কড়ি দিয়ে কিনলাম ২.৩২
৩২
আজ প্রথম ডি-টি-এস্’ এর চাকরি। ছিটের মত বহু লোক এসে এসে ফিরে গেল। বহু গুজরাটি, মারোয়াড়ী, ভাটিয়া, বাঙালি সবাই। সকলেরই ওয়াগন চাই। সকলেরই প্রফিট্ চাই, সকলেরই ডিভিভেন্ড চাই। ঘোষাল-সাহেব ধরা পড়াতে কেউ খুশী নয়। আস্তে আস্তে আপিস পালা হয়ে এল। নিঃশব্দ হয়ে এল। দীপঙ্করের মনে হলো ছিটে- ফোঁটাকে দোষ দিয়েই বা লাভ কী? একলা ছিটে-ফোঁটাদেরই বা কী দোষ? সারা পৃথিবীটাই যেন ছিটে-ফোঁটাতে ভরে গেছে। ওই চার্চিল, রুজভেল্ট্, হিটলার, বিড়লা, গোয়েঙ্কা, ছিটে-ফোঁটা সব একাকার হয়ে গেছে এই যুদ্ধে! কেউ আফ্রিকা চায়, কেউ ড্যানজিগ্ চায়, কেউ সিঙ্গাপুর চায়, কেউ ওয়াগন চায়, কেউ আবার ইন্ডিয়ার ইন্ডিপেন্ডন্স চায়। সবারই সেই এক লক্ষ্য—ইন্টারেস্ট, প্রফিট্ ডিভিডেন্ড!
—কে?
টেলিফোনটা বাজতেই দীপঙ্কর রিসিভারটা তুলে নিলে। মেয়েলী গলা। মিহি মিস্টি সুর। লক্ষ্মীদির অবস্থা ভালো হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গলাটাও যেন আরো মিস্টি হয়ে গেছে।
—অনেক দিন আসিস্ নি। কী খবর?
দীপঙ্কর বললে—খুব ব্যস্ত ছিলাম লক্ষ্মীদি, একদিন তোমাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম, তুমি তখন ঘুমোচ্ছিলে। তোমার বাবার খবরটা দিতে গিয়েছিলুম। তুমি শুনেছ বোধহয় সব! বর্মা থেকে চলে আসবার সময় বোমা পড়ে জাহাজটা ডুবে গিয়েছিল।
লক্ষ্মীদি একটু দুঃখ পাবে মনে হয়েছিল। কিন্তু সে-সব কিছুই বললে না। শুধু বললে —শুনেছি, কিন্তু বাবার প্রপার্টি টাকা-কড়ি, সে-সব কোথায় গেল, তুই জানিস্ কিছু? কলকাতার ব্যাঙ্কে বাবার টাকা কিছু ছিল নাকি?
আশ্চর্য, এ-কথাটা তো দীপঙ্করের মনে আসেনি। লক্ষ্মীদি বললে—এখানকার ব্যাঙ্কে খোঁজ নিয়ে দেখবো?
দীপঙ্কর বললে—তা দেখতে পারো।
—আর সেখানকার প্রপার্টি যা-কিছু ছিল, তা কি আর পাওয়ার কিছু আশা আছে বলতে পারিস? সে-সব তো জাপানীরাই নিয়ে নেবে বোধহয় শেষকালে—না কি? আর এখানকার ব্যাঙ্কের টাকা নিতে গেলেও সাক্সেসান সার্টিফিকেট চাই! আমি আর সতী—এই দু’জনেই তো পাবো! সতী কি বলছে?
দীপঙ্কর বললে—সতী এখনও খবরটা জানে না—সতীকে খবরটা বলবার এখনও সময় পাইনি—
লক্ষ্মীদি বললে—তাহলে তো খুব মুকিল হলো, আমি যে আবার কাল দিল্লি চলে যাচ্ছি—সুধাংশু প্রমোশন পেয়ে ট্রান্সফার হয়ে যাচ্ছে, সেই সঙ্গে আমরাও যাচ্ছি। সেই খবরটা বলতেই তো তোকে টেলিফোনটা করা—
দীপঙ্কর বললে—তোমার এ বাড়িতে কে থাকবে তাহলে?
লক্ষ্মীদি বললে—কে আর থাকবে? কেউ না। যদি কখনও আসি তো এখানেই এসে উঠবো।
—তাহলে একটা কাজ করবে লক্ষ্মীদি! বাড়িটা তো তোমাদের পড়েই থাকছে— একজনকে থাকতে দেবে?
—কে?
দীপঙ্কর বললে—সতী!
লক্ষ্মীদি অবাক হয়ে গেল। বললে–কেন? সতী থাকবে কেন? এতদিন সতী কোথায় ছিল? সে তো তোদের আপিসে চাকরিতে ঢুকেছিল বলেছিলি—হঠাৎ তার থাকবার জায়গার অভাব হলো কেন? তার কী হয়েছে?
দীপঙ্কর বললে-সে অনেক কথা। সব কথা পরে শুনো। তুমি শুধু বলো তাকে থাকতে দেবে কিনা।
—আরে, থাকতে দেব না কেন? সে থাকলে তো ভালোই। বাড়িটা তো এমনি পড়েই থাকবে, তবু সে থাকলে একটু দেখাশোনা করতে পারবে। বাড়িটাও ভালো থাকবে। আমি তো ঠিক করেছিলাম বাড়িটায় তালা-চাবি বন্ধ করে চলে যাবো। কিন্তু আমরা তো কাল সকালের প্লেনেই যাবো, আমার প্লেন ছাড়বে সকাল সাড়ে ছ’টায়—
দীপঙ্কর বললে-আমি যদি আজ এখনি সতীকে নিয়ে তোমার বাড়িতে যাই? –নিয়ে আয় না, তুই নিয়ে আয় তাকে, যাবার আগে দেখা হলে তো ভালোই হবে, আর সঙ্গে সঙ্গে ওই কথাটাও হয়ে যাবে!
—কোন্ কথাটা?
—ওই ব্যাঙ্কে বাবার টাকার কথাটা। বাবার টাকাটা তো আধাআধি দুভাগ হবে! সে-কথার কোনও উত্তর না দিয়ে দীপঙ্কর বললে—তাহলে আমি সতীকে নিয়ে এখনি যাচ্ছি তোমার বাড়িতে—
সে কোথায় আছে এখন?
—হাসপাতালে।
—হাসপাতালে কেন?
দীপঙ্কর বললে—সে অনেক কথা। তোমার বাড়িতে গিয়ে বলবো সব। এ ক’দিনে অনেক কান্ড ঘটে গেছে—
তাড়াতাড়ি রিসিভারটা রেখেই উঠলো দীপঙ্কর। মধু ঘরে এল। মিস্টার ঘোষালের সঙ্গে সঙ্গে দ্বিজপদও নেই। দ্বিজপদকেও সাসপেন্ড করে দিয়েছে মিস্টার ক্রফোর্ড। মধু বললে—আপনি উঠছেন হুজুর?
দীপঙ্করের কথা বলবার সময় ছিল না তখন আর। সময় থাকার সময় ফুরিয়ে যেতে আরম্ভ করেছে পৃথিবীতে। আগে সময় ছিল মানুষের। ধীরে সুস্থে আস্তে আস্তে ঘুরতো পৃথিবীটা। আস্তে আস্তে সূর্য উঠতো, আস্তে আস্তে সূর্য ডুবতো। এখন একটা ওয়াগন পেতে যদি একদিন দেরি হয়ে যায় তো এক হাজার টাকার লোকসান। এক হাজার টাকার লোকসান হলে তার ইন্টারেস্ট কত হিসেব করো। লাভ-লোকসান কষে ব্যালেন্স শীট তৈরি করো—দেখবে সেই এক হাজার টাকা দশ বছরে দশ হাজারে গিয়ে দাঁড়াবে! তখন ইন্টারেস্ট কম্পাউন্ড-ইন্টারেস্ট কষে দেখলে জীবনটাই ফাঁকা মনে হবে। মনে হবে বহু লোকসান হয়ে গেছে জীবনে। সে বুঝি ১৫৪৩ সালের কথা। পোলান্ডের এক গ্রামে কোপারনিকাস বলে একটি ছেলে জন্মেছিল। সেই ছেলেটিই বড় হলো একদিন। বড় হয়ে বললে—পৃথিবীটা সূর্যের চারদিকে ঘুরছে। তারপর সেই কথাটাই নতুন করে বললে আবার জোহানেস কেপলার। তারপর একশ বছর পরে ১৬৪২ সালে গ্যালিলিও গ্যালিলি আবার সেই কথারই পুনরাবৃত্তি করলে। আর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ব্যস্ততা বেড়ে গেল। সূর্য উঠতে শুরু করলো তাড়াতাড়ি, সূর্য ডুবতেও লাগলো তাড়াতাড়ি। সেই বেগ বাড়তে বাড়তে ঘন্টায় চল্লিশ মাইল স্পীড বাড়লো লোকোমোটিভের। ফর্টি পাউন্ড থেকে নাইনটি পাউন্ড হলো রেল-লাইন। শেষকালে নাইনটি থেকে হান্ড্রেড য়্যান্ড টুয়েন্টি পাউন্ড। দিল্লি মেল সিক্সটি মাইলস্ পার আওয়ার কবে চলবে সেই ভাবনা ভাবছে রেলওয়ে বোর্ড-আর এদিকে মিস্টার ঘোষালরা সেই ওয়াগন নিয়েই জুয়া খেলতে শুরু করেছে উনিশশো বিয়াল্লিশ সালের কলকাতায় বসে।
—সেন-সাহেব চলে গেছে, মধু?
মধু তখন ঘরের জানালা-দরজা বন্ধ করছিল। পেছন ফিরে দেখলে লক্ষ্মণ-বাবু। লক্ষ্মণ সরকার সকাল থেকেই সেন-সাহেবের সঙ্গে দেখা করবার চেষ্টা করছিল। সুবিধে পায়নি। ভেবেছিল সকলের ছুটি হয়ে গেলে দেখা করবে। হঠাৎ তার চাকরিটা যদি চলে যায় তাহলে কত অসুবিধে হবে তার, সেই কথাগুলোই বুঝিয়ে বলার দরকার ছিল। কিন্তু হলো না।
মধু বললে—সাহেবের মুখটা খুব ভারভার দেখলুম। একটা টেলিফোন আসার পরেই তাড়াতাড়ি চলে গেলেন—
—কোথায় গেলেন? বাড়িতে?
মধু বললে—তা বলতে পারবো না—
.
ভিজিটিং আওয়ার্স তখন শেষ হয়ে গেছে। তবু গাড়ি থেকে নেমেই সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে লাগলো দীপঙ্কর। যারা ভেতরে এসেছিল, তারা চলে গেছে সবাই। দু’একজন নার্স তখন এদিক থেকে ওদিকে ঘোরাঘুরি করছে। হাতে থার্মোমিটার। সাদা অ্যাপ্রন পরা মেট্রন। সোজা সতীর কেবিনের দিকে যেতেই কে একজন নার্স বেরিয়ে এল বাইরে।
—মিসেস্ ঘোষ কেমন আছেন, নার্স?
নার্স বললে—এখন ভাল আছেন, কাল সকালে রিলিজ করে দেবে ডি-এম-ও—
দীপঙ্কর আস্তে আস্তে দরজাটা খুললে। ছোট ফাঁক দিয়ে প্রথমে কিছু দেখা গেল না। তারপর আর একটু ফাঁক করলে। সতীর ফরসা পা দুটো দেখা গেল বিছানার ওপর দীপঙ্কর ঘরের ভেতরে ঢুকলো। সতী বোধহয় ঘুমোচ্ছিল। আস্তে আস্তে মাথার কাছে গিয়ে বসলো দীপঙ্কর। আস্তে আস্তে নিঃশ্বাস পড়ছে সতীর। এত কাছে এত ঘনিষ্ঠ হয়ে কখনও দীপঙ্কর এমন করে আগে সতীর মুখের দিকে চেয়ে দেখেনি। একদৃষ্টে চেয়ে দেখতে দেখতে দীপঙ্করের মনে হলো সতী বোধহয় জেগেই আছে। চোখ বুজিয়ে যেন কী ভাবছে।
দীপঙ্কর আস্তে আস্তে সতীর কপালে হাতটা রাখলে।
সঙ্গে সঙ্গে সতী জেগে উঠেছে। চোখ মেলে সামনে দীপঙ্করকে দেখেই বললে—একি, দীপু?
—অ্যাঁ, আমি সতী! আমি!
সতী বললে—কেন এলে তুমি আবার? আমি তো তোমাদের তাড়িয়েই দিয়েছিলাম—তাহলে কেন আবার এলে?
তারপর একটু থেমে বললে—উনি কোথায়? বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন বুঝি?
দীপঙ্কর বললে—সনাতনবাবুর কথা বলছো? তিনি তো চলে গেছেন!
সতী আর কোনও কথা বললে না। হঠাৎ সতী নিজের মুখটা আড়াল করতে চেষ্টা করলে। তার চোখ দিয়ে জল পড়ছে। কিন্তু কান্নাটাও আর গোপন করতে পারলে না। বললে—তুমি যাও দীপু, তুমি চলে যাও—
দীপঙ্কর বললে—আমি না-হয় চলেই যাচ্ছি, কিন্তু তুমি কোথায় যাবে কিছু ভেবেছ? সেই প্যালেস কোর্টেই ফিরে যাবে?
সতী বললে-আমি যেখানেই যাই, আমার কথা তোমরা না-ই বা ভাবলে! আমাকে কি তোমরা শান্তিতে মরতেও দেবে না? আমি তোমাদের কী করেছি বলো তো? কেন তোমরা আমাকে একটু একলা থাকতে দিচ্ছ না? আমি মরে যাবো এইটেই কি তোমরা চাও? আমি তো তোমাদের সকলকে মুক্তি দিয়েছিলুম, তোমাদের সকলের হাত থেকে মুক্তি পাবার জন্যেই আগুনে ঝাঁপ দিয়েছিলুম—কিন্তু কেন আমি মরলুম না বলতে পারো? কোথায় গেলে কী করলে মুক্তি পাবো বলতে পারো তুমি?
—আমি তোমাকে নিয়ে যেতে এসেছি সতী!
সতী চোখ বড়-বড় করে চেয়ে দেখলে দীপঙ্করে দিকে। যেন কথাটা ভাল করে বুঝতে পারেনি। তারপর দরজার দিকেও চেয়ে দেখলে। বললে—তুমি আমার কাছে লুকোচ্ছ বুঝি? ওঁকে ঘরের ভেতরে ডাকো না, এবার আমি কিছু বলবো না। সত্যি বলছি বিশ্বাস করো দীপু, আমার যে মাঝে মাঝে কী হয়, আমার খুব রাগ হয়ে যায় তোমাদের ওপর, তখন আর কিছু জ্ঞান থাকে না—তুমি ডাকো ওঁকে দীপু, ভেতরে ডেকে নিয়ে এসো—আমি কিছু বলবো না—উনি আমার ওপর খুব রাগ করেছেন, না?
—না রাগ করবেন কেন? রাগ করেন নি!
—রাগ করেন নি?
সতী যেন আঘাত পেল কথাটা শুনে। হঠাৎ যেন সতীর হাতটা শিথিল হয়ে এল। রাগ করেন নি? তার ওপর সামান্য একটু রাগও করতে পারলেন না?
—তাহলে তুমি কেন এলে? কেন এলে মিছিমিছি? আমি কোথাও যাবো না। আমি এখানেই থাকবো, আমি এখানেই মরে পড়ে থাকবো—
দীপঙ্কর বললে—তোমায় একটা খবর বলা হয়নি সতী, তুমি বোধহয় শোননি, তোমার বাবা মারা গেছেন—
সতী হঠাৎ আবার মুখ ফিরিয়ে দেখলে দীপঙ্করের দিকে। একটা অদ্ভুত আতঙ্কে তার মুখের চেহারাটার আমূল বদলে গেল।
—আমি বার্মা ইভ্যাকুয়ীজ আপিস থেকে নিজে জেনে এসেছি। সেই কথাটা বলবো বলেই এসেছি এখন। এর পরেও কি তুমি প্যালেস-কোর্টে গিয়ে উঠতে পারবে?
হঠাৎ কী যে হলো, সতী যেন হঠাৎ এক আর্তনাদ করে দীপঙ্করের বুকে নিজের মুখটা লুকোবার চেষ্টা করলে। তারপর দুই হাতে দীপঙ্করকে সজোরে আঁকড়ে ধরে হাউ হাউ করে কাঁদতে লাগলো। আর দীপঙ্কর সেই অবস্থাতেই আস্তে আস্তে নিজের হাতটা সতীর মাথায় বুলিয়ে দিতে লাগলো। যতটুকু সান্ত্বনা পায় সতী, সেইটুকুই ভালো। হয়ত কান্নারই প্রয়োজন ছিল সতীর এই সময়ে। হয়ত কাঁদলেই সতী শান্ত হবে। কাঁদলেই সতী সান্ত্বনা পাবে। দীপঙ্কর চুপ করে রইল—এতটুকু একটি সামান্য কথাও বলতে চেষ্টা করলে না। সতী তখনও দীপঙ্করের বুকের আশ্রয়ের তলায় ফুলে ফুলে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে উঠছে বারবার। আর দীপঙ্কর নিঃশব্দে তার কোঁকড়ানো চুলের ওপর হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
বাইরের রাস্তায় হঠাৎ চিৎকার উঠলো—টেলিগ্রাফ—টেলিগ্রাফ—
খবরের কাগজের হকাররা ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়তে দৌড়তে খবর ফিরি করতে বেরিয়েছে কলকাতার পথে। হয়ত যুদ্ধের কোনও খবর। হয়ত জাপান ঢুকে পড়েছে ইন্ডিয়ায়। নয়ত মস্কো দখল করে নিয়েছে জার্মানী। কিন্তু না, তা নয়।
গান্ধীজী গ্রেফ্তার, গান্ধীজী গ্রেফ্তার—
শুধু মহাত্মা গান্ধীই নয়। মৌলানা আবুল কালাম আজাদ, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল, পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু, সরোজিনী নাইডু—কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সব মেম্বারদের ধরে বোম্বাই থেকে স্পেশ্যাল ট্রেনে করে পুণায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পাটনাতে ডাক্তার রাজেন্দ্র প্রসাদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।