Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    কিরীটী অমনিবাস ১ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    কিরীটী অমনিবাস ১৩ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    কিরীটী অমনিবাস ২ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    কিরীটী অমনিবাস ১২ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    নীহাররঞ্জন গুপ্ত এক পাতা গল্প478 Mins Read0

    ১০. টালিগঞ্জেই দীনতারণ চৌধুরীর বাড়ি

    টালিগঞ্জেই দীনতারণ চৌধুরীর বাড়ি।

    ফটকওয়ালা একটা দোতলা বাড়ি। সামনেই গেটে কালো পাথরের ওপর সোনার জলে দীনতারণ চৌধুরীর নাম লেখা।

    Mr. D. C. Chowdhury
    M. A. Bar-at-law.

    ছোটখাটো একটা ফুলের বাগান, তারপরই বৈঠকখানা। দীনতারণবাবু বৈঠকখানা ঘরেই টেবিলের সামনে চেয়ারে বসে একরাশ কাগজপত্র চারপাশে ছড়িয়ে গভীর মনোযোগের সঙ্গে যেন কি সব দেখছিলেন। মাঝারি গোছের দোহারা চেহারা, গায়ের রং উজ্জ্বল শ্যামবর্ণ, মাথা ভর্তি সুবিস্তীর্ণ টাকা চকচক করছে। চোখে সোনার ফ্রেমের চশমা।

    আমাদের পদশব্দে চোখ তুলে চাইলেন, কী চাই? কে আপনারা?

    সুপ্রভাত। আমরা বোধ হয় মিঃ চৌধুরীর সঙ্গেই কথা বলছি! কিরীটী বললে।

    হ্যাঁ, বসুন। আপনারা?

    আমার নাম কিরীটী রায়; আর ইনি আমার বন্ধু ও সহকারী সুব্রত রায়। আমরা গতরাত্রে কুমারসাহেবের সেক্রেটারীর হত্যার ব্যাপারে প্রাইভেট তদন্তভার নিয়েছি।

    ও বেশ, নমস্কার। আপনাদের সঙ্গে পরিচিত হয়ে সুখী হলাম। আজ সকালের কাগজেই কুমারসাহেবের সেক্রেটারীর নিষ্ঠুর হত্যা ব্যাপার সম্পর্কে পড়েছি, ভাবছিলাম আর একটু বেলায় কুমারসাহেবের সঙ্গে একবার দেখা করতে যাব। তারপর একটু থেমে আবার বললেন, আমার অনুমান যদি ভুল না হয়ে থাকে, তবে নিশ্চয়ই আপনারা মিঃ শুভঙ্কর মিত্রের হত্যা সংক্রান্ত কোন কিছুর সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই আমার এখানে এসেছেন মিঃ রায়!

    হ্যাঁ। আমিই জবাব দিই। কিরীটী বলে, আপনার সঙ্গে মিঃ মিত্রের অনেকদিন থেকেই আলাপ পরিচয় ছিল তাই না মিঃ চৌধুরী?

    আজ্ঞে ঠিক তা নয়, তবে শুভঙ্করের বাপ ছিলেন আমার পরম বন্ধু। বরানগরে একসময় তঁর মত ধনী দ্বিতীয় আর ছিল না। তার বিষয়-সম্পত্তির লিগাল অ্যাভূভাইসার আমিই ছিলাম। শুভঙ্করের পিতার মৃত্যুর পর থেকে আমি শুভঙ্করেরও লিগাল অ্যাড়ভাইসার’ ছিলাম বটে, কিন্তু ইদানীং তার সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ আমার বড় একটা হত না, কারণ আমাদের সম্পর্ক শেষ হয়েছিল। তবে কানাঘুষায় শুনেছিলাম, কয়েক বছর ধরে সে অত্যন্ত যা-তা ভাবে টাকাকড়ি খরচ করতে শুরু করায় সম্পত্তি নীলামে ওঠে এবং সে প্রায় পথের ফকির হয়ে পড়ে। অবিশ্যি এ সংবাদ সঠিক কিনা তা জানি না।

    আচ্ছা, সেদিন সন্ধ্যায় আপনার তীর সঙ্গে দেখা হয়েছিল কুমারসাহেবের বাড়িতে? হয়েছিল, মানে সে আমায় নিমন্ত্রণ করেছিল, আর কী সব জরুরী কথা-বার্তা বলবে বলছিল।

    কথাবার্তা কী হল তার সঙ্গে?

    সে বলেছিল ভবিষ্যতে আর যাতে তাকে দুঃখ পেতে না হয়। সেই বন্দোবস্তই এবার সে করবে। মনস্থ করেছে। সেই সব কারণেই তার হাজার দশেক টাকার দরকার। সে একটা ব্যবসা শুরু করবে। সে ব্যবসায় নাকি এই যুদ্ধের বাজারে খুবই লাভের সম্ভাবনা। সেই টাকাটা আমি তাকে কারও কাছ থেকে ধার করে দিতে পারি। কিনা তাই জিজ্ঞাসা করছিল।

    কিন্তু আপনিই তো একটু আগে বলছিলেন, বর্তমানে নাকি তঁর অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হয়ে পড়েছিল। কিন্তু আপনি কি জবাব দিলেন?

    বলেছিলাম চেষ্টা করে দেখতে পারি, কারণ বরানগরে তাঁর পৈতৃক আমলের যে ঘরবাড়ি এখনও আছে, তা বাঁধা রেখে হাজার দশেক কেন হাজার কুড়ি টাকা পাওয়াও এমন কিছু কঠিন ব্যাপার হত না মিঃ রায়।

    মিঃ চৌধুরী, আপনি জানেন মিঃ মিত্রের বাগানের শখ ছিল কিনা?

    না তো! হঠাৎ এ প্রশ্ন কেন মিঃ রায়?

    জানেন গত সন্ধ্যায় কুমারসাহেবের বাথরুমে একটা মাটি কোপানো খুরপি পাওয়া গেছে।

    তবে একটা কথা মিঃ রায়— মাস পাঁচ-ছয় আগে শুভঙ্কর তখন সবে কুমারসাহেবের বাড়িতে চাকরি নিয়েছে, সেই চাকরি উপলক্ষ্যেই সে একদিন রাত্রে তার বাড়িতে বিশিষ্ট বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে এক বিরাট ভোজ দেয়। রাত্রে খাওয়া-দাওয়ার পর সকলেই প্রায় তখন চলে গেছেন। যাইনি শুধু আমি ও শুভঙ্করের শিশু বয়সের বন্ধু প্রফেসার কালিদাস শর্মা। এখানে চাকরি নেবার আগে শুভঙ্কর বছরখানেক প্রায় দেশভ্রমণ করে বেড়ায়। সে রাত্রে আমাদের কাছে শুভঙ্কর তার ভ্রমণ-কাহিনী বলছিল তার শয়নঘরে বসেই এবং কথায় কথায় সাহিত্যও এসে পড়ল। কালিদাস একসময় বললে, আগে থেকেই চিন্তা করে চমৎকার উপায়ে যেসব খুনী খুন করে তাদের খুনের ধারাটা পরীক্ষা করে দেখলে মনে হয় যেন একটা রহস্যপূর্ণ উপন্যাস পড়ছি। বলে সে হাসতে লাগল।

    সামনেই বসে শুভঙ্কর বরফ দিয়ে জিনজার খাচ্ছিল। মনে হল সে যেন একবার কেঁপে উঠল কথাটা শুনে। কথায় কথায় ক্ৰমে ইতিহাস ও রহস্যময় উপন্যাসের কথা উঠল। বক্তা প্রফেসারের বলবার অদ্ভুত একটা ক্ষমতা আছে, সে বলতে লাগল, বিখ্যাত লেখক পোয়ের মত কল্পনা-শক্তি আমি কোন বাংলা সাহিত্যিক কেন, ইংরাজী সাহিত্যিকদের মধ্যেও পাইনি। ‘অ্যামনটিলাভোর গল্পটা হয়তো পড়েননি আপনি মিঃ চৌধুরী! যখনই পোয়ের সেই গল্পটা আমার মনে পড়ে, কল্পনায় দৃশ্যটা আমার চোখের ওপর ভাসতে থাকে-—সেখানে মনট্রেসর ‘ফরচুনোটো’কে নিয়ে মাটির নীচে কবরঘরের দেওয়ালের তলায় সমাধি দিতে চলেছে। চিরজন্মের মত। শুভঙ্কর সে গল্পটা তো একদিন তোমাকে পড়ে শুনিয়েছিলাম, মনে নেই! সেই যেখানে হতভাগ্য ‘ফরচুনেটো৷ তার অবশ্যম্ভাবী ভয়ঙ্কর বিপদের কথা ঘূণাক্ষরেও টের না পেয়ে তাঁর সঙ্গীকে জিজ্ঞাসা করছে, বল না। সত্যি সত্যিই কি তুমি ম্যামকের মাতৃসঙ্ঘের একজন মেম্বার। তার জবাবে মনট্রেসর বললে, হঁয়া। এবং তাতে ফরচুনেটো প্রশ্ন করলে, সেই সঙ্ঘের চিহ্ন কি বল তো? জবাবে মনট্রেসর বিদ্যুৎগতিতে তার জামার ভিতর থেকে একটা খুরপি’ চাটু করে বের করে দেখাল।

    বলতে বলতে সে সহসা শুভঙ্করের দিকে তাকিয়ে বললে, কি এর মধ্যেই সে গল্পটা ভুলে গেলে? শুভঙ্করের দিকে তাকিয়ে দেখি, যেন একটা ভয়ঙ্কর উদ্বেগে তার সমস্ত মুখটা কালো হয়ে উঠেছে। সহসা এমন সময় শুভঙ্কর টলতে টলতে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াল কিন্তু পরীক্ষণেই আবার সে টলে পড়ে গেল। পড়ে যাবার সঙ্গে সঙ্গে ঘরের মধ্যে টেবিলের ওপরে যে ল্যাম্পটা জ্বলছিল সেটা গড়িয়ে পড়ে ভেঙে গেল। একটা বিশ্ৰী ঝন ঝন শব্দ হয়ে ঘরটা অন্ধকার হয়ে গেল। আমি তাড়াতাড়ি এগিয়ে গিয়ে শুভঙ্করকে তুলতে গেলাম। কিন্তু ততক্ষণে শুভঙ্কর নিজেই কোনমতে আবার টলতে টলতে উঠে দাঁড়িয়েছে। অন্ধকার ঘরের মধ্যে বাইরের খানিকটা চাঁদের আলো যেন একান্ত অনাহূত ভাবেই এসে প্রবেশ করে ঘরের মধ্যে একটা অস্পষ্ট আলো-ছায়ার সৃষ্টি করেছে। সেই আলোছায়াচ্ছন্ন ঘরে মুখোমুখি অন্তর পর্যন্ত দেখছে।…

    মিনিট দু-তিন এরকম কাটবার পর দুজনে আবার স্থির হয়ে যে যার চেয়ার টেনে নিয়ে। বসল।

    মিঃ চৌধুরী চুপ করলেন। আরো কিছুক্ষণ কথাবার্তার পর তখনকার মত আমরা মিঃ চৌধুরীর নিকট হতে বিদায় নিয়ে চলে এলাম।

    সন্ধ্যার অল্প পরেই কিরীটী, আমি ও ডাঃ চট্টরাজ বরানগরে শুভঙ্কর মিত্রের বাড়িতে গিয়ে হাজির হলাম।

    বাজার ছাড়িয়ে গঙ্গার ধারে প্রকাণ্ড চাকমিলান প্রাসাদতুল্য বাড়ি। লোহার গেটটা ভেজানেই ছিল। মৃদু একটা ঠেলা দিতেই খুলে গেল।

    সামনেই অনেকখানি জায়গা জুড়ে একটা নানা জাতীয় দেশী বিদেশী মরসুমী ফুলের বাগান।

    বাড়ির কোথাও একটা আলোর চিহ্ন পর্যন্ত নেই। অন্ধকারে নিঃশব্দে ভূতের মতই যেন বাড়িটা একটা বিভীষিকার মত স্তুপ বেঁধে আছে। ভয় করে। গায়ের মধ্যে ছমছম করে ওঠে।

    দরজার কড়া নাড়তেই দরজাটা খুলে গেল! সামনেই আধাবয়েসী একটি ছোকরা দাঁড়িয়ে।

    কিরীটিই জিজ্ঞাসা করল, কি রে, তোর নাম কি?

    আজ্ঞে, মাধব, বাবু।

    এ বাড়িতে কতদিন চাকরি করছিস?

    মাত্র কয়েক সপ্তাহ হল বাবু আমাকে তঁর কাজে বাহাল করেছিলেন। আমি তার বেয়ারার কাজ করতাম।

    বেশ, বাড়ির আর সব চাকরেরা কোথায় মাধব?

    আজ্ঞে, অন্য চাকরবাকর তো কেউ আর নেই। কর্তা অনেকদিন আগেই তাদের ছাড়িয়ে দিয়েছেন।

    কেন?

    তিনি বলেছিলেন মাস-চার-পাঁচেকের জন্য তিনি কুমারসাহেবের সঙ্গে সিঙ্গাপুর যাবেন কী একটা কাজে।

    ও, তাহলে তুই তীর খাস-চাকর ছিলি বল?

    আজ্ঞে সাধ্যমত র্তার সুখ-সুবিধার দিকে নজর রাখতে কোনদিনই আমি কসুর করিনি কর্তা। আমারও আপাততঃ চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে যাবার কথা কিছুদিনের মত। তারপর তিনি বলেছিলেন, সিঙ্গাপুর থেকে ফিরে এলে আবার আমাকে সংবাদ দেবেন।

    কাল রাত্রে তুই তাহলে এখানেই ছিলি মাধব?

    আজ্ঞে। এত বড় একটা বাড়িতে একা একা—শেষে রাত্রি একটার সময় ফোনে খবর পাই—আমাদের বাবু মারা গেছেন। বড় ভাল লোক ছিলেন কর্তা, কিন্তু বাবু আশ্চর্য, তারই ঠিক কিছুক্ষণ আগে যেন মনে হল শব্দ পেলাম সদর দরজায় চাবি দিয়ে যেন কে দরজা খুলছে …বাবু কখনো কখনো অনেক রাত্রে বাসায় ফিরতেন বলে আর একটা চাবি তীর কাছে থাকত। রাত্রে তিনি সেই চাবি দিয়ে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকতেন। আমি তাড়াতাড়ি নীচে গেলাম, কিন্তু কাউকেই দেখতে পেলাম না। ভাবলাম আমার শুনবারই ভুল হবে হয়তো।

    ডাক্তার একবার মাথাটা দোলালেন কথাগুলো শুনে।

    কটা চাবি তোর কর্তার সঙ্গে থাকত মাধব?

    আজ্ঞে, তাঁর শোবার ঘরের, লাইব্রেরী ঘরের, বাইরের দরজার, অন্যান্য ঘরের ও সিন্দুকের কয়েকটা চাবি একটা রিংয়ে ভরা সর্বদাই কর্তার কাছে থাকত বাবু। কিন্তু একথা জিজ্ঞাসা করছেন কেন বাবু?

    কাল দুপুরে যখন তিনি বাড়ি থেকে যান, তখনও তীর কাছে চাবির সেই রিংটা ছিল কিনা তুই জানিস মাধব?

    আজ্ঞে জামা-কাপড় পরিবার পর আমিই র্তার অন্য একটা কোটের পকেট থেকে চাবির রিংটা এনে তার হাতে দিই।

    কাল কত রাত্রে তোর মনে হয়েছিল তোর বাবু ফিরে এসেছেন? ডাক্তার প্রশ্ন করলেন।

    রাত প্রায় দেড়টা হবে বাবু বোধ করি!

    আচ্ছা তুই যে বলছিলি বাবুর সিন্দুক আছে, কোন ঘরে সেটা?

    আজ্ঞে দোতলায় বাবুর শোবার ঘরে।

    একবার দেখাতে পারিস সে ঘরটা?

    চলুন না।

    আমরা সকলে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে এলাম। লম্বা একটা টানা বারান্দা, তার উত্তর দিকে এক কোণে শুভঙ্করবাবুর শয়নঘর। কিন্তু ঘরের সামনে এসে আমরা সকলেই বিস্মিত হয়ে গেলাম! দরজার গা-তালায় তখনও একটা চাবি সমেত চাবির রিং ঝুলছে।

    মাধব বললে, তাই তো বাবু, ঐ কর্তার চাবির রিং, কিন্তু এটা দরজার গা-তালায় ঝুলছে দেখছি! এখানে কী করে এল ওটা, আশ্চর্য! তবে কি.সত্যিই বাবু ফিরে এসেছিলেন রাত্রে?

    তুই সকলে আর ওপরে আসিসনি মাধব, না? কিরীটী জিজ্ঞাসা করল।

    আজ্ঞে না।

    তোর অনুমান ভুল হয়নি মাধব! এখন বোঝা যাচ্ছে সত্যই কাল রাত্রে কেউ এ বাড়িতে এসেছিল।

    কিরীটী চাবি ঘুরিয়ে ধাক্কা দিয়ে শয়নঘরের দরজাটা খুলে ফেললে এবং মৃদুস্বরে বলতে লাগল, সুব্রত, ডাক্তার, এখন বুঝতে পারছেন বোধ হয় কেন কাল রাত্রে মৃত শুভঙ্কর মিত্রের পকেট সার্চ করে আমার সন্দেহ হয়েছিল! একজন অবিবাহিত অল্পবয়স্ক যুবকের কাছে অন্তত তার প্রাইভেট চাবিটা থাকা দরকার, কিন্ত সেটা নেই। এখন বুঝতে পারছেন, সবার অলক্ষ্যে কেমন করে খুনী মৃতব্যক্তির পকেট থেকে চাবি চুরি করে সরে পড়েছিল এবং চাবি নিয়ে সে যখন বরাবর এখানেই এসেছে, নিশ্চয়ই কান উদ্দেশ্য নিয়েই এসেছিল। কিন্তু সেটা কী? সেটা কী?

    মিঃ মিত্রের শয়নঘরটি বেশ প্রশস্ত। দামী মেহগনী কাঠের তৈরী একটি খাটে পাতা বিছানা চমৎকার একটি লাল রংয়ের বেডকভার দিয়ে ঢাকা। ঘরের মধ্যে আসবাবপত্রের তেমন বিশেষ কোন বাহুল্য নেই।

    ঘরের দেওয়ালে বড় বড় সব অয়েল পেন্টিং টাঙানো। দরজার সামনেই শিকারীর সুট পরা মিঃ মিত্রের কয়েক বছর আগেকার তোলা বোধ হয় একটি ফটো। মিঃ মিত্র যেমন একজন পাকা শিকারী ছিলেন, তার শিকারের শখও ছিল তেমনি ভয়ানক প্রবল। কিরীটী কিছুক্ষণ ফটোটার কাছে দাঁড়িয়ে তীক্ষ দৃষ্টিতে ফটোটা দেখতে লাগল। তারপর একসময় আবার মাধবের দিকে ফিরে প্রশ্ন করলে, ওই ঘরের দরজার ওদিকে একটা ঘর আছে, না রে মাধব?

    আজ্ঞে বাবু! ওই ঘরেই বাবুর লেখাপড়া করবার টেবিল ও সিন্দূকটা আছে। চলুন। আমরা সেই দরজা দিয়ে পাশের ঘরে গিয়ে প্রবেশ করলাম। অল্প-পরিসর একখানি ঘর। এক পাশে একটা মাঝারি সাইজের সেক্রেটারিয়েট টেবিল ও গোটা দুই গন্দিমোড়া চেয়ার। অন্যদিকে একটা প্রকাণ্ড বহুদিনের পুরনো লোহার সিন্দূক। চাবির রিংয়ের মধ্যেই সিন্দুকের চাবি ছিল। কিরীটী আলগোছে অতি সন্তৰ্পণে চাবি দিয়ে সিন্দুকটা খুলে ফেললে; কিন্তু আশ্চর্য, সিন্দুক একদম খালি, একটি কাগজের টুকরো পর্যন্ত নেই তার মধ্যে।

    কিরীটী বললে, তোর বাবুর সিন্দুক যে একেবারে খালি দেখছি মাধব! ব্যাপার কি, এর মধ্যে কি কিছু থাকত না?

    আজ্ঞে, সে কি বাবু —সিন্দুকের মধ্যে যে অনেক দরকারী দলিলপত্র ছিল! কালও যাওয়ার আগে আমার সামনে সিন্দুক খুলে কী একটা কাগজ নিয়ে আবার সিন্দুক আটকে রাখলেন?!…বাবু, আর সন্দেহ নেই। আমার, নিশ্চয়ই কাল রাত্রে কেউ এসেছিল। এ বাড়িতে। তা না হলে—আর বাকি কথাগুলো সে শেষ করে না।

    খুব সম্ভব। দেখ, এই সিন্দুকের গায়ে হাত দিস না। আচ্ছা মাধব, দেখ তো চাবির রিংয়ের মধ্যে তোর মনে পড়ে এমন কোন চাবি খোয়া গেছে। কিনা? মানে সব চাবিই ঠিক আছে কিনা?

    চাবির রিংটা মাধব হাতে নিয়ে মনে মনে এক-একটা চাবি দেখে কী যেন হিসাব করতে করতেই সহসা সবিস্ময়ে বলে উঠল, বাবু, অস্ত্ৰঘরের সেই বড় পিতলের চাবিটা তো এর মধ্যে কই দেখছি না।

    অস্ত্ৰঘর! এ বাড়িতে আবার অস্ত্ৰঘরও আছে নাকি?

    আজ্ঞে। মাটির নীচে এ বাড়িতে একটা ঘর আছে বাবু, সেখানে নানা-রকম অস্ত্রশস্ত্র সব দেওয়ালে সাজানো আছে। কত সব পুরোনো দিনের অস্ত্ৰ! কী অদ্ভুত সব দেখতে একএকটা অস্ত্ৰ! কর্তা আমাদের একদিন সবাইকে ডেকে নিয়ে দেখিয়েছিলেন। বাবুদের পূর্বপুরুষের মধ্যে নাকি কে একজন অত্যাচারী জমিদার ছিলেন, তিনিই ঐ ঘরটা দুষ্ট প্রজাদের কায়েদ করে রেখে শাস্তির দেবার জন্য বানিয়েছিলেন বলেছিলেন; পরে আমাদের বাবু সেটাকে অস্ত্রঘর করেছিলেন। শুধু যে সে ঘরে অস্ত্রই আছে। বাবু তা নয়, নানারকম পশুপক্ষীর হাড়-চামড়া, কত কী! দেখবেন, চলুন না!

    চল।

    আমরা সকলে অগ্রসর হলাম।

    মাধবই আমাদের অস্ত্রঘর দেখাবার জন্য নীচের তলায় চলল। জমিদারি আমলের বাড়ি। এর গঠন-কৌশলই সম্পূর্ণ আলাদা। বাড়ির একটা রান্নাঘর এবং রান্নাঘরের পাশ দিয়েই একটা দরজা। সেই দরজা খুললেই একটা সিঁড়ি, সেখানে কোন আলোর বন্দোবস্ত নেই। ওপরের ঘুলঘুলির ফাঁক দিয়ে সূর্যের আলো এসে যতটুকু আলোর প্রবেশাধিকার দিয়েছে। তাও অতি সামান্য। এবং সেই আলো-অাঁধারে আধো-আলোয় বহুকালের তৈরী মাটির নীচের কুঠরীর সন্ধানে আমরা সিঁড়ি বেয়ে চললাম। সুদূর এক অতীতে এই নির্জন কুঠরীতে কত হতভাগ্যের মর্মদ্ভদ কান্নার অশ্রুত বিলাপধ্বনি হয়তো আজিও নিশীথ রাতের আঁধার বায়ুলেশহীন মাটির তলায় এই গুপ্ত কক্ষের দেওয়ালে দেওয়ালে নিরুপায়ে আছাড়ি-পিছাড়ি করে মারে। কত খুন-খারাপি, কত নির্মম অত্যাচার এই নির্জন অন্ধ কুঠরীতে একদিন অবাধে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গোটা কুড়ি সিঁড়ি ডিঙিয়ে একটা ছোট বারান্দার মত জায়গায় এসে সকলে আমরা দাঁড়ালাম। সামনেই প্রকাণ্ড একটা লোহার দরজা; দরজার গায়ে দেখা গেল একটা ভারি জার্মান তালা ঝুলছে। কিরীটী সামনের দেওয়ালে টর্চের আলো ফেলল; মনে হল বারান্দার একপাশের দেওয়ালে যেন খুব শ্ৰীঘ্ৰ চুনকাম করা হয়েছে।

    অস্ত্রঘর দেখে আবার আমরা সকলে এক সময় ফিরে এলাম ওপরে।

    কিরীটী ও ডাক্তার আবার ওপরে চলে গেল। আমি রান্নাঘরের মধ্যে ঢুকে চারিদিকে চেয়ে চেয়ে দেখতে লাগলাম। রান্নাঘরের পিছনেদিককার দরজাটা খোলা দেখে সেইদিকে এগিয়ে গেলাম।

    সামনেই প্রকাণ্ড একটা আম, কঁঠাল, জাম, জামরুল ও অন্যান্য, ফল ও ফুলের বাগান। বহুকালের অব্যবহারে প্রচুর আগাছা জন্মেছে। ঘন সন্নিবিষ্ট গাছপালার ফঁাকে ফঁাকে খুব সামান্যই সূর্যের আলো বাগানে প্রবেশ লাভ করেছে। এক পাশে একটা প্রকাণ্ড দীঘি—প্রকাণ্ড পাথরের বাঁধানো রাণা। একটা বকুল গাছ তার ডালপালার একটা অংশ রাণার দিকে হেলিয়ে দিয়েছে।

    বাঁধানো রাণার দিকে এগিয়ে গেলাম। কিন্তু ও কি! রাণার ওপর ডান হাতের ওপরে চিবুক রেখে গভীর চিন্তামগ্ন কে ও?

    চিনতে কষ্ট হল না, গত রাত্রে কুমারসাহেবের বাড়িতে স্বল্প-পরিচিত সেই ভীতকােতর যুবক অরুণ করা।

    আরো একটু এগিয়ে গিয়ে ডাকলাম, এ কি, অরুণবাবু যে! নমস্কার।

    অরুণবাবু একান্ত নির্লিপ্তভাবে আমার দিকে চোখ তুলে একবার তাকালেন। আমি এগিয়ে গিয়ে তার পাশেই রাণার ওপর বসে পড়লাম। তিনি আমাকে প্রতি-নমস্কারও জানালেন না, যেমন চুপ করে বসেছিলেন তেমনিই রইলেন।

    আজ দিনের আলোয় ভাল করে ভদ্রলোককে দেখলাম আবার।

    সত্যই অতি সুন্দর আভিজাত্যপূর্ণ চেহারা। আজও পরনে একটা দামী শান্তিপুরী ধূতি ও গরদের পাঞ্জাবি। মাথার চুল এলোমেলো বিস্রস্ত। মুখে সুস্পষ্ট একটা বিষঃ চিন্তার ছায়া যেন ফুটে উঠেছে।

    অরুণবাবু! আবার ডাকলাম।

    হঠাৎ আমার দিকে ফিরে রীতিমত রুক্ষগলায়। ভদ্রলোক বলে ওঠেন, যান যান মশাই, খুব আপনার কথার ঠিক! বললাম। আমাকে চুপিচুপি যেতে দিন, সারাটা পথ দুজন লোক আমার পিছু পিছু ছায়ার মত আমার বাড়ি পর্যন্ত ধাওয়া করে গেছে—ভাবেন আমি কিছু টের পাইনি! কেন মশাই, আমি কি খুন করেছি নাকি যে আমার পিছনে গোয়েন্দা লাগিয়েছিলেন?

    ও, এই কথা! আমি হাসতে লাগলাম, তা ওরা তো আমার লোক নয়। অরুণবাবু! বোধ হয় পুলিসের লোক কেউ আপনাকে অনুসরণ করে দেখছিল, সত্যই আপনি আপনার বাড়ির যে ঠিকানাটা তাদের দিয়েছেন সেটাই আপনার আসল ঠিকানা কিনা। কিন্তু সে কথা যেতে দিন। পুলিসের লোকগুলোই অমনি ধরনের, কিন্তু বলুন তো, এ সময়ে এ-বাড়িতে এমন জায়গায় আপনি এমনি করে ভূতের মত একা এক চুপচাপ বসে বসে কি এত ভাবছিলেন?

    কি আর ভাবব! মনটা খারাপ লাগছিল শুভঙ্করদার মৃত্যুর কথা ভেবে ভেবে। বাসায় মন বসল না, তাই কখন এক সময় হাঁটতে হাঁটতে এখানে চলে এসেছি। ভদ্রলোকের চোখের কোণ দুটো সহসা যেন উপচীয়মান অশ্রুধারায় সজল হয়ে এল, মনে পড়ছিল কতদিন এই নির্জন পুকুরের রাণায় আমরা দুজনে বসে তার জীবনের কত সব রোমাঞ্চকর শিকারের অদ্ভূত গল্প শুনেছি। কত ভালবাসতেন। আমাকে শুভঙ্করদা! বলতে বলতে হঠাৎ আবার অরুণ কর চুপ করে রইলেন কিছুক্ষণ, তারপর আবার একসময় আবার বললেন, হ্যাঁ ভাল কথা, জানেন আজ সকালের দিকে আমি একবার কুমারসাহেবের ওখানে গিয়েছিলাম! কথায় কথায় ওঁর সঙ্গে মিঃ মিত্রের কথা উঠতে কুমারসাহেব কী বললেন জানেন?

    কী? আমি প্রশ্ন করলাম।

    কুমারসাহেব বলছিলেন, শুভঙ্করদার পক্ষে নাকি মরণই মঙ্গল হয়েছে। কি নিষ্ঠুর অথচ কি আশ্চর্য দেখুন! যে লোকটা কুমারসাহেবের জন্য এত করল, তীর মৃত্যুতে তীর চোখে একটু জল পর্যন্ত নেই। অথচ আর কেউ না জানুক আমি তো জানি, এক মূহুর্ত র্তার শুভঙ্করদাকে না হলে চলত না, প্রতি কাজে তাকে তার প্রয়োজন হত। এরপর অরুণ কর কিছুক্ষণ আবার একেবারে চুপচাপ বসে রইলেন; বােধ হয়। অতীত স্মৃতির বেদনায় মনটা ওঁর ভারাক্রান্ত হয়ে উঠছিল খুব বেশীই! আমিও নীরবে ওঁর পাশে চুপচাপ বসে রইলাম। এমন সময় হঠাৎ দাঁড়িয়ে উঠে বললেন, আচ্ছা এখন চললাম—সেই সকালে বের হয়েছি। যাবেন না। আজ রাত্রে আমার বাসায়! কেউ নেই, মামা-মামী পরশু মধুপুর গেছেন, একদম খালি বাড়ি; সেখানেই খাওয়া দাওয়া করবেন। আসবেন কিন্তু, আসবেন তো?

    যাব। মৃদু স্বরে জবাব দিলাম।

    অরুণবাবু তাড়াতাড়ি উঠে। গাছের আড়ালে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। আমিও উঠলাম।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleকিরীটী অমনিবাস ৩ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    Next Article কিরীটী অমনিবাস ২ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    Related Articles

    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ১ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ১৩ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ২ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ৩ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ৪ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ৫ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    কিরীটী অমনিবাস ১ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    কিরীটী অমনিবাস ১ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    কিরীটী অমনিবাস ১ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    কিরীটী অমনিবাস ১৩ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    কিরীটী অমনিবাস ২ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.