Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে বাঙলাদেশের কৃষক – বদরুদ্দীন উমর

    October 29, 2025

    পূর্ব বাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি ২ – বদরুদ্দীন উমর

    October 29, 2025

    বাঙলাদেশে কমিউনিস্ট আন্দোলনের সমস্যা – বদরুদ্দীন উমর

    October 29, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    কেন আমি ধর্মবিশ্বাসী নই – বার্ট্রান্ড রাসেল

    বার্ট্রান্ড রাসেল এক পাতা গল্প318 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ০৬. ক্যাথলিক ও প্রোটেষ্ট্যান্ট সন্দেহবাদ প্রসঙ্গে

    ৬. ক্যাথলিক ও প্রোটেষ্ট্যান্ট সন্দেহবাদ প্রসঙ্গে

    (১৯২৮ সালে লিখিত)

    যদি কোন ব্যক্তি বিভিন্ন দেশ ও বিভিন্ন জাতির মুক্তচিন্তাসম্পন্ন মানুষের সাথে বেশি যোগাযোগ রাখে তবে সে ক্যাথলিক ও প্রোটেষ্ট্যান্ট ধর্মের উৎস দুটির মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য লক্ষ্য করবে। যদিও তারা অনেকটা কল্পনা করে নিতে পারে যে তারা সেই ধর্মতত্ত্বকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে যা যুবক বয়সে তাদের শেখানো হয়েছিল। প্রোটেষ্ট্যান্টও ক্যাথলিকদের মধ্যে পার্থক্যটা ঠিক সেই রকম যে রকম পার্থক্য মুক্ত-চিন্তাবিদ ও বিশ্বাসীদের মধ্যে হয়ে থাকে। প্রকৃতপক্ষে, প্রয়োজনীয় পার্থক্যটি আবিষ্কার করা হয়ত সোজা, যেহেতু ধর্মমত থেকে সরে যাবার সুস্পষ্ট প্রবণতার পেছনে তাদের লুকিয়ে রাখা হয় না। এ’সম্পর্কে একটা অসুবিধা আছে, আর তা হল, বেশিরভাগ প্রোটেষ্ট্যান্ট নাস্তিক ইংরেজ অথবা জার্মান, যখন বেশির ভাগ ক্যাথলিক হল ফরাসী। গিবনের মতো যে-সব ইংরেজ ব্যক্তি আছেন তারা ফরাসী চিন্তাভাবনার সঙ্গে অন্তরঙ্গ যোগাযোগের ফলে প্রোটেষ্ট্যান্ট ধরণের রীতির বদলে ক্যাথলিক মুক্ত-চিন্তাবিদদের চারিত্রিক গুণাগুণ অর্জন করেন। অধিকন্তু যে বড় ধরণের পার্থক্যটি পড়ে থাকে তা ঠিক কোথায় থাকে তা খুঁজে বার করবার প্রচেষ্টাটি আনন্দজনক হতে পারে।

    যে-কেউ সম্পূর্ণ বৈশিষ্ট্যমূলক প্রোটেষ্ট্যান্ট চিন্তাবিদ হিসেবে জেমস মিলকে নিতে পারে । যিনি তাঁর পুত্রের দ্বারা রচিত “আমার পিতা’ নামক আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থে যেভাবে আবির্ভূত হয়েছেন, সে সম্পর্কে জন স্টুয়ার্ট মিল বলেছেন, আমার পিতা স্কচ প্রেসবাইটারিয়ানবাদ (একটি বিশেষ ধরণের গীর্জা যা প্রেসবাইটারদের শাসনে পরিচালিত হত এবং যে গীর্জাগুলো স্কটল্যান্ড গীর্জাগুলোর থেকে স্বাধীন ছিল। যেখানে স্বাধীন-চিন্তাকে কোনরকম বাধা দেওয়া হত না–অনুবাদক) প্রসূত কর্মকাণ্ডের দ্বারা শিক্ষিত ছিলেন। তিনি তাঁর নিজের অধ্যয়নপ্রসূত মননের দ্বারা আগেই যে বাইবেলের শেষ গ্রন্থে বা প্রত্যাদেশে বর্ণিত বিশ্বাসকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন তা নয়, যাকে সাধারণভাবে প্রাকৃতিক ধর্ম বলা হয়ে থাকে তাকেও প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। আমার পিতা সেই সমস্ত কিছুকেই প্রত্যাখ্যান করেছিলেন যাকে ধর্মীয় বিশ্বাস বলা হয়ে থাকে। কিন্তু সবাই যা মনে করতে পারে এটা সেরকম ছিল না। এই প্রত্যাখ্যান প্রাথমিকভাবে যুক্তি-তর্ক-প্রমাণ প্রভৃতির উপর নির্ভর করে বেড়ে ওঠেনি। তার ভিত্তি ছিল নৈতিকতা, যা এখনও বিদ্যাবুদ্ধির চেয়ে অনেক বেশি। তিনি এই ব্যাপারটা বিশ্বাস করা অসম্ভব বলে মনে করেছেন, যে জগৎ এত অশুভ শক্তিতে পূর্ণ সেই জগৎ একজন অসীম ক্ষমতাসম্পন্ন মঙ্গলময় ও ন্যায়পরায়ণ স্রষ্টার দ্বারা রচিত… ধর্মের প্রতি তার এই অনীহা, অর্থাৎ ধর্ম বলতে সাধারণত যা বোঝান হয়ে থাকে তার প্রতি অনীহা, লুক্ৰেতিউসের মতোই ছিল। তিনি এই অনুভব নিয়ে ব্যাপারটিকে দেখতেন যে এটা শুধু মানসিকভাবে প্রবঞ্চনাকরই নয়, এটা বিরাট ধরণের নৈতিক বিপদ। আমার পিতার কর্তব্যের আদর্শের সঙ্গে ধর্ম ব্যাপারটি সম্পূর্ণ অসঙ্গতিকর ছিল। তিনি আমাকে ধর্ম সম্পর্কে তার বিশ্বাস সমূহ ও অনুভূতির বিরোধ মতো পোষণ করার অনুমতি দিতেন। প্রথম থেকেই এই বলে আমার মনে দাগ কেটে দিয়েছিলেন যে, কিভাবে জগতের আবির্ভাব হয়েছিল সে বিষয়টি সম্পর্কে কিছুই জানা যায়নি। তথাপি জেমস্ মিল নিঃসন্দেহে একজন প্রোটেষ্ট্যান্ট হয়েই রয়ে গিয়ে ছিলেন। তিনি আমাদের সংস্কারের প্রতি শক্তিশালী ভাবে উৎসাহী হয়ে ওঠার শিক্ষা দিয়েছেন। স্বাধীন চিন্তার ক্ষেত্রে পুরোহিতদের স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত লড়াইয়ের জন্য তিনি আমাকে সংস্কারের প্রতি শক্তিশালীভাবে উৎসাহী হয়ে ওঠারও শিক্ষা দিয়েছিলেন।

    এই সমস্ত ক্ষেত্রে জেমস্ মিল কেবলমাত্র জন নক্সের প্রেরণাকেই বহন করে চলেছিলেন। তিনি ছিলেন প্রচলিত ধর্ম বিশ্বাসের বিরুদ্ধে। জন নক্স একটি চরমপন্থী সম্প্রদায়ভুক্ত ব্যক্তি হয়েও সেই নৈতিক আগ্রহ এবং ধর্মতত্ত্বে উৎসাহকে ধরে রেখেছিলেন যা তাঁর পূর্বপুরুষদের বিশেষ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন করে তুলেছিল। প্রথম থেকে প্রোটেস্ট্যান্টরা তাদের বিরুদ্ধ সম্প্রদায়ের থেকে বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন হয়ে উঠেছিল বিরুদ্ধ সম্প্রদায়ের মতগুলোকে বিশ্বাস না করে। এইজন্য আরও একটি মতকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়াটা আরও এক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার নৈতিক উৎসাহ হিসেবে সমস্ত বিষয়ের সার।

    এটাই প্রোটেষ্ট্যান্ট এবং ক্যাথলিকদের নৈতিকতার মধ্যে মৌলিক পার্থক্য। প্রোটেষ্ট্যান্টদের কাছে সেই মানুষই অসাধারণ ভালো মানুষ যে কর্তৃত্বদের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং ওয়রসের (Worms) ভোজন উৎসবে লুথারের মতো করে মতবাদসমূহকে গ্রহণ করে। প্রোটেষ্ট্যান্টদের মঙ্গলময়তা সম্পর্কে ধারণা কিছুটা ব্যক্তিতান্ত্রিক এবং বিচ্ছিন্ন। আমি নিজেই একজন প্রোটেষ্ট্যান্ট হিসেবে শিক্ষিত হয়েছি এবং সেই সময় অনেকগুলি বাক্য আমার যুব মনে যথেষ্ট পরিমাণ দাগ কেটে গেছে। সেটি হল, অনেক পথ অনুসরণ কর না, তাহলেই অনিষ্ট করবে। আমি সচেতনতার সঙ্গে বলতে পারি আজকের দিনটাতেও এই বাক্যটি আমার সুগভীর কাজগুলোতে প্রভাব সৃষ্টি করে। ধার্মিকতা সম্পর্কে ক্যাথলিকদের ধারণা একেবারেই আলাদা তাদের কাছে সমস্ত রকম ধার্মিকতাই এমন বস্তু যার কাছে বশ্যতা স্বীকার করতেই হবে। কেবলমাত্র ঈশ্বরের কণ্ঠ হিসেবে বিবেকের কথা মেনে নিলেই চলবে না। প্রত্যাদেশ বা বাইবেলের শেষ গ্রন্থের শ্বাসপ্রশ্বাস যন্ত্র গীর্জার কর্তৃত্বকেও মেনে নিতে হবে। এই ব্যবস্থা ক্যাথলিকদের ধার্মিকতার ধারণাকে প্রোটেষ্ট্যান্টদের থেকে অনেক বেশি সামাজিক করে তুলেছে এবং তাদের প্যাঁচকলকে আরও বেশি বড় করে তোলে যখন সে গীর্জার হয়ে কাজ করে। প্রোটেষ্ট্যান্টরা তাদের সেই বিশেষ প্রোটেষ্ট্যান্ট সম্প্রদায়কে পরিত্যাগ করে যেখানে তারা লালিত-পালিত হয়েছিল এবং তা করে এই কারণে যে বহু আগে এই সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতারা বর্তমান যুগ অনুযায়ী কাজগুলো করে যেতে পারেনি বলে। এইজন্য নতুন সম্প্রদায়ের সঙ্গে মানিয়ে চলাটাই এখন প্রোটেষ্ট্যান্টদের মানসিকতা। অন্যদিকে ক্যাথলিকরা চার্চের সমর্থন ব্যতীত নিজেদেরকে অসহায় অনুভব করে। যদিও সে যুক্ত হতে পারে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানসমূহের সঙ্গে, যেমন পরস্পর সহযোগিতা ও ভ্রাতৃপ্রেমের আদর্শে স্থাপিত কোন গুপ্ত সমিতিতে। কিন্তু সে হতাশাপ্রসূত বিদ্রোহ সম্পর্কে সর্বদাই সজাগ থাকে। সে সাধারণত তার অবচেতন মনের যে-কোন মাত্রায় এ বিষয়ে বিশ্বাস রাখে যে নৈতিক জীবন গীর্জার সভ্যদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। অতএব স্বাধীন-চিন্তাবিদদের ক্ষেত্রে উচ্চ ধরণের ধার্মিকতা পোষণ করাটা অসম্ভব হয়ে যায়। এই ধরণের দৃঢ় বিশ্বাস তাকে তার মেজাজ অনুযায়ী একটি স্বতন্ত্র পথে নিয়ে যায়। যদি সে আনন্দময় ও সহজ ধরণের ব্যক্তি হয় তবে সে উইলিয়াম জেমসের মতে সেই ছুটির দিনকে ভোগ করতে পারবে যাকে তিনি মরাল হলিডে (Moral holiday) বলে উল্লেখ করেছেন। এই ধরণের ব্যক্তির ক্ষেত্রে যথার্থ উদাহরণ হল মতে, যিনি ব্যবস্থাসমূহ ও সিদ্ধান্তসমূহের বিরুদ্ধে শত্রুতা প্রদর্শন করে তার বিদ্যাবুদ্ধিগত হলিডে (Holiday) পালন করতেন। আধুনিক মানুষেরা এটা ঠিক বুঝে উঠতে পারে না যে নবজাগরণ ঠিক কতটা বুদ্ধিবিদ্যাগত মনোভাবের বিরুদ্ধ আন্দোলন ছিল। মধ্য যুগে বস্তুকে প্রমাণ করাটাই ছিল একটা প্রথা। নবজাগরণ এই প্রথাসমূহকে পর্যবেক্ষণ করার অভ্যাস আবিষ্কার করেছিল। যে ন্যায়-এর সঙ্গে মতে বন্ধুর মতো আচরণ করতেন সেই ন্যায়গুলি হল তাই যা বিশেষ নঞর্থক ধারণাকে প্রমাণ করত, উদাহরণস্বরূপ, তিনি যখন তার পাণ্ডিত্য প্রকাশ করতেন এই সত্য প্রতিপন্ন। করার জন্য যে যারাই অরিউসের মতো মারা গেছে তারা সবাই অরিউসের মতো প্রচলিত ধর্মমতের বিরোধী ছিল না। বিভিন্ন মন্দ লোক যারা ওই একইভাবে মারা গেছে তাদের সংখ্যা গণনা করার পর, তিনি এই বলে এগিয়েছেন, কিন্তু কি আশ্চর্য! অরিউসকেও দেখা গেল একই সৌভাগ্যে সৌভাগ্যবান হতে। ঈশ্বরের উদ্দেশ্য, জগতের ভালো ও মন্দ ভাগ্যের চেয়ে আমাদের এই শিক্ষাই দেয় যে ভালোদের এমন কিছু আছে যার কাছ থেকে আশা করা যায় এবং মন্দেরা এমন কিছু যাকে ভয় করতে হয়। প্রোটেষ্ট্যান্ট স্বাধীন-চিন্তাবিদদের বিপক্ষে ব্যবস্থা সম্পর্কীয় অপছন্দকর কিছু বৈশিষ্ট্য ক্যালিকদের রয়ে গেছে। কারণ হিসেবে আবার বলতে হয় যে ক্যাথলিক ধর্মতত্ত্বের ব্যবস্থা এতটাই ভয়ঙ্কর যে কোন ব্যক্তির পক্ষেই এটা সম্ভবপর হয়ে ওঠে না যে (যদি সে প্রবল বীরত্বের অধিকারী না হয়) সে অন্যান্যদের এর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার জন্য তৈরি করবে।

    ক্যাথলিক স্বাধীন চিন্তাবিদ তদনুযায়ী নৈতিক ও বিদ্যাবুদ্ধিগত ধর্মকর্মকে পরিত্যাগ করতে আগ্রহী, যখন প্রোটেষ্ট্যান্ট স্বাধীনচিন্তাবিদ উভয়কে গ্রহণ করতে ইচ্ছুক। জেমস মিল তাঁর পুত্রকে শিক্ষা দিয়েছিলেন এই প্রশ্ন করতে, কে আমাকে তৈরি করেছে? আমাদের মন এর কোন উত্তর দিতে পারে না। কারণ আমাদের এমন কোন অভিজ্ঞতা নেই অথবা এমন কোন বিশ্বাসযোগ্য জ্ঞান নেই যার থেকে এর উত্তর দেওয়া যেতে পারে। এর ফলে যে-কোন উত্তরই সেই অসুবিধার সৃষ্টি করে যা আমাদের এক ধাপ পিছিয়ে নিয়ে যায় । যেহেতু এই প্রশ্নটি সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে যে প্রশ্নে পরিবর্তিত করে তা হল ‘কে ঈশ্বরকে তৈরি করেছেন? এর সঙ্গে তুলনীয় ভলতেয়ারের সেই উক্তি যা তিনি তাঁর দর্শনের অভিধানে (Dictionaire philosophique) করতে বাধ্য হয়েছেন। ঈশ্বর’ (Dieu) নামক প্রবন্ধটি নিম্নলিখিতভাবে শুরু হয়েছে; আরকাদিউসের রাজত্বের সময়, লোগোম্যাকোস, কনস্টানটিনোপোলের ধর্মতত্ত্বের অধ্যাপক স্কাইথিয়ায় যান এবং কলচিলস্ সীমান্তে জেফিরিন নামক উর্বর সমভূমিতে ককেসাসের পাদপৃষ্ঠে অবস্থান করেন। প্রাজ্ঞ বৃদ্ধ মানুষ ডডিডাক তখন বিরাট ভেড়ার খোয়াড় ও বিশাল খামারের মধ্যবর্তী একটি বড় লম্বা চওড়া ঘরে ছিলেন। তিনি তাঁর স্ত্রী, পাঁচ পুত্র ও পাঁচ কন্যা, পিতা-মাতা ও ভৃত্যদের সঙ্গে অল্প পরিমাণ আহার করে সবার সঙ্গে ঈশ্বরের স্কৃতিবাচক সঙ্গীত গাইছিলেন।

    প্রবন্ধটি একই পথে এগিয়ে গেছে এবং এই সিদ্ধান্তে এসে শেষ হয়েছে, সেই সময় থেকে আমি এই সংকল্প গ্রহণ করেছিলাম যে আর কখনও তর্ক করব না। কেউ সেই সময়টাকে কল্পনাও করতে পারবে না যখন থেকে জেমস্ মিল কোন বিষয়ে, সে যতই কম মহান হক, আর তর্ক না করার সংকল্প নিয়েছিলেন এবং যে ঘটনাকে তিনি একটি উপকথার দ্বারা বর্ণনা করেছেন। তিনি দক্ষতার সঙ্গে অসঙ্গতির শিল্পকে অভ্যাস করেননি, যেমন ভলতেয়ার লাইবনিজের সম্পর্কে বলতে গিয়ে করেছেন : ‘তিনি উত্তর জার্মানিতে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করেছেন যে ঈশ্বর কেবল একটা জগঞ্জ তৈরি করতে পেরেছিল।’ যে নৈতিক আগ্রহের সঙ্গে জেমস মিল জগতে অশুভ শক্তির অস্তিত্বকে জোরালো করে দেখিয়েছেন তার সঙ্গে পরবর্তী প্রবন্ধগুলিতে ভলতেয়ারের উক্তির তুলনা করলে দেখা যাবে যে তিনিও সেই একই কথা বলেছেন : ‘অশুভ শক্তির অস্তিত্ব আছে ‘এ’কথা মজার ছলে লুকুলুস অস্বীকার করে বলতে পেরেছিলেন, যিনি ছিলেন সুস্বাস্থ্যের অধিকারী এবং যিনি তাঁর স্ত্রী ও বন্ধুদের সাথে অ্যাপোলোর বৈঠকখানায় বসে সুখাদ্য খাচ্ছিলেন, কিন্তু তাঁকে জানালা দিয়ে বাইরেটা দেখতে দেওয়া হ’ক, তিনি দেখবেন কিছু শোচনীয় অবস্থাসম্পন্ন মনুষ্যজাতিকে এবং তাঁকে জ্বরে ভুগতে দেওয়া হ’ক, তিনি নিজের কাছেই নিজে শোচনীয় হয়ে যাবেন।

    মঁতে এবং ভলতেয়ার আনন্দময় সন্দেহবাদের চরম উদাহরণ। বহু ক্যাথলিক স্বাধীন চিন্তাবিদ আনন্দময়তার থেকে অনেক দূরে থাকেন এবং তারা সর্বদাই কঠোর বিশ্বাস ও গীর্জার পরিচালনার প্রয়োজনীয়তাকে মনে মনে অনুভব করেন। এই ধরণের মানুষেরা কখনও কখনও কমুনিষ্ট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। এ বিষয়ে লেনিন ছিলেন চরম উদাহরণ। লেনিন একজন প্রোটেষ্ট্যান্ট স্বাধীন চিন্তাবিদের থেকে তার বিশ্বাসকে গ্রহণ করেছিলেন (ইহুদি ও প্রোটেস্ট্যান্টদের মানসিকতাকে আলাদা করে পৃথক করা যায় না, কিন্তু তার পূর্ববর্তী বাইজেনটাইনরা তাকে বাধ্য করেছিল গীর্জা সৃষ্টি করতে যে গীর্জা বিশ্বাসের মূর্তরূপ। এর থেকে কম সফলতা প্রাপ্ত উদাহরণ হল অগাষ্ট কোঁৎ-এর প্রচেষ্টা। মানুষ তার মর্জি অনুযায়ী, যদি তার মর্জি অস্বাভাবিক ক্ষমতাসম্পন্ন বা ব্যাধিগ্রস্ত না হয়, আগে বা পরে গীর্জার কোরকে স্থানান্তরিত হয়। দর্শনের রাজ্যে একটি উৎসাহব্যঞ্জক দৃষ্টান্ত মি. সানটাইয়ানা, যিনি সর্বদা গোড়ামী ব্যাপারটাকে ভালোবেসেছেন, কিন্তু যে ঘৃণাজনক ব্যাপারস্যাপার ক্যাথলিক গীর্জা আয়োজন করে থাকে তার চেয়ে বিদ্যাবুদ্ধিগত ভাবে কম ঘৃণাজনক ব্যাপারের জন্য তিনি লালায়িত। তিনি সর্বদা ক্যাথলিক গীর্জার প্রথা হিসেবে ক্যাথলিকবাদকে পছন্দ করতেন এবং পছন্দ করতেন তার রাজনৈতিক প্রভাবকে। কিন্তু উদারভাবে বলতে গেলে তিনি পছন্দ করতেন সেই আদর্শকে যা গীর্জা গ্রীস ও রোম থেকে গ্রহণ করেছে, কিন্তু ইহুদিদের কাছ থেকে গীর্জা যা গ্রহণ করেছে তাকে তিনি পছন্দ করতেন না। এর সঙ্গে অবশ্য এই কথাও বলা যায়, যে প্রতিষ্ঠাতাদের কাছে ক্যাথলিকবাদ ঋণী ছিল তাদের তিনি পছন্দ করতেন না। তিনি এই ইচ্ছাও পোষণ করতে পারতেন যে লুক্রেতিউস দিমোক্রেতিউসের মানসিকতার উপর নির্ভর করে গড়ে ওঠা গীর্জার উপর নিজের আদর্শের গীর্জা প্রতিষ্ঠার কাজে সফলতা পেলে ভালোই হত। কেননা তার বিদ্যাবুদ্ধিতে বস্তুবাদ সর্বদা একটা আবেদন রাখতে পেরেছে এবং তার আগের কাজগুলোতে ক্যাথলিকবাদ ও বস্তুপুজোর স্বাতন্ত্রকে অন্যকিছুতে নিয়ে গিয়ে পুরস্কৃত করার চেয়ে তিনি বস্তুপুজোকেই আপন করে নিয়েছিলেন। দীর্ঘ সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি সম্ভবত এই অনুভব করতে পেরেছিলেন, যে গীর্জাগুলোকে যারা পছন্দ করে তারা সত্তার রাজ্যের দ্বারা আবদ্ধ। মি. সানটাইয়ানা যদিও এক ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং তিনি আমাদের কোন আধুনিক শ্রেণীর সঙ্গে মানানসই নন। তিনি বাস্তবে নবজাগরণপূর্ব ব্যক্তি, যার সঙ্গে ঘিবেলিসের সম্পর্ক থাকলেও থাকতে পারে যে ঘিবেলিসকে দান্তে নরকে শাস্তি ভোগ করতে দেখেছিলেন এপিকিউরাসের মতবাদের সঙ্গে লেগে থাকার জন্য। এই ধরণের দৃষ্টিভঙ্গি নিঃসন্দেহে জোর করে ডেকে আনা অতীতের স্মৃতিচারণজনিত বিষণ্ণতা, যে বিষণ্ণতা আমেরিকার সঙ্গে অনিচ্ছুক ও দীর্ঘ সম্পর্ক রাখতে গিয়ে স্পেনীয়দের মেজাজে ঘটেছিল।

    সবাই জানে কিভাবে জর্জ এলিয়ট এফ-ডব্লু-এইচ মেয়ারকে শিখিয়েছিলেন যে ঈশ্বর বলে কিছু নেই, তবুও আমাদের ভালো হওয়া আবশ্যক। এই ধরণের বিশেষ আচরণের দিক থেকে জর্জ এলিয়ট একজন প্রোটেষ্ট্যান্ট স্বাধীন-চিন্তাবিদ। খুব পরিষ্কার করে বলতে গেলে একজন বলতেই পারে যে প্রোটেষ্ট্যান্টরা ভালো হওয়াটাকে পছন্দ করে এবং নিজেদের ভালো রাখার জন্য সেই অনুযায়ী ধর্মতত্ত্বের আবিষ্কার করে থাকে, যেখানে ক্যাথলিকরা খারাপভাবে থাকাটাকে পছন্দ করে অথচ তারা তাদের প্রতিবেশীদের ভালো রাখার জন্য ধর্মতত্ত্বের আবিষ্কার করে থাকে। এখানেই ক্যাথলিকদের সামাজিক চরিত্র এবং প্রোটেষ্ট্যান্টদের ব্যক্তিগত চরিত্র নিহিত । একজন মৌলিক প্রোটেষ্ট্যান্ট স্বাধীন-চিন্তাবিদ হিসেবে জেরমি বেন্থাম এই সিদ্ধান্তে এসেছিলেন যে সব সুখের মধ্যে সব থেকে বড় সুখ আত্ম-অনুমোদনের সুখ। এইজন্য তিনি কখনও খুব বেশি আহার কিংবা মদ্যপান করতেন না। কেননা তাতে বেসামাল জীবনের অপরাধবোধ কাজ করে, অথবা একই কারণে তিনি তার প্রতিবেশীর অর্থ কোন ভাবে চুরি করাটাও পছন্দ করতেন না, কেননা এইসব কোন জিনিসই তাকে এমন কোন দারুণ রোমাঞ্চ দিত না যা তিনি জ্যা হরনারের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারেন। কিন্তু এই বিষয়টি খুব সহজ কথা নয়। তিনি বড়দিনের মটরদানা ত্যাগ করতেন তাকে ফিরে পাবার জন্য। অন্যদিকে ফ্রান্সে কঠোর আত্ম-সংযম নির্ভর নৈতিকতাকে প্রথমে ভেঙে ফেলা হল, তারপর, ফলস্বরূপ ধর্মতত্ত্বগত সন্দেহ পরে এলো। এই ধরণের বিভেদ সম্ভবত জাতিগত কিন্তু কোনরকম শাস্ত্রীয় বিভেদ নয়।

    ধর্ম ও নৈতিকতার সঙ্গে যোগটা এমন যার সম্পর্কে জানতে গেলে নিরপেক্ষভাবে ভৌগোলিক অধ্যয়নের প্রয়োজন। আমার মনে আছে বৌদ্ধ সম্প্রদায় অন্তর্ভুক্ত হবার পর জাপানে পৌরোহিত্য ব্যাপারটি বংশনুক্রমিক হয়ে ওঠে। আমি এই বিষয়ে অনুসন্ধান করেছি যে কিভাবে এটা সম্ভব হত যখন কারুকে পুরোহিত হতে হবে আবিবাহিত হতে হত। কেউই আমাকে এই বিষয়ে সন্ধান দিতে পারেনি। কিন্তু শেষ এই ঘটনাটি সম্পর্কে একটি গ্রন্থ থেকে নিশ্চিত হই। এই ধরণের সম্প্রদায় শুরু হয়েছিল বিশ্বাসজাত ন্যায়বিচারমূলক মতবাদের দ্বারা এবং সেখানে এই ধরণের সিদ্ধান্ত ছিল যে যতদিন বিশ্বাস শুদ্ধ থাকবে ততদিন কোন পাপই কিছু করতে পারবে না। ফলস্বরূপ, সমস্ত পৌরোহিত্য পাপে পর্যবসিত হল। কিন্তু একমাত্র যে পাপ তাদের উত্তেজিত করে তুলেছিল তা হল বিবাহ। সেইদিন থেকে আজ আমাদের যুগ পর্যন্ত এই সম্প্রদায়ের পুরোহিতরা বিবাহ করে চলেছে। কিন্তু এছাড়া অন্যদিক থেকে তারা দোষমুক্ত জীবনযাপন করে। সম্ভবত যদি আমেরিকাকে বিবাহ একটি পাপ বলে বিশ্বাস করানো যেতে পারত তবে তারা আর কোনদিন বিবাহ-বিচ্ছেদের তাগিদ অনুভব করত না। হয়ত ‘পাপ’-এর বহুসংখ্যক তকমা লাগানো ব্যাপারটা জ্ঞানী সমাজব্যবস্থার সারসত্তাজাত অক্ষতিকর কার্য ছিল, কিন্তু সেই পাপ যারা সম্পাদন করত তাদেরই সহ্য করতে হত। এইভাবেই কারুর ক্ষতি না করে শয়তানের আনন্দ অর্জিত হতে পারত। শিশুদের সঙ্গে মেলামেশার ব্যাপারে এই ধরণের ঘটনাই আমার উপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। প্রতিটি শিশুরই দুষ্টু হতে ইচ্ছে করে এবং তাকে যদি যুক্তিসঙ্গত ভাবে শেখানো হয়, তাহলে সে তার দুষ্টুমি করার ভাবাবেগটিকে চরিতার্থ করবে প্রকৃত কোন ক্ষতিকারক কার্য করার মধ্যে দিয়ে। যদি তাকে এই শিক্ষা দেওয়া হয় যে রবিবারে তাস খেলাটা একটা বাজে ব্যাপার অথবা একইভাবে যদি তাকে বলা হয় শুক্রবারে মাংস খেতে তাহলে সে তার পাপমূলক ভাবাবেগটিকে চরিতার্থ করতে পারে কারও কোন ক্ষতি না করে। কিন্তু আমি কার্যের এই রকম কোন আদর্শের উপর বিশ্বাস রাখি না। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মধ্যে এই রকম ঘটনা, যার সম্বন্ধে আমি একটু আগেই বলেছি, তা নির্দেশ করে যে এই ধরণের ব্যাপারকে অনেক বেশি গ্রাহ্য বলা যেতে পারে।

    সেই পার্থক্যের উপর খুব বেশি জোর দেওয়ার দরকার নেই যে পার্থক্যটিকে আমরা প্রোটেষ্ট্যান্ট এবং ক্যাথলিক স্বাধীন চিন্তাবিদদের মধ্যে বেশি করে দেখাতে চেস্টা করি। উদাহরণস্বরূপ, অষ্টাদশ শতকের বিশ্বকোষবিদ এবং দার্শনিকরা প্রোটেষ্ট্যান্ট ধরণের ছিলেন কিন্তু কিছুটা দ্বিধান্বিত হয়েও আমি একথা বলবো যে স্যামুয়েল বাটুলার ছিলেন ক্যাথলিক ধরণের। যদি কেউ লক্ষ্য করতে চায় তবে যে মূল পার্থক্যটি ধরা পড়বে সেটি হল যে ঐতিহ্যের থেকে প্রোটেষ্ট্যান্ট স্বাধীন চিন্তাবিদদের বেরিয়ে আসাটা প্রাথমিকভাবে বিদ্যাবুদ্ধিগত ব্যাপার ছিল, সেখানে ক্যাথলিক স্বাধীন চিন্তাবিদের কাছে ছিল তা বাস্তব। মৌলিক প্রোটেষ্টান্ট স্বাধীন চিন্তাবিদরা এমন কিছু করার সামান্য আকাক্ষাও করতে না যা তার প্রতিবেশী নাকচ করে দেয় তাদের বংশপরম্পরাগত মতবাদের সমর্থনে। দুই খণ্ডে হার্বার্ট স্পেনসারের সঙ্গে ঘরোয়া জীবন’ নামক গ্রন্থটি (বহু গ্রন্থের মধ্যে একটি আনন্দজনক গ্রন্থ) সেই দার্শনিকের সম্পর্কে একটি সাধারণ মতো দৃষ্টান্তস্বরূপ উল্লেখ করেছে যেখানে বলা হয়েছে তার উন্নত নৈতিক চরিত্র ছাড়া আর কিছুই তাঁর সম্পর্কে বলার নেই। হার্বার্ট স্পেনসার, বেনথাম, মিল অথবা যে-কোন স্বাধীন চিন্তাবিদ যে উদ্দেশ্যে তাদের কাজগুলো করে গেছেন এবং যে উদ্দেশ্যটা ছিল আনন্দই জীবনের শেষ লক্ষ্য তা তাঁদের বেলায় ঘটেনি। আমার মতে তারা নিজেরা যে আনন্দের খোঁজ করেছিলেন তা কখনও ঘটেনি, অন্যদিকে ক্যাথলিকরাও তাদের মতো করে ওই একই সিদ্ধান্তে বাঁচার তাগিদে নিজেদের কাজ চালিয়েছিলেন। এই প্রসঙ্গে অবশ্যই বলা যেতে পারে যে জগৎটা ক্রমশ্যই পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে প্রোটেষ্ট্যান্ট স্বাধীন চিন্তাবিদ তার চিন্তা ও কার্যের ক্ষেত্রে সবরকম যোগ্য কিন্তু এই ব্যাপারটি প্রোটেষ্ট্যান্টবাদের সাধারণ অবক্ষয়ের লক্ষণ। পুরানো যুগগুলিতে প্রোটেষ্ট্যান্ট স্বাধীন চিন্তাবিদরা স্বাধীন প্রেমের সমর্থনে সিদ্ধান্ত নেবার যোগ্য ছিল এবং তারা একটি দিনও কঠোর অবিবাহিত জীবনযাপন করত না। আমি মনে করি তার পরিবর্তনটা সত্যিই দুঃখজনক। যে-কোন মহান যুগ এবং মহান ব্যক্তি কঠোর ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলার মধ্যে দিয়েই উখিত হয়েছেন। কঠোর ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখার জন্য দরকার প্রয়োজনীয় নিয়মানুবর্তিতা ও তার প্রতি লেগে থাকার নিষ্ঠা। অন্যদিকে এই ব্যবস্থার ভাঙন প্রচুর পরিমাণ শক্তিকে নির্গত করে। তবে এটা ভাবা ভুল হবে যে ভাঙনের প্রথমেই যে প্রশংসনীয় ফলসমূহ অর্জিত হয় তা অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত চলতে থাকবে। নিঃসন্দেহে একটি আদর্শ বলতে একটি নির্দিষ্ট কঠোর কার্যকে বোঝায়, এর সঙ্গে থাকে চিন্তাভাবনার নমনীয়তা, কিন্তু একমাত্র পরিবর্তনের সংক্ষিপ্ত সন্ধিক্ষণগুলির সময় ছাড়া এই ধরণের সাধনা অর্জন করাটা দুরবগাহ হয়ে ওঠে। একইভাবে পুরানো ভাবাদর্শগুলি ক্ষয়প্রাপ্ত হয় তখন যখন বিবাদের প্রয়োজনীয়তার মধ্য দিয়েই নতুন অনমনীয় ধর্মমতসমূহ বেড়ে ওঠে। রাশিয়ায় বলশেভিক ঈশ্বর বিশ্বাসীরা লেনিনের দেবত্বের উপর সন্দেহ ছুঁড়ে দিয়েছিল এবং তারা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিল যে অন্য কারও সন্তানকে ভালবাসাটা অন্যায় নয়। চীনদেশের কুয়োমিতাঙ ঈশ্বর বিশ্বাসীরা সান-ইয়াৎ-সেনকে অবশ্যই সংরক্ষণ করবে এবং কুনফুসিয়াসের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করার জন্য কদাচিৎ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবে। আমার এটাই ভয় যে মুক্তির অবক্ষয় মানুষের ক্ষেত্রে ব্যাপারটাকে এত জটিল করে যে তারা কিছু কিছু বিবাদীয় ধর্মমতের সঙ্গে লেগে থাকার থেকে সম্পূর্ণ বিরত হবে। সম্ভবত বিভিন্ন ধরণের ঈশ্বর বিশ্বাসীরা একটি গোপন সমাজে সম্মিলিত হবে এবং তারা সেইসব পদ্ধতিসমূহে ফিরে যাবে যেগুলো বেল তার শব্দকোষে আবিষ্কার করেছে। সেখানে এটাই সান্ত্বনা হয়ে দাঁড়াবে যে সাহিত্যবিষয়ক শৈলীর উপর মতামতের নির্যাতন যে-কোন মাত্রায় প্রশংসনীয় প্রভাব সৃষ্টি করবে।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleসুখের সন্ধানে – বার্ট্রান্ড রাসেল
    Next Article বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায় রচনাবলী ২ (দ্বিতীয় খণ্ড)

    Related Articles

    বার্ট্রান্ড রাসেল

    সুখের সন্ধানে – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 29, 2025
    বার্ট্রান্ড রাসেল

    অপেক্ষবাদের অ, আ, ক, খ – বারট্রান্ড রাসেল

    October 29, 2025
    বার্ট্রান্ড রাসেল

    কর্তৃত্ব ও ব্যক্তিসত্তা – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 29, 2025
    বার্ট্রান্ড রাসেল

    ধর্ম ও বিজ্ঞান – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 29, 2025
    বার্ট্রান্ড রাসেল

    দর্শনের সমস্যাবলি – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 29, 2025
    বার্ট্রান্ড রাসেল

    মানুষের কি কোনো ভবিষ্যত আছে? – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 29, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে বাঙলাদেশের কৃষক – বদরুদ্দীন উমর

    October 29, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে বাঙলাদেশের কৃষক – বদরুদ্দীন উমর

    October 29, 2025
    Our Picks

    চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে বাঙলাদেশের কৃষক – বদরুদ্দীন উমর

    October 29, 2025

    পূর্ব বাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি ২ – বদরুদ্দীন উমর

    October 29, 2025

    বাঙলাদেশে কমিউনিস্ট আন্দোলনের সমস্যা – বদরুদ্দীন উমর

    October 29, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }