Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে বাঙলাদেশের কৃষক – বদরুদ্দীন উমর

    October 29, 2025

    পূর্ব বাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি ২ – বদরুদ্দীন উমর

    October 29, 2025

    বাঙলাদেশে কমিউনিস্ট আন্দোলনের সমস্যা – বদরুদ্দীন উমর

    October 29, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    কেন আমি ধর্মবিশ্বাসী নই – বার্ট্রান্ড রাসেল

    বার্ট্রান্ড রাসেল এক পাতা গল্প318 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ০৭. মধ্যযুগে জীবন যেমন

    ৭. মধ্যযুগে জীবন যেমন

    আমাদের নিজেদের পক্ষপাতিত্বকে মানিয়ে নেবার ক্ষেত্রে মধ্যযুগে আমাদের ছবি অন্যান্য যুগগুলোর চাইতে অনেক বেশি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। সেইসব ছবিগুলো কখনও অতি কালো হয়ে পড়েছে আবার কখনও অতি গোলাপী হয়ে পড়েছে। অষ্টাদশ শতক নিজেই নিঃসন্ধিগ্ধভাবে মধ্যযুগগুলোকে কেবলমাত্র বর্বর বলে চিহ্নিত করেছে। গীবনের কাছে সেই সময়কার মানুষগুলি আমাদের ফরাসী বিপ্লবের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়ার অসঙ্গতি রচনা করেছিল এবং তা সেই অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছিল। যে অভিজ্ঞতাপ্রসূত যুক্তি গিলোটিনের দিকে পরিচালিত হয়েছিল তা বীরসম্প্রদায়ের যুগ’-এর গৌরবকে আরও গৌরবান্বিত করে তুলেছিল এবং ইংরাজী ভাষাভাষীদের কাছে তা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল স্যার ওয়াল্টার স্কটের দ্বারা। গড়ে প্রায় সকল ছেলে ও মেয়ে এখনো মধ্যযুগগুলোর রোমান্টিক দৃষ্টিভঙ্গির দ্বারা প্রভাবিত। এইসব ছেলেমেয়েরা মনে মনে কল্পনা করে সেই যুগটাকে যখন নাইটরা বর্ম পরিধান করে হাতে বল্লম নিয়ে বলত ‘সত্য বটে’ এবং আমার পবিত্রভূমির নামে শপথ করে বলছি, অবশ্যই তারা একদিকে ছিল যেমন বিনীত অন্যদিকে ছিল রাগান্বিত। যখন সব মহিলারাই ছিল সুন্দরী ও বিষণ্ণ কিন্তু গল্পের শেষে তারা নিশ্চয়ই উদ্ধার পেত। আর এক রকম দৃষ্টিভঙ্গি আমরা পেতে পারি যেটাকে আমরা তৃতীয় দৃষ্টিভঙ্গি বলব, যেটা সম্পূর্ণ আলাদা হলেও কিছুটা দ্বিতীয় দৃষ্টিভঙ্গির মতো যা মধ্যযুগগুলোকে প্রশংসা করে থাকে। এই দৃষ্টিভঙ্গি হল যাজকীয় দৃষ্টিভঙ্গি যা সংস্কারকরণকে ঘৃণা করে জন্ম নিয়েছে। এই দৃষ্টিভঙ্গিতে জোর দেওয়া হয়েছে ভক্তি, ধর্মীয় গোঁড়ামী, পাণ্ডিত্যপূর্ণ দর্শন এবং গীর্জার দ্বারা খ্রীষ্টীয় সাম্রাজ্যের একত্রীকরণের উপর। রোমান্টিক দৃষ্টিভঙ্গির মতোই এই দৃষ্টিভঙ্গিও যুক্তির বিরুদ্ধে এক প্রতিক্রিয়া, কিন্তু এই প্রতিক্রিয়াটা অপেক্ষাকৃত কম ঋণাত্মক, যুক্তির ছদ্মবেশে যা চিন্তাভাবনার একটি বড় ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করেছে এবং যা একসময় জগৎকে দমিয়ে রেখেছিল ও ভবিষ্যতে আবার দমিয়ে রাখতে পারে।

    এই সমস্ত দৃষ্টিভঙ্গিগুলোতেই সত্যের উপকরণ আছে। মধ্যযুগগুলো ছিল কর্কশ, তারা ছিল বীরত্বব্যঞ্জক ও পবিত্র। কিন্তু আমরা যদি একটি সময়কে সত্য করে দেখতে চাই তবে তাকে আমাদের নিজেদের সময়টার বিপরীত সময় হিসেবে দেখলে চলবে না– তা সেই সময়ের সুবিধা বা অসুবিধা যার পরিপ্রেক্ষিত্রেই হক না কেন। সেই সময়টাকে আমাদের দেখতে চেষ্টা করতে হবে ঠিক সেইভাবে যেরকম তা ছিল সেই সব মানুষগুলোর কাছে যে মানুষগুলো তার মধ্যে বসবাস করত। সর্বোপরি, আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, প্রতিটি মহাযুগে বেশিরভাগ মানুষই ছিল সাধারণ যারা ঐতিহাসিকদের বড় বড় বিষয়ের চেয়ে তাদের প্রতিদিনের রুটির চিন্তায় ব্যস্ত থাকত। এইসব সাধারণ মরণশীল মানুষদের ছবি আঁকা হয়েছিল ‘মেডিয়াভেল পিপল’ নামকমিস্ এলিন পাওয়ারের একটি মনোরম গ্রন্থে। সে গ্রন্থে শারলেমা থেকে সপ্তম হেনরী পর্যন্ত সময়টিকে ধরে রাখা হয়েছিল। তাঁর গ্যালারীতে একমাত্র যে বিখ্যাত মানুষটির ছবি রাখা ছিল তার নাম মার্কোপোলো। এছাড়াও পাঁচটা কি তার বেশি যেসব ব্যক্তিদের ছিল তাদের পরিচয় ছিল অস্পষ্ট কিন্তু পরে তাদের পরিচয় খুঁজে পাওয়ার ফলে তাদের জীবন পরিচয়কে নতুন করে তৈরি করা গেছে। বীরত্ব যা অভিজাত সম্প্রদায়গত বিষয় ছিল তা এই গণতান্ত্রিক ইতিবৃত্তে স্থান পায়নি। সেখানে ভক্তি প্রদর্শিত হয়েছে চাষা ও ব্রিটিশ ব্যবসায়ীদের দ্বারা। কিন্তু যাজকীয় সম্প্রদায়ের দ্বারা ভক্তির প্রদর্শন দেখানো হয়নি এবং অষ্টাদশ শতকের পরিপ্রেক্ষিতে যে রকম বর্বর মানুষদের দেখার আশা করা হয়েছিল সেখানে তা ঘটেনি, সেখানে প্রতিটি মানুষই ছিল কম বর্বরোচিত। যদিও গ্রন্থটিতে বর্বরোচিত দৃষ্টিভঙ্গির সমর্থনে একটি আশ্চর্যরকমের বৈপরীত্য দেখানো হয়েছে। এই বৈপরীত্যটি ছিল নবজাগণের আগে ভেনিশিয়ান শিল্পকলা ও চতুর্দশ শতকে চৈনিক শিল্পকলার মধ্যে। এখানে দুটি ছবিকে দেখানো হয়েছে। একটি ভেনেশিয়ান শিল্পরীতিতে আঁকা মার্কোপোলোর জাহাজে ওঠার দৃশ্য এবং আর একটি চতুর্দশ শতকে চৈনিক শিল্পরীতিতে আঁকা চাও মেঙ্গ-ফু-এর স্থল দৃশ্য। মিস্ পাওয়ার বলেছেন, একটি (যেটি চাও মেঙ্গ-ফু-এর দ্বারা নির্মিত) স্পষ্টতই উন্নত শিল্পের নিদর্শন এবং অন্যটি শিশুসুলভ সভ্যতা ও প্রায় গেঁয়ো শিল্পের নমুনা। ছবি দুটোর মধ্যে তুলনা করতে গেলে লেখিকার কথাকে কেউই অস্বীকার করতে পারবে না।

    লেডেনের অধ্যাপক হুইজিঙ্গার দ্বারা লিখিত ‘দ্য ওয়েনিং অব দ্য মিড়ল এজেস’ নামক সাম্প্রতিক গ্রন্থটি ফ্রান্স ও ফ্ল্যান্ডারস্-এ চতুর্থ দশম ও পঞ্চদশ শতক সম্পর্কে অসাধারণ সব উৎসাহহাদ্দীপক ছবি দিয়েছে। এই গ্রন্থে বীরত্বকে এমন পরিষ্কার করে দেখানো হয়েছে যে তা মনোযোগ আকর্ষণ করে। বীরত্বকে এখানে রোমান্টিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখানো হয়নি। তাকে দেখানো হল এমন একটা পরিশ্রমসিদ্ধ খেলা হিসেবে যা উচ্চবিত্ত শ্রেণী আবিষ্কার করেছিল তাদের অসহ্য বিরক্তিকর জীবনে আনন্দ পাবার জন্য। বীরত্বের প্রয়োজনীয় উপাদান ছিল প্রেম সম্পর্কে অদ্ভুত ধরণের ভাবুক কল্পনা, যে প্রেমে অতৃপ্ত হওয়াটাকেই আনন্দকর বিষয় হিসেবে ধরা হত। দ্বাদশ শতকে যখন প্রেমের কাব্যিক কল্পনার অন্তঃস্থলে অতৃপ্ত কামনার স্থান troubadours of Provence (প্রভেন্সের সেইসব কবি যারা বীরত্বব্যঞ্জক প্রেমের উপর কাব্য রচনা করেছিল এবং একাদশ শতক থেকে এয়োদশ শতক পর্যন্ত তারা তাদের রচনা ধারাকে সমৃদ্ধ করেছিল অনুবাদক) দখল করল, তখন সভ্যতার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ঘটেছিল। প্রণয়গত কাব্য…নিজেই মূল বিষয় হিসেবে কামনার সৃষ্টি করত এবং ঋণাত্মক দৃষ্টিভঙ্গির উপর নির্ভরে করে প্রেমের কল্পনার সৃষ্টি করত।’

    উপরোক্ত গ্রন্থে একথাও পাওয়া যায় যে উচ্চবিত্ত শ্ৰেণীদের অস্তিত্ব তাদের বিদ্যাবুদ্ধিগত ও নীতিগত মতো হিসেবে সাহিত্য কলা মন্দিরে সুরক্ষিত আছে যা ইতিহাসে একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য যুগগুলোতে সভ্যতার আদর্শ এতটা পরিমাণে প্রেমের কল্পনার সঙ্গে মিশতে পারেনি। ঠিক যেরকম ভাবে পাণ্ডিত্যবাদ মধ্যযুগে সমস্ত রকম দর্শনের একটিমাত্র কেন্দ্রকে খুঁজে নেবার জন্য বৃহৎ প্রচেষ্টায় প্রতিনিধিত্ব করেছিল, তেমনি প্রণয়গত প্রেমের তত্ত্ব অপেক্ষাকৃত ছোট পরিধির মধ্যে সেই সমস্তকিছুকে নিজের কাছে ধরে রেখেছিল যা মহৎ জীবনের অন্তর্ভুক্ত।

    মধ্যযুগের অনেক কিছুকেই রোমান ও জার্মান ঐতিহ্যের মধ্যে বিবাদরূপে বর্ণনা করা হয়। একদিকে ছিল গীর্জা আর একদিকে ছিল রাষ্ট্র। একদিকে ছিল ধর্মতত্ত্ব ও দর্শন আর একদিকে ছিল বীরত্ব ও কাব্য। একদিকে ছিল আইন আর একদিকে ইন্দ্রিয়-আনন্দ, আসক্তিগত ভাবাবেগ এবং সব রকম নৈরাশ্যজনক অবস্থা ও জড়বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের উন্মাদনা। রোমের অবস্থা সেই আগের মতো ছিল না যে সময়টা কনষ্টানটিন ও জাষ্টিনিয়ানের সময় ছিল, এতদসত্ত্বেও সেখানে তখনও এমন কিছু ছিল যা অশান্ত জিনিসগুলোর জন্য প্রয়োজন ছিল এবং যাকে ছাড়া অন্ধকার যুগের থেকে সভ্যতার পুনরুত্থান সম্ভব ছিল না। কেননা মানুষ ছিল উন্মত্ত এবং তাদের দমানো যেতে পারত কেবলমাত্র শ্রদ্ধা মিশ্রিত ভীতিজনক কঠোর আচরণের দ্বারা। ত্রাসের সঙ্গে ঘর করে নিজের প্রভাব না হারানো পর্যন্ত সন্ত্রাস তার কাজ চালিয়ে যেত। বিগত মধ্যযুগীয় শিল্পকলার একটি প্রিয় বিষয় মৃত্যুর নৃত্য, যেখানে দেখা যায় নরকঙ্কাল মানুষের সঙ্গে নৃত্যরত। ড. হুইজিঙ্গা আরও কিছুটা এগিয়ে বলেছেন প্যারিসে নিরীহদের সেই গীর্জা-প্রাঙ্গণের কথা যেখানে ভিলিয়নের সমসাময়িকেরা আনন্দের জন্য বেড়াতে যেতেন। তিনি বলেছেন :

    মঠের তিন দিক ঘিরে গোরস্তানগুলোতে খুলি ও হাড় স্থূপাকৃতি করে রাখা হত এবং সেগুলো উন্মুক্ত করে রাখা হত যাতে হাজার হাজার মানুষ সেগুলো দেখে সাম্যের ধারণা লাভ করে…. মঠের নীচে মৃত্যুর নৃত্য বিভিন্ন মূর্তি ও কবিতার মধ্য দিয়ে প্রদর্শিত হত। পোপ, সম্রাট, সাধু ও বোকাদের নিয়ে মৃত্যুর অপক্ক মূর্তিগুলি রাখবার জন্য এমন বাদরামীর আর কোন ভালো জায়গা ছিল না। বেরীর ডিউক যিনি সেখানে কবরস্থ হবার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন তার ইতিহাস সম্পর্কে তিনজন জীবিত মানুষ ও তিনজন মৃত মানুষের মূর্তি গীর্জার প্রবেশপথে খোদিত করা হয়েছে। এক শতাব্দী পর, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার প্রতীক হিসেবে মৃত্যুর একটি বিরাট মূর্তি সেখানে তৈরি করা হয়, যা এখন লুভ্যরে স্থান পেয়েছে। এটাই সেই মঠের একমাত্র ভগ্নাংশ হিসেবে টিকে রয়েছে সেখানে। পনেরো শতকের প্যারিসের লোকেদের এরকম শোকাবহ আচরণকে নকল করে গড়ে উঠেছিল ১৭৮৯ সালের পালাই রয়াল। দিনের পর দিন, হাজার হাজার মানুষ মঠগুলোতে গিয়ে এইসব মূর্তি এবং সরল কবিতাগুলো দেখতে ও পড়তে লাগলো, যেগুলো তাদের মনে করিয়ে দিত যে তারা শেষের দিকে চলেছে। মুহুর্মুহু কবরস্থ করা এবং তাদের খুঁড়ে বার করে নিয়ে আসার পরিবর্তে সেই স্থানটি জনগণের জন্য একটি সুন্দর বেড়াবার ও ধ্যান করবার স্থানে পরিণত হল। সেইসব গোরস্থানের সামনেই তৈরি হল বিভিন্ন দোকান, মঠের সামনে ঘুরে বেড়াতে লাগলো পতিতারা। গীর্জার একটি দিকে একজন সন্ন্যাসিনীকে কবরস্থ করে রাখা হল। সেখানে মঠবাসীরা তাদের ধর্ম প্রচার করতে আসত এবং ধর্মীয় মিছিল সেখানে এসেই শেষ হত…. এমনকি সেখানে ভোজেরও আয়োজন করা হত। এইভাবেই ভয়ঙ্কর এতদূর পর্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠলো।’

    মৃত্যুর নৃত্যজাত বিষণ্ণতা (Macabre) থেকে যে প্রেম আশা করা যেত তা ছিল এমন নিষ্ঠুরতা যা সাধারণ মানুষের কাছে মূল্যবান উপহারজাত আনন্দের মতো ছিল। মনস্ একজন দস্যুকে কিনেছিল শুধুমাত্র তাকে অত্যাচারিত দেখবার জন্য, যে অত্যাচার সাধারণ মানুষ খুব আনন্দের সঙ্গে নিয়ে ছিল এই কৌতূহলে যে তার মৃতদেহের ভেতর থেকে একটি নতুন পবিত্র শরীর নির্গত হবে। ১৪৮৮ তে বিশ্বাসঘাতকতার সন্দেহে বার্জেসের কিছু ম্যাজিসট্রেটদের বাজার এলাকায় নিয়ে গিয়ে প্রবল অত্যাচার করা হয়েছিল জনগণের আনন্দের জন্য। ড. হুইজিঙ্গা বলেছেন যে তারা এই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে শেষে মৃত্যুভিক্ষা চেয়েছিল, কিন্তু তাদের জন্য সেইটুকু দানও অস্বীকার করা হয়েছিল যাতে জনগণ আবার তাদের উপর প্রবল অত্যাচার দেখে আনন্দ করতে পারে।

    হয়ত অষ্টাদশ শতকের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কেও কিছু বলা যেতে পারে।

    ড. হুইজিঙ্গারের গ্রন্থটিতে মধ্যযুগের শেষের দিকের যুগগুলোর শিল্পকলা সম্পর্কে উৎসাহহাদ্দীপক আলোচনা রয়েছে। স্থাপত্য ও ভাস্কর্যের সঙ্গে আঁকা ছবির সৌন্দর্যকে সমান করে দেখা হয়নি। আঁকা ছবি মহানত্বজাত প্রেমের রক্তিম অবদান ছিল বা যুক্ত ছিল সামন্ততান্ত্রিক আড়ম্বরের সঙ্গে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় সেই ঘটনাটির কথা, যেখানে বার্গান্ডির ডিউক শিল্পী সুটারকে ক্যাম্পমলের অশ্বারোহী সৈন্যদলের একটি ছবি আঁকতে বললেন, তাতে স্লটার যে ছবিটি আঁকলেন তা ছিল বার্গান্ডি ও ফ্লান্ডারের অশ্বারোহী সৈন্যদল ক্রসের দুটি বাহুতে পরস্পরের সম্মুখীন। সব থেকে কৌতূহলোদ্দীপক ঘটনাটি হল এই ছবিটিতে জেরোমিয়ার যে ছবিটি অংশ হিসেবে আঁকা হয়েছে সেই ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে যে তার নাকে দুটি চশমা আঁটা। লেখক ফিলিষ্টাইন পৃষ্ঠপোষকদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এই মহান শিল্পীর করুণ অবস্থার কথা জানিয়ে বলেছেন যে উক্ত ছবিটি আঁকার পর তারা ছবিটিকে নষ্ট করে দিলো এই বলে যে স্লটার নিজেই জেরোমিয়ার নাকে চশমা এঁটে দিয়ে হয়ত ছবিটিকে নান্দনিক করতে চেয়েছেন। শ্রীমতী পাওয়ার এই একই ধরণের আর একটি আশ্চর্য ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন যেখানে ত্রয়োদশ শতকের এবং ইতালির এক পুস্তক-বিশোধক (BOWDLER- যে পুস্তকের আপত্তিজনক অংশকে কেটে বাদ দেয়) টেনিশনের রচনাগুলিকে বিশোধন করেন ভিক্টোরীয় পরিশোধনের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এবং আর্থারীয় গাথার উপর যে গ্রন্থটি প্রকাশ করেন সেখানে ল্যান্সেলট ও গুয়েনিভারের প্রেমের সমস্ত ঘটনাগুলোকে কেটেছেটে বাদ দেওয়া হয়েছিল। ইতিহাস বহু কৌতূহলোদ্দীপক ঘটনায় পূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ, যোড়শ শতকে মস্কোতে একজন জাপানী জেসুইট শহীদ হয়েছিলেন। আমার ইচ্ছা কোন পণ্ডিত ঐতিহাসিক এমন একটি গ্রন্থ রচনা করুন যে গ্রন্থটিকে চিহ্নিত করা হবে যে ঘটনাসমূহ আমাকে বিস্মিত করে এই নামে। এই ধরণের গ্রন্থে জেরোমিয়ার চশমা ও ইতালির বিশোধকের স্থান অবশ্যই থাকবে।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleসুখের সন্ধানে – বার্ট্রান্ড রাসেল
    Next Article বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায় রচনাবলী ২ (দ্বিতীয় খণ্ড)

    Related Articles

    বার্ট্রান্ড রাসেল

    সুখের সন্ধানে – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 29, 2025
    বার্ট্রান্ড রাসেল

    অপেক্ষবাদের অ, আ, ক, খ – বারট্রান্ড রাসেল

    October 29, 2025
    বার্ট্রান্ড রাসেল

    কর্তৃত্ব ও ব্যক্তিসত্তা – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 29, 2025
    বার্ট্রান্ড রাসেল

    ধর্ম ও বিজ্ঞান – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 29, 2025
    বার্ট্রান্ড রাসেল

    দর্শনের সমস্যাবলি – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 29, 2025
    বার্ট্রান্ড রাসেল

    মানুষের কি কোনো ভবিষ্যত আছে? – বার্ট্রান্ড রাসেল

    October 29, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে বাঙলাদেশের কৃষক – বদরুদ্দীন উমর

    October 29, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে বাঙলাদেশের কৃষক – বদরুদ্দীন উমর

    October 29, 2025
    Our Picks

    চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে বাঙলাদেশের কৃষক – বদরুদ্দীন উমর

    October 29, 2025

    পূর্ব বাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি ২ – বদরুদ্দীন উমর

    October 29, 2025

    বাঙলাদেশে কমিউনিস্ট আন্দোলনের সমস্যা – বদরুদ্দীন উমর

    October 29, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }