Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    October 28, 2025

    অ্যারিস্টটলের পলিটিক্স ও অন্যান্য প্রসঙ্গ – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025

    আলস্যের জয়গান – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    আলস্যের জয়গান – বার্ট্রান্ড রাসেল

    বার্ট্রান্ড রাসেল এক পাতা গল্প222 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ০৩. স্থাপত্যকর্ম ও কিছু সামাজিক প্রশ্ন

    অধ্যায় ৩ — স্থাপত্যকর্ম ও কিছু সামাজিক প্রশ্ন

    সেই আদিকাল থেকে স্থাপত্যকর্মের লক্ষ্য দুটি; একদিকে হলো একেবারে উপযোগবাদী, উষ্ণতা ও আশ্রয় যোগানো। অপরদিকে, রাজনৈতিক, পাথরে চমৎকারিত্ব ফুটিয়ে তোলার মাধ্যমে মানুষের মনে শ্রদ্ধাপূর্ণ বিস্ময় সৃষ্টি করা। দরিদ্রের জন্য মাথা গোঁজার ঠাই করা গেলেই প্রথম উদ্দেশ্য হাসিল হয়ে যায়; কিন্তু দেবতাদের মন্দির এবং রাজা-বাদশার প্রাসাদাদির নকশা তৈরি করা হতো আকাশের শক্তি এবং তাদের মতের প্রিয় পাত্রদের প্রীতি ভীতি জন্মানোর জন্য। কোনো কোনো ক্ষেত্রে রাজা নয়, গোটা সম্প্রদায়কে গৌরবান্বিত করা হতো; এথেন্সের অ্যাপলিস এবং রোমের ক্যাপিটাল ঐসব নগরীর রাজসিকতা প্রদর্শন করত প্রজা এবং মিত্রদের শিক্ষার জন্য। নন্দনতাত্ত্বিক গুণ ঈর্ষণীয় বিবেচনা করা হতো সর্বসাধারণের অট্টালিকায়, এবং পরবর্তীকালে, ধনাঢ্য ব্যক্তি এবং সম্রাটের প্রাসাদে, কিন্তু কৃষকের পর্ণ কুটীর কিংবা শহুরে লোকদের নড়বড়ে বস্তিতে প্রত্যাশা করা হতো না।

    মধ্যযুগের সমাজের জটিলতার কাঠামো সত্ত্বেও স্থাপত্যকর্মে শৈল্পিক দৃষ্টি অনুরূপভাবে সীমাবদ্ধ ছিল, বাস্তবিকপক্ষে আরো এ কারণে যে, বড় মানুষের গৃহ নির্মিত হতে সামরিক শক্তির কথা ভেবে, এবং ঐ গৃহসমূহের কোনো সৌন্দর্য থাকলে সেটা ছিল আকস্মিক ঘটনা। সামন্তপ্রথা নয়, গির্জা ও বাণিজ্যই মধ্যযুগের বৃহৎ অট্টালিকাগুলো নির্মিত হওয়ার কারণ। ক্যাথিড্রালগুলো মেলে ধরেছে সৃষ্টিকর্তা এবং তার বিশপদের মহিমা। ইংল্যান্ড এবং লো কান্ট্রিসের মধ্যে পশমের ব্যবসায়ীদের জানা ছিল যে ইংল্যান্ডের রাজা এবং বারগান্ডির ডিউক বেতনভুক লোক মাত্র এবং তাদের গরিমা প্রকাশ করেছে চমৎকার ক্লথ হল এবং ফ্লারের পৌরসভার অট্টালিকায়, একটু কম জাঁকজমকের সঙ্গে ইংরেজ দোকান বীথিতে। কিন্তু আধুনিক ধনিকতন্ত্রের জন্মস্থান ইতালি বাণিজ্যিক স্থাপত্যশিল্পকে সম্পূর্ণতা প্রদান করে। সাগরকনে ভেনিস, যে নগরী। ধর্মযুদ্ধকে অন্য পথে চালিত করে এবং খ্রিস্টিয় রাজাদের মধ্যে সঞ্চার করে ভীতির, Doges Place ও বণিক রাজকুমারদের প্রাসাদে সৃষ্টি করে নতুন এক ধরনের জাঁকালো সৌন্দর্য। উত্তরের গ্রাম্য ব্যারনদের মতো ভেনিস ও জেনোয়ার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নির্জনতা কিংবা সুরক্ষিত প্রাকারের দরকার ছিল না। বরং তারা পাশাপাশি বাস করেছে এবং এমন নগরী তৈরি করেছে যা ততটা অনুসন্ধিৎসু নয় এমন আগন্তুকের কাছে যা-কিছু দৃশ্যমান তা চমৎকার এবং নান্দনিক বিচারে সন্তোষজনক ছিল। ভেনিসে অপরিচ্ছন্নতা ঢেকে রাখা ছিল সহজ; নোংরা বস্তিগুলো পেছনের গলিতে লুকিয়ে থাকত এবং গন্ডোলা (ভেনিসের হালকা নৌকা-অনু.) ব্যবহারকারীরা তা কখনো দেখতে পেতেন না। ধনিকতন্ত্র এতটা পূর্ণ ও নিখুঁত সাফল্য আর কখনো অর্জন করতে পারে নি।

    মধ্যযুগে গির্জাগুলো শুধু ক্যাথিড্রাল নির্মাণ করে নি, আরো এক ধরনের দালান নির্মাণ করেছে যা আধুনিক প্রয়োজনের জন্য সমধিক উপযোগী ছিল; মঠ, সন্ন্যাসী সন্ন্যাসিনীদের জন্য আশ্রম এবং কলেজ। এসবের ভিত্তি ছিল সীমাবদ্ধ প্রকৃতির সাম্যবাদ, লক্ষ্য ছিল শান্তিপ্রিয় সামাজিক জীবন। এই দালানগুলোর যা-কিছু ব্যষ্টিক তা ছিল স্পার্টান এবং সাধাসিধে, গোষ্ঠীগত হলে হতো চমৎকার এবং অতি-পরিসরের। সন্ন্যাসীরা ক্ষুদ্র কুঠুরীতে মাথা গুজতে পেরেই সন্তুষ্ট থাকতেন; সংগঠনের গরিমা প্রকাশ পেত বৃহৎ হল-ঘর, চ্যাপেল এবং ভোজন কক্ষের জাঁকজমকে। বিলেতে সন্ন্যাসীর আশ্রম ও মঠগুলো প্রধানত টিকে আছে ধ্বংসস্তূপ হিসেবে পর্যটকদের আনন্দ দানের জন্য। তবে অক্সফোর্ড এবং ক্যামব্রিজের কলেজগুলো এখনও জাতীয় জীবনের অঙ্গ, এবং মধ্যযুগীয় গোষ্ঠীতন্ত্রের সৌন্দর্য ধারণ করে আছে।

    উত্তরাঞ্চলে রেনেসাঁস ছড়িয়ে যাওয়ার ফলে ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের অভব্য ব্যারনরা মনোযোগ দেয় ইতালির ধনিক শ্রেণির চাকচিক্য অর্জনের জন্য। মেডিসির কন্যাদের বিয়ে দেয়া হতো রাজা, কবি এবং চিত্রকরদের সঙ্গে, আর আলপসের উত্তরের স্থাপত্যশিল্পীরা অনুকরণ করেছে ফ্লোরেন্সের মডেল, অভিজাতরা সুরক্ষিত প্রাসাদের বদলে পল্লিতে তৈরি করেছে বাড়ি-ঘর, যা, আক্রমণের বিরুদ্ধে সুরক্ষার অবর্তমানে, চিহ্নিত হয়েছে মার্জিত ও সভ্য লোকদের নতুন ধরনের নিরাপত্তা হিসেবে। তবে এই নিরাপত্তা ফরাসি বিপ্লবের জন্য বিনষ্ট হয়ে যায় এবং তখন থেকে প্রথাগত স্থাপত্যশৈলী তার প্রাণ হারিয়েছে। এসব এখনও কোথাও কোথাও টিকে আছে যেখানে পুরোনো ধরনের ক্ষমতা বিদ্যমান, যেমন লুর্ভে নেপোলিয়নের সংযোজন। তবে এই সব সংযোজনের রয়েছে বাহুল্যপূর্ণ আলংকারিক কদর্যতা, যা থেকে তার নিরাপত্তাহীনতার প্রমাণ মেলে। মনে হয় তিনি ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন তাঁর মাতার বাজে ফরাসি ভাষায় বার-বার মন্তব্য: Pourvou que cela doure.

    ঊনবিংশ শতাব্দীর স্থাপত্যকর্ম ছিল দুধরনের, যন্ত্রে উৎপাদন এবং গণতান্ত্রিক ব্যক্তিস্বাতন্ত্রবাদ এর কারণ; একদিকে ধুয়া নিঃসরণের চিমনিযুক্ত কারখানা, অপরদিকে শ্রমজীবী পরিবারসমূহের জন্য ক্ষুদ্রাকৃতি গৃহের সারি। ফ্যাক্টরিগুলো যেখানে প্রতিনিধিত্ব করেছে শিল্পায়নের দরুন সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংগঠন সেখানে ক্ষুদে বাড়িগুলো প্রতিনিধিত্ব করেছে সামাজিক বিচ্ছিন্নতার, যা ব্যক্তিস্বাতন্ত্রবাদী জনগোষ্ঠীর আদর্শ। যেখানে ভূমির উচ্চ ভাড়ার হারের জন্য বহুতলাবিশিষ্ট দালান কাক্ষনীয়, তাদের রয়েছে সামাজিক নয় স্থাপত্যগত ঐক্য: সেখানে সারি সারি অফিস, এক দালানে অনেক বাড়ি, হোটেল, এবং এখানে যারা বাস করেন তারা আশ্রমের সন্ন্যাসীদের মতো গোষ্ঠী গঠন করেন না, বরং যতদূর সম্ভব চেষ্টা করেন একে অপরের অস্তিত্ব সম্পর্কে অসচেতন থাকার। ইংল্যান্ডের যেখানে ভূমির দাম খুব বেশি নয় সেখানে প্রতিটি পরিবারের জন্য পৃথক বাড়ির নীতি পালিত হয়। রেলপথে লন্ডন কিংবা উত্তরাঞ্চলের কোনো শহরে আসতে একজন দেখতে পাবেন সারি-সারি ছোট-ছোট বাড়িঘর। এর প্রতিটি বাড়ি ব্যক্তিজীবনের কেন্দ্র, গোষ্ঠীজীবনের প্রতিনিধিত্ব করে অফিস, কারখানা কিংবা খনি (কয়লা বা লোহার), জায়গার চরিত্র অনুসারে। পরিবারের বাইরের সামাজিক জীবন হবে একান্তভাবেই অর্থনৈতিক এবং অ-অর্থনৈতিক সকল সামাজিক প্রয়োজন পরিবারের মধ্যেই মেটাতে হবে কিংবা অপূর্ণ থেকে যাবে। কোনো সময়ের সামাজিক আদর্শ যদি তার স্থাপত্য গুণ দ্বারা বিচার করতে হয় তাহলে বলা যায় গত একশো বছরে কিছুই অর্জিত হয়নি।

    কারখানা এবং ক্ষুদে বাড়ির সারি থেকে আধুনিক জীবনের কৌতূহলোদ্দীপক অসামঞ্জস্য বোঝা যায়। বৃহৎ গোষ্ঠী সমূহের কাছে উৎপাদনই হয়ে দাঁড়িয়েছে একমাত্র ভাবনার ব্যাপার, যেখানে রাজনীতি এবং অর্থনীতির বাইরের সবকিছু সম্পর্কে আমাদের সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি রূপ নিয়েছে অধিকতর ব্যক্তি-ইচ্ছা-নির্ভর। এটা কেবল শিল্প এবং সংস্কৃতির ব্যাপারেই সত্য নয়, যেখানে আত্মপ্রকাশের তাড়না ঐতিহ্য এবং প্রথার বিরুদ্ধে বিশৃঙ্খল বিদ্রোহ পরিচালিত করেছে, এবং-হয়তো জনতার ভিড়ের জন্য-সাধারণ মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের ক্ষেত্রেও সত্য, আরো সত্য সাধারণ নারীর ক্ষেত্রে। কারখানায় বাধ্য হয়েই সামাজিক জীবন যাপন করতে হয়, এজন্যই সৃষ্টি হয়েছে ট্রেড ইউনিয়ন। আমি নিজের মধ্যে গুটিয়ে থাকি, মহিলারা বলেন; এবং তাদের স্বামীরা ভাবেন তারা বাড়িতে গৃহকর্তার ফেরার অপেক্ষায় বসে থাকবে। এজন্য মহিলাদের সহ্য করতে হয়, এমনকি তারা পছন্দও করে, পৃথক ছোট বাড়ি, পৃথক ছোট রান্নাঘর, গৃহকর্মের জন্য পৃথকভাবে খাটুনি, এবং বাচ্চারা বিদ্যালয়ে না থাকলে তাদের পৃথকভাবে সেবাযত্ন করা। পরিশ্রম কঠোর, জীবন একঘেয়ে, আর মহিলারা নিজের বাড়িতেই কারাবন্দী; তবু, এসব তার স্নায়ুর উপর চাপ সৃষ্টি করলেও, গোষ্ঠীজীবনের চেয়ে এটাই তার পছন্দ। কারণ স্বতন্ত্র থাকলে আত্ম-সম্মানে ঘা লাগে না।

    এই ধরনের স্থাপত্যকর্মের প্রতি পক্ষপাতের সঙ্গে মহিলাদের মর্যাদা যুক্ত। নারী আন্দোলন এবং ভোট সত্ত্বেও স্ত্রীদের অবস্থা, অন্তত শ্রমজীবী শ্রেণিতে, আগের থেকে মোটেই পরিবর্তিত হয়নি। স্ত্রী এখনও স্বামীর উপার্জনের উপর নির্ভর করে এবং সে কঠোর পরিশ্রম করলেও মজুরি পায় না। পেশাগতভাবে গৃহকত্রী বলে সে সংসার চায়, সংসারকর্ম পছন্দ করে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে কাজ করার সুযোগের ইচ্ছা, যা অধিকাংশ মানুষের থাকে, তাকে বাড়িতেই তৃপ্ত করতে হয়। আর স্বামী এই অনুভূতি উপভোগ করে যে স্ত্রী তার জন্য কাজ করে এবং অর্থনৈতিকভাবে তার উপর নির্ভরশীল। উপরন্তু তার স্ত্রী, তার বাড়ি, তাকে সম্পত্তি থাকার সুখ দেয় যা ভিন্ন ধরনের স্থাপত্যকর্মে সম্ভব হতো না। বৈবাহিক অধিকারচেতনা থেকে স্বামী ও স্ত্রী উভয়ে, সামাজিক জীবনের বাসনা কখনো পোষণ করলেও, এই ভেবে খুশি থাকে যে যাক অপর কোনো সম্ভাব্য বিপজ্জনক বিপরীত লিঙ্গ ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ কমই। অতএব তাদের জীবন অচলায়তনে আবদ্ধ হলেও এবং স্ত্রীর খাটুনি অযথা বেশি হলেও কেউ সামাজিক জীবনের জন্য ভিন্ন কোনো সংস্থা বাসনা করে না।

    এসবই পরিবর্তিত হতো, যদি ব্যতিক্রম না হয়ে নিয়ম হতো যে বিবাহিত মহিলা বাড়ির বাইরে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করবে। পেশাদার শ্রেণিতে ইতোমধ্যে অনেক স্ত্রী স্বাধীনভাবে কাজ করে অর্থ উপার্জন করছে। মহিলাদের দরকার হলো আনুষঙ্গিক সুবিধাসহ ফ্লাট-বাড়ি কিংবা গোষ্ঠীভিত্তিক রান্নাঘর, যাতে আহার্য সম্পর্কে তাকে ভাবতে না হয়, তাছাড়া দরকার নার্সারি স্কুল, যাতে অফিসের সময়ে সন্তানের দায়িত্ব নার্সারি স্কুল পালন করতে পারে। বিবাহিত মহিলা প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে কাজ করছে এতে দুঃখিত হবার কথা এবং দিনের শেষে যদি তাকে এমন কাজ করতে হয় যা সাধারণ মহিলারা করে থাকে (চাকুরিজীবী নয়), তাহলে তার উপর কাজের বোঝাটা একটু বেশিই হবে। কিন্তু স্থাপত্যকর্ম সঠিক হলে মহিলারা গৃহস্থালি কর্ম, সন্তানের দেখাশোনার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাবে। এতে তার স্বামীর, সন্তানাদির সুবিধা হবে এবং সেক্ষেত্রে স্ত্রী ও মাতাদের চিরাচরিত কাজের বিকল্প হিসেবে পেশাদারী কাজ দিলে সুস্পষ্ট লাভ পাওয়া যাবে। সেকেলে ফ্যাশনের স্ত্রীর স্বামীরা এটা মেনেও নেবে যদি তাদের বেশি নয়, কেবল এক সপ্তাহের জন্য স্ত্রীর কাজগুলো করতে হয়।

    শ্রমজীবী ব্যক্তির স্ত্রীর কাজ আধুনিক করা হয় নি কারণ কাজের জন্য পারিশ্রমিক মেলে না। অথচ বাস্তবে অধিকাংশ কাজই অদরকারি, বাকি কাজের অধিকাংশ বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের মধ্যে বণ্টন করে দেয়া যেতে পারে। এবং এটা যদি করতে হয় তাহলে প্রথম যে সংস্কার কর্মটি হাতে নিতে হবে তা হলো স্থাপত্যকর্ম সংস্কার। সমস্যাটা হলো, সেই একই গোষ্ঠীগত সুবিধা অর্জন যা মধ্যযুগের মঠ-আশ্রমে ছিল, কিন্তু ব্রহ্মচর্য পালন ছাড়াই। অর্থাৎ শিশুদের প্রয়োজন মেটানোর ব্যবস্থা থাকতে হবে।

    আমরা প্রথমে বিবেচনা করে দেখবো কী কী অহেতুক অসুবিধা বর্তমান ব্যবস্থায় রয়েছে। যেখানে প্রত্যেক শ্রমজীবীর সংসার স্বয়ম্ভু, তা সে পৃথক বাড়িতে হোক বা বড় অট্টালিকার ফ্লাটে হোক।

    গুরুতর অকল্যাণ হয় সন্তানদের। স্কুলে যাওয়ার বয়স হওয়ার আগে রোদ-বাতাস তারা কমই পায়; মা যে খাবার দেয় তাই তাদের খেতে হয়,-যে মা দরিদ্র, অজ্ঞ, অতিব্যস্ত এবং বয়স্কদের জন্য এক রকম, ছোটদের জন্য অন্যরকম আহার্য সংস্থানে অসমর্থ। মা রান্না বা গৃহের অন্যান্য কাজের সময় তারা নিয়তির উপদ্রব করে, এতে মায়ের মন বিগড়ে যায়, তার স্নায়ুতে চাপ পড়ে, ফলে তাদের শাস্তি পেতে হয়। শাস্তি পাবার পর তারা হয়তো আদরও পায়; এই ছেলেদের কখনো স্বাধীনতা থাকে না। মুক্ত জায়গা এবং উপযুক্ত পরিবেশ পায় না যেখানে তাদের স্বাভাবিক কার্যকলাপ নির্দোষ বলে গণ্য হবে। পরিস্থিতির দরুন তারা দুর্বল হয়ে পড়ে, স্নায়ুরোগে ভোগে এবং তাদের স্বভাব হয় নতজানু প্রকৃতির।

    মায়েদের ক্ষতির দিকটাও খুব গুরুতর। তাকে একই সঙ্গে নার্স, রাঁধুনি এবং পরিচারিকার কাজ করতে হয়, এবং এর একটি কাজের জন্যও সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয়। অনিবার্য কারণেই সে একটি কাজও সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে পারে না। সে সব সময় ক্লান্ত থাকে এবং সন্তানদের দেখে সুখানুভব করার চেয়ে বরং বিরক্তিই বোধ করে। কাজ শেষে তার স্বামী অবসর ভোগ করে। কিন্তু তার অবসর নেই; পরিশেষে অনিবার্য কারণেই তার মেজাজ হয় খিটখিটে, সংকীর্ণ-মনা এবং ঈর্ষাকাতর।

    স্বামীর অসুবিধা একটু কম, কারণ সে বাড়িতেই থাকে কম। কিন্তু সে যখন বাড়িতে থাকে তখন নিশ্চয়ই স্ত্রীর অসন্তুষ্ট স্বভাব কিংবা সন্তানের অসৎ আচরণ উপভোগ করে না। যেখানে তার অভিযুক্ত করা উচিত স্থাপত্যকর্মকে সেখানে সে অভিযুক্ত করে স্ত্রীকে, ফলশ্রুতি দাঁড়ায় দুঃখজনক, এই দুঃখজনক ফলশ্রুতির হেরফের ঘটে তিনি কতটা পাশবিকতা করতে পারেন তার তুলনায়। এ ধরনের ব্যবস্থা ত্রুটিহীন হয়ে যায় না যদি অঘটনের সংখ্যা বিরল হয়ে যায়।

    আমি অবশ্যই বলছি না যে এটা সার্বজনীন ব্যাপার, এবং সব ক্ষেত্রেই ঘটে, কিন্তু আমি বলি যে, যখন ঘটে না তখন দরকার অতিরিক্ত মাত্রায় আত্ম-নিয়ন্ত্রণ, প্রজ্ঞা, এবং মায়ের দৈহিক শক্তি। স্পষ্টতই সে ব্যবস্থা মানুষের ভেতর এতটা গুণাবলি দাবি করে যে তা কেবল ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রেই সফল হয়।

    এইসব অসুবিধা একযোগে দূর করার জন্য দরকার স্থাপত্যকর্মে সামষ্টিক উপাদান সূচিত করা। পৃথক ক্ষুদ্র বাড়ি, রান্নাঘরসহ বস্তির সারি ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে হবে। তদস্থলে সারি সারি উঁচু দালান কেন্দ্রীয় চতুর্ভুজ ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকবে, দক্ষিণ দিকটা নিচু রাখতে হবে সূর্যালোক প্রবেশের জন্য। একটা সাধারণ রান্নাঘর থাকবে, প্রশস্ত ভোজন-কক্ষ, একটা বৃহৎ ঘর থাকবে আমোদ-প্রমোদ, সভা সমিতি এবং সিনেমা দেখার জন্য। কেন্দ্রীয় চতুর্ভুজে থাকবে একটা নার্সারি স্কুল এবং তা এমনভাবে নির্মিত হতে হবে যাতে বাচ্চারা নিজেদের ক্ষতি করতে না পারে, সহজ-ভঙ্গুর সামগ্রীও নষ্ট না। করতে পারে। কোনো সিঁড়ি থাকতে পারবে না, খোলা জায়গায় আগুন থাকে না কিংবা উত্তপ্ত স্টোভ থাকবে শিশুদের নাগালের বাইরে; থালা-বাসন, কাপ, পাতিল তৈরি হতে হবে অভঙ্গুর সামগ্রী দিয়ে। এবং সর্বতোভাবে চেষ্টা করতে হবে এমন ব্যাপার এড়িয়ে চলার যাতে বাচ্চাদের উঠতে-বসতে এটা করো না, ওটা করো না বলতে না হয়। আবহাওয়া ভালো থাকলে নার্সারি স্কুল বসবে খোলা আকাশের নিচে, আবহাওয়া খারাপ হলে, এমন কক্ষে স্কুল বসবে যার একটি অংশ বায়ু চলাচলের জন্য ভোলা। ওরা আহার-পর্ব সারবে নার্সারি স্কুলে, স্কুল খুব সস্তায় স্বাস্থ্যোপযোগী খাবার সরবরাহ করতে পারবে, যা ওদের মায়েদের পক্ষেও সরবরাহ করা সম্ভব নয়। ছাত্র থাকাকালে তারা প্রাতঃরাশ থেকে রাত্রির শেষ আহার গ্রহণ পর্যন্ত গোটা সময়টা স্কুলেই কাটাবে। এখানে তাদের আমোদ ফুর্তির প্রচুর সুযোগ মিলবে। তাদের নিরাপত্তার জন্য দরকার করবে ন্যূনতম তদারকি।

    এতে বাচ্চাদের প্রচুর লাভ হবে, তাদের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে মুক্ত বাতাস, রোদ, প্রশস্ত পরিসর এবং ভালো খাবারের জন্য। চরিত্র উন্নত হবে স্বাধীনতা এবং বিরামহীন কুঁদুলে বিধিনিষেধের আবহ থেকে মুক্ত থাকার জন্য। অধিকাংশ শ্রমজীবী বাড়ির আবহ ঐ রকমই হয়। চলাফেরার স্বাধীনতা, যা কেবল কিশোর বয়সীদের নিরাপদে অনুমোদন করা যায় বিশেষভাবে গঠিত পরিবেশে, তা নার্সারি স্কুলে হবে নির্বাধ, এতে ফল হবে যে ওরা অভিযান প্রিয় হবে, ওদের পেশির দক্ষতা বিকশিত হবে স্বাভাবিকভাবে, যেমন সমবয়সী প্রাণীকুলের মধ্যে দেখা যায়। কিশোরদের চলাফেরায় সব সময় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে তারা অসন্তুষ্ট হয় এবং পরবর্তী জীবনে হয় দুর্বলচিত্ত; তবে তাদের যদি বয়স্কদের মধ্যে থাকতে হয় তাহলে বিধিনিষেধ অনিবার্য হয়ে পড়ে; সুতরাং নার্সারি স্কুল একই সঙ্গে তাদের চরিত্র ও স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি হবে।

    মহিলাদেরও বিরাট সুবিধা হয়। শিশু মাতৃক্রোড় ত্যাগ করার পর থেকেই তারা পুরোদিনের জন্য এমন মহিলাদের তদারকিতে থাকবে যারা উক্ত কাজের জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত। মায়েদের খাদ্য ক্রয়ের দায়িত্ব থাকবে না, রান্না করার না, বাসন-কোসন ধোয়ার না। তারা কাজের জন্য সকালে বেরিয়ে পড়বে, ফিরবে সন্ধেয়। তাদের স্বামীদের মতোই। স্বামীদের মতোই তাদের একটা সময় থাকবে কাজের, একটা সময় অবসর ভোগের। তাদের সব সময় ব্যস্ত থাকতে হবে না। তারা সকালে ও সন্ধেয় সন্তানের দেখা পাবে। হেবর্ষণের জন্য পাবে যথেষ্ট সময়, আবার তা স্নায়ুতে চাপ পড়ার জন্য যথেষ্ট হবে না। যে মায়ের সারাদিন কাটে সন্তানের সঙ্গে তার কৃচিৎ অতিরিক্ত বল থাকে তাদের সঙ্গে খেলাধুলা করার; আসলে মায়ের চেয়ে বাপই বেশি সন্তানের সঙ্গে খেলাধুলা করে। সত্যি বলতে কি, অত্যন্ত স্নেহশীল বয়স্ক ব্যক্তিও বাচ্চাদের প্রতি বিরক্ত হবেন যদি তিনি বিরামহীন মনোযোগের দাবি থেকে মুহূর্তের জন্যও বিশ্রাম না পান। কিন্তু আলাদাভাবে দিন কাটলে সন্ধেবেলা মা-সন্তান উভয়ে অধিক স্নেহ অনুভব করবে। সারাদিন একসঙ্গে থাকলে যা সম্ভব নয়। দৈহিকভাবে ক্লান্ত কিন্তু মনের দিক থেকে প্রশান্ত সন্তান নার্সারি স্কুলের মহিলার নিরপেক্ষ যত্নের পর মায়ের সেবা অধিক উপভোগ করবে। পারিবারিক জীবনের যা-কিছু ভালো তা টিকে থাকবে, স্নেহমমতার উদ্বেগজনক এবং ধ্বংসাত্মক ব্যাপারটা ছাড়াই।

    নারী ও পুরুষ সমভাবে ক্ষুদে কামরার সীমাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবেন, সময় কাটবে সাধারণের বৃহৎ কক্ষে, যা স্থাপত্যকর্মের দিক থেকে কলেজ হলগুলোর মতোই চমৎকার হতে পারে। সৌন্দর্য ও পরিসরের সুবিধা শুধু ধনীরা ভোগ করবে, এটা কোনো মতেই আবশ্যিক হতে পারে না। অচলায়তনে আবদ্ধ থাকলে যে বিরক্তি জন্ম নেয় তার পরিসমাপ্তি ঘটবে। যা পারিবারিক জীবন অনেক সময় অসম্ভব করে তোলে।

    স্থাপত্যকর্মের সংস্কার করলে এই ফলগুলো পাওয়া যাবে।

    একশো বছরেরও আগে রবার্ট ওয়েন অনেক পরিহাস কুড়িয়েছিলেন তাঁর সামবায়িক সামন্তরিক ক্ষেত্রর জন্য তাঁর কিন্তু প্রচেষ্টা ছিল শ্রমজীবীদের জন্য কলেজ জীবনের সুবিধা তৈরি করা। ঐ সময়ের ঘোর দরিদ্রতার জন্য উক্ত প্রস্তাব অবশ্য কালোপযোগী বিবেচিত হয়নি। তবু তার প্রস্তাবের অনেক অংশ এখন বাস্তবতার কাছাকাছি এবং কাম্য বলে বিবেচিত। তিনি নিজে নিউ লানার্কে আলোকসম্পাতী নীতির ভিত্তিতে নার্সারি স্কুল প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি নিউ লানার্কের বিশেষ পরিস্থিতির জন্য বিপথগামী হয়ে সামন্তরিক ক্ষেত্রকে উৎপাদনশীল ইউনিট গণ্য করেন, অথচ শুধু আবাসস্থল গণ্য করার কথা ছিল। প্রথম থেকেই শিল্পায়নের ঝোঁক ছিল অতিরিক্ত উৎপাদনের উপর, ভোগ ও সাধারণ জীবনযাপন গুরুত্ব পায়নি। এটা মুনাফার উপর অতিরিক্ত গুরুত্ব প্রদানের ফলশ্রুতি। আর মুনাফার সঙ্গে একমাত্র সম্পর্ক উৎপাদনের। ফলে কারখানা হয়ে পড়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক। শ্রমবিভাগ সম্ভব শেষ বিন্দুতে পৌঁছে গেছে, পক্ষান্তরে গৃহ রয়ে গেছে অবৈজ্ঞানিক এবং এখনও অতিরিক্ত কাজের বোঝায় ন্যুজ মায়েদের মাথায় বিচিত্র ধরনের কাজ চাপিয়ে দেয়া হয়। মুনাফা অর্জন-অভিলাষ প্রাধান্য পাওয়ার স্বাভাবিক ফল এই দাঁড়িয়েছে যে, মানবিক কর্মকাণ্ডের সেই সব ক্ষেত্রগুলোই সবচেয়ে বেশি এলোমেলো, অসংগঠিত এবং সর্বতোভাবে অসন্তোষজনক যেখান থেকে কোনো প্রকার আর্থিক মুনাফা লাভের আশা নেই।

    অবশ্য স্বীকার করতে হবে স্থাপত্যকর্মের সংস্কারের প্রতি সবচেয়ে শক্তিশালী আপত্তি আসবে স্বয়ং শ্রমজীবীদের মনস্তত্ত্ব থেকে। তারা যতই বিবাদ করুক, গৃহকোণেরর নিভৃত সবার পছন্দ এবং তাদের গরিমা ও অধিকারবোধ এতে সন্তুষ্ট হয়। মঠ-আশ্রমের মতো অবিবাহিত গোষ্ঠীজীবনে অনুরূপ সমস্যা দেখা দেয়নি। বিবাহ ও পারিবারিক জীবনই গোপনীয়তা রক্ষার প্রবৃত্তি সূচিত করেছে। আমি মনে করি না যে এই প্রবৃত্তি চরিতার্থ করার জন্য পরিবারের গৃহকোণে রান্না করার বাস্তবিকপক্ষে কোনো দরকার রয়েছে। আমি বিশ্বাস করি নিজস্ব আসবাবপত্রসহ নিভৃত-গৃহ তাদের জন্য যথেষ্ট যারা এসবে অভ্যস্ত। কিন্তু আন্তরিক অভ্যাস পরিবর্তন সব সময়ই কঠিন। মহিলাদের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা অবশ্য ক্রমে ক্রমে তাদের জীবিকা উপার্জনের জন্য গৃহের বাইরে নিয়ে যাবে এবং এতে আমরা যে ধরনের ব্যবস্থার কথা ভাবছি তা তাদের কাছে কাক্ষনীয় হয়ে উঠতে পারে। শ্রমজীবী শ্রেণির মহিলাদের মধ্যে নারী স্বাধীনতা আন্দোলন ব্যাপারটা এখনও বিকাশের প্রাথমিক স্তরে। তবে এটা বৃদ্ধি পাবে যদি ফ্যাসিবাদী প্রতিক্রিয়া দেখা না দেয়। হয়তো এই অভীষ্ট থেকে মহিলারা গোষ্ঠীভিত্তিক রান্নাবান্না পছন্দ করবেন, নার্সারী স্কুলও তাদের পছন্দ হবে। পরিবর্তনের তাড়না পুরুষদের কাছ থেকে আসবে না। শ্রমজীবী পুরুষ, তারা সমাজতন্ত্রী কিংবা ক্যুনিস্ট হলেও, স্ত্রীদের মর্যাদার পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা দেখতে পায় না।

    বেকারত্ব যেখানে গুরুতর অমঙ্গল হিসেবে রয়ে গেছে, যেখানে অর্থনৈতিক বিধিবিধান উপলব্ধির ব্যর্থতা প্রায় সার্বজনীন, সেখানে মেয়েদের চাকরিতে নিয়োগ ব্যাপারে স্বভাবতই আপত্তি ওঠে। কারণ এতে পুরুষের বেকারত্ব বাড়ে। তাদের চাকুরি মেয়েরা ছিনিয়ে নেয় বলে। এই কারণে বিবাহিত মহিলার সমস্যার সঙ্গে বেকারত্বের সমস্যা জড়িত এবং এই সমস্যা কিছুটা সমাজতন্ত্র ছাড়া সমাধান সম্ভব নয়। যে যাই হোক, যে সামন্তরিক ক্ষেত্র নির্মাণের পক্ষে আমি ওকালতি করছি তা বৃহদাকারে বাস্তবায়িত করতে হলে বৃহৎ সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে করতে হবে। কারণ শুধুমাত্র মুনাফা লোটার অভিপ্রায় থেকে এটা আশা করা যায় না। শিশুর স্বাস্থ্য ও চরিত্র এবং মায়েদের স্নায়ু দুর্ভোগ পোহাতেই থাকবে যতদিন মুনাফা লাভের বাসনা আমাদের অর্থনৈতিক কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করবে। কিছু জিনিস অভিপ্রায় দ্বারা অর্জন করা যায়। কিছু জিনিস যায় না; অর্জনে ব্যর্থতার তালিকায় পড়ে শ্রমজীবী শ্রেণির স্ত্রী ও সন্তানদের অবস্থার উন্নয়ন,-এবং যা আরো কাল্পনিক মনে হতে পারে-শহরতলী সুন্দর করা। কিন্তু আমরা যদিও শহরতলীর বিকটতা মার্চের বাতাস কিংবা নভেম্বরের কুয়াশার মতো স্বাভাবিক বলে ধরে নিই, তবু এটা বস্তুত অনুরূপ অনিবার্য নয়। শহরতলীর বাড়ি-ঘরগুলো যদি ব্যক্তিগত উদ্যোগে না-হয়ে পৌরসভা দ্বারা নির্মিত হতো, থাকত পরিকল্পিত রাস্তাঘাট, কোর্টস অব কলেজের মতো বাড়ি, তাহলে তো কারণ দেখতে পাই না সেগুলো কেন চোখের জন্য আনন্দদায়ক হতো না। উদ্বেগ ও দারিদ্র্যের মতো বিকটতার জন্যও আমাদের মূল্য দিতে হয়। ব্যক্তি-মুনাফার প্রতি দাসত্বের জন্য আমাদের যে মূল্য দিতে হয় এটা তারই অংশ।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleপ্লেটোর ইউটোপিয়া ও অন্যান্য প্রসঙ্গ – বার্ট্রান্ড রাসেল
    Next Article অ্যারিস্টটলের পলিটিক্স ও অন্যান্য প্রসঙ্গ – বার্ট্রান্ড রাসেল

    Related Articles

    বার্ট্রান্ড রাসেল

    অ্যারিস্টটলের পলিটিক্স ও অন্যান্য প্রসঙ্গ – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025
    বার্ট্রান্ড রাসেল

    প্লেটোর ইউটোপিয়া ও অন্যান্য প্রসঙ্গ – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025
    বার্ট্রান্ড রাসেল

    সক্রেটিসের আগে – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025
    বার্ট্রান্ড রাসেল

    পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাস – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    October 28, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    October 28, 2025
    Our Picks

    সাহিত্যিকদের ছদ্মনাম

    October 28, 2025

    অ্যারিস্টটলের পলিটিক্স ও অন্যান্য প্রসঙ্গ – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025

    আলস্যের জয়গান – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 28, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }