Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    ইস্টিশন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    উড়ালপঙ্খী – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    ইস্টিশন – হুমায়ূন আহমেদ

    হুমায়ূন আহমেদ এক পাতা গল্প122 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ০৮. মাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে

    মাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে ভাইয়া ফিরে এসেছে। ভর্তির ব্যাপারে কোনো সমস্যা হয় নি। জাপানি ইঞ্জিনিয়ারের বন্ধু সব করিয়ে দিয়েছেন। এবং ভাইয়াকে ডেকে বলেছেন, তুমি কোনো দুশ্চিন্তা করবে না। তোমার মায়ের ভালো চিকিৎসা হবে। তার অবস্থার উন্নতি অবনতি যাই হয় আমরা চিঠি দিয়ে জানাব। হাসপাতালের খাওয়া দাওয়ার সমস্যা আছে। করার কিছু নাই। হেড আয়াকে কিছু টাকা পয়সা দিয়ে যাও, বাইরে থেকে এটা সেটা কিনে খাওয়াবে। এদেরকে হাতে রাখা ভালো। রোগীর আসল দেখাশোনা এরাই করে।

    ভাইয়া হেড আয়ার হাতে পাঁচশ টাকা এবং হেড নার্সের হাতে পাঁচশ টাকা দিয়ে এসেছে। বাবা বললেন, এত টাকা তুই পেয়েছিস কোথায়?

    অফিসের টাকা। অফিসের বারোশ টাকা আমার কাছে ছিল।

    আমার কাছ থেকে টাকাটা নিয়ে দিয়ে আয়।

    ভাইয়া বলল, আচ্ছা।।

    অফিসে টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে তার কোনো আগ্রহ দেখা গেল না। অফিসে যাবার ব্যাপারে তার আর উৎসাহ নেই। অনেক বেলা পর্যন্ত ঘুমায়। ঘুম থেকে উঠে রেস্টুরেন্টে যায় চা খেতে। চা খেয়ে চলে আসে ইস্টিশনে। ইস্টিশনে এসে রেল লাইনে পা রেখে ঝিম ধরে বসে থাকে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় টেলিগ্রাফের তারে কাক বসে আছে। কাকরা যেমন মাথা ঝাঁকায়, ভাইয়াও মাথা ঝাঁকায়।

    রহমান চাচার ধারণা রেল লাইনে বসে থাকা খুবই অলক্ষণ। কেউ ঘন-ঘন রেল লাইনে বসলে রেল লাইন তাকে চিনে ফেলে। নিশি রাতে ডাকাডাকি শুরু করে। রেল লাইনের ডাক, নিশি ডাকের মতোই মারাত্মক। রেল লাইন। মানুষটাকে ডেকে ঘর থেকে বের করবে। তারপর ভুলিয়ে ভালিয়ে কোনো এক নিশুতি রাতে তাকে কাছে টানবে। বেচারা ঘোরের মধ্যে লাইন ধরে হাঁটতে থাকবে, বুঝতেও পারবে না পেছন থেকে ঝড়ের গতিতে আসছে চিটাগাং মেইল, কিংবা বাহাদুরাবাদ এক্সপ্রেস। সে ট্রেনের শব্দ ঠিকই শুনবে, কিন্তু ভাববে বাতাসের শব্দ। ট্রেনের ড্রাইভার যখন বাঁশি বাজাবে সেই শব্দও তার কানে যাবে। কিন্তু সে ভাববে বনের ভেতর থেকে শীস-পাখি শীস দিচ্ছে। শীসপাখিরা ট্রেন লাইনের আশেপাশে বনজঙ্গলে থাকে। তারা অবিকল রেল ইঞ্জিনের বাঁশির মতো শীস দেয়।

    ভাইয়ার যে চাকরি নেই, চাকরি নেই বলেই ঝিম ধরে রেল লাইনে বসে থাকে এটা প্রথম ধরতে পারলেন বাবা। আমি স্কুল ছুটির পর ইস্টিশনে বাবা কী করছেন দেখতে গিয়েছি—বাবা বললেন, জানালা দিয়ে দেখতো রঞ্জু গাধাটা রেল লাইনের উপর বসে আছে কিনা।

    আমি বললাম, হ্যাঁ।

    কী করছে?

    ঘাস চিবাচ্ছে।

    ওর ঘটনা কি জানিস কিছু?

    না।

    বাবা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বললেন, গাধাটার হয় কোনো খানে প্রেম-মহব্বত হয়েছে, কিংবা চাকরি চলে গেছে। দুটার একটা। দু ক্ষেত্রেই একটা লক্ষণ। চল খোঁজ নিয়ে আসি।

    ভাইয়া দূর থেকে আমাদের দেখে ঘাস চিবানোয় আরো মন দিল। নড়াচড়াও শুরু করল। হুট করে উঠে উল্টোদিকে হাঁটা দিতে পারে। বাবা তার আগেই বললেন, রঞ্জু তোর কি চাকরি চলে গেছে?

    ভাইয়া বলল, হুঁ।

    চাকরিটা গেল কেন? চুরি করেছিস? বেদেশী এক বুড়ির লেজ ধরে কিছুদিন ঘুরলি তার ব্যাগ সাফাই করেছিস?

    ভাইয়া জবাব দিল না। আহত চোখে তাকিয়ে রইল। বাবা ভাইয়ার আহত দৃষ্টি সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে বললেন- কোন ধরনের চুরি করেছিস সেটা বল, ছোট চুরি, মাঝারি চুরি না পুকুর চুরি?

    চুরি করি নাই।

    এখন করিস নাই। বড় হয়ে করবি। তোর চেহারার ভেতরই একটা চোর চোর ভাব চলে এসেছে। যাই হোক পুত্র হিসাবে তোকে একটা উপদেশ দেই। চুরি করলে বড় চুরি করবি। ছোট চুরি যেমন পকেটমার করে ধরা পড়লে শক্ত মার খাওয়া লাগে। মাঝারি চুরি করলে মার খেতে হয় না, জেল খাটতে হয়।। বড় চুরি করলে সমাজে সম্মান আছে। কাজেই বড় চুরি করাটা ভালো।

    বলতে বলতে বাবা বসে পড়লেন। এটা একটা অলক্ষণ। বাবার বসে পড়ার দুটা অর্থ এক, তিনি ক্রমাগত কথা বলা শুরু করবেন। একই কথা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলতেই থাকবেন, বলতেই থাকবেন। দুই, বাবার পেটে ব্যথাটা শুরু হয়েছে। এখন পেটে ব্যথা শুরু হলে কিছুক্ষণ বসা থেকেই তিনি শুয়ে পড়বেন। তখন তাকে ধরাধরি করে ঘরে নিয়ে যেতে হবে।

    তারপর রঞ্জু বল কি ঠিক করলি। ছোট চুরি করবি, না বড় চুরি?

    ভাইয়া বিড়বিড় করে বলল, আমি দোকান দিব।

    দোকান দিবি? বাহ্ ভালো তো। বিজনেস ম্যান৷ দোকানটা কিসের?

    চায়ের দোকান। ভাতের দোকান।

    দোকান দিতে টাকা লাগে। টাকাটা তোকে কে দিবে?

    টাকার যোগাড় হয়েছে।

    তুই দেখি বিরাট লায়েক হয়ে গেছিস। সব নিজে নিজে যোগাড় করতে পারিস। যোগাড়টা করলি কীভাবে সেটা শুনি। যদি বলতে অসুবিধা না থাকে।

    কুসুম দিয়েছে।

    কুসুম?

    হুঁ। পনেরো হাজার টাকা দিয়েছে।

    বাবা চুপ করে গেলেন। কোটের পকেট থেকে সিগারেট বের করে মুখে দিতে গিয়েও দিলেন না। ঢোক গিললেন। কুসুম আপুর টাকা আছে। তার বাবা প্রায়ই তাকে টাকা পাঠান। কুসুম আপু একটা টাকাও খরচ করে না। ভাইয়া বলল, তোমার কি ব্যথাটা শুরু হচ্ছে?

    বাবা হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়লেন। ব্যথাটা শুরু হবার সঙ্গে সঙ্গে বাবা মূর্তির মতো শক্ত হয়ে যান। মনে হয় নিঃশ্বাসও ফেলেন না। ভাইয়া বলল, চল বাসায় নিয়ে যাই। বাবা বললেন, অসম্ভব। এখন নড়াচড়া করাই যাবে না। পানি খাব।

    ভাইয়া ছুটে গেল পানি আনতে। বাবা এবং আমি দুজনই রেল লাইন ধরে তাকিয়ে আছি। দেখতে পাচ্ছি রেল লাইনের স্লীপারে পা রেখে-রেখে জাপানি। ইঞ্জিনিয়ার আসছেন। এবং দূর থেকে তার চেহারা দেখা যাচ্ছে না। তাকে চেনা যাচ্ছে তার মাথার ছাতা দেখে। চীনাম্যান তাকে একটা হলুদ ছাতা উপহার দিয়েছেন। এই ছাতা ছাড়া তিনি কোথাও যান না।

    চীনাম্যানের সঙ্গে জাপানি ইঞ্জিনিয়ারের সম্পর্ক ভয়ংকর খারাপ যাচ্ছে। প্রতিদিনই কথা কাটাকাটি হচ্ছে। জাপানি ইঞ্জিনিয়ার কুসুম আপুকে মন খারাপ করে বলেছেন। বুঝলে কুসুম, আমি যাই করি ব্যাটা বলে এটা কী করেছ? এক নম্বর স্প্যানে তিনশ বস্তা বালি ফেললাম। দুই দিন লাগল বালি ফেলতে। সব কটা বস্তা যখন ফেলা হল তখন ব্যাটা বলে কি জান? ব্যাটা বলে, বস্তাগুলি যে ভাবে ফেলছ তাতে নদীর মাঝখানে চর জাগবে। দুই নম্বর স্প্যানে পানির চাপ পড়বে।

    সব বস্তা তোল। সব বস্তা যদি তুলতেই হয় তুই শুরুতে কেন বলিস না? এখন নদীর তল থেকে আমি বস্তা তুলব কীভাবে? ড়ুবুরী লাগাব?

    কুসুম আপু বলল, কোনো কিছু করার আগে উনাকে জিজ্ঞেস করে নিলেই হয়।।

    জিজ্ঞেস করলে বলে, সব কিছু আমাকে জিজ্ঞেস কর কেন? বুদ্ধি খাটিয়ে নিজে কর। তারপর চীনা ভাষায় গালি দেয়।

    কী গালি?

    বলে–কুঁকুঁতু, কুঁকুঁতু।

    গালিটার মানে কী?

    মানে জানি না। চাইনিজ ভাষা জানে এমন কাউকে পেলে জেনে নেব। মানে নিশ্চয়ই খুব খারাপ। যে দেশের সভ্যতা যত প্রাচীন সে দেশের গালাগালিও ততই খারাপ। চাইনীজ সভ্যতা অতি প্রাচীন মিং ডায়ানাস্টিই ছিল পাঁচ হাজার বছর। ওদের গালাগালি তো খারাপ হবেই।

    চাইনীজটার গণ্ডগোলটা কি শুধু আপনার সঙ্গে?

    আরে না। সবার সাথে। সবচে বেশি বাজাবাজি হয় জমশেদের সাথে। জমশেদের গায়ে সে একবার থুতু পর্যন্ত ফেলেছে।

    সে কী।

    বললাম না। অতি অসভ্য। জমশেদ প্রায়ই আমাকে বলে, দেন অর্ডার দেন। হারামির পুতরে মগরা ব্রিজ থেকে নিচে ফেলে দেই। কায়দা করে স্প্যানের উপর ফেলব। ঠাস করে মাথা ফেটে ব্রেইন বের হয়ে যাবে। তারপরে পুলিশের কাছে বলব ব্রিজ ঠিক করতে গিয়ে পা পিছলে পড়ছে।

    কী ভয়ংকর কথা?

    এটা হল রাগের কথা। সত্যি-সত্যি তো কেউ ফেলছে না।

    জাপানি ইঞ্জিনিয়ার আমাদের দিকে এলেন না। তিনি বাজারের দিকে চলে গেলেন। ভাইয়া পানি নিয়ে এসেছে। সাথে রহমান চাচাকে নিয়ে এসেছে। বাবাকে যদি ধরাধরি করে বাসায় নিতে হয়। সে একা পারবে না।

    পানি খেয়ে বাবার পেটের ব্যথা মনে হয় কিছু কমেছে। তিনি নিজে নিজেই উঠে দাঁড়ালেন। ইষ্টিশনের দিকে হাঁটতে শুরু করলেন। কেমন এলোমেলো ভঙ্গিতে পা ফেলছেন। মনে হচ্ছে এক্ষুনি পায়ের সঙ্গে পা লেগে তিনি আছাড় খেয়ে পড়বেন। ভাইয়া বলল, বাবার শরীরটা অতিরিক্ত খারাপ করেছে। চিকিৎসা হওয়া দরকার। বাবাকে ঢাকা নিয়ে গেলে কেমন হয়?

    আমি বললাম, ভালোই হয়।

    কুসুমের টাকাটা আছে। দোকান কিছু পরে হোক। আগে বাবার চিকিৎসা হোক।

    রহমান চাচা বললেন, স্যারের পিছনে টাকা খরচ করা ঠিক না। উনাকে মৃত্যু ব্যধিতে ধরেছে। এই রোগের চিকিৎসা নাই। খামাখা টাকা নষ্ট। টাকা খুবই জটিল জিনিস। বিনা কারণে টাকা নষ্ট করা ঠিক না। হাদিসে আছে যে অকারণে টাকা নষ্ট করে সে শয়তানের ভাই।

    ভাইয়া কঠিন গলায় বলল, রহমান চাচা সব কিছু নিয়ে কথা বলবেন না।

    রহমান চাচা উদাস ভঙ্গিতে বললেন, সব কিছু নিয়া তো কথা বলি না। স্যারের বিষয়ে বলি। স্যারের বিষয়ে আমি যদি কথা না বলি কথাটা বলবে কে?

    মা যখন আমাদের সঙ্গে ছিলেন তখন বাবা মাঝে-মধ্যে রাতে বাসায় ঘুমুতেন। এখন মার ঘরটা খালি। ঘুমুবার জায়গার অভাব নাই, কিন্তু বাবা রাতে থাকেন ইস্টিশনে। মার ঘরে তিনি ঘুমুতে পারেন না। তার নাকি গা ছমছম করে। রাতে ঘুম ভাঙ্গলে মনে হয়, বিছানার চারপাশে কে যেন হাঁটাহাঁটি করছে। খালি পায়ের হাঁটার শব্দ। যে হাটে অন্ধকারে হাড়িপাতিলের সঙ্গে মাঝে মাঝে তার পায়ের ধাক্কা লাগে। ঝনঝন করে হাড়িপাতিল চারিদিকে গড়িয়ে পড়ে। তখন বাতি জ্বাললে দেখা যায় সব হাড়িপাতিল জায়গা মতোই আছে। একটাও নড়ে নি।

    মার খালি ঘরে কুসুম আপু এখন আমাকে নিয়ে ঘুমায়। এতে অনেক সুবিধাও হয়েছে। জাপানি ইঞ্জিনিয়ার ভাইয়ার ঘরে একা ঘুমুতে পারেন। ভাইয়া আগে তার বন্ধুর বাড়িতে ঘুমুতে যেত। এখন ইস্টিশনে ঘুমুতে যায়। সে অবিশ্যি বাবার সঙ্গে ঘুমায় না। রহমান চাচার সঙ্গে ঘুমায়। বাবার শরীর ভালো না। কখন কী লাগে।

    কুসুম আপু ঘুমুতে যাবার আগে অনেকক্ষণ আমার সঙ্গে গল্প করেন। তারপর বলেন, আর কোনো কথা না এখন ঘুমের ভান করে মটকা মেরে পরে থাকবি। কোনো শব্দ করবি না। ঘুমিয়েও পড়বি না। জেগে থাকবি। আজ আমরা ভূত ধরব। খাটের চারপাশে যে হাঁটাহাঁটি করে তাকে হাতে নাতে ধরা হবে। আমরা জেগে থাকলে সে আসবে না।

    ভূত কোনোদিন ধরা যায় না।

    ধরা না গেলে, না যাবে। সত্যি সত্যি ভূত বলে কিছু আছে, সেই ভূতই খাটের চারপাশে ঘুরে এই প্রমাণ পেলেই আমি খুশি।

    কোনো-কোনো রাতে কুসুম আপুর মেজাজ অত্যন্ত ভালো থাকে। মনে হয় আনন্দ তিনি ধরে রাখতে পারছেন না। তখন সত্যি করে আমি বলে ফেলি, আপু ঐ চিহ্নটা আমাকে দেখাবে না?

    কুসুম আপু অস্বাভাবিক গম্ভীর হয়ে বলে, কোন চিহ্ন? লাল তিলটার কথা বলছিস?

    হুঁ। যার জন্যে সব পুরুষ তোমার কথা শুনে।

    মাথা থেকে এটা দূর করতে পারছিস না? বললাম তো দেখাব। আজ না। এখন ঝিম ধরে পড়ে থাক। দেখি ভূতের হাঁটাহাঁটি শোনা যায় নাকি।

    তোমার বিয়ে কি জাপানি ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে হবে?

    জানি না কার সঙ্গে হবে। কাউকেই আমার পছন্দ হয় না। আবার। সবাইকেই পছন্দ হয়। তোকেও হয়।

    আমি তো খুবই ছোট।

    সারাজীবন তো ছোট থাকবি না। একদিন হঠাৎ বড় হয়ে যাবি। মানুষ কখনো আস্তে বড় হয় না-হঠাৎ বড় হয়ে যায়।

    কীভাবে?

    বলতে পারব না কীভাবে। আর একটা শব্দ করলে পাখা দিয়ে মাথায় বাড়ি দেব। চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাক। কিন্তু ঘুমাবি না। খবর্দার ঘুমাবি না। আজ ভূত কিংবা ভূততি যাই হোক আমারা হাতে নাতে ধরব।

    কুসুম আপু একটা কথা শুধু জিজ্ঞেস করি।

    কী কথা?

    ধলা সামছুর বৌ উনার মধ্যেও কি ঐ চিহ্নটা আছে?

    এই কথা কেন বললি?

    তার কাছে যে পুরুষ যায়, সেই বার-বার যায়। আর ফিরতে পারে না। আমাদের বদরুল স্যার গিয়েছিলেন- এখন নাকি বার-বার যান।

    তোদের স্কুলের বদরুল স্যার?

    হুঁ।

    তোকে কে বলেছে?

    সবাই বলে। স্যার এখন আর স্কুলে আসে না।

    কুসুম আপু অন্ধকারেই তালপাখা দিয়ে মাথায় প্রচন্ড একটা বাড়ি দিয়ে বলল, আর একটা কথাও না।

    আমি চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকি। শুয়ে থাকতে থাকতেই এক সময় ঘুমিয়ে পড়ি।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleউড়ালপঙ্খী – হুমায়ূন আহমেদ
    Next Article আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    Related Articles

    হুমায়ূন আহমেদ

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    উড়ালপঙ্খী – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    এই বসন্তে – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    এই মেঘ, রৌদ্রছায়া – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    এইসব দিনরাত্রি – হুমায়ূন আহমেদ

    December 23, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    একটি সাইকেল এবং কয়েকটি ডাহুক পাখি – হুমায়ূন আহমেদ

    December 23, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Our Picks

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    ইস্টিশন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    উড়ালপঙ্খী – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }