কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.২৮
২৮
প্রিয়নাথ মল্লিক রোডের সমস্ত বাড়িটার ভেতরে তখন যেন তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। সনাতনবাবুরও তখন খাওয়া-দাওয়া হয়নি। সকাল থেকেই শুরু হয়েছিল। ব্যাঙ্কে কয়েকবার ফোন করেছিলেন সনাতনবাবু। মা-মণি নিজেও আর স্থির থাকতে পারেন নি। আসলে কিন্তু তিনি স্থির থাকবারই লোক। সহজে বিচলিত হলে তাঁর চলে না। বিচলিত হলে এতদিন চালাতেও পারতেন না। শেষকালের দিকে যখন সনাতনবাবুর সঙ্গে মিটমাট হযনি, তখনই এসেছিল নির্মল পালিত! ক্যাথিড্রাল মিশনারি স্কুলের ফার্স্ট বয় নির্মল পালিত। ব্যারিস্টার পালিত ভবিষ্যতের দিকে চেয়েই তাকে কালীঘাট স্কুল থেকে ছাড়িয়ে ভালো স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন ছেলে মানুষ হবে। মানুষই হয়েছিল সে। কোনও রকম নেশা করেনি, কোনও রকম বখেয়াল ছিল না তার। শুধু চিনেছিল টাকা। সযত্নে টাকা উপায় করতে শিখেছিল। কোর্টে টাকা উপায় করা শক্ত হলে কি হবে? ইচ্ছে থাকলে টাকা উপায় করার অনেক পথ আছে। কতরকম ভাবে টাকা উপায় করা যায়। টাকা উপায়ের ব্যাপারে সৎ-অসৎ ভাবতে নেই। টাকা হলো লক্ষ্মী। লক্ষ্মী রাস্তার নর্দমায় পড়ে থাকলেও অপবিত্র হয় না। সেখান থেকে লক্ষ্মীকে কুড়িয়ে এনে সিন্দুকে পুরতে হয়। ব্যারিস্টার পালিত সত্যি-সত্যিই ছেলেকে সৎ-স্কুলে পড়িয়ে প্রকৃত সৎ শিক্ষাই দিয়ে গিয়েছিলেন।
সকাল বেলাই ব্যাঙ্ক থেকে লোক এসে গিয়েছিল। থানার পুলিসও এসে গিয়েছিল।
সনাতনবাবু বললেন—দেখুন, টাকা-কড়ির ব্যাপার আমি তো কিছুই দেখতাম না— আমার মা-মণিই সব করতেন—
—কিন্তু চেক তো আপনিই কাটতেন?
সনাতনবাবু বললেন—আমি আগে কাটতাম পরে মা-মণি পাওয়ার-অব্ অ্যাটর্নী দিয়েছিলেন নির্মল পালিত বাবুকে—তিনিই আমাদের প্রপার্টির ব্যাপারটা দেখতেন—
—কিন্তু তিনি তো আউট-সাইডার, তাঁকে প্রপার্টির ব্যাপারে কেন এত ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল?
এ-কথার উত্তর দিতে গেলে অনেক কথাই বলতে হয়। অনেক অতীত ইতিহাস। বলতে হয় সনাতনবাবুর বিয়ের কাহিনী। বলতে হয় সতীর কাহিনী। বলতে হয় সতীর বোন লক্ষ্মীর কথা। আরো বলতে হয় ট্রেড-ডিপ্রেশনের কথা। মা-মণির বিধবা হওয়ার কথা। বলতে হয় টাকার বিচিত্র গতির কথা। বলতে হয় সমস্তই। এই শিরীষ ঘোষের হঠাৎ পাওয়া টাকার উৎপত্তির সেই বিচিত্র কাহিনীটাও বলতে হয়। সেই টাকার গন্ধে কেমন করে নির্মল পালিত আকৃষ্ট হলো, তাও বলতে হয়। সনাতনবাবুর সঙ্গে মা-মণির সম্পর্কের বিচিত্র দিকটার কথাও বলতে হয়। অত বলতে পারবে কে? সনাতনবাবু ও- সব নিয়ে মাথাও ঘামাননি কখনও। ব্যাঙ্কের ম্যানেজার নিজের কাজ-কর্ম সেরে এক সময়ে চলে গেলেন। তখন রইল পুলিস ইনস্পেক্টর। ভবানীপুর থানার দারোগা।
ইনস্পেক্টর বললেন—নির্মল পালিত সম্বন্ধেও আমি ইনকোয়ারী করেছি। কেউ জানে না তিনি কোথায় গেছেন—আমরা বম্বে, ম্যাড্রাস, দিল্লি সব জায়গায় ওয়্যার করে দিয়েছি—
মা-মণি বললেন—পাঁচ লক্ষ টাকার আমি কোনও হদিস পাচ্ছি না, কলকাতার স্থাবর প্রপার্টির একটা টাকাও আমার ব্যাঙ্কে জমা হয়নি দেখছি—
—কিন্তু আপনার ছেলে থাকতে,—আর এতবড় উপযুক্ত ছেলে থাকতে, তাকে পাওয়ার-অব অ্যাটর্নী দিলেন না কেন?
মা-মণি বললেন—সে অনেক দুঃখের কথা, আমার নিজের পেটের ছেলে হলে কী হবে—ছেলে যে আমার বাধ্য নয়—
—আপনি নিজের ছেলেকেও বিশ্বাস করেন না?
সনাতনবাবু পাশে বসেছিলেন। বললেন—এ-সব জানলে কি আপনার একোয়ারীতে সুবিধে হবে?
মা-মণি ধমকে দিলেন। বললেন—তুমি থামো খোকা, আমাকে বলতে দাও—
ইন্সপেক্টর বললেন—না না, আপনিই বলুন মিস্টার ঘোষ, আমি আপনার কাছেই শুনতে চাই—বড় অদ্ভূত তো আপনাদের রিলেশন্স্—এক বাড়িতে ছেলে-মা’র এ-রকম রিলেশন বড় কুইয়ার!
মা-মণি বললেন—আসলে বাবা, আমার ছেলেও এর জন্য দায়ী নয়, দায়ী আমার কপাল। এই ছেলেকে আমি কী করে মানুষ করেছি তা আমিই জানি। টাকা থাকলেও ছেলে মানুষ করা যায় না। আমি কারোর সঙ্গে ছেলেকে মিশতে দিইনি। ছোটবেলা থেকে কোনও বসঙ্গীদের ছোঁয়াচ লাগতে দিইনি ছেলের গায়ে, বাড়িতে এসে মাস্টার পড়িয়ে গেছে, ইস্কুলে পর্যন্ত পড়তে দিইনি, পাছে ছেলে খারাপ হয়ে যায়। বাড়িতেই সারাদিন কাটিয়েছে, দিনরাত আমার নিজের কাছেই রেখেছি ওকে। রাত্রে আমার পাশেই শুয়েছে। সেই ছেলেকে আজকে পর করে দিলে আমার বউ—
—কোথায়? আপনার পুত্রবধূ কোথায়?
সনাতনবাবু থামিয়ে দিলেন। বললেন—তুমি থামো না মা-মণি—ব্যাঙ্কের ব্যাপারটা হচ্ছে, সেই কথাটাই বলো আগে—
মা-মণিও গলা বাড়িয়ে দিলেন। বললেন—কেন? কেন ব্যাঙ্কের ব্যাপারটা হলো? কেন তুমি থাকতে আমার এমন সর্বনাশ হলো সেটাই আমাকে আগে বলতে দাও—! টাকা আমি কার জন্যে রেখেছিলুম? টাকা আমার সঙ্গে যাবে? টাকা নিয়ে আমি স্বর্গে যাবো? টাকা আমায় পরকালে মুক্তি দেবে? টাকা লোকে কীসের জন্যে চায়? ছেলে- মেয়ে-বউ-জামাই, এদের জন্যেই তো টাকা! আর কীসের জন্যে? তুমি আমার পেটের ছেলে হয়ে আমাকে সেই সুখ দিয়েছ? বুকে হাত দিয়ে বলো তো তুমি? দিয়েছি?
সনাতনবাবু কী বলবেন বুঝতে পারছেন না। পুলিস ইন্সপেক্টরের সামনে এ-সব কথা হওয়া পছন্দ হচ্ছিল না তাঁর।
মা-মণি বলতে লাগলেন—যা আমি জীবনে কখনও কল্পনা করিনি, আমার কপালে শেষে তাই ঘটলো! আমার আর কী? আমি আর ক’দিন? আমি তো গঙ্গামুখো পা করেই আছি। আমার তো আজ-কালের ব্যাপার। কিন্তু তোমার জন্যেই তো টাকা রাখতে চেয়েছিলাম। তোমার যাতে কোনও কষ্ট না হয়, সেই জন্যেই তো এই বাড়ি, গাড়ি, সম্পত্তি সব করা। তুমি ছাড়া আমার আর কে আছে তিন কুলে?
সনাতনবাবুর আর বেশিক্ষণ সহ্য হলো না। তিনি ইস্পেক্টরের দিকে ফিরে বললেন—ও-সব কথা থাক্, মিস্টার পালিতকে আরেস্ট করার জন্যে আপনারা আর কী স্টেপ নিয়েছেন?
ইস্পেক্টর বললেন—এখন ইনভেস্টিগেশন চলছে, আশা করছি বেশি দিন লাগবে না—খবর পেয়েছি তিনি মিসেস পালিতকে নিয়ে গেছেন—
—মিসেস পালিত?
—হ্যাঁ, মিসেস পালিতকে তিনি বিয়ে করেছিলেন প্রচুর টাকা নিয়ে। তাঁর শ্বশুর বাড়িতে গিয়েও কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। কেউ জানে না তাঁদের মুমেন্ট।
—তাঁদের ছেলে-মেয়ে?
ইন্সপেক্টর বললেন—ছেলে-মেয়ে কিছু হয়নি তাঁদের এখনও—
—কিন্তু কোথায় যেতে পারেন তাঁরা? কোথায়ই বা যাওয়া সম্ভব?
সেটা জানলে কি নির্মল পালিতকে পুলিসে ধরতে পারতো না এখনও? নির্মল পালিত ক্লেভার লোক। তার ওপর ক্লেভার ব্যারিস্টার। কোর্টে কিছু না-হলেও টাকার যুগের প্রতিভূ। টাকা উপায় করতে জানে সে, টাকা সরাতেও জানে। সারা জীবনে সে যে-টাকা উপায় করতে পারতো, সেই সমস্ত টাকাটাই সে এই ঘোষ-বাড়ি থেকে সরিয়ে নিয়ে গেছে। কত যে নিয়ে গেছে আর কত যে নেয়নি—তারও হিসেব নেই হয়ত নয়নরঞ্জিনী দাসীর। নয়নরঞ্জিনী দাসী নিজে তন্ন তন্ন করে ব্যাঙ্কের কাগজপত্র স্থাবর সম্পত্তির দলিল-দস্তাবেজ সব বার করেছেন। কিছুই তিনি বুঝতে পারেন নি। কোন্ দলিলটা কখন নির্মল পালিত চেয়েছিল, আবার কখন ফিরিয়ে দিয়েছিল, তারও তো তিনি হিসেব রাখতেন না। কখন কোন্টাতে সই করতে বলেছিল, তারও খেয়াল নেই তাঁর।
—তা সবসুদ্ধ কত টাকার মত হবে মনে হচ্ছে আপনার?
মা-মণি বললেন—তা বিশ-তিরিশ লাখ টাকার মত হবে বলে মনে হচ্ছে, ক্যাশ টাকা কিছুই তো আর নেই আমার—বাকি যা আছে তা জুয়েলারী আর এই বাড়ি, তা এই বাড়িটার দলিলও খুঁজে পাচ্ছি না—এ বাড়িটার যে কী হয়েছে তাও জানি না।
—আর জমি-জমা?
—জমি-জমা সুন্দরবন অঞ্চলে যা ছিল, সব তো আগেই বিক্রী করে ক্যাশ করে নিয়েছিলাম। জমি-জমা তো আর কিছু ছিল না। আমার নিজের সিন্দুকে আমার কয়েকশো ভরি গয়না আর ছেলে বউ-এর গয়নাই এখন আমার ভরসা—
সনাতনবাবু জিজ্ঞেস করলেন—ইনভেস্টিগেশন শেষ হতে কত দিন লাগবে আন্দাজ?
ইন্সপেক্টর বললেন—তা কি বলা যায়! মিস্টার পালিত তো বোকা লোক নন, চারদিক আট-ঘাট বেঁধেই কাজ করেছেন তিনি—আমরা তাঁর হরিশ মুখার্জি রোডের বাড়ির সামনেও ওয়াচ্ রেখেছি—
—বাড়িতে তাঁর কে আছে আর?
ইস্পেক্টর বললেন—বাড়িতে কেউ-ই নেই, এক বোন ছিল, ব্যারিস্টার পালিত তার বিয়ে আগেই দিয়ে গিয়েছিল, এখন বাড়িতে থাকবার মধ্যে কেবল হাজব্যান্ড আর ওয়াইফ—তা তারা দুজনেই মিসিং—। এখানে যে ব্যাঙ্কে তাঁর একাউন্ট্ ছিল, তাও ক্লোজ করে দিয়ে গেছেন—
সমস্ত লেখাপড়া শেষ করে ইন্সপেক্টর উঠলেন। মা-মণি বললেন—তা আমার টাকা আমি ফেরত পাবো তো?
—নিশ্চয় পাবেন! এত টাকা তো এত তাড়াতাড়ি আর তছ-নছ করে ফেরতে পারবে না। কালপ্রিট্ ধরা পড়লে কনভিকশন হলেই সব উসুল করা হবে। আর টাকা যদি নষ্টও করে ফেলে তো পালিতের বাড়ি তো রয়েছে। বাড়ির প্রপার্টিও তো বিক্রি করে টাকা উসুল করা যেতে পারে। আপনি কিছু ভাববেন না। এখনও তো ব্রিটিশ গভর্নমেন্টের রাজত্ব—
মা-মণি বললেন—তা ব্রিটিশ গভর্নমেন্টই কি আর বেশি দিন থাকবে বাবা? আমার তো বড় ভয় করে!
—থাকবে না মানে! আপনি বলছেন কি? ওই গান্ধী আর নেহরুর কথা ছেড়ে দিন, জাপান জার্মানীর বড় বড় মহারথীরাই কাবু করতে পারছে না। পেছনে আমেরিকার রুজভেল্ট রয়েছে কী করতে?
হঠাৎ সরকারবাবু দৌড়তে দৌড়তে এল। বললে—টেলিফোন এসেছে মা-মণি! মা-মণি বললেন—টেলিফোন? কার টেলিফোন? ব্যাঙ্ক থেকে?
ইন্সপেক্টর বললেন—ও আমার টেলিফোন, থানা থেকে আসছে হয়ত— নিজে গিয়ে টেলিফোন ধরলেন ইন্সপেক্টর। তারপর ফিরে বললেন—না, আমার নয়, সনাতনবাবুর—
মা-মণি একটু আশ্চর্য হলেন। বললেন—খোকাকে আবার কে টেলিফোন করছে? সনাতনবাবু নিজেও বুঝতে পারলেন না। তাঁকে আবার কে টেলিফোন করবে। তাঁর তো পৃথিবীর কারো সঙ্গেই কোনও সম্পর্ক নেই। তাড়াতাড়ি গিয়ে রিসিভারটা ধরলেন। বললেন–কে?
ওধার থেকে উত্তর এল—আমি দীপঙ্কর, আপনাকে বিপদে পড়েই টেলিফোন করছি, আপনি একবার শিঘ্রি এখানে চলে আসতে পারেন? সতী হঠাৎ পড়ে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছে—এখন হস্পিটালে রয়েছে, আপনি এলে একবার ভাল হয়—
মা-মণি বাধা দিয়ে বলেন—কার সঙ্গে কথা বলছো খোকা! কে টেলিফোন করছে?
সনাতনবাবু সে-কথার উত্তর না দিয়ে বললেন—কেন? হঠাৎ পড়ে গেল কেন? কোনও সিরীয়াস অসুখ হলো নাকি? ব্লাড-প্রেশার? এখন কেমন আছে? আপনি বলুন আমি এখখুনি যাচ্ছি—কোথায় আপনার আপিসটা?
অনেক কথাই বলে যাচ্ছিলেন সনাতনবাবু। মা-মণি আবার বাধা দিয়ে বললেন- কে? কার সঙ্গে কথা বলছো? কে অজ্ঞান হয়ে গেছে শুনি? কার আপিস!
সনাতনবাবু টেলিফোনটা ছেড়ে দিয়ে বললেন—আমি এখুনি যাচ্ছি, ওদিকে সর্বনাশ হয়ে গেছে—
—কী হয়েছে আগে তাই বলো না? অজ্ঞান হয়েছে? বৌমা? বৌমাকে আনতে যাচ্ছো তুমি?
—সনাতনবাবু বললেন—হ্যাঁ—
—কেন আনছো তাকে? পড়ে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে গেছে বলে তাকে বাড়িতে আনতে হবে? আব্দার তো মন্দ নয়? কীসের দায় আমাদের তাকে আনবার জন্যে? টেলিফোন করছিল এখন?
সনাতনবাবু বললেন—দীপঙ্করবাবু, তিনি বড় ভয় পেয়ে গেছেন কি না—
—তা দীপঙ্করবাবুর যদি অত জ্বালা তো তিনি নিজেই তো সামলাতে পারতেন। তোমাকে আবার সোহাগ করে টেলিফোন করা কেন? আমরা কি ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ খাইয়ে ভালো করে তুলবো ভেবেছে? এত কানে-কানে ফুস-মন্তর দিয়েও আশা মিটলো না, এখন টেলিফোনে ফুস-মন্তর দেওয়া হচ্ছে আবার! না, আনতে হবে না—
সনাতনবাবু বললেন—মা, তার যে শরীর খারাপ, অজ্ঞান হয়ে হাসপাতালে পড়ে আছে, দেখবার কেউ নেই।
—আছে আছে, দেখবার লোক যথেষ্ট আছে। ও-সব মেয়েদের সেবা করবার লোকের অভাব হয় না। খবরদার বলছি এখানে ও-মেয়েকে আনতে পারবে না।
সনাতনবাবু কিছুক্ষণ কী ভাবলেন। বললেন—কিন্তু মা, আমি আনতে যাবোই।
—এনে কোথায় তুলবে?
—আমাদের এই বাড়িতে!
মা-মণি বললেন—তবে যাও, কিন্তু আমিও বলে রাখছি তাহলে আমার এ-মুখ আর দেখতে পাবে না—
সনাতনবাবু বললেন—তবু আমি আনবো—
বলে সনাতনবাবু আর দাঁড়ালেন না। শম্ভু তাড়াতাড়ি পেছন নিলে। কোথায় রাস্তা, কোথায় ট্যাক্সি পাওয়া যায়, কোন্ দিকে হাসপাতাল, কোনদিকে দীপঙ্করবাবুর আপিস, কিছুই তার জানা নেই। দীপঙ্কর সব বলে দিয়েছিল টেলিফোনে। তবু মানুষটাকে একা ছাড়া উচিত নয়।