Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    আজাজেল্‌ – আইজাক আসিমভ

    লেখক এক পাতা গল্প281 Mins Read0
    ⤶

    খোশ খেয়ালের উড়ান

    জর্জের সাথে ডিনার করার সময়, আমি খেয়াল রাখি, কখনো ক্রেডিট কার্ডে বিল চোকাই না। নগদ দিই, যাতে ফেরতটা তুলে নেওয়ার সুন্দর অভ্যাসের সদ্ব্যবহার জর্জ করতে পারে। অবশ্যই সতর্ক থাকি, যাতে ফেরত পাওনাটা খুব বেশি না হয়, আর পৃথকভাবে বখশিশ দিয়ে রাখি।

    আজকের উপলক্ষ্যে আমরা বোটহাউসে লাঞ্চ করলাম আর সেন্ট্রাল পার্কের মধ্যে দিয়ে হেঁটে ফিরছিলাম। সুন্দর দিন একটু গরমের দিকেই, আমরা ছায়ার নিচে একটা বেঞ্চে বসে আরাম করছিলাম।

    জর্জ গাছের ডালে একটা পাখি দেখছিল, যেভাবে পাখিটা দেহ কোঁচকায়। পাখিটা উড়ে যাওয়া পর্যন্ত জর্জ তাকিয়ে দেখল।

    তারপর বলল, ‘বালক বয়সে, আমার খুব রাগ হত, ওরা কেমন বাতাসে হুস্ করে চলে যাচ্ছে, আর আমি পারতাম না।’

    আমি বলি, ‘আমার ধারণা প্রত্যেক শিশুই পাখিদের হিংসে করে। আর বড়রাও। তবু মানুষ তো উড়তে পারে। আর তা পারে, পাখির চেয়ে অনেক দ্রুতগতিতে। বিমান দেখ, পৃথিবী পাক দিয়ে আসছে নয় দিনে, না থেমে এবং একবারই জ্বালানি ভরে। কোনো পাখি তা পারে না।

    ‘পাখি কী চায়?’ জর্জ সন্তোষের সঙ্গে বলল।

    ‘আমি উড়ন্ত যানে বসে যাওয়ার কথা বলছি না, বা গ্লাইডারে ঝুলন্ত হয়েও নয়। ওগুলো তো প্রযুক্তিগত সমঝোতা। আমি বলতে চাইছি, নিয়ন্ত্রণে থেকে তোমার বাহু লাগিয়ে ধীরে ধীরে ওপরে ওঠা, ইচ্ছামতন ঘোরা।’

    দীর্ঘশ্বাস ফেললাম, ‘তার মানে বলছে অভিকর্ষ মুক্ত। আমি এক সময়ে স্বপ্ন দেখেছিলাম জর্জ। স্বপ্ন দেখেছিলাম, আমি শূন্যে লাফাতে পারি, আর ধীরগতি হস্ত সঞ্চালনে হাল্কাভাবে আস্তে আস্তে নেমে আসছি। অবশ্যই জানতাম ওটা অসম্ভব, সে জন্য ধরে নিলাম আমি স্বপ্ন দেখছি। তারপর স্বপ্নের মধ্যেই মনে হল জেগে গিয়েছি আর দেখলাম আমি বিছানায়। বিছানা ছেড়ে নেমে দেখলাম, আমি এখনো বাতাসে বেড়াতে পারছি। আর এখন যখন আমার মনে হচ্ছিল, আমি জেগে রয়েছি, আমার বিশ্বাস ছিল, আমি করতে পারবই। আর তারপর যখন সত্যি সত্যি জেগে উঠলাম আর দেখলাম, চির দিনের জন্য আমি অভিকর্ষে বন্দী। কি যে হারানোর অনুভূতি হয়েছিল। কী তীব্র হতাশা বোধ। অনেক দিন কাটিয়ে উঠতে পারিনি।

    আর তার সঙ্গে সঙ্গে জর্জ বলল, ‘আমি আরো মন্দ কিছু—’

    ‘তাই নাকি? তুমিও একই রকম স্বপ্ন দেখেছিলে, তাই? শুধু আরো বড়, আরো সুন্দর?’

    ‘স্বপ্ন! আমি স্বপ্নের সঙ্গে কেনাবেচা করি না। ওটা আমি তোমার ঘ্যানঘেনে লিপিকারের জন্য ছেড়ে দিয়েছি। আমি বাস্তবের কথা বলছি।’

    ‘তার মানে বলছ, তুমি সত্যি সত্যি উড়েছিলে? আমাকে কি বিশ্বাস করতে হবে, তুমি মহাকাশযান চেপে কক্ষপথে ঘুরেছো?’

    .

    ‘আমার বেশির ভাগ বন্ধুই’ (জর্জ বলল) ‘বুদ্ধিজীবী আর পেশাদার। আর হয়তো তুমি নিজেকে তাই মনে করতে পার, তবে বালডুর তা ছিল না। সে ছিল এক ট্যাক্সি ড্রাইভার, তেমন প্রথাগত শিক্ষা হয়তো ছিল না, কিন্তু বিজ্ঞানে গভীর অনুরাগ ছিল।

    আমরা আমাদের প্রিয় পানশালায় অনেক সন্ধ্যা কাটিয়েছি, সুরাপান করে আর বিগ ব্যাং, তাপবলবিদ্যার তত্ত্ব, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদি আলোচনা করে। এই সমস্ত রহস্যজনক তত্ত্ব ব্যাখ্যা করায়, সে সব সময়ে আমার প্রতি কৃতজ্ঞ ছিল আর আমার প্রতিবাদ সত্ত্বেও, বিল তুলতে সতত তৎপর থাকত।

    তার ব্যক্তিত্বের একটাই খুঁত ছিল, সে ছিল এক নাস্তিক। আমি তোমার দার্শনিক নাস্তিকের কথা বলছি না। যেকোনো অতিপ্রাকৃত ব্যাপারই প্রত্যাখ্যান করে, যেকোনো ধর্মনিরপেক্ষ মানবিক সংস্থায় যোগদান করে এবং যে নিজেকে সতর্কতার সঙ্গে এমন ভাষায় প্রকাশ করে, যে পত্রিকায় প্রকাশিত নিবন্ধের হয় কিছুই বোঝা যায় না, নতুবা কেউই পড়ে না। এতে আর কার কী ক্ষতি।

    আমি বলতে চাইছি, পুরনো দিনের গ্রাম্য ভাষায় এক বজ্জাৎ গোঁয়ার বলা যাবে। সেই সমস্ত বিষয় নিয়ে ‘পাবে’ বসে লোকদের সঙ্গে তর্ক লাগিয়ে দিত, যে বিষয়ে সেও কিছু জানে না, অন্যরাও আর সকলে মিলে তর্কাতর্কিতে অশ্লীল গালিগালাজে পৌঁছে যেত। ওটা কোনো হাল্কা যুক্তিতর্কের অনুশীলন নয়। বিশেষ যুক্তিতর্ক চলতো এইভাবে :

    ‘আচ্ছা, তুমি যদি এতই স্মার্ট, বুদ্ধ’ বালাডুর বলতো ‘তবে বল ‘কেন’ কেন পত্নী লাভ করেনি।’

    ‘তাতে তোমার কী!’ তার উপদেষ্টা বলল!

    ‘কারণ বাইবেল অনুসারে ইভই ছিল একমাত্র স্ত্রীলোক, সে সময়’ সে বলল। ‘তুমি কী করে জানলে?’

    ‘বাইবেল বলেছে তাই।’

    ‘বলে নি। দেখাও, কোথায় বলেছে,’

    ‘এই সময়ে সারা পৃথিবীতে একমাত্র রমণী ছিল ইভ।’

    ‘ওটা বোঝাই যায়।’

    ‘বোঝাই যায়! লাথি মারি।’

    ‘ওঃ, আচ্ছা!’

    ‘আচ্ছা!’ আমি বালডুরের সঙ্গে যুক্তিতে যেতাম, কিছু শান্ত মুহূর্তে।

    ‘বালডুর,’ আমি বলতাম, ‘বিশ্বাসের বিষয় নিয়ে তর্ক করায় কোনো লাভ নেই। এতে কোনো সিদ্ধান্তে আসা যায় না। শুধু শুধু অসন্তোষের সৃষ্টি হয়।’

    বালডুর লড়াইয়ের মেজাজে বলতো, ‘এটা আমার নাগরিক অধিকার, মিথ্যাচারের মধ্য যেতে চাই না, বলতেও চাই না।’

    ‘অবশ্যই’ আমি বলি, কিন্তু কোনো একদিন, কোনো এক ভদ্রলোক হয়তো সুরাপানে বিভোর হয়ে তোমাকে মেরেই বসবে, প্রশাসনতন্ত্র মনে করার আগেই

    ‘এই সব লোকজনেরা’ বালডুর বলল, ‘এক গালে চড় খেলে, অন্য গাল বাড়িয়ে দেবে। বাইবেলে এমনই বলা আছে। বলা আছে, শয়তানের সঙ্গে অকারণ হৈ চৈ করো না। তাকে ছেড়ে দাও!

    ‘তারা ভুলে যেতে পারত।’

    ‘তারা যদি ভুলেই যায়, তাতেই বা কি? আমি নিজে সামলে নিতে পারি।’

    আর যথার্থই সে তা পারত, কারণ সে ছিল মস্ত গাট্টাগোট্টা। না দেখলে মনে হত, বদলা নেবার জন্য যত ঘুষোঘুষিই হোক না কেন, সব কিছুই থামিয়ে দিতে পারে।

    ‘আমি নিশ্চিত, তুমি পার।’ আমি বলি, ‘কিন্তু ধর্ম নিয়ে তর্কাতর্কিতে, সাধারণত অনেকেই বিরুদ্ধে চলে যাবে, অন্যদিকে একমাত্র তুমি। একসাথে ঐকতানে একদিকে একডজন লোক তোমাকে একা মন্ড বানিয়ে দিতে পারে।

    তাছাড়া আমি আরো বললাম, ‘ধরে নাও, কোনো ধর্মীয় যুক্তিতে তুমি জিতলে। তাতে কোনো এক ভদ্রলোকের বিশ্বাস হারানোর কারণ হলে তুমি। তুমি কি সত্যিই ভাব, এই ধরনের ক্ষতির জন্য তোমার নিজের দায়ী হওয়া উচিত?’

    বালডুরকে ক্লিষ্ট দেখাল। কেন না, অন্তরে সে দয়ালু। সে বলল, ‘ধর্মের প্রকৃত স্পর্শকাতর বিষয়গুলি সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করি না। আমি Cain অথবা Jonah কে নিয়ে বলি, তিমির মধ্যে তিনদিন বাস বা জলের ওপর হাঁটা নিয়ে।

    আমি ইতর মন্দ কিছু বলি না। আমি কখনো সান্তা ক্লজের বিরুদ্ধে কিছু বলিনি। বলি কি! শোনো, একবার আমি একজনকে উচ্চৈঃস্বরে বলতে শুনেছি, সান্তাক্লজের মাত্র আটটা বল্গা হরিণ আছে আর রুডলফ্ নামের কোনো রাঙা নাকের বল্লাহরিণই কখনোই তার স্লেজ টানত না।’

    আমি বললাম, ‘তুমি ছোট বাচ্চাদের দুঃখী করতে চাও!’

    ‘আমি কখনো ফ্রস্টি আর স্নোম্যান এর বিরুদ্ধেও কাউকে কিছু বলতে দেব না।’

    এ ধরনের সচেতনতা আমাকে বিচলিত করল। তাকে বললাম, ‘তুমি কীভাবে এ দেশে এসেছো বালডুর? কী তোমাকে এমন ক্ষ্যাপার মতন অবিশ্বাসী করে তুলেছে?’

    ‘দেবদূতেরা, গভীর ভ্রূকুটি নিয়ে সে বলল।

    ‘দেবদূতেরা?’

    ‘হ্যাঁ। যখন আমি নিতান্তই শিশু আমি দেবদূতের ছবি দেখেছিলাম। তুমি কখনো দেবদূতের ছবি দেখেছ?

    ‘অবশ্যই’।

    ‘তাদের ডানা আছে। তাদের বাহু আছে, পা আছে, আবার পিঠের ওপর বড় বড় পাখা। শিশুকালে আমি বিজ্ঞানের বই পড়তাম। তাতে রয়েছে, প্রতিটি প্রাণীর একটা শিরদাঁড়া ও চারটি প্রত্যঙ্গ থাকে। তাদের চারটে সাঁতারাবার পাখনা বা চারটে পা বা দুটো হাত দুটো পা অথবা দুটো পা দুটো ডানা।

    সময়ে সময়ে তারা দুটো পিছনের পা খোয়াতে পারে, যেমন তিমির হয়েছিল, বা সামনের দুটো পা নেই। যেমন কিউই, কিংবা চারটেই অনুপস্থিত, যেমন সাপ। কিন্তু কারোই চারের বেশি থাকে না। তাদের শিরদাঁড়া রয়েছে। নেই কি? তারা কীট- পতঙ্গ বা অন্য কিছু?

    আমি মাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, এটা কেমন করে হলো। মা বললেন, ‘চুপ কর।’ সেই থেকে, ঐ ধরনের নানান চিন্তা আমার মনে আসে।’

    আমি বলি, ‘আসলে বালডুর, তুমি ঐসব প্রতিরূপ, আক্ষরিক অর্থে নিও না। ডানা দুটো প্রতীকস্বরূপ। ওগুলো শুধু বুঝিয়ে দিচ্ছে, দেবদূতরা কত দুরন্ত গতিতে এদিক ওদিক যেতে পারত।

    ‘ওঃ, আচ্ছা!’ বাহাদুর বলল, ‘তুমি যে কোনো সময় ঐ বাইবেলের লোকগুলোকে জিজ্ঞেস করে দেখ, দেবদূতের ডানা আছে কিনা। তারা বিশ্বাস করে, দেবদূতের ডানা আছে। ছয়টা প্রত্যঙ্গ বোঝবার মতো বুদ্ধি তাদের নেই। পুরো ব্যাপারটাই বোকা বোকা। তাছাড়াও, এই দেবদূতেরা আমাকে ভাবায়। তারা উড়তে পারত, ভাবা হচ্ছে, তবে আমিই বা কেন না পারবো? ওটা ঠিক নয়।’

    তার নিচের ঠোঁট বেরিয়ে এল, মনে হল, তার চোখে জল। আমার নরম হৃদয় বিগলিত হল, তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা খুঁজতে লাগলাম।

    ‘যদি তাই-ই হয়, বালডুর,’ আমি বলি, যখন তুমি মারা যাওয়ার পর স্বর্গে যাবে, তুমি মাথার পিছনে জ্যোতির্বলয় ও আরেকটি বীণা হাতে নিয়ে, তুমিও উড়তে পারবে’

    ‘ঐ সমস্ত রাবিশ, তুমি বিশ্বাস কর, জর্জ!’

    ‘না, ঠিক তা নয়। কিন্তু বিশ্বাস করলে সান্ত্বনা পাওয়া যায়। তুমিও চেষ্টা কর না কেন?’

    আমি করতে যাচ্ছি না, কেন না এটা বিজ্ঞানভিত্তিক নয়। সারাজীবন ধরে, আমি উড়তে চেয়েছি। ব্যক্তিগতভাবে আমি, আমার দুই বাহু। আমার মনে হয়, বিজ্ঞান ভিত্তিক কোনো পন্থা রয়েছে, যাতে এই পৃথিবীতেই আমি নিজে নিজে উড়তে পারব।

    আমি তাও তাকে সান্ত্বনা দিতে চাইছিলাম। অসতর্কভাবে, কারণ হয়তো আমার সুরা পানে পরিমিত মাত্রা আট পেগ বেশি হয়ে গিয়েছিল, ‘আমি নিশ্চিত, কোনো উপায় নিশ্চয় আছে।’

    সে আমার ওপর সন্দেহজনক ও সামান্য রক্তিম চক্ষু স্থাপন করে বলল, ‘মস্করা হচ্ছে! তুমি বালসুলভ এক সদিচ্ছার মজা ওড়াচ্ছ?’

    ‘না, না’ আমি বলি, তার তক্ষুনি আমার মনে এল সে হয়তো এক ডজন পানীয় চড়িয়েছে আর তাতে তার ডান হাতের মুঠি অপ্রীতিকরভাবে ঘুরছে,

    ‘কখনো, আমি শৈশবের সকল বাসনা নিয়ে ঠাট্টা তামাশা করতে পারি? কিংবা পরিণত বয়সের আবেগ। আমি শুধু জানাতে চেয়েছি, একজন বিজ্ঞানী আছেন, যিনি হয়তো কোনো ব্যবস্থা জানেন।

    তাও মনে হল, সে আমার সঙ্গে ‘যুদ্ধং দেহি’ ভূমিকায় রয়েছে।

    ‘তুমি তাকে জিজ্ঞেস কর,’ সে বলল, ‘আর আমাকে জানাও, সে কী বলছে। যারা আমার মজা ওড়ায়, আমি তাদের পছন্দ করি না। এটা ঠিক না। আমি তোমাকে নিয়ে ঠাট্টা করি না, করি কি? আমি কখনও বলি না, তুমি বিল ওঠাও না।’

    কথাবার্তা বিপজ্জনক দিকে মোড় নিচ্ছে, আমি তাড়াতাড়ি বলে উঠি ‘আমি আমার বন্ধুর সঙ্গে, পরামর্শ করতে যাচ্ছি। চিন্তা করো না। আমি সব ঠিক করে ফেলবো।’

    মোটের উপর চিন্তা করে নিলাম, করে ফেলাই ভালো। আমি চাই না, আমার মুফতে সুরাপান বন্ধ হয়ে যাক। আর আমি এও চাই না, যে আমি বালডুরের অসন্তোষের কারণ হই।

    বালডুর বাইবেলের এইসব উপদেশবাণী বিশ্বাস করে না, যাতে বলা আছে, শত্রুদের ভালবাস, যারা তোমায় অভিশাপ দেয়, তাদের তুমি আশীর্বাদ দাও, আর যারা ঘৃণা করে, তাদের মঙ্গল কর। বালডুর তাদের চোখ ঘুঁচিয়ে দিতে বিশ্বাস করে।

    অতএব আমি আমার ভিন্ন জগতের বন্ধু আজাজেলের সঙ্গে পরামর্শ করলাম। তোমাকে কি কখনো বলেছি, আমার একজন, বলেছি! ওঃ! তার সঙ্গে পরামর্শ করলাম।

    বরাবরের মতন, যখন আজাজেল্‌কে আনলাম, তার মেজাজ চড়া। তার লেজও অদ্ভুতভাবে বেঁকে ছিল, সে সম্বন্ধে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে, সে আমার চৌদ্দপুরুষ উদ্ধার করে পাগলের মতন এমন গালাগালি দিল আর এমন সব বিষয়ে, যার কিছুই সে সম্ভবত জানেই না।

    বুঝতে পারলাম, হঠাৎই উঠে এসেছে সে। ছোট্ট এতটুকু প্রাণী। প্রায় দুই সে.মি. লম্বা, তার লেজের আগা থেকে মাথার ডগা পর্যন্ত, আর তার নিজের জগতেও সন্দেহ করি, তার সাফল্য ছিল, একেবারে পদতলের দিকে। ঐ সময়ে নিশ্চয়ই সে কারো পায়ের নিচেই ছিল আর অত ছোট্ট হওয়ার লক্ষ্যে না পড়ার অপমান তাকে ক্ষেপিয়ে তুলছিল।

    ‘হে বলশালী, যাকে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড শ্রদ্ধার্ঘ দেয়, যদি তুমি উড়তে পারতে, তবে তোমাকে মুর্খদের তস্য মূর্খদের অধীনে আসতে হত না।’

    এটাতে সে প্রফুল্ল হল। সে তার শেষ কটূক্তিগুলি বিড়বিড় করছিল, মনে হয় ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য মুখস্থ করে রাখছিল। তারপর সে বলল, ‘আমি উড়তে পারি। শোনো অপদার্থ মাংসের বস্তা!

    যাইহোক, তুমি কী চাইছ? বলার সাথে সাথে সে দাঁত খিঁচিয়ে চিৎকার করল, যদিও তার ক্ষীণ স্বরের তীক্ষ্ণতা আমার কাছে মৌমাছির গুনগুনের মতন শোনাল। পরিষ্কার করে বললাম, ‘যদিও তুমি উড়তে পার। হে মহিমান্বিত, আমাদের জগতে লোকেরা রয়েছে, যারা উড়তে পারে না।’

    ‘তোমার জগতে কেউই নেই, যে উড়তে পারে। তারা এত মস্ত, এত ফোলা, এত জবরজং যেমন আমাদের জগতের shalidracomicomia

    যদি তুমি এরোডিনামিক্স, শোচনীয় কীট-পতঙ্গ সম্বন্ধে কিছু জানতে? যদি জানতে!

    ‘আমি তোমার উৎকৃষ্ট জ্ঞানে শ্রদ্ধা জানাই, জ্ঞানীর মধ্যে মহাজ্ঞানী, কিন্তু আমার মনে এল, তুমি হয়তো অল্প পরিমাণ অ্যান্টি গ্র্যাভিটি বা প্রতি অভিকর্ষ সামাল দিতে পারবে।’

    ‘প্রতি অভিকর্ষ’ তুমি জানো, কেমন করে?’

    ‘বিশাল মন’ আমি বলি ‘আমি কি মনে করতে পারি, তুমি এর আগেও এমন করেছো।’

    ‘সেটা যতদূর মনে পড়ে, একটা আংশিক প্রয়োগ,’ আজাজেল্‌ বলল, ‘এক ব্যক্তিকে জমা বরফের ওপর দিয়ে হেঁটে যাওয়ার ক্ষমতা দেওয়াটাই যথেষ্ট ছিল। এখন তুমি বল, আরো চরমে নিয়ে যেতে।’

    ‘হ্যাঁ, আমার এক বন্ধু আছে, সে উড়তে চায়।‘

    ‘তোমার সব অদ্ভুত অদ্ভুত বন্ধু।’ সে লেজের ওপর বসল, যা সে প্রায়ই বলে, যখন চিন্তা করতে চায়, আর, অবশ্যই তার গুচ্ছপ্রান্তের অসুবিধার কথা বিস্মৃত য়ে তীক্ষ্ণ বিরক্তির চিৎকার দিয়ে লাফিয়ে উঠল।

    আমি লেজে বাতাস দিয়ে দিলাম, তাতে তার উপকার হল, সে স্বস্তি পেল।

    বলল, ‘একটা যান্ত্রিক প্রতি-অভিকর্ষ কিছু চাই, যেটা আমি তোমাকে এনে দেব সেটার সঙ্গে তোমার বন্ধুর স্বতন্ত্র স্নায়ুতন্ত্রের পূর্ণ সহযোগিতা দরকার। ধরে নিচি স্নায়ুতন্ত্র তার রয়েছে।’

    ‘বিশ্বাস কর, তার আছে’ আমি বলি, ‘কিন্তু কেমন করে সহযোগিতা পাওয়া যাবে?’ ইতস্তত করে আজাজেল্‌ বলল, ‘আমার মনে হয় যা দরকার, তা হলো তাকে বিশ্বাস করতে হবে, সে উড়তে পারে।’

    দুদিন বাদে, আমি বালডুরের সঙ্গে তার অগোছালো অ্যাপার্টমেন্টে গিয়ে দেখা করলাম।

    আমি তাকে যন্ত্রটা দিয়ে বললাম, ‘এই যে এখানে।’ খুব একটা জোরদার যন্ত্র নয়। একটা কাঠবাদামের আকার ও আকৃতি। কানে লাগালে খুব অস্পষ্ট মৌমাছির গুনগুন আওয়াজ আসে। কোথায় যে শক্তির উৎসটা আমি বলতে পারবোনা, কিন্তু আজাজেল্‌ নিশ্চয়তা দিয়েছিল, ওটা খারাপ হবে না।

    যে উড়বে, তার ত্বকের সঙ্গে ঐ যন্ত্রের ছোঁওয়া থাকতে হবে। তাই আমি একটা চেনে, ওটাকে লকেট বানিয়ে নিয়েছিলাম।

    ‘এখানে’ আমি আবার বলি, বালডুর সন্দেহের সঙ্গে লজ্জা পেয়ে সরে যাচ্ছিল, ‘এই চেনটা গলায় পরে নাও, আর শার্টের নিচে এটা নেবে। তোমার গেঞ্জির তলায়, যদি তা থাকে।’

    সে বলল, ‘এটা কি জর্জ?’

    ‘এটা একটা প্রতি-অভিকর্ষ যন্ত্র, বালডুর। আধুনিকতম বস্তু। অত্যন্ত বিজ্ঞানভিত্তিক, অত্যন্ত গোপনীয়। তুমি কাউকে কখনো এর সম্বন্ধে কিছু বলবে না।’

    সে হাতে নিল ‘তুমি নিশ্চিত! তোমার বন্ধু এটা দিয়েছে।’

    আমি মাথা নাড়লাম, ‘পরে নাও।’

    ইতস্তত করে মাথা দিয়ে গলিয়ে নিল। তারপর আমার কাছ থেকে একটু উৎসাহ পেয়ে, শার্ট খুলে, গেঞ্জির তলায় ঢুকিয়ে দিয়ে, শার্টের বোতাম লাগিয়ে দিল।

    ‘এবার কি?’ সে বলল।

    ‘এবার তোমার হাত নাড়াও, তুমি উড়ে যাবে।’

    সে দুহাত নাড়াল, কিন্তু কিছুই হলো না।

    তার দুই ভ্রূ চোখের ওপর ঝুঁকে এল। ‘আমাকে নিয়ে মজা করছ?’

    ‘না। তোমাকে বিশ্বাস করে নিতে হবে, তুমি উড়তে চলেছ। তুমি কি কখনো ওয়াল্ট ডিজনির ‘পিটার প্যান’ দেখেছ? নিজেকে বলতে হবে ‘আমি উড়তে পারি, ‘ ‘আমি উড়তে পারি,’ ‘আমি উড়তে পারি,’ ‘উড়তে পারি।’

    ‘পিটার প্যান এর মতন, ধুলো ছড়িয়ে দিয়ে উড়তে পারা।

    ‘এটা বিজ্ঞানসম্মত হল না। তুমি যেটা পরে আছ, সেটা বিজ্ঞানসম্মত। নিজেকে বল, তুমি উড়তে পার।’

    বালডুর দীর্ঘ কঠিন চাহনি দিয়ে আমাকে আপ্যায়িত করল। আর আমি অবশ্যই তোমায় বলছি। আমি সিংহের ন্যায় সাহসী। আমার একটু উদ্বেগ হয়েছিল, বললাম। একটু সময় নিয়ে বালডুর তোমাকে শিখতে হবে, কেমন করে।’

    সে তখনো আমার দিকে জ্বলন্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে, তবে ঘন ঘন জোর জোর দুই হাত নাড়িয়ে চলেছে, আর বলছে, ‘আমি উড়তে পারি। আমি উড়তে পারি। আমি উড়তে পারি।’ কিছুই ঘটছে না।

    ‘লাফাও’ আমি বলি, ‘শুরুতে জোর দাও।

    অসহায় হয়ে আমার আশ্চর্য লাগছিল, যদি আজাজেল্‌ জানত, বালডুর এখন কি করছে।

    বালডুর তখনো আমার দিকে জ্বলন্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, তবে সমানে হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে, লাফ দিল। প্রায় এক ফুট উঁচুতে উঠে গেল, কিন্তু সেখানে তিন গোনা পর্যন্ত রইল, তারপর ধীরে ধীরে অবতরণ।

    ‘আঃ।’ সে আবৃত্তির ঢঙে বলল।

    ‘এবং।’ আমিও যথার্থ বিস্ময়ের সঙ্গে সাড়া দিলাম।

    ‘আমি খানিকটা ভেসেছিলাম।’

    ‘আর খুব মহিমার সাথে’ আমি বলি।

    ‘আঃ, হাঁ, আমি উড়তে পারি। আবার দেখি।’

    সে উড়ল, আর সিলিং-এ যেখানে তার মাথা পৌঁছাল, সেখানে চুলে তেলের দাগ লেগে গেল স্পষ্ট। ওটা মুছে দিয়ে, সে নামলে আমি বলি, ‘তুমি এখন মাত্র চার ফুট পর্যন্ত যেতে পারছ, জানবে।’

    ‘এখানে, আমি পারি। চল, বাইরে যাওয়া যাক।’

    ক্ষেপেছ?’ তুমি লোককে জানতে দিতে চাও না, তুমি উড়িতে পার। তারা তোমার ঐ প্রতি-অভিকর্ষ বস্তুটি নিয়ে নেবে, যাতে বিজ্ঞানীরা ওটা পরীক্ষা করে দেখতে পারে। আর তুমি কিন্তু আর উড়তে পারবে না। শুধু আমার সেই বন্ধুই একথা জানে এখনো পর্যন্ত, আর এটা গোপনীয়।’

    ‘বেশ, তাহলে আমি কী করতে যাচ্ছি?

    ‘ঘরের মধ্যে উড়ে বেড়িয়ে, আনন্দ কর।’

    সেটা এমন কিছু নয়।

    ‘কিছু নয়? পাঁচ মিনিট আগে তুমি কতটা উড়তে পারতে?’

    আমার জোরালো যুক্তি, সব সময়ই অকাট্য।

    অবশ্যই স্বীকার করব, তার বসার ঘর বড়সড় ছিল না। সীমিত গণ্ডির মধ্যে বদ্ধবাতাসে তাকে সগৌরবে মুক্ত উড়তে লক্ষ্য করতে করতে, আমার মধ্যে একটা স্পষ্ট আবেগ আসছিল, নিজে একবার চেষ্টা করে দেখি। নিশ্চিত ছিলাম না, আমাকে সে প্রতি-অভিকর্ষ বস্তুটি দেবে কিনা, যাই হোক, আসল কথা, আমার ঘোরতর সন্দেহ ছিল, ওটা আমার কাছে কাজ করবে না।

    আজাজেল্ বরাবর প্রত্যক্ষভাবে আমার জন্য কিছু করতে চায়নি। যাকে সে বলে, নীতিগত কারণ। তার দান, বুদ্ধর মতন সে বলে, পরোপকারের জন্য। যদি সে এভাবে না ভাবত, আর অন্যেরা ভাবত। আমি কখনো আমার বদান্যতায় উপকৃত ব্যক্তিদের অনুসরণ করে নিজেকে উল্লেখযোগ্যভাবে সমৃদ্ধ করে তুলতে পারিনি। শেষ পর্যন্ত বালডুর তার একটা চেয়ারের ওপর নেমে এসে আত্মপ্রসাদের সঙ্গে বলল, ‘তুমি বলতে চাও, আমি এটা করতে পারছি, কারণ আমি বিশ্বাস করি।’

    ‘ঠিক তাই।’ আমি বলি, ‘এটা হল খোশ খেয়ালের উড়ান।’

    কথাটা আমার মনমতো হল। আমি যে কথাটা তৈরি করলাম, বালডুর তাতে চতুর-বধির। সে বলল, ‘দেখ জর্জ, স্বর্গ এবং দেবদূতের গলার মতন রাবিশের চেয়ে বিজ্ঞানে বিশ্বাস রাখা অনেক ভাল।

    ‘একদম।’ আমি বলি, ‘আমরা কি এবার ডিনার করব আর তারপর সুরা পান!’

    ‘ভাল বলেছ।’ সে বলল, আর আমরা এক সুন্দর সন্ধ্যা কাটালাম।

    আর তবু সব জিনিস সব সময় ভাল হয় না। বালডুরের ওপর এক ক্লান্তিকর বিষাদের ছাপ পড়ছিল। সে সব পুরনো জায়গা পরিত্যাগ করে নতুন পানশালা খুঁজে বার করল।

    আমি কিছু মনে করিনি। নতুন জায়গাগুলো পুরনোগুলোর তুলনায় ভালই ছিল। আর চমৎকার ককটেল্ পাওয়া যেত।

    কিন্তু আমার কৌতূহল হওয়ায়, বলডুরকে জিজ্ঞাসা করলাম, কারণটা কি?

    ‘আমি আর ঐ বুদ্ধগুলোর সঙ্গে তর্কাতর্কি করতে পারবো না,’ বিষাদের সঙ্গে বলল।

    ‘আমি যদি তাদের মিনতি করে বলতে যাই, আমি দেবদূতের মতন উড়তে পারি, তাতে কি তারা আমাকে পুজো করবে! না, আমাকে বিশ্বাস করবে! সাপ আর মেয়ে নুন হয়ে যাচ্ছে, এই সব গাঁজা বিশ্বাস করবে, রূপকথা শুধু রূপকথা। কিন্তু তারা আমাকে বিশ্বাস করবে না। আমার জীবনে বিশ্বাস করবে না। তাই আমি তাদের থেকে সরে থাকতে চাই। এমন কি বাইবেল বলছে, ‘অসভ্য লোকদের সঙ্গে মিশো না, হীন ব্যক্তিদের মধ্যে বোসো না।’

    আর মাঝে মধ্যেই ফেটে পড়ছিল আর বলছিল, ‘আমি শুধু ঘরের মধ্যে উড়ে থামতে পারি না। এখানে কোনো জায়গা নেই। আমি সেই অনুভূতি পাচ্ছি না। আমাকে খোলা হাওয়ায় উড়তে হবে। আমাকে আকাশে উড়তে হবে, ‘শোঁ শোঁ করে উড়তে হবে।’

    ‘তোমাকে লোকে দেখে ফেলবে।’

    ‘আমি রাতে করতে পারি’

    ‘তাহলে পাহাড়ের গায়ে ধাক্কা খেয়ে মারা যাবে।’

    ‘না, আমি খুব উঁচুতে উঠবো না।’

    ‘তাহলে তুমি রাতে দেখবেই বা কি? তুমি ঘরের মধ্যেই ভাল করে উড়ে বেড়াও।’ সে বলল, ‘আমি এমন জায়গা খুঁজে বার করবো, যেখানে কোনো লোক নেই। ‘আজকালকার দিনে’ আমি বলি, ‘কোথায় না লোক রয়েছে?’

    আমার জোরদার যুক্তি সব সময় জেতে। কিন্তু সে উত্তরোত্তর অসুখী হতে থাকল আর শেষ পর্যন্ত বহুদিন তাকে আর দেখতেই পেলাম না। সে বাড়িতে ছিল না। যে ট্যাক্সি গ্যারেজে সে কাজ করত, সেখানে বলল সে দুসপ্তাহের ছুটি জমা ছিল, তাই নিয়েছে সে। তারা জানে না, সে কোথায়।

    তার আতিথ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলাম বলে, আমি কিছু মনে করছিলাম তা না, কিন্তু আমি উদ্বিগ্ন ছিলাম। তার শোঁ শোঁ করে উড়ে বেড়াবার পাগলামি নিয়ে সে নিজে নিজে কী করছে, তাই ভেবে।

    ঘটনাক্রমে তাকে পেলাম। যখন নিজের অ্যাপার্টমেন্টে ফিরে, সে আমাকে টেলিফোন করল। আমি তার ভগ্ন কণ্ঠস্বর চিনতেই পারছিলাম না। আর অবশ্যই আমি তখুনি তার কাছে চলে আসি। যখন সে বুঝিয়ে বলল যে, আমাকে তার ভীষণ প্রয়োজন।

    হতোৎসাহে ভগ্নহৃদয়ে সে নিজের ঘরে বসেছিল।

    ‘জর্জ; সে বলল, ‘আমার একেবারেই এটা করা উচিত হয়নি।’

    ‘কী করেছ, বালডুর?’

    এইবার সে মুখ খুলল, ‘তোমার মনে আছে, আমি বলেছিলাম, আমি এমন জায়গা খুঁজতে চাই, যেখানে কোনো লোক নেই। ‘

    ‘মনে আছে।

    ‘তাই, মাথায় একটা বুদ্ধি এল। যখন আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলল এক গুচ্ছ ঝলমলে রৌদ্রোজ্জ্বল দিন আসছে, আমি ছুটি নিয়ে চলে গেলাম। একটা প্লেন ভাড়া করে ফেললাম। এ ধরনের বিমান বন্দর রয়েছে, যেখানে ট্যাক্সির মতন বিমান ভাড়া পাওয়া যায়। সেগুলোরই একটাতে গেলাম।’

    ‘জানি, জানি’ আমি বলি।

    ‘আমি চালককে বললাম, পাহাড় ছাড়িয়ে চল, গ্রামের দিকে ঘুরতে থাক। তাকে বললাম, আমি প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলী দেখতে চাই। আসলে আমি চারদিক দেখে সত্যি সত্যি খালি জায়গা খুঁজছিলাম। আর যদি পেতাম, তো জিজ্ঞাসা করতাম ওটা কোথায়। তারপর কোনো এক সপ্তাহান্তে সেখানে এসে উড়তাম। ঠিক যেমনভাবে আমি সারা জীবন উড়তে চেয়েছি।’

    ‘বালডুর’ আমি বলি, ‘তুমি আকাশের ওপর থেকে তা বলতে পার না। ওপর থেকে দেখে ফাঁকা মনে হলেও, সেগুলো লোকজনে ভর্তি থাকতেই পারে।’

    তিক্ত স্বরে সে বলল, ‘এখন, আর সে কথা বলে কী হবে!’

    সে থেমে মাথা নাড়ল, তারপর বলে চলল, ‘প্লেনটা ছিল পুরনো ঢঙের। সামনে খোলা ককপিট আর পিছনে যাত্রীদের বসার ব্যবস্থা, খোলাতেই। আমি ঝুঁকে ঝুঁকে দেখছিলাম যাতে মাটি লক্ষ্য করতে পারি, আর নিশ্চিত হতে পারি হাইওয়ে নেই, যানবাহন নেই, ক্ষেতখামার নেই। আমি সীটবেল্ট খুলে নিলাম, যাতে ভাল করে লক্ষ্য করতে পারি।’

    মানে বলছি, আমি উড়তে পারি, তাই শূন্যে অতি উচুতে আমার একেবারেই ভয় করেনি। আমি ঝুঁকছি, পাইলট বোঝেনি, সে যেই একটা বাঁক নিল, তার প্লেনও সেই দিকে ঝুকল। সে দিকে আমি তাকিয়ে আছি, কিছু ধরে ফেলবার আগেই, আমি ঝপ করে নেমে পড়লাম

    ‘বাপরে।’ আমি বললাম। বালডুরের পাশেই বীয়ারের ক্যান ছিল। সে একটু থামল, তারপর তৃষ্ণা মেটাতে গলায় ঢালল। হাতের পেছন দিয়ে মুখ মুছে সে বলল, ‘জর্জ, তুমি কি কখনো প্যারাস্যুট ছাড়া প্লেন থেকে পড়ে গেছ?’

    ‘না’ আমি বলি, ‘তখন আমি এটা ভাবতে পারি, মনে হয় না, আমি এটা কখনো করেছি।’

    ‘বেশ, কোনোদিন চেষ্টা করো’ বালডুর বলল, ‘একটা মজার অনুভূতি। আমি বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে গিয়েছিলাম। কিছুক্ষণের জন্য আমি বুঝতে পারিনি, কী ঘটে গেল। চারদিকে উন্মুক্ত বাতাস আর নিচে মাটি যেন ঘুরছে, ওঠছে, মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছে, আমি নিজেকেই বলছি, কী হচ্ছে কী! ‘

    কিছুক্ষণের মধ্যে আমি বাতাস অনুভব করতে পারলাম, বহমান বাতাস ক্রমশ জোরদার হয়ে উঠছে। শুধু ঠিক বলতে পারবো না, কোন দিক থেকে বাতাস আসছিল। আর তখনই মাথার মধ্যে কেমন একটা চেতনা এল, আমি নিচে পড়ছি।

    নিজেকে বললাম, আমি পড়ছি। আর যেই মাত্র আমি বললাম, নিজেকে দেখলাম, মাটি একেবারে প্রায় পায়ের তলায়। আমি জোরসে নামছি, বুঝতে পারলাম মাটি ছোঁব এইবার আর চোখ ঢেকে কোনো লাভ নেই।

    ‘বিশ্বাস করবে জর্জ, তখনো পর্যন্ত আমি কখনো ভাবিনি, আমি উড়তে পারবো। আমিও খুবই আশ্চর্যান্বিত। আমি মরে যেতে পারতাম। কিন্তু যখন আমি একদম নিচে এসেই গিয়েছি, আমার মনে পড়ে, নিজেকে বললাম, আমি উড়তে পারি, আমি উড়তে পারি। এটা যেন হাওয়ায় ঘেষটে বলা।

    যেন বাতাসটা মস্ত রাবার ব্যান্ডে পরিণত হয়ে আমার ওপরে আটকানো আছে আর পেছনে টানছে, যাতে আমার গতি ধীর হয়ে এল ক্রমশ।

    যখন আমি প্রায় গাছের মাথায়, আমি সত্যিই ধীর গতি আর ভাবছি, এখন বোধহয় শোঁ শোঁ করে নেমে আসার সময়। কিন্তু আমি খানিক শান্ত বোধ করলাম আর একটুই বাকি নামতে, তাই সোজা গেলাম আর বেগ কমালাম। তারপর মাটি ছুঁলাম, ছোট্ট, খুব একটা ছোট্ট ধাক্কা।

    আর অবশ্যই জর্জ, তুমিই ঠিক। সব ফাঁকা লাগছিল, যখন ওপরে ছিলাম। কিন্তু যখন নামলাম মাটিতে আমার চারিদিকে লোকের ভিড় আর কাছেই একটা গীর্জা। যখন ওপরে ছিলাম, গাছ গাছালির আড়ালে চূড়াটা দেখতেই পাইনি।

    বালডুর কিছুক্ষণের জন্য চোখ মুদল, জোরে নিঃশ্বাস নিয়ে নিজেকে স্বস্তি দিল, ‘কি হল শেষ পর্যন্ত, বালডুর?’ আমি বলি।

    ‘তুমি আন্দাজ করতে পারবে না।’ সে বলল।

    ‘আমি আন্দাজ করতে চাই না,’ আমি বলি, ‘শুধু বল আমায়।’

    সে চোখ খুলল আর বলল, ‘তারা সব গীর্জা থেকে বেরিয়ে আসছিল, সত্যই বাইবেল বিশ্বাসী গীর্জা। একজন হাঁটু গেড়ে বসে হাত তুলল আর চিৎকার করে উঠল, ‘অলৌকিক। অলৌকিক।’ আর বাকি সবাইও তাই করল।

    তুমি অমন গোলমাল কখনো শোননি। একজন বেঁটে মোটা লোক কাছে এসে বলল, ‘আমি একজন ডাক্তার। বলুন আমাকে কী ঘটেছিল! আমি ভেবে পাই না, তাকে কি বলব। মানে বলতে চাইছি, কেমন করে আমি বোঝাবো। কীভাবে আকাশ থেকে পড়ছি। তারা নিশ্চিত হয়ে গেল, আমি এক দেবদূত।

    অতএব আমি সত্যি বললাম, ‘দৈবাৎ আমি এয়ারপ্লেন থেকে পড়ে গিয়েছি। আবার তারা হল্লা করে উঠল, ‘অলৌকিক

    ডাক্তার বললেন, ‘আপনার কি প্যারাস্যুট ছিল।’

    আমি কেমন করে বলতে পারি, আমার প্যারাস্যুট ছিল, যখন আমার চারদিকে কেউ ছিল না, তাই বললাম, ‘না।’ আর তিনি বললেন, ‘আপনি পড়ছিলেন আর তারপর ধীরে ধীরে আবার ওপরে উঠলেন এবং আস্তে আস্তে মাটি ছুঁলেন

    আর আরেকজন লোক, যে নাকি গীর্জার ধর্মযাজক, গভীর দয়ার স্বরে বললেন, ‘ঈশ্বরের হাত ওকে তুলে ধরেছিল।

    আমি তো তা মানতে পারি না, অতএব বললাম, ‘তা নয়। আমার কাছে প্রতি- অভিকর্ষ এক বস্তু রয়েছে।’

    ডাক্তার বললেন, ‘সেটা কী?’

    আমি বললাম, ‘প্রতি-অভিকর্ষ বস্তু।’

    সে হেসে বলল, ‘বরং ঈশ্বরের হাতের কথা বিশ্বাস করা যায়। যদি আমি, তুমি হতাম, আমার মুখ বন্ধই হয়ে যেত। ততক্ষণে পাইলট এয়ারপ্লেন নামিয়েছে। সে ভয়ে সাদা হয়ে বলছে, আমার দোষ নেই। বোকাটা তার সীট বেল্ট খুলে ফেলেছিল। আর আমাকে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে, প্রায় মূর্ছা যাওয়ার উপক্রম।

    সে বলল, আপনি কেমন করে এখানে এলেন? আপনারতো প্যারাস্যুট ছিল না।’ প্রত্যেকে প্রার্থনা সঙ্গীত জুড়ে দিল। ধর্মযাজক পাইলটের হাত হাতে নিয়ে বললেন, ‘এ হচ্ছে ঈশ্বরর হাত, আর আমি রক্ষা পেয়েছি তার কারণ, পৃথিবীতে আমি কিছু মহৎ কাজ করার জন্য প্রেরিত হয়েছি। আর কেমন করে ঈশ্বরের উপাসনায় এই দিন যারা প্রত্যেকে জড় হয়েছে, তারা চিরতরে নিশ্চিত হয়েছে, ঈশ্বর তাঁর সিংহাসনে বিরাজ করছেন আর কল্যাণ সাধন করে চলেছেন, এই রকমই সব বলছিল।

    এমন কি ঈশ্বর আমাকেও ভাবিয়ে তুললেন। আমি বলতে চাইছি, হয়তো আমি কোনো মহৎ কারণেই রক্ষা পেয়েছি। সংবাদপত্রের লোকেরা এল। আর কিছু ডাক্তার। জানি না। কারণ, তারা ডেকে এনেছিল। আর প্রশ্নের পর প্রশ্ন, যতক্ষণ না মনে হল পাগল হয়ে যাচ্ছি।

    এক ডাক্তার থামালেন এবং পরীক্ষার জন্য আমাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন।

    আমি তো শুনে হতবুদ্ধি। ‘সত্যিই তোমাকে তারা হাসপাতালে নিয়েছিল?’

    ‘এক মিনিটের জন্যও ছাড়েনি। স্থানীয় কাগজে আমি শিরোনামে এসে গেলাম। রাটগার্স না কোথা থেকে একদল বিজ্ঞানী চলে এলেন আর প্রশ্নের পর প্রশ্ন।

    বললাম, আমার কাছে প্রতি-অভিকর্ষ রয়েছে, শুনে সে হাসল।

    আমি বলি, ‘আপনি কি মনে করেন, এটা অলৌকিক? আপনি একজন বিজ্ঞানী?’

    তা তিনি বললেন, ‘অনেক বিজ্ঞানী আছেন, যারা ঈশ্বর বিশ্বাসী, কিন্তু একজন বিজ্ঞানীও নেই, যিনি বিশ্বাস করবেন প্রতি-অভিকর্ষ সম্ভব।’

    তারপর তিনি বললেন, দেখান আমাকে, কীভাবে এটি কাজ করে। মি. এন্ডারসন! তাহলে আমি আমার মত বদলাতেও পারি।’

    আর অবশ্যই আমি আর এটা কাজে লাগাতে পারলাম না। আর এখনো পারি না।

    আতঙ্কে দেখি, বালডুর মুখ ঢেকে কাঁদতে শুরু করেছে।

    আমি বলি, ‘শক্ত হও বালডুর, ওটা নিশ্চয় কাজ করবে।’

    সে মাথা নাড়িয়ে চাপা গলায় বলল, ‘না, করবেনা। এটা তখনই করে, যদি আমি বিশ্বাস করি এবং আমি আর বিশ্বাস করি না। প্রত্যেকে বলছে, এটা অলৌকিক ব্যাপার। কেউ প্রতি-অভিকর্ষতে বিশ্বাস করে না। তারা অন্যের দিকে তাকিয়ে হাসে আর বিজ্ঞানীরা বলছে, জিনিসটা মাত্রই একটা ধাতুর টুকরো কোনো শক্তির উৎস নেই। কোনো নিয়ন্ত্রণও নেই। আর আইনস্টাইন, আপেক্ষিকতাবাদের হোতার বক্তব্য অনুসারে প্রতি-অভিকর্ষের অস্তিত্ব নেই।

    জর্জ, তুমি যেমন বলেছিলে, আমার ওইটা করা উচিত হয়নি। এখন আর আমি উড়তে পারবো না। কারণ আমি বিশ্বাস হারিয়েছি। হয়তো এটা কখনোই প্রতি-অভিকর্ষ ছিল না আর সবটাই ঈশ্বর, তোমার মধ্য দিয়ে কাজ করছে কোনো কারণে। আমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করতে আরম্ভ করেছি। আমি আমার বিশ্বাস হারিয়েছি।’

    বেচারি। আর কখনো সে ওড়েনি। সে যন্ত্রটা আমাকে ফেরত দিয়েছিল, আমি আবার আজাজেল্‌কে ফিরিয়ে দিলাম।

    ঘটনাক্রমে বালডুর কাজ ছেড়ে দিয়ে, গীর্জায় ফিরে গেছে, সেই গীর্জায় যেখানে সে নেমেছিল। এখন সে সেখানে উচ্চপদস্থ ধর্মযাজক। সেখানে সবাই তাকে খুব যত্ন করে। কারণ তারা মনে করে ঈশ্বরের হস্ত তার ওপর ন্যস্ত।

    .

    আমি জর্জের দিকে তীক্ষ্ণ মনোযোগ সহকারে তাকালাম। কিন্তু আজাজেলের কথা বলার সময়, তার মুখে অকপট সারল্য।

    আমি বলি, ‘জর্জ, এটা কি সম্প্রতি ঘটেছিল?’

    ‘মাত্র গত বছর। ‘

    ‘অলৌকিকতার মতো রাবিশ সমেত আর সংবাদপত্রের লোকজন, সংবাদপত্রে শিরোনাম আর বাকিটা?’

    ‘ঠিক তাই।’

    ‘তাহলে, তুমি কি বুঝিয়ে বলতে পার, কেমন করে? সংবাদপত্রে আমি কিছুই দেখলাম না।

    বিশ ডলার আর দশ ডলার দিয়ে আমি লাঞ্চের বিল মিটিয়ে দিলাম। তার থেকে যা ফেরত এসেছিল, জর্জ তা সযত্নে পকেটে পুরেছিল। পকেট থেকে পাঁচ ডলার বিরাশি সেন্ট বার করে রাখল। নোটটা আলাদা করে নিয়ে বলল, ‘পাঁচ ডলার বলছে, আমি তা বুঝিয়ে বলতে পারি।’

    আমি এক মুহূর্তের জন্য ইতস্তত করলাম না, আর বললাম, ‘পাঁচ ডলার বলছে, তুমি পার না।’

    সে বলল, ‘তুমি তো শুধু নিউইয়র্ক টাইমস পড়।’

    ‘ঠিক।’ আমি বলি।

    ‘আর, সমস্ত বুদ্ধিজীবী পাঠকদের বিবেচনা করে বলছি, নিউ ইয়র্ক টাইমস সমস্ত অলৌকিক ঘটনার বিবৃতি একত্রিশ পাতায় বিকিনি বেদিং স্যুটের বিজ্ঞাপনের কাছে অদ্ভুত জায়গায় দেয়। ঠিক?’

    ‘সম্ভবত। কিন্তু কেন তুমি ভাবছ, আমি ওটা’ ছোট্ট অদ্ভুত খবর হিসেবে দেখবনাই বা কেন?’

    ‘কারণ,’ জর্জ বিজয় গর্বে বলল, ‘কারণ সবাই জানে, বিরল কিছু শিরোনাম ছাড়া তুমি খবরের কাগজে কিছুই দেখ না। তুমি নিউইয়র্ক টাইমস পড়, শুধু দেখতে কোথাও তোমার নামোল্লেখ রয়েছে কিনা!’

    কিছুক্ষণ ভেবে, তাকে আরো পাঁচ ডলার দিলাম। সে যা বলল, তা সত্যি নয়, কিন্তু আমি জানি, সম্ভবত এটাই সাধারণের মত, তাই স্থির করলাম, কোনো তর্কাতর্কিতে যাবো না।

    ⤶
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleব্ল্যাক ফেয়ারি টেইল – অৎসুইশি
    Next Article I, রোবট – আইজাক আসিমভ

    Related Articles

    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    ভয় সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    কিশোর অ্যাডভেঞ্চার সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    প্রকাশ্য দিবালোকে – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 18, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    তারপর কী হল – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 17, 2025
    মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    শর্ম্মিষ্ঠা নাটক – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    November 11, 2025
    সত্যজিৎ রায়

    মানপত্র সত্যজিৎ রায় | Maanpotro Satyajit Ray

    October 12, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }