Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    কিরীটী অমনিবাস ১ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    কিরীটী অমনিবাস ১৩ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    কিরীটী অমনিবাস ২ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    কিরীটী অমনিবাস ১২ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    নীহাররঞ্জন গুপ্ত এক পাতা গল্প478 Mins Read0

    ০৪. একবার বাসায় যেতে হবে

    আপাততঃ একবার বাসায় যেতে হবে—সেই সকাল সাড়ে সাতটায় বের হয়েছে, এখন রাত প্রায় পৌনে আটটা—একবার না ঘুরে আসলে সাবিত্রীর সঙ্গে অলিখিত চুক্তিটা ভঙ্গ হবে।

    বিয়ের কিছুদিন পরেই সাবিত্রীর সঙ্গে সুদর্শনের অলিখিত চুক্তি হয়েছিল সকালে কাজে বেরুলে যেমন করেই হোক সময় করে সুদৰ্শনকে একবার মাঝখানে দেখা দিয়ে আসতেই হবে সন্ধ্যার আগে যদি ফেরা না সম্ভব হয়। [সুদর্শনের প্রথম কাহিনী পাওয়া যাবে ‘প্রজাপতি রঙ’ বইতে—লেখক।]

    একবার সমীরণ দত্তর ওখানে যেতে হবে, কিন্তু তার আগে একবার যেতে হবে বাসায়। বাসা অবিশ্যি বেশী দূর নয়-শিয়ালদার কাছে—হ্যারিসন রোডের কাছাকাছি।

    সুদৰ্শন বের হয়ে পড়ল।

    জীপচালক সেপাই শুধায়, কোন দিকে যাব স্যার?

    মোহন, একবার বাসায় চল তো-সেখান থেকে বালিগঞ্জ যাব।

    বাসাটা একেবারে ঠিক বড় রাস্তার উপরে নয়, গলির ভিতর ঢুকতে হয়। তবে দক্ষিণ আর পুব দিকটা খোলা।

    বাড়িটা নতুন।

    দোতলার উপরে তিনখানা ঘর। হঠাৎ পেয়ে গিয়েছিল বাসাটা সুদৰ্শন।

    বিয়ের পরে একটা ফ্ল্যাট খুঁজছে কলকাতা শহরে সর্বত্র যখন, তখনই এক অফিসার বন্ধু বাসাটার কথা সুদৰ্শনকে বলে। সেই অফিসারেরই মামাশ্বশুরের বাড়ি।

    সুদৰ্শন একটু অন্যমনস্কই ছিল। নচেৎ জীপ থেকে শেষ গলিতে ঢুকবার মুখে কিরীটীর নতুন কালো রংয়ের ফিয়াটটা নজরে পড়ত।

    বড় গাড়ি বিক্ৰী করে দিয়ে কিরীটী কিছুদিন হল ফিয়াট কিনেছে। অসুবিধা হয়েছে–ড্রাইভার হীরা সিংয়ের।

    লম্বা মানুষ-চালাতে কষ্ট হয়।

    তবে হীরা সিং মুখে কিছু বলেনি।

    সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় উঠতেই নজরে পড়ল ঘরের দরজা খোলা। ঝুলন্ত পর্দার ওদিক থেকে আলোর আভাস আসছে—তারপরই একটা পরিচিত গলার স্বর কানে ভেসে আসতেই  সুদৰ্শন হঠাৎ যেন খুশি হয়ে ওঠে।

    সঙ্গে সঙ্গে পর্দা তুলে ঘরে পা দেয়।

    দাদা! কতক্ষণ?

    সুদৰ্শনের দিকে ফিরে কিরীটী বলে, তা ভায়া ঘণ্টাদেড়েক তো হবেই। ভাবছিলাম এবারে উঠব-তোমার সঙ্গে বুঝি দেখাই হল না।

    সাবিত্রী উঠে পড়েছে ততক্ষণে। স্বামী সুদর্শনের দিকে তাকিয়ে সাবিত্রী বললে, চা খেয়েছ? নিশ্চয়ই চা খাওয়া হয়নি—

    সুদৰ্শন হেসে বলে, না—সময়ই পাইনি—

    জানতাম আমি। দাদা, আপনিও খাবেন তো?

    কিরীটী মৃদু হেসে বলে, তোমার দাদার চায়ে যে অরুচি নেই তা তো তুমি জান সাবিত্ৰী!

    সাবিত্রী ভিতরের ঘরে চলে গেল।

    সত্যি মেয়েটি বড় ভাল—তাই না সুদৰ্শন? কিরীটী মৃদু হেসে বলে।

    সুদৰ্শন বললে, সত্যিই জহুরী আপনি দাদা—

    স্বীকার করছ? কিরীটি হাসতে হাসতে বললে।

    একবার কেন, হাজারবার স্বীকার করব।

    আমার সঙ্গে গল্প করছিল বটে, সাবিত্রীর কিন্তু মনটা পড়ে ছিল সর্বক্ষণ দরজার দিকে–মাঝখানে একবার ঘুরে গেলেই তো পার!

    আসি দাদা—নেহাত কাজে আটকে না পড়লে। আজ এক জোড়া খুনের ব্যাপারে এমন জড়িয়ে পড়লাম যে—

    আরে ভায়া তোমার চাকরিই তো খুনজখম রাহাজানি নিয়ে—

    তা জানি দাদা। কিন্তু আজকের ব্যাপারটা এমন নৃশংস, এমনি বীভৎস যে—মনটা যেন কেমন হয়ে গিয়েছে।

    তাই নাকি! তা জোড়া খুন হল কোথায়?

    খুন হয়েছে বেলেঘাটা অঞ্চলে দিনের বেলা—একেবারে ভরদুপুরে। ত্রিশ-একত্রিশ বছরের একটি সুন্দরী মেয়ে আর তার ফুলের মত বছর চারেকের বাচ্চাটা—মানুষ যে এত নিষ্ঠুর কি করে হয়—

    ভালবাসার উল্টোদিকেই তো নিষ্ঠুরতা। —মানবচরিত্রের আলো অন্ধকার দুটি দিক।

    জানি দাদা। তবু এক-এক সময় মনে হয় এটা কেমন করে সম্ভব হয় মানুষের পক্ষে!

    আসল ব্যাপারটা কি জান ভায়া, প্রত্যেক মানুষের ভিতরেই পশুবৃত্তি থাকে। ভালবাসা, স্নেহ, মমতা—সেই পশুবৃত্তিটাকে একটা পোশাক পরিয়ে চাপা দিয়ে রাখে। কিন্তু সব সময় তা সম্ভব হয় না-আর যখন সম্ভব হয় না। তখনই তার শিক্ষা কৃষ্টি রুচি সরে গিয়ে তার মুখোশটা হঠাৎ খুলে যায়—ভিতরের পশুটা বের হয়ে আসে নখদন্ত বিস্তার করে কুটিল হিংস্র হয়ে। আমরা চমকে উঠি তখন। কিন্তু সেটা মনুষ্য-চরিত্রের আলোর, অন্য দিক যে স্বাভাবিক অন্ধকার—সেটা ভুলে যাই।

    সাবিত্রী ঐ সময় দু’কাপ চা নিয়ে এসে ঘরে ঢুকল।

    চায়ের কাপটা তুলে নিয়ে চুমুক দিতে দিতে সুদৰ্শন বলে, আপনাকে বলতে ইচ্ছা করছে ঘটনাটা দাদা। কিন্তু সাবিত্রী ঐ সব সহ্য করতে পারে না।

    কিরীটী হেসে বলে, তা না সহ্য করতে পারলে হবে কেন? পুলিস অফিসারের বেী হয়েছে। যখন-সত্যি সাবিত্রী—এ কিন্তু অন্যায় তোমার—

    বাঃ, আমি কখনও কিছু বলেছি নাকি? সাবিত্রী বললে।

    না। মুখে বলোনি বটে। কিন্তু তোমার মুখের চেহারা যা হয়—আমার মায়া লাগে।— সুদৰ্শন বললে।

    না, না—সুদৰ্শন। তুমি বলবে সাবিত্রীকে সব কথা। হয়ত দেখবে ওর অনেক পরামর্শ তোমার অনেক কাজে লাগবে—জান না তো মেয়েদের একটা বিচিত্র তৃতীয় নয়ন আছে। তুমি বল, আমরা শুনি আজকের ঘটনা।

    শুনবেন?

    নিশ্চয়ই, বল।

    সুদৰ্শন সাবিত্রীর মুখের দিকে তাকাল। সাবিত্রী বললে, কি হয়েছে?

    কিরীটী বলে, কোথায় নাকি জোড়া খুন হয়েছে–

    জোড়া খুন!

    হ্যাঁ।

    সুদৰ্শন তখন সংক্ষেপে ঐদিনকার ঘটনোটা আনুপূর্বিক বিবৃত করে যায়। কিরীটী একটা চুরুটে অগ্নিসংযোগ করে নিঃশব্দে বসে শোনে ধূমপান করতে করতে।

    সাবিত্রী বলে, কি নিষ্ঠুর।

    কিন্তু সাবিত্রী, কিরীটী বলে, তোমার কি মনে হয় বল তো? মা ও মেয়েকে কে খুন করল—আর কেনই বা খুন হল? মানে খুনের সম্ভাব্য কারণ কি হতে পারে?

    জানি না দাদা–

    ব্যাপারটা বোধ হয় খুব একটা জটিল নয়—কিন্তু এবারে উঠব ভায়া। কিরীটী উঠে দাঁড়াল।

    এখুনি যাবেন দাদা?

    হ্যাঁ-রাত প্রায় পৌনে নটা হল।

    চলুন আমাকেও একবার ওদিকে যেতে হবে। সুদর্শনও উঠে দাঁড়ায়।

    কোথাও যাবে?

    ভাবছি। একবার মনোহরপুকুর রোডে যাব।

    সমীরণ দত্তর ওখানে?

    হ্যাঁ-সাবিত্রী, দরজাটা বন্ধ করে দাও। দুখনকে দেখছি না—কোথায় গেল?

    দুখন তো বিকেলে বের হয়েছে তার এক দেশওয়ালী ভাইয়ের সঙ্গে—এখনো ফেরেনি। তুমি যাও না—সরলা তো আছে— ·

    সাবিত্রীর কথা শেষ হল না, দুখন এসে ঠিক ঐ সময় ঘরে ঢুকল।

    কিরে, এত দেরী হল তোর? সাবিত্রী শুধায়।

    বছর কুড়ি বয়স হবে দুখনের। বেশ তাগড়াই চেহারা। পুলিসের চাকরির লোভে কলকাতায় তার কনস্টেবল কাকার কাছে এসেছিল, কিন্তু এখনো কোন সুবিধা না হওয়ায় তার কাকা রামনারায়ণের সুপারিশে সুদৰ্শন তাকে তার গৃহে স্থান দিয়েছে।

    বাসন মাজা, ঘর বঁটি দেওয়া, ছোট কাজ ইত্যাদি কিছু করে না—তবে বাজার-হাট করা, অন্য ফাইফরমাশ সব করে। খুব বিশ্বাসী।

    দুখন বললে, কি করি, দেরি হয়ে গেল ঝগড়া করতে করতে।

    সে কি রে? ঝগড়া আবার কার সঙ্গে করছিলি? সুদৰ্শন জিজ্ঞাসা করে?

    আমার ভাইয়ের সঙ্গে, দেশ থেকে সে এসেছে।

    কেন?

    দেখুন না—নোকরি-উকরি নেই, বলে কিনা সাদী করা—আমি তা রাজী নই, ওরা রাজী করাবেই আমাকে।

    তা শেষ পর্যন্ত কি ঠিক হল?

    কি আবার—আগে নোকরী তারপর সাদী।

    সকলেই হাসতে থাকে।

     

    রাস্তায় বের হয়ে সুদৰ্শন কিরীটীর গাড়িতেই উঠে বসল—এবং নিজের জীপটা তার পিছনে পিছনে চলতে লাগল।

    একটা কথা বলব দাদা। একসময় সুদৰ্শন বলে।

    কি?

    আপনি তখন ওই কথাটা বললেন কেন?

    কোন কথাটা ভায়া?

    ব্যাপারটা বোধ হয় খুব জটিল নয়!

    তোমার কাহিনী শুনে তো তাই মনে হচ্ছে। কিরীটী বললে।

    আপনি কি সমীরণ দত্তকেই তাহলে সন্দেহ করেন?

    প্রেমের গতি বড় বিচিত্র, ভায়া।

    কিন্তু–

    বিশেষ করে যে প্রেম সর্বগ্রাসী। সামান্য একটু এদিক-ওদিক হলেও হিংসা তার কুটিল। নখর বিস্তার করে।

    কিন্তু দাদা–

    তাছাড়া ঠিক-অন্ততঃ মণিশঙ্কর ঘোষালের কথা যদি মিথ্যা না হয়-সামীরণ দত্তর ভালবাসা না হলেও বিজিতার ওপরে একটা দুর্বলতা ছিল।

    তা তো বোঝাই যায়। সুদর্শন বললে।

    অবিশ্যি তোমাকে জানতে হবে কথাটা কতখানি সত্য এবং যদি সত্যিই হয়ে থাকে। তবে সেই দুর্বলতাটা কোন পর্যায় গিয়ে পৌঁছেছিল। তবে এও ঠিক জেনো ভায়া

    কি?

    সমীরণ হয়ত অত সহজে মুখ খুলবে না।

    কেন?

    প্রথমতঃ আর্টিস্টরা একটু টাচি হয়–দ্বিতীয়তঃ দুর্বলতা বা ভালবাসা থাকা সত্ত্বেও যে তার প্ৰেমাস্পদকে অন্যের হাতে তুলে দিতে পারে তাদের পেট থেকে কথা বের করা খুব সহজ হবে না।–

    আর মণিশঙ্কর?

    সন্দেহের তালিকা থেকে সেও বাদ পড়ে না।

    কিন্তু ঐভাবে নিজের স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যা করাটা—

    যদি সে হত্যা করেই থাকে তাহলে যখন সে হত্যা করেছিল জানবে সে তখন স্বামী বা বাপ ছিল না। একটু আগে যে বলছিলাম মানুষের উদ্দাম মনের তলে চিরন্তন পশুবৃত্তির কথাটা-তখন জেনো সেই পশুটাই মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছিল। কিন্তু সে তো আরো পরের • কথা। তারও আগে তোমায় জানতে হবে–

    কি?

    কালো অ্যামবাসাডারে করে বেলা বারোটা সোয়া বারোটায় কে এসেছিল ঐ ফ্ল্যাট বাড়িটায়। তাছাড়া মকবুল মিস্ত্রীর কথাগুলোর মধ্যে লক্ষ্য করেছ নিশ্চয়ই ঠিক তেমন একটা সামঞ্জস্য নেই!

    সামঞ্জস্য নেই?

    হ্যাঁ। সে কি বলেনি কালো অ্যামবাসাড়ার থেকে নামতে দেখেছে-হাতে সুটকেসএকজন ধুতি পাঞ্জাবি-পরা ভদ্রলোককে যিনি গাড়িটা ঐখানে রেখে ঐ ফ্ল্যাট বাড়িতে ঢোকেন—তার কিছুক্ষণ বাদে স্যুট-পরিহিত এক ভদ্রলোক ফ্ল্যাট বাড়ি থেকে বের হয়ে এসে গাড়িটা চালিয়ে চলে গেল।

    সত্যিই তো। তখন তো আমার কথাটা ঠিক মনে হয়নি!

    পোশাকের বিভিন্নতা বাদ দিলে কালো রংয়ের অ্যামব্যাসাডার গাড়ি—একজন ভদ্রলোক ও একটা সুটকেস ঠিকই আছে। এর থেকে একটা কথাও কি তোমার মনে হয়নি?

    কি?

    যে ব্যক্তি অ্যামব্যাসাডারে করে এসে ঐ ফ্ল্যাট বাড়িটায় ঢুকেছিল এবং যে ব্যক্তি ফ্ল্যাট বাড়ি থেকে একটু পরে বের হয়ে এসে আ্যামব্যাসাডারটা চালিয়ে চলে গিয়েছে তারা একই ব্যক্তি, না দুজন! তাছাড়া মিস্ত্রীর কথাটাও কতখানি সত্য তারও যাচাই হওয়া দরকার, ঐ ব্যক্তির আইডেনটিটি ও গাড়িটার

    হ্যাঁ-খোঁজ নিচ্ছি। আমি।

    আরো আছে।

    কি?

    ঐ ইঞ্জিনীয়ার গোপেন বসু ভদ্রলোকটি—যিনি থানায় ফোন করেছিলেন—যিনি ঐ বাড়িরই আর একটা ফ্ল্যাটে থাকেন—তাকে তো তোমরা কোন জিজ্ঞাসাবাদই করনি!

    ভুল হয়ে গিয়েছে দাদা।

    খুনের ব্যাপারে এত বড় ভুল মারাত্মক ভায়া। তোমার জানা উচিত ছিল। বারোটা থেকে একটা পর্যন্ত এক ঘণ্টা উনি কোথায় ছিলেন—কি করছিলেন। সিঁড়ি দিয়ে তিনি নামছিলেন না। উঠছিলেন, যখন মণিশঙ্কর ঘোষালের সঙ্গে তার দেখা হয় সিঁড়িতে—।

    আমি কালই সকালে তার সঙ্গে দেখা করব।

    হ্যাঁ, ভুলো না। আর একটা কথা—

    বলুন? মকবুল বলেছে সে বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ শম্ভুকে দেখেছে বাজারের দিকে যেতে এবং তার হাতে ঐ সময় একটা সাদা খাম ছিল।

    হ্যাঁ, বলেছিল।

    তাকে সে সম্পর্কে তোমার জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলে ঠিকই, কিন্তু—

    কি? শম্ভু যে সব সত্যি কথাই বলেছে তারই বা ঠিক কি!

    তা অবিশ্যি ঠিক, তবে—শম্ভু তো এখন লক-আপেই আছে!…

    বুদ্ধিমানের কাজই করেছ। তাকে লকআপেই রেখো। আরও আছে—

    বলুন?

    যে অস্ত্রের দ্বারা হত্যা করা হয়েছে সেটাও তোমরা ভাল করে খুঁজে দেখনি! হয়ত ওই ফ্ল্যাটের মধ্যেই কোথাও সেটা এখনও থাকতে পারে–

    কাল সকালেই আর একবার ওখানে যাব।

    ভাল কথা, বিজিতার আত্মীয়স্বজন কেউ আছে কিনা বাংলাদেশে সংবাদটা জানিবার চেষ্টা করনি?

    না–

    সেটাও অবিশ্যি প্রয়োজন।

    করব।

     

    কিরীটী মনোহরপুকুর রোডেই সুদর্শনকে নামিয়ে দিয়ে চলে গেল।

    সামনে গিয়ে দাঁড়াল, কিন্তু দরজা বন্ধ।

    দরজায় তালা দেওয়া।

    সুদৰ্শন কি করবে ভাবছে এমন সময় একজন তরুণ সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে এল। সুদৰ্শনকে দেখে জিজ্ঞাসা করে, কাকে চান?

    সমীরণবাবুর কাছে এসেছিলাম-কিন্তু দেখছি। দরজায় তালা দেওয়া—

    উনি তো আজ বিকেলের প্লেনে ম্যাড্রাস গেলেন

    ম্যাড্রাস?

    হ্যাঁ-কি গানের রেকর্ডিংয়ের ব্যাপারে—

    কখন গিয়েছেন?

    তা ঠিক জানি না। আমি যখন বের হই, সোয়া তিনটে, তখনো তাকে দেখেছি। কখন গিয়েছেন তা ঠিক বলতে পারব না।

    আপনার সঙ্গে সমীরণবাবুর পরিচয় আছে?

    হ্যাঁ—আমি তো এই পাশের ফ্ল্যাটেই থাকি। তাছাড়া ওঁর কাছে আমি রবীন্দ্ৰ-সংগীতের লেশেন নিই–

    ও, তাহলে তো আপনি তঁর বিশেষ পরিচিতই—

    আপনাকে তো চিনতে পারছি না, কখনো ওঁর কাছে আসতে তো দেখিনি।

    না। আমি, মানে, কলকাতার বাইরে থাকি কিনা—

    তাই—তা কি ব্যাপার বলুন তো? কোন কনফারেন্স নাকি?

    সুদৰ্শন হাসে। বলে, না, অন্য একটু কাজ ছিল। তা উনি কবে আসবেন তা জানেন কিছু?

    দিন পাঁচ-সাত দেরি হতে পারে।

    আপনার নামটা কি জিজ্ঞেস করতে পারি?

    দেবজ্যোতি আচার্য-তা সমীরণদা আসলে কি বলব? আপনার নাম, কোথা থেকে-, কিন্তু দেবজ্যোতির কথা শেষ হল না, সিঁড়িতে পায়ের শব্দ শুনে দুজনেই নীচের দিকে ঘুরে তাকায়।

    কে যেন উঠে আসছে-কান্ত শিথিল পদবিক্ষেপে।

    আরে ওই তো সমীরণদা—এ কি সমীরণদা, আপনি ম্যাড্রাস যাননি?

    সুদৰ্শন তাকিয়েছিল আগুন্তুকের মুখের দিকে। সিঁড়ির আলোটা শক্তিশালী না হলেও স্পষ্টই, সব কিছু দেখা যায়।

    বছর তেত্রিশ-চৌত্ৰিশ হবে সমীরণ দত্তর বয়সী।

    রোগা, লম্বা এবং যাকে বলে রীতিমত সুশ্ৰী চেহারা সমীরণ দত্তর।

    পরনে ধুতি-পাঞ্জাবি-মাথার চুল তৈলহীন রুক্ষ এবং কিছুটা এলোমেলো।

    তীক্ষ্ণ নাসা—সুন্দর দুটি চক্ষু।

    চোখে চশমা।

    তার হাতে কালো রংয়ের একটা সুটকেস, মাঝারি সাইজের। দেবজ্যোতির পাশে সম্পূর্ণ অপরিচিত সুদৰ্শনকে দেখে সমীরণ দত্ত হঠাৎ যেন থমকে সিঁড়ির মাঝপথেই একটা ধাপের উপর দাঁড়িয়ে ছিল।

    দেবজ্যোতি বললে, আমি তো ভেবেছিলাম। এতক্ষণে আপনি ম্যাড্রাস পৌঁছে গিয়েছেন প্লেনে। এই যে এই ভদ্রলোক, আপনাকে খুঁজছিলেন।

    পাশেই দন্ডায়মান সুদৰ্শনকে দেখিয়ে দিল দেবজ্যোতি।

    সমীরণের দিক থেকে কিন্তু কোন সাড়া এল না, সে যেন কেমন বোবার মতই দাঁড়িয়ে আছে তখনো।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleকিরীটী অমনিবাস ৩ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    Next Article কিরীটী অমনিবাস ২ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    Related Articles

    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ১ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ১৩ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ২ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ৩ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ৪ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ৫ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    কিরীটী অমনিবাস ১ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    কিরীটী অমনিবাস ১ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    কিরীটী অমনিবাস ১ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    কিরীটী অমনিবাস ১৩ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    কিরীটী অমনিবাস ২ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.