Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    আমার বন্ধু রাশেদ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    মুহম্মদ জাফর ইকবাল এক পাতা গল্প156 Mins Read0
    ⤷

    ০১. রাশেদ যেদিন প্রথম স্কুলে এসেছিল

    রাশেদ যেদিন প্রথম স্কুলে এসেছিল সেটা এখনো আমার স্পষ্ট মনে আছে। মাত্র ক্লাস শুরু হয়েছে, স্যার রোল কল করার জন্য খাতা খুলছেন ঠিক তখন দেখলাম এক্সটা ছেলে দরজার সামনে এসে দাঁড়াল। তার বাম হাতে একটা কাগজ, সেটা ভিজে চুপচুপে, সাবধানে সে কাগজটা ধরে রেখে ক্লাসের ভিতরে উকি দিতে থাকে। দেখে মনে হয় তার ছাগলের বাচ্চটাচ্চা কিছু একটা হারিয়ে গেছে, সেটা খুঁজে দেখছে ক্লাসের ভিতরে। খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে কি একটা ভেবে শেষ পর্যন্ত সে ক্লাসে ঢুকে পড়ল। মজিদ স্যার ভুরু কুচকে বললেন, এ্যাই, তুই কে রে? কি চাস?

    সে কোন উত্তর না দিয়ে ভিজে কাগজটা স্যারের টেবিলে রেখে হাতটা প্যান্টে মুছে ফেলল। স্যার একটু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, কি এটা?

    কাগজ।

    কাগজ তো দেখতেই পাচ্ছি। কি কাগজ?

    জানি না। ছেলেটা উদাসমূখে সারা ক্লাসটাকে এক নজর দেখে বলল, অফিস থেকে দিয়েছে।

    স্যার ভিজে কাগজটার দিকে চোখ বুলিয়ে বললেন, ভর্তির কাগজ? তুই এই ক্লাসে ভর্তি হবি?

    ছেলেটা আবার উদাসমুখ বলল, জানি না।

    জানিস না মানে? স্যার ধমক দিয়ে বললেন, কাগজটা ভিজল কেমন করে?

    নালায় পড়ে গিয়েছিল।

    নালায়? স্কার ভুরু কুঁচকে হাত সরিয়ে নিলেন।

    ময়লা নেই স্যার—ধুয়ে এনেছি।

    ধুয়ে এনেছিস? স্যার চোখ গোল করে ছেলেটার দিকে তাকালেন। খানিকক্ষণ অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, নাম কি তোর?

    লাড্ডু।

    লাড্ডু?

    শুনে আমরা পুরো ক্লাস হো হো করে হেসে উঠলাম। স্যার একটা রামধমক দিয়ে বললেন, চুপ কর। এক্কেবারে চুপ! আমরা চুপ করতেই মজিদ স্যার আবার ছেলেটাকে জিজ্ঞেস করলেন, ভাল নাম কি?

    ভাল নাম নেই।

    ভাল নাম নাই?

    না।

    তোর নাম শুধু লাড্ডু?

    ছেলেটা মাথা নাড়ল।

    তার আগেও কিছু নাই পিছেও কিছু নাই?

    নাহ।

    স্যার আবার খানিকক্ষণ অবাক হয়ে লাড্ডুর দিকে তাকিয়ে রইলেন, তারপর বললেন, শুধু লাড্ডু কখনো কারো নাম হয়?

    লাড্ডু চিন্তিতমুখে বলল, না।

    তাহলে?

    লাড্ডুর সাথে আর কিছু লাগিয়ে দেন তাহলে।

    আর কিছু লাগিয়ে দেব?

    কি লাগাব? মুহম্মদ? লাড্ডু মুহম্মদ?

    ঠিক আছে। ছেলেটা রাজি হয়ে গেল।

    স্যার খানিকক্ষণ অবাক হয়ে ছেলেটার দিকে তাকিয়ে থেকে হঠাৎ ভীষণ রেগে টেবিলে থাবা দিয়ে বললেন, কভি নেহী। আমার ক্লাসে কারো ভাল নাম লাড্ডু মুহম্মদ চলবে না। তোর বাবাকে গিয়ে কলবি একটা ভাল নাম দিতে।

    ছেলেটা মাথা চুলকে বলল, লাভ নাই স্যার।

    কেন লাভ নেই?

    বাবা নাম দিবে না।

    কেন দিবে না?

    বড় আলসে। তা ছাড়া একটু পাগল কিসিমের। আমার এক ভাই আছে, তাকেও পুরা নাম দেয়নি।

    কি নাম তার?

    চমচম।

    আমরা সারা ক্লাস হো হো করে হেসে উঠতেই স্যার আবার একটা রামধমক দিলেন, চুপ, এক্কেবারে চুপ! না হয় মাথা ভেঙে ফেলব।

    আমরা চুপ করার পর স্যার ছেলেটার দিকে তাকালেন, তারপর বললেন, তোর মা–

    আমার মা নাই।

    ও। স্যার হঠাৎ চুপ করে গেলেন। খানিকক্ষণ আঙুল দিয়ে টেবিলে শব্দ করলেন, তারপর বললেন, তাহলে আমি তোকে একটা ভাল নাম দিয়ে দিব?

    ছেলেটার মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল, বলল, দেন স্যার।

    মজিদ স্যার খানিকক্ষণ ছেলেটার দিকে তাকিয়ে বললেন, ঠিক আছে, তোর বাবাকে গিয়ে বলবি কাল তোর নতুন নাম দেয়া হবে।

    ঠিক আছে।

    স্যার তখন আমাদের দিকে তাকিয়ে বললেন, কাল তোরা সবাই একটা করে সুন্দর নাম লিখে আনবি। মনে থাকবে তো?

    আমরা মাথা নাড়লাম, মনে থাকবে।

    স্যার চলে যাবার পর আমরা সবাই ছেলেটাকে বাজিয়ে দেখতে গেলাম। যখনই ক্লাসে নতুন ছেলে আসে তাকে সব সময় বাজিয়ে দেখতে হয়। কে জানে হয়তো এমন একজন ভাল ছাত্র আসবে যে সব সাবজেক্টে একশতে নব্বই-পচানব্বই পেয়ে আমাদের জীবন নষ্ট করে দেবে— আশরাফ যেরকম করেছে। কিংবা কে জানে হয়তো বাবা ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট, কোন কারণে তাকে ধোলাই দিলে তার বাবা পুলিশ পাঠিয়ে আমাদের ধরিয়ে নিয়ে যাবে- মাসুমের বাবা যেরকম করেছিল। কিংবা কে জানে হয়তো এমন বদমাশ বের হবে যে আমাদের সবার জান একেবারে ভাজা ভাজা করে খেয়ে ফেলবে— কাদের যেরকম করেছে। আগে থেকে কিছু বলা যায় না। তাই ছেলেটাকে সবসময় বাজিয়ে দেখা দরকার।

    আমি ছেলেটার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, তুই কি পরীক্ষায় ফাস্ট হবি?

    ছেলেটা মুখ বাকা করে বলল, মাথা খারাপ হয়েছে তোর?

    কি হবি তাহলে?

    ফেল করব। সব সাবজেক্ট ফেল।

    সব সাবজেক্টে?

    হ্যাঁ।

    দিলীপ চিন্তিতমুখে বলল, কেমন করে জানিস আগে থেকে?

    না জানার কি আছে? স্কুলে এলাম কেন আমি?

    ফেল করার জন্যে?

    হ্যাঁ। দুই বছর পর পর ফেল করলে আর পড়াশোনা করতে হবে না। বাবা বলেছে।

    ফজলু চোখ বড় বড় করে জিজ্ঞেস করল, কখনো পড়াশোনা করতে হবে না?

    না!

    আমরা একে অন্যের মুখের দিকে তাকলাম। ফজলুর চোখ হিংসায় ছোট ছােট হয়ে এল, বলল, ফেল করলে তোর বাবা তোকে বানাবে না?

    ছেলেটা খিকখিক করে হেসে বলল, আমার বাবা কখনো বানায় না। পাগল কিসিমের মানুষ তো !

    কি করে?

    গল্পগুজব করে। আলাপ-আলোচনা করে।

    তোর সাথে?

    হুঁ।

    কি নিয়ে আলাপ-আলোচনা করে?

    বেশির ভাগ রাজনৈতিক আলোচনা।

    রাজনৈতিক আলোচনা ! আমরা একেবারে হা হয়ে গেলাম। বলে কি এই ছেলে ! তার বাবা তার সাথে রাজনৈতিক আলোচনা করে !

    আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, তুই রাজনৈতিক আলোচনা বুঝিস?

    বুঝব না কেন? না বোঝার কি আছে!

    আমরা সবাই আবার ভাল কর ছেলেটাকে দেখলাম। মাথায় লালচে এলোমেলো চুল, শার্টের সবগুলি বোতাম নেই, একটি সিফটিপিন দিয়ে আঁটকানো। নীল রংয়ের প্যান্ট, খালি পা। শ্যামলা রং, ভাবুক চোখ। দেখে যে কেউ ভাববে সাধারণ একটা ছেলে, কিন্তু সে মোটেও সাধারণ না। তার মা নেই, বাবা তার সাথে রাজনৈতিক আলোচনা করে। শুধু তাই নয়, তার কোন ভাল নাম নেই– আমার কেউ স্বীকার করলাম না। কিন্তু আমাদের সবার ভিতরে একটা হিংসার জন্ম হল।

     

    পরদিন আমরা সবাই একটা করে নাম লিখে এনেছি। ক্লাস শুরু হওয়ার পর মজিদ স্যার ভাল এবং সুন্দর নামের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে একটা বড় লেকচার দিলেন। স্যার লেকচার দিতে বড় ভালবাসেন। তারপর ছেলেটাকে ডেকে সামনে দাঁড়া করলেন, তাকে নিয়ে এত বড় একটা ব্যাপারে মনে হল সে একটু লজ্জা পাচ্ছিল। স্যার বললেন, এখন তোরা। একজন একজন করে নামটা পড়বি। তখন অন্য সবাই সেই নামে ভোট দিধি। যে নামে সবচেয়ে বেশি ভোট পড়বে সেই নামটা দেয়া হবে।

    আমরা তখন একে একে নাম পড়তে শুরু করলাম, অন্য সবাই হাত তুলে ভোট দিতে লাগল, এবং আশরাফ একটা কাগজে নাম এবং ভোটের সংখ্যা লিখে রাখতে লাগল। কিছুদূর অগ্রসর হওয়ার পর বোঝা গেল নাম দেওয়ার এই পদ্ধতিটি কাজ করার সম্ভাবনা কম। তার কারণ সবচেয়ে বেশি ভোট পেল যে দুটি নাম তার একটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুৰ, অন্যটি কাজী নজরুল ইসলাম। স্যারকে তখন নতুন আইন জারি করতে হল যে, কোন বিখ্যাত মানুষের নাম দেয়া যাবে না। তখন যে নামটি বেশি ভোট পেয়ে গেল সেটা হচ্ছে রবার্ট ব্ৰাউন। তখন স্যারকে আবার নতুন আইন জারি করতে হল— বিদেশী নাম দেওয়া যাবে না। ফজলু সব সময় একটু গোয়ার গোছের, বিদেশী নাম দেয়া হলে ক্ষতি কি সে এটা নিয়ে স্যারের সাথে একটা তর্ক শুরু করে দিলে! শুধু তাই নয়, লাড্ডু নামের ছেলেটাও লাজুক মুখে জানােল তার বিদেশী নামে কোন আপত্তি নেই !

    স্যার তখন কেন দেশী নাম হতে হবে সেটা বোঝানোর জন্যে দেশ, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এই সব বড় বড় জিনিস নিয়ে একটা লেকচার দিয়ে ফেললেন, স্যার লেকচার দিতে বড় ভালবাসেন। লেকচার শেষ করে বললেন, এখন তোদের আর ভোট দিতে হবে না, নামগুলি পড়, আমার যেটা ভাল লাগবে সেটাই আমি বেছে নেব।

    আমরা সবাই লিখে আন নামগুলি বললাম, স্যার যেগুলি পছন্দ হল সেগুলি একটা কাগজে লিখে নিয়ে পড়তে শুরু করলেন। প্রথম নামটি আলী জাকারিয়া।

    স্যার খানিকক্ষণ ছেলেটার দিকে তাকিয়ে থেকে বললেন, উন্থ। জাকারিয়া নাম হতে হলে মুখ একটু লম্বা হতে হয়। তোর মুখ গোল। তোকে এই নামে মানাবে না।

    দুই নম্বর নামটি বের হল— কায়সার আহমেদ। স্যার আবার মাথা নাড়লেন, বললেন, কায়সারদের চুল কোকড়া হতে হয়। তোর চুল কোকড়া নয়। চুল আচড়াস না। বলে পাখির বাসার মত হয়ে আছে কিন্তু তোর চুল কোকড়া না। এই নাম চলবে না।

    পরের নামটি বের হল হাসান ফেরদৌস। স্যারের নামটা কেশ পছন্দ হল, প্ৰায় দিয়েই দিচ্ছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত মত পাল্টালেন, বললেন, ফেরদৌস নামটার জন্যে গায়ের রং ফর্সা হতে হয়।

    আমাদের ক্লাসে আরেকজন ফেরদৌস আলী আছে। তার গায়ের রং কুচকুচে কাল কিন্তু তবু স্যার রাজি হলেন না। পরের নামটি পড়লেন? রাশেদ হাসান।

    এই নামটা স্যারের খুব পছন্দ হল। কয়েকবার নানারকম গলার স্বর করে নামটা পড়লেন, তারপর বললেন, এই নামটা ভাল। নামের মাঝে একটা চরিত্র আছে, কি बनिन?

    নামের আবার চরিত্র হয় কি করে বুঝতে পারলাম না, কিন্তু আমরা সেটা নিয়ে মাথা ঘামালাম না, সবাই মাথা নাড়লাম। স্যার জিজ্ঞেস করলেন, কে দিয়েছে এই নাম? আমাদের ক্লাসের সবচেয়ে লাজুক ছেলে রঞ্জ উঠে দাঁড়াল। স্যার বললেন, ভেরী গুড নেমা ! কোথায় পেলি এই নাম?

    রঞ্জু শোনা যায় না। এরকম গলায় বলল, আমার ছোট মামা এই নাম দিয়ে কবিতা লেখেন।…

    ছদ্মনাম এটা?

    জ্বী।

    আসল নাম কি?

    গজনফর মিয়া।

    স্যার মাথা নাড়লেন, বললেন, কবি গজনফর মিয়া থেকে কবি রাশেদ হাসান অনেক ভাল শোনায়। তোর মামা ঠিকই করেছে। নে, বস।

    রঞ্জ তাড়াতাড়ি বসে পড়ল। মজিদ স্যার এবারে ছেলেটাকে কাছে ডাকলেন। সে কাছে এসে দাঁড়ালে স্যার দাড়িয়ে তার মাথায় হাত রেখে বললেন, আজ উনিশ শ সত্ত্বর সালের সেপ্টেম্বর মাসের এগারো তারিখ আমি মজিদ সরকার, ক্লাস সেভেন সেকশন বি-এর ক্লাশ টিচার সবার পছন্দ থেকে বেছে তোর নাম দিলাম রাশেদ হাসান।

    আমাদের কেউ বলে দেয়নি। কিন্তু সবাই তখন একসাথে চিৎকার করে আনন্দের মত একটা শব্দ করলাম। স্যার তখন আরো খুশি হয়ে উঠলেন, মাথা নেড়ে বললেন, এখন আমি তোকে ডাকব, তুই জবাব দিবি, ঠিক আছে?

    ছেলেটা মাথা নাড়ল। স্যার ডাকলেন, রাশেদ হাসান।

    জ্বী।

    ভেরী গুড। স্যার এবারে আমাদের দিকে তাকিয়ে বললেন, যদি তোবা। আর কেউ কোনদিন রাশেদ হাসানকে লাড্ডু বলে ডাকিস তোদের মাথা ভেঙে ফেলব। এখন থেকে এর নাম রাশেদ।

    ফজলু দুর্বলভাবে একটু চেষ্টা করল, কিন্তু স্যার তার এতদিনের নাম—

    হোক এতদিনের নাম। আজ থেকে রাশেদ। নতুন একটা নাম দেয়া হয়েছে, সেটা পাকা হবে না? কেউ লাড্ডু ডাকবি না, ঠিক আছে?

    আমরা খুব অনিচ্ছার সাথে মাথা নাড়লাম।

    স্যার চলে যাবার সাথে সাথে ফজলু রাশেদের কাছে গিয়ে বলল, আমি কিন্তু তোকে রাশেদ-ফাসেদ ডাকতে পারব না। ওই সব নাম আমার মুখে আসে না।

    আমিও মাথা নাড়লাম। বললাম, লাড়ডুই ভাল। তোর চেহারার মাঝেই একটা লাড্ডু লাড্ডু ভাব আছে। আমিও লাড্ডুই ডাকব।

    রাশেদ দাঁত বের করে হেসে বলল, তোদের যা ইচ্ছা!

    ক্লাস কেপ্টেন আশরাফ মৃদু স্বরে বলল, বলে দেব স্যারকে আমি। বলে দেব কিন্তু।

    দে বলে, ফজলু বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সরে এল।

    রাশেদের নিজের যখন লাড্ডু নামে আপত্তি নেই তখন ক্লাস কেপ্টেন স্যারকে বলে দিলেই কি আর না দিলেই কি ! তাছাড়া ক্লাস কেপ্টেন আশরাফ চোখ-মুখ লাল করে অনেক হস্পিবিতম্পিব করে ঠিকই কিন্তু কখনোও অন্য ক্লাস কেপ্টেনদের মত স্যারদের কাছে নালিশ করে না। আশরাফের মনটা ভাল আছে, একটা শুধু সমস্যা— পড়াশোনায় অতিরিক্ত ভাল। চোখ বন্ধ করে প্রত্যেক পৰীক্ষায় ফাস্ট হয়ে যায়। শুধু যে পরীক্ষায় ফাস্ট হয় তাই না, কথাও বলে শুদ্ধ ভাষায়, কাপড়ও পরে পরিস্কার, এমন কি চুল পর্যন্ত সব সময় আচড়ানো থাকে। দেখলেই বোঝা যায়, কেমন জানি ভাল ছেলে ভাল ছেলে।

    রাশেদের অবিশ্যি সেরকম কোন সমস্যা নেই। মনে হয় আমাদের বন্ধু হয়ে যাবে বেশ তাড়াতাড়ি।

    ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleসায়েন্স ফিকশান সমগ্র ১ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    Next Article মেকু কাহিনী – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    Related Articles

    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    ছোটগল্প – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    সাদাসিধে কথা – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    মেকু কাহিনী – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    সায়েন্স ফিকশান সমগ্র ১ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    টুনটুনি ও ছোটাচ্চু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    আরো টুনটুনি ও আরো ছোটাচ্চু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }