ইতি নির্ভয়পুর – ৩৫
৩৫
সুজয়ের বাড়িতে পৌঁছেই স্তব্ধ হয়ে গেল শৌনক। সুজয়কে আঁকড়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে সুনীল-স্যার।
নূপুর ফিসফিস করে বলল, “পামেলা মিত্রকে সত্যিই ভালোবাসতেন স্যার। অমন চক্রান্তবাজ মহিলাকে বিশ্বাসও করতেন খুব। ভেঙে পড়েছেন হয়তো। পামেলা মিত্রর বডি পোস্টমর্টেমে নিয়ে গেছে পুলিশ।”
শৌনক বলল, “উঁহু, এটা ভেঙে পড়ার চেহারা নয়। সামথিং ফিশি।”
সুজয় ওঁদের দেখে চিন্তাগ্রস্ত মুখেই এগিয়ে এসে বলল, “আরে শৌনকলা, খুব ভালো হয়েছে তোমরা এসেছ। আমি সুনীল-স্যারকে নিয়ে তোমার কাছেই যাচ্ছিলাম। নূপুর-ম্যাডাম এসেছে ভালোই হয়েছে।”
শৌনক কিছু বলার আগেই সুনীল-স্যার বলল, “শৌনক তুমি তো ডাক্তার, তুমি বলতে পারো, খুনিকে খুন করলে তার কী শাস্তি হতে পারে? আমি শুনেছি জানো, পামেলা আর ঘোষাল মদ খেতে খেতে আলোচনা করছিল। শুনবে তোমরা শুনবে? আমি ফোনে রেকর্ড করেছি।”
কাঁপা হাতে ফোনের একটা অডিও চালিয়ে দিল সুনীল।
পামেলা বলছে, “তা হলে সুনীল, ওই কথাই রইল, আজ রাতে কুন্তলী শেষ। রাখছি।”
“এই পামেলা, তুমি এই শুয়োরের বাচ্চাটাকে এত বিশ্বাস কেন করো? এই সুনীলের তো আদিবাসী ছেলেদের ফুটবলার বানানোর নেশা, এ যদি আবেগে ভুলভাল করে দেয়, প্ল্যান তো যাবেই, তুমি আর আমি ফেঁসে যাব।”
পামেলা বলল, “আহা মৃণাল, তুমি শুধু আমার শরীরটা নিয়েই ব্যস্ত থাকো। ব্রেনটা কখনও পরখ করোনি। আজ অবধি দেখেছ পোষা কুকুর কোনওদিন মালিককে কামড়াচ্ছে? সুনীল আমার পোষা কুকুর। পামেলাভক্ত। তবে সুনীলের সাহসের বড়ো অভাব। ভীষণ রকমের ছা-পোষা। তাই ওকে বেশিদিন বাঁচিয়ে রেখে আমার লাভ নেই। তবে কুন্তলীর জন্য ওকে দরকার। কুন্তলী ওকে বিশ্বাস করে, আমাদের নয়। তাই ওকে দিয়েই ডাকতে হবে। তারপর টুক করে সুনীলকে যুদ্ধে পরাজিত করে তুমিই মালিক হয়ো গোটা পামেলার।”
ঘোষাল হাসছে, পামেলা হাসছে।
সুনীল ফিসফিস করে বলল, “মেরে ফেলত, আমাকেও মেরে ফেলত। কুন্তলীর পরে আমার পালা।”
শৌনক ওর মুখ দেখেই বুঝল, নার্ভাস ব্রেকডাউন।
নূপুর বলল, “সিডেটিভ কিছু দিতে হবে, বুঝলে?”
শৌনক বলল, “সেটা পরে হবে, আগে ওর কথাটা শুনতে হবে।”
সুজয় বলল, “শোনো শৌনকদা, আমি তোমায় কয়েকটা কথা বলছি। যদিও ফাদার আর সুনীল-স্যার দুজনেই আমায় বিশ্বাস করে বলেছেন। কিন্তু তুমি তো এখানের মানুষের মতো বোকা আর গুরুত্ব না বোঝা মানুষ নও, তাই তোমায় আমি সবটাই বলছি। পামেলা মিত্রকে সুনীল-স্যার খুন করিয়েছে। চমকে উঠলে তো? আমি চমকাইনি। কারণ, কাল বিকেলেই আমায় স্যার খবর দিয়েছিল, ওরা কুন্তলীকে মারতে চায়, তারপর আমার ফাঁসিয়ে দিতে চায়। ওরা বলতে পামেলা আর মৃণাল ঘোষাল। ওদের প্ল্যানটা পর্যন্ত সুনীল-স্যার এসে আমায় জানায়।”
শৌনক বলল, “পামেলা মিত্র তোমার অপোনেন্ট, সঙ্গে নীহার-কুন্তলী গুঞ্জন এটা তো কারণ, কিন্তু মৃণাল ঘোষাল তোমায় কেন ফাঁসাতে চায় এটাই তো বুঝলাম না।”
সুজয় হেসে বলল, “আসলে সে হিসেবটা আবার বহু পুরোনো। আমি এতদিন জানতাম না। হঠাৎই কনকলতা জেঠিমা আমার নামে বিশাল অঙ্কের সম্পত্তি লিখে দিলেন। তার কারণও আমার কাছে অজানা। এরকম প্রচুর প্রশ্নের উত্তর পেলাম কাল ফাদারের কাছে। আসলে শৌনকদা, মৃণাল ঘোষাল আমার বায়োলজিক্যাল ফাদার। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে, ঠিক যেমন কুন্তলীকে স্বীকার করল না মিত্র ফ্যামিলি, তেমনই আমার মাকেও স্বীকার করেনি ঘোষাল ফ্যামিলি। তখন আমার বাবাকে চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়ে, বাবার সঙ্গে মায়ের বিয়ে দিয়ে, নিজেদের পরিবারের দুর্নাম ঢেকেছিল। কিন্তু এখন আমার নামে যখন জেঠিমা সম্পত্তি লিখে দিয়েছেন, তখন মৃণাল ঘোষালের মনে হয়েছে আবার যদি কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে যায়। কিন্তু ঘোষাল জানেই না, আমি ওকে জীবনে কোনওদিন বাবা বলে স্বীকারই করব না। অমন একটা নোংরা লোক, খুনি মানসিকতার লোক মালিকপক্ষ হতে পারে, কিন্তু বাবা নয়। তাই ঘোষাল আর পামেলা হাত মিলিয়েছিল। পামেলা নিজের সব প্ল্যান বলেছিল সুনীল-স্যারকে। কিন্তু মদের ঘোরে পামেলা ফোনটা ডিসকানেক্ট করতে ভুলে গিয়েছিল। তাই স্যার ওদের পরের প্ল্যানটাও শুনতে পেয়েছিল। স্যার কুন্তলীকে বাঁচাতেই আমায় খবর দিয়েছিল। আর ঘোষালের গাড়ির ড্রাইভারকে পামেলার ছবি পাঠিয়ে বলেছিল, একে মারতে হবে। পামেলাকেও প্রাইমারি স্কুলে ভোটের প্রচারের নামে বের করে এনেছিল। স্যার বলেছিল, পায়ে হেঁটে আসতে। যাতে নির্ভয়পুরের মানুষ ওকে আপন ভাবে। তারপর পামেলা নিজেই বলেছিল, হাইরোডের কাছে গিয়ে কুন্তলীর বডিটা একবার দেখে শান্তিতে মিটিং করবে। তখনই স্যারের নির্দেশে পামেলা মিত্রকে চাপা দেয় ঘোষালের লরি। তারপর থেকেই স্যার কেমন যেন করছে। বারবার বলছে, ‘আমি কি অন্যায় করলাম সুজয়? পামেলা যে আমায় বিশ্বাস করেছিল। কিন্তু আমি যে নির্ভয়পুরের মানুষগুলোকে ভালোবাসি। নিজেকেও ভালোবাসি। এদের ক্ষতি করব কী করে? কুন্তলী সেদিন কত আশা নিয়ে বলেছিল, মরে গেলেই হয়, তা হলে আর সুজয়দাকে বিপদে ফেলতে হয় না, কিন্তু মরতে বড়ো ভয় হয়।’ এটা শোনার পর থেকেই স্যার ঠিক করে নিয়েছিল, পামেলার কথা মতো চললেও মানুষ খুনের পাপ করবে না। কিন্তু পামেলা মিত্র, যে কিনা নিজের ভাইকে মেরে দিতে দু’বার ভাবে না, তাকে আটকানো স্যারের কর্ম নয়। তাই স্যার এভাবে কুন্তালীকে আর আমাকে বাঁচিয়ে দিল।”
নূপুর বলল, “আমি স্যারকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি। ট্রিটমেন্ট করলেই সাময়িক ট্রমাটা কেটে যাবে। কিন্তু সুজয়দা, স্যার যে এর মধ্যে যুক্ত ছিল সেটা কি কেউ জানে?”
সুজয় বলল, “ঘোষাল জানতে পারে। তবে আমি স্যারের ওই ফোনের সিমটা নষ্ট করে দিয়েছি যেটা থেকে ড্রাইভারকে ছবি পাঠানো হয়েছিল। সিমটা পামেলা মিত্রর নামে ছিল। কিন্তু পুলিশ সন্দেহ করলেই পামেলা মিত্রর ঘনিষ্ঠকে খুঁজে বের করতই। আমার সঙ্গে বড়োবাবু অরিন্দমের কথা হল। ওরা গাড়ির নম্বর খুঁজতে গিয়ে বের করে ফেলেছে, ওটা ঘোষালের কোম্পানির গাড়ি। ড্রাইভারকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আর পামেলার বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজেও নাকি ঘোষালকে ঢুকতে এবং বেরোতে দেখা গেছে ওইদিন। ওরা ঘোষালকে হয়তো তুলবে। কিন্তু সুনীল-স্যার যদি এমন করতে থাকে, তা হলে তো স্যারকে বাঁচাতে পারব না নুপুরদি। কিন্তু আজ যে আমি আর কুন্তলী বেঁচে আছি, সেটা স্যারের জন্যই।”
নূপুর বলল, “তুমি চিন্তা কোরো না। আমরা দেখছি।”
সুনীল-স্যার সুজয়ের দেওয়া বেতের মোড়াতে বসে বিজ বিজ করে কী যেন বকছে। ফিসফিস করে বলছে, “আমিও তোমার কাছে পাপোশ ছিলাম পামেলা? জীবনে একদিনও ভালোবাসোনি আমায়! পোষা কুকুর আমি?”
কুন্তলী ওদের সামনে চায়ের কাপ নিয়ে এসে বলল, “আমি কাল সারারাত ফাদারের ঘরে ছিলাম নূপুরদি। তাই বেঁচে আছি। এই তো ভোরবেলা ও গিয়ে নিয়ে এল।”
নূপুর ওর হাত থেকে চায়ের কাপটা নিয়ে বলল, “কিছু হবে না। যার পাশে সুজয়দার মতো মানুষ আছে তার কোনও ভয় নেই।”
শৌনক চায়ে চুমুক দিয়েই বলল, “নির্ভয়পুরে ভোট হবে? একজন প্রার্থী তো মারা গেছে। ক্যানসেল হল নাকি ভোট?”
সুজয় বলল, “হ্যাঁ অ্যানাউন্স করে দিয়েছে তো ভোট বাতিল হল। পরের সপ্তাহে ডেট দিয়েছে। এর মধ্যে অন্য প্রার্থীকে নমিনেশন ফাইল করতে হবে। পামেলা মিত্রর বদলে ওদের পার্টি অন্য কাউকে দাঁড় করাবে শুনলাম।”
শৌনক বলল, “এই সাতদিনও তুমি সাবধানে থেকো।”
ওর কথা শেষ হবার আগেই সুজয়ের মা আতঙ্কগ্রস্ত গলায় বলে উঠল, “হ্যাঁ সাবধানে থাকতে হবে। মেরে দেবে, ওকে ওরা মেরে দেবে। বারবার মেরে দিতে চায়।” বলতে বলতেই হেসে হেসে বলল, “খুঁজেই পাবে না। আমি তাকে লুকিয়ে রেখেছি।”
শৌনক সুজয়ের দিকে তাকাতেই সুজয় বলল, “মা তার এক সন্তানকে লুকিয়েই নিশ্চিন্তে আছে।”
শৌনক বিস্মিত হয়ে বলল, “মানে?’
সুজয় বলল, “আমি আসলে কাল রাতে জানলাম, আমার একজন যমজ দাদা বা ভাই আছে। জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই মা ঘোষাল ফ্যামিলির ভয়ে তাকে কলকাতার এক ডাক্তার দম্পতির হাতে তুলে দিয়ে বলেছিল, ‘একে নিয়ে চলে যাও। একজন অন্তত বাঁচুক।’ সেই দম্পতি কে, কোথায় থাকেন সে সব ফাদার জানেন না। বহুবছর আগে মেডিকেল ক্যাম্পে এসেছিলেন। মা ওটাই বলে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে। দেখো শৌনকদা, আমি বেঁচে থাকতে ওই মৃণাল ঘোষালের মতো লোককে বাবা বলেই মানতে পারব না। আমার মা হাসিনী আর বাবা সুরেশ হাঁসদা। ব্যস। তাই ভাবি, মা যদি তখন আমাকেও কোথাও লুকিয়ে ফেলত তা হলে আজীবন মাকে আর ভয়ে ভয়ে কাটাতে হত না। তবে হ্যাঁ, ওই ঘোষালকে আমি ছাড়ব না। আমার মাকে অপমান করার অধিকার ওকে কে দিয়েছে?”
শৌনক কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল, নূপুর ওকে থামিয়ে দিয়ে বলল, “চলো শৌনক, আমাদের দেরি হচ্ছে। সুজয়দা, আমার গাড়িতে আমি সুনীল-স্যারকে নিয়ে যাচ্ছি। তুমি সাবধানে থেকো।”
শৌনক শক্ত হয়ে গাড়িতে গিয়ে বসল। নুপুর সুনীল-স্যারকে সামনের সিটে বসিয়ে দিয়ে এসে বসল শৌনকের পাশে।
শৌনক তখনও কঠিন হয়ে বসে আছে।
নূপুর ওর হাতের ওপরে একটা হাত রেখে বলল, “ডক্টর শৌনক বসু, সন অফ শোভন বসু অ্যান্ড নিবেদিতা বসু। এর বাইরে তোমার আর কোনও পরিচয় নেই। আমাদের সম্পর্কের দিব্যি, তুমি নির্ভয়পুরের কাউকে কিছু বলবে না। যে যার জগতে ভালো আছে শৌনক। হাসিনী হাঁসদা তার ছেলে-বউ নিয়ে সুখে আছে। প্লিজ শৌনক, তুমি এরকম চুপ করে থেকো না। বলো কিছু।”
শৌনক অস্ফুটে বলল, “আমার বাবাই-মা তা হলে মিথ্যে বলেনি আমায়। সত্যিই আমার গর্ভধরিণী দিয়ে দিয়েছে আমায়। কিন্তু আমি যে মা আর বাবাইকে পাঁচ বছর ধরে মিথ্যেবাদী সাজিয়ে রেখেছিলাম, দূরে ঠেলে দিয়েছিলাম, সে অপরাধের কী শাস্তি নূপুর?”
নূপুর শৌনকের হাতটা নিজের গালে ঠেকিয়ে বলল, “শান্ত হও প্লিজ। আমি আছি তো।”
শৌনক বলল, “আমার কি হাসিনীদেবীর প্রতি কিছু কর্তব্য করা উচিত?”
নুপুর বলল, “করতেই পারো, কিন্তু নিজের পরিচয় না জানিয়ে।”
শৌনক বলল, “ভাবতেই ঘেন্না লাগছে একটা খুনি, চক্রান্তকারীর রক্ত আছে আমার শরীরে।”
নুপুর বলল, “প্লিজ শৌনক, শান্ত হও। এসব কথা আর বলবে না। তুমি শুধু ভাবো, যাঁরা তোমার আসল বাবা-মা তাঁদের তুমি কতটা কষ্ট দিয়েছ। পাঁচটা বছর তাঁদের কোনও খোঁজ নাওনি। আর তাঁরা তোমার জন্মদিন পালন করেছেন গরিবদের মধ্যে খাবার বিতরণ করে। এত বড়ো অন্যায়ের প্রায়শ্চিত্ত করো আগে।”
শৌনক বলল, “নূপুর, আমি আমার মাকে বলেছিলাম, নিজে গর্ভধারণে অক্ষম বলেই কি অন্যের সন্তান চুরি করে এনেছিলে?’ আমার মা নিবেদিতা বসু সেদিন কোনও তর্ক করেনি, শুধু দু’চোখ ছাপিয়ে আসা জলকে লুকোতে বারান্দায় চলে গিয়েছিল। নিজেদের সমস্ত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি আমার নামে করে দিয়েছিল বাবাই। আমি বলেছিলাম, ‘এভাবে লোভ দেখিয়ে কিনতে চাও আমায়?’ বাবাই বলেছিল, ‘লোভ তো আছেই। তুই যখন বাবাই বলে ডাকিস, ওটা শোনার লোভ।’ এসব ছেড়ে আমি ওই মৃণাল ঘোষালকে খুঁজতে নষ্ট করলাম পাঁচটা বছর! সুজয় কী অম্লানবদনে বলল, ‘আমি কোনওদিন মানব না ঘোষালকে।’ সুজয়ও আমার থেকে সৎ।”
নূপুর বলল, “আমি ফোন করছি আন্টিকে। ওদের আসতে বলছি এখানে।”
শৌনক বলল, “কিন্তু আমি ফেস করব কীভাবে?”
নূপুর হেসে বলল, “ধুর পাগল, ভালোবাসার মানুষদের কোনও কৈফিয়ত দিতে হয় না। কথা না বলে, জড়িয়ে ধরলেই সব মিশে যায়।”
শৌনক গাড়ির মধ্যেই জড়িয়ে ধরল নূপুরকে। ফিসফিস করে বলল, “তোমাকেও অনেক অপমান করেছি আমি।”
নূপুর কানে কানে বলল, “উঁহু, কথা বলতে নেই। স্পর্শটুকু অনুভব করতে হয়।” শৌনক শান্ত হয়ে বসল।
.
নূপুর নিবেদিতা বসুকে ফোন করেই বলল, “আন্টি, আপনারা একবার নির্ভয়পুরে আসতে পারবেন?”
নিবেদিতার গলাটা কেঁপে উঠল। কাঁপা গলায় বলল, “শানু কেমন আছে? নূপুর, আমার শানু ঠিক আছে তো? খবরে দেখলাম ভোটের দিনে নাকি ওখানে ক্যান্ডিডেট খুন হয়ে গেছে। বলো না, আমার শানু ঠিক আছে তো?”
শৌনক বলল, “মা এসো তোমরা। আমি মিস করছি।”
হাসপাতালে গিয়ে সুনীল-স্যারকে সুস্থ করার কাজে লেগে গেল নূপুর। শৌনকের শরীরটা আজ একেবারেই অবশ লাগছে। কিছুই যেন ভালো লাগছে না। শুধুই মনে হচ্ছে, কতক্ষণে মা আর বাবাকে দেখবে। এত বছর পরে নিজের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করবে কীভাবে?