Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    আমার বন্ধু রাশেদ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    মুহম্মদ জাফর ইকবাল এক পাতা গল্প156 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ১৩. আমরা চারজন

    আমরা চারজন যখন হেঁটে হেঁটে রাশেদের বাসার দিকে যাচ্ছিলাম তখন রাশেদ তার পরিকল্পনাটা আশরাফ আর ফজলুকে খুলে বলল। আশরাফ বড় বড় নিঃশ্বাস নিয়ে বলল, তুমি কি পরীক্ষা করে দেখেছি? হাঁটা যায় গুলীর বেল্ট শরীরে বেঁধে।

    আশরাফ আমাদের ফার্স্ট বয় এবং সে কখনো কাউকে তুই তুই করে বলে না।

    দেখি নাই, কিন্তু হাঁটা যাবে না কেন?

    যদি দেখা যায়? যদি বের হয়ে যায়?

    আগে পরীক্ষা করে দেখতে হবে।

    হ্যাঁ, আশরাফ চিন্তিত মুখে বলল, চিকন দড়ি না হয় সুতলি দিয়ে ভাল করে শরীরের সাথে বেঁধে দিতে হবে।

    হ্যাঁ।

    আছে সুতলি তোমার বাসায়?

    রাশেদ মাথা চুলকে বলল, খুঁজলে মনে হয় পাওয়া যাবে।

    আশরাফ মাথা নেড়ে বলল, পাওয়া না গেলে? যাবার সময় কিনে নেব। আমার কাছে পয়সা আছে।

    আশরাফ আমাদের ক্লাসের ফার্স্ট বয়। সে কখনো কাউকে তুই করে বলে না এবং সব সময় তার কাছে পয়সা থাকে।

    ফজলু বলল, আমার যখন যাব তখন হাতে একটা বল নিয়ে গেলে কেমন হয়? যেন মনে হয় বল খেলতে যাচ্ছি?

    আশরাফ উজ্জ্বল চোখে বলল, গুড আইডিয়া! কাল আছে তোমার বাসায়?

    না।

    আমার বাসায় আছে, তোমরা দাঁড়াও আমি এক দৌড়ে বল নিয়ে আসি।

     

    রাশেদে বাসা অনেক দূবে আমাদের পৌঁছাতে অনেকক্ষণ লাগল। বাসার দরজায় একটা তালা মারা। রাশেদ তার কোমরে বাধা একটা চাবি দিয়ে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকাল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, বাসায় কেউ নেই?

    কে থাকবে। আবার?

    বাসায় কে থাকবে সেটা আবার কেমন ধরনের প্রশ্ন? বাবা থাকবে, মা থাকবে ভাই বোন থাকবে। কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই রাশেদ বিছানার নিচে থেকে চট দিয়ে ঢাকা একটা বাক্স টেনে আনল। বাক্সটার ভিতরে প্যাচিয়ে প্যাচিয়ে রাখা গুলীর বেল্ট। আমি আগে কখনো গুলী দেখিনি। সাবধানে একবার হাত দিয়ে দেখলাম। মসৃণ চকচকে গুলী। কেমন ঠাণ্ড ঠাণ্ডা একটা ভাব, হাত দিতেই শরীরটা কেমন জানি শির শির করে উঠল। কে জানে হয়তো এই গুলীটাই কোন পাকিস্তানী মিলিটারীর মগজের ভিতর দিয়ে যাবে!

    ফজলু জিজ্ঞেস করল, কোথায় পেয়েছিস গুলীর বাক্স?

    জানতে চাইলে বলতে পারি। কিন্তু না বলাই ভাল, তাহলে কোনদিন ধরা পড়লেও তোকে যত অত্যাচার করা হোক তুই বলতে পারবি না। –

    অত্যাচারের কথা শুনে ফজলুর মুখটা একটু ফ্যাকাসে হয়ে গেল। কিন্তু সে গভীরভাবে মাথা নেড়ে বলল, তা ঠিক!

    রাশেদ একটা গুলীর বেল্ট বের করে আনে। আমরা ফজলুর উপর প্রথম চেষ্টা করলাম। শার্ট গেঞ্জি খুলে শরীরে প্যাচিয়ে প্যাচিয়ে গুলীর বেল্টটা সুতলি দিয়ে শক্ত করে বেঁধে দেয়া হল। তার উপরে গেঞ্জি আর শার্ট পরে ফজলু জিজ্ঞেস করুল, কি? দেখে বোঝা যাচ্ছে?

    না। আশরাফ মাথা নেড়ে বলল, বোঝা যাচ্ছে না।

    আমি বললাম, দেখে একটু মোটা লাগছে। কিন্তু তুই এত শুকনা যে একটু মােটা দেখতে ভালই লাগছে!

    রাশেদ বলল, হাঁট দেখি একটু।

    ফজলু ইতস্ততঃ কয়েক পা হোটল।

    কি? অসুবিধা হচ্ছে হাঁটতে?

    না। একটু ভারি কিন্তু হাঁটা যায়।

    হাত পা একটু নাড়াচাড়া কর দেখি।

    ফজলু তার হাত পা নাড়াচাড়া করল, একটু আড়ষ্টভাবে কিন্তু মোটামুটি ভােলই বলতে হবে।

    রাশেদ আমাদের দিকে তাকিয়ে বলল, কি মনে হয়? কাজ করবে?

    আশরাফ বলল, একশবার!

    আমরা মোটামুটি উৎসাহ নিয়ে এবারে একজন একজন করে সবার শরীরে গুলীর বেল্ট প্যাচিয়ে নিলাম। উপরে কাপড় পরে নেয়ার পর দেখে আর বোঝার উপায় নেই। গুলীর বেল্টগুলি বেশ ভারি, আমরা তাই আর দেরি না করে রওনা দিয়ে দিলাম।

    রাশেদ বলল, খুব সাবধান, আমাদের দেখে কেউ যেন সন্দেহ না করে।

    হ্যাঁ, খুব সহজভাবে কথাবার্তা বলতে বলতে যেতে হবে। আমি বললাম, যখন রাজাকারদের পাশে দিয়ে যাবি বেশি তাড়াতাড়ি হাঁটবি না। আবার বেশি দূর দিয়েও হীটবি না। পারলে একেবাবে পাশে দিয়ে ঘেষে ঘেষে যাবি।

    হ্যাঁ। আশরাফ মাথা নাড়ে।

    রাজাকারদের সাথে কথাও বলা যায়। কয়টা বাজে বা সেরকম কিছু। যদি দেখি কাউকে দাড় করিয়ে চেক করছে তাহলে আমরাও দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে পারি কেমন করে চেক করছে।

    হ্যাঁ। অন্য সময় হলে তো তাই করতাম।

    আশরাফ একটা দোকান থেকে চারটা কাঠি লজেন্স কিনল। কিছু খেতে খেতে হাঁটলে নাকি খুব স্বাভাবিকভাবে হাঁটা যায়। কাঠি লিজেন্স চেটে চোেট খেতে খেতে আমরা আবিষ্কার করলাম কথাটা সত্যি।

    আমাদের স্কুলের রাস্তার মােড়ে দুইটা রাজাকার দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে রাস্তা দিয়ে যারা যাচ্ছে। আসছে তাদের সবাইকে দেখছে। কেউ কোন ঝোলা বা বোঝা নিয়ে গেলে তাকে থামিয়ে সেই ঝোলা কিংবা বোঝা খুলে খুলে দেখছে। আমরা কথা বলতে বলতে তাদের খুব কাছে দিয়ে হেঁটে গেলাম। একজন রাজাকার চোখের কোণা দিয়ে আমাদের এক নজর দেখল, কিছু বলল না। রাজাকার দুজনকে পিছনে ফেলে এসে আমরা সবাই একটা লম্বা নিঃশ্বাস ফেললাম। এখনো দুই নম্বর দলটা রয়ে গেছে।

    দুই নম্বর দলটা আরেকটু সামনে, সেখানে রাজাকারদের সাথে কালো পোশাক পরা দুইজন মিলিশিয়াও দাঁড়িয়ে আছে। মিলিশিয়াগুলির চেহারা কেমন যেন ভয়ংকর। উঁচু কপাল, উঁচু চিবুক, খাড়া নাক, কেমন যেন নিষ্ঠুর চেহারা।

    আমরা যখন পাশ দিয়ে যাচ্ছি। হঠাৎ করে একটা রাজাকার জিজ্ঞেস করল, এই ছ্যামড়া, কই যাস?

    আগেই ঠিক করে রেখেছিলাম কিছু প্রশ্ন করলে সবাই একসাথে কথা না বলে শুধু একজন উত্তর দেবে। সেভাবেই আশরাফ বলাটা মাটিতে একটা ড্রপ দিয়ে বলল, ফুটবল খেলতে।

    রাজাকারটা অন্যজনকে বলল, শালার সখ দেখা! এই দুপুরের রোদে যায় ফুটবল খেলতে। তারপর আমাদের দিকে তাকিয়ে বলল, স্কুলের ভিতরে যাওয়া নিষেধ, জন 6९ठा?

    রাশেদ বলল, জানি। আমরা স্কুলে যাচ্ছি না।

    আমরা হেঁটে হেঁটে চলে এলাম, মিলিশিয়া দুইজন একটু অবজ্ঞা ভাব করে আমাদের দিকে তাকিয়ে রইল। যদি শুধু জানত আমরা কি নিয়ে যাচ্ছি। আর আজ রাতে সেটা দিয়ে কি করা হবে।

    স্বাকুলের সামনেই নূর মুহম্মদের বেকারী। রাশেদ চাপা গলায় বলল, আস্তে আস্তে ঢোক। কোন তাড়াহুড়া নাই।

    ভিতরে নূর মুহম্মদ ক্যাশ রেজিস্ট্রারের সামনে বসে আছে। আমাদের দেখে চোখ না তুলে বলল, কি চাও?

    বিস্কুট।

    কি বিস্কুট?

    চাঁদনী বাজারের কুকী।

    মানুষ ছ্যাক খেলে যেভাবে চমকে উঠে নূর মুহম্মদ সেভাবে চমকে উঠল। রাশেদ গলা নামিয়ে আমাদেরকে বলল, গোপন পাশওয়ার্ড!

    নূর মুহম্মদ চোখ কপালে তুলে বলল, কি বললে? কি বললে?

    চাঁদনী বাজারের কুকী।

    চাঁদনী বাজারের?

    হ্যাঁ। রাশেদ এবারে তার সার্ট তুলে গুলির বেল্ট দেখাল। সাথে সাথে একেবারে ম্যাজিকের মত কাজ হল। নূর মুহম্মদ লাফিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলল, হায় আল্লাহ! ভিতরে আসে। ভিতরে-–

    আমরা তাড়াতাড়ি ভিতরে ঢুকে গেলাম। ভিতরে রুটি তৈরির বড় চুলা থেকে গরম বাতাস বের হচ্ছে। রুটির মিষ্টি গন্ধ, আমার হঠাৎ খিদে পেয়ে গেল।

    নূর মুহম্মদ তখনো নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না। ঘন ঘন ঢোক গিলতে গিলতে বলল, কে পাঠিয়েছে তোমাদের?

    রাশেদ গম্ভীর গলায় বলল, বলার পারমিশান নাই।

    ও, ও। তাতো বটেই।

    তাড়াতাড়ি খুলেন বেল্টগুলি। আমাদের সময় নেই।

    হ্যাঁ হ্যাঁ খুলছি। নূর মুহম্মদ ছুটে একটা চাকু এনে সুতলি কেটে গুলীর বেল্টগুলি খুলে নিয়ে লুকিয়ে ফেলল। শফিক ভাই কি এখানে আছেন কোথাও? একবার মনে হল জিজ্ঞেস করি নূর মুহম্মদকে কিন্তু শেষ পর্যন্ত জিজ্ঞেস করলাম না। মুক্তিযোদ্ধাদের কৌতূহল দেখানোর কথা নয়।

    আমরা বের হয়ে যাচ্ছিলাম, আশরাফ বলল, দাড়াও চারটা বিস্কুট কিনে নিই। কেউ যদি আমাদের লক্ষ্য করছে তাহলে কোন সন্দেহ করবে না।

    আশরাফ পকেট থেকে পয়সা বের করছিল, নূর মুহম্মদ বলল, কোন পয়সা লাগবে না বাবা। কোনটা চাও?

    ফজলু এগিয়ে গিয়ে দেখলো, নারকেল দেয়া বড় বড় বিস্কুট। নূর মুহম্মদ বয়ামে হাত ঢুকিয়ে বিস্ত্ৰকূট বের করে আমাদের হাতে ধরিয়ে দেয়!

    আমরা বিস্ত্ৰকূট খেতে খেতে বেকারী থেকে বের হয়ে এলাম। কেউ আমাদের লক্ষ্য করছে না, কিন্তু আমরা কোন ঝুঁকি নিলাম না, সামনে দিয়ে হেঁটে গেলাম। অন্য পাশে আবার রাজাকারের পাহারা আছে, কিন্তু এখন আর ভয় কি?

    আমরা অন্য রাস্ত ঘুরে রাশেদের বাসায় ফিরে এসে আবার আমাদের শরীরে গুলীর বেল্ট লাগিয়ে রওনা দিলাম। রওনা দেবার আগে শরীর একটু কাদা মাটি লাগিয়ে নিলাম, দেখে যেন মনে হয় ফুটবল খেলা হয়েছে বেশ।

    আমরা এবারে উল্টোদিক দিয়ে হেঁটে এলাম, ভাবখানা ফুটবল খেলতে গিয়েছিলাম এখন ফুটবল খেলে ফিরে আসছি। রাজাকারগুলি আমাদের মনে রেখেছে কি না কে জানে— রাখলে ক্ষতি নেই দেখে কোন সন্দেহ করবে না। প্রথমবার অামালেঞ্চ ফেক্সকম ভয় ভয় লাগছিল এবারে সেরকম ভয়ও লাগল না। আমি একটা রাজাকারকে জিজ্ঞেসও করলাম কয়টা বাজে। রাজাকারটা অবিশ্যি আমার প্রশ্নের উত্তর দিল না। রাশেদ বলল, ঘড়িষ্টা কারো কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে, আসলে ঘড়ি দেখে সময় বলতে পারে না। সেই জন্যে উত্তর দেয় নাই। রাশেদ মনে হয় ঠিকই বলেছে!

    দুইবারে আমরা গুলির বাক্সের প্রায় পুরোটুকু নুর মুহম্মদ বেকারীতে পৌঁছে দিলাম। এবারে আমাদের কয়েক সেকেন্ডের জন্য শফিক ভাইয়ের সাথে দেখা হয়ে গেল। মুক্তিযোদ্ধা বললেই চোখের সামনে যেরকম একটা ছবি ফুটে উঠে তাকে দেখতে মােটেও সেরকম লাগছিল না। একটা খাটো লুঙ্গি পরে আছেন, খালি পা, গলা থেকে লাল একটা গামছা ঝুলছে। আমাদের দেখে চোখ মটকে বললেন, তোমরা তো দেখি বাঘের বাচ্চা।

    আমরা কথা না বলে একটু হাসলাম। তখন শফিক ভাই এগিয়ে এসে একজন একজন করে আমাদের সবাইকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললেন, যে দেশে এরকম বাঘের বাচ্চা থাকে। সে দেশ যদি স্বাধীন না হয় তাহলে কোন দেশ স্বাধীন হবে?

    আমরা যখন চলে আসছিলাম। তখন চাপা গলায় বললেন, মনে থাকবে তো এটা টপ সিক্রেট?

    আমরা বললাম, মনে থাকবে।

    বাসায় ফিরে যেতে যেতে আমরা বুঝতে পারলাম আজ আমাদের কপালে দুঃখ আছে। কারো বকুনী কারো পিটুনী খেতে হবে। আমবা নিজেদের শাস্তানা দিলাম, একটু বকুলী পিটুনী খেলে কি হয়, কেউ কেউ তো দেশের জন্য গুলীও খাচ্ছে!

     

    বাসায় যত বকুলী খাওয়ার কথা ছিল তত খেলাম না। দুপুরের রোদে কাদা মেখে ফুটবল খেলে এসেছি শুনে আব্বা কেমন যেন হাল ছেড়ে দেয়ার মত ভান করলেন। আমি যখন হাত পা ধুয়ে পরিষ্কার হচ্ছি তখন শুনলাম আম্পা। আর আব্বা খুব গম্ভীর গলায় কথা বলছেন। আম্মা বললেন, এত দিনের সংসার।

    আব্বা বললেন, আগে মানুষ। তারপরে সংসার। যদি বেঁচে থাকি আবার সব হবে।

    আম্মা বললেন, তা ঠিক।

    এভাবে আর থাকা যায় না। শিকদার সাহেবকে সেদিন কি করল ভাবা যায় না। কোন দিন আমাকে করবে। আব্বা আড় চোখে আমার দিকে তাকিয়ে থেমে গেলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কি করবে। আকবা?

    কিছু না।

    আম্মা বললেন, সেটাই তাহলে ভাল। বাসা এভাবেই থাক। একটা সুযোগ যখন পাওয়া গেছে চলে যাওয়াই ভাল।

    আমি জিজ্ঞেস করলাম, কি সুযোগ?

    আব্বা বললেন, গ্রামের বাড়িতে যাবার সুযোগ। ফরহাদ সাহেবরা যাচ্ছেন, তাদের সাথে যাব। তাদের গ্রামের বাড়িতে কয়দিন থেকে তারপর রওনা দেব। আজকাল আবার নাকি বাস যাচ্ছে।

    ফরহাদ সাহেব মানে অরু, আপার আকবা?

    হ্যাঁ। কাউকে বলিস না যেন বাবা।

    বলব না।

    আমাকে না বললেও আমি কাউকে বলতাম না। এখন কখনো কাউকে কিছু বলতে হয় না। সব কিছু গোপন রাখতে হয়। আজ রাতে যে ভয়ংকর যুদ্ধ হবে সেটা যেরকম আমি গোপন রেখেছি!

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleসায়েন্স ফিকশান সমগ্র ১ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    Next Article মেকু কাহিনী – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    Related Articles

    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    ছোটগল্প – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    সাদাসিধে কথা – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    মেকু কাহিনী – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    সায়েন্স ফিকশান সমগ্র ১ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    টুনটুনি ও ছোটাচ্চু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    আরো টুনটুনি ও আরো ছোটাচ্চু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }