Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    ইস্টিশন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    উড়ালপঙ্খী – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    কে কথা কয় – হুমায়ূন আহমেদ

    হুমায়ূন আহমেদ এক পাতা গল্প311 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ১৩. সুইজারল্যান্ডে পড়তে যাবার ব্যাপারে

    সুইজারল্যান্ডে পড়তে যাবার ব্যাপারে কমলের কোনো আপত্তি লক্ষ করা যাচ্ছে না। বরং মনে হচ্ছে তার আগ্রহই আছে। ভালো আগ্রহ। সে তার মা কে কী কী জিনিস লাগবে তার লিস্ট করে দিয়েছে। লিস্টে আছে–

    ১. একটি অ্যালার্ম টেবিল ঘড়ি।

    ২. দুটি ফ্লাস্ক।

    ৩. নিউটনের লেখা অঙ্কের বই Principia Mathematica.

    ৪. সুইজারল্যান্ডে যত বিমান যায় এবং আসে তার টাইমটেবল।

    ৫. দুটি জিওমেট্রি সেট।

    ৬. একটি ইংলিশ টু বেঙ্গলি ডিকশনারি।

    ৭. একটি ইংলিশ টু জার্মান ডিকশনারি।

    ৮. একটি ইংলিশ টু রুশ ডিকশনারি।

    মুনা ৩, ৪ এবং ৮ নাম্বার আইটেম ছাড়া বাকি সবই জোগাড় করেছে। ছেলেকে জিজ্ঞেস করেছিলেন সে ইংলিশ টু রুশ ডিকশনারি দিয়ে কী করবে? কমল জবাব দেয় নি।

    কমলের সঙ্গে কে কে যাবে তা এখনো ঠিক হয় নি। তার মা যাবে এটা ঠিক হয়েছে। ফারুক সাহেবের ভিসা হয়েছে। তিনি যাবার জন্যে প্রস্তুত। তবে হঠাৎ করে সালেহ ইমরান ঠিক করেছেন তিনি যাবেন। ছেলেকে হোস্টেলে রেখে ফিরে আসবেন। সালেহ ইমরান এই সিদ্ধান্ত নেয়ায় আহমেদ ফারুকের যাবার ব্যাপারে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। মুনা বলেছেন, তুমি যখন যাচ্ছই তখন আর ফারুক সাহেবের যাবার দরকার কী?

    সালেহ ইমরান হা না কিছু বলেন নি। তাকে চিন্তিত এবং বিষণ্ণ মনে হয়েছে। ছেলে তার কাছে থাকবে না, দূরদেশে পড়ে থাকবে, এটা তিনি নিতে পারছেন না। তার এই ছেলে আর দশটি স্বাভাবিক ছেলের মতো না। অন্যরকম একটি ছেলে। কোনো একদিন তার রাগ উঠে যাবে কেউ বুঝতে পারবে না। সে গুটিয়ে থাকবে নিজের মধ্যে। প্রবাসী ছেলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ থাকবে তাও না। সে কখনো তাকে টেলিফোন করবে না। ছেলেকে বাইরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত ঠিক হয় নি। কোনো বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললে হুট করে তা পাল্টানো যায় না। তিনি মনে মনে ঠিক করে রেখেছেন ছেলেকে সুইজারল্যান্ডের স্কুলে ঠিকই ভর্তি করাবেন। ছেলে দিন দশেক স্কুলে থাকবে। তিনিও স্কুলের আশেপাশে কোনো একটা হোটেলে থাকবেন। তার দেশে ফিরে আসার সময় যখন হবে তিনি ছেলেকে নিয়ে ফিরবেন। বিষয়টা নিয়ে তিনি এখনো মুনার সঙ্গে আলাপ করেন নি। কারণ মুলা কী বলবে তিনি জানেন। মুনা বলবে, অসম্ভব। সালেহ ইমরানের ইচ্ছা তিনি ছেলের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। এখনো কথা বলা হয়ে উঠে নি। তিনি ঠিক করে রেখেছেন কোনো এক মুভি নাইটে। প্রসঙ্গ তুলবেন।

    আজ মুভি নাইট। কমল তার বাবার পাশে বসেছে। দুজনের মাঝখানে তিন ফুটের মতো ফাকা জায়গা। সালেহ ইমরান ছেলের কাছে সামান্য এগিয়ে গেলেন। তিনি যতটুকু এগুলেন কমল ঠিক ততটুকুই সরে গিয়ে তাদের মাঝখানের দূরত্ব ঠিক রাখল।

    সালেহ ইমরান বললেন, কমল, আজ কী ছবি?

    কমল বলল, তুমি ঠিক কর।

    সালেহ ইমরান বললেন, বাংলা ছবি দেখলে কেমন হয়।

    কমল বলল, Ko.

    সালেহ ইমরান বললেন, Ko মানে কী? Ok?

    হুঁ। বাংলা ছবিটার নাম কী?

    পথের পাঁচালি। অপু দুর্গার গল্প। তারা দুই ভাইবোন। ছবিতে অপুর যে চেহারা তার সঙ্গে তোমার চেহারার মিল আছে।

    বেশি মিল?

    খুব বেশি না, তারপরেও কিছুটা মিল আছে।

    অপুর কাঁধে কি আমার মতো জন্মদাগ আছে?

    সালেহ ইমরান বললেন, তোমার কাঁধে জন্মদাগ আছে নাকি?

    কমল বলল, হুঁ।

    দেখি?

    কমল বলল, এখন দেখাতে ইচ্ছা করছে না।

    কখন ইচ্ছা করবে?

    কমল বলল, জানি না।

    সালেহ ইমরান বললেন, ছবি কি শুরু করব?

    কমল বলল, তোমার ইচ্ছা।

    সালেহ ইমরান বললেন, একজনের সঙ্গে আরেকজনের চেহারার মিল নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আমার একটা ব্যাপার মনে এসেছে। পৃথিবীর কোনো মানুষের বুড়ো আঙুলের ছাপ একরকম না, এটা কি তুমি জানো?

    জানি।

    পৃথিবীতে এত মানুষ এসেছে, এদের কোনো দুজনের বুড়ো আঙুলের ছাপ একরকম না। এটা অদ্ভুত না?

    কমল বলল, হুঁ।

    সালেহ ইমরান আগ্রহের সঙ্গে বললেন, পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ আলাদা, অথচ দেখ প্রতিটি আমগাছ একরকম, কাঁঠাল গাছ একরকম। শীতের সময় যে হাজার হাজার মাইগ্রেটরি বার্ড আমাদের দেশে উড়ে আসে তারাও একরকম।

    কমল বলল, তারাও প্রত্যেকেই আলাদা। আমরা বুঝতে পারি না। প্রতিটি পাখিই যে আলাদা সেটা একটা পাখি বুঝতে পারবে। প্রতিটি আমগাছও আলাদা, এটা একটা আমগাছ বুঝতে পারবে। আমরা বুঝতে পারব না।

    সালেহ ইমরান বললেন, তোমার ব্যাখ্যাটা ইন্টারেস্টিং। তবে সত্যি না।

    তুমি কী করে বুঝলে সত্যি না?

    সালেহ ইমরান বললেন, আমার মন বলছে এটা সত্যি না।

    কমল বলল, আমার মন বলছে এটা সত্যি।

    সালেহ ইমরান বললেন, আচ্ছা ঠিক আছে, ধরে নিলাম তুমি যা বলছ তাই সত্যি। এখন কি ছবি শুরু করব?

    তোমার ইচ্ছা।

    কমল, তোমার কি কোনো কারণে মন খারাপ?

    হুঁ।

    কেন মন খারাপ?

    তোমাকে বলব না।

    আমাকে বলবে না কেন?

    তোমাকে বললে তুমি আমার মন ঠিক করতে পারবে না। শুধু শুধু কেন বলব?

    এমন কেউ কি আছে যে তোমার মন ঠিক করতে পারবে?

    আছে। নদ্দিউ নতিম।

    আমাদের মতিনের কথা বলছ?

    হুঁ।

    তুমি মন খারাপ করে আছ এই অবস্থায় ছবি দেখার তো কোনো মানে হয়। না। চল একটা কাজ করি, গাড়ি করে তোমাকে নিয়ে যাই মতিনের কাছে। সে তোমার মন ভালো করে দিক, তারপর ছবিটা দেখি।

    কমল সঙ্গে সঙ্গে উঠে দাঁড়াল। তার চোখেমুখে আনন্দ। সালেহ ইমরান বললেন, তুমি কি আমার বা তোমার মায়ের সঙ্গর চেয়ে মতিনের সঙ্গ বেশি পছন্দ কর?

    কমল হ্যাঁ-সূচক মাথা নাড়ল।

    সালেহ ইমরান বললেন, তুমি যে একা সুইজারল্যান্ডে থাকবে, আমাকে এবং তোমার মাকে তুমি মিস করবে না?

    কমল বলল, না।

    সালেহ ইমরান বললেন, মিস করবে না কেন?

    কমল বলল, মতিন আমার সঙ্গে থাকবে এইজন্যে মিস করব না।

    মতিন তোমার সঙ্গে থাকবে?

    হ্যাঁ। তাকে ছাড়া আমি যাব না।

    আমি যতদূর জানি মতিন যে যাবে না এই বিষয়টা পরিষ্কার করে তোমাকে বলা হয়েছে।

    মতিন যাবে। মতিন অবশ্যই যাবে।

    সালেহ ইমরান আর কথা বাড়ালেন না, উঠে দাঁড়ালেন। তিনি একধরনের স্বস্তিও বোধ করছেন। ছেলে বাইরে যাবে না। তার চোখের সামনেই থাকবে। এই ঘটনাটি আপনাআপনি ঘটে গেছে। তাকে কিছু করতে হয় নি। মুনার কাছে। ব্যাখ্যা করতে হবে না।

     

    মতিনকে তার মেসবাড়িতে পাওয়া গেল না। মেস ম্যানেজার বলল, উনার আসা যাওয়ার কোনো ঠিক ঠিকানা নাই। দশ মিনিট পরেও আসতে পারে, আবার দশ ঘণ্টা পরেও আসতে পারে।

    কমল বলল, দশ ঘন্টা পর তো দিন হয়ে যাবে।

    উনি যেমন মানুষ রাত পার করে দিনেও আসতে পারে। দুনিয়ায় হিসাব ছাড়া মানুষ কিছু আছে, ইনি তার একজন। আপনারা অপেক্ষা করতে চাইলে অপেক্ষা করতে পারেন।

    সালেহ ইমরান কিছু বলার আগেই কমল বলল, আমরা অপেক্ষা করব।

    ম্যানেজার বলল, আমার ঘরে অপেক্ষা করেন। কোনো অসুবিধা নাই।

    ম্যানেজারের ঘরে দুজন বসে আছে। সালেহ ইমরান ঘড়ি দেখলেন। উনিশ মিনিট পার হয়েছে। কমল কোনো অস্থিরতা দেখাচ্ছে না। শান্তভঙ্গিতে চেয়ারে পা ঝুলিয়ে বসে আছে। তাকে দেখে মনে হচ্ছে সে দীর্ঘ সময় এইভাবে বসে থাকতে পারবে। অপেক্ষা করতে তার খারাপও লাগছে না। সালেহ ইমরান ঠিক করেছেন ছেলে যতক্ষণ অপেক্ষা করতে চায় তিনি ততক্ষণই অপেক্ষা করবেন। নিজ থেকে বলবেন না, অনেক অপেক্ষা করা হয়েছে এখন চল যাওয়া যাক। অপেক্ষার একটা পরীক্ষা সালেহ ইমরান আজ দিতে চান।

     

    মতিন আছে নিশুদের বাড়িতে। নিশু রান্না করছে, সে পাশে বসে আছে। রান্না এমন কিছু না। ডাল, বেগুন দিয়ে ডিমের তরকারি। নিশু বলল, তুমি তো আমার সঙ্গে খাবে, তাই না?

    মতিন বলল, হুঁ।

    নিশু বলল, ফ্রিজে কিছুই নেই। অনেক দিন বাজার করা হয় না।

    মতিন বলল, কী কী লাগবে বলো, আমি এনে দেব।

    নিশু বলল, লাগবে না। খাওয়া দাওয়াটা আমার কাছে ইম্পোর্টেন্ট না।

    তোমার কাছে কোনটা ইম্পোর্টেন্ট?

    বেঁচে থাকাটা ইম্পোর্টেন্ট। বাঁচা উইথ ডিগনিটি।

    ডিগনিটি বলতে কী বুঝাচ্ছ?

    শুধু শুধু প্যাঁচাল পাড়বে না। ডিগনিটির অর্থ তুমি জানো।

    মতিন সিগারেট ধরাল। তার প্যাকেটে একটা মাত্র সিগারেট। সিগারেট ধরাবার পর সে সামান্য টেনশনে পড়ে গেল। সঙ্গে সিগারেট নেই, এই চিন্তাটাই টেনশনের।

    নিশু বলল, তোমার প্যাকেট তো মনে হয় খালি। প্যাকেটে সিগারেট থাকলে আমি একটা খেতাম।

    মতিন অবাক হয়ে বলল, তুমি সিগারেট খাও না-কি?

    নিশু বলল, এখন খাই। বাবাকে কবর দিয়ে বাসায় ফিরে কেমন যেন হয়ে গেলাম। ভয়, অবসন্ন ভাব, ক্লান্তি।

    রাতে একা ছিলে?

    অবশ্যই একা। দোকা পাব কোথায়?

    তুমি খুবই সাহসী মেয়ে।

    যত সাহসী তুমি আমাকে ভাবছ তত সাহসী আমি না। রাতে বিছানায় শুয়েছি, হঠাৎ শুনি বাবার ঘর থেকে কাশির শব্দ আসছে। উনি সিগারেট টানছেন, সিগারেটের গন্ধ আসছে। হেলুসিনেশন আর কী। গেলাম বাবার ঘরে। অনেকক্ষণ বসে রইলাম। বাবার টেবিলের উপর দেখি এক প্যাকেট সিগারেট। ভয় কাটানোর জন্যে একটা ধরালাম। সেই থেকেই আমার শুরু।

    মতিন বলল, ঐ রাতে আমার আসা উচিত ছিল। আমি আসি নি কেন কারণটা বলব?

    কারণ বলেছ–হস্তীবিষয়ক রচনা। নদ্দিউ নতিমের নতুন লেখা।

    মতিন বলল, মূল কারণ এটা। আমি মৃত মানুষের সঙ্গে যেতে পারি না। আমার মা মারা গেছেন এই খবর পেয়ে আমি পালিয়ে চলে গিয়েছিলাম। ফিরেছি তিনদিন পর। এসে দেখি মার কবর হয়ে গেছে। খুবই স্বস্তি পেয়েছি। ভয় ছিল দেখব মাকে কবর দেয়া হয় নি। আমি শেষ দেখা দেখব এইজন্যে রেখে দিয়েছে।

    নিশু বলল, তুমি না আসায় আমার কোনো সমস্যা হয় নি। তোমার দুলাভাই চলে এসেছিলেন। সবকিছু তিনি করলেন। উনি একজন সত্যিকার ভালোমানুষ।

    ঠিকই বলেছ।

    তোমার বোন ভাগ্যবতী।

    বোন ভাগ্যবতী তো বটেই। আজ রাতে যদি আমি তোমার এখানে থাকি তোমার কি কোনো সমস্যা হবে?

    নিশু বলল, সমস্যা কী? তুমি বাবার ঘরে শুয়ে থাকবে। আজ থাকতে চাচ্ছ কেন?

    মতিন বলল, বুঝতে পারছি না। হঠাৎ মনে হচ্ছে থেকে যাই। রাতে তোমার সঙ্গে গল্প করি। May be I am in love with you.

    নিশু বলল, May be.

    মতিন বলল, তোমার বিদেশ যাত্রা কি ঠিক আছে?

    নিশু বলল, ঠিক আছে, তবে এক সেমিস্টার পিছিয়েছি।

    এখন তো নিশ্চয়ই বিয়ে করে যাচ্ছ না।

    না। বিয়ে টিয়ের ঝামেলা শেষ।

    সারাজীবন বিয়ে করবে না?

    সারাজীবনের কথা বলতে পারছি না। আমি বর্তমানে বাস করি। আমার সব কিছুই বর্তমান নিয়ে। আমি বর্তমানে বিয়ে করব না।

    গুড।

    নিশু বলল, বিয়ে করব না, এটা গুড?

    মতিন বলল, তুমি যে তোমার ইচ্ছাটা জোর দিয়ে বলতে পারছ এটা গুড। কোনো মানুষই নিজের গোপন ইচ্ছা জোর দিয়ে বলতে পারে না। নদ্দিউ নতিমের মতো লোকও পারেন নি।

    এখানে নদ্দিউ নতিম কোত্থেকে এলো?

    কথার কথা বললাম।

    নিশু বলল, নদ্দিউ নতিমের ভূতটা ঘাড় থেকে নামাও। তুমি কি বুঝতে পারছ যতই দিন যাচ্ছে এই ভূত ততই তোমার উপর জেঁকে বসছে?

    বসুক না, ক্ষতি কী? নদ্দিউ নতিম লোকটা কিন্তু খারাপ না। আমি প্রায়ই তাঁকে স্বপ্নে দেখি।

    স্বপ্নে দেখ?

    হুঁ। ধবধবে ফরসা গায়ের রঙ। জোব্বার মতো একটা পোশাক পরেন। লম্বাটে মুখ। চোখ তীক্ষ।

    কথাবার্তা বাংলায় বলেন?

    আমাদের কথাবার্তা হয় না। দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে বসে থাকি।

    ঠাট্টা করছ?

    ঠাট্টা করব কেন?

    রান্না শেষ। হাত ধুয়ে খেতে আস।

    মতিন খেতে বসেছে। নিশু তার প্লেটে ভাত তুলে দিচ্ছে। হঠাৎ নিশুর কী যেন হলো, তার মনে হলো এই মানুষটা তার অতি অতি প্রিয়জন। স্বামী। প্রবাসী স্বামী। অনেক দিন পর দেশে ফিরেছে। সে তার স্বামীকে আদর করে খাওয়াচ্ছে। তাদের একটা ছোট্ট মেয়ে আছে। মেয়েটা ঘুমুচ্ছে। স্বামীর খাওয়া শেষ হলে নিশু তার বাচ্চা মেয়েটার জন্যে খাওয়া নিয়ে যাবে। ঘুমন্ত অবস্থায় তাকে খাইয়ে দিতে হবে। মেয়েটা খাওয়া নিয়ে বড় যন্ত্রণা করে!

    নিশুর চোখে পানি এসে গেছে।

    মতিন অবাক হয়ে বলল, কাঁদছ কেন?

    নিশু চোখ মুছতে মুছতে বলল, হঠাৎ বাবার কথা মনে করে চোখে পানি এসে গেছে। আমি যখন খুব ছোট ছিলাম তখন প্রায়ই না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়তাম। বাবা আমাকে ঘুমের মধ্যে মুখে তুলে খাইয়ে দিতেন।

     

    ধৈর্যের পরীক্ষায় সালেহ ইমরান ফেল করলেন। তিনি এসেছিলেন রাত আটটায়। এখন বাজে বারটা দশ। চার ঘণ্টা দশ মিনিট এক জায়গায় বসে আছেন। আর কত! তিনি ছেলের দিকে তাকিয়ে বললেন, চল উঠি। আরেক দিন আসব।

    কমল উঠল। তাকে দেখে মনে হচ্ছে সে এক্ষুনি কেঁদে ফেলবে।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleজলপদ্ম – হুমায়ূন আহমেদ
    Next Article কালো যাদুকর – হুমায়ূন আহমেদ

    Related Articles

    হুমায়ূন আহমেদ

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    ইস্টিশন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    উড়ালপঙ্খী – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    এই বসন্তে – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    এই মেঘ, রৌদ্রছায়া – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    এইসব দিনরাত্রি – হুমায়ূন আহমেদ

    December 23, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Our Picks

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    ইস্টিশন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    উড়ালপঙ্খী – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }