Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025

    ওডিসি – হোমার

    October 13, 2025

    প্রেমের প্রান্তে পরাশর – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    October 13, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    ওডিসি – হোমার

    পার্থ সারথী দাস এক পাতা গল্প358 Mins Read0

    ২১. বিশাল ধনুক

    একবিংশ পর্ব
    বিশাল ধনুক

    এবার পাণিপ্রার্থীদের মধ্যে সেই প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠান করার জন্য পেনিলোপকে সচেষ্ট করে তুললেন দেবী এথেন। যে ধনুর্বিদ্যা প্রতিযোগিতায় আপন আপন কৌশল প্রদর্শন করতে গিয়ে তারা ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাবে ক্রমশ, সে প্রতিযোগিতা ত্বরান্বিত করার জন্য সেই বিশাল ধনুকটি আনতে গেলেন পেনিলোপ। নিজের ঘর থেকে বেরিয়ে প্রাসাদের একপ্রান্তে একটি রুদ্ধ গৃহের দিকে একটি তামার চাবিকাঠি হাতে এগিয়ে যেতে লাগলেন রাণী পেনিলোপ।

    একবার ওডিসিয়াসের সঙ্গে ইফিটাসের দেখা হয় ওর্সিলোকাসের বাড়িতে। ওডিসিয়াস তখন সবেমাত্র যৌবনে পদার্পণ করেছেন। তিনি সেখানে গিয়েছিলেন লোকদের কাছ থেকে অপহৃত তিনশত পশুর ক্ষতিপূরণস্বরূপ কিছু অর্থ আদায় করতে আর ইফিটাস সেখানে গিয়েছিলেন তাঁর অপহৃত বারোটি ঘোটকীর অনুসন্ধান করতে। সেইসূত্রে ইফিটাসের সঙ্গে এক নিবিড় বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে ওডিসিয়াসের আর সেই বন্ধুত্বের স্মৃতিচিহ্নস্বরূপ ইফিটাস তাঁকে একটি বিশাল ধনুক দান করেন। ধনুকটি

    ওডিসিয়াস ট্রয়যুদ্ধ যাবার সময় না নিয়ে গিয়ে একটি রুদ্ধ গৃহে সযত্নে রেখে যান।

    রাণী পেনিলোপ সেই রুদ্ধ গৃহ হতে একটি বিরাট ধনুক, বিষাক্ত তীরে ভরা একটি তৃণ আর বারোটি লোহার আংটা নিয়ে এলেন পাণিপ্রার্থীদের সামনে। তাঁর সঙ্গে দাসীরা একটি বাক্স বয়ে নিয়ে এল। তার মধ্যে বিভিন্ন ধাতুর কতকগুলো অস্ত্র ছিল যেগুলো সাধারণত অস্ত্র প্রতিযোগিতায় ব্যবহৃত হয়। ধনুক তুলতে গিয়ে স্বামীর জন্য চোখে জল এল পেনিলোপের। তিনি পাণিপ্রার্থীদের বললেন, শুনুন মহাশয়গণ, আপনারা এ বাড়ির গৃহস্বামীর অবর্তমানে অনেককিছু ধ্বংস করেছেন। আজ তার অবসান ঘটানোর জন্য এ প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠান করছি আমি। আপনাদের মধ্যে যিনি এ ধনুকের ছিলায় শর সংযোজন করে এই বারোটি আংটার প্রত্যেকটির ভিতর দিয়ে সেই নিক্ষিপ্ত শরটিকে পার করতে পারবেন আমি তাকেই বরমালা দান করে এ প্রাসাদ ত্যাগ করে চলে যাব, যদিও যে বাড়ি একদিন আমায়, বধুরূপে বরণ করে নিয়েছিল সে বাড়ির কথা স্বপ্নেও ভুলতে পারব না আমি কখনো।

    এই বলে পেনিলোপ ইউমেয়াসকে ধনুকটি ও তীরগুলো পাণিপ্রার্থী মহাশয়দের কাছে নিয়ে যাবার আদেশ করলেন। ইউমেয়াস ধনুকটি হাতে ধরে কেঁদে ফেলল তার প্রিয় মনিবের শোকে। তা দেখে অ্যান্টিনোয়াস রেগে গিয়ে বলল, মাথামোটা বোকা হতভাগ্য কোথাকার! তোমাকে আর নাক গলাতে হবে না একাজে। তুমি আবার চোখের জল ফেলে তোমাদের রাণীর স্বামীর প্রতি শোককে বাড়িয়ে দিচ্ছ। কিন্তু এ ধরনের শরযোজনা করা সহজসাধ্য হবে না, কারণ ওডিসিয়াসের মত বলশালী লোক এখানে একজনও নেই। আমি যখন খুব ছোট ছিলাম তখন তাঁকে একবার দেখেছিলাম স্বচক্ষে।

    মুখে একথা বলতেও এক গোপন আশা ছিল অ্যান্টিনোয়াসের মনে। তার ধারণা ছিল একমাত্র সেই একাজ করে জয়ের গৌরব লাভ করবে। এমন সময় টেলিমেকাস সকলকে উদ্দেশ্য করে বলল, আচ্ছা আমি যদি নিজে এই ধনুকে শরযোজনা করে লক্ষ্য বিদ্ধ করতে পারি তাহলেও তো আমার মাতা অন্য কাউকে বিয়ে করে চলে যাবেন এবাড়ি থেকে। তাহলেও আমি আবার এই পিতার ক্রীড়া বস্তুকে নাড়াচাড়া করতে পারায় তুপ্তি অনুভব করব।

    তিন তিনবার সর্বশক্তি নিয়োগ করেও ধনুকটি ভালভাবে তুলে তার লোহার ছিলায় শরযোজনা করতে পারল না টেলিমেকাস। চতুর্থবার চেষ্টা করতে গেলে ওডিসিয়াস ইশারায় ঘাড় নেড়ে তাকে নিষেধ করলেন। তখন টেলিমেকাস বলল, আমি দেখছি এখনো ছেলেমানুষ রয়ে গেছি, নিজের শক্তি সম্বন্ধে আমার কোন ধারণা নেই। আপনারা আমার থেকে শক্তিমান। আপনারা নিশ্চয় পারবেন।

    এই বলে ধনুকটি মাটিতে নামিয়ে রাখল টেলিমেকাস। তারপর বসে পড়ল আপন আসনে। তখন অ্যান্টিনোয়াস প্রস্তাব করল, বাঁদিক থেকে শুরু করে উপবিষ্ট প্রতিটি পাণিপ্রার্থী একের পর এক করে চেষ্টা করে যাবে। একথা সকলেই মেনে নিল।

    বাদিকের প্রথমে ছিল ঈলোপপুত্র লিওডেস। কিন্তু সে উঠে ধনুকটি তুলে তাতে শরযোজনা করার আগেই ক্লান্ত হয়ে পড়ল তার অশক্ত ও অপটু হাত দুটি। সে তখন অন্যান্য পাণিপ্রার্থীদের বলল, আমি পারব না, এবার তোমরা চেষ্টা করো। তবে মনে হয় এ ধনুক অনেকেরই বুক ভেঙ্গে দেবে। এইভাবে পুরস্কারের লোভে দিনের পর দিন। আশার ছলনায় অতিবাহিত করার থেকে মৃত্যু ঢের ভাল। আমার মনে হয় ব্যর্থ পাণিপ্রার্থীরা অন্য কোন সুন্দরীকে বিবাহ করার চেষ্টা করবে এবং পেনিলোপও তাঁর মনোমত পূর্ব নির্দিষ্ট কোন লোককে বিবাহ করবে।

    লিওডেন ধনুকটি ছেড়ে দিলে অ্যান্টিনোয়াস রেগে গেল তার কথায়। বলল, তুমি নিজে না পারতে পার কিন্তু আর কেউ পারবে না একথা বললে কেন? এখানে এমন অনেকে আছে যারা একাজ করতে পারবে। মেলানথিয়াস, তুমি আগুন জ্বালিয়ে একটি পশমবস্ত্র গরম করো। সেই গরম কাপড় দিয়ে ধনুকটি ধরলে তা বাঁকিয়ে শরযোজনা করা সহজ হবে।

    মেলানথিয়াস তা করল একের পর এক করে পাণিপ্রার্থীরা চেষ্টা করতে লাগল। অ্যান্টিনোয়াস ও ইউরিমেকাস সব শেষে দেখবে। ইতিমধ্যে ফিলোতিয়াস এবং ইউমেয়াস প্রাসাদ থেকে চলে যেতেই ওডিসিয়াত তাদের পিছু পিছু গিয়ে তাদের দুজনকে ডেকে বললেন, আমার মনে হচ্ছে আমি তোমাদের আমার মনের কথা খুলে বলি। আচ্ছা, ওডিসিয়াসের সঙ্গে যদি এদের যুদ্ধ হয় তাহলে তোমরা কি ওডিসিয়াসের পক্ষ অবলম্বন করবে না পাণিপ্রার্থীদের পক্ষে যোগদান করবে?

    ফিলোতিয়াস ও ইউমেয়াস দুজনেই শপথ করে বলল, ভগবান যদি তাকে নিয়ে আসেন তাহলে দেখবেন আমরা কি করি। দেবতাদের কাছে আমাদের প্রার্থনা, আমাদের মনিব যেন ফিরে আসেন।

    তাদের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়ে ওডিসিয়াস বললেন, তবে জেনে রাখ, আমিই হচ্ছি ওডিসিয়াস, উনিশ বছর পরে ফিরে এসেছি। আমি দেখলাম, একমাত্র তোমরাই আমার প্রত্যাবর্তনে আনন্দিত। দেবতাদের কৃপায় আমি যদি এই দুবৃত্তদের দমন করতে পারি তাহলে তোমাদের দুজনকেই বিয়ে দিয়ে তোমাদের জন্য একটি করে ঘর করে দেব আর তোমাদের আমি টেলিমেকাসের ভাই বলে মনে করব।

    আমি যে ওডিসিয়াস তার এই দেখ প্রমাণ। আমি একবার একটি শূকরের দাঁতে আহত হই পার্ণের্সসের অরণ্য অঞ্চলে। এই বলে ওডিসিয়াস তাঁর জানুটি খুলে তাদের দেখাতেই তারা সেই ক্ষতস্থানটি দেখে চিনতে পারল। সঙ্গে সঙ্গে তারা ওডিসিয়াসের গলা জড়িয়ে ধরে তার কপালে চুম্বন করলো। সহসা নিজেকে সামলে নিয়ে ওডিসিয়াস বললেন, কেউ দেখে ফেলতে পারে আমাদের। এখন একে একে তোমরা প্রাসাদে যাবে, একসঙ্গে নয়। আমি আগে যাব। মনে হয় পাণিপ্রার্থীরা আমাকে ধনুক আর তীর ধরতে দেবে না। তা না দিলে ইউমেয়াস তুমি নিজে ধনুকটি আমাকে এনে দেবে আর বাড়ির দাসীদের বলে দেবে তারা কোন গোলমাল শুনে যেন বেরিয়ে না আসে। যে যেখানে আছে সেইখানেই যেন আপন আপন কাজে নিযুক্ত থাকে। শোন ফিলোতিয়াস, তুমি প্রাসাদের দরজাগুলো ভাল করে খিল দিয়ে এঁটে দেবে।

    এই কথা বলে প্রাসাদের মধ্যে চলে গেলেন ওডিসিয়াস। ইউমেয়াস ও ফিলোতিয়াস তারপর একে একে গেল। এদিকে তখন ইউরিমেকাসের পালা চলেছিল। ইউরিমেকাস কোনরকমে ধনুকটি আগুনের কাছে নিয়ে গিয়ে গরম করে তার লোহার ছিলায় শরযোজনা করার চেষ্টা করল। কিন্তু সেও অন্যদের মত না পেরে হাত থেকে

    সেটি ফেলে দিয়ে বলল, চুলোয় যাক। ব্যর্থ হলো আমাদের বিয়ের পরিকল্পনা। আমি শুধু নিজের জন্য ভাবছি। সুন্দরী নারীর অভাব নেই দেশে। কিন্তু ওডিসিয়াসের দেবোপম শক্তির তুলনায় আমাদের অযোগ্যতার কথা ভেবে চিরকাল ধরে লোকে ধিক্কার দেবে আমাদের।

    অ্যান্টিনোয়াস বলল, এটা তোমার ভুল ধারণা ইউরিমেকাস। আজ হচ্ছে তীরন্দাজ দেবতাদের সম্মানার্থে ছুটির দিন। আজ তার খাতিরে ধনুক স্পর্শ করতে নেই। আগামীকাল মেলানথিয়াসের অথবা বাছাই করা ছাগ বলি দিয়ে আমরা আবার চেষ্টা করব।

    একথা সকলেই মেনে নিল। ভৃত্যরা এসে পাণিপ্রার্থীদর হাতে জল দিয়ে অঞ্জলি দেবার জন্য মদের পাত্র দিয়ে গেল সকলের হাতে। দেবতাদের উদ্দেশ্যে তাদের অঞ্জলি প্রদান হয়ে গেলে ওডিসিয়াস বললেন, আমার একটা কথা শুনুন ও ভদ্রমহোদয়গণ, আমি আপনাদের কাছে বিশেষ করে অ্যান্টিবোয়াস ও ইউরিমেকাসের কাছে একটা অনুগ্ৰহ ভিক্ষা করছি। কারণ ওরাই অ্যাপোলোর সম্মানার্থে আজকের মত প্রতিযোগিতার কাজ বন্ধ করতে চান। আমি বলছিলাম কি আমাকে একবার ধনুকটির মাধ্যমে আমার শক্তি পরীক্ষার সুযোগ দিন।

    ওডিসিয়াসের অনুরোধ শুনে সবচেয়ে রেগে গেল অ্যান্টিনোয়াস। সে বলল, তুমি মহামারীতে মর। তোমার কি জ্ঞানবুদ্ধি কখনো হবে না? তুমি বড় বড় সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিদের পাশে বসে ভোজসভায় খাচ্ছ, তাতেও তোমার সাধ মিটছে না? বুঝেছি, মাত্রা রেখে মদ খেতে পার না বলে মদের নেশায় মাথার ঠিক থাকে না তোমার। কিন্তু ইউরিতিয়নের কথা মনে আছে তো? রাজা পিয়েরিথোয়াসের বাড়িতে গিয়ে একবার ইউরিতয়ন মাতলামি করার জন্য রাজা তার নাক কেটে তাকে তাড়িয়ে দেন। তোমাকেও আমরা তাই করব। তোমাকে আমরা এদেশে কোথাও জায়গা দেব না। একেবারে কালো জাহাজে করে নরখাদকদের রাজা একেটাসের কাছে পাঠিয়ে দেব যার কবল থেকে কেউ কোনদিন রক্ষা করতে পারবে না তোমায়।

    কিন্তু বুদ্ধিমতী পেনিলোপ তখন বললেন, অ্যান্টিনোয়াস, টেলিমেকাসের কোন অতিথিকে এ ধরনের কথা বলে শালীনতার পরিচয় দাও নি। তুমি কি ভাব, এই ভদ্রলোকটি ওডিসিয়াসের ধনুকটি বাঁকিয়ে ছিলায় শরযোজনা করতে পারলেই সে আমাকে বিয়ে করে নিয়ে যাবে? তিনি নিজে একথা মনে করেন আমি তা বিশ্বাস করি না।

    ইউরিমেকাস বিতর্কে যোগদান করে বলল, এই লোকটি বুদ্ধিমতী পেনিলোপের পাণিগ্রহণ করবে সে ভয় আমরা করি না। সেকথা অবান্তর। আমরা শুধু ভাবছি সম্ভাব্য দুর্নামের কথা। লোকে বলবে যার স্ত্রীর পাণিগ্রহণ করতে গিয়েছিলে তার সমকক্ষ নয় তারা। অথচ একটা অচেনা ভবঘুরে অনায়াসে লক্ষ্যবিদ্ধ করল।

    পেনিলোপ উত্তর দিলেন, ইউরিমেকাস, যারা কোন এক রাজপুত্রের অন্ন ধ্বংস করে বেঁচে থাকে তারা পরের নিন্দাও সহ্য করতে পারবে। ভদ্রলোকের চেহারা দেখে মনে হয় উনি উচ্চবংশোদ্ভূত। অ্যাপোলোর কৃপায় উনি যদি একাজ করতে পারেন তাহলে ওঁকে আমি উত্তম পোশাক, চটি ও দেহবন্ধনী উপহার দেব। ওঁকে একটি তরবারি ও বর্শা দান কর। তারপর উনি যেখানে যেতে চান পাঠিয়ে দেব।

    টেলিমেকাস বলল, ধনুকের কথা যদি বল তাহলে তাতে আমার সম্পূর্ণ অধিকার। সে ধনুক আমি কাকে দেব না দেব সে সিদ্ধান্ত নেব আমি এবং তা সকলকে মেনে চলতে হবে। সুতরাং তোমরা আপন আপন ঘরে গিয়ে কাজ করগে।

    পুত্রের তিরস্কারবাক্য শুনে পরিচারিকাদের সঙ্গে উপরতলায় নিজের ঘরে চলে গেলেন রাণী পেনিলোপ। এদিকে টেলিমেকাসের নির্দেশে সেই ধনুকটি ইউমেয়াস ওডিসিয়াসের কাছে বয়ে নিয়ে যেতে লাগল। তা দেখে পাণিপ্রার্থীদের একজন বলল, শূয়োর চরাও গে যাও। ধনুকটি কোথায় মরতে নিয়ে যাচ্ছ? যদি সুযোগ পাই তোমাকে তোমারই কুকুর দিয়ে ছিঁড়ে খাওয়াব।

    তাদের গালাগালিতে হতবুদ্ধি হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ল ইউমেয়াস আর তার হাত থেকে ধনুকটি পড়ে গেল। তখন ঘরের একপ্রান্ত হতে টেলিমেকাস তীক্ষ্ণ কণ্ঠে চিৎকার করে উঠল, দাঁড়িয়ে কেন, যাও বলছি। না গেলে জানব তুমি আমাদের আদেশ পালন করছ না। তাহলে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলব তোমাকে। আমার পেশীগুলো যদি লোহার মত শক্ত হয় তাহলে যারা ঘরে বসে আমারই বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে তার সব তাড়িয়ে দিতাম।

    টেলিমেকাসের এই আবেগপ্রবণ কথাগুলো হেসে উড়িয়ে দিল পাণিপ্রার্থীর দল। সে হাসিতে তাদের সব রাগ উবে গেল। ইউমেয়াস তখন ধনুকটি ওডিসিয়াসের কাছে বয়ে নিয়ে গেল। তারপর সে ইউরিক্লীয়ার কাছে গিয়ে গোপনে বলল, টেলিমেকাসের আদেশে মেয়েদের ঘরের দরজাগুলো সব তালা বদ্ধ করে দাও। তারা যেন কোনো গোলমাল শুনে বেরিয়ে না আসে, যে যেখানে আছে সে যেন সেখানেই থাকে।

    ভীত হয়ে পড়লেও সে আদেশ পালন করল প্রধানা দাসী ইউরিক্লীয়া। এদিকে ফিলোতিয়াস সকলের অলক্ষ্যে ঘর থেকে বেরিয়ে গিয়ে প্রাসাদের বাইরে যাবার দরজাগুলো ভাল করে বন্ধ করে দিল জাহাজ বাধার শিকল দিয়ে যাতে কেউ চেষ্টা করলেও যেতে না পারে।

    ওডিসিয়াস এবার ধনুকটি হাতে নিয়ে পরীক্ষা করে দেখতে লাগলেন সেটি আগের মত আছে কি না। তা দেখে পাণিপ্রার্থীরা উপহাস করতে লাগল, ও ধনুর্বিদা শিখেছে পথে ঘুরতে ঘুরতে। ধনুকটি বোধ হয় বাড়ি নিয়ে যাবে। বীণাবাদনের আগে কোন বীণাবাদক যেমন বীণার তারগুলো পরীক্ষা করে নেয় তেমনি কারো কোন উপহাসে কান না দিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় ধনুকটি পরীক্ষা করে সেটিকে অনায়াসে বাঁকিয়ে তাতে ছিলাটি পরিয়ে দিলেন। সে দৃশ্য দেখে বিবর্ণ হয়ে গেল পাণিপ্রার্থীদের মুখগুলো। সহসা সুলক্ষণসূচক জিয়াস সৃষ্ট এক বজ্রগর্জন শুনে ওডিসিয়াসের অন্তরটি আনন্দে উল্লসিত হয়ে উঠল।

    সামনের টেবিলে একটি তীর নামানো ছিল। বাকি তীর ছিল তূণে। সেই তীরটি টেবিল থেকে তুলে নিয়ে তা ধনুকে সংযোজিত করে নিক্ষেপ করতে তা বারোটা আংটা পার হয়ে গেল, একটিতেও ভ্রষ্ট হলো না। তখন ওডিসিয়াস টেলিমেকাসকে বললেন, তোমার অতিথি তাহলে তোমায় অপমান করে নি টেলিমেকাস। এখন দেখছি আর শক্তি অবিকৃতই আছে। পাণিপ্রার্থীরা বৃথাই আমাকে হীন ভেবেছিল। কিন্তু এবার বোধ হয় নৈশভোজনের সময় হয়েছে। এরপর নৃত্যগীতাদি শুরু হবে যা না হলে কোন ভোজসভাই সার্থকতা লাভ করতে পারে না।

    এমন সময় ওডিসিয়াস ঘাড় নেড়ে টেলিমেকাসকে ইশারা করতেই সে কাঁধে তরবারি ঝুলিয়ে, হাতে বর্শা নিয়ে তার পিতার আসনের পাশে গিয়ে দাঁড়াল। ব্রোঞ্জের বর্মটি চকচক করছিল তার গায়ে।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleপ্রেমের প্রান্তে পরাশর – প্রেমেন্দ্র মিত্র
    Next Article ইলিয়াড – হোমার

    Related Articles

    পার্থ সারথী দাস

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025
    পার্থ সারথী দাস

    ইলিয়াড – হোমার

    September 12, 2025
    পার্থ সারথী দাস

    ওডিসি – হোমার

    September 12, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025
    Our Picks

    ইলিয়াড – হোমার

    October 13, 2025

    ওডিসি – হোমার

    October 13, 2025

    প্রেমের প্রান্তে পরাশর – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    October 13, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }