Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    একজন মিসেস নন্দী – আশুতোষ মুখোপাধ্যায়

    লেখক এক পাতা গল্প133 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    আবর্ত

    নাই নাই আর নাই।

    ক্লান্ত বাদশা কোটি হাতে নিয়ে তিনটি কথা জিজ্ঞেস করেছে, আর তিনটি জবাব দিয়েছে জোবেদানাই।

    চার ক্রোশ পথ হেঁটে এসে, হাত পা না ধুয়ে শুষ্ক কণ্ঠনালীটিকে একটু ভিজিয়ে নিতে ইচ্ছে হয়েছে তাই একেবারে সোজা পায়ের ধুলোমাটি নিয়ে দাওয়ায় উঠে এসে হুঁকো নিয়ে বসেছে সে। তামাকের ডিবা হাড়ে তামাক না পেয়ে জিজ্ঞেস করেছে, তামুক নাই?

    অপরাধীর মতো জবাব দিয়েছে জোবেদানাই।

    —পাতা আছে?

    —নাই।

    রাব?

    নাই।

    নাই! ক্লান্ত মস্তিষ্কটায় এই নাই বৃত্তাকারে ঘুরতে ঘুরতে অকস্মাৎ প্রচণ্ড ক্রোধে যেন চৌচির হয়ে গেল। দপ করে আগুন জ্বলে উঠল যেন সারাটা গায়ে। ঠাস করে হুকোটাকে দাওয়ায় আছড়ে ভেঙে ফেলল সে। খোলর পীতাভ জল গড়িয়ে পড়ল দাওয়া থেকে উঠানে।

    নাই! ভীষণ ক্রোধে নিজেকে সে নিজেই যেন শাসিয়ে গর্জে উঠল। ঘরের মধ্যে ছুটে গিয়ে শিকার উপর থেকে হাঁড়ি কলসি যা পেল খ্যাপা পাগলের মতো ভেঙে দিল তছনছু করে। ঠাসঠাস করে নিজের গালে মুখে ঘুষিয়ে চড়িয়ে হঠাৎ বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠের মতো ঘুরে ক্যাঁত করে একটা লাথি কষিয়ে দিল জোবেদার পাঁজরে। কী দ্যাখস্ তুই হারামজাদি? চাইয়া চাইয়া দ্যাখস কী? বাইর হ, বাইর হইয়া যা আমার সামনের থেইক্যা!

    এমনিতেই বাদশার উগ্র মতিগতি দেখে জোবেদা আতঙ্কে থরথর করে কাঁপছিল। তারপর হঠাৎ লাথিটা খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়ল চৌকাঠের উপর।

    এমন সময় বাদশার ছেলে মঙ্গল খেলে ফিরে বাড়িতে ঢুকে ব্যাপার দেখে থমকে দাঁড়িয়ে পড়ল।

    মনে হল বাদশা বুঝি তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে। কন্তু তা না করে সে ছুটে বেরিয়ে গেল বাইরে। দেখতে পেয়ে জোবেদা নতুন আতঙ্কে আবার ড়ুকরে উঠল, ও মঙ্গল, দ্যাখ মানুড়া যায় কুঠাঁই। নিজের পরানডারে না শেষ করে।

    না, প্রাণ দেওয়ার কথা মনে আসেনি বাদশার। সে জনশূন্য পীরের দরগার পিছনে প্রকাণ্ড হিজল গাছটার প্রশস্ত শিকড়টার উপর ভেঙে পড়ল।হায় খোদা!

    তামাক বা তামাকের পাতা নেই, শুধু এই কারণেই বাদশা আজ এমন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠনি। তার আজ কিছু নেই, রিক্ত করে দিয়েছে একেবারে সমস্ত বুকটাকে খালি করে দিয়েছে।

    গাঙের ধারে বিঘা চারেক যে ঢালু জমিটুকু তার সারা বুক জুড়ে জুগিয়ে রেখেছিল এত আশা উৎসাহ, সেটুকু আকণ্ঠ দেনার দায়ে হাতছাড়া হয়ে গেছে। কেউ কোনওদিন ভাবতে পারেনি ওই জমিতে বাদশা চাষ করতে পারবে। ঢালু জমির উপর লাঙল নিয়ে উঠানামা করা সে বড় চারটিখানি কথা নয়, আর বলদ সে বলদই, মেশিন নয় যে লেজ মোচড়ালেই সে ঢালু জমির বুক চিরে লাঙল নিয়ে ওঠানামা করবে।

    তবে হ বাদশা হল খাটিয়ে জোয়ান মরদ। চার সাল আগে বিষম জ্বর থেকে আরোগ্যলাভের পর সাক্ষাৎ হজরপীর খালিকুজ্জমানের স্বপ্নে-পাওয়া মাদুলি আজও আছে তার চওড়া গানটায় বাঁধা—সেই যে এসেছিল স্বাস্থ্যের জোয়ার আজও সেই জোয়ারে ভাটা পড়েনি। মাদুলিধোয়া জল খেয়ে একটা প্রচণ্ড গোঁ ধরে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সেই পাহাড়ের মতো ঢালু জমির বুকে। এই উপেক্ষিত ঢালু ঘাসবনের বুকে সে ফুটিয়ে তুলবে বেহেস্তের সৌন্দর্য, সমতল ভূমির সমস্ত গরিমাকে আত্মসাৎ করবে সবুজ সমুদ্রের ঢেউ তুলে।

    তুলেছিল, সবুজ সমুদ্রের ঢেউ উঠেছিল সেই ঢালু জমির বুকে। সমতলভূমির আয়েশি অহঙ্কারকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দিয়েছিল সে।

    কিন্তু তখন তার বড় ভাই সোলেমান হতাশায় ভয়ে চলে গিয়েছিল শহরে। কারখানায় কাজ করতে। সে ভয় পেয়েছিল, অনাহার দুর্দশার, ঢালু আগাছাভরা জমি আশার বদলে দুরাশাই এনে দিয়েছিল বেশি। নিজের বিবিকে সুদ্ধ সে নিয়ে গিয়েছিল, বাদশার ভাবীসাহেবাকে।

    বাদশা যায়নি। সে হল চাষী, যাকে বলে খাঁটি চাষী। স্বাধীন গ্রামীণ আভিজাত্য ছিল তার মনে। গোলামিকে সে ঘৃণা করে। কারখানায় কাজ করতে যাওয়াকে সে মনে করে অপমান। ভীরু সোলেমান তাই যে জমি দেখে ভয় পেয়েছিল, হতাশায় চলে গিয়েছিল কারখানায় কাজ করতে, বাদশা সেই জমিতেই রক্তের বিনিময়ে ফলিয়েছিল সোনা।

    বাদশার পীড়াপীড়িতে সোলেমান একবার এসেছিল ছোট ভাইয়ের কেরামতি হিম্মত দেখতে। হাঁ, তাজ্জব বানিয়ে দিয়েছিল তাকে বাদশা। বাদশার প্রতি একটা গভীর শ্রদ্ধায়, সম্মানে নিজেকে তার বড় দুর্বল, লজ্জিত মনে হয়েছিল, সে যেন বাদশার ছোট ভাই।

    কিন্তু সোলেমানও খুব দুঃখে ছিল না। টাকার মুখ তো দেখেছে সে, খাওয়া-পরারও অভাব ছিল না খুব। বাদশাহ অবশ্য একটু বিস্মিত হয়েছিল ভাইসাহেবের ভদ্রলোকী পোশাক আর মেজাজ দেখে। তবে তার মধ্যে শ্রদ্ধা ছিল না, ছিল একটা চাষাড়ে বিস্ময়। সেই বিস্ময়টুকুও শেষ পর্যন্ত বক্র হাসির পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছিল। গোলামির আভিজাত্য!

    কিন্তু ইতিমধ্যে দেনার ছোট গর্তটা সুদে আসলে ভিতরে ভিতরে কত দিকে যে ছড়িয়ে পড়েছিল এটা সে টের পায়নি। টের পেল আজ সকালে যখন জোতদার মামুদ মিয়া তাকে ডেকে বলল, ওই ঢালু জমিটাও তার খাসে চলে গেল। নতুন উৎসাহে নতুন বলদ কিনেছিল তখন বাদশা দেনা করে। বীজ ধান নিয়েছে কয়েকটা সাল। সব মিলে সুদে আসলে যা দাঁড়িয়েছে বাদশাকে ভিটেটুকু পর্যন্ত বাঁধা দিতে হবে শেষে।

    সকালবেলা একথা শুনে সে গিয়েছিল জোতদার মহিন ঠাকুরের কাছে। ভাগে চাষ করবে সে মহিন্ ঠাকুরের জমিতে। মামুদের জমিতেও সে ভাগে কাজ করতে পারত, কিন্তু মামুদের প্রতি একটা বিজাতীয় ক্রোধে সে তার কাছে যায়নি। মামুদ তাকে একটু খাতির অবধি করেনি। স্পষ্টভাবে সোজা জানিয়ে দিয়েছে, ওই জমিটাতে আর নাঙল ঢুকাইয়ো না বাদশা। তোমার কর্জর বহর বড় বেশি। বলদ দুইটা লইয়া আইসো, কিস্তি শোধের টাকাটা লেইখা লইমু। টিপসই দিয়া যাইয়ো। আর এই বছর গেলে তোমার বাপের ভিডাও আমার খাসে আইব।

    একটু চুপ করে থেকে পরমুহূর্তেই পরম গাম্ভীর্যে সে বলেছে, আমার খেতমজুররা থাকব হেই ভিডায়। ইচ্ছা করলে তুমিও থাকতে পারো, বিবি ছাওয়াল লইয়া একাই থাকতে পারো। বাপের ভিডা আর ছাড়তে হয় না।

    অর্থাৎ মামুদের খেতমজুর হবে বাদশা।

    ভাইবা দেহি—এই বলে সোজা সে চলে গিয়েছিল হাটে মহিন ঠাকুরের কাছে। কিন্তু সেখানকার একটা বিরাট রহস্যভাগে দিলে না জমি মহিন ঠাকুর। কারণ কিছু বললে না, শুধু উপদেশ দিয়ে দিলে বাদশাকে, মামুদের কাছে যাও, সে জমি ভাগে দিবে। তোমাদের জাতের লোক, বড় মানুষ, তার কাছে যাও।

    সেই থেকে তার শূন্য বুকটা হাহাকার করছে, নাই, নাই, কিছু নাই। আর সেই নাইয়ের প্রতিধ্বনিটা যখন এল জোবেদার কাছ থেকে তখন তার বোবা লক্ষ্যহীন আক্রোশটা ফেটে পড়ল এমন ভয়ঙ্করভাবে।

    বাদশা মুখ তুলল, দৃষ্টিটা তুলে ধরল দিগন্তবিসারী তেপান্তরে।

    নিস্তব্ধ গোধুলি। পথে-প্রান্তরে মানুষের সাড়া প্রায় নেই বললেই চলে। আমনের কাজ শুরু করবার সময় হয়েছে। কিন্তু কাজ আরম্ভ হয়নি এখনও, তাই তেপান্তর জুড়ে মানুষ চোখে পড়ে না একটাও। সারা মাঠই প্রায় মামুদের খাস। সে হুকুম না দিলে, বীজধান না দিলে কাজ শুরু হবে না। সেই অপেক্ষাতেই আছে সবাই।

    তেপান্তর জুড়ে চোখে পড়ে শুধু রিক্ত মাঠ। খোঁচা খোঁচা আউস ফসলের অবশিষ্টাংশ ছুঁচের মতো আকাশমুখী হয়ে আছে। খাপছাড়াভাবে এখানে সেখানে গজিয়ে উঠেছে আগাছা। জলো ঘাস আর কাশবনের ঘন আধিপত্য ছড়িয়ে পড়ছে তেপান্তরের বুক জুড়ে।

    গুচ্ছ গুচ্ছ দীর্ঘ সাদা কাশফুল ফুটেছে, মাথা হেলিয়ে দুলছে হাওয়ায়। বাদশার মনে হয় সন্ধ্যার ধূসর আলোয় জোবেদার মতো শত শত মেয়ে, এই গাঁয়ের মেয়েরা সাদা বোরখা পরে—রিক্ত মাঠ জুড়ে মাথা নেড়ে চলেছেনাই নাই নাই! মনে হয় নমঃশূদ্রদের ঝিউড়ি বউড়িরা মাথায় ঘোমটা টেনে তেপান্তর জুড়ে সারি সারি মাথা দুলিয়ে চলেছে নাই নাই নাই। কাশ আর জলো ঘাসবনের এই বিস্তৃত সমারোহ কি মামুদের চোখে পড়ে না!

    হঠাৎ চমকে উঠল বাদশা সামনের উইপোকার বিরাট ঢিবিটার পিছনে মানুষের একটা মাথা দেখে। সন্ধ্যার অন্ধকার ক্রমশ গাঢ় হয়ে আসছে। কেমন ছম ছম করে উঠল বাদশার গাটা।—কেডা ওইখানে? উঠে দাঁড়াল সে।

    ঢিবিটার পিছন থেকে উঁকি মারে মঙ্গলের ভীত অপরাধী মুখটা।

    -কেডা, মঙ্গল নি?

    —হ।

    ছাওয়ালটার ভীত সন্ত্রস্ত কচি মুখখানি দেখে অবোধ-বেদনায় টনটনিয়ে ওঠে বাদশার বুকটা। আফসোসে মনটা পুড়তে থাকে। কিছুক্ষণ আগের চণ্ডালিপনার কথা মনে হতেই তার অন্তরাত্মা যেন ফুঁপিয়ে উঠতে চাইল! তার ছাওয়ালের মা মাগীটার পাঁজরটাকে ভেঙে দিয়েছে। বুকটা ভেঙে গেছে ছাওয়ালটার। বাপজান নয়, বাঘা কুত্তার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে ভীরু শেয়ালের বাচ্চা। হায় বাদশার কিসমত, হায় বিবি ছওয়ালের তকদির।

    কাছে আয় মঙ্গল!—গলা শুনে মনে হয় সত্যিই বুঝি ফুঁপিয়ে উঠবে সে।

    মঙ্গল শঙ্কিত মুরগির মতো পা ফেলে কাছে আসে। একটু হেসে তাকে ভোলাবার চেষ্টা করে বাদশা বুকের কাছে তাকে টেনে নিয়ে বলে : এমুন বাহাইরা জামাডা তরে কে দিছে রে মঙ্গল?

    বাপজানের এ স্মৃতিহীনতা আর হাসি দেখে একটু সাহস পায় মঙ্গল। বলে, তোমার মনে নাই, বড় চাচি গেল ঈদে পাঠাঁইয়া দিছিল আমারে?

    মনে পড়ে বাদশার সোলেমানের বিবি—তার ভাবীসাহেবার কথা। শহরে গিয়ে শরমের মাথা খেয়েছে সে। বোরখার বালাই প্রায় ত্যাগ করেছে সোললমানের বিবি। চাষী বউয়ের মতো আর ঘোমটা টেনে কথা বলে না। দ্বিধাবোধ করে না একটা পর-পুরুষের কথার জবাব দিতে। বড় বেহায়া তার ভাবীসাহেবা, খানদানের মাথা সে নিচু করে দিয়েছে। কথা বলে হেসে দুলে হড়বড় করে। কেমন একটা অপরিচয়ের গণ্ডী যেন খাড়া হয়ে ওঠে বাদশার চোখে। অচেনা মনে হয় ভাবীসাহেবাকে—তার চলন বলনকে। মনে পড়ে কাজীর পাঁচালী : দাঁত দ্যাখাইয়া হাসে নারী দুপদুপাইয়া চলে।

    আর সঙ্গে সঙ্গে মনে পড়ে জোবেদার কথা। শরমে ভরপুর। বাদশার উঠানের রোদটুকু ছাড়া যার গায়ে আর রোদ লাগে না, ছাঁচা বেড়ার সঙ্কীর্ণ ফুটো দিয়ে যে পর্যবেক্ষণ করে বাইরের বিরাট পৃথিবীকে।

    তবে বেহায়া হলেও ভাবীসাহেবা বড়ই স্নেহশীলা। ভালবাসে সে সবাইকে। দিলটা বেশ খোলসা। বাদশা আর জোবেদাকে সে দেখে ভাই বহিনের মতো। হিংসা নেই মানুষটার। মঙ্গলের তো কথাই নেই। আবাগীর ছাওয়াল নেই, মঙ্গলকেই সে নিজের ছাওয়ালের মতো দেখে। যখনকার যে, খাবার থেকে শুরু করে জামা টুপি, মায় জুতোটি পর্যন্ত, মঙ্গলের জন্য বারোমাস পাঠাবে। মঙ্গলের ব্যামো হলে উপোস দিয়ে পড়ে থাকে সে সেখানে। সোলেমান তখন ঘনঘন চিঠি লেখে; তোমার ভাবীসাহেবা ভাত পানি ত্যাজিয়াছে।

    এই মুহূর্তে খুব খারাপ মনে হয় না ভাইসাহেবের জীবনটা বাদশার কাছে। তার মতো এমন এক মুহূর্তে রিক্ত হয়ে যাবার ভয় নেই সোলেমানের। মনে পড়ে সেই মোটা—আসমান ছোঁয়া চিমনিটা—মুখ থেকে যার অনর্গল ধোঁয়া বেরোয় কালো জমাট ধোঁয়া। তার নীচে সেই বিরাট ঘরটায় কাজ করে তার ভাইসাহেব। হপ্তায় হপ্তায় টাকা নিয়ে আসে নিয়ে এসে দেয় ভাবীসাহেবার হাতে। অভাব নেই ছোট্ট সংসারটায়। আসে খায়, খায় আসে।

    তার চিন্তায় বাধা দিয়ে ডাকল মঙ্গল; আম্মা বড় কানতে লইছে, বাড়িত চল বাপজান।

    -হ, চল! একটা দীর্ঘনিশ্বাস পড়ে বাদশার। চলতে চলতে হঠাৎ বলে সে, তর বড় চাচির কাছে যাবি রে মঙ্গল?

    মঙ্গল বিস্মিত হয়। নানান ঘটনা ও কথার মধ্য দিয়ে সেও জানত বড় চাচা-চাচির উপর বাপজানের বড় গোসা। তাই উল্লসিত জবাব একটা থাকলেও হঠাৎ কিছু বলতে পারল না সে, সন্ধ্যার অন্ধকারে বাপজানের চিন্তান্বিত মুখটার দিকে তাকিয়ে রইল।

    নিস্তব্ধ বাড়িটার বেড়া ঠেলে ঢুকে দাওয়ায় উঠে বসল বাদশা। মঙ্গল ভিতরে গেল তার আম্মার কাছে। ফেলাছড়া জিনিসগুলো চোখে পড়ে না একটাও। যেমন লেপা-পোঁছা তেমনি। অনুতপ্ত হৃদয় নিয়ে অন্ধকার দাওয়ায় একলা চুপ করে বসেই থাকে সে।

    একটু পরে মঙ্গল এসে একটা আস্ত হুঁকা বাড়িয়ে ধরে বাপজানের সামনে। হুঁকার ডগায় টাটকা তামাক ভরা ধূমায়িত কলকে। ঘরের দরজার আড়ালে কাচের চুড়ির ঠুনটুন শব্দ আসে তার কানে।

    ব্যথিত লজ্জিত বাদশা হাত বাড়িয়ে কোটা নিল। অন্যমনস্কের মতো দু-একটা টান দিয়ে, একটু কেশে ডাকল, মঙ্গলের মা আছনি?

    শান্ত জবাব আসে দরজার আড়াল থেকেজি।

    —এটু এদিকে আইয়ো।

    জোবেদা এসে দাঁড়াল অন্ধকার দাওয়ার একপাশে একটু দুরে। মুখ দেখা যায় না। শুধু তার হাতের কাচের রঙবেরঙের চুড়িগুলো সামান্য জ্বল জ্বল করে। সেদিকে না চেয়ে বাদশা বলে, গাঙ্গ কিনারের জমিডা মামুদ ছাইড়ল না।

    জীবনে এই প্রথম বাদশা বিবির কাছে সাংসারিক আলোচনা করতে বসল। দুনিয়ার সমস্ত ভাবনা মরদের; মাগীরা রাঁধবে, বিয়োবে, মরদের পরিচর্যা করবে, এটাই সে চিরকাল ভেবে এসেছে। বললে; উপায় না দেইখা গেছিলাম মহিন্ ঠাকুরের কাছে। কিন্তু ভাগে দিব না হেই জমি।

    জোবেদা স্তব্ধ নিরুত্তর। দু-একটা জোনাকি জ্বলে উঠছে বাইরে অন্ধকারের বুকে।

    —এই ভিটাও আর বেশিদিন নাই, বোঝনি মঈনের মা? মুখ তুলে তাকাল সে জোবেদার ঝাপসা মুখের দিকে।

    তারপর খানিকক্ষণ ঘন ঘন হুঁকোয় টান দেওয়ার পর হঠাৎ সে বলে, শরম কম বটে, তবু ভাবীসাহেবা আমাগোরে খুবই পেয়ার করে। কোনও প্রব বাদ যায় না; তোমার লেইগা শাড়িমঈনের জামাকত কি দেয়। মঈন তো তার নিজের ছওয়ালের লাহান–না?

    জোবেদার কাছ থেকে অস্ফুট একটা শব্দ আসে–হাঁ।

    -ভাইসাহেবও তাই। মানুডা খুবই ভাল। পোড়া পেটের লেইগা মানুতে কিনা করে, ভাইসাহেব তো কারখানায় কাম করে। খাইটা খায়। তা ছাড়া, সুখেই আছে তারা। অষ্ট প্রহর অভাব নাই।…

    একটু চুপ করে থেকে কোটা রেখে হঠাৎ বেশ জোর দিয়েই বলে সে, আমিও ভাইসাহেবের কাছে যামু, কাম করুম কারখানায়, হ! গুমোট ধোঁয়ায় যেন আটকে এল তার গলা।

    না। এতক্ষণে প্রায় চাপা আর্তনাদ করে উঠল জোবেদা।আপনে পারবেন না কারখানায় কাম করতে।

    —পারুম। বাধা দিয়ে বলে ওঠে বাদশা।

    মানুষটা আজ এ কী কথা বলছে! জোবেদা তবু বলে; হেই ড্যাকরাডার (মামুদের) কাছেই যান। তার কাছে

    না। আবার রুক্ষ হয়ে ওঠে বাদশার স্বর। দুঃখু নাই, চিন্তা নাই, আনে খায়, আমিও ভাইসাহেবের মতো রোজগার করুম। ঝাটের কাম কি? বাপ মায়ের মতো ভাই ভাবীসাহেব, তাগো কাছেই যামু। ইজ্জত বাঁচব, বোঝলা, তোমারও ইজ্জত বাঁচব। মঈনডা দুইডা ভাল মন্দ খাইতে পাইব।

    নির্বাপিত হুঁকোটা তুলে নিল সে আবার। পাতালপুরী থেকে যেন অন্ধকার পৃথিবীর বুকে ছড়িয়ে পড়ে বাদশার গলা, তুমি বোঝো না মঈনের মা,-খেতমজুর আর ক্যাঙালিতে তফাতটা কী? হেষে মামুদের খেতমজুর, বিলাই কুত্তার লাহান, জোতদারের পায়ের তলায় পইড়া বারোমাস রোজা পালুম! ভিডা নাই, জমি নাই, বিলাই কুত্তা না তো কি? না না না, তার থেইকা ভাইসাহেবের মতো রোজগার ভাল!

    হুঁকো রেখে জোবেদার কাছে এসে দাঁড়ায় সে। আজই রাইত বিহানে বাইর হমু। জাহাজ ছাড়তে হেই বেলা একডা, শেষ রাইতে বাইর হইলে বেলা বারোটা লাগাত ঘাটে পৌঁছামু, বোঝলা?

    জোবেদার গলা দিয়ে কথা ফোটে না। ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানিয়ে রান্নাঘরে চলে গেল সে।

    বাদশা নেমে গোয়ালের দরজাটা খোলে। কইরে সোরাব রুস্তম! বলদ দুটোর নাম রেখেছিল সে সোরাব-রুস্তম। তেজী বলদ, ঢালু জমির বুক চষেছিল ওরা। জমিদার বাড়ির জোয়ান ঘোড়ার মতো প্রকাণ্ড বলদ, ওপারের হাট থেকে কিনে নিয়ে এসেছিল পছন্দ করে। লড়ায়ে চেহারা দেখে সে ওই নাম রেখেছিল। মঈনের ইতিহাস বইয়ে সেই দুই বীরের নাম শুনেছিল সে, বাপ ব্যাটার বীরত্বের কাহিনী। সেই মরদ দুটোর নামের পিছনে যে রোমান্স ছিল, সেই রোমান্স তার জেগে উঠেছিল এই তেজী বলদ দুটোকে দেখে।

    সোরাব-রুস্তম বেরিয়ে এল।

    চলরে। দিয়া আহি তগো কসাইডার কাছে, তগো নসিব বান্দা তার হাতে।

    জোবেদা লম্ফটা নিয়ে এসে দাঁড়াল। নির্বোধ বলদ দুটো চারটে ডাগর চোখ তুলে ধরল মনিবের দিকে। ভাবল বোধ হয় রাত্রে অন্ধকারে গোয়ালের বাইরে, জীবনে তাদের এ ব্যতিক্রম কেন?

    দিয়া আহি মঈনের মা! চলরে! অন্ধকারে বলদ দুটোকে নিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেল বাদশা।

    সারা রাত ধরে এটা সেটা নানান টুকিটাকি বস্তা বের করেছে জোবেদা। সমস্ত বেঁধে হেঁদে ঘণ্টাখানেক ঘুমিয়েছে সে। হঠাৎ লাথির আঘাত খাওয়া পাঁজরটায় মৃদু স্পর্শে চমকে জেগে উঠল সে।—কেডা?

    আমি, বাদশার নরম গলা কেঁপে উঠল একটু। সময় হইল মঈনের মা। উঠো বাইর হইতে হইব।

    মঈনের গায়ে আস্তে একটা ঠেলা দিল সে। ওঠরে মঈন ওঠ ওঠ।

    গোটা তিনেক বোঁচকা, একটা মাদুর আর একটা হ্যারিকেন। বাদশার সংসার।

    বাদশা বলে, বোরখাটা অখন থাউক। রাইত পোহাইলে রাস্তায় পইরা লইয়ো। বলে সে একটা বোঁচকা মাথায় আর একটা হাতে নেয়। বগলে নেয় মাদুরটা। আর একটা বোঁচকা ওঠে জোবেদার কাঁখে। হ্যারিকেনটা নেয় মঈন।

    দরজায় শিকল তুলে দিয়ে বাইরে এসে দাঁড়াতেই জোবেদার চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে এল চোখ-ছাপানো জলে।

    বাদশার ঠোঁট দুটো থরথর করে কেঁপে উঠল উঠানে দাঁড়িয়ে। মনে মনে বলল সে, আবার আইমু। কারখানার খাটুনির পয়সা দিয়া আবার ভিসা ছাড়ামু, জমি ছাড়া আমার গাঙ্গ কিনারের জমিড়া।

    .

    বাইরে তখনও অন্ধকার। আসন্ন শরৎকালের মৃদু ঠাণ্ডা হাওয়া বইছে। আকাশে শুকতারাটা জ্বলছে দপ দপ করে। তিনটি মানুষের ছোট একটি দল ছায়ার মতো এগিয়ে চলল বর্ষার জলে ভোবা সর্পিল পথের উপর দিয়ে। গাঙের কিনার দিয়ে নরম ঢালু জমির বুকে পায়ের গভীর ছাপ রেখে ছায়া তিনটি এগিয়ে চলল জাহাজঘাটের দিকে। আগে বাদশা, তারপর মঈন, পিছনে জোবেদা।

    একটুকু পা চালাইয়া আইয়ো গো মঈনের মা। জাহাজ না ফেল হয়। আঁধার শেষ হওয়ার আগেই পরিচিত তল্লাট ছাড়িয়ে যেতে চায় বাদশা।

    বেলা বারোটার আগেই তারা পৌঁছয় জাহাজঘাটে। ইতিমধ্যে পথে জোবেদার গায়ে বোরখা উঠেছে। গলদঘর্ম হয়ে উঠেছে সে। টিকিট ঘরের একটু দূরে নিরালা জায়গায় বোঁচকা নামিয়ে বসে তারা। বাদশা টিকিট আর জাহাজের খবর নিতে যায়।

    একটা পুরনো মালসা আর চিড়ে বের করল জোবেদা বোঁচকা খুলে। মঈনের খিদে পেয়েছে, ওই মানুষটারই কি আর কম খিদেটা পেয়েছে! মালসায় চিড়ে ঢালতে ঢালতে মুখের ঢাকনাটা খুলে সে বাদশার দিকে দেখে। পা টেনে টেনে চলেছে বাদশা।

    —মঈন ঘটিতে কইরা খানিক পানি লইয়া আয় তো বাপ। মঈনের দিকে একটা ঘটি বাড়িয়ে দিল জোবেদা।

    খানিকক্ষণ বাদে বাদশা ফিরে এল। হাত-পা ছড়িয়ে বসে পড়ে বলল, আর বেশি দেরি নাই মঈনের মা, ঘণ্টাখানিকের মধ্যেই নাকি জাহাজ ভিড়ব।

    মঈন জল নিয়ে আসতে সবাই শুকনো চিড়ে আর গুড় নিয়ে বসে খেতে। জোবেদা বাদশাকে আড়াল করে নদীর দিকে মুখ করে বসে।

    নদীতে অসংখ্য জেলেদের নৌকা ঘুরছে। কোনটার পাল গুটনো, কোনটার ছাড়া। ইলিশ মাছের মরশুম এটা। তাই নৌকাগুলি জাহাজঘাট আর ও-পারের কালো একটা রেখার মতো ধুধু করা বহু বিস্তৃত চালার দিকে যাতায়াত করছে।

    জলল হাওয়া এলোমেলো হয়ে ঘুরে বেড়ায় বালুমাটির উপর দিয়ে। সেই হাওয়ার গায়ে পাখা ঝাপটা দেয় ওই নৌকাগুলোর মতো অসংখ্য গাংচিল।

    জোবেদার বুকের মধ্যে নিশ্বাস আটকে উথালি-পাথালি করে ওঠে ওই গাঙের বিক্ষুব্ধ ঢেউগুলোর মতো। মনটা এলোমেলো হয়ে যায়, এলোমেলো হাওয়ায়। চোয়াল দুটো আনমনে নাড়তে নাড়তে এক সময় হঠাৎ চমকে উঠল সে একটা শব্দ শুনে।

    —আইতেছে। বাদশা উঠে দাঁড়াল। জাহাজ আইতেছে গো মঈনের মা। হু-ই যে, বাঁশি শোনা যায়। লও, লও সব বাইন্দা ছাইন্দা লও।

    খোলা বোঁচকাটা আবার বাঁধতে আরম্ভ করে জোবেদা। মঈনও কপালে হাত দিয়ে দূরের দিকে তাকায়। হ, কী যেন একটা আসছে বড় গাঙের ঢেউ কেটে কেটে।

    এতক্ষণে যাত্রীতে ভরে উঠেছে জাহাজঘাটের বালময় প্রাঙ্গণ। বাক্স বোঁচকায় ঠাসাঠাসি, গাদাগাদি। দুএকজন পরিচিত লোকের সঙ্গে দেখা হয় বাদশার। জিজ্ঞেস করে, কুনঠাঁই গো বাদশা মিয়া।

    —ভাইসাহেবের কাছে। আর বেশি কিছু বলে না সে। দুঃখ ঘুচুক, পয়সাকড়ি হোক, ভিটা জমি খালাস হোক, তারপর সে অনেক কথা বলবে সবাইকে। সুখের সময় অতীত দুঃখের কথা বলতে ভাল লাগে।

    জাহাজ এসে ভিড়ল। ব্যস্ত হয়ে উঠল সবাই।

    বাদশা বোঁচকা তুলে নিল মাথায় হাতে। জোবেদাও নিল।

    ও মঈন, বাদশা ডাকে। তুই একটা হাত ধর আমার, আর তর মায়ের আঁচলটা ধর এক হাতে। ছাড়িস না য্যান। আমার লাগত আইয়ো গো মঈনের মা।..

    আহঃ! দু-এক পা এগোতে না এগোতেই পিছন থেকে ডাক পড়ে, অ বাদশা মিয়া।

    -কেডা?—না ফিরেই বাদশা বিলম্বিত কণ্ঠে হাঁকে।

    জবাব দেয় মঈন—আমাগো পিয়ন চাচা!

    —আইতে ক তারে।

    আইতেছে।

    পিয়ন কাছে এল। জিজ্ঞেস করল, কই চললা?

    -শহরে, ভাইজানের কাছে।

    অ! কাইলের ডাক আইতে বড় দেরি হইছে, তাই যাই নাই। আইজ যাইতে ছিলাম তোমাগো ও-দিকেই, খানকয়েক চিডি আছে ও-দিককার। তোমারও একখান চিডি আছে, লইয়া যাও! একটা পোস্টকার্ড বাড়িয়ে ধরে সে বাদশার দিকে।

    হ? মনটা অস্বস্তিতে ভরে ওঠে বাদশার। বলে, অখন আর সময় নাই। একটু তাড়াতাড়ি পইড়া দেও তো ভাই কী লেখেছে, কেডা লেখছে?

    জোবেদা বোরখার আড়ালে উত্তর্ণ হয়ে ওঠে।

    পিয়ন পড়ে, লেখতেছে তোমার ভাইসাহেব সোলেমান, বোঝলানি? লেখছে : দোয়াবরেষু, বহুত বহুত দোয়া পর আশা করি খোদার কৃপায় মঙ্গলেই আছ। খুবই দুঃখের কথাটা জানাইতেছি আমার চাকরিটা নাই। কারখানার চারশত লোক বরখাস্ত কইরাছে। আমিও তাহার মধ্যে আছি। আগামী পরশ তোমার ভাবীসাহেবারে লইয়া বাড়ি রওনা হইতেছি। তোমার বিবি ও মঈন…।

    স্বপ্নেখিতের মতো তিনটি মানুষ যাত্রীর ভিড় চিৎকারের মধ্যে নির্বাক নিস্পন্দ হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। একটা বিরাট কালো জাল যেন নেমে এল চোখের উপর। কারখানার সেই ধোঁয়া উদগীরণকারী কালো চিমনিটা আর গঙ্গা কিনারের ঢালু জমিটা একাকার হয়ে একটা প্রচণ্ড শব্দে আর অভিনব দৃশ্যে মাথার মধ্যে ভোঁ ভোঁ করতে লাগল। চাপা সমুদ্রের গর্জনের মতো যাত্রীর চিৎকার আর সে শব্দে দিশেহারা নির্বাক নিস্পন্দ তিনটি মানুষ!

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleকথামালা – আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    Next Article মুখোমুখি – আশুতোষ মুখোপাধ্যায়

    Related Articles

    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    ভয় সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    কিশোর অ্যাডভেঞ্চার সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    প্রকাশ্য দিবালোকে – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 18, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    তারপর কী হল – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 17, 2025
    মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    শর্ম্মিষ্ঠা নাটক – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    November 11, 2025
    সত্যজিৎ রায়

    মানপত্র সত্যজিৎ রায় | Maanpotro Satyajit Ray

    October 12, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }