Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    আরো একটুখানি বিজ্ঞান – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    মুহম্মদ জাফর ইকবাল এক পাতা গল্প195 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ০৫. ন্যানোটেক

    ০৫. ন্যানোটেক

    আমি যখন ক্যালিফোরনিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (সংক্ষেপে ক্যালটেক) কাজ করি তখন সেখানে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন প্রফেসর রিচার্ড ফাইনম্যান। পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন কিন্তু সে জন্যে তাকে আকর্ষণীয় বলছি না (কারণ তখন সেখানে কমপক্ষে আরো এক ডজন নোবেল পুরস্কার পাওয়া বিজ্ঞানী ছিলেন!) তাকে আকর্ষণীয় বলছি তার আচার-আচরণের জন্যে। প্রাতিষ্ঠানিক বা গুরুতর বিষয়ে তার এলার্জির মতো ছিল–অথচ প্রচুর সময় কাটাতেন ছাত্রদের নিয়ে (ছাত্রদের অভিনীত নাটকে আমি তার মেথরের ভূমিকায় অভিনয় দেখে মুগ্ধ হয়েছি।) হাসি-তামাশা করতেন, মজা করতেন এবং সারাক্ষণই নানা ধরনের পাগলামো করতেন। ক্যালটেকে যোগ দেয়ার পরপরই পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রবেশ পথে একটা ছোট যন্ত্র সাজানো যন্ত্র চোখে পড়ল। নিচে লেখা রয়েছে যে প্রফেসর ফাইনম্যান বিশ্বাস করেন ক্ষুদ্র যন্ত্রপাতির এক ধরনের গুরুত্ব আছে তাই তিনি একটা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছেন–ক্ষুদ্র মোটর তৈরির প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতায় বিজয়ী মোটরটা সেখানে রাখা আছে–সেটা এত ছোট যে খালি চোখে ভালো করে দেখা যায় না, সেটা দেখার জন্যে একটা মাইক্রোস্কোপ রাখা আছে। মাইক্রোস্কোপে চোখ রেখে সুইচ টিপে ধরলে দেখা যায় অত্যন্ত ক্ষুদ্র মোটরটা পাই পাই করে ঘুরছে।

    তারপর অনেক দিন পার হয়েছে, ক্ষুদ্র যন্ত্রপাতির গুরুত্ব এতদিনে এতটুকু কমে নি বরং বেড়েছে। এখন যেসব ক্ষুদ্র যন্ত্রপাতি তৈরি হচ্ছে সেগুলো আসলে মাইক্রোস্কোপ দিয়েও দেখা যায় না। এই যন্ত্রপাতিগুলো তৈরি করার প্রযুক্তির নাম দেয়া হয়েছে ন্যানো টেকনোলজি, সংক্ষেপে ন্যানোটেক। মজার ব্যাপার হচ্ছে ন্যানোটেকের ইতিহাস ঘেঁটে দেখলে দেখা যায় এটা নিয়ে প্রথম বক্তব্য রেখেছিলেন প্রফেসর রিচার্ড ফাইনম্যান-1959 সালে আমেরিকান ফিজিক্যাল সোসাইটির এক সভায়, বক্তব্যের শিরোনামটি ছিল এরকম : তলানিতে প্রচুর জায়গা!

    ন্যানো কথাটি আমরা আজকাল প্রায়ই শুনতে পাই, এবং শব্দটার যে আসলে অপব্যবহার হয় না তা নয়। তবে ন্যানো টেকনোলজি বোঝানোর সময় ন্যানো শব্দটা ঠিকভাবেই ব্যবহার হয়েছে। হাজার ভাগের এক ভাগ বোঝানোর জন্যে আমরা বলি মিলি (103)। যে রকম পিনের উপরের মাথাটার সাইজ এক মিলিমিটার। মিলিমিটারকে হাজার ভাগে ভাগ করলে হয় মাইক্রোমিটার (105), আমাদের শরীরের লোহিত রক্তকণিকার আকার কয়েক মাইক্রোমিটার। মাইক্রোমিটারকে হাজার ভাগে ভাগ করলে হয় ন্যানোমিটার (10)। যখন কোনো কিছুর আকার ন্যানোমিটারের কাছাকাছি হয়ে যায় তখন সেটা সাধারণ মাইক্রোস্কোপ দিয়ে আর দেখা যায় না। তার কারণ সাধারণ মাইক্রোস্কোপ আলো দিয়ে কাজ করে আর দৃশ্যমান আলোয় তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ন্যানোমিটারের চার থেকে সাতশত গুণ বেশি বড়! যাদের আগ্রহ রয়েছে তাদের জন্যে বলা যায় ন্যানো থেকে হাজার গুণ ছোট হলে তাকে বলে পিকো (10^-12) এবং পিকো থেকে হাজার গুণ ছোট হলে তাকে বলে ফ্যামটো (10^-15)। যদি কোনো যন্ত্র তৈরি করা হয় যার আকার 1 থেকে 100 ন্যানোমিটারের ভেতর তাহলে সেটাকে বলা হয় ন্যানো টেকনোলজি।

    বোঝাই যাচ্ছে ন্যানো টেকনোলজি সহজ কোনো বিষয় নয় এবং বিজ্ঞানের কোনো একটি নির্দিষ্ট শাখা দিয়ে নানো টেকনোলজি গড়ে তোলা সম্ভব না! ন্যানো টেকনোলজি গড়ে উঠেছে একই সাথে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান এবং অবশ্যই অনেকগুলো ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ের সাহায্যে। যে জিনিস সাধারণ মাইক্রোস্কোপ দিয়েও চোখে দেখা যায় না বিজ্ঞানীরা সেটা কেমন করে তৈরি করেন সেটা নিঃসন্দেহে কৌতূহলের বিষয়। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি আধুনিক সিনথেটিক রসায়ন এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে বিজ্ঞানীরা অণু-পরমাণু সাজিয়ে সাজিয়ে যে কোনো আকার গড়ে তুলতে পারেন। সেই 1999 সালেই কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা একটা নির্দিষ্ট লোহার পরমাণুর ওপর একটা নির্দিষ্ট কার্বন মনো অক্সাইডের অণু বসিয়ে তার ভেতর দিয়ে একটা বিদ্যুৎ ঝলক পাঠিয়ে সেটাকে পাকাপাকিভাবে সেখানে জুড়ে দিতে পেরেছিলেন। লরেন্স বার্কলে ল্যাবরেটরিতে কমপক্ষে তিনটা যন্ত্র রয়েছে যার আকার মাত্র কয়েক ন্যানোমিটার, কম্পিউটার ব্যবহার করে সেই যন্ত্রগুলো নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

    এখানে একটা জিনিস মনে রাখতে হবে, ন্যানো টেকনোলজি ব্যবহার করে তৈরি করা এই যন্ত্রগুলো শুধু যে ক্ষুদ্র তা নয়–অণু-পরমাণুর আকার হয়ে যাওয়ার কারণে তাদের ধর্ম পরিচিত জগৎ থেকে অনেক ভিন্ন। যেমন আমরা কখনোই একটা দেওয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগি না যে হঠাৎ করে আমরা বুঝি দেওয়াল কুঁড়ে অন্যদিকে চলে যাব! অণু-পরমাণুর জগতে সেটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা কারণ সেই জগৎটি আমাদের পরিচিত জগৎ থেকে অনেক ভিন্ন, সেটা নিয়ন্ত্রণ হয় কোয়ান্টাম কেমানিক্স দিয়ে। কোয়ান্টাম মেকানিক্স অনুযায়ী একটা ইলেকট্রন প্রায় রুটিন মাফিক তার সামনে দাঁড়া করানো দেওয়ালের মতো বাধা ভেদ করে অন্য পাশে চলে যায়। তাই আমাদের পরিচিত জগতে যেটা খাঁটি বিদ্যুৎ নিরোধক ন্যানো টেকনোলজির জগতে সেটার ভিতর দিয়ে কম-বেশি বিদ্যুৎ প্রবাহিত হতে পারে। আমাদের পরিচিত জগতে যেটা নিষ্ক্রিয় পদার্থ ন্যানো টেকনোলজির জগতে হঠাৎ করে সেটাই সক্রিয় হয়ে ওঠে, সোনা তার একটি উদাহরণ। পরিচিত জগতে সোনা একটা নিষ্ক্রিয় পদার্থ তাই সেটা কোনো কিছুর সাথে বিক্রিয়া করে না, হাজার বছরেও তার কোনো বিকৃতি হয় না। ন্যানো টেকনোলজির জগতে সোনা মোটেও নিষ্ক্রিয় নয়, সেটা অত্যন্ত সক্রিয় একটা অণু!

    ন্যানো টেকনোলজির জগন্টা সবে মাত্র উন্মোচিত হতে শুরু করেছে কাজেই তার ১ ভবিষ্যতা কী হবে সেটা কেউ খুব ভালো করে জানে না। অতীতে অনেক বার দেখা গেছে কোনো একটা প্রযুক্তিকে খুবই আশাব্যঞ্জক মনে হলেও শেষ পর্যন্ত প্রযুক্তিগত সমস্যা এমন বাড়াবাড়ি পর্যায়ে থাকে যে সেটা শেষ পর্যন্ত আর সাফল্যের মুখ দেখে না। তার একটা উদাহরণ উচ্চ তাপমাত্রার সুপার কন্ডাক্টর, আশির দশকে সারা পৃথিবীতে এটা নিয়ে যে উচ্ছ্বাসের জন্ম দিয়েছিল শেষ পর্যন্ত সেটা আর ধরে রাখা যায় নি। অনেক চেষ্টা করেও ব্যবহারযোগ্য উচ্চ তাপমাত্রার সুপার কন্ডাক্টর তৈরি করতে না পেরে পৃথিবীর প্রায় সব বিজ্ঞানী আর গবেষকই এটাকে পরিত্যাগ করেছেন। কাজেই ন্যানো টেকনোলজি নিয়ে এখন পৃথিবীতে যে উচ্ছ্বাস রয়েছে সেটাকে শেষ পর্যন্ত ধরে রাখা যাবে কী না সেটা নিয়ে অনেকের ভেতরেই। খানিকটা দুর্ভাবনা আছে।

    কোনো একটা প্রযুক্তির সাফল্য নির্ভর করে সেটা দিয়ে মানুষের ব্যবহারের উপযোগী কিছু একটা তৈরি করার মাঝে। সে হিসেবে ন্যানো টেকনোলজি বেশ খানিকটা এগিয়ে আছে, বেশ কিছু জিনিস তৈরি হয়েছে যেটা মানুষ ব্যবহার করতে শুরু করেছে কিংবা ব্যবহার শুরু করতে পারবে এরকম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। ন্যানো টেকনোলজি ব্যবহার করে যেসব জিনিস তৈরি হয়েছে তার মাঝে রয়েছে রৌদ্র প্রতিরোধক সান স্ক্রিন (যে ক্রিকেটাররা মুখে সাদা রং মেখে মোটামুটি ভয়ঙ্কর দর্শন হয়ে থাকেন সেই পাউডারটি!), নিজে থেকে পরিষ্কার হয়ে যাওয়া কাঁচ, কোনোভাবেই কুঁচকে যায় না এরকম কাপড়, ভেতর থেকে কোনোভাবেই বাতাস বের হয়ে যাবে না এরকম টেনিস বল । এল, সি, ডি, মনিটর, কম্পিউটারের মাইক্রোপ্রসেসর কিংবা ক্যাপাসিটর।

    উপরে যে জিনিসগুলোর কথা বলা হয়েছে সেগুলো ছাড়াও ন্যানো টেকনোলজি দিয়ে আরেকটি অসাধারণ জিনিস তৈরি হয়েছে সেটাকে বলা হয় ন্যানো ফাইবার। এটি হচ্ছে। কার্বনের পরমাণু দিয়ে তৈরি এক ধরনের টিউব, যেটার ব্যাস হয়তো মাত্র কয়েক ন্যানো মিটার কিন্তু দৈর্ঘ্য এক-দুই মিটার থেকে শুরু করে কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। এই সূক্ষ্ম তন্তু দিয়ে যদি কোনো দড়ি তৈরি করা যায় তাহলে সেটা ইস্পাত থেকে একশ গুণ শক্ত হবে কিন্তু ওজন হবে তার মাত্র ছয় ভাগের এক ভাগ্য।

    বলাই বাহুল্য ওজন কম কিন্তু পরিচিত যে কোনো জিনিস থেকে শতগুণ শক্ত সেরকম অসাধারণ একটা তন্তু (Fiber) দিয়ে অনেক ধরনের কাজ করা যায়, উদাহরণ দেওয়ার জন্যে টেনিস র‍্যাকেটের কথা বলা যায়, গাড়ির বডি কিংবা প্লেনের ফিউজলেজের কথাও বলা যায়। তবে সবচেয়ে চমকপ্রদ যে জিনিসটার কথা বলা যায় সেটা এখনো খানিকটা বিজ্ঞান এবং অনেকখানি কল্পবিজ্ঞান।

    মহাকাশ নিয়ে মানুষের কৌতূহল তাদের জন্মলগ্ন থেকে। মাত্র গত কয়েক দশকে মানুষ প্রথমবার পৃথিবীর আকর্ষণ থেকে যুক্ত হয়ে মহাকাশে উড়ে বেড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত যে প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানুষ মহাকাশে পাড়ি দিয়েছে সেটি অনেক খরচসাপেক্ষ। হিসেব করে দেখানো যায় প্রতি কেজি ওজনের কোনো কিছুকে মহাকাশে পাঠাতে খরচ পড়ে প্রায় দশ থেকে পনেরো হাজার ডলার–যেটা প্রায় সোনার দামের কাছাকাছি, কাজেই মহাকাশে যারার প্ৰযুক্তি মানুষের আয়ত্তের মাঝে এলেও সেটা এখনো সাধারণ মানুষের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। কেমন করে সাধারণ মানুষ মহাকাশে যেতে পারে সেটা নিয়ে বিজ্ঞানী এবং কল্পবিজ্ঞানীরা অনেক দিন থেকে চিন্তা করে আসছেন এবং দুই দলই একমত হয়েছেন যে সেটা করা সম্ভব মহাকাশ লিফট দিয়ে। ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করা খুবই সহজ–আমরা উঁচু দেয়ালে ওঠার জন্যে লিফট ব্যবহার করি, ঠিক সেরকম প্রায় পঁয়ত্রিশ হাজার কিলোমিটার উঁচু একটা লিফট থাকবে এবং মহাকাশ পরিব্রাজকরা সেই লিফটে করে মহাকাশে উঠে যাবেন!

    আমি জানি বেশিরভাগ পাঠকই ভুরু কুঁচকে বলছেন, “পঁয়ত্রিশ হাজার কিলোমিটার উঁচু একটা লিফট? পৃথিবীর ব্যাসার্ধের ছয় গুণ?” স্বীকার করতেই হবে এই মুহূর্তে এটাকে বিজ্ঞান কল্পকাহিনী বলাই বেশি যুক্তিসঙ্গত–কিন্তু বিজ্ঞান কল্পকাহিনী বলাও সম্ভব হতো না যদি দেখা যেত পৃথিবীর কোনো প্রযুক্তি দিয়েই এরকম একটা লিফট তৈরি করা সম্ভব না! পৃথিবীর সাথে বেঁধে রাখা একটা মহাকাশ স্টেশন পৃথিবীর সাথে সাথে ঘুরছে–সেটা সম্ভব করার জন্যে যে শক্ত ‘দড়ি’ দরকার সেটা আগে ছিল না, ন্যানো টেকনোলজি ব্যবহার করে যে কার্বন ফাইবার বা কার্বন ন্যানো টিউব তৈরি করা হয়েছে শুধুমাত্র সেগুলোও এই প্রচণ্ড শক্তিতে মহাকাশ স্টেশনকে ধরে রাখতে পারবে। ভবিষ্যতে কখনো এরকম মহাকাশ স্টেশন তৈরি করা এখন আর বিজ্ঞান কল্পকাহিনী নয়। যদি সত্যি সত্যি এই মহাকাশ লিফট তৈরি করা সম্ভব হয় তখন মহাকাশ অভিযানে যেতে খরচ হবে প্রতি কেজির জন্যে মাত্র দশ । ডলার–সাধারণ মানুষও খুব। সহজে সেই সুযোগ নিতে পারবে!

    নূতন প্রযুক্তি সবসময়েই নূতন ভীতির জন্ম দেয়। কিছুদিন আগে লার্জ হ্যাড্রন কলাইডারের কার্যক্রম শুরু করার সময় কিছু মানুষ সারা পৃথিবীতে একটা আতঙ্ক সৃষ্টি করে ফেলেছিল যে। এই কলাইডারে যে শক্তির জন্ম দেবে সেই শক্তিতে তৈরি হবে ব্ল্যাক হোল এবং সেই ব্ল্যাক হোল সমস্ত পৃথিবীকে গিলে খেয়ে ফেলবে। এই আতঙ্ক এমন এক পর্যায়ে চলে গিয়েছিল যে ভারতবর্ষের একটা কিশোরী সেটা আর সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছিল।

    এ ধরনের আতঙ্ক ভিত্তিহীন কারণ বিজ্ঞানীরা নূতন কোনো একটা প্রযুক্তি নিয়ে কাজ শুরু করার আগে সবসময়েই সেটা থেকে সম্ভাব্য বিপদগুলো কী হতে পারে সেটা নিয়ে ভাবনা চিন্তা করেন। তারা কখনোই এমন দায়িত্বহীন নন যে নিজের হাতে সারা পৃথিবীতে একটা মহাবিপর্যয়ের সৃষ্টি করে দেবেন।

    কাজেই ন্যানো টেকনোলজি নিয়ে কী বিপদ হতে পারে সেটা নিয়েও ভাবনা-চিন্তা চলছে। অত্যন্ত ক্ষুদ্র বলে আমাদের শরীরে, রক্তস্রোতে মিশে মস্তিষ্কে চলে গিয়ে শারীরিক বিপদ ডেকে আনা একটা অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য বিপদের আশঙ্কা। তবে যে বিপদটি চমকপ্রদ সেটা এরকম : ন্যানো টেকনোলজির এক পর্যায়ে তৈরি হবে ন্যানো রবোট, তারা নিজেরা নিজেদের তৈরি করে টেকনোলজির কাজে ব্যবহৃত হবে। হঠাৎ করে সেই ন্যানো রবোট যদি মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়ে নিজেরা নিজেদের তৈরি করতে শুরু করে–পৃথিবীর যা কিছু আছে তার সবকিছু ধ্বংস করে তারা শুধু নিজেদের তৈরি করতে থাকে তাহলে দেখা যাবে এই পৃথিবীতে আর কোনো জীবিত প্রাণী নেই। আপাতদৃষ্টিতে মনে হবে এটা বুঝি প্রাণহীন জগৎ কিন্তু আসলে এটা রাজত্ব করবে কোটি কোটি ন্যানো রবোট!

    বিজ্ঞানীরা এরকম কল্পনা করেছেন কিন্তু এটা শুধুই কল্পনা! কেউ যেন এটার কথা চিন্তা করে তাদের ঘুম নষ্ট না করেন, তার কারণ প্রযুক্তি নিয়ে সত্যিকারের দুর্ভাবনা করার আরো নানারকম কারণ রয়েছে।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleইস্টিশন – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    Next Article হটলাইন – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    Related Articles

    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    ছোটগল্প – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    সাদাসিধে কথা – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    মেকু কাহিনী – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    আমার বন্ধু রাশেদ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    সায়েন্স ফিকশান সমগ্র ১ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    টুনটুনি ও ছোটাচ্চু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

    November 19, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }