Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    কিরীটী অমনিবাস ১ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    কিরীটী অমনিবাস ১৩ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    কিরীটী অমনিবাস ২ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    কিরীটী অমনিবাস ৫ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    নীহাররঞ্জন গুপ্ত এক পাতা গল্প397 Mins Read0

    ৩৬-৪০. কিন্তু সুবোধ মিত্রই যে দোষী

    ৩৬.

    কিন্তু সুবোধ মিত্রই যে দোষী, সে সম্পর্কে নিঃসন্দেহ হলেন কখন? সুদর্শন প্রশ্ন করে।

    গুলজার সিংয়ের মৃত্যুর পর। কিরীটী রায় জবাব দেয়।

    কেন? প্রশ্নটা করে সুদর্শন কিরীটীর মুখের দিকে তাকাল।

    তোমার হয়ত মনে আছে সুদর্শন, মৃত গুলজার সিংয়ের মুঠির মধ্যে এক টুকরো সাদা পশম পেয়েছিলে—পরে যেটা তুমি আমাকে দেখিয়েছিলে?

    হ্যাঁ।

    সেই পশমটুকুই আমার দৃষ্টির সামনে সত্যকে উদ্ঘাটিত করে দিল।

    কি রকম?

    মিত্র মশাইকে তুমি যদি ভাল করে স্টাডি করতে বিশেষ তার বেশভূষা, তাহলেই নজরে পড়ত তোমার, সাদা রঙের ওপর তার একটা স্বাভাবিক প্রশ্রয় আছে। সাদা ভয়েল পাঞ্জাবি, সাদা শাল, উলের সোয়েটার। ব্যাপারটা আমার দৃষ্টি এড়ায়নি।

    ওই সাদা পশমটুকু গুলজার সিংয়ের হাতের বড় বড় নখে আটকে গিয়েছিল, হয়ত ধস্তাধস্তির সময় এই পশমটুকু মিত্র মশাইয়ের সে-রাত্রে যে গরম হাতে-বোনা সোয়েটারটা ছিল তা থেকেই ছিঁড়ে এসেছিল।

    হয়ত গুলজার সিংয়ের সঙ্গে সে-রাত্রে মিত্র মশাইয়ের মারামারির মত কিছু একটা হয়েছিল প্রথমে, তারপরই হয়ত প্রথম সুযোগেই ক্লোজ রেঞ্জ থেকে মিত্র মশাই গুলজারকে গুলি করে হত্যা করে। অবিশ্যি তার প্রমাণও আমরা পেয়েছি উন্ডের গায়ে কার্বনডিপজিট থেকে।

    গুলজার সিংও তাহলে ওই দলের?

    নিঃসন্দেহে। নচেৎ বোম্বাই ফিল্মে ফাইনান্স করবার মত অত টাকা সে কোথায় পেত?

    গুলজার সিংকে মিত্র মশাই কেন মেরেছেন বলতে পারেন দাদা?

    মনে নেই তোমার, গাড়িতে আসতে আসতে আজ রাত্রেই তোমাকে বলেছিলাম, গুলজার সিংয়ের ফ্ল্যাট সার্চ করতে গিয়ে তার ঘরে মাধবীর একটা ফটো পাওয়া গিয়েছে!

    হ্যাঁ।

    হয়ত সেই ফটোই হয়েছিল তারপর কাল। মাধবী ছিল মিত্র মশাইয়ের রক্ষিতা কাজেই গুলজার সিংয়ের ঘরে যদি মাধবীর ফটো থাকে আর মিত্র মশাই কোনমতে সেটা জানতে পারেন, ব্যাপারটা তিনি ভাল চোখে অবশ্যই দেখবেন না—দেখতে পারেন না। হয়ত ওই রকম কিছু হয়েছিল, যদিও সেটা আমার অনুমান—আর তাতেই হতভাগ্য গুলজার সিংকে প্রাণ দিতে হল। এবং সেটাই হল মিত্র মশাইয়ের সর্বাপেক্ষা বড় ভুল, সবচেয়ে বেশি অবিবেচনার কাজ।

    কেন?

    কারণ গুলজার সিং নিহত না হলে এত তাড়াতাড়ি হয়ত সমস্ত রহস্যটা চোখের সামনে আমার পরিষ্কার হয়ে যেত না। মিত্র মশাইয়ের ঝাপসা চেহারাটাও এত সহজে স্পষ্ট হয়ে উঠত না। এমনিই হয় সুদর্শন, কোন গ্যাংয়ের মধ্যে কোন নারী থাকলে শেষ পর্যন্ত বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সেই নারীই সমস্ত গ্যাংটার মৃত্যুর কারণ হয়ে ওঠে। মিত্র মশাইয়েরও হল তাই।

    আচ্ছা চোরাই মালের বেচা-কেনাটা কোথায় হত বলে আপনার মনে হয় দাদা?

    তা অবিশ্যি সঠিক জানি না, তবে এটা ঠিক, একটা লভ্যাংশ নিয়ে মাল সব পাচার করত তোমার ঐ রাধেশ্যাম অর্থাৎ নরহরি সরকার। এবং মালের দাম হিসেবে টাকাকড়ি নয়, তাকে দিতে হত সোনার বার বা গিনি-গুনে গুনে। আর গিনিগুলো আসত ঐ মাধবীর হাত দিয়ে।

    ক্রমশ এখন সব বুঝতে পারছি দাদা–

    অথচ নরহরি জানত না, মাধবী কার হাতে গিনি বা সোনার বার পৌঁছে দেয়। সব কিছুর মূলে যে আছেন আমাদের মিত্র মশাই,-সভ্যভব্য শিক্ষিত সুরকার শান্ত মানুষটি, নরহরির সেটা কল্পনাতেও কখনও আসেনি।

    কিন্তু–

    কেন আসেনি, তাই না?

    হ্যাঁ।

    সে-কথা ভাববার তার সময় কোথায় ছিল! সে তো সর্বক্ষণ মাধবীকে পাওয়ার স্বপ্নেই মশগুল ছিল।

    মাধবীরও তাহলে লুঠের মালের ভাগ ছিল?

    নিঃসন্দেহে। আর তার প্রমাণও পাওয়া গেছে।

    কি প্রমাণ?

    কিরীটী বলে, তোমাকে সেকথা বলা হয়নি, তার অফিসের ডেক্সে সেভিংস ডিপজিটের পাসবই পাওয়া গিয়েছে।

    পাসবই।

    হ্যাঁ, আর সেই পাসবইয়ের মধ্যে কত জমা আছে জান?

    কত?

    তাতে জমা আছে ত্রিশ হাজার টাকা!

    সত্যি? বলেন কি দাদা? কথাটা বলে সুদর্শন তাকায় বিস্ময়ে কিরীটর দিকে।

    খুব বিস্ময় লাগছে, তাই না? হাসতে হাসতে কিরীটী বলে, পাখি হয়ত একদিন অকস্মাৎ ডানা মেলে তোমার ওই দশ নম্বর পল্লীর ছোট ঘর থেকে উড়ে যেত, তখন তুমি হয়ত কেবল ভাবতে মাধবী কারও সঙ্গে ভেগেছে! কিন্তু তুমি কল্পনা করতে পারতে না, তার পশ্চাতে ফেলে যাওয়া তার সত্যকারের ইতিহাসটা!

    তারপর ক্রমশ সমস্ত ব্যাপারটা হয়ত একদিন কেবলমাত্র একটি মেয়ের গৃহত্যাগের ব্যাপারেই পর্যবসিত হত। কিন্তু বিধি হল বাম। বেচারী জানতেও পারেনি ইতিমধ্যে কখন তার ভাগ্যাকাশে ঘন কালো মেঘ সঞ্চারিত হয়েছে।

    যাক ভোর হয়ে এসেছে, আর এক প্রস্থ চায়ের যোগাড় কর, তারপর শুরু করা যাবে মিত্র মশাইকে জিজ্ঞাসাবাদ। দেখা যাক, ভদ্রমহোদয় মুখ তার খোলেন কিনা!

    সত্যিই ইতিমধ্যে কখন রাত্রির অন্ধকার শেষ হয়ে ভোরের প্রথম আলো ফুটে উঠেছে একটু একটু করে চারধারে।

    সুদর্শন উঠে গেল চায়ের ব্যবস্থা করতে।

    .

    ৩৭.

    চা-পানের পর আবার যখন সকলে একত্রিত হল, সকাল তখন ছটা প্রায়।

    সকলে এসে পাশের ঘরে ঢুকল।

    চারজন তখনও পাশাপাশি বেঞ্চের ওপরে বসে। কেবল তাদের মধ্যে একজন ছিল না ধৃত ব্যক্তিদের মধ্যে।

    সুবোধ মিত্রের হাতে হাতকড়া লাগানো পুলিস-প্রহরায় তাকে ওদের চোখের আড়ালে থানার কয়েদঘরে রাখা হয়েছিল।

    ওদের সকলকে ঘরে ঢুকতে দেখে নরহরি সরকারই প্রথমে বিরক্তিসূচক কণ্ঠে বলে ওঠে, রাধেশ্যাম! আমাদের এভাবে এনে থানায় আটক করে রাখার কারণটা কি মল্লিক সাহেব?

    নরহরি সুদর্শনকে লক্ষ্য করেই কথাটা বলে।

    এখনও বুঝতে পারেননি, সরকার মশাই! ব্যঙ্গভরা স্বরে সুদর্শন জবাব দেয়।

    রাধেশ্যাম। আজ্ঞে না।

    বোঝেননি?

    না।

    এখন বলুন তো সরকার মশাই, ওয়াগান ভেঙে যেসব মাল রেলওয়ে ইয়ার্ড থেকে চুরি যেত তার কি ব্যবস্থা আপনি করতেন?

    রাধেশ্যাম! এসব কি বলছেন? ছি ছি, শোনাও পাপ। রাধেশ্যাম!

    তাহলে তাই করবেন—সবাইকে তো চালান দিচ্ছি, গাওনা যা গাইবার আদালত কক্ষে জজ সাহেবের সামনে দাঁড়িয়ে করবেন সকলে মিলে। জমবে ভাল, যাত্রার দল তো আপনার তৈরি আছেই। সুদর্শন আবার বলে।

    রাধেশ্যাম! সম্রান্ত ভদ্র ব্যক্তিদের এইভাবে ধরে হেনস্তা করা–

    অকস্মাৎ যেন সুদর্শন খিঁচিয়ে ওঠে নরহরির মুখের দিকে তাকিয়ে থামুন চোরচূড়ামণি! লজ্জা করছে না আপনার, এখনও মুখে রাধেশ্যাম বুলি কপচাচ্ছেন! আপনাকে গুলি করে মারা উচিত।

    পিপীলিকা পাখা ধরে মরিবার আশাতেই। হঠাৎ খগেন পাঠক বলে ওঠে পাশ থেকে।

    কিরীটীই এবারে কথা বলে, পাঠক মশাই, এখনও হয়ত জানেন না আপনি, আপনার সাঙ্গোপাঙ্গরাই শুধু নন—আপনাদের দলপতিও ধরা পড়েছেন!

    কথাটা উচ্চারিত হবার সঙ্গে সঙ্গেই সুদর্শনের যেন মনে হল, নরহরি ও কল্যাণ বোস চমকে উঠল।

    কি কল্যাণবাবু, একেবারে যে চুপচাপ! সুদর্শন আবার বলে, সেদিন চোখে আমার খুব ধুলো দিয়েছিলেন!

    আজ্ঞে বিশ্বাস করুন স্যার, এসবের মধ্যে আমি আদৌ নেই, বিন্দুবিসর্গও এসবের আমি জানি না। কল্যাণ বলে ওঠে।

    কিছুই জানেন না?

    আজ্ঞে বিশ্বাস করুন স্যার—

    আমার বিশ্বাস-অবিশ্বাসে কি আসে-যায়! আদালতে হাকিম সাহেবকে যদি বিশ্বাস করাতে পারেন, তাহলেই হবে।

    খগেন পাঠক অনুচ্চ কণ্ঠে ওই সময় বলে, শালা।

    সুদর্শন হেসে ফেলে।

    কিরীটী আবার বলে, এখনও সবাই আপনারা যে যতটুকু জানেন স্বীকার করুন, আইনের হাত থেকে—গুরুদণ্ড থেকে যদি বাঁচতে চান!

    অবিনাশ ওই সময় বলে ওঠে, ওই—ওই শালা পাঠকই যত নাটের গুরু। ওই-ই টাকার লোভ দেখিয়ে আমাকে ওদের দলে টেনেছিল।

    আর আপনিও সুবোধ বালকের মত ভ্যান লুট করবার ব্যাপারে লেগে গেলেন, তাই না অবিনাশবাবু! এবং শুধু তাই নয়, নিজের মায়ের পেটের বোনটিও যে ওই দলে ভিড়েছে—জেনেও চুপ করে রইলেন! বলে ওঠে সুদর্শন।

    হঠাৎ যেন খগেন, অবিনাশ ও নরহরির মুখটা চুপসে গেল সুদর্শনের শেষ কথায়।

    কি, মুখ শুকিয়ে গেল যে একেবারে অবিনাশবাবু আপনাদের?

    সুদর্শন! কিরীটী ডাকল।

    দাদা!

    যাও, ওদের দলপতিকে ওদের সামনে এনে একবার দাঁড় করাতে বল।

    সুদর্শন বের হয়ে গেল ঘর থেকে।

    ওরা সকলই উপস্থিত পরস্পরের মুখ চাওয়া-চাওয়ি করে।

    একটু পরে হাতকড়া পরা অবস্থায় সুবোধ মিত্রকে দুজন আমর্ড কনস্টেবল ঘরে এনে ঢোকাতেই সকলের গলা থেকেই বিস্ময়ভরা স্বর নির্গত হয় একত্রে যেন।

    নরহরি বলে, সুবোধ!

    খগেন পাঠক বলে, সুবোধবাবু!

    অবিনাশ বলে, সুবোধ!

    কল্যাণ বসু বলে, সুবোধবাবু।

    আর সুবোধ ওদের মুখের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে।

    কিরীটী বলে, কি হল সরকারমশাই, আপনার তো আজ অত চমকাবার কথা নয় আপনি তো বোধ হয় দু-একদিন আগেই ব্যাপারটা অনুমান করতে পেরেছিলেন।

    রাধেশ্যাম! তাহলে সত্যিই ড়ুবলাম?

    হ্যাঁ, একবারে অগাধ জলে!

    .

    বুঝতে কারোই আর কষ্ট হয় না, হাতকড়াবদ্ধ অবস্থায় ঐভাবে সুবোধ মিত্রকে। সামনে দেখে ও কিরীটীর কথা শুনে সকলেরই মনোবল যেন ভেঙে গিয়েছে তখন।

    কি, এবারে নিশ্চয়ই স্বীকার করবেন আপনারা যে যা জানেন! কিরীটী বলে সকলের ॥ মুখের দিকে তাকিয়ে।

    সকলেই পর্যায়ক্রমে একে একে তখন নরহরির মুখের দিকে তাকাচ্ছ শ্যেনদৃষ্টিতে।

    কিরীটী ব্যাপারটা বুঝতে পারে। বলে, মনে হচ্ছে আপনারা ঐ রাধেশ্যামকেই চিনতেন!

    একে একে সকলেই স্বীকার করে, তারা নরহরিকেই চিনত। ওয়াগন ভেঙে মাল চুরি করে নরহরির নির্দেশমতই ট্রাকে মাল চালান করে দিত, তারপর নরহরিই সকলকে যা টাকা-পয়সা দেবার দিত।

    নরহরি বলল, দোহাই ধর্মের, আমি বিশেষ কিছুই জানি না। মাল শুধু পাচার করে দিতাম মাধবীর নির্দেশমত এবং মাধবী যেমন যেমন বলে যেত তেমনিই করা হত। দোহাই হুজুরের। রাধেশ্যাম! আমি কখনও মাল চুরিও করিনি-মালে হাতও দিইনি!

    হ্যাঁ, কেবল বেচা-কেনাটা করেছেন! কিরীটী হাসতে হাসতে বললে।

    সুবোধ মিত্র কিন্তু একটি কথাও বললে না। মুখ বন্ধ করেই রইল আগাগোড়া।

    বেলা দশটা নাগাদ পুলিশ ভ্যানে চাপিয়ে হাতে হাতকড়া, কোমরে দড়ি—সকলকে কলকাতায় লালবাজারে চালান করে দিল সুদর্শন।

    দশ নম্বর পল্লীর ঘরে ঘরে তখন গুঞ্জন। সমস্ত পল্লীতে যেন সাড়া পড়ে গেছে।

    আর এক প্রস্থ চা-পানের পর কিরীটী ও সুব্রত অনেক আগেই বিদায় নিয়েছিল।

    কল্যাণ মিত্র পুলিস-ভ্যানের ইনচার্জ হয়ে গেল।

    .

    ৩৮.

    দশ নম্বর পল্লীতে সুবোধ মিত্রের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে রীতিমত যেন একটা সাড়া পড়ে গিয়েছিল। ব্যাপারটা যেন সত্যিই কল্পনারও অতীত। সুবোধ মিত্রের মত একজন শিক্ষিত নির্বিরোধী ভদ্র যুবক—সে যে মালগাড়ির দরজা ভেঙে মালপাচার করতে পারে ও মাধবী ও গুলজার সিংকে হত্যা করতে পারে অমন নৃশংসভাবে, ব্যাপারটা যেন পল্লীর সকলকে একেবারে বিস্ময়ে স্তম্ভিত করে দিয়েছিল। সকলের মুখেই এক কথা, শেষে ঐ সুবোধ–সুবোধের কাজ! তাও তো ভিতরের আসল ব্যাপারটা-মাধবীর সঙ্গে সুবোধ মিত্রের সত্যিকারের কি সম্পর্ক ছিল, সেটা কেউ জানতে পারেনি!

    অবিশ্যি আর কেউ না জানতে পারলেও মাধবীর মা-বাবা জানতে পেরেছিলেন। দুজনেই যেন একেবারে বোবা হয়ে গিয়েছিলেন। তার উপর বড় ছেলে অবিনাশ, সেও ঐ দলে ছিল—সে সংবাদটাও তাদের পক্ষে কম মর্মান্তিক ছিল না।

    ঐ ঘটনার দিন-দুই পরে।

    দুটো দিন সুদর্শন অত্যন্ত ব্যস্ত ছিল রিপোর্ট তৈরি করবার ব্যাপার নিয়ে।

    তৃতীয় দিন সকালের দিকে সুদর্শন কিরীটীর ফোন পেল।

    কিরীটী বলে গিয়েছিল সুদর্শনকে, সন্ধ্যার দিকে যেন সে একবার তার ওখানে যায় তার এদিককার কাজকর্ম সেরে।

    বিকেল পাঁচটা নাগাদ সুদর্শন বের হল।

    প্রত্যেহই সাবিত্রীর খোঁজ নিয়েছে সে হাসপাতালে। সাবিত্রী ক্রমে সুস্থ হয়ে উঠছে। কিরীটীর ওখানে যাবার জন্য বের হয়ে প্রথমেই সুদর্শন গেল হাসপাতালে।

    হাসপাতালের কেবিনেই কিরীটীর নির্দেশমতই সাবিত্রীকে চব্বিশ ঘণ্টা পুলিস প্রহরার মধ্যে রাখা হয়েছিল।

    বাইরের কাউকে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছিল না।

    হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা, সাবিত্রী চোখ বুঝে শয্যার ওপর শুয়ে ছিল।

    সুদর্শন কেবিনে এসে প্রবশ করল।

    পদশব্দে সাবিত্রী চোখ খুলে সুদর্শনের দিকে তাকাল।

    সাবিত্রী!

    মৃদু গলায় ডাকল সুদর্শন শয্যার কাছে গিয়ে।

    সাবিত্রী মুখটা ঘুরিয়ে নেয়।

    কাছে গিয়ে পাশের টুলটায় বসে সুদর্শন সাবিত্রীর রুক্ষ চুলে একখানি হাত রেখে স্নেহ-কোমল কণ্ঠে বলে, কেমন আছ সাবিত্রী?

    সাবিত্রী কোন সাড়া দেয় না। মুখটা ঘুরিয়েই থাকে।

    কথা বলবে না সাবিত্রী! আমার দিকে তাকাও সাবিত্রী!

    সাবিত্রী সাড়া দেয় না, মুখ ঘুরিয়েই থাকে।

    সাবিত্রী, লক্ষ্মীটি, শোন!

    তবু সাবিত্রী সাড়া দেয় না।

    তাকাও সাবিত্রী আমার দিকে! আবার বলে।

    সাবিত্রী তথাপি নীরব, নিশ্চল।

    আবারও ডাকে সুদর্শন।

    এতক্ষণে সাবিত্রী মুখ ফিরিয়ে তাকাল সুদর্শনের দিকে। তার দুচোখে জল।

    সাবিত্রী!

    কেন এসেছেন আপনি? ছি ছি, লোকে কি ভাববে—এখন স্মাগলারের বোন—

    তার জন্যে তো তোমার কোন অপরাধ নেই সাবিত্রী–

    না, না। সাবিত্রী দুহাতে মুখ ঢাকে।

    সাবিত্রী, শোন–

    না, না। আপনি যান—যান।

    কিরীটী রায় বলেছেন, তুমি খাঁটি হীরে, নিষ্পাপ।

    না, না, আমি হীরে নই, নিষ্পাপও নই—আমারও দোষ ছিল।

    কি দোষ ছিল তোমার?

    সব কথা আপনাকেও বলিনি—বলতে পারিনি—

    বলনি ঠিকই, কিন্তু তাতে তোমার অপরাধটা কোথায়?

    অপরাধ নেই?

    ন।

    আপনি বিশ্বাস করেন সে-কথা?

    করি।

    সত্যি বলছেন?

    সত্যি বলছি।

    কিন্তু কেউ তো সে-কথা বিশ্বাস করবে না। বলবে আমার বোন—আমার ভাই–

    তোমার দিদি-তোমার দাদা যদি কোন অপরাধে অপরাধী হয়, তার জন্য তোমাকে কেন অপযশ কুড়াতে হবে?

    হবে, আপনি জানেন না—

    কিছু হবে না।

    এ আপনি কি বলছেন?

    ঠিকই বলছি।

    সাবিত্রীর দুচোখে জল।

    কান্নাঝরা গলায় বলে, কিন্তু এরপর কেমন করে আবার আমি ঐ পল্লীতে সবার সামনে ফিরে যাব!

    ফিরবেই বা কেন সেখানে আবার তুমি?

    তবে কোথায় যাব?

    যদি তোমার আপত্তি না থাকে—

    কি?

    আমার কাছে তুমি যাবে।

    আপনার কাছে?

    হ্যাঁ, আমার ঘরে।

    সাবিত্রীর দুচোখের কোল বেয়ে ফোঁটায় ফোঁটায় অশ্রু গড়িয়ে পড়ে।

    শোন সাবিত্রী, তুমি সুস্থ হয়ে ওঠার আগেই সব ব্যবস্থা আমি করে ফেলব। কালই ডি. সি.-কে আমায় নতুন থানায় পোস্টিং করবার জন্য বলব। সেখানে নতুন কোয়ার্টারে নিয়ে গিয়ে তোমাকে আমি তুলব।

    মা, বাবা—

    অবশ্য তাদের মত নেব বৈকি! কি, রাজী তো?

    সাবিত্রী কোন জবাব দেয় না, চোখ বুজিয়ে ফেলে।

    সাবি!

    ছোড়দা এসেছিল, কিন্তু তাকে আমার সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি এরা—

    দেয়নি?

    না।

    সুদর্শন বলে, যা ঘটে গিয়েছে তার জন্য তুমি নিজেকে বিব্রত বা অপরাধীই বোধ করছ কেন সাবিত্রী!

    সাবিত্রী বললে, কেমন করে ভুলব বলুন তারা আমারই দিদি, আমারই দাদা

    তা হলেই বা। ওসব চিন্তা তুমি মন থেকে তোমার মুছে ফেলে দাও। যা হয়ে গিয়েছে গিয়েছে, সামনে তোমার নতুন জীবন!

    সাবিত্রী কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে জিজ্ঞাসা করে, একটা কথা বলল?

    বল।

    বাবা সব জানেন? জানতে পেরেছেন?

    যতটা শুনেছি বোধ হয় সব না হলেও কিছু কিছু জানতে পেরেছেন। সংসারে দুঃসংবাদ দেবারও লোকের অভাব হয় না সাবিত্রী। তাছাড়া দুঃসংবাদ হাওয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। আর এখনও যদি না জানতে পেরে থাকেন সব কথা—কিন্তু আর চাপাও থাকতে পারে না, কানে যাবেই তাঁর।

    জানি। আমি যদি হাসপাতাল না আসতাম হয়ত একটা ব্যবস্থা হত। আর বাড়িতে এখন কেউ নেই–

    কেন, তোমার ছোড়দা তো আছেন?

    তা আছেন।

    তবে?

    ছোড়দা অত বুঝেসুঝে চলতে পারে না কোনদিনই, তাই ভাবছি—

    কি?

    বাবা হয়ত সব শুনে আর বাঁচবেন না। দিদিকে যে তিনি কি ভালবাসতেন আর কেউ না জানলেও আমি তো জানি। আর বাবা জানতে পারবেন বলেই এতদিন দিদির সব কিছু ব্যাপার জেনেও মুখ বুজে থেকেছি।

    তোমার দিদি জানত যে তুমি সব জান?

    বোধ হয় না।

    আচ্ছা একটা কথার জবাব দেবে সাবিত্রী?

    কি?

    কেমন করে প্রথম তুমি জানতে পেরেছিলে সব?

    হঠাৎ একদিন রাত্রে—

    বল, থামল কেন?

    মধ্যে মধ্যে ফিরতে দিদির রাত হত, এমন কি কখনও কখনও রাত সাড়ে বারোটা একটা। কেউ জানত না। আমিই সদর দরজা খুলে দিতাম দিদি ডাকলে। আমি যে তার পথ চেয়ে জেগে বসে থাকি তা দিদি জানত না। সে জানত ঘুম আমার পাতলা, এক ডাকেই উঠে পড়ি। তাই যে রাত্রে ফিরতে দেরি হত, আমাকে বলে যেত। আর আমি এদিকে দিদি কখন ফিরবে সে আশায়—পাছে তার অত রাত্রে আসার কথা কেউ জানতে পারে, পাছে দিদির ডাকাডাকিতে মা-বাবার ঘুম ভেঙে যায় সেই ভয়ে-জেগে বসে থাকতাম।

    .

    ৩৯.

    সুদর্শন একটু থেমে প্রশ্ন করে, তোমার দিদির সঙ্গে যে সুবোধবাবুর ঘনিষ্ঠতা ছিল জানলে কি করে প্রথম?

    আমার ওদের হাবভাব দেখে সন্দেহ যে হয়নি তা নয়, তবে এতটা যে ভাবতে পারিনি কখনও।

    তারপর?

    এক রাত্রে, আমি জেগেই ছিলাম দিদির অপেক্ষায়, হঠাৎ দিদি ও সুবোধদার গলার স্বর আমার কানে এল। আমাদের দরজার বাইরে ওরা দাঁড়িয়ে কথা বলছে–

    তোমার দিদি আর সুবোধবাবু?

    হ্যাঁ।

    কি কথা বলছিল তারা?

    দিদি বলছিল, এবার যাও, সাবি জানতে পারলে কেলেঙ্কারি হবে!

    সুবোধা হেসে জবাব দিল, কি আর কেলেঙ্কারি হবে! দুচারটে সোনার গয়না দিলেই চুপ করে যাবে। তোমাদের মেয়েদের চরিত্র তো আমার কিছু জানতে বাকি নেই!

    সবাই মাধবী ভাবো, তাই না সুবোধ? দিদি জবাব দিল।

    ভাবি বৈকি। সুবোধদা বললে।

    তারপর সুবোধদা চলে গেল, দিদিও এসে দরজায় টোকা দিল। আমি উঠে দরজা খুলে দিলাম। তা সত্ত্বেও ওদের মধ্যে যে অতটা ঘনিষ্ঠতা হয়েছে বুঝতে পারিনি। সাবিত্রী চুপ করল।

    বল, থামলে কেন?

    সাবিত্রী বলতে লাগল, দিন কয়েক বাদে অমনি এক রাত্রে দিদির অপেক্ষায় জেগে আছি, হঠাৎ ওদের দুজনের গলার স্বর কানে এল। কি খেয়াল হল, জানলা দিয়ে উঁকি দিলাম জ্যোৎস্না ছিল অল্প অল্প সে-রাত্রে, রাত বারোটা বেজে গিয়েছে, দেখলাম

    কি?

    সুবোধা—

    বল, বল!

    সুবোধা দিদিকে দুহাতে বুকে জাপটে ধরে–, সাবিত্রী আর বলতে পারে না, থেমে গেল। একটু থেমে আবার সাবিত্রী বলতে শুরু করে, আর এক রাত্রে–

    কি?

    অমনি জেগে ছিলাম, হঠাৎ দিদি আর সুবোধদার গলা শোনা গেল। শুনলাম দিদিকে সুবোধা বলছে, কাল একবার রাত্রে রাধেশ্যামের সঙ্গে দেখা করো, গতবারের মালের টাকা এখনও দেয়নি।

    এবারে কি মাল ও পাচার করেছে? দিদি শুধায়।

    সুবোধদা জবাব দেয়, দশ পেটি টেরিলিন ও সিল্ক–বেশ মোটা দাঁও—

    ব্যাপারটা কিন্তু খুব risky সুবোধ—

    ধ্যাৎ, no risk–no gain! বেঁচে থাক্ railway yeard যাক যা বললাম মনে থাকে যেন, বিশ-পঁচিশ হাজার টাকার মাল হবে—অনেক টাকা পাব শালার কাছে

    দিদি তারপরই বললে, যাই বল সুবোধ, আমার বড় কেন যেন ভয় করে ওর কাছে যেতে রাত্রে–

    কেন?

    ও এমন শকুনের মত আমার দিকে তাকায়।

    দোব হারামজাদার চোখ দুটো একদিন লোহার শলা দিয়ে গেলে। দিতামও—কেবল লোকটা বিশ্বাসী, তাই চুপ করে আছি।

    তারপরই দিদি বললে, গতবার তুমি আমাকে কিছুই দাওনি—

    দোব। এবারে এক থেকে দুহাজার দোব। সুবোধদা হাসতে হাসতে দিদিকে বললে।

    শুনতে শুনতে আমি তখন যেন পাথর হয়ে গেছি। বলতে লাগল সাবিত্রী।

    তারপর?

    ঐ ঘটনারই দিন দুই বাদে হঠাৎ একদিন দিদির ব্যাগে দেখি দুটো সোনার বার আর আশিটা গিনি। আমার কিছুই আর তখন জানতে বাকি থাকে না।

    আশ্চর্য! সুদর্শন বলে।

    কি?

    কিরীটীদা কিন্তু একেবারে ঠিক ঠিক অনুমান করেছিলেন!

    কিরীটী কে?

    আমার দাদা—কিরীটী রায়, বিখ্যাত সত্যসন্ধানী। সেদিন রাত্রে সুবোধের বাড়ি রেড করবার সময় যাকে আমার পাশে দেখছিলে—লম্বা, চোখে কালো ফ্রেমের চশমা–

    হঠাৎ সাবিত্রী বলে, একটা কথা বলব?

    কি?

    আমাকেও বোধ হয় বিচারের সময় আদালতে গিয়ে সাক্ষী দিতে হবে?

    কেন?

    আমারই তো ভাই-বোন ছিল তারা। তাছাড়া—

    তা কেন হবে?

    সুবোধদা যদি আদালতে দিদির কথা তোলে!

    মনে হয় তুলবে না। তবে যদি তোলেই, তোমাকে যাতে না যেতে হয় সেই চেষ্টাই করা হবে। তাছাড়া তোমার নাম রিপোর্টে কোথাও নেই—থাকবেও না।

    সত্যি?

    হ্যাঁ।

    সত্যি বলছ? আদালতে আমাকে যেতে হবে না?

    না।

    কিন্তু

    বল!

    মা-বাবা—

    না, তাঁদেরও যাতে না যেতে হয় সেই ব্যবস্থাই করা হবে। তবে—

    তবে কি?

    তোমার ছোড়দাকে হয়ত একবার যেতে হতে পারে।

    সাবিত্রী হাত বাড়িয়ে সুদর্শনের একটা হাত চেপে ধরে।–আঃ, তুমি আমায় বাঁচালে। আদালতের কথা ভাবতে ভাবতে আমার যেন দম বন্ধ হয়ে আসছিল এ কদিন।

    এখন আর ভয় নেই তো? সুদর্শন মৃদু হেসে সাবিত্রীর মুখের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে।

    না।

    সত্যি বলছ?

    সত্যি।

    একটু পরে আবার সুদর্শন মৃদু গলায় ডাকে, সাবিত্রী!

    সাবিত্রীর একটা হাত তখনও সুদর্শনর হাতের মধ্যে ধরা।

    সাবিত্রী!

    বল।

    এবারে তাহলে আমি উঠি আজকের মত?

    যাবে?

    হ্যাঁ।

    কাল আসবে না?

    আসব বৈকি।

    কখন?

    বিকেলে।

    .

    ৪০.

    হাসপাতাল থেকে যখন বের হল সুদর্শন, বিকেলের আলো মিলিয়ে গিয়েছে। বুকের মধ্যে তার যেন একটা খুশির বন্যা বয়ে যাচ্ছিল।

    সাবিত্রী—তার সাবিত্রী-আজ বুঝতে কষ্ট হয়নি, তার সাবিত্রী তার প্রতি আসক্ত। তাই কেবল নয়—এক-একবার মনে হয় সুদর্শনের, কিরীটীর ওখানে আজ আর যাবে না, এখানে-ওখানে খানিকটা ঘুরে ঘুরে বেড়াবে।

    তারপরেই আবার মনে হয়, কিরীটী তাকে যেতে বলেছেন—না গেলে তিনি অসন্তুষ্ট হবেন।

    মনের মধ্যে যেন একটা সুর গুনগুনিয়ে চলেছে।

    কিরীটীর গৃহ পৌঁছতে পৌঁছতে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল সুদর্শনের।

    সুদর্শন কিরীটীর মেজোনিন ফ্লোরের ঘরের কাচের দরজা ঠেলে ভেতরে পা দিতেই স্মিতকণ্ঠে কিরীটী আহ্বান জানাল, এস, এস ভায়া! তারপর সংবাদ সব শুভ তো?

    কীসের সংবাদ দাদা?

    যে সংবাদের জন্য অধীর প্রতীক্ষ্ণয় আছি! কিরীটী বলে হাসতে হাসতে।

    তা না বললে বুঝব কি করে?

    বুঝতে পারছ না? কোন্ সংবাদের জন্য অধীর হয়ে আছি?

    না।

    কৃষ্ণা!

    কিরীটী কৃষ্ণার মুখের দিকে এবারে তাকাল।

    তুমিই তাহলে সংবাদটা নাও!

    কৃষ্ণাও ঘরে ছিল। সে বললে, হাসপাতালে গিয়েছিলেন সুদর্শনবাবু?

    হ্যাঁ, গিয়েছিলাম। অসতর্ক ভাবেই যেন কথাটা বলে ফেলে সুদর্শন।

    কিরীটী হো হো করে হেসে ওঠে।

    এবারে কৃষ্ণাই বলে, সাবিত্রী কেমন আছে?

    ভাল।

    কিরীটী ঐ সময় বলে ওঠে, তাহলে ভায়া, এক প্রজাপতি তার রঙের খেলায় তোমার চোখ ধাঁধিয়ে দিলেও অন্য প্রজাপতি সত্যিই তোমার জীবনে রঙ নিয়ে এল।

    দাদা, আপনি যদি কেবলই ওই সব কথা বলেন তো আমি উঠে যাব!

    আরে না না-বসো। আরও একটা সুখবর আছে হে।

    সুখবর!

    হ্যাঁ। কিরীটী বললে, তোমার কর্তার সঙ্গে ফোনে কথা হচ্ছিল আজই দুপুরে।

    তাই নাকি?

    হ্যাঁ, বললেন, তোমার প্রমোশনের জন্য তিনি রেকমেন্ড করবেন।

    কৃষ্ণা বললে, বসো তোমরা, আমি চা নিয়ে আসি।

    কিরীটী বলল, সুদর্শনের জন্য মিষ্টিও এনো কৃষ্ণা।

    কৃষ্ণা হাসতে হাসতে ঘর থেকে বের হয়ে গেল।

    তারপর? সাবিত্রী কি বললে? কিরীটী ওর মুখের দিকে তাকিয়ে শুধায়।

    আপনার ধারণাই ঠিক দাদা।

    সুদর্শন বলতে শুরু করে সাবিত্রীর মুখ থেকে শোনা কাহিনী।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleকিরীটী অমনিবাস ৭ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    Next Article কিরীটী অমনিবাস ৪ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    Related Articles

    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ১ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ১৩ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ২ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ১২ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ৩ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    কিরীটী অমনিবাস ৪ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    কিরীটী অমনিবাস ১ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    কিরীটী অমনিবাস ১ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    কিরীটী অমনিবাস ১ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    কিরীটী অমনিবাস ১৩ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025

    কিরীটী অমনিবাস ২ – নীহাররঞ্জন গুপ্ত

    September 8, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.