Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    ইস্টিশন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    উড়ালপঙ্খী – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    কে কথা কয় – হুমায়ূন আহমেদ

    হুমায়ূন আহমেদ এক পাতা গল্প311 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ১০. কমল তার খেলনা সাজানো শেষ করেছে

    বৃহস্পতিবার।

    সন্ধ্যা সাতটা।

    কমল তার খেলনা সাজানো শেষ করেছে। সে বসে আছে মাথা নিচু করে। তাকে খুবই অসুস্থ মনে হচ্ছে। বুধবার সকাল থেকে সে খাওয়া বন্ধ করেছে। তার ঘরের টেবিলে কয়েক রকমের স্যুপ, ফলের রস সাজানো আছে। যদি সে নিজের ইচ্ছায় কিছু খায়। সে পানি ছাড়া কিছুই খায় নি। তবে স্যুপের বাটির ঢাকনা তুলে দেখেছে তাকে কী দেয়া হয়েছে।

    সালেহ ইমরান ছেলের ঘরে আছেন। ত্রিশ মিনিট সময় পার হয়েছে, এখনো দুজনের ভেতর কথাবার্তা শুরু হয় নি। সালেহ ইমরান নিজে কথা শুরু করতে চাচ্ছেন না। তিনি অপেক্ষা করছেন।

    কমল প্রথম কথা শুরু করল। ক্লান্ত গলায় বলল, I am hungry.

    সালেই ইমরান বললেন, তোমাকে খাবার দেয়া হয়েছে। খাও। এই খাবারগুলি পছন্দ না হলে বলো, অন্য খাবার আনিয়ে দিচ্ছি।

    খাব না।

    ক্ষিধে লাগলে খেতে হয়, এটা হলো নিয়ম। তুমিই আমাকে বলেছ, নিয়ম গড-এর তৈরি করা। আবার তুমিই নিয়ম ভাঙ্গছ।

    সরি।

    কার কাছে সরি? আমার কাছে?

    কমল শান্তগলায় বলল, না। গড-এর কাছে।

    তুমি তাহলে কিছু খাবে না?

    না।

    সালেহ ইমরান বললেন, আমি যদি বলি তোমাকে মতিনের সঙ্গে দেখা করিয়ে দেব, আমি যদি প্রমিজ করি, তাহলে কি খাবে?

    কখন দেখা করাবে?

    আগামীকাল সকালবেলা। মতিন জানিয়েছে, সে এ বাড়িতে আসবে না। কাজেই তোমাকে তার কাছে নিয়ে যাব। ঠিক আছে?

    হ্যাঁ ঠিক আছে।

    তাহলে খাওয়া শুরু কর। Start with fruit juice.

    আমি কাল সকালে খাব।

    মতিনের সঙ্গে দেখা হবার পর খাবে, তাই তো?

    হুঁ।

    এর অর্থ হলো, তুমি আমার প্রমিজ বিশ্বাস করছ না। যে প্রমিজ বিশ্বাস করে, তার সঙ্গে প্রমিজ করা ঠিক না। আমি আমার প্রমিজ উঠিয়ে নিলাম।

    তুমি উনার সঙ্গে আমার দেখা করাবে না?

    দেখা করাব, কিন্তু প্রমিজ করছি না।

    কমল টেবিলের দিকে এগিয়ে গেল। স্যুপের বাটির ঢাকনা তুলে এক চামচ স্যুপ মুখে দিল। সালেহ ইমরান বললেন, তোমার অন্য কিছু খেতে ইচ্ছা করলে বলো, আমি আনিয়ে দিচ্ছি।

    কমল জবাব দিল না। সে অতি দ্রুত খাচ্ছে।

    সালেহ ইমরান বললেন, স্যুপটা কি ভালো?

    হ্যাঁ।

    মতিনের সঙ্গে দেখা করা তোমার এত জরুরি কেন?

    আমি তাকে একটা secret বলব। I have a secret.

    আমাকে বলো।

    না, শুধু তাকে বলব।

    শুধু তাকে কেন?

    সে আমার secret বুঝবে।

    তোমার কী করে ধারণা হলো সে তোমার secret বুঝবে?

    সে আমার মতো একজন।

    তার মানে?

    সে আমার মতো একজন।

    ব্যাখ্যা কর।

    সে আমার মতো একজন।

    সালেহ ইমরান উঠে দাঁড়ালেন। কমল কথার পুনরাবৃত্তি শুরু করেছে। একে বলে Autistic childs repeatative mood. সে এখন একই কথা বলে যাবে।

     

    ছেলে খাওয়া শুরু করেছে, এই খবরটা তিনি মুনাকে দিলেন। মুনা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলল, বাঁচলাম! আমি ঠিক করেছিলাম ডাক্তারকে দিয়ে স্যালাইন দেবার ব্যবস্থা করব। তুমি অসাধ্য সাধন কীভাবে করলে? তোমার magical words কী ছিল? আমাকে শিখিয়ে দিও।

    সালেহ ইমরান জবাব দিলেন না। মুলা বলল, কমল আমার চেয়ে তোমার প্রতি বেশি অ্যাটাচড।

    হতে পারে।

    মাঝে মাঝে আমার মনে হয়, সে আমাকে পছন্দ করে না!

    অটিজমের শিশুরা কী পছন্দ করে বা করে না এটা বোঝা কঠিন। তারা তাদের পছন্দ অপছন্দ গোপন রাখে।

    মুনা বলল, তুমি এক কাজ কর, বসার ঘরে গিয়ে বসো। আমি কমলকে নিয়ে আসছি। ম্যাজিক শো শুরু হবে।

    সালেহ ইমরান অবাক হয়ে বললেন, কিসের ম্যাজিক শো?

    তুমি ভুলে গেছ? আজ ফারুকের ম্যাজিক দেখাবার কথা না!

    সালেহ ইমরান বললেন, আজ বাদ থাক। শরীরটা ভালো লাগছে না।

    শরীর ভালো লাগছে না, ম্যাজিক দেখলে ভালো লাগবে। বেচারা কবুতর টবুতর নিয়ে এসেছে।

    কবুতর কেন?

    ওর একটা খেলা আছে–Dove production. একটা খালি টিনের কৌটা থেকে কবুতর বের করে।

    সালেহ ইমরান বললেন, আমার আজ কেন জানি কবুতর দেখতে ইচ্ছা করছে না।

    তোমার ছেলে ম্যাজিক পছন্দ করবে। ছেলের জন্যে তুমি এটুকু করবে না?

     

    ম্যাজিক শো শুরু হয়েছে। প্রথমেই টিনের খালি কৌটা থেকে কবুতর বের করার খেলা। টিনের খালি কৌটা সবাইকে দেখানো হলো। কমল ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখল। খালি কৌটার ভেতর সিল্কের একটা সাদা রুমাল ঢুকানো হলো। সেই রুমালটা হয়ে গেল ধবধবে সাদা একটা কবুতর।

    কমল মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে কবুতরটার দিকে। কী সুন্দর কবুতর! টেবিলের এক কোনায় শান্ত হয়ে বসে আছে। উড়ে চলে যাচ্ছে না। চোখ দুটিও কী সুন্দর! কাচের পুতির মতো জ্বলজ্বল করছে। কমল তার মাকে নিচু গলায় বলল, মা, কবুতরটার নাম কী?

    মুনা বলল, কবুতরটার কোনো নাম নেই।

    কমল বলল, নাম নেই কেন?

    পশু-পাখিদের নাম থাকে না।

    কমল বলল, কেন পশু-পাখিদের নাম থাকবে না?

    মুনা বলল, বিরক্ত করবে না। ম্যাজিক দেখ।

    ম্যাজিশিয়ান ফারুক অনেকগুলি আইটেম দেখালেন। দড়ি কাটার খেলা। যতবার দড়ি কাটা হচ্ছে ততবারই জোড়া লেগে যাচ্ছে। লিংকিং রিং। একটা রিং আরেকটা রিং-এর ভেতর ঢুকে যাচ্ছে। অথচ রিং-এর মধ্যে কোনো ফাঁক ফোকর নেই। পিং পং বলের খেলা। একটি বল হয়ে যাচ্ছে দুটি বল। দুটি হয়ে যাচ্ছে তিনটি। তিনটি থেকে চারটি।

    কমল ম্যাজিক দেখছে না। তার স্থির দৃষ্টি কবুতরটার দিকে। কবুতর যেদিকে তাকাচ্ছে সে ঠিক সেদিকেই তাকাচ্ছে। কবুতর তাকাল মাথার উপরের সিলিং ফ্যানের দিকে। কমলও সেদিকে তাকাল। একসময় সে বাবার দিকে ঝুঁকে এসে বলল, বাবা, আমি কি এই কবুতরটার নাম দিতে পারি?

    সালেহ ইমরান বললেন, অবশ্যই পার।

    কমল বলল, তার আগে আমাকে জানতে হবে এটা ছেলে কবুতর, না মেয়ে কবুতর।

    এটা ছেলে না মেয়ে আমি জানি না। তুমি বরং এমন একটা নাম রাখ, যে নাম ছেলের জন্যেও চলে, মেয়ের জন্যেও চলে।

    আমি ওর নাম রাখলাম Xodarap.

    সুন্দর নাম। মানে কী?

    মুনা তাদের দিকে তাকিয়ে বললেন, তোমরা তো কথাই বলে যাচ্ছ। ম্যাজিক দেখছ না। ফর গডস সেক, চুপ করবে?

    পিতাপুত্র দুজনই চুপ করে গেল।

    এখন শুরু হয়েছে আঙুল কাটার খেলা। একটা ধারালো ছুরি দিয়ে মাজিলিয়ান তার তর্জনী কেটে ফেলবেন। সেই আঙুল আবার জোড়া দেয়া হবে। মুনা বললেন, এই ম্যাজিকটা থাক। আমার কেমন যেন লাগে। মনে হয় রিয়েল। কাটা আঙুল জোড়া লাগবে না ভেবে টেনশন হয়।

    ফারুক বললেন, এটাই সবচে ইন্টারেস্টিং আইটেম।

    আঙুল কাটা ম্যাজিকের প্রস্তুতি চলছে। কমল এখনো তাকিয়ে আছে কবুতরের দিকে। সে বাবার দিকে খানিকটা ঝুঁকে এসে বলল, বাবা, দেখ কবুতরটা টেবিলে পুপু করে দিয়েছে। ইন্টারেস্টিং না?

    সালেহ ইমরান বললেন, হুঁ।

    পুপু করার পর কবুতরটা একটু সামনে এসেছে।

    হুঁ।

    কেন বাবা?

    জানি না কেন।

    আমার ধারণা তারা পরিষ্কার জায়গা ছাড়া পুপু করে না।

    সালেহ ইমরান চাপা গলায় বললেন, বাবা চুপ কর, তোমার মা আবার রাগ করবেন। ম্যাজিক দেখ।

    ম্যাজিসিয়ান ফারুক তার তর্জনী কেটে ফেলেছে। গলগল করে কাটা আঙুল দিয়ে রক্ত পড়ছে। মুনা ভয়ে মুখে আঁচল চাপা দিয়েছেন। কমল এইসব কিছুই দেখছে না। তার দৃষ্টি কবুতর এবং কবুতরের পুপুতে নিবদ্ধ।

    সে ভাবছে কবুতরটা কথা বলতে পারলে ভালো হতো। তাকে অনেক কিছু জিজ্ঞেস করা যেত। যেমন, এই মুহূর্তে তার মাথায় একটা প্রশ্ন এসেছে। কবুতরের পা আছে কিন্তু হাত নেই। হাতের বদলে ডানা। ডানা কি হাতের চেয়ে ইম্পোর্টেন্ট? মানুষের যদি হাতের বদলে ডানা থাকত তাহলে কেমন হতো? পৃথিবীতে এমন কোনো পাখি বা প্রাণী কি আছে যাদের হাতও আছে আবার ডানাও আছে?

     

    রাতে ঘুমুবার সময় মুনা মুখে ফেসপ্যাক দেয়। সারা মুখে সাদা আস্তরণ, শুধু চোখ আর ঠোঁট বের হয়ে থাকে। তাকে তখন ভয়ঙ্কর দেখায়। রাতের পর রাত এই দৃশ্য দেখে সালেহ ইমরানের অভ্যস্ত হয়ে যাবার কথা। তিনি অভ্যস্ত হতে পারেন নি। বিছানায় যাবার আগ পর্যন্ত তিনি চেষ্টা করেন স্ত্রীর দিকে না তাকাতে। বিছানায় যাবার পর তাকে বাধ্য হয়েই স্ত্রীর দিকে তাকাতে হয়। স্বামী অন্যদিকে ফিরে ঘুমাবে এটা তিনি পছন্দ করেন না।

    মুনা বলল, তুমি কি জানো ক্লিওপেট্রা মোটেই রূপবতী মহিলা ছিলেন না?

    সালেহ ইমরান বললেন, এই তথ্য জানি না।

    মুনা বলল, সারা পৃথিবীতে ক্লিওপেট্রাকে নিয়ে মাতামাতি, অথচ সে ছিল আগলি।

    আগলি?

    হ্যাঁ, তার পা ছিল বাঁকা। ধনুকের মতো বাঁকা। সারা গাভর্তি লোম।

    কে বলেছে? ফারুক বলেছে। তার পড়াশোনা ভালো। তার প্রিয় বিষয় হলো ইতিহাস।

    ও আচ্ছা।

    সে খুব মজার মজার ইতিহাসের গল্প জানে।

    সালেহ ইমরান বললেন, ম্যাজিক শোর মতো একদিন তার ইতিহাস শোর আয়োজন করো। সে ইতিহাসের গল্প বলবে, আমরা শুনব।

    ঠাট্টা করছ?

    না, ঠাট্টা করছি না।

    তোমার গলার স্বরে ঠাট্টা ভাব আছে।

    সালেহ ইমরান সিগারেট ধরালেন। মুনা বলল, শোবার ঘরে সিগারেট ধরালে যে?

    সালেহ ইমরান সিগারেট হাতে শোবার ঘরের বারান্দায় চলে এলেন। বারান্দা তার পছন্দের জায়গা। টব দিয়ে বারান্দা ঘেরা। টবভর্তি নানান ধরনের ফুলের গাছ। গাছগুলি যত্নে আছে বোঝা যায়। সতেজ পাতা ঝলমল করছে।

    মুনা শোবার ঘর থেকে বলল, তুমি কি চা খাবে?

    সালেহ ইমরান বললেন, না।

    মুনা বলল, আমার খেতে ইচ্ছা করছে। তুমি যদি খাও তাহলে বারান্দায় বসে এককাপ চা খাওয়া যায়।

    দিতে বলো।

    চা খেতে খেতে তোমার সঙ্গে একটা জরুরি বিষয় নিয়ে ডিসকাস করব।

    আজই করতে হবে?

    হ্যাঁ আজই। জরুরি বিষয় নিয়ে আলাপের জন্যে নিশ্চয়ই পঞ্জিকা দেখে দিনক্ষণ ঠিক করার প্রয়োজন নেই।

    না নেই।

    সালেহ ইমরান বারান্দার বাতি নিভিয়ে বারান্দা পুরোপুরি অন্ধকার করে দিলেন। যেন বাইরে থেকে কেউ কিছুই দেখতে না পারে। তার ভয় মুনাকে নিয়ে। সে ঘুমুতে যাবার প্রস্তুতি নিয়ে নিয়েছে। সে যখন বারান্দায় এসে চেয়ারে বসবে তখন সম্ভাবনা শতকরা পঞ্চাশ যে তার গায়ে কোনো কাপড় থাকবে না।

    মুনা দুকাপ চা নিয়ে ঢুকল। সালেহ ইমরান স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন। মুনার গায়ে কাপড় আছে। মুনা বলল, তুমি সবসময় লিকার চা খাও। এখন থেকে খাবে দুধ চা।

    সালেহ ইমরান চায়ের কাপ হাতে নিতে নিতে বললেন, কেন?

    দুধ চা লেবু চায়ের চেয়ে হাজার গুণ ভালো।

    আমি তো এতদিন উল্টোটা জানতাম।

    মুনা বলল, ভুল জানতে। চায়ের ভেতর আছে ট্যানিন। এটা একটা কার্মিনোজেন। যখন চায়ে দুধ দেয়া হবে তখন সেই দুধ ট্যানিনের সঙ্গে রি অ্যাক্ট করে একটা পানিতে দ্রবণীয় কম্পাউন্ড তৈরি করবে। তখন সেই কম্পাউন্ড দ্রুত শরীর থেকে ইউরিনের সঙ্গে বের হয়ে যাবে।

    জটিল কেমিস্ট্রি। বলেছে কে? ম্যাজিসিয়ান ফারুক?

    হ্যাঁ।

    সে কি কেমিস্ট্রিও জানে নাকি?

    কিছুটা তো জানেই।

    Thats very good.

    মুনা বলল, ঠিক করে বলো তো, তুমি কি ওকে হিংসা কর?

    সালেহ ইমরান বললেন, ওকে হিংসা করার মতো কোনো কারণ কি তৈরি হয়েছে?

    মুনা বলল, প্যাঁচানো জবাব দেবে না। বলো Yes কিংবা No।

    সালেহ ইমরান বললেন, তোমার কাছ থেকে জরুরি কিছু কথা শুনব বলে আমরা মাঝরাতে বারান্দায় বসে চা খাচ্ছি। এখন তোমার জরুরি কথা শুনি। পরে Yes কিংবা No বলব।

    এখন Yes, No বলতে সমস্যা কোথায়?

    সালেহ ইমরান বললেন, ম্যাজিশিয়ান ফারুককে নিয়ে কথা বলতে এই মুহূর্তে আমার ইচ্ছা করছে না। তুমি তোমার কথাগুলি বলো, আমি শুনি।

    মুনা কিছুক্ষণ কোনো কথা বলল না। চায়ের কাপে পর পর দুবার চুমুক দিয়ে হালকা গলায় বলল, তোমার সঙ্গে জীবন্যাপন করে আমি এখন আর কোনো আনন্দ পাচ্ছি না।

    আগে কি পেতে?

    মনে হয় আগেও পেতাম না।

    এটাই তোমার জরুরি কথা?

    হ্যাঁ। কেন, কথাগুলি কি তোমার কাছে তেমন জরুরি মনে হচ্ছে না?

    সালেহ ইমরান জবাব দিলেন না। মুনা চায়ের কাপ নামিয়ে রাখতে রাখতে বলল, আমি ভীষণ বোরড ফিল করি। মনে হয় আমি একজন Extra। আমার কিছু করার নেই। দৈত্য যেমন কলসির ভেতর বন্দি থাকে আমিও সেরকম বন্দি।

    কলসির ভেতর থেকে তোমাকে বের করে আনার জেলে কি আছে?

    তার মানে?

    কথার কথা বললাম। বন্দি দৈত্যকে এক জেলে মুক্ত করেছিল।

    আমার সঙ্গে হেঁয়ালিতে কথা বলবে না। দয়া করে আমার মানসিক অবস্থাটা বুঝার চেষ্টা করবে। মানসিকভাবে আমাকে ঠিক রাখার দায়িত্ব তোমার।

    কী করলে তুমি মানসিকভাবে ঠিক হবে?

    এখনো বুঝতে পারছি না। মাঝে মাঝে মনে হয় কিছুদিন আলাদা কোথাও বাস করলে সব ঠিক হবে।

    তাই কর।

    কমলকে রেখে যাব কীভাবে?

    তাকে নিয়ে যাও।

    না, তাকে নেব না। তাকে সঙ্গে নেয়ার মানে বাড়তি টেনশন নেয়া। আমি আমার নিজের টেনশনেই অস্থির।

    সালেহ ইমরান বললেন, তুমি যা চাইবে তাই হবে।

    মুনা বলল, আমি যা চাইব তাই?

    সালেহ ইমরান বললেন, অবশ্যই।

    মুনা বলল, আমি যদি বলি গাড়ি বের কর, তোমাকে পাশে নিয়ে লং ড্রাইভে যাব। হাইওয়ে দিয়ে গাড়ি চলতে থাকবে সিলেটের দিকে। গাড়িতে গান। বাজবে। আমরা কোথাও থামব না, চলতেই থাকব। যখন ভোর হওয়া শুরু হবে তখন ঢাকার দিকে রওনা হবো। ড্রাইভার গাড়ি চালাবে না। আমি চালাব। তুমি পাশে বসে থাকবে। রাজি আছ?

    সালেহ ইমরান চুপ করে রইলেন। জবাব দিলেন না। মুনা বলল, আমি যা চাইব তাই হবে এটা হলো তোমার কথার কথা। আমি যা চাইব তা কিন্তু হবে না। আমার যে চাওয়াতে তোমার সায় আছে তাই হবে।

    সালেহ ইমরান হাতের সিগারেট ফেলে উঠে দাঁড়ালেন। মুনা বলল, তোমার ঘুম পেলে ঘুমুতে যাও। আমি আরো কিছুক্ষণ রারান্দায় বসে থাকব। বারান্দায় বসে থাকতে আমার ভালো লাগছে।

    সালেহ ইমরান শান্ত গলায় বললেন, ড্রাইভারকে গাড়ি বের করতে বলো, আমরা সিলেটের দিকে রওনা হবো।

    মুনা অবাক চোখে তাকাল।

    সালেহ ইমরান বললেন, আই মিন ইট।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleজলপদ্ম – হুমায়ূন আহমেদ
    Next Article কালো যাদুকর – হুমায়ূন আহমেদ

    Related Articles

    হুমায়ূন আহমেদ

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    ইস্টিশন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    উড়ালপঙ্খী – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    এই বসন্তে – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    এই মেঘ, রৌদ্রছায়া – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    এইসব দিনরাত্রি – হুমায়ূন আহমেদ

    December 23, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Our Picks

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    ইস্টিশন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    উড়ালপঙ্খী – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }