Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    ইস্টিশন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    উড়ালপঙ্খী – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    কাঠপেন্সিল – হুমায়ূন আহমেদ

    হুমায়ূন আহমেদ এক পাতা গল্প105 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    আড্ডা

    চলন্তিকা ডিকশনারিতে আড্ডার অর্থ দেয়া হয়েছে—কুলোকের মিলনস্থান। আমার ‘দখিন হাওয়া’র বাসায় প্রায়ই আড্ডা বসে। অর্থাৎ কিছু কুলোক একত্রিত হন। আড্ডার প্রধান ব্যক্তিকে বলে আড্ডাধারী। আমি সেই জন। বাকিদের পরিচয় দিচ্ছি।

    শাওন। (তার বাড়িতেই আড্ডা বসছে, সে যাবে কোথায়?)

    আলমগীর রহমান। (অবসর এবং প্রতীক প্রকাশনীর মালিক। আমার নিচতলায় থাকেন।)

    আর্কিটেক্ট করিম। (তিনি আপে দখিন হাওয়াতেই থাকতেন, এখন বিতাড়িত।)

    মাজহারুল ইসলাম। (অন্যদিন পত্রিকার সম্পাদক-প্রকাশক, অন্যপ্রকাশ এবং অন্যমেলার স্বত্বাধিকারী। আমার পাশের ফ্ল্যাটেই থাকেন।)

    কমল বাবু। (নাম কমল বাবু হলেও ইনি মুসলমান। মাজহারুল ইসলামের পার্টনার। শখের অভিনেতা। যে কটি নাটকে উপস্থিত তার প্রতিটি ডায়লগ মুখস্থ। কবিতা আবৃতির মতো তিনি ডায়লগ বলে আনন্দ পান।)

    এঁরা আড্ডার স্থায়ী পাখি। সবসময় থাকেন। বেশ কিছু অতিথি পাখিও আছেন। এঁরা হঠাৎ হঠাৎ আসেন। যেমন চ্যালেঞ্জার, মাসুদ আখন্দ।

    কিছু আছেন নিমন্ত্রিত পাখি। নিমন্ত্রণ করলে এরা আসেন। অনিমন্ত্রিতভাবে কখনোই উপস্থিত হন না। যেমন, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, শফি আহমেদ, আর্কিটের রবিউল হুসাইন…

    প্রয়োজনের পাখিও আছে। তাঁদের উপস্থিত দেখলেই বুঝা যায় কোনোকিছুর প্রয়োজন হয়েছে। যেমন, অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর।

    আমাদের এই আড্ডার একটি নামও আছে। Old Fools’ Club, বৃদ্ধ বোকা সংঘ। ঔপন্যাসিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের আড্ডার নাম বুধসন্ধ্যা। তাঁরা প্রতি বুধবার বসেন। প্রধানত সাহিত্য নিয়ে কথাবার্তা হয়। রচনা পাঠ করা হয়।

    আমাদের এখানেও রচনা পাঠ করা হয়। আমার একার রচনা। বৃদ্ধ বোকা সংঘে আমি ছাড়া লেখক কেউ নেই। তবে অত্যন্ত সুখের বিষয়, সাহিত্য নিয়ে কোনো আলোচনা হয় না। পরাবাস্তবতা, জাদুবাস্তুবতা, কিংবা মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমগ্র রচনায় কোনো কৃষক চরিত্র নেই কেন–এ নিয়ে কোনো আলোচনায় কেউ যায় না। তাহলে আমরা কী করি?

    শুরুর কিছুক্ষণ আমরা ঝিম ধরে থাকি। যাদের মোবাইল আছে, তারা মোবাইল টিপাটিপি করে। আলমগীর রহমান ঘনঘন হাই তোলেন এবং বলেন, শরীর ভালো লাগছে না। আজ যাই। মুখে বলে, কিন্তু উঠেন না। কেউ তাকে থাকার জন্যে সাধাসাধিও করে না।

    বাকি সদস্যরাও আলোচনা শুরুর বিষয় পান না। তারাও উসখুস করেন। তখন আড্ডাধারী হিসেবে আমার দায়িত্ব পড়ে আসর জমানোর। আমি নৌকার পাল তুলে দেই। জানি পাল তুললেই নৌকা চলা শুরু করবে। রাজনীতির কোনো প্রসঙ্গ তুলি। সবাই লুফে দেয়। তুমুল আলোচনা শুরু হয়ে যায়। বাঙালিরা হলো নাচুনি বুড়ি। আর রাজনীতি ঢোলের বাদ্য।

    উদাহরণ দেই। আমি বললাম, আওয়ামী লীগের ডিজিটাল মন্ত্রীসভায় কিছু মন্ত্রী থাকা উচিত, যাদের কোনো দপ্তর থাকবে না। তাদের একটাই কাজ। তারা বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে শুধু টকশো করবেন।

    করিম বলল, তাদের গাড়িতে কি ফ্ল্যাগ থাকবে?

    আলমগীর বলল, অবশ্যই থাকবে। ডাবল ফ্ল্যাগ থাকবে। একটা আমাদের জাতীয় পতাকা, আরেকটা যে টিভি স্টেশনে টকশোতে অংশ নিতে যাচ্ছেন তাদের মনোগ্রামখচিত পতাকা।

    কমল বলল, আর কিছু মন্ত্রী থাকবেন যারা শুধু সংবাদ সম্মেলন করবেন। আর কিছু না। তাদের টাইটেল, চিৎকারক মন্ত্রী।

    আলোচনা জমে ওঠে। একটা পর্যায়ে শাওন হতাশ এবং দুঃখিত গলায় বলে, তোমাদের এই রাজনৈতিক আলাপটা কি বন্ধ করবে? এই আলোচনার কোনো ফলাফল কি আছে?

    সমস্যা হচ্ছে আড্ডার কোনো আলোচনারই কোনো ফলাফল নেই। শুধু আড্ডা কেন, গোটা বাংলাদেশেরই আলোচনা, গোলটেবিল বৈঠক, চারকোনা টেবিল বৈঠক, চলমান গাড়ি বৈঠক সবই ফলাফল শূন্য। আনক্সা সবাই শূন্য আমাদের এই শূন্য রাজত্বে।

    আড্ডায় মাঝে মাঝে গানের আসর বসে। শাওনের মুড ভালো থাকলে একের পর এক গান করতে থাকে। আবার অতিথি পাখি সাব-ইন্সপেক্টর টুটুল (এস আই টুটুল) যখন আসে তখনো গান হয়। তবে সে এই আড্ডায় কখনো হুমায়ুন আহমেদের লেখা গান ছাড়া অন্য কোনো গান করে না। আবার শুনেছি যখন সে অন্য কোনো আড্ডায় যায়, তখন হুমায়ুন আহমেদকে ভাসুরের মতো দেখে। তার গান দূরে থাকুক, নামও উচ্চারণ করে না। হুমায়ূন আহমেদ বিষয়ক পরচর্চায়ও না-কি অনিচ্ছায় অংশগ্রহণ করে।

    টুটুল শুধু যে গান চমৎকার করে তা-না। আড্ডাবাজ হিসেবেও সে অসাধারণ। তার মতো সুন্দর করে গল্প আর একজনই শুধু করতে পারে, তার নাম জাহিদ হাসান। আমাদের আড্ডায় সে অতিথি পাখি ক্যাটাগরিতে পড়ে। আরেকজন অতিথি পাখির নাম জুয়েল আইচ। আগে যখন ধানমণ্ডিতে থাকতেন, তখন প্রায়ই আসতেন। এখন প্রায় ভিসা নেবার দূরত্বে চলে গেছেন বলে তার ক্যাটাগরি অতিথি পাখি থেকে বদলে হয়েছে নাই পাখি। তিনিও সুন্দর কথা বলেন এবং কথা বলতে পছন্দ করেন। তবে ইদানীং কথা বলায় তাঁর কিছু সমস্যা যাচ্ছে বলে আড্ডায় ঠিকমত অংশ নিতে পারছেন না।

    জুয়েল আইচ আড্ডায় উপস্থিত হওয়া মানেই ম্যাজিক এই কথা আমাদের Old Fools ক্লাবের জন্যে সত্যি না। আমাদের কয়েকটি নিয়ম আছে–আড্ডায় কোনো ম্যাজিশিয়ান এলে তাকে ম্যাজিক দেখাতে বলা যাবে না, কোনো ডাক্তার এলে রোগের বর্ণনা নিয়ে তার কাছে যাওয়া যাবে না, কোনো গায়ক এলেই বলা যাবে না, ভাই শুরু করুন তো। কেউ নিজ থেকে কিছু করতে চাইলে কোনো বাধা নেই।

    জুয়েল আইচ আমাদের আড্ডায় নিজ থেকে কিছু অসাধারণ ম্যাজিক দেখিয়েছেন। তাসের একটা Closetup মাজিক মানুষকে কিছুক্ষণের জন্যে হলেও প্রতিবন্ধী অবস্থায় নিয়ে যায়।

    আমাদের আড্ডার আরেকটি ক্যাটাগরি হচ্ছে Foreign পাখি। যেমন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সমরেশ মজুমদার বা আগরতলার কবি রাতুল দেব বর্মন। তখন তাঁদের সম্মানে ঢাকা ক্লাব থেকে তরল খাবার আসে। বিদেশী পাখিরা তাঁদের কোমল শারীরবৃত্তীয় কারণে কঠিন খাবার সহ্য করতে পারেন না।

    আমরা তখন মোটামুটি সচেতন আলোচনা করি। বেশির ভাগ সাহিত্য বিষয়ক। যেমন নি কেন শব্দের সঙ্গে ব্যবহার না করে আলাদা ব্যবহার করা হচ্ছে। নি তো নার মতো আলাদা শব্দ না।

    একজন বলেন, নি এসেছে নাই থেকে, খাই নাই থেকে খাই নি। কাজেই আলাদা হবে।

    আরেকজন বলেন, যেহেতু উচ্চারণ একসঙ্গে করা হয় কাজেই একসঙ্গেই হবে। আলাদা কখনোই হবে না।

    কি এবং কী নিয়ে কথা ওঠে। দীর্ঘ ঈ-কার যখন আমরা উঠিয়েই দিচ্ছি তখন শুধু ক বেচারার ওপর কেন এই হামলা?

    আলোচনা কঠিন থেকে আরো কঠিনে চলে যায়। সৌন্দর্যের ব্যাখ্যা কী জাতীয় জটিলতা নিয়ে দার্শনিক কথাবার্তা। একসময় নৌকার হাল ফেরাবার জন্যে আমি বেমাক্কা কিছু কথা বলি। যেমন, আচ্ছা সুনীলদা, চর্যাপদে মৌরলা মাছের উল্লেখ আছে, কিন্তু ইলিশ মাছের উল্লেখ নেই, কেন বলুন তো?

    বিদেশী পাখিদের উপস্থিতিতে আড্ডা শেষ হয় গানে। এই উপলক্ষে হায়ার করে অর্থাৎ পেটেভাতে কিছু গায়ক আনা হয়। যেমন, সেলিম চৌধুরী।

    বিদেশী পাখিদের আড্ডায় আনার সবচয়ে বড় সমস্যা, তাদের সঙ্গে থাকে ফেউ পাখি। আরো খারাপভাবে বললে সাহিত্যের মাছি। এইসব মাছির কাছে পশ্চিমবঙ্গের লেখক মানেই পাকা কাঁঠাল। তারা কাঁঠাল ঘিরে ভনভন করে উড়বেই।

    সবচেয়ে মুশকিল হয়, যখন পশ্চিমা দেশের সাহেবরা এসে উপস্থিত হন। একজনের গল্প বলি। তিনি এসেছেন রাশিয়া থেকে। বাংলাদেশের রাশিয়ান অ্যাম্বাসিতে কাজ করেন। তিনি এসেছেন সাহিত্য নিয়ে আলাপ করতে। আমি হতাশ হয়ে আড্ডার বন্ধুদের দিকে তাকিয়ে বললাম, মহাযন্ত্রণায় পড়লাম। এই রাশিয়াভসকির সঙ্গে সাহিত্য নিয়ে কী ঘটর ঘটর করব?

    রাশিয়ান হাসিমুখে পরিষ্কার এবং শুদ্ধ বাংলায় বলল, আমি বাংলা ভাষা ও সাহিত্য ভালোমতো অধ্যয়ন করেছি, আপনি ইচ্ছা করলে আমার সঙ্গে সাহিত্য নিয়ে ঘটর ঘটর করতে পারেন। এই রাশিয়ান (পাভেল) আমার একটি উপন্যাস সবাই গেছে বনের রুশ ভাষায় অনুবাদ করেছেন।

    আড্ডাতে আরেক ধরনের উপস্থিতির কথা তুলতে ভুলে গেছি। এঁরা আসেন তাদের বানানো ছবি বা টেলিফিল্ম দেখাতে কিংবা ছবির জন্যে গান রেকর্ড করেছেন তা শোনাতে। এদের উপস্থিতিতে নিয়মিত আড্ডা বাতিল হয়ে যায়। আড্ডাবাজরা জ্ঞানীর মতো মুখ করে ছবি দেখেন, টেলিফিল্ম দেখেন। ছবির গান শোনেন এবং গোপন দীর্ঘশ্বাস ফেলেন।

    প্রয়াত লেখক প্রণব ভট্ট আড্ডায় যোগ দেখার আগে সবসময় খোঁজ নিতেন খাসির মাংসের কোনো ব্যবস্থা আছে কি-না। ব্যবস্থা থাকলে তিনি অবশ্যই আসবেন। দুর্ভাগ্য এই খাসির হাতেই তাঁর মৃত্যু হলো। আর্টারীতে চর্বি জমে হার্ট অ্যাটাক।

    এদেশের লেখকলের মধ্যে ইমদাদুল হক মিলন প্রায়ই আসতেন। এখন টকশোতে অতি ব্যস্ত বলে আসতে পারেন না। আড্ডায় তাঁকে সবাই অত্যন্ত পছন্দ করে, কারণ তিনি সবার সঙ্গে সব বিষয়ে একমত হন। আড্ডায় কেউ যদি বলে–রবীন্দ্রনাথ কোনো লেখকই না। ইমদাদুল হক মিলন বলবেন, একটা খাঁটি কথা সাহস করে বলেছেন। ধন্যবাদ। (মিলন এই লেখা পড়লে রাগ করবে। আরে বাবা, ঠাট্টা করলাম। তবে আনন্দের কথা মিলন এই লেখা পড়বে না। সে সেলিব্রেটি টকশো নিয়ে ব্যস্ত। কাঠপেন্সিল পড়ার তার সময় কোথায়? কাঠপেন্সিল সেলিব্রিটি না, পার্কার ফাউনটেন পেন হলেও কথা ছিল। হা হা হা।)

    এখন আমাদের আড্ডার কিছু নিয়মকানুন বলি। সবই অলিখিত নিয়ম, তবে কঠিনভাবে মান্য করা হয়–

    ক) কোনো খারাপ শব্দ ব্যবহার করা যাবে না। উপস্থিত মহিলারা যেন কোনো অবস্থাতেই আহত না হন।

    খ) পরচর্চা করা যাবে, তবে শুধুই শুধু মজা করার জন্যেই এবং যার পরচর্চা করা হবে তাকে আড্ডায় উপস্থিত থাকতে হবে। তার অনুপস্থিতিতে না।

    গ) আড্ডায় মনোমালিন্য কথা কাটাকাটি হতেই পারে। আড্ডা শেষ হওয়া মাত্র সব ভুলে যেতে হবে। আড্ডার ডেডবডি কেউ কাঁধে করে বাড়িতে নিয়ে যাবে না।

    ‘দখিন হাওয়া’র এই আড্ডার সবচেয়ে বিস্ময়কর দিক হলো, আড্ডায় যাদের উপস্থিতির কথা বলা হয়েছে তারা কখনো কোনোদিনও তাদের স্ত্রীদের নিয়ে আসেন না। মাজহার যেহেতু পাশের বাসায় থাকে, তার স্ত্রী স্বর্ণা এসে মাঝে মধ্যে উঁকি দিয়ে স্বামীকে দেখে যায় এবং চোখের ইশারায় স্বামীকে উঠে যেতে বলে। মাজহার ভান করে সে চোখের ইশারা দেখে নি।

    একমাত্র ব্যতিক্রম ঔপন্যাসিক মইনুল আহসান সাবের। তিনি আমাদের আড্ডায় কম আসেন, তবে বেশির ভাগ সময় তার স্ত্রীকে নিয়ে আসেন।

    মহিলারা কেন Old Fools’ Club এড়িয়ে চলেন তা এখনো জানি না। মিসির আলি সাহেবকে কারণটা বের করতে বলেছি। তিনি চিন্তাভাবনা করছেন। সিদ্ধান্তে পৌঁছালেই আমি জানব।

    কিছুদিন আগে আমাদের আড্ডা সম্পর্কে আমি একটি ভয়ঙ্কর তথ্য আবিষ্কার করেছি। বন্ধুদের বলেছি। সবাই একমত হয়েছেন। তথ্যটা আপনাদের জানাই।

    তেমন ঘনিষ্ঠতা নেই এমন কেউ যদি হঠাৎ এসে এই আড্ডায় আসক্ত হন, তাহলে বুঝা যাবে তার দিন শেষ হয়েছে। ডাক এসেছে, তাকে চলে যেতে হলে। চারজনের উদাহরণ আমাদের কাছে আছে। তাদের নাম বলতে মন সায় দিচ্ছে না। সর্বশেষ নামটা শুধু বলি। কেমিস্ট্রির দেলোয়ার ভাই। তিনি যাবেন ইউরোপ। রাত একটায় ফ্লাইট। তারপরেও কিছুক্ষণ আড্ডায় থাকার জন্যে তিনি টেলিফোন করেছিলেন। টেলিফোনে এটাই তাঁর সঙ্গে আমার শেষ যোগাযোগ। ইউরোপ থেকে ফিরেই তিনি মারা গেছেন।

    এখন হঠাৎ আড্ডায় যোগ দিয়েছেন নতুন একজন। আমার শৈশববন্ধু কঠিন মাওলানা সেহেরি। সন্ধ্যা মিলানোর পর তিনি ঘরে থাকতে পারেন না। যদি কোনো একদিন না আসেন আমি ভয়ে ভয়ে তাঁর বাসায় টেলিফোন করি। ভাবি টেলিফোন ধরেন। আমি বলি, ভাবি, সেহেরি কেমন আছে? তার কোনো সমস্যা নাই তো? শরীর ঠিক আছে?

    ভাবি বলেন, বুড়া ভালো আছে। খাটে বসে বকরবকর করছে।

    আমি বলি, শুনে শান্তি পেলাম ভাবি। পৃথিবীতে বকরবকর অবিনশ্বর। আর সবই নশ্বর। Silence is golden কথাটা মিথ্যা। Silence কখনোই Golden না।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Article১৯৭১ – হুমায়ূন আহমেদ
    Next Article সকল কাঁটা ধন্য করে – হুমায়ূন আহমেদ

    Related Articles

    হুমায়ূন আহমেদ

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    ইস্টিশন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    উড়ালপঙ্খী – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    এই বসন্তে – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    এই মেঘ, রৌদ্রছায়া – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    এইসব দিনরাত্রি – হুমায়ূন আহমেদ

    December 23, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Our Picks

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    ইস্টিশন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    উড়ালপঙ্খী – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }