Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    ইস্টিশন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    উড়ালপঙ্খী – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    চাঁদের আলোয় কয়েকজন যুবক – হুমায়ূন আহমেদ

    হুমায়ূন আহমেদ এক পাতা গল্প75 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ০৩. মির্জা সাহেব কোমল গলায় ডাকলেন

    মির্জা সাহেব কোমল গলায় ডাকলেন, এই পলিন, এই! পলিনের ঘুম ভাঙ্গল না। ঘুমের মধ্যেই বড় করে নিঃশ্বাস নিল। একটু যেন চমকাল। শীতের রাতে গায়ের উপর থেকে লেপ সরে গেলে যেভাবে শিশুরা চমকে উঠে আবার নিথর হয়ে যায় ঠিক সেরকম।

    পলিন মা, আমরা এসে গেছি।

    এয়ার হোস্টেস ঢাকা শহরের তাপমাত্রা বলছে, বায়ুর আর্দ্রতা বলছে। টেম্পারেচার টুয়েন্টি সেভেন ডিগ্রি সেলসিয়াস, হিউমিডিটি সিক্সটি ওয়ান পারসেন্ট, ক্লাউডি স্কাই। ব্রিটিশ এয়ার ওয়েজের প্লেন, ইংরেজ এয়ার হোস্টেস অথচ কথা বলছে বাঙালি উচ্চারণে। এই উচ্চারণের আরেকটি নাম আছে, ইন্ডিয়ান একসেন্ট ইংলিশ।

    পলিন মা, আমাদের নামতে হবে তো।

    পলিন চোখ মেলল। এদিক-ওদিক তাকাল। ঘুমিয়ে পড়ার জন্যে তাকে একটু যেন লজ্জিত মনে হচ্ছে। সে নিচু গলায় বলল, এটাই কি বাংলাদেশ?

    হুঁ।

    এখন থেকে বাংলায় কথা চলতে হবে?

    চলতে হবে না মাচালাতে হবে। কিংবা বলতে হবে। চলতে শব্দটা এখানে হবে না।

    পলিন মিষ্টি করে হাসল। মির্জা সাহেব তার সিট-বেল্ট খুলে দিচ্ছেন। তাঁর মোটা-মোটা আঙুল সিট-বেল্ট খুলতে গিয়ে কেমন যেন জট পাকিয়ে যাচ্ছে। দেখতে এত ভালো লাগছে।

    তোমার শরীরটা কি এখন ভালো লাগছে মা?

    হুঁ।

    জ্বর নেই তো?

    না। কটা বাজে?

    বুঝতে পারছি না। সন্ধ্যা সাতটা সাড়ে সাতটা হবে।

    তিনি পলিনের কপালে হাত রাখলেন, গা ঠাণ্ডা। নাকের কাছটা ঘামছে–জ্বর নেমে গেছে। প্লেনের দরজা খোলা হয়েছে। দরজার পাশে প্রচণ্ড ভিড়, যেন সবাই ঠিক। করেছে এক সঙ্গে নামবে। পলিন বলল, আমরা সবার শেষে পড়লাম বাবা।

    তাইতো দেখছি।

    শেষে নামাই ভালো।

    কেন ভালো?

    এমনি বললাম। মনে হল তাই বললাম।

    পলিন ইংরেজিতে কথা বলছে। বাংলায় ভুল ধরিয়ে দেয়ায় এটা হয়েছে। লজ্জা পেয়েছে। দীর্ঘ সময় এখন সে ইংরেজিতে কথা বলবে। তারপর হঠাৎ এক সময় বাংলায় কথা শুরু করবে। ছোট ছোট বাক্য। ক্রিয়াপদগুলো মাঝেমাঝে এলোমেলো হয়ে যাবে। বিশেষণপদগুলো ঠিক মতো বসবে না অথচ শুনতে অপূর্ব লাগবে। বাংলা ভাষাটাই হয়ত এরকম যে এলোমেলো করে বললে ভালো লাগে। গতবছর মিনেসোটা থেকে বাল্টিমোর যাবার পথে গাড়ির চাকা পাংচার হল। তিনি জ্যাক লাগিয়ে গাড়ি উঁচু করছেন। পলিন বসে আছে তার পাশে। অন্ধকারে কাজ করতে হচ্ছে। ইমার্জেন্সি লাইট কাজ করছে না। পলিন হঠাৎ বলল, আজ বিশেষ অন্ধকার—তাই না বাবা?

    মির্জা সাহেব বললেন, বিশেষ অন্ধকার কথাটা ঠিক হবে না মা। খুব অন্ধকার বা গাঢ় অন্ধকার বলতে পার।

    পলিন লজ্জা পাওয়া গলায় বলল, তাহলে বিশেষটা কখন বলব?

    মির্জা সাহেব তার উত্তর দিতে পারেন নি। গাড়ি চালু হবার পর তিনি সারাপথ ভাবলেন, কিন্তু বিশেষ শব্দটি দিয়ে একটি বাক্যও মনে পড়ল না। দীর্ঘদিন বাংলা ভাষার সঙ্গে যোগাযোগ নেই। কে জানে এক সময় হয়ত তাঁর নিজের বাংলাও এলোমললা হয়ে যাবে।

    প্লেন ফাঁকা হয়ে গেছে। হুইল চেয়ারে করে মাননা হচ্ছে। এই অথর্ব ব্রিটিশ বৃদ্ধা হুইলচেয়ারে করে বাংলাদেশে এসেছেন কেন কে জানে?

    মির্জা সাহেব মেয়ের হাত ধরে এগুচ্ছেন। দরজা পর্যন্ত যাবার পর মনে মনে বললেন, আমার মনটা আজ বিশেষ ভালল নেই। এই এক যন্ত্রণা হয়েছে, কারণে-অকারণে বিশেষ শব্দটি ব্যবহার করে বাক্য রচনা করেন অথচ প্রয়োজনের সময় একটি সাধারণ বাক্য মনে আসে নি। মিনেসোটা থেকে বাল্টিমোরের দীর্ঘপথ তাঁকে বিষণ্ণ থাকতে হয়েছে।

    আকাশ মেঘলা। মাঝে-মাঝে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। বাংলাদেশের আকাশ কি এই সময় মেঘলা থাকে? আজ অক্টোবর মাসের সতের তারিখ। বাংলা মাসটা কী কে জানে। ইংরেজি মাস দিয়ে কিছু বোঝা যায় না। বাংলা মাস মানেই ছবির মতো দৃশ্য। শ্রাবণ-টিপ-টিপ করে বৃষ্টি পড়ছে। কুচুগাছের রঙ কোমল সবুজ। এখানে-ওখানে পানি জমে আছে। আকাশ ধূসরবর্ণ। চৈত্র মাস–ঝাঁ-ঝাঁ করছে রোদ, আকাশ ঘন নীল, চোখের দৃষ্টি পিছলে যাবার মতো স্বচ্ছ, আকাশে চিল উড়ছে।

    শরীরটা কি এখন ভালো লাগছে মা?

    হ্যাঁ ভালো। ঐ বুড়ো মহিলা বাংলাদেশে কেন এসেছেন বাবা?

    জানি না তো। হয়ত ট্যুরিস্ট। শেষ বয়সে পৃথিবী দেখতে বের হয়েছে। পয়সাওয়ালারা তাই করে।

    আমার কাছে কিন্তু তা মনে হচ্ছে না। ট্যুরিস্টরা নতুন দেশে এলে খুব আগ্রহ নিয়ে চারদিকে তাকায়—বুড়ি কেমন ঝিম ধরে আছে।

    হয়ত শরীরটা ভালো লাগছে না।

    আমি কি উনাকে জিজ্ঞেস করব?

    সেটা কি মা ঠিক হবে? উনার ব্যক্তিগত ব্যাপারে নাক গলানো উনি হয়ত পছন্দ করবেন না।

    উল্টোটাও তো হতে পারে। উনি হয়ত খুশিই হবেন। আগ্রহ করে জবাব দেবেন।

    বেশ তে যাও– জিজ্ঞেস করে আস।

    পলিন গেল না। বাবার পাশে দাঁড়িয়ে রইল। এয়ারপোর্টের মূল ভবন পঞ্চাশগজের মতো দূরে। হেঁটেই যাওয়া যায় কিন্তু সবাই অপেক্ষা করছে ট্রানজিট বাসের জন্যে। হুইল চেয়ারে বসা বুড়ি পানির একটা বোতল খোলার চেষ্টা করছে। বুড়ির একটা হাত সম্ভবত অচল। সে বোতলটা বাঁ হাতে খোলার চেষ্টা করছে। হুইল চেয়ারের পেছনে এক জন অল্পবয়স্ক এয়ার হোস্টেস। সে দৃশ্যটি দেখছে কিন্তু সাহায্য করার জন্যে এগিয়ে আসছে না।

    বাবা!

    কি মা?

    উনি পানির বোতলটা খুলতে পারছেন না।

    তাইতো দেখছি।

    সবাই তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে। কেউ সাহায্য করবার জন্যে এগিয়ে আসছে না।

    সাধারণত অথর্ব বুড়ো-বুড়িরা খুব খিটখিটে মেজাজের হয়। কেউ সাহায্য করতে গেলে রেগে যায়।

    তবু ভদ্রতা করে হলেও কারো উচিত সাহায্য করতে যাওয়া। আমি কি যাব?

    তোমার ইচ্ছে করলে নিশ্চয়ই যাবে।

    পলিনের যেতে হল না। বুড়ি পানির বোতলের মুখ খুলে ফেলেছে। এক ঢোক পানি খেয়েই আবার ব্যস্ত হয়ে পড়েছে বোতলের মুখ লাগানোর জন্যে। ট্রানজিট বাস এসে পড়েছে। পলিন এগিয়ে গেল বুড়ির দিকে। ছোট্ট করে বাউ করে বলল, গুড আফটারনুন ম্যাডাম।

    বুড়ি ছলছলে ঘোলা চোখে তাকাল—কোনো উত্তর দিল না। পলিন জবাবের জন্যে কয়েক মুহূর্ত অপেক্ষা করল। কোনো জবাব নেই। পলিনের মুখ ফ্যাকাসে হয়ে গেল। পলিনের বয়স তের। তের বছরের বালিকারা অল্পতেই আহত হয়।

    মির্জা সাহেব ঘটনাটা লক্ষ করলেন কিন্তু তিনি যে লক্ষ করেছেন তা পলিনকে জানতে দিলেন না। রাগে তাঁর শরীর জ্বলছে। তাঁর নিজের দেশে, তাঁর মেয়েকে অপমান করার অধিকার এই বিদেশিনী বৃদ্ধার নেই। কিন্তু এটা কি তাঁর নিজের দেশ? তাঁর পকেটে আমেরিকান নীলরঙ পাসপোর্ট। এই পাসপোর্ট হাতে পাবার আগে কোর্টে দাঁড়িয়ে বলতে হয়েছে—মহান আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান মেনে চলব… মাতৃভূমির মর্যাদা… মেয়েকে তিনি তাঁর দেশ দেখাতে এনেছেন। যে সাতটা দিন তিনি এখানে থাকবেন তিনি চান না, এই সাত দিনে কেউ তাঁর মেয়ের মনে আঘাত করার মতো কিছু করে। কারণ সামান্য মন খারাপ হলে পলিন অনেক দিন পর্যন্ত বিষণ্ণ থাকে।

    ইমিগ্রেশনে মনে হচ্ছে অনেক সময় লাগবে। প্রচণ্ড ভিড়। তিনি শুনে এসেছিলেন। বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন নাকি খুব ঝামেলা করে। বাস্তবে সেরকম দেখছেন না। ছেলেগুলো ভদ্র ব্যবহার করছে। এক জন এক ডজন পন্ডস্ ক্রিম নিয়ে এসেছে। তাকে ইমিগ্রেশনের বাচ্চামতো ছেলেটি বলল, এই ক্রিম তো দেশেই তৈরি হচ্ছে। এতগুলো আনলেন কেন? আর এটা কি নাইলনের দড়ি? ব্যান্ড আইটেম। এইসব আজে বাজে জিনিস দিয়ে সুটকেস ভর্তি করেছেন। ব্যাপার কী ভাই?

    উত্তরে লোকটি বোকার মতো দাঁত বের করে আসছে। ছেলেটি স্যটকেসে চক দিযে সাইন করে বলল, যান। মির্জা সাহেব মুগ্ধ হলেন। কী সব ভয়ঙ্কর গল্পই না প্রচলিত। এরা নাকি জাঙ্গিয়া পরিয়ে উঠবস করায়। কসমেটিকস অর্ধেক রেখে দেয়। নিচু গলায় বলে, কিছু ডলার ছেড়ে দিন।

    এইসব গল্প বাঙালিদের কাছ থেকেই শোনা। প্রথম প্রথম আমেরিকায় আসার পর বাঙালিরা নিজের দেশ সম্পর্কে তীব্র ঘৃণা উগরে দেয়। ভয়াবহ একটি ছবি আঁকে। মনে হয় সেটা জঙ্গুলে একটা দেশ। যে দেশের সব মানুষ ঠগ, ফাঁকিবাজ। যে দেশে কিছুই পাওয়া যায় না। ঘুষ খাওয়ার জন্যে সবাই হা করে থাকে। রাত আটটার পর রাস্তায় বের হওয়া যায় না।

    গল্পগুলো এমন ভাবে করা হয় যাতে মনে হয় দেশটা বঙ্গোপসাগরে তলিয়ে গেলেই তাঁরা সবচে খুশি হবেন।

    এরা কেন এরকম করে? অপরাধ বোধর কারণে? দেশ ছেড়ে চলে এসেছে— সেই গ্লানি জমে আছে মনে। গ্লানি আড়াল করবার জন্যেই নিশ্চয়ই বলা। নিজেকেই সে বোঝায়।

    ম্যাডাম, আপনার পাসপোর্ট?

    পলিন হেসে ফেলল। আনন্দ ঝলমলে গলায় পরিষ্কার বাংলায় বলল, আমাকে ম্যাডাম বলছেন কেন? আমার বয়স তের। মীর্জা সাহেব লক্ষ করলেন, মেয়ের বিষণ্ণ ভাব কেটে গেছে। কী চমৎকার বয়স। মেঘ ও রৌদ্র অনবরত খেলা করে। এই অন্ধকার এই আলো। পলিনের মনে বিদেশিনীর স্মৃতি এখন আর নিশ্চয়ই নেই। মির্জা সাহেব কাস্টমস-এর এই যুবকটির প্রতি কৃতজ্ঞ বোধ করলেন। একটা কিছু উপহার এই ছেলেটিকে দিতে ইচ্ছা করছে। সেটা সম্ভব নয়।

    আপনাদের আমেরিকান পাসপোর্ট?

    জ্বি।

    অনেকদিন পর দেশে ফিরছেন?

    জ্বি।

    প্রায় একুশ বছর পর।

    ডিক্লেয়ার করার মতো কিছু কি আছে?

    জ্বি না।

    মির্জা সাহেব তাঁর সুটকেস খুললেন। ছেলেটি সুটকেসের দিকে না তাকিয়েই বলল, একুশ বছরে সব বদলে গেছে। কিছু চিনতে পারবেন না।

    মির্জা সাহেব বললেন, আমি নিজে কিছু দেখতে আসি নি মেয়েকে দেশ দেখাতে এনেছি। মেয়ের নাম পলিন। মির্জা সাহেব দুটি ভুল কথা বললেন। তিনি মেয়েকে দেশ দেখাতে আনেন নি। নিজেই দেখতে এসেছেন। মেয়ের নাম পলিন নয়। নাম পোওলেন। তার মায়ের রাখা নাম। তিনি পলিন করে নিয়েছেন। নামটাকে বাঙালি করা হয়েছে। ই-কার যুক্ত শব্দগুলো কেন জানি বাংলা-বাংলা মনে হয়।

    টিপ টিপ করে বৃষ্টি পড়ছে। টেম্পারেচার বোধহয় হঠাৎ খানিকটা নেমে গেছে। আশে পাশে শিলাবৃষ্টি হলে হঠাৎ করে ঠাণ্ডা পড়ে। পলিন অল্প অল্প কাঁপছে। মির্জা সাহেব ট্যাক্সির কাঁচ উঠিয়ে দিলেন। পলিন বলল, কাঁচ নামানো থাকুক দেখতে দেখতে যাই।

    তোমার তো ঠাণ্ডা লাগছে। শীতে কাঁপছ।

    তেমন ঠাণ্ডা লাগছে না।

    দেশটা কেমন লাগছে মা?

    ভালো। তবে তুমি যে বলেছিলে খুব সবুজ। তেমন সবুজ তো না।

    বৃষ্টি হচ্ছে তো তাই বুঝতে পারছ না।

    মির্জা সাহেব, ট্যাক্সি ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করলেন, এই রাস্তাটি কি নতুন করা হয়েছে?

    ট্যাক্সি ড্রাইভার মাথা না ঘুরিয়ে বলল, না।

    পৃথিবীর সব দেশের ড্রাইভাররা কথা বলতে ভালবাসে। একটা প্রশ্ন করলে হড়বড় করে একগাদা কথা বলে। এই ড্ৰাইভার সে রকম নয়। সমস্ত পৃথিবীর উপর সে বিরক্ত বলে মনে হচ্ছে। গাড়ি চালাচ্ছে খুব দ্রুত। বিপজ্জনক কয়েকটা ওভারটেক করল। বৃষ্টি-ভেজা পিচ্ছিল রাস্তায় সে যা করছে তা ঠিক না। কিন্তু লোকটা ওভারটেক করে মজা পাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। এটিই হয়ত তার জীবনের একমাত্র আনন্দ। পৃথিবীর সবাইকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়ার মধ্যে একটা প্রতীকী ব্যাপার আছে।

    বারা।

    কি মা?

    ঐ ব্রিটিশ মহিলা, আমার কথার জবাব দিলেন না কেন?

    তিনি হয়ত তোমার কথা শুনতে পান নি।

    আমারও তাই মনে হয়।

    পলিন চোখ বন্ধ করে গা এলিয়ে পড়ে আছে। নতুন দেশ। অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখার কথা। পলিন দেখছে না। তার কি ভালো লাগছে না? মির্জা সাহেবের মন খারাপ হয়ে গেল।

    ট্যাক্সি একটা বড় ধরনের ঝাঁকুনি খেল। ড্রাইভার বলল, জিয়ার আমলে করা।

    মির্জা সাহেবের বিস্ময়ের সীমা রইল না। দীর্ঘ সময় পর ড্রাইভার প্রশ্নের জবাব দিল। এতক্ষণ কি সে এই প্রশ্ন নিয়ে ভাবছিল? মনে করতে পারছিল না—কার আমলে রাস্তা হয়েছে? হয়ত বা।

    পলিন চুপচাপ আছে। চোখ বন্ধ। ঘুমুচ্ছে হয়ত। জ্বর আসে নি তো? তিনি পলিনের গায়ে হাত দিলেন। গা গরম লাগছে। বেশ গরম।

    মেয়েটির এই একটা অদ্ভুত ব্যাপার। ফার্গস ফলস্ এলাকা থেকে বেরুলেই শরীর খারাপ। যতক্ষণ সে ফার্গস ফল্স-এ আছে ততক্ষণ ভালো। স্কুলে যাচ্ছে, খেলছে, পড়াশোনা করছে শহরের গণ্ডি পেরুলেই জ্বর।

    মির্জা সাহেব একজন সাইকিয়াট্রিষ্টের সাথে কথা বলেছেন। সাইকিয়াট্রিস্ট একগাদা থিওরি কপচিয়েছেন। সেই সব থিওরির মূল কথা হচ্ছে-পলিন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। নিজের বাড়ির কাছাকাছি যখন থাকে তখন এটা কম থাকে। বাইরে গেলেই বেড়ে যায়। ব্রোকেন ফ্যামিলির ছেলেমেয়েদের মধ্যে এটা খুব দেখা যায়। তিনি বিরক্ত গলায় বললেন, অনেক ব্রোকেন ফ্যামিলির ছেলেমেয়েদের আমি দেখেছি। তাদের কারোর মধ্যে এই ব্যাপার কিন্তু দেখি না।

    সবার মানসিক গঠন তো এক রকম নয়। এক জন মানুষ যে অন্য এক জন মানুষের চাইতে কত আলাদা তা আমরা সবচে ভালো জানি।

     

    স্যার আসছি। নামেন।

    মির্জা সাহেব ড্রাইভারের এই কথায় খুব অপ্ৰস্তুত বোধ করলেন। আশ্চর্যের ব্যাপার তিনি নিজেও ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। হোটেলের গাড়ি-বারান্দায় ট্যাক্সি দাঁড়িয়ে আছে। দরজা খোলা। রাজা-বাদশাদের মতো জমকালো পোশাকপুরা হোটেলের দারোয়ান অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। তিনি এবং তাঁর কন্যা—দুজনই গভীর ঘুমে।

    বৃষ্টি পড়ছে অঝোর ধারায়। বাতাসও দিচ্ছে। এত অল্প সময়ে আবহাওয়ার একি পরিবর্তন! হোটেলের ভেতর ঢুকতেই সব আবার অন্যরকম হয়ে গেল। কে বলবে বাইরে এমন দুর্যোগ?

    ফাইভ স্টার হোটেলগুলোর একটা মজা আছে। দেশের সঙ্গে এদের কোনো যোগ থাকে না। সব একরকম। হোটেলগুললই যেন আলাদা একটা জগৎ। বাংলাদেশের একটা হোটেলের ভেতরটায় যে গন্ধ ভেসে বেড়ায় সেই একই গন্ধ পাওয়া যায় লস এঞ্জেলস্-এর হোটলে। রিসিপশনিস্টরা মাছের মতো ভাবলেশহীন চোখে ধাতব গলায়। কথা বলে। সব মানুষের ভেতরই এক জন রোবট থাকে। বড় হোটলগুলো সেই সব রোবটদের বের করে নিয়ে আসে।

    স্যার আপনাদের কি রিজার্ভেশন আছে?

    হ্যাঁ আছে।

    আপনাদের পাসপোর্টগুলো কি দেখতে পারি?

    অবশ্যই পারেন। তার আগে দয়া করে এক জন ডাক্তারের ব্যবস্থা করতে পারবেন? আমার মেয়েটি অসুস্থ।

    আপনারা ঘরে চলে যান। কিছুক্ষণের মধ্যেই ডাক্তার যাবেন। রুম নাম্বার দুশ এগার।

    ধন্যবাদ।

     

    হোটেলের রুমে ঢুকে প্রথম যে জিনিসটা দেখতে ইচ্ছা করে সেটা হচ্ছে—বাথরুম। বাথরুম দেখা হবার পর ইচ্ছা করে জানালার পর্দা সরিয়ে শহর দেখতে। মির্জা সাহেব প্রথমটা করলেন না তবে জানালার পর্দা সরিয়ে শহর দেখতে চেষ্টা করলেন। কিছুই দেখতে পেলেন না। গোটা শহর ঘন অন্ধকারে ঢাকা। এই হোটেলের নিশ্চয়ই নিজেদের পাওয়ার জেনারেটার আছে।

    বাইরে হাওয়ার মাতামাতির কিছুই এখান থেকে বোঝা যাচ্ছে না। এয়ার কুলারের শব্দে সব ঢাকা পড়েছে। এয়ার কুলার বন্ধ করে জানালার একটা পাট কি খুলে ফেলা। যায়?

    হোটেলের ডাক্তার বিদেশি। চেহারা দেখে মনে হয় হংকং বা থাইল্যান্ডের কেউ হবেন। এরা কি বাংলাদেশি কোনো ডাক্তার খুঁজে পায় নি?

    ডাক্তার সাহেব ঔষধপত্র কিছুই দিলেন না। গরম স্যুপ খেয়ে পলিনকে ঘুমিয়ে পড়তে বললেন। ডাক্তারের ধারণা ভ্রমণের ক্লান্তিতে এমন হয়েছে। বিশ্রাম নিলেই সেরে যাবে।

    ডাবল রুম।

    পাশের খাটে পলিন অঘোরে ঘমচ্ছে। গলা পর্যন্ত চাদর টানা। ধবধবে সাদা রঙের চাদর। সাদা চাদরে ঢাকা একটি বালিকার মুখ দেখতে ভালো লাগে না। সাদা চাদরের সঙ্গে কোথায় যেন মৃত্যুর সম্পর্ক আছে। সাদা কফিনের দীর্ঘ সংস্কার কাটানো মুশকিল। মির্জা সাহেব খুব সাবধানে নীলরঙ একটা উলের চাদর মেয়েটির গায়ে দিয়ে দিলেন। ঘুমের মধ্যেই পলিন একটু যেন চমকাল।

    ঝড়-বৃষ্টি থেমে গেছে। রাত এগারটা পাঁচ। রাস্তায় নামলেই বাংলাদেশ দেখা যাবে। বাইশ বছরে কী হল দেশটার ববাঝা যাবে। তাতে তাঁর কিছু কি আসে যায়? না আসে যায় না। কিছুই আসে যায় না।

    মির্জা সাহেব রুম সার্ভিসকে খবর দিয়ে একটা স্যান্ডউইচ এবং গরম এক কাপ কফি খেয়ে শুয়ে পড়লেন। কফি খেলে বেশিরভাগ লোকই ঘুমুতে পারে না। তাঁর ক্ষেত্রে উল্টোটা হয়। ঝিমুনি আসে। ঘুমুতে ইচ্ছা করে।

    কফি খেয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লেই হল। আজও যে সে রকম হবে তেমন কথা নেই। জেট লেগ হয়েছে। শরীরের নির্দিষ্ট ঘুমের সাইকেলে গণ্ডগোেল হয়ে গেছে। বিছানায় শুয়ে হয়ত জেগে থাকতে হবে।

    তাঁর একটু শীতশীত লাগছে। আরামদায়ক শীত যা ঘুম নিয়ে আসে। গায়ের উপর চাদর টেনে বাতি নিভিয়ে দিলেন। বাতি নেভানোর সঙ্গে-সঙ্গে ঘুম কেটে গেছে। মাথা দপদপ করতে লাগল। ইনসমনিয়ার পূর্ব লক্ষণ। এখন তৃষ্ণা পাবে। পানি খাবার সঙ্গে-সঙ্গে বাথরুমে যেতে হবে। আবার তৃষ্ণা পাবে। আবার পানি। আবার বাথরুম।

    তিনি বাতি জ্বালাতেই পলিন বলল, বাবা।

    ঘুম ভেঙে গেছে?

    হুঁ।

    শরীর কেমন?

    শরীর ভালো। ক্ষিধে পেয়েছে বাবা।

    ক্ষিধে পেলে বুঝতেই হবে শরীর ভালো। কী ভাবে? স্যান্ডউইচ ছাড়া তো আর কিছু পাওয়া যাবে না।

    স্যান্ডউইচ ছাড়া—আর যাই পাওয়া যায় তাই খাব।

    রুম সার্ভিসকে জিজ্ঞেস করে দেখি।

    আমেরিকায় এখন কটা বাজে বাবা?

    ঠিক বলতে পারছি না—সকাল আটটা-নটা হবে। মার সঙ্গে কি কথা বলতে ইচ্ছা করছে?

    পলিন হ্যাঁ না কিছুই বলল না। মির্জা সাহেব বললেন, দাঁড়াও একটু খোঁজ করছি, ডিরেক্ট ডায়ালিং কি-না তাও তো জানি না।

    জানা গেল ডিরেক্ট ডায়ালিং। দ্বিতীয় বার ডায়াল ঘুরাবামাত্র পাওয়া গেল। মির্জা সাহেব মেয়েকে কথা বলার সুযোগ দেবার জন্যে বাইরে চলে গেলেন। বলে গেলেন, সিগারেট শেষ হয়ে গেছে মা, সিগারেট কেনার জন্যে যাচ্ছি।

    পলিন কোমল গলায় বলল, কেমন আছ মা?

    পলিনের মা তীক্ষ্ণ গলায় বললেন, আমি কেমন আছি তা মমাটেই জরুরি নয়। তুমি কেমন আছ?

    ভালো।

    ভালো থাকার তো কথা না। নিশ্চয়ই শরীর খারাপ করেছে। ঘর থেকে বেরুলেই তোমার শরীর খারাপ করে। সব জেনে শুনেও তোমার বাবা তোমাকে নিয়ে এত দূরে গিয়েছে। যতই দিন যাচ্ছে ততই দেখি মানুষটা মূর্খ হচ্ছে।

    আমি ভালো আছি মা।

    বাজে কথা বলবে না। আমি তোমার গলা শুনেই বুঝতে পারছি। তোমার শরীর বল সত্যি করে-জ্বর আসে নি?

    এসেছিল। এখন ভালো। তুমি ফিরে আসা মাত্র আমি যা করব তা হচ্ছে তোমাকে আমার কাস্টডিতে নিয়ে আসা। পিটার খুবই বদমেজাজী কিন্তু সে তোমার বাবার মতো অবিবেচক নয়। অভিভাবক হিসেবে তোমার বাবার চেয়ে সে ভালো হবে।

    আমি বাবার সঙ্গেই ভালো আছি।

    তুমি মোটেও ভালো নেই। এই তো কাশির শব্দ শুনছি। তোমার কি কাশিও হয়েছে?

    মির্জা সাহেব সিগারেটের জন্যে যান নি। দরজার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। হোটেলটার একুয়াষ্টিকস ভালো। দরজা সামান্য খোলা তবুও কিছুই শোনা যাচ্ছে না। তিনি হোটেলের লবিতে নেমে এলেন।

    পকেটে সিগারেট নেই। এক প্যাকেট সিগারেট পেলে ভালো হত। এখানে ভেন্ডিং মেশিন জাতীয় কিছু নেই। বারে নিশ্চয়ই সিগারেট পাওয়া যাবে। বার কোথায় কে জানে? কাউকে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছা করছে না।

    লবি থেকে সদর দরজা ঠেলে তিনি হোটেলের বাইরে পা রাখলেন। দারোয়ান যথারীতি স্যালুট দিল।

    আশে পাশে ছোটখাটো দোকানপাট আছে? যেখানে পান সিগারেট বিক্রি হয়।

    সিগারেট হোটেলে পাবেন স্যার।

    পান? পান নিশ্চয়ই পাওয়া যায় না?

    জ্বি না।

    দেখি কিছু পাওয়া যায় কি-না।

    ট্যাক্সি ডেকে দিব।

    না, ট্যাক্সি লাগবে না।

    সন্ধ্যায় যে প্রবল ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছিল তার চিহ্নমাত্র নেই। আকাশ পরিষ্কার। ঝকঝকে চাঁদ উঠেছে। ভেজা রাস্তার এখানে-ওখানে পানি জমে আছে। পানিতে চাঁদের ছবি। চমৎকার দৃশ্য। তাঁর মনে হল, এক শহরের চাঁদের সঙ্গে অন্য শহরের চাঁদের কিছু মিল নেই।

    হাঁটতে চমৎকার লাগছে। রাস্তা ফাঁকা। মাঝেমাঝে দ্রুত গতিতে কিছু গাড়ি যাওয়া-আসা করছে। রাত বারটা এখনো বাজে নি। ঝড়-বৃষ্টি হবার কারণেই হয়ত রাস্তায় লোকজন তেমন নেই। রাস্তাঘাট একই সঙ্গে পরিচিত এবং অপরিচিত লাগছে। একবার মনে হচ্ছে তিনি নিতান্তই অচেনা একটা শহরে আছেন। পরমুহূর্তেই মনে হল তাঁর সারাজীবন এই শহরেই কেটেছে।

    তিনি গুনগুন করে গানের কিছু কলি বলছেন। যার প্রথম লাইন–প্রজাপতি প্রজাপতি রে।…

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleচৈত্রের দ্বিতীয় দিবস – হুমায়ূন আহমেদ
    Next Article চক্ষে আমার তৃষ্ণা – হুমায়ূন আহমেদ

    Related Articles

    হুমায়ূন আহমেদ

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    ইস্টিশন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    উড়ালপঙ্খী – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    এই বসন্তে – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    এই মেঘ, রৌদ্রছায়া – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    এইসব দিনরাত্রি – হুমায়ূন আহমেদ

    December 23, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Our Picks

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    ইস্টিশন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    উড়ালপঙ্খী – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }