Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    ইস্টিশন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    উড়ালপঙ্খী – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    ছেলেটা – হুমায়ূন আহমেদ

    হুমায়ূন আহমেদ এক পাতা গল্প79 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ০২. রনির স্কুল দুপুর দুইটায় ছুটি হয়

    রনির স্কুল দুপুর দুইটায় ছুটি হয়। আজ ছুটি হয়ে গেল এগারোটায়। স্কুলের একজন টিচার মিস নাজমা মারা গেছেন, এইজন্যেই ছুটি। মিস নাজমা রনিদের জিওগ্রাফি ম্যাডাম ছিলেন। ক্লাসে সবসময় গম্ভীর হয়ে থাকতেন। ছাত্রদের কেউ কোনো শব্দ করলেই ভুরু কুঁচকে বলতেন, Thear some noise. এতেই সবাই চুপ। মিস নাজমা কাউকে কোনো বকা দিতেন না, কারো সঙ্গে উঁচু গলায় কথা বলতেন না, তারপরেও সবাই তার ভয়ে অস্থির হয়ে থাকত। ক্লাসের কারো সঙ্গে যখন কথা বলতেন, তখন গম্ভীর গলায় একটা মজা করতেন। নামের সঙ্গে মিল দিয়ে চার-পাঁচটা শব্দ বলতেন। যেমন রনিকে বলতেন

    রনি

    কনি

    মনি

    লানি

    আবার পুতুলকে বলতেন—

    পুতুল

    তুতুল

    লুতুল

    তুতুল

    লতুল

    রনি একবার সাহস করে নাজমা ম্যাডামকে বলেছিল, মিস আপনি আমাদের এইভাবে ডাকেন কেন?

    নাজমা ম্যাডাম বললেন, এইভাবে ডাকার পেছনে আমার সুন্দর একটা কারণ আছে। যেদিন তোমরা এই ক্লাস থেকে পাশ করে ওপরের ক্লাসে যাবে সেদিন কারণটা বলব। তোমাদের মজা লাগবে।

    কারণটা না জানিয়ে ম্যাডাম মারা গেলেন। কোনোদিনই আর কারণটা জানা যাবে না।

    রনিদের ক্লাস টিচার (মিস দিলশাদ) করুণ করুণ মুখ করে বললেন, তোমরা ক্লাসে চুপচাপ বসে থাকো। হৈচৈ করবে না। প্লে গ্রাউন্ডেও যেতে পার তবে খেলাধুলা করবে না। তোমাদের একজন টিচার মারা গেছেন, এইসময় কি আনন্দ করা উচিত? তোমাদের সবার বাড়িতে ফোন করা হবে, যাতে তোমাদের গার্জিয়ানরা এসে তোমাদের নিয়ে যায়। ঠিক আছে লিটিল এনজেলস? মিস দিলশাদ সবার সঙ্গে খুব মিষ্টি করে কথা বলেন। তিনি সবার গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দেন। তবু কেউ তাকে পছন্দ করে না।

    রনিদের ক্লাসের একটি মেয়ে (লুতপা, খুব ভালো ম্যাথ জানে। ম্যাথে সে সবসময় একশতে একশ পায়। তাকে সবাই ডাকে লুতপাইন। আইনস্টাইনের নামের সঙ্গে মিল করে লুতপাইন)। লুতপাইন বলল, নাজমা ম্যাডাম কীভাবে মারা গেছেন?

    দিলশাদ মিস বললেন, কীভাবে মারা গেছেন সেটা বড়দের ব্যাপার। তোমরা ছোটরা এইসব নিয়ে মোটেও মাথা ঘামাবে না। ঠিক আছে মেয়ে?

    লুতপাইন বলল, আমার জানতে ইচ্ছা করছে।

    লিটল এনজেল, একবার তো বলেছি কিছু ব্যাপার বড়রা জানবে। কিছু জানবে ছোটরা। এই নিয়ে আর কোনো প্রশ্ন না।

    নাজমা ম্যাডাম কীভাবে মারা গেছেন কিছুক্ষণের মধ্যেই সেটা সবাই জেনে গেল। স্কুলের দারোয়ান-আয়া সবাই বলাবলি করছে। উনি মারা গেছেন রোড এক্সিডেন্টে। রিকশা করে যাচ্ছিলেন, পেছন থেকে একটা প্রাইভেট গাড়ি তাকে ধাক্কা দিয়ে চলে যায়।

    রনির অসম্ভব মন খারাপ হলো। কান্না পেতে লাগল। ক্লাসের এতগুলি ছেলেমেয়ের সামনে কেঁদে ফেলা খুব খারাপ। সে চেষ্টা করতে লাগল যেন কাঁদে। সে ঠোঁট কামড়ে ধরে ক্লাসঘরের সিলিং ফ্যানের দিকে তাকিয়ে রইল। চোখের পাতা ফেলল না। এতে চোখে যে পানি জমে আছে তা শুকিয়ে যাবার কথা। রনির পাশেই বসেছে লুতপাইন। লুতপাইন অবাক হয়ে বলল, কী দেখ?

    রনি বলল, ফ্যান দেখি।

    ফ্যান দেখ কেন?

    এমনি দেখি।

    লুতপাইনও রনির মতো ফ্যানের দিকে তাকিয়ে রইল। লুতপাইন খুব ভালো মেয়ে কিন্তু তার কিছু খারাপ অভ্যাস আছে। রনি যা করবে সেও তাই করবে। এখন যদি রনি চোখ নামিয়ে জানালা দিয়ে তাকায়, লুতপাইনও জানালা দিয়ে তাকাবে।

    রনিদের ক্লাসে কে কোথায় বসবে সব ঠিক করা। যদি ঠিক করা না থাকত তাহলে অবশ্যই রনি অন্য কোথাও বসত। লুতপাইনের পাশে বসত না।

    লুতপাইন বলল, তুমি কাঁদছ কেন?

    রনি বলল, কাঁদছি না তো।

    তোমার চোখে পানি। তোমার কি মিস নাজমা ম্যাডামের জন্য খারাপ লাগছে?

    রনি বলল, হুঁ।

    খারাপ লাগছে কেন?

    জানি না।

    লুতপাইন বলল, আমি জানি। ম্যাডাম আমাদের সবার নাম দিয়ে ছড়া বানাতেন। কেন বানাতেন সেটা তিনি বলবেন বলেছিলেন–এইজন্য তোমার খারাপ লাগছে। কারণ তিনি তো আর বলতে পারবেন না।

    রনি বলল, আমার সঙ্গে এত কথা বলবে না। আমার ভালো লাগে না।

    লুতপাইন বলল, আচ্ছা আর কথা বলব না।

    রনি বলল, আমার দিকে এইভাবে তাকিয়েও থাকবে না। কেউ আমার দিকে তাকিয়ে থাকলে আমার ভালো লাগে না।

    আচ্ছা।

    গার্জিয়ানরা আসতে শুরু করেছেন। একে একে ছেলেমেয়েরা সব চলে যাচ্ছে। ক্লাসরুম ফাঁকা। এখন ক্লাসে আছে শুধু রনি আর লুতপাইন। বাকিরা প্লে গ্রাউন্ডে খেলছে। ধরাধরি খেলা। একজন বলবে ধর আমাকে ধর, ওমনি বাকি সবাই তাকে ধরার জন্য তার পেছনে পেছনে ছুটতে থাকবে। ক্লাস টিচার আজকে খেলতে নিষেধ করেছেন তারপরও সবাই খেলছে।

    রনি উঠে দাঁড়াল। সঙ্গে সঙ্গে লুতপাইনও উঠে দাঁড়াল। রনি জানে এখন সে যদি প্লে গ্রাউন্ডে যায়, লুতপাইনও তার সঙ্গে সঙ্গে যাবে। আবার সে যদি গেটের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়, লুতপাইনও তাই করবে। মেয়েটার এমন নকল করা অভ্যাস। সবসময় রনিকে নকল করবে।

    বারোটা বাজার আগেই স্কুল খালি। রনি শুধু একা বসে আছে। তাকে কেউ নিতে আসে নি। রনিকে কেউ নিতে আসে নি বলে তাদের ক্লাস টিচারও বাসায় যেতে পারছেন না। তার মুখ দেখে মনে হচ্ছে তিনি খুব বিরক্ত। যদিও তিনি মুখ হাসি হাসি করে রেখেছেন। রনি প্লে গ্রাউন্ডে একটা কাঠ-গোলাপ গাছের নিচে বসে ছিল। দিলশাদ মিস তার কাছে এসে মিষ্টি গলায় বললেন, ব্যাপার কী বলো তো? তোমাদের বাসায় কেউ টেলিফোন ধরছে না কেন?

    রনি বলল, ম্যাডাম আমি তো জানি না।

    তোমার বাবার অফিসের নাম্বার জানো?

    জি না।

    জানো না কেন? গুরুত্বপুর্ণ নাম্বার মনে রাখবে না? তোমার একার জন্যে আমাকে দুটা পর্যন্ত বসে থাকতে হবে এটা কেমন কথা?

    এখন দিলশাদ ম্যাডামের রাগ টের পাওয়া যাচ্ছে। মনে হচ্ছে তিনি এখন রনিকে ধমক দেবেন। রনির ভয় ভয় করছে। কান্না কান্নাও পাচ্ছে।

    রনি বলল, ম্যাডাম আপনি চলে যান।

    আমি কী করব না করব সেটা আমার ব্যাপার, তোমাকে জ্ঞান দিতে হবে না। ফাজিল ছেলে।

    রনি বুঝতে পারছে না ম্যাডাম তাকে কেন ধমকাচ্ছেন। তাদের বাসার কেউ টেলিফোন ধরছে না, সেটা তো বাসার সমস্যা।

    ম্যাডাম যেভাবে হনহন করে এসেছিলেন ঠিক সেইভাবে হন হন করে চলে গেলেন। পনের মিনিট পর আবার উপস্থিত হলেন। আগের মতোই রাগী রাগী গলায় বললেন, তোমার কোনো আত্মীয়স্বজনের টেলিফোন নাম্বার জানা আছে, জানা থাকলো বলো–তাদের কাউকে টেলিফোন করে বলি তোমাকে নিয়ে যেতে।

    জানা নেই ম্যাডাম।

    তুমি তো দেখি গাধা ছেলে। গাছতলায় বসে থাকবে না। যাও ক্লাসে গিয়ে বসে।

    রনি ক্লাসে গিয়ে বসল। সে কতক্ষণ বসে থাকল নিজেই জানে না। মনে হয় অনেকক্ষণ। একা বসে থাকতে কী খারাপ যে লাগে! এর মধ্যে কয়েকবার দিলশাদ ম্যাডাম জানালা দিয়ে তাকে দেখে গেলেন। প্রতিবারই এমন করে তার দিকে তাকালেন যেন রনি খুব খারাপ একটা ছেলে। দুষ্টামি করেছে বলে তাকে ডিটেনশন দেয়া হয়েছে। অথচ সে তো কোনো দোষই করেনি।

    রনি ঠিক করে ফেলল ক্লাস থেকে পালিয়ে যাবে। প্রথমে যাবে প্লে গ্রাউন্ডে। সেখানে কাঠগোলাপ গাছটায় উঠবে। এই গাছ থেকে স্কুলের ছাদে যাওয়া যায়। বড় ক্লাসের কোনো কোনো ছেলে এই কাজটা করে। ছাদে গিয়ে সে যদি বসে থাকে, তাহলে ম্যাডাম তাকে খুঁজে পাবেন না। রনি যখন সব ঠিক করে ক্লাস থেকে বের হতে যাবে তখনি দিলশাদ ম্যাডাম ক্লাসে ঢুকে হাসি হাসি মুখে বললেন, যাও তোমাকে নিতে এসেছে।

    রনি বলল, কে এসেছে?

    তোমার এক রিলেটিভ, হাব্বত আলি নাম।

    রনি একবার ভাবল বলে, হাব্বত আলি নামে আমার কোনো আত্মীয় নেই। হাব্বত আলির সাথে মাত্র একদিন আমার কথা হয়েছে। স্কুলের নিয়ম-অপরিচিত কারো সঙ্গে ছাত্র-ছাত্রীদের যেতে দেয়া হয় না। রনি এসব কিছুই বলল না। কিছু বললেও ম্যাডাম রেগে যাবেন। তাকে রাগিয়ে দেবার কোনো অর্থ হয় না।

    রনি বলল, ম্যাডাম যাই। ম্যাডাম মধুর গলায় বললেন, গুড বাই লিটিল এনজেল।

    এই ম্যাডাম কথায় কথায় ছেলেমেয়েদের লিটিল এনজেল বলেন, কিন্তু কাউকেই দেখতে পারেন না। রনির ইচ্ছা করছে ম্যাডামের দিকে তাকিয়ে বলে, গুড বাই আগলি উইচ, তা সে বলল না। ম্যাডামদের সঙ্গে বেয়াদবি করা যায় না। তাছাড়া দিলশাদ ম্যাডাম মোটেই আগলি না। তিনি খুবই রূপবতী।

     

    হাব্বত আলি হুড খোলা রিকশার সিটে পা তুলে আয়েশ করে বসে ছিলেন। এখন বৈশাখ মাস। বেশ গরম। এই গরমে তার গায়ে কালো রঙের কম্বল জাতীয় চাদর। চাদর তিনি যে শুধু গায়ে দিয়ে রেখেছেন তাই না। মাথাও ঢেকে রেখেছেন। চাদরের ভেতর থেকে তার উজ্জ্বল চোখ দেখা যাচ্ছে। তিনি রনিকে দেখতে পেয়ে আনন্দিত গলায় ডাকলেন, হ্যালো, হ্যালো!

    রনি তার দিকে এগিয়ে গেল।

    রিকশায় কখনো চড়েছ রনি?

    রনি হ্যাঁ বা না কিছু বলল না। সে বুঝতে পারছে না অপরিচিত এই মানুষটার সঙ্গে রিকশায় উঠা ঠিক হবে কি-না। মনে হয় ঠিক হবে না।

    হাব্বত আলি হাত বাড়িয়ে তাকে টেনে তুললেন। রনির দিকে তাকিয়ে বললেন, মন খারাপ নাকি?

    রনি বলল, হুঁ।

    বেশি?

    হুঁ।

    মন খারাপ থাকলে মন ভালো করার একটা প্রেসক্রিপশন আমার কাছে আছে। প্রেসক্রিপশন দেব?

    রনি বলল, আগে বলুন আপনি আমাকে নিতে এসেছেন কেন? কীভাবে বুঝলেন যে আমাকে কেউ নিতে আসে নি?

    হাব্বত আলি বললেন, তোমার কাছে কি মনে হচ্ছে আমি সুপারম্যান টাইপের কেউ? আমার অনেক পাওয়ার। সেই পাওয়ার থেকে বুঝে ফেলেছি রনি নামের বাচ্চা একটা ছেলেকে কেউ নিতে আসছে না। বেচারা একা একা মন খারাপ করে বসে আছে। তার মিস অকারণে তাকে ধমকাচ্ছে। বেচারাকে উদ্ধার করতে হবে। এরকম মনে হচ্ছে?

    হুঁ।

    সেরকম কিছুই না।

    তাহলে কী?

    আমি খুবই সাধারণ। আমার কোনো ক্ষমতা নেই। ঘটনা হচ্ছে কী, আমি তোমাদের স্কুলের অফিসঘরে ছিলাম। সেখান থেকেই শুনলাম তোমাদের স্কুলের এক ম্যাডাম কিছুক্ষণ পরপর কোনো এক বাসায় টেলিফোন করছে, কেউ টেলিফোন ধরছে না বলে তিনি খুবই রাগারাগি করছেন। একবার বললেন, চাবকে রনি ছেলেটার পিঠের চামড়া তুলে দেয়া দরকার। তখন রনি ছেলেটার জন্যে আমার মন খারাপ হলো। ভাবলাম ছেলেটাকে একটু সাহায্য করি। যদিও তখন জানতাম না রনি তুমি। তোমার সঙ্গে আমার পরিচয় আছে।

    আপনি আমাদের স্কুলে এসেছিলেন কেন?

    তোমাদের একজন আর্ট টিচার দরকার। আমি আর্ট টিচারের ইন্টারভু দিতে গিয়েছিলাম। তোমাদের হেড মিসট্রেস ইন্টার নিলেন।

    আপনার চাকরি কি হয়েছে?

    হুঁ। আগামী সপ্তাহে জয়েন করব। তোমাদের আর্ট ক্লাস আছে না?

    আছে। বুধবারে আর্ট ক্লাস।

    তাহলে বুধবারে তোমার সঙ্গে আবার দেখা হবে।

    হুঁ।

    তোমার মন খারাপ ভাব কি কমেছে, না এখনো আছে?

    এখনো আছে, তবে আগের চেয়ে একটু কম।

    মন ভালো করার কৌশলটা শিখিয়ে দেব?

    দিন।

    হাব্বত আলি গম্ভীর গলায় বললেন, যে বিষয় নিয়ে তোমার মন খারাপ সেই বিষয়টা নিয়ে ভাববে। ভাবতে ভাবতে মুখ দিয়ে শব্দ করবে ঘোঁৎ। শব্দটা করার সঙ্গে সঙ্গে যে বিষয় নিয়ে মন খারাপ, সেই বিষয়টা পুরো এলোমেলো হয়ে যাবে। দেখবে তোমার মন ভালো হয়ে গেছে।

    রনি অবাক হয়ে বলল, ঘোঁৎ বললেই হবে?

    হাব্বত আলি গম্ভীর গলায় বললেন, শুধু ঘোঁৎ বললেই হবে না। যে বিষয় নিয়ে তোমার মন খারাপ সেই বিষয়টা নিয়ে ভাবতে ভাবতে বলতে হবে। দেখবে চেষ্টা করে?

    হুঁ।

    চেষ্টা কর। কী নিয়ে মন খারাপ সেটা ভাবো। চোখ বন্ধ করে ভাবো। এই তো ঠিক আছে। এখনো বলো ঘোঁৎ। শব্দ করে বলো। মিনমিন করে না।

    রনি শব্দ করে বলল, ঘোঁৎ। বলেই সে হেসে ফেলল। আশ্চর্য ব্যাপার, তার মন খারাপ ভাব একেবারেই নেই। এখন খুবই আনন্দ লাগছে। হাব্বত আলি বললেন, মন খারাপ ভাব দূর হয়েছে?

    রনি বলল, হ্যাঁ।

    এ চিকিৎসার নাম হলো ঘোঁৎ চিকিৎসা। চিকিৎসাটা ভালো না?

    চিকিৎসাটা ভালো।

    এর চেয়েও ভালো চিকিৎসা আছে। সেই চিকিৎসায় ঘোঁৎটা উল্টো করে বলতে হয়। তবে এ শব্দটা উল্টো করে বলা বেশ কঠিন বলে বেশিরভাগ মানুষ এই চিকিৎসা নিতে পারে না।

    রনি বলল, আপনি কি ঘোঁৎ উল্টো করে বলতে পারেন?

    অবশ্যই পারি। বলব?

    বলুন।

    হাব্বত আলি শব্দ করে বললেন-ৎঘোঁ।

    রনির খুবই মজা লাগছে। শব্দটা শুনতেই মজা লাগছে।

    হাব্বত আলি বললেন, শুরুতে ৎ আছে তো, ৎ এর উচ্চারণ কঠিন বলে বেশিরভাগ মানুষ পারে না। ঘোঁৎ উল্টো করে বলতে বললে সবাই বলে তঘোঁ। তঘো আর ৎঘোঁ এক না।

    রনি আগ্রহের সঙ্গে বলল, আমাকে শিখিয়ে দেবেন?

    চেষ্টা করে দেখতে পারি। পারব কি-না তা জানি না।

    এখন বলো তোমাকে কি সরাসরি বাসায় নিয়ে যাব না-কি রিকশায় করে কিছুক্ষণ ঘুরব?

    কিছুক্ষণ ঘুরব।

    চলন্ত রিকশায় চোখ বন্ধ করে বসে থাকলে কী হয় জানো?

    জানি না।

    চলন্ত রিকশায় চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ বসে থাকলে মনে হয় তুমি শূন্যে ভাসছ।

    এরকম কেন মনে হয়?

    আমি জানি না কেন মনে হয়। পরীক্ষা করে দেখ সত্যি মনে হয় কি না।

    রনি চোখ বন্ধ করল। কী আশ্চর্য, কিছুক্ষণের মধ্যেই তার সত্যি সত্যি মনে হচ্ছে সে শূন্যে বসে আছে। ভাসতে ভাসতে যাচ্ছে। সে ভয় পেয়ে চোখ মেলে ফেলল।

    হাব্বত আলি বললেন, আমার যখন শূন্যে ভাসতে ইচ্ছা করে, তখন আমি সারাদিনের জন্যে রিকশা ভাড়া করে রিকশায় উঠি। চোখ বন্ধ করে বসে থাকি। অতি অল্প টাকায় আকাশ ভ্রমণ হয়। মজা না?

    হুঁ।

    হাব্বত আলি বললেন, তোমাকে একটা জরুরি খবর দিতে তো ভুলে গেলাম।

    জরুরি খবরটা কী?

    ভালো খবর। এই খবর আগে-ভাগে দিলে ঘোঁৎ চিকিৎসা ছাড়াই তোমার মন ভালো হয়ে যেত।

    খবরটা বলুন।

    অনুমান করো তো দেখি, তোমার অনুমান শক্তি দেখি। এ ছড়াটা জানো না–

    দেখি তোদের অনুমান
    হনুমান হনুমান।

    রনি বিরক্ত হয়ে বলল, আপনি পেঁচাচ্ছেন কেন? খবরটা বলুন।

    ঐ যে তোমাদের নাজমা মিস। তিনি তো মারা যান নি। বেঁচে আছেন।

    কে বলল আপনাকে?

    আমি স্কুলে থাকতে থাকতেই হাসপাতাল থেকে খবর এসেছে। উনি আহত, জ্ঞান নেই, তবে মারা যান নি। ঠিকমতো চিকিৎসা হলে বেঁচেও যেতে পারেন। অবস্থাটা দেখ, মারা যায়নি, এদিকে স্কুল ছুটি দিয়ে বসে আছে। হা হা হা।

    রনি বলল, এরকম বিশ্রী করে হাসবেন না তো, বলে সে নিজেও হাসতে শুরু করল। হাব্বত আলি হাসতে হাসতেই একবার বললেন ঘোঁৎ রনি বলল, ঘোঁৎ বললেন কেন?

    হাব্বত আলী বললেন, খুব আনন্দের মধ্যে ঘোঁৎ বললে আনন্দ নষ্ট হয়ে যায় কিনা পরীক্ষা করলাম।

    নষ্ট হয়?

    নষ্ট হয় না। বরং বাড়ে। তুমি করে দেখ।

    রনি কয়েকবার ঘোঁৎ করল। যত করে আনন্দ তত বাড়ে।

    রিকশা শহরের বাইরে অনেকদূর চলে গিয়েছিল। রনি বলল, বাসায় যাব।

    হাব্বত আলি রনিকে তাদের বাসার সামনে গেটে নামিয়ে দিয়ে চলে গেলেন। যদিও মানুষটাকে এভাবে ছেড়ে দিতে তার ইচ্ছা করছিল না। তার সঙ্গে আরো কিছুক্ষণ গল্প করতে ইচ্ছা করছিল। ইচ্ছা করলেই তো আর করা যায় না। তার খুব ইচ্ছা করে স্কুলের কাঠগোলাপ গাছ বেয়ে ছাদে উঠতে, তা সে করতে পারে না। তার একা একা রাস্তায় হাঁটতে ইচ্ছা করে, তাও সে করতে পারে না। তাকে করতে হয় সব অনিচ্ছার কাজ। যেমন সকালে একগ্লাস দুধ খেতে হয়। ঠিক রাত দশটায় ঘুমুতে যেতে হয়। কার্টুন চ্যানেলে রাত দশটায় এমন সুন্দর একটা কার্টুন হয়। এই কার্টুনটা সে কোনো দিনই দেখতে পারে না।

    স্কুল থেকে ফিরে রনি কী করবে না করবে সব আগেই ঠিক করা। যেমন–সে গোসল করবে। গোসলের আগে ইদরিস মিয়া তার গায়ে তেল মাখিয়ে দেবে। বিদেশ থেকে আনা হার্বাল কী যেন তেল, গাঢ় সবুজ রঙ। খুবই কুৎসিত গন্ধ।

    গোসলের পর ভাত খাওয়া। ভাত খাওয়ার আগে খেতে হবে এক বাটি সবজি (অতি জঘন্য)।

    ভাত খাওয়ার পর একঘণ্টা বিশ্রাম, তবে এইসময় সে টিভি দেখতে পারবে না। পাঠ্য বই-এর বাইরের বই পড়তে পারবে। কোন বই পড়বে তাও কিন্তু ঠিক করা। রনির বাবা ঠিক করে দেন। তিনি নিজেই বই নিয়ে আসেন। সবই জ্ঞানের বই–Insect world, Mountain Climbing, Polar Expedition. (অতি জঘন্য)।

    বই পড়ার টাইম শেষ হলেই হুজুর আসবেন। তিনি শেখাবেন কোরান শরীফ পড়া। আলিফ জবার আ, বে জবর বা।

    উনি চলে যাবার পর আসবেন ইংরেজি স্যার।

    সন্ধ্যার আগে আগে খেলাধুলার জন্যে একঘণ্টার ছুটি পাওয়া যাবে। খেলতে হবে ছাদে গিয়ে। তাদের বাড়ির ছাদটা নেট দিয়ে ঘেরা। বাসকেট বল খেলার রিং বসানো আছে, পিং পং খেলার টেবিল আছে। একা একা রনি কী খেলবে?

    আজ হাব্বত আলি সাহেবের সঙ্গে স্কুল থেকে ফেরার পর তার ধরাবাঁধা রুটিনের ওলটপালট হয়ে গেল। সে সরাসরি নিজের ঘরে ঢুকে স্কুলের কাপড় না ছেড়েই ঘুমুতে গেল এবং ঘুমিয়ে পড়ল। ইদরিস মিয়া খুব চিন্তিত হয়ে কয়েকবার তার খোঁজ নিয়ে গেল। কপালে হাত দিয়ে জ্বর আছে কি-না দেখল।

    রনির মা বাইরে থেকে টেলিফোন করলেন। ইদরিস তাঁকে জানাল, ভাইজান স্কুল থাইক্যা আইসাই ঘুমাইতাছে। মনে হয় শইল ভালো না।

    জ্বর নাকি? কপালে হাত দিয়ে দেখ।

    জ্বর নাই, শইল ঠাণ্ডা।

    আচ্ছা ঠিক আছে ঘুমাচেছ ঘুমাক। আমি ঘন্টা দুইর মধ্যে আসব, তখন দেখব।

    দুপুরের খানা খায় নাই।

    আমি এসে খাওয়াব।

    ভয়ের চোটে ইদরিস আসল কথাটা বলতে পারল না। আসল কথা হচ্ছে, ভাইজান আজ স্কুল থেকে একা চলে এসেছে। গাড়ি তাকে আনতে গিয়ে ফিরে এসেছে।

    রনি বিকাল পর্যন্ত ঘুমালো। ইদরিস মিয়াই তাকে ডেকে তুলল। তার টেলিফোন এসেছে। খুব নাকি জরুরি টেলিফোন।

    রনি টেলিফোন ধরল। অবাক হয়েই টেলিফোন ধরল। তাকে কেউ টেলিফোন করে না। মাঝে মাঝে তার প্রাইভেট টিচাররা টেলিফোন করেন। আজ আসবেন না কিংবা পরশু আসতে পারবেন না এইসব জানানোর জন্য। এখন সেটাও বন্ধ। রনির মা টিচারদের বলে দিয়েছেন এ জাতীয় টেলিফোন রনিকে করার কিছু নেই। তাকে করতে হবে।

    তাহলে টেলিফোনটা কে করেছে। হাব্বত আলি? রনি টেলিফোন ধরতেই ওপাশ থেকে মিষ্টি গলায় কেউ একজন বলল,

    রনি

    কনি

    মনি

    লানি

    মিস নাজমা ম্যাডাম যে রকম করে বলতেন অবিকল সেরকম করে বলা। তবে নাজমা ম্যাডাম টেলিফোন করেন নি। অন্য কেউ করেছে। রনি বলল, হ্যালো কে?

    আমি লুতপা।

    তুমি আমার টেলিফোন নাম্বার কোথায় পেয়েছ?

    স্কুল থেকে নিয়েছি। কেন নিয়েছ?

    তুমি রাগ করছ কেন?

    রনি বলল, কেউ টেলিফোন করলে আমার ভালো লাগে না।

    লুতপা বলল, আমার খুব মন খারাপ এইজন্যে তোমাকে টেলিফোন করেছি।

    মন খারাপ কেন?

    মিস নাজমা ম্যাডাম আমাদের নামের সঙ্গে মিলিয়ে যা রাইম বলতেন তার অর্থ বের করেছি। তারপর থেকেই আমার মন খারাপ।

    রনি বলল, কী অর্থ বের করেছ?

    লুতপা বলল, মিস তোমাকে কী বলে ডাকতেন?

    রনি!

    কনি

    মনি

    লানি।

    কনি মনি লানি এর প্রথম অক্ষরগুলি মিলে কী হয়? কমলা হয় না? ম্যাডাম তোমাকে কমলা ডাকতেন। তোমার গায়ের রঙ টুকটুকে কমলার মতো, এইজন্য কমলা ডাকতেন।

    ও আচ্ছা।

    পুতুলকে কী ডাকতেন মনে আছে? পুতুলকে ডাকতেন—

    পুতুল!

    তুতুল

    লতুল

    তুতুললতুল।

    প্রথম অক্ষরগুলি নিলে কী হয়? তুলতুল হয় না? পুতুলকে দেখলেই মনে হয় না–গা তুলতুল করছে?

    হ্যাঁ মনে হয়।

    আর আমাকে ডাকতেন—

    লুতপা!

    মতপা

    য়তপা

    নাতপা

    এর মানে কী?

    রনি বলল, ময়না।

    লুতপা বলল, আমার খুব বুদ্ধি, তাই না?

    রনি বলল, হুঁ।

    লুতপা বলল, আমার বাবা আমাকে কী ডাকে জানো?

    রনি বলল, জানতে চাই না।

    লুতপা বলল, এমন কর কেন, শোনো না–আমার বাবা আমাকে ডাকে বুদ্ধিরানী।

    রনি বলল, লুতপা শোনো তুমি আর কোনোদিন আমাকে টেলিফোন করবে না।

    লুতপা বলল, কেন করব না?

    রনি বলল, আমার ভালো লাগে না। আরেকটা কথা শোনো, মিস নাজমা ম্যাডাম মারা যান নি। বেঁচে আছেন।

    কে বলেছে? যেই বলুক, ঘটনা সত্যি।

    এই বলেই সে টেলিফোন রেখে দিল। অবশ্যি টেলিফোনটা রাখার পর তার একটু মন খারাপ হলো। এমন খারাপ ব্যবহার না করলেই হতো। তার ইচ্ছা করতে লাগল লুতপাকে টেলিফোন করে সরি বলতে। কিন্তু সে তো তার টেলিফোন নাম্বার জানে না। রনি ঠিক করল, আগামীকাল যখন স্কুলে যাবে তখন সে সরি বলবে। কিংবা একটা ফরগিভ মি কার্ড দেবে। কম্পিউটারে সুন্দর সুন্দর কার্ড সে নিজেই তৈরি করতে পারে।

    লুতপার কার্ডে একটা ছেলের ছবি থাকবে। ছেলেটার চোখে পানি। নিচে লেখা থাকবে–FORGIVE ME PLEASE.

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleজীবনকৃষ্ণ মেমোরিয়াল হাইস্কুল – হুমায়ূন আহমেদ
    Next Article ছায়াবীথি – হুমায়ূন আহমেদ

    Related Articles

    হুমায়ূন আহমেদ

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    ইস্টিশন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    উড়ালপঙ্খী – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    এই বসন্তে – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    এই মেঘ, রৌদ্রছায়া – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    এইসব দিনরাত্রি – হুমায়ূন আহমেদ

    December 23, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Our Picks

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    ইস্টিশন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    উড়ালপঙ্খী – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }