উদ্বোধন
উদ্বোধন
[গান]
বাজাও প্রভু বাজাও ঘন বাজাও
ভীম বজ্র-বিষাণে
দুর্জয় মহা-আহ্বান তব, বাজাও!
অগ্নি-তূর্য কাঁপাক সূর্য
বাজুক রুদ্রতালে ভৈরব –
দুর্জয় মহা-আহ্বান তব, বাজাও!
নট-মল্লার দীপক-রাগে
জ্বলুক তাড়িত-বহ্নি আগে
ভেরির রন্ধ্রে মেঘমন্দ্রে জাগাও বাণী জাগ্রত নব।
দুর্জয় মহা-আহ্বান তব, বাজাও!
দাসত্বের এ ঘৃণ্য তৃপ্তি
ভিক্ষুকের এ লজ্জা-বৃত্তি,
বিনাশো জাতির দারুণ এ লাজ, দাও তেজ দাও মুক্তি-গরব।
দুর্জয় মহা-আহ্বান তব, বাজাও!
খুন দাও নিশ্চল এ হস্তে
শক্তি-বজ্র দাও নিরস্ত্রে;
শীর্ষ তুলিয়া বিশ্বে মোদেরও দাঁড়াবার পুন দাও গৌরব –
দুর্জয় মহা-আহ্বান তব, বাজাও!
ঘুচাতে ভীরুর নীচতা দৈন্য
প্রেরো হে তোমার ন্যায়ের সৈন্য
শৃঙ্খলিতের টুটাতে বাঁধন আনো আঘাত প্রচণ্ড আহব।
দুর্জয় মহা-আহ্বান তব, বাজাও!
নির্বীর্য এ তেজঃ-সূর্যে
দীপ্ত করো হে বহ্নি-বীর্যে,
শৌর্য ধৈর্য মহাপ্রাণ দাও, দাও স্বাধীনতা সত্য বিভব!
দুর্জয় মহা-আহ্বান তব, বাজাও!
উদ্বোধন
শুধু অকারণ পুলকে ক্ষণিকের গান গা রে আজি প্রাণ ক্ষণিক দিনের আলোকে যারা আসে যায় , হাসে আর চায় , পশ্চাতে যারা ফিরে না তাকায় , নেচে ছুটে ধায় , কথা না শুধায় , ফুটে আর টুটে পলকে— তাহাদেরি গান গা রে আজি প্রাণ ক্ষণিক দিনের আলোকে । প্রতি নিমেষের কাহিনী আজি বসে বসে গাঁথিস নে আর , বাঁধিস নে স্মৃতিবাহিনী । যা আসে আসুক , যা হবার হোক , যাহা চলে যায় মুছে যাক শোক , গেয়ে ধেয়ে যাক দ্যুলোক ভূলোক প্রতি পলকের রাগিণী । নিমেষে নিমেষ হয়ে যাক শেষ বহি নিমেষের কাহিনী । ফুরায় যা দে রে ফুরাতে । ছিন্ন মালার ভ্রষ্ট কুসুম ফিরে যাস নেকো কুড়াতে । বুঝি নাই যাহা চাই না বুঝিতে , জুটিল না যাহা চাই না খুঁজিতে , পুরিল না যাহা কে রবে যুঝিতে তারি গহ্বর পুরাতে । যখন যা পাস মিটায়ে নে আশ , ফুরাইলে দিস ফুরাতে । ওরে থাক্ থাক্ কাঁদনি ! দুই হাত দিয়ে ছিঁড়ে ফেলে দে রে নিজে হাতে বাঁধা বাঁধনি । যে সহজ তোর রয়েছে সমুখে আদরে তাহারে ডেকে নে রে বুকে , আজিকার মতো যাক যাক চুকে যত অসাধ্য - সাধনি । ক্ষণিক সুখের উৎসব আজি , ওরে থাক্ থাক্ কাঁদনি ! শুধু অকারণ পুলকে নদীজলে - পড়া আলোর মতন ছুটে যা ঝলকে ঝলকে । ধরণীর ‘পরে শিথিলবাঁধন ঝলমল প্রাণ করিস যাপন , ছুঁয়ে থেকে দুলে শিশির যেমন শিরীষ ফুলের অলকে । মর্মরতানে ভরে ওঠ্ গানে শুধু অকারণ পুলকে ।