Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    ইমদাদুল হক মিলনের বিবিধ রচনা

    ইমদাদুল হক মিলন এক পাতা গল্প213 Mins Read0

    আমার কবি রফিক আজাদ

    রফিক ভাই গম্ভীর গলায় বললেন, তোমার লেখাটা পড়ছি৷ এই লেখা তুমি জোর কইরা ছোট করার চেষ্টা করবা না৷ লেখা যেইভাবে আগায়, আগাইবো৷ যতবড় হয় হইব৷ আমি এই লেখা ছাপবো৷

    একজন কবিকে নিয়ে আমি উপন্যাস লিখেছিলাম৷ কবির নাম রফিক আজাদ৷ উপন্যাসের নাম ‘দুঃখ কষ্ট’৷ রফিক আজাদের কবিতা থেকেই রাখা হয়েছিল নামটি৷
    ‘পাখি উড়ে গেলে পাখির পলক পড়ে থাকে
    কঠিন মাটিতে৷
    এই ভেবে কষ্ট পেয়েছিলে’
    ‘৭৮ সালের কথা৷ আমি তখন রফিক আজাদের প্রেমে মগ্ন৷ তার একেকটা কবিতা বেরোয়, আমি মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে যাই৷ চবি্বশ ঘণ্টার আঠার ঘণ্টায়ই কাটাই রফিক আজাদের সঙ্গে৷ তিনি আমাকে আদর করে ডাকেন ‘বেটা’ আমি ডাকি রফিক ভাই৷
    ‘ইত্তেফাক’ ভবন থেকে একটা সাপ্তাহিক কাগজ বেরুবার তোড়জোড় চলছে৷ কাগজের নাম ‘রোববার’৷ আমি জগন্নাথ কলেজে অনার্স শেষ ক্লাসে পড়ছি৷ বিষয়, অর্থনীতি৷ রফিক ভাই বাংলা একাডেমীতে কাজ করেন৷ বাংলা একাডেমীর মাসিক সাহিত্য পত্রিকা ‘উত্তরাধিকার’ এর সম্পাদক৷ কিন্তু সেই কাজ তার ভালো লাগছে না৷ যখন তখন অফিস ফাঁকি দিচ্ছেন৷ দুপুর কাটাচ্ছেন সাকুরা গ্রীন কিংবা অন্য কোন কারণ৷ দুপুরের পর চলে যাচ্ছেন ইত্তেফাক ভবনে৷ রাহাত খান তার বন্ধু৷ রোববার পত্রিকার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে রফিক আজাদকে৷ বাংলা একাডেমীর চাকরি রেখেই রোববার সম্পাদনার দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি৷ নিজের নাম উহ্য রেখে রোববারের কাজ করবেন৷ সকাল থেকে দুপুর অব্দি বাংলা একাডেমীতে, দুপুরের পর থেকে ‘রোববার’৷ আমার অনার্স পরীক্ষার বিশেষ বাকি নেই৷ ইকোনোমিক্স মাথায় উঠে গেছে৷ সকাল বেলা আমি গিয়ে হাজির হই বাংলা একাডেমীতে, রফিক আজাদের টেবিলের সামনে বসে কাপের পর কাপ চা খাই, একটার পর একটা সিগ্রেট খাই৷ পকেটে টাকা-পয়সা থাকলে রফিক ভাইকে নিয়ে দুপুরের মুখে মুখে চলে যাই কোন বার কাম রেস্টুরেন্টে৷ সেখানে পানাহার করে ইত্তেফাক ভবন, রোববার অফিস৷ জীবনের প্রথম চাকরি হল রোববারে৷ জুনিয়র রিপোর্টার বা এরকম কিছু৷ বেতন চারশ’ টাকা৷
    টাকা-পয়সা নিয়ে কে ভাবে৷ রফিক আজাদের সঙ্গে থাকতে পারছি, কাজ করতে পারছি এটাই তো বিশাল ব্যাপার৷
    এসবের বছর দুয়েক আগে রফিক আজাদের সঙ্গে আমার পরিচয়৷
    বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় সাপ্তাহিক তখন ‘বিচিত্রা’৷ বিচিত্রায় আমার প্রথম গল্প ছাপা হয়েছে৷ গল্পের নাম ‘না সজনী’৷ সেই সময়কার যুবক-যুবতীদের নিয়ে লেখা একটু অন্য ধরনের প্রেমের গল্প৷ রবীন্দ্রনাথের গান থেকে নাম নেয়া হয়েছে৷ চারদিকে ভালো একটা সাড়া পড়েছে৷ আমি গেছি বাংলা একাডেমীতে৷ দোতলার একটা রুমে রশিদ হায়দার, সেলিনা হোসেন আর রফিক আজাদ বসেন৷ রশিদ হায়দার আমার পরিচিত৷ তার ছোট ভাই জাহিদ হায়দার আমার বন্ধু৷ ওদের চতুর্থ ভাই দাউদ হায়দারের জন্য পরিবারটি খুবই বিখ্যাত৷ সবাই লেখালেখি করেন৷ রশিদ হায়দার গল্প-উপন্যাস লেখেন৷ আমি তার টেবিলের সামনে বসে আছি৷ পাশের টেবিলে মাথা গুঁজে কাগজপত্র ঘাঁটছেন সেলিনা হোসেন৷ বাংলা একাডেমীর ছোটদের মাসিক পত্রিকা ‘ধান শালিকের দেশ’ সম্পাদনা করেন তিনি৷ আমার দিকে একবারও ফিরে তাকাননি৷ একটু দূরে কোণের দিককার টেবিলে বসে আছেন রফিক আজাদ৷ আমি তাকে চেহারায় চিনি৷ কুস্তিগিরদের মতো চেহারা৷ বেঁটে, তাগড়া জোয়ান৷ হাতকাটা গেঞ্জি পরেন, গলায় চেন, হাতে বালা৷ নাকের তলায় ইয়া গোঁফ, হাতে সারাক্ষণই সিগ্রেট৷ ঢাকার রাস্তায় ড্রাগ খেয়ে মোটরসাইকেল চালান৷ ‘বিচিত্রা’ তাকে নিয়ে কভার স্টোরি করেছিল৷
    কাছ থেকে রফিক আজাদকে কখনও দেখিনি৷ রশিদ হায়দারের টেবিলে বসে আড়চোখে দেখছি৷ সাদা রংয়ের হাতাকাটা টাইট গেঞ্জি পরা৷ গলায় মোটা চেন, এক হাতে তামার বালা, অন্য হাতে সিগ্রেট৷ উত্তরাধিকার পত্রিকার কপি দেখছেন৷ সামনে চায়ের কাপ৷
    এসময় একটা মজার ঘটনা ঘটল৷
    হাতের কাজ ফেলে চায়ে চুমুক দিলেন রফিক আজাদ৷ রশিদ হায়দারকে বললেন, ওই রশিদ, বিচিত্রায় এ সপ্তাহে একটা ছেলে গল্প লেখছে, ইমদাদুল হক মিলন নাম, তুই চিনস?
    রশিদ ভাই হাসলেন৷ এই তো আমার সামনে বইসা আছে৷
    রফিক আজাদ আমার দিকে তাকালেন৷ ওই মিয়া এইদিকে আসো৷
    আমার তখন বুকটা কেমন ধুগধুগ করছে৷ বিচিত্রায় আমার লেখা ছাপা হয়েছে সেই খবর রাখেন রফিক আজাদ, আমাকে ডাকছেন তার টেবিলে৷ যে কবি আমাদের হিরো, তার সামনে গিয়ে দাঁড়াবো?
    রফিক আজাদ জাঁদরেল মুক্তিযোদ্ধা৷ কাদের সিদ্দিকীর সহকারী ছিলেন৷ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুসারী৷ চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষের সময় কবিতা লিখে দেশ কাঁপিয়ে দিলেন৷ ‘ভাত দে হারামজাদা, নইলে মানচিত্র খাবো’৷ বঙ্গবন্ধু ক্ষমতায়৷ কবিতা চলে গেল বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে৷ সরাসরি তাকেই আক্রমণ৷ পুলিশ ইনটেলিজেন্স ইত্যাদি ইত্যাদি মহল তত্‍পর হয়ে উঠল৷ বঙ্গবন্ধুর কানে গেল এই ঘটনা৷ তিনি রফিক আজাদকে ডেকে স্নেহের ধমক দিলেন৷ সংশয় কেটে গেল৷ বন্ধুরা ধরে নিয়েছিল কবিতা লেখার অপরাধে রফিক আজাদকে জেলে যেতে হবে৷
    আমার চেহারা কিছুটা রফিক আজাদ টাইপ৷ পরনে জিন্স, ফুলসপি শার্টের হাতা গুটানো, মাথায় লম্বা চুল, কসাইদের মতো ঠোঁটের দুপাশ দিয়ে ঝুলে পড়া মোচ৷ দেখতে গুণ্ডাদের মতো৷ সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই রফিক আজাদ বললেন, বসো৷
    বসার পর বললেন, তোমার গল্পটা আমি পড়ছি৷ একটা কাজ করো, উত্তরাধিকারের জন্য একটা গল্প দেও৷ কবে দিতে পারবা?
    সপ্তাহখানেক৷
    ঠিক আছে৷ চা খাইবা?
    না৷
    আরে খাও মিয়া৷
    চা আনলেন৷ আমি তখনও কিছুটা আড়ষ্ট৷ চা খেয়ে উঠে আসছি, রফিক ভাই আমার পিছু পিছু এলেন৷ রুম থেকে বেরিয়ে বললেন, ওই মিয়া, একশ’ টাকা দিয়া যাও৷
    আমি হতভম্ব৷ বলে কী? এইমাত্র পরিচয়, এইমাত্রই ধার!
    আমার পকেটে তখন টাকা থাকে৷ বড়ভাইয়ের কনস্ট্রাকশন বিজনেস আমি খানিকটা দেখি৷ ইকোনোমিক্স পড়া, উন্মাদের মতো লেখালেখি, একটি বালিকার সঙ্গে প্রেম এতকিছুর ফাঁকে বড় ভাইর বিজনেস দেখি৷ পকেটে সবসময় ডানহিলের প্যাকেট৷ ডানহিল দামি সিগ্রেট৷ ওই সিগ্রেট দেখেই রফিক ভাই বুঝে গিয়েছিলেন আমার পকেটে টাকা আছে৷ ডানহিল সিগ্রেট তাকে অফারও করেছিলাম৷ তিনি যেন অতিশয় দয়া করে সিগ্রেটটা নিলেন৷ দু-তিনটা টান দিয়ে বললেন, ধুরো মিয়া, এইটা কী সিগ্রেট খাও? ভাতের মতন লাগে৷
    মানিব্যাগ থেকে খুবই বিনয়ের সঙ্গে একশ’ টাকার একটা নোট বের করে দিলাম৷ মনে মনে ভাবছি, আমাকে কি শালা ধোর (মক্কেল) ভাবলো নাকি৷ লেখার সঙ্গে একশ’ টাকাও চাইল?
    কিন্তু রফিক আজাদের জন্য গল্প লিখতে বসে ভালো রকম ফাঁপরে পড়ে গেলাম৷ বিক্রমপুর অঞ্চলের একটা গ্রামের বাজার, বাজারের মানুষজন, সার্কাসের জোকার, হতশ্রী এক বেশ্যা, একজন হিন্দু কম্পাউন্ডার, একজন পাগল আর নিয়তির মতো একটি সাপ এসব নিয়ে লিখতে শুরু করেছি৷ লেখা তরতর করে এগোচ্ছে৷ প্রচলিত গদ্যের ভেতরে ভেতরে নির্বিচারে ব্যবহার করে যাচ্ছি বিক্রমপুরের আঞ্চলিক শব্দ৷ সপ্তাহখানেক লেখার পর দেখি ফুলস্কেপ কাগজের চবি্বশ পৃষ্ঠা লেখা হয়েছে কিন্তু লেখা শেষ হয়নি৷ শেষ কী, মনে হচ্ছে যেন একটি চাপ্টার মাত্র শেষ হয়েছে৷
    আমার মাথা খারাপ হয়ে গেল৷
    রফিক ভাই এক সপ্তাহের টাইম দিয়েছেন, উত্তরাধিকারের মতো পত্রিকায় ছাপা হবে লেখা, সেই লেখা শেষ হচ্ছে না? খুবই অসহায়, কাতর অবস্থা৷ চবি্বশ পৃষ্ঠা হাতে নিয়ে গেলাম বাংলা একাডেমীতে! রফিক ভাই খুশি৷ লেখা আনছো? দেও৷
    দিলাম৷ তিনি চোখ বুলাতে লাগলেন৷ ‘৭৬ সালের কথা৷ আমার হাতের লেখা তখন পরিষ্কার, গোটা গোটা৷ শিশুরাও পড়তে পারবে৷ তখন কম্পিউটার কম্পোজের নামই আসেনি পৃথিবীতে, সাবেকি টাইপ রাইটারে টাইপ করানো বেশ খরচের ব্যাপার৷ জেরোস্ক মেশিনও সর্বত্র পাওয়া যায় না৷ জেরোস্কোর চেয়ে ফটোকপি শব্দটা বাংলাদেশে বেশি প্রচলিত৷ আমি ফটোকপি করার কথাও ভাবিনি৷
    রফিক ভাই লেখা দেখছেন, ভয়ে ভয়ে বললাম, রফিক ভাই, লেখাটা শেষ হয়নি৷
    তিনি চমকালেন, কী কও মিয়া! শেষ হয় নাই মানে?
    শেষ করতে পারিনি৷ লেখা বড় হয়ে যাচ্ছে৷
    রফিক ভাই চিন্তিত ভঙ্গিতে সিগ্রেট ধরালেন৷ তখন তিনি বেদম সিগ্রেট খান৷ একটার আগুন থেকে আরেকটা ধরান৷ আমি অপরাধীর মতো মুখ করে বসে আছি৷ সিগ্রেট টানার ফাঁকে ফাঁকে আবার লেখাটায় চোখ বুলালেন তিনি৷ তারপর বললেন, ঠিক আছে! লেখাটা আগে আমি পড়ি৷ এক সপ্তাহ পরে আইসা খবর নিও৷
    গেছি এক সপ্তাহ পর৷ রফিক ভাই গম্ভীর গলায় বললেন, তোমার লেখাটা পড়ছি৷ এই লেখা তুমি জোর কইরা ছোট করার চেষ্টা করবা না৷ লেখা যেইভাবে আগায়, আগাইবো৷ যতবড় হয় হইব৷ আমি এই লেখা ছাপবো৷
    আঠারো মাস ধরে সেই লেখা উত্তরাধিকারে ছেপে গেলেন রফিক ভাই৷ আমার প্রথম উপন্যাস ‘যাবজ্জীবন’ লেখা হল এভাবে৷ এই আঠারো মাসে বিখ্যাত হয়ে গেলাম আমি৷ সাহিত্যের মেধাবী পাঠক, শিক্ষক এবং বুদ্ধিজীবী শ্রেণী জনৈক ইমদাদুল হক মিলনের ব্যাপারে একটু নড়েচড়ে বসলেন, উত্‍সাহী হয়ে উঠলেন৷
    যাবজ্জীবন লেখার সময় দিনের পর দিন রফিক ভাই আমাকে সাহিত্য বুঝিয়েছেন, বাংলা বানান শিখিয়েছেন৷ তখন আমি এত ভুলভাল লিখি৷ সাহিত্যের পড়াশোনাটা একদম নেই৷ রফিক ভাই লেখকদের নাম বলেন আর আমি সেসব লেখকের লেখা খুঁজে খুঁজে পড়ি৷ দিনে দিনে সম্পর্কটা এমন পর্যায়ে গেল, রফিক ভাই-ই আমার ধ্যান-জ্ঞান-প্রেম৷ রাতেও গিয়ে কখনও কখনও তার বাড়িতে থাকি৷
    তারপর এলো রোববারের কাল৷
    পত্রিকা প্রকাশের প্রস্তুতি চলছে, জামালপুরের একটা সাহিত্য সম্মেলনের দাওয়াত পেলেন রফিক ভাই৷ আমাকে বললেন, ওই মিয়া, যাইবানি?
    আমি তো একপায়ে খাড়া৷ রফিক ভাইর সঙ্গে থাকতে পারা মানে সবচেয়ে প্রিয় মানুষটির সঙ্গে থাকা৷ রফিক ভাইর চালচলন, কথাবার্তা, গলা ফাটিয়ে হাসা, পোশাক-আশাক সবকিছুরই আমি মহাভক্ত হয়ে গেছি৷ তখন পর্যন্ততিনি আমার সবচেয়ে প্রিয় চরিত্র৷
    ব্যাগ কাঁধে রফিক ভাইর সঙ্গে বাসে চড়লাম৷
    এসবের কিছুদিন আগে রফিক আজাদের বিখ্যাত কবিতার বই ‘চুনিয়া আমার আর্কেডিয়া’ বেরিয়েছে৷ কী বই, কী একেকখানা কবিতা৷ বাংলাদেশের তরুণ কবি, কবি যশপ্রাথর্ী এবং কবিতার পাঠক হুমড়ি খেয়ে পড়েছে সেই বইয়ে৷ প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘অসম্ভবের পায়ে’ থেকেই তিনি পাঠকপ্রিয়, দ্বিতীয় গ্রন্থ, ‘সীমাবদ্ধ জলে সীমিত সবুজে’ তাকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিয়েছে৷ তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘চুনিয়া আমার আর্কেডিয়া’ বাংলাদেশের কাব্যজগত্‍ কাঁপিয়ে দিল৷
    আমি সেই কবির সহযাত্রী হয়েছি, এরচেয়ে বড় আনন্দ আর কী হতে পারে!
    জামালপুরে আমাদের থাকতে দেয়া হল সরকারি এক খামারবাড়ির বাংলোয়৷ জ্যোত্‍স্নায় ভেসে যাওয়া রাত৷ আমাদের পানের ব্যবস্থা ছিল না৷ বাংলোর বারান্দায় বসে সিগ্রেট খাই দু’জনে৷ সামনে বিশাল সূর্যমুখীর মাঠ৷ মাঠের কোণে একটা চাপকল৷ চাঁদের আলো সরাসরি পড়েছে সূর্যমুখীর মাঠে৷ কী যে অপূর্ব লাগছে৷ চারদিকে ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক, ফুলের গন্ধ নিয়ে আদুরে একটা হাওয়া কোত্থেকে বয়ে আসে কে জানে৷ একটা রাতপাখি ডানায় জ্যোত্‍স্না ভেঙে মাঠের উপর দিয়ে উড়ে যায়৷ রফিক আজাদের কী হয় জানি না, আমার ভেতরে তৈরি হয় আশ্চর্য এক ঘোর৷ আশ্চর্য এক তৃষ্ণা যেন ফাটিয়ে দিতে চায় বুক৷ আমার ইচ্ছা করে চাপকলটার সামনে গিয়ে দাঁড়াই, জ্যোত্‍স্নায় গড়া এক যুবতী তার মায়াবী হাতে চেপে দিক চাপকল৷ অাঁজলা ভরে জল পান করি আমি৷ আজন্মের তৃষ্ণা মেটাই৷
    রফিক আজাদেরও বুঝি তখন আমার মতোই অবস্থা৷ তার ভেতরও তৈরি হয়েছে ঘোর৷ সেই আশ্চর্য জ্যোত্‍স্না রাতে আমি তারপর একজন কবির ভেতরকার আরেকজন কবিকে জেগে উঠতে দেখি৷ একজন মানুষের ভেতরকার আরেকজন মানুষকে জেগে উঠতে দেখি৷ যে কবি থাকেন অন্তরালে, যে মানুষ থাকে অন্তরালে, সমগ্রজীবনে এক-দুবারের বেশি তার দেখা পায় না অন্য কেউ৷ রফিক ভাই তার জীবনের কথা বললেন, কবিতার কথা বললেন৷ অকালে হারিয়ে যাওয়া তার প্রিয় বোনটির কথা বললেন৷ আর বললেন, সেই মেয়ের কথা৷ কবিতায় লিখেছিলেন, ‘ওপারে লায়লার লালবাড়ি’৷
    কে এই লায়লা?
    কোন সে দূরন্ত প্রেমিক নদী সাঁতরে যায় লায়লার লালবাড়িতে?
    জামালপুর থেকে ফিরে এসে রফিক আজাদকে নিয়ে, উপন্যাস লিখলাম, ‘দুঃখ কষ্ট’৷ উপন্যাসের প্রতিটি চাপ্টার শুরু হল রফিক আজাদের কবিতার লাইন দিয়ে৷ একটি লাইন ‘দেয়ালে দেয়ালে, অনিবার্য অন্ধকারে’৷
    রোববার বেরুবার আট-দশমাস পর আমি জার্মানিতে চলে গেলাম৷ জার্মানি তখন দুটো দেশ৷ আমি গেলাম পশ্চিম জার্মানিতে৷ বন শহরে আমার কয়েকজন বন্ধু ছিল৷ প্রথমে গিয়ে তাদের কাছে উঠলাম৷ দিন বিশেক বনে থেকে চলে গেলাম স্টুটগার্টে৷ স্টুটগার্টে কয়েক মাস থেকে চলে গেলাম পাশের ছোট্ট শহর সিনডেলফিনগেনে৷ এই শহরটি বলা হয় মার্সিডিস সিটি৷ কারণ বিখ্যাত মার্সিডিস বেঞ্জের মূল কারখানা এই শহরে৷
    জার্মানিতে গিয়েছিলাম রোজগারের আশায়৷ টাকা রোজগার করে জীবন বদলাব৷ হয়নি৷ প্রবাস জীবন আমি সহ্য করতে পারিনি৷ আমাদের দেশের নিম্নস্তরের শ্রমিকের কাজ ছাড়া কোন কাজে পয়সা নেই৷ ওইসব কাজ আমি করতে পারছিলাম না৷ তাছাড়া দেশে রয়ে গেছে কত প্রিয় মানুষ, কত প্রিয়জন, তাদের ছেড়ে আছি৷ আমার মন পড়ে থাকত দেশে, সেসব প্রিয় মানুষদের কাছে৷ মা-ভাইবোন তো আছেই, যুবতী হয়ে ওঠা প্রেমিকাটি আছে, বন্ধুবান্ধব আছে, লেখালেখি করে একটা জায়গা তৈরি করেছিলাম সেই জায়গাটি আছে আর আছেন রফিক আজাদ৷ আমি সবাইকে চিঠি লিখি৷ সবাই আমাকে চিঠি লেখে৷ রফিক ভাইকে চিঠি লিখি কিন্তু তার চিঠির কোন জবাব আসে না৷ দশ-বারোটি চিঠি লেখার পর তার একটা চিঠি পেলাম৷ চিঠির দুটো লাইন এখনও মনে আছে, ‘গদ্য লেখার ভয়ে আমি কাউকে চিঠি লিখি না৷ কিন্তু মনে মনে প্রতিদিন তোমাকে অনেক চিঠি লিখি৷ তুমি কেমন আছো, মিলন?’
    মনে আছে এই লাইনটি পড়ে আমি শিশুর মতো কেঁদেছিলাম৷
    জার্মানি থেকে ফিরে এলাম দু’বছর পর৷ যেদিন ফিরলাম, রফিক ভাইর সঙ্গে দেখা হল তার পরদিন৷ আমাকে দেখে কী যে খুশি হলেন! সেদিনই বেতন পেয়েছেন, বেতনের পুরো টাকাটা আমাকে নিয়ে দামি মদ খেয়ে শেষ করে দিলেন৷ একটা মাস কী করে সংসার চলবে একবারও ভাবলেন না৷
    আবার আগের জীবনে ফিরে এলাম আমি৷ রোববারে নতুন করে চাকরি হল৷ ইত্তেফাক ভবনের সামনে ট্রাকচাপা পড়ে মারা গেল এক পথচারী৷ পুরো শরীর ঠিক আছে শুধু মাথার উপর দিয়ে চলে গেছে ট্রাকের চাকা৷ মাথাটা চ্যাপ্টা হয়ে রাস্তার সঙ্গে মিশে গেছে৷ ট্রাক ড্রাইভারদের সঙ্গে পুলিশের টাকা-পয়সার সম্পর্ক৷ ট্রাফিক পুলিশের হাতে মোটা টাকা ধরিয়ে দিয়ে ড্রাইভার ট্রাক নিয়ে উধাও হয়ে গেল৷ আমি একটা রিপোর্ট লিখলাম রোববারে৷ পুলিশ সম্পর্কে একটা আপত্তিকর মন্তব্য করে ফেললাম৷ সেই লাইনটির ওপর ‘ছিপি’ লাগিয়ে বাজারে ছাড়া হলো পত্রিকা৷ ছিপি তুলে পুলিশরা সেই লাইন পড়ল এবং দেশের সব পুলিশ ক্ষেপে গেল৷ ‘৮৩ সালের কথা৷ এমন কথাও আমার কানে আসতে লাগল গোপনে আমাকে ধরে নিয়ে মেরে ফেলা হবে৷ তখন পুলিশের ঊধর্্বতন একজন আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন৷ তিনি লেখক৷ রফিক আজাদ যখন টাঙ্গাইলের মওলানা মুহম্মদ আলী কলেজের বাংলার লেকচারার তখন তার ছাত্র ছিল আরেফিন বাদল৷ বাদল ভাইয়ের সঙ্গে মোসলেহউদ্দিন সাহেবের খুবই খাতির৷ বাদল ভাইকে ধরে দিনের পর দিন ছুটোছুটি করে আমাকে রক্ষা করলেন রফিক ভাই৷ সেই আতংকের দিনে প্রতিটা দিন প্রতিটা মুহূর্ত রফিক ভাই আমার হাতটা ধরে রেখেছেন, আমার পাশে থেকেছেন৷ রাতের বেলা তার বাড়িতে নিয়ে রেখেছেন আমাকে৷ নিজের বাড়িতে কিংবা অন্য কোথাও থাকলে পুলিশ যদি আমাকে ধরে নিয়ে মেরে ফেলে!
    সেই লেখার অপরাধে রোববার থেকে আমার চাকরি গেল৷ রফিক আজাদ এবং আরেফিন বাদলের চেষ্টায় মুসলেহউদ্দিন সাহেব ব্যাপারটা ম্যানেজ করলেন৷
    চাকরি নেই, রফিক ভাইর সঙ্গে তারপরও প্রায় প্রতিদিন দেখা হয়, আগের মতোই চলছে আড্ডা হৈ-চৈ, পানাহার৷ আমি সিদ্ধান্তনিয়েছি আর চাকরি-বাকরি করব না, লেখাই হবে আমার পেশা৷ বাংলাদেশে তখন পর্যন্তশুধু লেখাকে পেশা করার সাহস পায়নি কেউ৷ আটাশ-ঊনত্রিশ বছর বয়সের যুবক ইমদাদুল হক মিলন এরকম এক আত্মঘাতী সিদ্ধান্তনিয়ে নিল৷
    আত্মঘাতী কেন?
    তখন বাংলাদেশের পত্র-পত্রিকায় একটা গল্প লিখলে বড়জোর ২০ টাকা পাওয়া যায়৷ পত্র-পত্রিকার সংখ্যা খুবই কম৷ প্রকাশকদের পায়ে ধরলেও বই ছাপাতে চায় না৷ ঈদ সংখ্যা বেরোয় দু’তিনটা৷ উপন্যাস লিখলে টাকা পাওয়া যায় তিনশ’ থেকে পাঁচশ’৷ তারপরও নাক উঁচু পত্রিকাগুলো তরুণ লেখকদের পাত্তা দেয় না৷
    আমার তখন কী যে মর্মান্তিক অবস্থা৷ বহুকাল অপেক্ষা করা কিশোরী থেকে যুবতী হয়ে যাওয়া মেয়েটিকে বিয়ে করেছি৷ সে সন্তানসম্ভবা৷ বড় ভাইর সংসারে থাকি, দশটা টাকা রোজগার করতে পারি না৷ উঠতে-বসতে নানা প্রকারের অপমান৷ সহ্য করতে না পেরে একদিন স্ত্রীকে নিয়ে বেরিয়ে এলাম৷ আমার শ্বশুরপক্ষ টাকাঅলা, কিন্তু তাদের সঙ্গে তেমন সদ্ভাব নেই৷ একমাত্র মেয়েটি নিজের পছন্দে আমার মতো একটা অপদার্থকে বিয়ে করেছে, জার্মানির মতো দেশে গিয়েও যে দুটো পয়সা রোজগার করে ফিরতে পারেনি, তাদের বাড়িতে যাওয়া আমার নিষেধ৷ কিন্তু বড় ভাইর সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছি৷ স্ত্রী বেচারিটি মন খারাপ করে বাপের বাড়িতে গিয়ে উঠল৷ ওর বাবা নেই, মা এবং দুই ভাই সে তাদের নয়নের মণি৷ মেয়েকে জড়িয়ে ধরে মা খুবই কান্নাকাটি করলেন, ভাইরা বুকে টেনে নিল বোনকে৷ ওদের যৌথ পরিবার৷ ছয় মামা এবং এক বোন বিশাল একটা বাড়ির একেক ফ্ল্যাটে থাকেন৷ বোন সবার বড়৷ সেই বোনের মেয়েটি আমার স্ত্রী৷ মামাশাসিত সংসার৷ আমার শাশুড়ির পিঠাপিঠি ভাইটি সংসারের অধিকর্তা৷ তার আদেশে বিশাল পরিবারটি চলে৷ আমার শ্বশুর অল্প বয়সে মারা যান৷ ব্যবসায়ী ছিলেন৷ টাকা-পয়সা ভালোই রেখেই গেছেন৷ শাশুড়ি সেই টাকা বিজনেস করার জন্য ভাইকে দিয়েছেন৷ লঞ্চ-জাহাজের ব্যবসা করে অগাধ টাকা-পয়সার মালিক হয়ে গেছে পরিবারটি৷ ভদ্রলোক যেমন টাকাঅলা তেমনি রাগি৷ আমার মায়ের মামাতো বোনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে৷ সম্পর্কে আমার খালু, অন্যদিকে স্ত্রীর বড় মামা৷ আমার সঙ্গে ভাগি্নর বিয়েতে তিনিই বাগড়া দিয়েছিলেন৷ আর তার আদেশের বাইরে কিছুতেই যাবে না পরিবারটি৷ তবু আমাদের বিয়ে হয়েছিল, কিন্তু বিয়ের পর ওই বাড়িতে যাওয়া আমাদের নিষিদ্ধ হয়েছে৷ তারপরও দায়ে পড়ে আমার নরম নিরীহ স্ত্রীটি চোখ মুছতে মুছতে সেই বাড়িতে গিয়ে উঠেছে৷ ওই যে সে নিজ থেকে গিয়েছে তাতেই পাথরটা গলে গেল৷ মা-ভাইরা তো তাকে বুকে টেনে নিলই, মামা-মামীরা, মামাতো ভাইবোনরাও নিল৷ কিন্তু আমি তখনও ওই বাড়িতে ঢুকিনি৷ বন্ধুবান্ধবদের বাড়িতে রাত কাটাই৷ দু’তিনটা দিন মাত্র৷ শ্বশুরবাড়ির কাছে লম্বা মতো একটা ঘর ভাড়া নিলাম৷ উপরে টিন চারদিকে ইটের দেয়াল৷ ভাড়া সাতশ’ টাকা৷ নিজেদের বাড়ি থেকে আমার বিয়ের খাটটা, দুটো সিলিং ফ্যান আর আমার লেখার টেবিলটা নিয়ে এসেছি৷ তাদের প্রাসাদের মতো বাড়ির পাশে এরকম একটা ঘর ভাড়া নিয়েছি, স্ত্রী লজ্জায় সেই বাড়িতে আসে না৷ টিফিন কেরিয়ারে করে দু’বেলা আমার খাবার পাঠায়৷ ফ্যানের হাওয়ায় ঘর ঠাণ্ডা হয় না৷ গরমে ঘামে ভাসতে ভাসতে আমি মাথা গুঁজে উপন্যাস লিখি৷
    ওই ঘরে এসে রফিক আজাদ আমাকে একদিন দেখে গেলেন৷ আমার দুঃখ-দারিদ্র্যের জীবন, অপমানের জীবন পাত্তাই দিলেন না৷ অতি কষ্টে আমি একটা কেরু কোম্পানির জিনের পাইট ম্যানেজ করেছিলাম, ওই খেয়ে জীবন ও সাহিত্য নিয়ে একটা নাতিদীর্ঘ ভাষণ দিয়ে চলে গেলেন৷ সেই ভাষণে মন এবং কব্জির জোর তৈরি হল৷ ‘ভূমিপুত্র’ নামে একটা উপন্যাস লিখলাম, কিছু প্রেমের গল্প লিখলাম৷ প্রকাশকদের সঙ্গে কথা হল প্রতি মাসে ৪/৫ ফর্মার একটা করে প্রেমের উপন্যাস লিখব, তারা থোক কিছু টাকা দেবেন৷
    লিখতে লাগলাম৷ জীবন বদলাতে লাগল৷
    তখন সারাদিন লিখি, সন্ধ্যায় গিয়ে রফিক আজাদের সঙ্গে আড্ডা দেই৷ এ সময় রফিক ভাইর কবিতার বই বেরুলো৷ বইয়ের নাম ‘প্রিয় শাড়িগুলো’৷ বইটা আমাকে উত্‍সর্গ করলেন৷ বইয়ের একটা কবিতার নাম ‘জ্যোত্‍স্নাকে আমার চাই’৷
    জ্যোত্‍স্না আমার স্ত্রীর নাম৷ হাসতে হাসতে রফিক ভাইকে বললাম, আমার জ্যোত্‍স্নাকে তুমি চাও?
    রফিক ভাই বললেন, আরে না বেটা, আমি যেই জ্যোত্‍স্নাকে চাই তাকে একজীবনে পাওয়া যায় না৷ তার জন্য বহুজীবন অপেক্ষা করতে হয়!
    রফিক ভাইর সঙ্গে এদিক-ওদিক সাহিত্য সম্মেলনে যাই৷ যশোর না খুলনায় যেন প্রবন্ধ সাহিত্যের আলোচনা সভার সভাপতির হঠাত্‍ শখ হল ঢাকা থেকে আগত কবি এবং ঔপন্যাসিকের চেহারা দেখবেন৷ তিনি এই দু’জনকে কখনও দেখেননি৷ আমার হাত ধরে মঞ্চে উঠলেন রফিক আজাদ৷ বললেন, সভাপতি সাহেব, আমাদের চেহারা দেখে আপনার ভালো লাগবে না৷ আমরা লিখি ভালো কিন্তু চেহারা জলদসু্যদের মতো৷
    ভদ্রলোক হতভম্ব৷
    এসব করে আমাদের দিন যায়৷ রফিক আজাদের দুটো বই সম্পাদনা করলাম আমি৷ ‘বাছাই কবিতা’ এবং ‘প্রেম ও প্রকৃতির কবিতা’৷ ততদিনে রফিক ভাই তার জীবন বদলে ফেলেছেন৷ হঠাত্‍ হঠাত্‍ তাকে কেমন অন্যমনস্ক এবং বিষন্ন হতে দেখি৷ এমন মন খারাপ করা একেকটা কবিতা লেখেন,
    বালক ভুল করে নেমেছে ভুল জলে
    বালক পড়েছে ভুল বই
    পড়েনি ব্যাকরণ, পড়েনি মূল বই৷
    এসব কবিতা পড়ে আমার বুক হু হু করে, ইচ্ছা করে রফিক আজাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াই৷ তার হাতটি ধরে বলি, প্রিয় বালক রফিক আজাদ, আমি এখনও সেই আগের মতোই তোমার অনুরাগী৷

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleঅন্তরে – ইমদাদুল হক মিলন
    Next Article শুনছ, কোথাও আছো কি কেউ?

    Related Articles

    ইমদাদুল হক মিলন

    অন্তরে – ইমদাদুল হক মিলন

    July 10, 2025
    ইমদাদুল হক মিলন

    এসো – ইমদাদুল হক মিলন

    July 10, 2025
    ইমদাদুল হক মিলন

    প্রিয় হুমায়ূন আহমেদ – ইমদাদুল হক মিলন

    July 10, 2025
    ইমদাদুল হক মিলন

    গোপনে – ইমদাদুল হক মিলন

    July 10, 2025
    ইমদাদুল হক মিলন

    দুই বাংলার দাম্পত্য কলহের শত কাহিনী – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ও ইমদাদুল হক মিলন সম্পাদিত

    July 10, 2025
    ইমদাদুল হক মিলন

    প্রিয় – ইমদাদুল হক মিলন

    July 10, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.