Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025

    ওডিসি – হোমার

    October 13, 2025

    প্রেমের প্রান্তে পরাশর – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    October 13, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    ওডিসি – হোমার

    পার্থ সারথী দাস এক পাতা গল্প358 Mins Read0

    ২০. সঙ্কটের পূর্বাভাষ

    বিংশতি পর্ব
    সঙ্কটের পূর্বাভাষ

    কতকগুলো নিহত ভেড়ার চামড়া পেতে ওডিসিয়াস গাড়িবারান্দার নিচে শোবার উদ্যোগ করতেই ইউরিনোম তাকে গায়ে ঢাকা দেওয়ার জন্য একটা চাদর দিয়ে গেল। ওডিসিয়াস যখন শুয়ে শুয়ে তাঁর প্রতিন্দীদের শাস্তি দেওয়ার কথা চিন্তা করছিলেন তখন দেখলেন একজন মেয়ে অর্থাৎ প্রাসাদের দাসীদের অনেকে তাদের ঘর থেকে বেরিয়ে পাণিপ্রার্থীদের ঘরের দিকে যাচ্ছে। এ দৃশ্য দেখে তাঁর মনে এতখানি ক্রোধোৎপত্তি হল যে একবার তিনি ভাবলেন ওদের হত্যা করবেন। কিন্তু পরক্ষণেই নিজেকে সংযত করলেন তিনি। শুধু এক নিষ্ফল আক্রোশ অশ্রুত ধ্বনিতে গর্জন করতে লাগল তাঁর মধ্যে। তার মধ্যে কে যেন বলতে লাগল, সাইক্লোপ তোমার সামনে যখন তোমার লোকজনদের ধরে ধরে গ্রাস করছিল তখন তুমি নীরবে সহ্য করে যে বুদ্ধির পরিচয় দিয়েছিলে সেই বুদ্ধির দ্বারাই তুমি নিশ্চিত মৃত্যুর কবল হতে সেদিন মুক্তি পাও।

    এইভাবে অন্তরের বিদ্রোহ দমন করতে পারলেও রন্ধনকালে তপ্ত পাত্রের উপর রাঁধুনি দ্বারা ইতস্তত সঞ্চালিত মাংসখণ্ডের মত বিছানায় এপাশ ওপাশ করতে লাগলেন ওডিসিয়াস। তিনি ভেবে পেলেন না একা তিনি লড়াই করবেন এতগুলো দুবৃত্তের সঙ্গে কি করে। এমন সময় দেবী এথেন তার মাথার কাছে এসে বললেন, কেন তুমি বিদ্রি অবস্থায় ভাবছ? এটা তোমার নিজের বাড়ি আর তোমার যখন এমন সন্তান রয়েছে।

    ওডিসিয়াস উত্তর করলেন, দেবী, মন থেকে দুশ্চিন্তা তবু অপসারিত করতে পারছি না। আমি একা আর ওরা সবসময় দলবদ্ধভাবে থাকে। আর একটা সমস্যা হলো এই যে, আমি যদিও বা ওদের সকলকে হত্যা করতে সমর্থ হই তাহলে কোন নিরাপদ স্থানে আমি পালিয়ে যাব? এই কথাগুলোও ভেবে দেখতে হবে আমাকে।

    দেবী এথেন তখন বললেন, কত লোক এর থেকে কম লোক ও কম সাহায্য লাভ করে সন্তুষ্ট হয় আর তুমি আমার অকুণ্ঠ সাহায্য লাভ করেও সন্তুষ্ট নও। আমি যদি তোমার সহায় থাকি তাহলে পঞ্চাশজন লোক তোমায় রক্তপিপাসায় উন্মত্ত হয়ে আক্রমণ করলেও তুমি তাদের নাকের ডগা থেকে অক্ষত শরীরে সবকিছু হরণ করে আনবে। সুতরাং বিদ্রি রাত্রি যাপন না করে নিশ্চিন্তে ন্দ্রিা যাও।

    কিন্তু ওডিসিয়াস যখন গভীরভাবে নিদ্রিত হয়ে পড়লেন, এক গভীর স্বস্তির মধুর আস্বাদে সুস্থ হয়ে উঠতে লাগল তার ক্লান্ত দেহের স্নায়ুগুলো তখন সহসা ন্দ্রিাভঙ্গ হলো পেনিলোপের। তিনি অশ্রু বিসর্জন করতে করতে দেবী আর্তেমিসের উদ্দেশ্যে বলতে লাগলেন, ঝড়ের সৈন্যরা যখন প্যান্ডারাসের কন্যাদের উড়িয়ে নিয়ে যায় অকালে, তেমনি একটি মৃত্যুবাণ হেনে আমার এই অভিশপ্ত প্রাণটিকে কেড়ে নাও। সারাদিন ধরে যে মানুষ দুঃখ ভোগ করে আর চোখের জল ফেলে কাটায়, রাত্রিতে একবার সে ন্দ্রিাভিভুত হয়ে পড়লে সুখদুঃখের সব অনুভূতি মুহূর্তে বিলুপ্ত হয়ে যায় তার। কিন্তু নিদ্রার মধ্যেও নিস্তার নেই আমার। যতসব মিথ্যা অলীক স্বপ্নের দ্বারা দেবতারা প্রপীড়িত করে আমায়। এই আজ রাত্রিতেই আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম ওডিসিয়াস আমার পাশে এক শয্যায় শায়িত রয়েছেন ঠিক আগে যেমন থাকতেন।

    পেনিলোপের প্রার্থনা শেষ হতেই সকাল হয়ে গেল। তার দীর্ঘশ্বাস ও সকরুণ প্রার্থনার অনেক কথা নিচেরতলা থেকে শুনতে পাচ্ছিলেন ওডিসিয়াস। স্বপ্নের মধ্যে তাঁর একবার মনে হয়ছিল পেনিলোপ তারই পাশে শুয়ে আছেন যেন। জিয়াসের কাছে প্রার্থনা জানিয়ে বললেন তিনি হে পরম পিতা, আমাকে যদি এত দুঃখের পর এখানে আনলে তাহলে কেন এ বাড়ির একটি লোকও আমাকে কোন আশার কথা শোনাচ্ছে না?

    ওডিসিয়াসের কথা শেষ হতেই বিনা মেঘে এক বজ্রগর্জনের মাধ্যমে উত্তর দিলেন জিয়াস। যে দশ-বারোজন দাসী প্রতিদিন জাতায় যব ও গমের দানা পিষে আটা তৈরি করে পাণিপ্রার্থীদের খাওয়াবার জন্য, তাঁদের মধ্যে একজন রয়ে গিয়েছিল। সকাল পর্যন্ত কাজ করছিল সে। সে হঠাৎ বলল, বিনা মেঘে বজ্রগর্জন নিশ্চয় আশার কথা। আজ নিশ্চয়ই আমার কষ্টভোগ শেষ হবে। ঐ সব পাণিপ্রার্থী লর্ডদের জন্য ময়দা পিষে পিষে আমার কোমর ভেঙ্গে গেল।

    একথা শুনে আশান্বিত হলেন ওডিসিয়াস। এমন সময় দাসীরা ঘুম থেকে উঠে এসে কাজে যোগদান করল। টেলিমেকাস উঠে পোশাক পরে ইউক্লিয়াকে জিজ্ঞাসা করল, সে তাদের অতিথির প্রতি উপযুক্ত নজর রেখেছিল কি না।

    ইউরিক্লীয়া বলল, ভদ্রলোক ইচ্ছামত মদ্যপান করেছেন, কিন্তু ক্ষুধা না থাকার অজুহাত দেখিয়ে কোন খাবার খাননি। বলল, রাণী নিজে উত্তম শয্যার ব্যবস্থা করতে বলেছিলেন, কিন্তু তিনি তা নিতে চান নি।

    স্কন্ধে তরবারি আর হাতে বর্শা নিয়ে কয়েকটি কুকুরকে সঙ্গে করে বাজারের পথে বেরিয়ে পড়ল টেলিমেকাস। এদিকে প্রাসাদের প্রধানা দাসী হিসেবে অন্যান্য দাসীদের বিভিন্ন কাজের নির্দেশ দিতে লাগল ইউরিক্লীয়া। দাসীদের কেউ কেউ জল আনতে গেল, কেউ ঘর ও টেবিল পরিষ্কার করতে লাগল। ইতিমধ্যে পুরুষ ভৃত্যরা এসে পড়ল। শূকরপালন ইউমেয়াস তিনটি মোটা শূকর নিয়ে এল। সে ওডিসিয়াসের কাছে এসে জিজ্ঞাসা করল, কি মশাই, লর্ডরা তোমার সঙ্গে ভাল ব্যবহার করেছিল না কি এখনো তোমাকে দেখলে নাক সিটকায়?

    অতিথিবেশী ওডিসিয়াস উত্তর করলেন, হায় ইউমেয়াস, কবে দেবতারা পরের ঘরে ওদের এই দুর্ব্যবহার আর বেয়াদবির অবসান ঘটাবেন? ওদের মধ্যে বিন্দুমাত্রও শালীনতাবোধ নেই।

    ছাগপালক মেলানথিয়াস কয়েকটি বাছাইকরা ছাগল পাণিপ্রার্থীদের মাংসের জন্য নিয়ে এল। সে ওডিসিয়াসকে বলল, কী এখনো যাও নি? এখনো ভিক্ষে করছ লর্ডদের কাছে? কেন, আর কি জায়গা নেই? মনে হচ্ছে যাবার আগে কয়েকটা ঘুষি দিয়ে যাই।

    ওডিসিয়াসের অন্তর ক্ষুব্ধ হলেও বাইরে কিছুই বললেন না। এমন সময় ফিলোতিয়াস নামে আর একজন রাখাল এসে একটা বকনা আর কিছু ছাগল দিল। সে অতিথিশবেশী ওডিসিয়াসকে দেখে তাঁর কাছে গিয়ে শ্রদ্ধার সঙ্গে তাঁর হাত ধরে বলল, স্বাগত বন্ধু, এখন কষ্টে পড়েছ, কিন্তু পরে সুখ পাবে। দেবরাজ জিয়াস এমনি নির্মমভাবে মানুষকে দুঃখকষ্ট দেন। তোমাকে দেখে ওডিসিয়াসের কথা মনে পড়ে গেল আমার। আমার চোখে জল আসছিল। আমার কৈশোর জীবনে তিনিই একাজে নিযুক্ত করেন আমায়। কিন্তু আজ যখন তিনি নেই আজ শুধু পরের জন্য তাঁর পশুপালনে আর কোন প্রবৃত্তি নেই, আমার। আমার কেবলি মনে হয় অন্য কোথাও পালিয়ে যাই কিন্তু মাঝে মাঝে আশা হয় হয়ত বা ওডিসিয়াস হঠাৎ কোনদিন এসে হাজির হবেন এ প্রাসাদে।

    ওডিসিয়াস বললেন, তুমি বিজ্ঞ লোকের মতই কথা বলছ সে মেষপালক। আমি জিয়াসের নামে শপথ করে বলছি, শীঘ্রই রাজা ওডিসিয়াসকে এ প্রাসাদে দেখতে পাবে তুমি। তুমি ইথাকা ত্যাগ করার আগেই চলে আসবেন তিনি।

    ফিলোতিয়াস বলল, তোমার কথা যেন সত্য হয় বন্ধু ।

    এদিকে পাণিপ্রার্থীরা এসে সমবেত হলো প্রাসাদের নিচের তলার সেই প্রশস্ত হলঘরে। তারা আবার টেলিমেকাসের বিরুদ্ধে হত্যার ষড়যন্ত্র করতে লাগল। কিন্তু এমন সময় এক কুলক্ষণ দেখা গেল। একটি ঈগল পাখি মুখে করে একটি কপোত নিয়ে বাম দিক দিয়ে উড়ে যাচ্ছিল। তা দেখে অ্যাফিনোমাস তাদের সতর্ক করে দিয়ে বলল, তাদের এ ষড়যন্ত্র সফল হবে না। সুতরাং এখন ভোজসভায় যোগদান করা যায়। অ্যাফিনোমাসের কথামত তারা মেষ, ছাগ, বকনা প্রভৃতি পশুগলোকে বধ করে ভোজসভার আয়োজন করল। ভৃত্য ও উপস্থিত পশুপালকরা তাদের মদ ও রুটি পরিবেশন করতে লাগল।

    টেলিমেকাস ইচ্ছা করে ওডিসিয়াসকে সেই তক্তার উপর বসিয়ে একটি স্বর্ণ পাত্রে করে মদ ও কিছু মাংস দিয়ে বলল, এবার হতে আমার উপর আপনি নির্ভর করতে পারেন। আমি আপনাকে অপরের যে কোন অপমান ও আঘাতের হাত থেকে রক্ষা করব। এটা পান্থশালা নয়, রাজা ওডিসিয়াসর প্রাসাদ এবং এখন এ প্রাসাদ আমার। শুনুন ভদ্রমহোদয়গণ, আমি বলছি আপনারা ঝগড়া বিবাদ বা যে কোন হিংসাত্মক কার্যাবলি থেকে বিরত থাকবেন।

    টেলিমেকাসের এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথায় বিস্মিত হয়ে গেল লর্ডরা। তাদের মধ্য হতে অ্যান্টিনোয়াস বলে উঠল, টেলিমেকাসের কণ্ঠের মধ্যে এক ভয়াবহ ঔদ্ধত্যের সুর থাকলেও তা আমাদের সহ্য করতে হবে। আমাদের পরিকল্পনা সার্থক হলে তার এ কণ্ঠস্বর আর ধ্বনিত হত না এ প্রাসাদে।

    অ্যান্টিনোয়াসের কথা কান দিল না টেলিমেকাস। ওদিকে সেদিন ছুটির দিন থাকায় নগর উপান্তে এক ছায়াচ্ছন্ন কুঞ্জবন মধ্যে অবস্থিত অ্যাপোলোর বেদীমূলে দীর্ঘ কেশবিশিষ্ট নগরবাসীগণ বলি দেবার জন্য বলির পশুগুলোকে নিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু ধর্মবিশ্বাসহীন পাণিপ্রার্থীরা তখন ব্যস্ত ছিল তাদের ভোজসভায়। টেলিমেকাসের নির্দেশ মত পরিবেশনকারী ভৃত্যরা ওডসিয়াকেও পরিবেশিত খাদ্যের সমান অংশ দিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু দেবী এথেন এই মুহূর্তে পাণিপ্রার্থীদের মন থেকে ওডিসিয়াসের প্রতি বিষাক্ত হিংসার মনোভাবকে অপসরিত করলেন না। তিনি গভীর করে তুলতে চাইছিলেন ওডসিয়াসের ঘৃণা ও অন্তর্বেদনাকে।

    পাণিপ্রার্থীদের মধ্যে সেমি থেকে আগত টেসিপ্লাস নামে এক ব্যক্তি ছিল। তার প্রচুর ধনসম্পদ ছিল এবং অর্থের অহঙ্কারে সে প্রেম নিবেদন করতে এসেছিল ইথাকার রাজপ্রাসাদে। সে বলল, আমি এই মাননীয় অতিথিকে একটি উপহার দেব যাতে উনি স্নানের পর ভৃত্যদের কিছু বখসিস দিতে পারেন। এই বলে সে একটি গরুর ক্ষুর ছুঁড়ে দিল ওডিসিয়াসের দিকে। কিন্তু ওডিসিয়াস যথাসময়ে সরে যাওয়ায় ক্ষুরটি দেওয়ালে গিয়ে লাগল। বিদ্রুপের এক ক্ষীণ হাসি ফুটে উঠল ওডিসিয়াসের মুখে। কিন্তু টেলিমেকাস টেসিপ্লাসকে বলল, যদি এই ক্ষুরটি ওঁর গায়ে লাগত তবে আমার বর্শাটি তোমার বক্ষ ভেদ করত টেসিপ্পাস। তাহলে তোমার বিবাহের পরিবর্তে তোমার শেষকৃত্যের ব্যবস্থা করতে হত। জেনে রাখ, আমি আর অবোধ শিশু নই। তোমাদের এই সব দৈনন্দিন পশুবধের ঔদ্ধত্য সহ্য করলেও আমার কোন অতিথির প্রতি অপমান বা আমার ভৃত্য বা দাস-দাসীদের উপর কোন অত্যাচার আমি সহ্য করব না।

    টেলিমেকাসের এই দৃঢ়তাপূর্ণ কথা শুনে সকলেই স্তব্ধ হয়ে বসে রইল। অবশেষে এজলাস বলল, বন্ধুগণ, টেলিমেকাস উচিত কথাই বলেছে এবং তার অতিথি বা ভৃত্যদের আর কেউ অপমান করবে না। কিন্তু আমাদের কথা হলো এতদিন ওডিসিয়াসের প্রত্যাবর্তনের আশায় টেলিমেকাস ও তার মাতা আমাদের সব অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে এসেছেন। কিন্তু এখন যখন সে আশা নেই তার মাতাকে এখনি আমাদের সামনে ডেকে এ ব্যাপারে মীমাংসা করে ফেল। তিনি আমাদের মধ্যে একজনকে পছন্দ করে বিয়ে করে চলে যান আর টেলিমেকাস একা এ প্রাসাদের ধনসম্পত্তি ভোগ করুক।

    টেলিমেকাস উত্তর করল, আমি জিয়াস ও আমার মৃত অথবা বিদেশভ্রমণরত পিতার নামে শপথ করে বলছি এজলাস, মাতার পুনর্বিবাহের ব্যাপারটাকে কোনক্রমেই স্থগিত রাখতে চাই না আমি। আমি বার বার তাকে একথা বলেছি কিন্তু তিনি যদি বিবাহ না করেন তাহলে সন্তান হয়ে নিজের মাতাকে বাড়ি থেকে বার করে দিতে আমার বিবেকে বাধে। ঈশ্বর করুন আমি যেন তা কখনো না করি।

    দেবী প্যালাস এথেনের ইচ্ছায় পাণিপ্রার্থীরা হেসে উঠল টেলিমেকাসের কথায়। কিন্তু সহসা তাদের হাস্যময় মুখমণ্ডলগুলো আচ্ছন্ন হয়ে উঠল নিবিড় বিষাদে। তাদের মনে হতে লাগল রক্ত লেগে রয়েছে তাদের খাদ্যবস্তুতে। অশ্রুসিক্ত হয়ে উঠল তাদের চোখগুলো। এমন সময় বিদেশী অতিথি থিওক্লাইমেনাস বলে উঠল, একি নিরানন্দ কেন দেখি তোমাদের মুখ? মনে হচ্ছে সূর্যের সব আলো নিবে গেছে আর সেই অকালে নেমে আসা অন্ধকারে গা ঢাকা দিয়ে নরক থেকে যত সব প্রেতাত্মারা উঠে এসেছে। মনে হচ্ছে এক কুটিল কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে উঠেছে সারা পৃথিবী।

    অন্য পাণিপ্রার্থীরা হাসতে লাগল জ্যোতিষী থিউক্লাইমেনাসের কথা শুনে। কিন্তু ইউরিমেকাস বলল, উনি যদি এখানে এত অন্ধকার দেখেন তাহলে ওঁকে তোমরা বাজারের পথটা দেখিয়ে দাও।

    থিওক্লাইমেনাস বলল, ইউরিমেকাস, আমার চোখ ঠিকই আছে। মাথাও আছে কাঁধের উপর। আমি নিজেই যেতে পারব। কিন্তু আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি এমন এক বিরাট বিপর্যয় নেমে আসবে তোমাদের উপর যার থেকে তোমাদের একজনও পালাতে পারবে না। আজ যারা রাজা ওডিসিয়াসের প্রাসাদে স্বেচ্ছাচার চালিয়ে যাচ্ছে আর অতিথি অভ্যাগতদের অপমান করে যাচ্ছে তার কেউ বাঁচবে না।

    এই বলে বিদেশী জ্যোতিষী চলে যেতেই পাণিপ্রার্থীদের একজন বিদ্রুপের ভঙ্গিতে বলে উঠল, টেলিমেকাস, তোমার অতিথিভাগ্য খুবই খারাপ। এই যে বিদেশী ভবঘুরেটি দেখছ, এ শুধু তোমার খাদ্য ও পানীয় ধ্বংস করবে কোন কাজ করবে না। আবার একটি অতিথি জ্যোতিষীর ভান করে এসে হাজির হলো। আমি বলছিলাম তুমি ওদের জাহাজে করে মেসিনিতে পাঠিয়ে বিক্রির ব্যবস্থা করলে অনেক টাকা পাবে।

    এই উপহাসে টেলিমেকাস অতিশয় ক্রুদ্ধ হয়ে উঠল। তথাপি সে তার পিতার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে স্তব্ধ হয়ে বসে আক্রমণের প্রতীক্ষা করতে লাগল। উপরতলায় পেনিলোপ এমন একটি জায়গায় চেয়ার পেতে বসে রইলেন যেখান থেকে তিনি নিচের তলার পাণিপ্রার্থীদের সব কথা শুনতে পান।

    সেদিন পাণিপ্রার্থীদের মধ্যাহ্ন ভোজনটি বিশেষভাবে আস্বাদ্যমান হয়ে উঠলেও নৈশভোজনটি ভাল জমলো না।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleপ্রেমের প্রান্তে পরাশর – প্রেমেন্দ্র মিত্র
    Next Article ইলিয়াড – হোমার

    Related Articles

    পার্থ সারথী দাস

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025
    পার্থ সারথী দাস

    ইলিয়াড – হোমার

    September 12, 2025
    পার্থ সারথী দাস

    ওডিসি – হোমার

    September 12, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025
    Our Picks

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025

    ওডিসি – হোমার

    October 13, 2025

    প্রেমের প্রান্তে পরাশর – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    October 13, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }