ক্রাম্পের কাছে। বলল, ‘শোনো বাবা, শোনো, আমি জানি তুমি তোমার কলা প্রদর্শনের সুযোগ চেয়েছিলে মাত্র। আর লোকে যাকে অর্থ বলে সেই নোংরা বস্তুর অনেক ওপরে রয়েছ তুমি। কিন্তু আমি আর অনুমতি দিতে পারি না। আমাকে বোকা বল, আমাকে পাগল বল। কিন্তু এইখানে, এইখানে বাবা, এই চেকটা নাও। এটা তোমার পারিশ্রমিক। প্রতিটি পেনী, মনের খুশিতে ব্যয় কর।’

    আর আদর্শ এন্টারপ্রনিওর এর বদান্যতায় যে প্রতিদানে কোটি দাবি করে, সে ক্রাম্পের হাতে পঁচিশ ডলারের চেক ধরিয়ে দিল।

    আর আমি যেমন দেখেছি, সেই হল শুরু। ক্রাম্প যশ ও সন্তোষের শিখরে উঠে গেল, নৈশ ক্লাববন্ধনীর মধ্যমণি আর সব বোদ্ধাদের প্রশংসার পাত্র।

    অনেকেই তার ওপর অর্থ ঢালল। পূর্বপুরুষদের অর্থ প্রতারণার ব্যবসায়ের দরুন, যেহেতু সে ক্রোয়েসাসের স্বপ্নের চেয়েও ধনী ছিল, তার কিছুই দরকার হয়নি। সমস্তই, সে তার ব্যবসার ম্যানেজারকে দিয়ে দিয়েছে। সংক্ষেপে আমাকে।

    আমি জর্জের দিকে ব্যঙ্গভরে তাকালাম। যেহেতু তোমার কোটিপতি হতে কোটি টাকার ঘাটতি রয়েছে, জর্জ, আমার মনে হয়, তুমি এবার বলতে চাইবে সব স্বপ্ন।’

    ‘মোটেই নয়’ উগ্রভাবে ফুঁসে উঠল জর্জ। ‘গল্পটা যথার্থই সত্য, যেমন যেমন প্রতিটি শব্দ উচ্চারণ করেছি, তেমন। আর শেষে আমি সেইটুকুই ছকে দিয়েছি, যা ঘটতে পারত। যদি অ্যালিস্টেয়ার টোবাগো ক্রাম্প ষষ্ঠ, একটা আকাট নির্বোধ না হত।

    ‘সত্যি, নির্বোধ!’

    ‘নিশ্চয়ই। তুমিই বুঝে নাও।’

    মহান দানশীলতার দর্পে, সে যদি ঐ পঁচিশ ডলারের চেকটা ফ্রেমে বাঁধিয়ে, ইডেনে এনে হাবার মতন সর্বসমক্ষে প্রদর্শন না করত। তখন তো সদস্যদের বিকল্প কোনো রাস্তা ছিল না। সে অর্থ উপার্জন করেছে। পারিশ্রমিক নিয়েছে। তারা ওকে বহিষ্কার করতে বাধ্য। ক্লাব থেকে বিতাড়িত হয়ে, বঞ্চনার দুঃখে মারাত্মক হার্ট অ্যাটাকের শিকার হল। নিশ্চয়ই এ দুটোর কোনোটাই, আমার বা আজাজেলের অপরাধ নয়।

    ‘কিন্তু ও যদি চেকটা বাধিয়ে ফেলেছিল, তবে তা অর্থ উপার্জন করা হল না’।

    জর্জ কর্তৃত্বের ভঙ্গীতে ডান হাত ওঠাল, আর বাঁহাত দিয়ে সান্ধ্য ভোজনের বিলটা আমার দিকে ঠেলে দিল, ‘এটা হচ্ছে নীতিবোধের কথা। বলেছিলাম না, ইডেনাইটরা ধর্মে গোঁড়া। অ্যাডাম যখন ইডেন থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিল, তখন ঈশ্বর বলেছিলেন, তখন থেকেই তাকে জীবিকা নির্বাহের জন্য কাজ করতে হবে। আমার মনে হয়, সঠিক কথাগুলো ছিল, ‘তোমার মুখের ঘামে, তুমি রুটি খাবে।’

    এটারই বিপরীত তত্ত্ব হলো, যদি তুমি জীবিকা নির্বাহের জন্য কাজ কর, তবে ইডেন থেকে বিদায় নিতে হবে।

    যুক্তি তো যুক্তিই।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleব্ল্যাক ফেয়ারি টেইল – অৎসুইশি
    Next Article I, রোবট – আইজাক আসিমভ

    Related Articles

    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    ভয় সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    কিশোর অ্যাডভেঞ্চার সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    প্রকাশ্য দিবালোকে – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 18, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    তারপর কী হল – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 17, 2025
    মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    শর্ম্মিষ্ঠা নাটক – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    November 11, 2025
    সত্যজিৎ রায়

    মানপত্র সত্যজিৎ রায় | Maanpotro Satyajit Ray

    October 12, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }