Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    ইস্টিশন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    উড়ালপঙ্খী – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    চাঁদের আলোয় কয়েকজন যুবক – হুমায়ূন আহমেদ

    হুমায়ূন আহমেদ এক পাতা গল্প75 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ০৭. ইসলাম ব্রাদার্সের আঠারতলা দালানের চত্বর

    দলটি আবার ঢুকল ইসলাম ব্রাদার্সের আঠারতলা দালানের চত্বরে। ঢোকার মুখে স্থূপ করে রাখা রডে পা বেঁধে হুমড়ি খেয়ে পড়ে গেল মজিদ। যে কোনো পতনের দৃশ্য হাস্যরস তৈরি করে। এই দৃশ্যটি করল না। বরং সবাই মিলে খানিকটা শংকিত বোধ করল। মাহিন বলল, ব্যথা পেয়েছিস?

    মজিদ উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বলল, না, আরাম পেয়েছি। অন্য সময় এই কথায় প্রচুর হাসাহাসি শুরু হয়ে যেত আজ হল না। আজ দলটির অস্বস্তি আরো বেড়ে গেল।

    মজিদ সিঁড়ি বেয়ে তিন তলার দিকে রওনা হল। করিমের কাছে যাবে এইটুকু সে জানে। কেন যাবে তা জানে না। কতক্ষণ থাকবে তাও জানে না। শেষ পর্যন্ত নাও যেতে পারে। তিন তলায় উঠার পর হয়ত আর করিমের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা থাকবে না। সে ফিরে যাবে। দলের অন্যরা কিছুই ভাবছে না। তারা মজিদকে অনুসরণ করছে। মজিদ যা করবে তারা তাই করবে।

    তাদের তিন তলা পর্যন্ত উঠতে হল না। দোতলার সিঁড়িতে পা দেয়া মাত্ৰ করিম নেমে এল। তার গায়ে সাদা একটা কম্বল। তাকে দেখাচ্ছে ভালুকের মতো। তার জ্বর সম্ভবত আরো বেড়েছে। মুখ কেমন যেন লালচে দেখাচ্ছে। সে উঁচু গলায় বলল, স্টপ স্টপ। আপনারা যান কোথায়?

    দলটা থমকে দাঁড়াল। সিঁড়িতে বাতি জ্বলছে। সিঁড়ির বাতি মাত্র চল্লিশ ওয়াটের। বাতি এই মুহূর্তে করিমের মাথার উপর বলে তাকে দেখা যাচ্ছে। সে অন্যদের দেখতে পাচ্ছে না। সে যে কোনো কারণেই হোক অসম্ভব ভীত। মজিদরা থমকে দাঁড়াল। করিম বলল, কে আপনারা?

    মজিদ বলল, আমরা।

    আমরা মানে কে?

    মজিদ জবাব না দিয়ে আরো দুটা ধাপ পার হল। করিম চেঁচিয়ে বলল, স্টপ স্টপ।

    মাহিন বিস্মিত গলায় বলল, করিম আমরা এখানে ব্যাপার কি?

    করিম থমত খাওয়া গলায় বলল, উপরে উঠবেন না ভাই, প্লিজ।

    ব্যাপার কি?

    অসুবিধা আছে।

    কী অসুবিধা?

    চলেন নিচে যাই। নিচে গিয়ে বলি।

    এখানেই বল কী অসুবিধা।

    করিম কাঁপা কাঁপা বলায় বলল, ঘরে মীরন ভাই আছে। অন্য সময় আসেন।

    মজিদ বলল, ফুর্তি করতে এসেছে?

    করিম জবাব দিল না।

    আলম বলল, ফুর্তিবাজ একটা ছেলে তার সঙ্গে দেখা না করে গেলে ভালো দেখায় না।

    নো নো। স্টপ।

    অসুবিধা আছে?

    বললামতো অসুবিধা আছে।

    মজিদ বলল, ভদ্রলোকের ছেলের সঙ্গে কথা বলব। আলাপ পরিচয় হবে। এর মধ্যে অসুবিধা কি? সেকি মেয়েছেলে নিয়ে এসেছে?

    না না—এসব কিছু না।

    মেয়েছেলে থাকলে অন্য ব্যাপার ছিল। যখন নাই তখন দেখা করতে অসুবিধা কি?

    তাকে নিয়ে খানিকটা ঘুরব। দলে ফুর্তিবাজ একটা ছেলে থাকলে ভালো লাগে।

    করিম কাঁদো-কাঁদো গলায় বলল, ভাই আপনাদের পায়ে ধরি আপনারা চলে যান। কেন আমাকে বিপদে ফেলছেন? আমি গরীব মানুষ। এখান থেকে বের করে দিলে না খেয়ে মরব।

    আলম বলল, চল চলে যাই। যথেষ্ট হয়েছে।

    করিম সঙ্গে-সঙ্গে বলল, জ্বি ভাই চলে যান। কাল আসবেন। কাল আপনাদের। জন্যে ভালো জিনিস যোগাড় করে রাখব। প্রমিস ভাই প্রমিস।

    মজিদ বলল, মীরন ভাইয়ার সঙ্গে দেখা না করে চলে যাব এ কেমন কথা। সঙ্গে মেয়েছেলে থাকলে অন্য কথা।

    করিম ফ্যাস ফ্যাসে গলায় বলল, সঙ্গে মেয়ে ছেলে আছে ভাই। আজ চলে যান। রিকোয়েস্ট। আপনার পায়ে ধরি ভাই। আই টাচ ইয়োর ফিট।

    করিম সত্যি-সত্যি পা ধরবার জন্যে এগিয়ে গেল। মজিদ মুখ বিকৃত করে বলল, থাক থাক পা ধরতে হবে না। চলে যাচ্ছি।

    থ্যাংকস ভাই। মেনি থ্যাংকস।

    মজিদ দু ধাপ সিঁড়ি নেমে গেল। নেমে থমকে দাঁড়াল। করিম বলল, দাঁড়িয়ে আছেন কেন ভাই চলে যান।

    মজিদ কড়া গলায় বলল, ব্যাপারটা কি বলেন তো। ঠিকমত বলেন। না বললে এই জিনিস পেটের মধ্যে ঢুকে যাবে। এই যন্ত্ররে চিনেন? এই যন্ত্রের নাম ক্ষুর। সান রাইজ ক্ষুর।

    করিম সিঁড়িতে বসে পড়ল।

    সে এই দলটিকে কিছুতেই তার ঘরে যেতে দিতে পারে না। ঘরে বিরাট সমস্যা। মীরন বেকুবের মতো এক কাণ্ড করে বসেছে। রাস্তায়-রাস্তায় ফুল বিক্রি করে এরকম একটা দশ-এগার বছরের মেয়েকে গাড়ি করে ভুলিয়ে-ভালিয়ে নিয়ে এসেছে। মেয়েটার রোগা ভোগা চেহারা। কিন্তু দেখতে সুশ্ৰী। মীরন তাকে কী বলে তুলিয়ে এতদূর এনেছে সেই জানে কিন্তু সিঁড়ি দিয়ে উঠবার মুখে মেয়েটি বেঁকে বসল, আফনে আমারে কই নেন?

    মীরন তার হাত চেপে ধরে বলল, চুপ থাক। টাকা পাবি। মেলা টাকা পাবি। মেয়েটা হাত ছাড়িয়ে নেবার চেষ্টা করতে করতে বলল, আফনে আমার কই নেন? আফনে আমারে কই নেন?

    হৈ-হৈ শুনে ঘুম ভেঙ্গে করিম নেমে এসে দেখে এই কাণ্ড। সে ভীত গলায় বলল, মীরন কী কর তুমি।

    মীরন ভারী গলায় বলল, আপনি এসে এর আরেকটা হাত ধরেন তো। বড় যন্ত্ৰণা করছে।

    মীরন ছেড়ে দাও। ঝামেলা হবে।

    আরে দূর দূর।

    মীরন ভাই তোমার পায়ে ধরি।

    আমার পায়ে ধরতে হবে না। আপনি এর হাতটা ধরেন। হারামজাদীর কত বড় সাহস। আমার হাতে কামড় দিয়েছে। রক্ত বের করে দিয়েছে। হারামজাদীকে আমি উচিত শিক্ষা দেব।

    মীরন ভাই কথা শোন।

    ধুত্তোরী যন্ত্রণা। হাতটা ধরেন।

    মীরনের মুখ দিয়ে ভকভক করে মদের গন্ধ বেরুচ্ছে। চোখ ঘোলাটে। মনে হচ্ছে। রেগে যাচ্ছে। রেগে গেলে এই ছেলে চণ্ডাল। করিম এসে মেয়েটির হাত ধরল। হাত ধরা মাত্র মেয়ে সেই হাতে কামড় দিল। মহা বিচ্ছু মেয়ে।

    এই বিচ্ছু মেয়ে প্রায় আধা ঘন্টা ধরে করিমের ঘরে। ভেতর থেকে দরজা বন্ধ। সেখানে কী হচ্ছে একমাত্র আল্লা মালুদই জানে। প্রথম কিছুক্ষণ বিকট গোঙানী শোনা গেছে। সেই শব্দ কমে এসেছে। সম্ভব মুখ চেপে ধরার কারণে। তারপর আর কোনো সাড়া-শব্দ নেই।

    করিম ক্রমাগত দোয়া ইউনুস পড়ে যেতে লাগল। হে আল্লা বিপদ থেকে উদ্ধার কর। এই হারামজাদা মীরন কী বিপদে ফেলল? বিপদের এই চাকরি আর ভালো লাগে না। এরচে গুলিস্তানে ভিক্ষা করা ভালো। হে আল্লা দয়া কর।

    আল্লাহ দয়া করেন নি। বিপদ কমে নি উল্টো বিপদ আরো বেড়েছে। মজিদ ভাইয়ের মতো ঠাণ্ডা ছেলে হাতে ক্ষুর নিয়ে উপস্থিত। এখন কোন্ ঝামেলা বেঁধে যায় কে জানে।

    সঙ্গে কোট পরা ভদ্রলোকই বা কে? কে জানে। পুলিশের আই.বি-র লোক নাতো। আই. বি-র লোগুলো এই রকমইতো থাকে।

    মজিদ বলল, কথা বলছেন না বিষয় কি করিম ভাইয়া। মেরা পেয়ারা ভাই দিমু জিনিস পেটে হান্দাইয়া?

    মজিদ সিঁড়ি বেয়ে তিন ধাপ এগিয়ে এল। করিম ফাঁস-ফাঁসে গলায় বলল, বলছি ভাই। পুরোটা ভেঙ্গে বলছি। শালার কী যন্ত্রণার মধ্যে যে পড়লাম। আপনাদের সাথে ইনি কি পুলিশের লোক?

    বাজে প্যাচাল বন্ধ কইরা আসল কথা কহেন বাহে। সময় নাই।

    করিম মূল ঘটনা অতি দ্রুত বলে গেল। মনে হল কেউ এক জন দাড়ি কমা ছাড়া রিডিং পড়ছে। দম নেবার জন্যেও থামছে না। করিম চুপ করা মাত্র মির্জা সাহেব কঠিন স্বরে জিজ্ঞেস করলেন, মেয়েটি কি মারা গেছে?

    জানি না স্যার। আমি কিছুই জানি না। সারাক্ষণ আমি বাইরে ছিলাম।

    কতক্ষণ আগের ব্যাপার?

    ঘন্টা খানেক আগের ব্যাপার। বেশিও হতে পারে। আমার স্যার শরীর খারাপ। জল বসন্ত-মাথার কোনো ঠিক নাই।

    তুমি কি মীরন নামের ছেলেটিকে এর মধ্যে একবারও ডেকে জিজ্ঞেস কর নি–কী ব্যাপার?

    করেছি। সে জবাব দেয় নি?

    জ্বি না।

    মজিদ ক্ষুরের ফলাটা টেনে বের করল। মির্জা সাহেব কিছু বলতে গিয়েও বললেন। না। মজিদের ভঙ্গি, আচার আচরণে এই মুহূর্তে যে কোনো মানুষ বলে দেবে মজিদ ঘোরের মধ্যে আছে। এই ঘোর কাটবে না। এই ঘোর কাটবার নয়।

    হুড়মুড় শব্দ হল। কারো কিছু বুঝবার আগেই মজিদের প্রায় গা ঘেঁসে ছুটে নেমে গেল করিম।

    মজিদ নড়ল না। করিমের প্রতি সে কোনো আগ্রহ বোধ করল না।

    আলম প্রায় অস্পষ্ট স্বরে বলল, ঝামেলা বাড়িয়ে লাভ নেই। চল ভেঙ্গে যাই।

    মাহিন বলল, আমার মতে এটাই বেস্ট পসিবল একশান। করিম হারামজাদার ভাব ভঙ্গি থেকে বোঝা যাচ্ছে এখানে মার্ডার-ফার্ডার হয়ে গেছে। উপস্থিত থাকলে সর্বনাশ হয়ে যাবে।

    মজিদ বলল, চলে যেতে চাইলে যা।

    তুই যাবি না। ওখানে দাঁড়িয়ে থেকে তুই কবি কী?

    তোদের চলে যেতে বলছি তোরা চলে যা।

    আলম বলল, দোস্ত এটা মাথা গরম করার সময় না। এখানে থাকলেই মার্ডার কেইসে পড়ে যাবি।

    তুই চলে যা।

    আলম এবং মাহিন সিঁড়ি ভাঙ্গতে লাগল। তারা নেমে যাচ্ছে তবে একটু পরপর পেছন ফিরে তাকাচ্ছে। মির্জা সাহেব দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি বেশ স্পষ্ট স্বরেই বললেন,

    মজিদ তুমি কী করতে চাও?

    নখু রেক বলফে।

    ঐ ছেলেটিকে খুন করতে চাও?

    হ্যাঁ।

    আমি কিন্তু তার কোনো প্রয়োজন দেখছি না। যদি সত্যি-সত্যি এখানে কোনো হত্যাকাণ্ড হয়ে থাকে আমরা দেখব যেন পুলিশ এসে ছেলেটাকে ধরে। যেন বিচার হয়, আমরা চাই যেন শাস্তি হয়।

    পয়সাওয়ালা মানুষদের শাস্তি এদেশে হয় না।

    এটা শুধু এ দেশের জন্যে সত্যি নয়, এটা পৃথিবীর অধিকাংশ দেশের জন্যে সত্যি। তবু আমাদের চেষ্টা করতে হবে যেন আইন নিজের পথে চলে। তুমি যা করতে যাচ্ছ। তার ফল ভয়াবহ। তুমি ফাঁসিতে ঝুলবে, তুমি পয়সাওয়ালা নও। কেউ তোমাকে বাঁচাবে না।

    নখু রেক বলফে।

    তুমি ক্ষুরটা ফেলে দাও। তারপর আমার সঙ্গে হোটেলে চল। হোটেলের লাউঞ্জে বসে হট কফি খেতে খেতে গল্প করব। আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি, এ দেশ ছেড়ে যাবার আগে আমি তোমার একটা ব্যবস্থা করে যাব। তুমি কি আমেরিকা যেতে চাও? যেতে চাইলে সেই ব্যবস্থাও করা যাবে। মানি ক্যান ড়ু ওয়ান্ডারফুল ট্রিকস।

    নখু রেক বলফে।

    তোমাকে আমার পছন্দ হয়েছে মজিদ। বেশ পছন্দ হয়েছে। আমেরিকায় তুমি আমার সঙ্গে থাকতে পার। আমার মেয়েটা একা-একা থাকে। সে এক জন সঙ্গী পাবে। জীবন চমৎকার একটা জিনিস মজিদ। ইউ ক্যান নট গ্যামবল উইথ ইট। লিসন টু মি। বি রিজনেবল।

    মির্জা সাহেব মজিদের দিকে কয়েক পা এগিয়ে আসতে মজিদ হুংকার দিয়ে উঠল—স্টপ।

    মির্জা সাহেব থমকে দাঁড়ালেন।

    যান হোটেলে চলে যান। যান বলছি।

    মির্জা সাহেব সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতে লাগলেন। মজিদ তরতর করে তিন তলায় উঠে গেল। করিমের দরজায় টোকা দিতেই দরজা খুলে গেল।

    মজিদ নিচু গলায় বলল, মীরন ভাই ভালো আছেন?

    মীরন ভয়ার্ত গলায় বলল, আপনি কে?

    মজিদ তার উত্তর না দিয়ে আগের চেয়েও নরম গলায় বলল, ভাই সাহেব মেয়েটা কি মরে গেছে?

    মীরন কাঁদো-কাঁদো গলায় বলল, বুঝতে পারছি না। শরীরতো এখনো গরম। আপনি কে?

    আমার নাম আবদুল মজিদ।

    আপনার হাতে এটা কি?

    এটা কিছু না। এর নাম ক্ষুর।

    ক্ষুর দিয়ে কী করবেন?

    মজিদ মধুর স্বরে হাসল। হাসতে হাসতেই নরম স্বরে বলল, নখু বরক—খুন করব।

     

    মজিদ নিচে নেমে এসে দেখে মির্জা সাহেব অন্ধকারে দাঁড়িয়ে আছেন। প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে তাকিয়ে আছেন আকাশের দিকে। মজিদ বলল, আপনি যান নি?

    না।

    আপনি কি দয়া করে আমাকে বাসায় পৌঁছে দেবেন।

    নিশ্চয়ই পৌঁছে দেব।

    ফুপা-ফুপুর সঙ্গে একটু দেখা করব। রাতটা থাকব। সকালে পুলিশের কাছে ধরা দেব। আমার বাসা কিন্ত বেশ দূর। আপনাকে অনেক হাঁটতে হবে।

    অসুবিধা নেই আমি হাঁটব। তুমি ঠিকমত পা ফেলতে পারছ না। মজিদ আমি কি তোমার হাত ধরব?

    না হাত ধরতে হবে না। চলুন রওনা হই।

    তারা দুজন পথে নামল। মজিদ ছোট-ঘোট পা ফেলতে ফেলতে এক সময় বলল, স্যার আপনার মেয়েটার নাম কি?

    ওর নাম পলিন।

    ও নিশ্চয়ই খুব সুন্দর।

    হা সুন্দর। তুমি কি ওর ছবি দেখবে। আমার মানি ব্যাগে ওর ছবি আছে।

    মির্জা সাহেব ছবি বের করে মজিদের হাতে দিলেন।

    মজিদ বলল, স্যার আপনার মেয়েটা পরীর মতো সুন্দর।

     

    তারা হাঁটছে। ঘুমন্ত শহরের পথে জোছনার আলো। এই চাঁদের আলো বড় অদ্ভুত জিনিস। এই আলোয় চেনা পৃথিবী অচেনা হয়ে যায়। পিচ ঢালা কালো কঠিন রাজপথকে মনে হয় ভাদ্র মাসের শান্ত নদী।

    তারা হাঁটছে। পায়ের নিচে নদী। মাথার উপর অন্য এক রকম আকাশ। চারপাশে থৈ-থৈ জোছনা। যে জোছনা মানুষকে পাল্টে দেয়। যে জোছনায় সত্যকে মিথ্যা, মিথ্যাকে সত্য বলে ভ্ৰম হয়।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7 8
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleচৈত্রের দ্বিতীয় দিবস – হুমায়ূন আহমেদ
    Next Article চক্ষে আমার তৃষ্ণা – হুমায়ূন আহমেদ

    Related Articles

    হুমায়ূন আহমেদ

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    ইস্টিশন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    উড়ালপঙ্খী – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    এই বসন্তে – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    এই মেঘ, রৌদ্রছায়া – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    এইসব দিনরাত্রি – হুমায়ূন আহমেদ

    December 23, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Our Picks

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    ইস্টিশন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    উড়ালপঙ্খী – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }