Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    গল্পসমগ্র – আশাপূর্ণা দেবী

    লেখক এক পাতা গল্প70 Mins Read0
    ⤷

    আসল বেনারসী ল্যাংড়া

    আসল বেনারসী ল্যাংড়া

    সীমা ঘরবার করছিল।

    অফিস থেকে ফিরতে এত দেরি হচ্ছে কেন প্রতুলের!

    যানবাহনের দুর্গতিতে দেরিটাই অবশ্য স্বাভাবিক হয়ে গেছে আজকাল, তবু ভাবনা না হয়েও পারে না। ওই যানবাহন থেকে দুর্ঘটনার নজীরও তো কম নেই।

    সীমা অনেকবার চেষ্টা করেছে একটা পড়ে থাকা সেলাই নিয়ে বসতে। কিন্তু পারছে না। মন বসছে না। হাতের কাজ হাত থেকেই নামিয়ে বারে বারেই রাস্তার ধারের বারান্দায় এসে দাঁড়াচ্ছে। এবং আপন মনেই নানা মন্তব্য করছে।

    যথা

    কী হল রে বাবা, ব্যাপারটা কী? পাড়ার প্রায় সব ভদ্দরলোকেরাই তো এসে গেল একে একে। রাস্তা তো ক্রমশই ঝিমঝিমে হয়ে আসছে।…যা দিনকাল, জানি না কী ঘটছে। হে মা কালী, রক্ষা কর! যেন বিপদআপদ না হয়।

    একবার এদিকে গলা বাড়িয়ে ডাক দিল, খুকু, কটা বাজল, দে তো আর একবার।

    অলক্ষ্য কোনোখান থেকে খুকুর ঝঙ্কার ভেসে এল, নটা চব্বিশ! এই নিয়ে কবার হল মা?

    সীমা ক্ষুব্ধ বিরক্তিতে বলে, ঠাট্টা করছিস? তা করবি বৈ কি? ঠাট্টারই সম্পর্ক তো? তোদের এ যুগের মনপ্রাণ বলে তো কিছু নেই! ভাবনা করছি আমি সাধে? কী রকম দিনকালটি পড়েছে? বাসে-ট্রামে লোক চলেছে যেন বাদুড়ঝোলা হয়ে! বিপদআপদ ঘটতে পারে না?

    খুকু যেখানে ছিল সেখান থেকে একটু সরে এসে বলে, বিপদ-টিপদ তো দৈবের ঘটনা মা! তোমাদের সে যুগের ওই মনপ্রাণ খানি নিয়ে বসে বসে দুর্ভাবনা করলেই সেটা বন্ধ করতে পারবে? সব সময় খারাপটাই বা ভাবতে বসো কেন? সেটা বুঝি অপয়া নয়?

    হয়েছে, আমায় আর জ্ঞান দিতে হবে না তোমাকে। রাত্তির দশটা বাজতে চলল, বাপ ভাই দুটো মানুষই রাস্তায় অথচ মেয়ের

    খুকু বলে, তুমি যে অবাক করলে মা! ভাই আবার কবে রাত এগারোটার আগে আড্ডা সেরে বাড়ি ফেরে? দেখ গে কোথায় কোন্ পাড়ায় মোড়ের মাথা আলো করে দাঁড়িয়ে রাজকার্য চালাচ্ছেন তোমার পুত্ররত্ন।

    সীমা আক্ষেপের নিশ্বাস ফেলে, তা জানি। তার জন্যে তো এক্ষুনি ভাবতে বসছি না। যে মানুষটা আড্ডা-ফাল্ডার ধারও ধারে না, তার জন্যে ভাবনা হবে না?

    খুকু নরম গলায় বলে, সে তো ঠিক। কিন্তু পরশু না তরশুও বাবার এরকম দেরি হয়েছিল।

    মোটেই এত নয়, সীমা প্রতিবাদ করে ওঠে, সেদিন মোটে নটা দশ হয়েছিল।

    খুকু হেসে ওঠে, ওরে ব্যস্! একেবারে মিনিট সেকেণ্ডের কাটাটা পর্যন্ত মুখস্থ! কী সাংঘাতিক পতিব্রতা হিন্দু নারী!

    বাজে বকবক করিস না খুকু। এই মানুষটাই আমায় পাগল করবে।

    খুকু হি-হি করে, করবে? ওটা এখনও ফিউচারে আছে?

    সীমা রেগে বলে ওঠে, খুকু! যাও! তুমি যেমন তোমার গল্পের বইয়ে মুখ দিয়ে পড়েছিলে, তাই থাকো গে যাও। উঃ! দিন দিন এত বাঁচালও হয়ে যাচ্ছিস–ওই য্যাঃ! গেল! কারেন্ট চলে গেল! ও মাগো! একে মরছি ভেবে ভেবে, আর এখন আলোটাও নিভে গেল!

    খুকু রোষভরে বলে, তা যাবে না? আমার গল্পের বই পড়ায় অত নজর দেওয়া! গল্পের বই পড়ব না? ওর জোরেই তো বেঁচে আছে মানুষ!

    খুকু থাম তুই! অত কথা ভাল লাগছে না!

    খুকু (নেপথ্যে)–নাঃ! অবস্থা আয়ত্তের বাইরে। ভাবছিলাম কথা কয়ে মনটা একটু ইয়ে করে রাখি। বাবাকেও বলিহারি! এই ছিচকাঁদুনী গিন্নীটিকে তো চেনোই বাবা। গাড়ি না পাও, পায়ে হেঁটেও চলে আসা উচিত!..গলার স্বর তুলে বলে, মা, এই অন্ধকারে তো কিস্যু হবে না, বরং ট্রানজিসটারটা খুলে দিই গান শোনো। চিত্তচাঞ্চল্যের মহৌষধ

    ফট করে ছোট্ট ট্রানজিসটারটা খুলে দিল।

    এটাই তো এখন ভরসা।

    লোডশেডিং-এর কল্যাণে রেডিও তো এখন প্রায় বাতিল আসবাবপত্রের সামিল হয়ে গেছে।

    গান গেয়ে উঠলেন কোনও নামকরা গায়িকা, চাঁদ উঠেছিল গগনে, দেখা হয়েছিল তোমাতে আমাতে, কী জানি কী মহালগনে।

    সীমা ক্রুদ্ধ কণ্ঠে বলে ওঠে, খুকু, ক্ষ্যামা দিবি?

    খুকু চট করে বন্ধ করে দিল যন্ত্রটা। সেও কড়া গলায় বলল, উঃ! বাবা বাবা! যে লোক গান সহ্য করতে পারে না, সে মানুষ খুন করতে পারে।

    খুকুর কথা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দরজায় ধাক্কা শোনা গেল। কারেন্ট অফ্, দরজার ইলেকট্রিক বেল অকেজো। অতএব সেই আদি ও অকৃত্রিম দুয়ারে করাঘাত।

    ওই এসেছেন– খুকু দরজা খুলতে গেল।

    সীমা তাড়াতাড়ি বলে উঠল, থাক আমি দিচ্ছি।

    ফ্ল্যাটবাড়ি, দরজা খুলতে অধিক দূর যেতে হয় না। প্রথম দর্শনের অভিব্যক্তিটা নিজের এন্ডারে থাক।

    দরজা খুলে দিয়েই সীমা বিচলিত গলায় বলে উঠল, তুই! তুই এক্ষুনি?

    পিন্টু ওরফে পল্লব দুই হাত উল্টে বলে, টাইমের একটু আগে এসে পড়েছি বটে মা-জননী! তা দেখে এমন হতাশ হয়ে যাবে তা তো ভাবিনি!

    সীমা চড়া গলায় বলে, ছেলের কথার ছিরি শোনো। তোকে সকাল সকাল আসতে দেখে আমি হতাশ হলাম?

    কি জানি, তাই যেন মনে হল!

    সীমা চড়াগলায় বলে, ঘড়ির কাটা এগারোটা না ছাড়ালে তো আসতে দেখি না—

    পিন্টু হেসে উঠে বলে, কিন্তু দেখো–এগারোটা! বারোটা বাজেইনি কোনও দিন।…এই যাঃ…খুকু টর্চটা আন তো একবার, পকেট থেকে কী পড়ে গেল মনে হল

    দাদার গলা পেয়ে খুকু প্যাসেজের এদিকে বেরিয়েই আসছিল, এখন টর্চটা নিয়ে এল। বলে উঠল, কী রে দাদা, সূয্যি আজ কোন্ দিকে উঠেছে? তুই এক্ষুনি বাড়ি ফিরলি তোর প্রাণের আচ্ছাদারদের অনাথ করে?

    পিন্টু বলে, কথাটা মিথ্যে বলিস নি। ওরা তো মারতে উঠছিল। তাও চলে এলাম। কাল ফাদার যা ফায়ার হয়ে উঠেছিল। উঃ বাপ!

    সীমা বলে, তবু ভালো! ফাদার ফায়ার হলে একটু ভয় আছে এখনও। মা রেগে মরে গেলেও তো

    পিন্টু উদাত্ত গলায় বলে, মা? মার রাগে কি আর ভয় হয় গো? কথায় বলে মাতৃস্নেহ। কুপুত্র যদ্যপি হয়–

    থাম্ থাম্ হয়েছে। তোকে আর শান্তর আওড়াতে হবে না। পকেট থেকে কী পড়ে গিয়েছিল পেয়েছিস?

    হুঁ।

    কী ওটা? চিঠি? চিঠির মতন মনে হল যেন?

    ক্ষেপেছে! এ অভাগাকে চিঠি কে দেবে মা? এ একটা লণ্ড্রীর বিল।

    লণ্ডীর বিল?

    হ্যাঁ তো! অবাক হবার কি আছে? কুল্লে একটা টেরিট প্যান্ট আর একটা টেরিলিন শার্ট আছে বলে কি আর জন্মে, জীবনেও লণ্ড্রীর দরকার হয় না গো জননী!…তা বাড়িটা এমন আইসব্যাগ আইসব্যাগ লাগছে কেন বল তো? ফাদার কি খেয়ে-দেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছেন?

    সীমা কিছু বলার আগে খুকু তাড়াতাড়ি বলে ওঠে, না রে দাদা, বাবা এখনও আসেই নি!

    তাই নাকি? পিন্টু কিছুটা অবাক গলায় বলে, গুড় বয়ের আজ এ কী অধঃপতন!

    দাদা থাম্। মা দারুণ দুশ্চিন্তা করছে।

    মা দারুণ দুশ্চিন্তা করছে? তা সেটা তো কিছু নতুন খবর নয় ভগিনী। দুশ্চিন্তা করাটাই তো মার পেশা। কারুর বাড়ি ফিরতে একটু দেরি দেখলেই তো মা ধরে নেয়, সে খট করে ট্রামে কাটা পড়েছে, সাঁ করে ডবল ডেকারের তলায় চলে গিয়ে ব্যাংচ্যাপ্টা হয়ে গেছে, নয়তো দুরন্ত লরির মুখে পড়ে স্রেফ ছাতু বনে গেছে।…তাই ভাবো না মা?

    জানি না যা। আমি কোথায় ভাবছি তুই এসে পড়েছিস, কোনখান থেকে একটু খবরটবর নেবার চেষ্টা করবি, তা নয় তুই ইয়ার্কি মারতে বসলি!

    খবর? কোনখান থেকে? এই নিবিড় আঁধারে! বুঝেছি, ব্যাপার বুঝেছি। বাবা নিশ্চয় সেই বিরাট প্রসেশানটার মুখে পড়েছে। দেখে এলাম কিনা খানিক আগে, মাইল দেড়েক লম্বা শোভাযাত্রা। শত শত যানবাহন আটকে আছে। সেটা-সেটা দেখেছি তা প্রায়, হ্যাঁ নটা। তার মানে আসতে এখনও খানিক দেরি আছে।

    সীমা গম্ভীর গলায় বলে, সেই ভেবেই নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকতে হবে তাহলে?

    ভেবে-টেবে নয়, আমি বলছি ওটাই ঠিক। নচেৎ এত দেরি হবার কারণ নেই। ওভারটাইম খাটলেও নয়।

    সীমা স্থির কঠিন গলায় বলে, আর কিছু হতে পারে না?

    পিন্টু তরল গলায় বলে, হতে অবশ্য কত কী পারে! বহু কষ্টে বহু আরাধনায় যে বাসটায় চেপে বসেছিল, সেই বাসটা ব্রেক ডাউন হয়ে যেতে পারে, মস্তান দাদুরা হঠাৎ আঙুল তুলে স্টপ বলে বাসটাকে অহল্যা পাষাণী করে দিতে পারে, আরোহীর সঙ্গে কনডাকটরের বিরোধ ঘটায় গাড়ি চলা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কিন্তু এটা তো কখনই হবে না, বাবা এই বৃদ্ধ বয়েসে কোনও বান্ধবী যোগাড় করে ফেলে, সেখানেই চা খাচ্ছে মাছের চপ খাচ্ছে ডিম ভাজা খাচ্ছে আড্ডা দিচ্ছে–

    সীমা কঠোর কঠিন গলায় বলে, খুকু, টর্চটা আমায় দাও, আমি এগারো নম্বরের হরনাথবাবুর বাড়িতে যাই একবার–

    এগারো নম্বরের হরনাথ বাবুর বাড়ি?

    পিন্টু অবাক হয়ে বলে, এই রাত দশটার পর? কী বলবে গিয়ে?

    কী আর বলবো? বলবো–বলবো

    কথা শেষ হল না, আবার দরজায় ধাক্কা পড়ল। প্রবল ভাবে। যেন দরজা ভেঙে ফেলবে।

    সীমা স্খলিত স্বরে বলে ওঠে, বুঝেছি! সর্বনাশ হয়ে গেছে, পুলিসের লোক খবর দিতে এসেছে! পিন্টু

    পুলিস! এই সেরেছে! দাদা তুই যা–

    যাচ্ছি। মা টর্চটা দাও—

    পিন্টু দরজা খুলে দেয়, এবং সঙ্গে সঙ্গে গৃহকর্তার হুঙ্কার শোনা যায়, কী ব্যাপার কী? ঘুমের বড়ি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলে নাকি সবাই মিলে?

    এই লোকটার জন্যে এতক্ষণ এত দুশ্চিন্তা করছিল সীমা! প্রাণের মধ্যে এত উথাল-পাতাল হচ্ছিল।

    অবিরত চোখের সামনে অজানা অচেনা কোন এক রাস্তার মাঝখানে লোকটার ছিন্নবিচ্ছিন্ন রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখতে পাচ্ছিল, দেখতে পাচ্ছিল পুলিস, অ্যাম্বুলেন্স, ডাক্তার, নার্স, হাসপাতালের খাট, মাথায় ব্যান্ডেজ, (সিনেমার কল্যাণে যে সব দৃশ্য দেখে দেখে মুখস্থ), নাকে অক্সিজেনের নল, মর্গ, খাঁটিয়া, সাদা চাদর মোড়া শরীর, অগুরু চন্দন, ফুলের মালা, চিতার আগুন, থান, হবিষ্যি, শ্রাদ্ধসভা, মুণ্ডিতমস্তক পুত্র–

    এইখানটাতেই একটু ঠেক খাচ্ছিল সীমা, ওই নাস্তিক মস্তান ছেলে কি আর তার সাধের ঘাড় ছাড়ানো কেশকলাপ মুড়োবে?

    এসব চিন্তা তো ইচ্ছাকৃতও নয়, চেষ্টাকৃতও নয়, চোখের সামনে এসে যাচ্ছিল, ভেসে যাচ্ছিল, নাচানাচি করছিল। নেচে নেচে সীমা নামের একটি প্রেমের প্রতিমাকে কাবু করে দিচ্ছিল, শিথিল করে দিচ্ছিল তার হাত-পা, সেই শিথিল স্নায়ুর উপর পড়ল এই হাতুড়ির ঘা।

    এ ঘাড়ে সীমা যদি ছিটকে ওঠে, দোষ দেওয়া যায় না তাকে।

    ছিটকে-ওঠা সীমা তীব্র তীক্ষ্ণ গলায় চেঁচিয়ে ওঠে, ঘুমোবে কেন? বাড়ির গিন্নী মরে পড়েছিল, তাই ছেলেমেয়েরা পাথর হয়ে বসেছিল। বলি বলতে একটু লজ্জা করল না? রাতদুপুরে বাড়ি ফিরে

    ক্রুব্ধ গৃহকর্তা আরও গলা চড়ান, লজ্জা করবে? কেন? কেন? লজ্জা করবে কেন শুনি? এতক্ষণ কি আমি তাড়িখানায় বসে তাড়ি খাচ্ছিলাম? না বন্ধুর বৌয়ের হাতের পান খাচ্ছিলাম?

    সীমার স্বর তিক্ত তীক্ষ্ণ, কী করছিলে তা নিজেই জানো। এ কথা তো বিশ্বাস করব না ড্যালহাউসী থেকে রাসবিহারীতে আসতে তোমার পাঁচ ঘণ্টা সময় লেগেছে

    বিশ্বাস করবে না? বিশ্বাস করবে না? কর্তা রাগে কাঁপতে কাঁপতে বলেন, বিশ্বাস না করলে তো বয়েই গেল। আঁ! বলে কিনা বিশ্বাস করব না!..গামছা নিংড়োনোর মত শরীরের রক্ত নিংড়ে নিংড়ে শালার অফিস যাওয়া-আসা! বুকে পিঠে ভিড়ের চাপে দমবন্ধ হয়ে হয়ে হার্টের রোগ জন্মে গেল, রড় ধরে ঊর্ধ্ববাহু হয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শালার হাতে বাত, পায়ে গোদ হবার যোগাড়, আর বলে কিনা বিশ্বাস করি না!..মুরাদ থাকে তো একদিন গিয়ে দেখে এসো না? ঘরের মধ্যে আরামে আয়েসে বসে দুটো ভাতসেদ্ধ করতেই তো ক্ষয়ে যাচ্ছো! বুঝতে ঠ্যালা, যদি আমার মতন

    এই অপমানের পরও কি সীমা চুপ করে থাকবে?

    প্রিয়তম স্বামীর দুর্দশার বিবরণে ঈষৎ নরম হয়ে আসা মন আবার ফোঁস করে ওঠে।

    কি, কী বললে? তোমার সংসারে ঘরের মধ্যে বসে আরামে আয়েসে শুধু দুটো ভাতসেদ্ধ করেই আমার কর্তব্য মিটে যায়? বলি তোমার সংসারের জুতো সেলাই চণ্ডীপাঠ চালাচ্ছে কে? মেয়ে তো আহ্লাদী ফুলকুমারী, দুপেয়ালা চা করতে হলে পাখার তলায় বসে হাঁপান। আর ছেলে? তিনি সারাদিন এমন রাজকার্য করে বেড়ান যে, একদিনের জন্যে গমটা ভাঙিয়ে আনতে পারেন না, রেশনে লাইন দিতে পারেন না।

    অন্ধকারে কেউ কাউকে দেখতে পাচ্ছে না, চলছে শব্দভেদী বাণ ছোঁড়াছুঁড়ি।

    পিন্টু বোনের ঘাড়ে একটা চিমটি কেটে চাপা গলায় বলে, এই খুকু, বাতাস ঘুরে যাচ্ছে, আক্রমণ আমাদের দিকে আসছে, সরে পড়ি আয়।

    চলে আসে নিজেদের পড়ার ঘরে, বাতিটা খোঁজাখুঁজি করে, অবশেষে পায়, জ্বালে।…ওদিকে চলছে বাকযুদ্ধ, কান দেয় না।

    পকেট থেকে একটা পাট-করা কাগজ বার করে পিন্টু অবহেলার গলায় বলে, এই নে। লণ্ড্রীর রসিদটা–

    খুকু ভুরু কুঁচকে বলে, কার কি কাঁচতে গিয়েছিলে? খুলে দেখ

    খুকু খুলে

    ধরে কাগজটা মোমবাতির সামনে। পরক্ষণেই চাপা গলায় চেঁচিয়ে ওঠে, দাদা! এর মানে? লণ্ড্রীর রসিদ?

    পিন্টু পরম অগ্ৰাহে বলে, তা তোর লাভারের চিঠি, লণ্ড্রীর রসিদের থেকে আর কত উঁচুদরের?।

    ভালো হবে না বলছি দাদা! যত সব অসভ্য কথা

    পিন্টু ব্যঙ্গের গলায় বলে, আছো বেশ! তুমি লাভার জুটিয়ে লাভ করতে পারো, লাভলেটার চালাচালি করতে পারো, আর সেটা বললেই দোষ?

    আহা! তাই বলে বুদ্ধ হাঁদাগঙ্গা ছোটলোকটা তোমার হাতে চিঠি দেবে?

    আহা, ও কি আর নিজে সাহস করে দিতে আসছিল? লাইব্রেরীতে দেখা, অবোধ ইনোসেন্ট মুখে বলতে লাগল, পিন্টুদা, বাড়ির খবর কি? মেসোমশাই কেমন আছেন? মাসিমা কেমন আছেন? মাসিমার ঝি-টি ঠিকমত আসছে তো? রেশনে চিনি পেয়েছেন? কয়লা পাওয়া যাচ্ছে? এই সব। তখন বললাম, এত কথা তো তোমার মাসিমাকে জিজ্ঞেস করতে আমার মনে থাকবে না ভাই, তুমি বরং তোমার মাসিমাকে কি খুকুকে দুলাইন লিখে জিজ্ঞেস করে নাও

    খুকু তেমনি চাপা গলায় ঝঙ্কার দিয়ে ওঠে, আঃ দাদা! তুমি না! এমন! উঃ!

    হঠাৎ ওদিক থেকে একটা বাসন আছড়ানোর শব্দ এ ঘরে এসে আছড়ে পড়ল।

    চমকে উঠল দুজনেই।

    খুকু চমকে বলে, কী হল?

    পিন্টু অম্লান গলায় বলে, কিছু না, কর্তা-গিন্নীর প্রেমালাপ বোধ হয় চরমে উঠছে।

    তা কথাটা মিথ্যে নয়।

    কর্তার প্রবল কণ্ঠের বাণী শোনা যায়, সংসার চালানোর বড়াই হচ্ছে। পায়ের কাছে বাসন ছড়ানো। অন্ধকারে লোকে হোঁচট খেয়ে মরুক।…এই সংসার চালানোর আবার বাহাদুরি। যাক, চুলোয় যাক! এ সংসারে আগুন ধরিয়ে দিয়ে চলে যাব।

    সীমা ওই পায়ের কাছে বাসন রাখার লজ্জায় যাও বা একটু নরম হতে যাচ্ছিল, তখনই সীমার প্রতি তীরটি নিক্ষিপ্ত হয়।

    বটে! সীমা বলে ওঠে, তুমি চলে যাবে সংসারে আগুন ধরিয়ে দিয়ে? আর আমি? আমি বুঝি বসে বসে সে আগুনে জল ঢালব? মনে জেনো আমি তার আগেই চলে যাব। বাপের বাড়ি একটা আছে এখনও, বুড়ো বাবা-মা কত বলে, একদিন আয়, কতদিন দেখিনি, এই তোমার সংসারের জন্যে একটা দিন গিয়ে থাকতে পারি না। আর আমায় বলা কিনা আরাম আয়েসের ওপর আছি!…বলি অফিসে তো আর সারাক্ষণই ফাইল ঠেলছো না, আড্ডাও তো চলে; বন্ধুরা বলে না এযুগে সংসার করার সুখটা কত!

    একটু থেমে, একটু হাঁপিয়ে, একটু কেসে আবার শুরু করে, রাতদিন বাজার থেকে মাল উধাও হয়ে যাচ্ছে। আজ তেল উধাও, কাল দালদা উধাও, পরশু কেরোসিন উধাও, তরসু রেশনের গম চাল চিনি উধাও, নিত্যি দুধের গাড়ি আসছে না,–খালি বোতল নিয়ে ফিরছে, দশ-বিশ ঘণ্টা লোড়শেডিং, পাম্প চলে না, হিটার জ্বলে না, আটা ভাঙানোর চাকী বন্ধ, ফ্রিজের দফা গয়া, কে মনেজ করছে এসব? আগে সক্কাল বেলায় উঠে বাজারটা নিয়ম করে করে দিতে, এখন তাও তোমার নিত্যিই সময় হয় না, খবরের কাগজ পড়া আর দাড়ি কামানো এই করতেই সকাল কারার। ভাতটি খেয়েই লম্বা দাও, আর এই এখন এসে পদার্পণ! সারাদিনে কত মল্লযুদ্ধ চলছে জানতে পারো, না জানতে চাও? মনে করো সংসারের চাকাখানি আপনি চলছে মিহি মোলায়েম সুরে!..সেই চাকার তেলটি যোগাড় করতে যে ঝিয়ের পায়ে কত তেল দিতে হয় তার খোঁজ রাখো? কতগুলো পাতানো বোনো পুষতে হয় তার হিসেব রাখো?

    ওরে বাবা, এই রাজধানী এক্সপ্রেস যে থামেই না দেখছি, পিন্টু বলে, দুশো মাইলের মধ্যে স্টেশন নেই!

    খুকু এই কৌতুক উক্তিতে কান দেয় না, শুকনো গলায় বলে, মা ওই পাতানো বোনপোদের কথা কী বলল রে দাদা!

    বলল, সংসার চালাতে অবশ্য প্রয়োজনীয় হিসেবে অনেকগুলো পাতানো বোনপো পুষতে হয়?

    আরও শুকনো গলায় বলে খুকু, অনেকগুলো আবার কী?

    ওই হল আর কী! গৌরবার্থে বহুবচন।

    খুকু কান পাতে নিবিষ্ট হয়ে। ওঘরের কলধ্বনি আবার স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

    কী বললে? পাতানো বোনপো পুষতে হয়। বাড়িতে তাদের আসতে দেওয়া হয়?

    তা বাড়িতে আসতে না দিলে, তারা কি রাস্তা থেকে আমার উপকার করে যাবে নাকি? আসতে দিতে হয়, বসতে দিতে হয়, চা খাওয়াতে হয়,

    হয়! এত সব হয়! কর্তা প্রবল গর্জনে প্রতিবাদ করে ওঠেন, বলি এত সব হওয়ার বদলে কী কী মহৎ উপকারটা হয় শুনতে পাই?

    সীমা বেশ ডাঁটের সঙ্গে বলে, অনেক কিছুই হয়। তোমার ছেলের দ্বারা তো এক ইঞ্চি কাজও হয় না। সিনেমার টিকিট কিনতে পাঠালাম টাকা দিয়ে, ফিরে এল ছেলে, বলল, হল না, হাউস ফুল। অথচ আমার সোনার চাঁদ পাতানো বোনপো তক্ষুনি সেই টিকিটই এনে দিল।

    দিল! বলি কোথা থেকে দিল শুনি?

    এলেম থাকলে সবই হয়।..এই তো ত্রিভুবনের কেউ যখন দালদা পাচ্ছে না, স্বপন আমায় দু-দুটো দুকিলো দালদার টিন এনে দিল–

    কর্তা হিংস্র গলায় বলেন, যখন ওই দালদার টিনের বদলে মেয়ে খোওয়া যাবে, তখন বুঝবে ঠ্যালা!

    মেয়ে খোওয়া যাবে? গেলেই হল?

    না যাবে না! পৃথিবী দেখছ না? আমি এই বলে দিচ্ছি, তোমার ওই আদুরে খুকুকে যদি সামনের মাসেই না পাত্রস্থ করি।

    সীমা ব্যঙ্গের গলায় বলে, পাত্র মজুত আছে বুঝি?

    অভাবও নেই। ডজনে ডজনে প্রজাপতি অফিস আছে—

    খুকু আর্তনাদের গলায় বলে, দাদা!

    পিন্টু নির্লিপ্ত নিরাসক্ত গলায় বলে, কাতর আর্তনাদে কোনও ফল নেই, এলেম থাকে বাবাকে গিয়ে জোর গলায় বলগে যা, বাবা, মেয়ের বিয়ের জন্যে সোনাদানা,.টাকাকড়ি, ঘড়ি, আংটি, বোতাম-ফোতাম, জামাকাপড়, বিছানাবালিশ, খাট-আলমারি, সোফা-সেটি ইত্যাদি প্রভৃতি আলটু-বালটু মালগুলো তুমি যোগাড় কর, আসল মালটি তোমায় আর কষ্ট করে যোগাড় করতে হবে না, ওটা আমি ম্যানেজ করব

    আঃ দাদা! ওই কথা বলব আমি বাবাকে?

    না বলতে পারলে, হল না। তবে হওয়া আর না-হওয়া! শেষ পর্যন্ত তো প্রেমালাপের নমুনা ওই–যা শুনতে পাচ্ছ–

    ধ্যেৎ! সবাই যেন

    সবাই। সবাই। সংসার-চক্রে তেলের ঘাটতি হলেই কাঁচ-কেঁচ শব্দ ওঠে। তাছাড়াও আরও বহুবিধ জটিল ব্যাপার আছে।…

    মা-বাবার বিয়েটাও তো শুনেছি পছন্দ করে বিয়ে!

    আহা রে! কে বলেছে তোকে? বলল খুকু।

    শুনেছি বাবা শুনেছি! বড়মাসির শ্বশুরবাড়ির কোনও বিয়েবাড়িতে মাকে দেখে বাবা—

    ওঃ! সেই!

    খুকু গৌরবান্বিত গলায় বলে, সে কথা ছেড়ে দাও। ভেবে আশ্চর্য হয়ে যাই, কিসের ওপর ওঁরা জীবন চালিয়ে আসছেন!

    খুকুর বলার ভঙ্গিতে এইটাই প্রকাশ পায়, আমাদের স্বর্গীয় প্রেমের সঙ্গে ওনাদের কিছুর তুলনাই হয় না!

    কিন্তু ওদিকে যে এখনও যুদ্ধ-সমাপ্তির চিহ্নমাত্র নেই।

    যুদ্ধনিনাদ মাঝে মাঝে অস্পষ্ট, মাঝে মাঝে স্পষ্ট। তার মানে ওঁরা লম্বা দালানটায় পায়চারি করে করে তূণ থেকে বাণ নিক্ষেপ করছেন।

    সহসা কর্তার শব্দ প্রবল স্পষ্ট, আলবাৎ বলব! মেয়ে আমার!

    মেয়ে তোমার? সীমার স্বর স্পষ্ট হলেও রুদ্ধ, তোমার একলার? মেয়ে নিয়ে যা কিছু কষ্ট খাটুনি ভোগান্তি সব আমার, আর অধিকারের বেলায় তোমার?

    এই সেরেছে! মা যে ফ্যাসাস শুরু করে দিল রে খুকু!

    দিয়েছে? খুকু উল্লসিত গলায় বলে, তাহলে অবস্থা আয়ত্তে এসে গেছে!

    পিন্টু ভীত গলায় বলে, না না, কী সর্বনাশ! এ সব কী বলছে মা? এই খুকু–

    এখন

    সীমার অশ্রুবিজড়িত কণ্ঠধ্বনি শোনা যাচ্ছে, জীবনভোর শুধু এ সংসারের চাকরানীগিরিই করে এলাম। একদিনের জন্যে কারুর কাছে একটু মায়া পেলাম না, মমতা পেলাম না, আহা পেলাম না–এখনও এই। আর আমার সংসারে সাধ নেই, এই তিন সত্যি করছি–মরব, মরব, মরব। হয় বিষ খেয়ে, নয় গলায় দড়ি দিয়ে

    খুকু!

    খুকু আত্মস্থ গলায় বলে, কিচ্ছু ভয় পাস নে, আর চিন্তা নেই, তরঙ্গিত সমুদ্র থেকে তরণী এখন তীরে এসে লেগেছে। দেখ, কর্তার কণ্ঠে এখন আর হুঙ্কার শুনবি না।

    তা খুকুর কথাটা মিথ্যা নয়, কর্তার কণ্ঠস্বরে আপোসের সুর।

    ঠিক আছে! মরা কারুর একচেটে ব্যবসা নয়। অগাধ রেল লাইন পড়ে আছে গলা দিতে, পাহারা নেই কোথাও। আমার মতন হতভাগা, চোদ্দ ঘণ্টা পরে বাড়ি ফিরে যার কপালে এক কাপ চাও জোটে না, তার পক্ষে ওই পরিণতিই উচিত।

    ইস! পিন্টু বলে, খুকু, তুই কী রে। মা না হয় ঝগড়া করছে, তোর তো উচিত ছিল বাবাকে একটু চা করে দেওয়া!

    খুকু বলে, ক্ষেপেছিস! মা যেখানে ইচ্ছে করে উচিত কর্তব্যে অবহেলা করছে, সেখানে মাথা গলিয়ে আমি যাব উচিত কর্তব্য করতে? এই অধম খুকু বোকা হতে পারে, কিন্তু বুদ্ধ নয়। তাছাড়া ওই শোন্ না, চামচের টুংটাং শুরু হয়ে গিয়েছে।

    পিন্টু সেই টুংটাং ধ্বনি একটুক্ষণ কান পেতে শুনে উদাস-উদাস গলায় বলে, আচ্ছা খুকু, আমি বাড়ি এসে চা খেয়েছি?

    ওমা! কখন আবার খেলি? এসে দাঁড়াতে দাঁড়াতেই তো লেগে গেল নারদ-নারদ!

    হুঁ! কিন্তু দেখ, ইচ্ছে করলে মা তো আমাকেও এক কাপ অফার করতে পারত!

    এই ঝড় বৃষ্টি বজ্রপাতের মধ্যে কি আর স্নেহ-দীপখানি জ্বলছে রে দাদা! চিরকালের কথা–রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, উলুখড়ের প্রাণ যায়!…আমরা, মানে ছেলেমেয়েরা হচ্ছে উলুখড়, বুঝলি? গৃহযুদ্ধের প্রধান বলি!

    তার মানে তুই বলছিস, আমার আর আজ চায়ের কোনও আশা নেই? মা ভুলে যাবে?

    ঠিক এই সময় ফটু করে কারেন্ট এসে যায়, আবার আলো জ্বলে ওঠে।..তার প্রতিক্রিয়ায় রাস্তায় এবং পাড়ার বাড়িতে বাড়িতে সমবেত একটা উল্লাসধ্বনি ওঠে, এসে গেছে! আলো এসে গেছে!

    খুকু (জনান্তিকে) ও বাবা বাঁচা গেল, আলো এসে গেছে, চিঠিটা পড়ি ভাল করে।

    সীমার বাষ্পচ্ছন্ন অথচ উল্লসিত কণ্ঠ শোনা যায়, পিন্টু, চা ঢালছি আয়। বাবাঃ, এতক্ষণ অন্ধকারে যেন হাত-পা আসছিল না, চা বানাতে এত দেরি হয়ে গেল!…আর এই দে তোদের বাবার কাণ্ড! এত দুর্গতি করে আসা, তার মধ্যে কিনা বুকে করে গুচ্ছির ল্যাঙড়া আম বয়ে আনা হয়েছে। কী না পোস্তায় আম সস্তা। আর দেরি দেখে কিনা আমি বকে বকে মরছি

    .

    এখন আলো জ্বলে উঠেছে, এখন কর্তা প্রসন্নজীবন রায়ের চেহারাখানি দেখতে পাওয়া যাচ্ছে, অগ্নিতাপশূন্য প্রসন্ন প্রদীপ্ত মুখ। সেই মুখে আরও প্রসন্নতার আলো জ্বেলে বলেন তিনি, শুধু সস্তা বলেই নয়, জিনিসগুলোও উৎকৃষ্ট। আসল বেনারসী ল্যাংড়া। তোমাদের মাতৃদেবীর তো আবার হাবিজাবি আম মুখে রোচে না জানই, তাই প্রত্যেকটি বেছে বেছে–উঃ, যে করে আমের থলিধরা হাতটা উঁচু করে–এতটি রাস্তা বাঁচিয়ে বাঁচিয়ে এসেছি–বলি আমি ব্যাটা ভিড়ে আখমাড়াই হই-হই, তোদের মার আমগুলো না টস্কায়!

    ⤷
    1 2 3 4 5
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleপ্রবন্ধ সংগ্রহ – আশাপূর্ণা দেবী
    Next Article শুধু তারা দু’জন – আশাপূর্ণা দেবী

    Related Articles

    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    ভয় সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    কিশোর অ্যাডভেঞ্চার সমগ্র – হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

    December 9, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    প্রকাশ্য দিবালোকে – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 18, 2025
    সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    তারপর কী হল – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    November 17, 2025
    মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    শর্ম্মিষ্ঠা নাটক – মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    November 11, 2025
    সত্যজিৎ রায়

    মানপত্র সত্যজিৎ রায় | Maanpotro Satyajit Ray

    October 12, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025
    Our Picks

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১১

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১২

    December 12, 2025

    হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস সমগ্র ১৩

    December 12, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }