Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    ইস্টিশন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    উড়ালপঙ্খী – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • English Books
      • Jules Verne
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    ছেলেটা – হুমায়ূন আহমেদ

    হুমায়ূন আহমেদ এক পাতা গল্প79 Mins Read0
    ⤶ ⤷

    ০৬. রনির বাবা মজিদ সাহেব

    রনির বাবা মজিদ সাহেব রনিকে নিয়ে লাইব্রেরি ঘরে বসেছেন। তাঁর মুখ গম্ভীর। তিনি একটু পর পর আঙুল দিয়ে তার কপাল টিপে ধরছেন। রনির ধারণা তাঁর প্রচণ্ড মাথা ব্যথা। মাথা ব্যথা হলেই মানুষ এইভাবে টিপে।

    রনি!

    জি।

    পুলিশ অফিসার আফসারউদ্দিন সাহেব এসেছেন। তিনি তোমার সঙ্গে আলাদা বসবেন। তার আগে আমি তোমার সঙ্গে কথা বলব। প্রতিটি প্রশ্নের ঠিক জবাব দেবে।

    জি।

    টিফিন টাইমে তুমি আজ স্কুল থেকে পালিয়ে গেছ? পা

    লিয়ে যাই নি। উনার সঙ্গে গেছি।

    আগে যে লোক তোমাকে নিয়ে গিয়েছিল সেই লোক?

    রনি কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল, না, অন্য একজন।

    অন্য একজন মানে? কী বলো এইসব! লোকটা দেখতে কেমন?

    উনার গায়ের রঙ খুব ফর্সা। মাথায় ক্রিকেটারদের মতো ক্যাপ। গায়ে লাল চাদর।

    মজিদ সাহেবের মুখ হা হয়ে গেল। তিনি নড়েচড়ে বসলেন। এদিকওদিক তাকালেন। রনি স্পষ্ট বুঝতে পারছে তার এই মিথ্যা কথা উনাকে কাবু করে ফেলেছে। রনি ঠিক করল, এই মিথ্যাই সে চালিয়ে যাবে।

    লোকটা তার কোনো পরিচয় তোমাকে দিয়েছে?

    না।

    পুরো ঘটনা বলো। কীভাবে তুমি স্কুল থেকে বের হলে? কীভাবে তার সঙ্গে চলে গেলে? কোনো ডিটেল বাদ দেবে না। এইভাবে পা দুলিও না। পা দোলালে আমার কনসেনট্রেসন কেটে যায়। এখন বলো।

    কী বলব?

    কীভাবে তুমি লোকটার সঙ্গে গেলে?

    উনি রিকশা নিয়ে আমার জন্যে অপেক্ষা করছিলেন। আমাকে দেখেই বললেন, এই ব্যাটা উঠে আয়। আমি রিকশায় উঠে গেলাম।

    তোমাকে ব্যাটা বলল?

    জি।

    আর তুমি সঙ্গে সঙ্গে রিকশায় উঠে গেলে?

    জি।

    উনাকে আমার খুবই পরিচিত মনে হচ্ছিল তো এইজন্যে।

    পরিচিত মনে হচ্ছিল?

    জি।

    তোমরা কী করলে?

    আমরা অনেকক্ষণ রিকশায় করে ঘুরলাম। উনি আমাকে ললিপপ কিনে দিলেন। ললিপপ খেলাম। উনি ছড়া বললেন।

    কী ছড়া বললেন?

    উনি বললেন–টাবে টাবে, দুটা ভাত খাবে।

    আবার বলো।

    টাবে টাবে
    দুটা ভাত খাবে।

    তারপর কী হলো?

    আমরা নাজমা মিসকে দেখতে হাসপাতালে গেলাম।

    নাজমা মিসটা কে?

    আমাদের একজন মিস। সবুজ রঙের একটা গাড়ি উনাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে। উনি খুবই অসুস্থ। হাসপাতালে আছেন।

    লোকটা তোমাকে হাসপাতালে নিয়ে গেল?

    জি।

    কেন?

    একটু আগেই তো বলেছি–নাজমা মিসকে দেখতে নিয়ে গেলেন।

    সে তোমাকে বাসায় না নামিয়ে চলে গেল কেন?

    সেটা তো আমি জানি না।

    তুমি রিকশা করে একা একা এসেছ?

    জি।

    ভয় পাও নি?

    একটু একটু ভয় পাচ্ছিলাম। তবে উনি আমাকে ভয় না পাবার একটা মন্ত্র শিখিয়ে দিয়েছিলেন। মন্ত্রটা মনে মনে পড়লে ভয় কেটে যায়।

    কী মন্ত্র? ঘোঁৎ মন্ত্র। আবার বলো, কী মন্ত্র? ঘোঁৎ মন্ত্র।

    আচ্ছা ঠিক আছে, আমি তোমাকে আর প্রশ্ন করব না। পুলিশ ইন্সপেক্টর আফসারউদ্দিন সাহেব তোমার সঙ্গে কথা বলবেন। তার আগে হাত-মুখ ধুয়ে নাশতা খাও। আফসার সাহেবকে আমি তোমার ঘরে পাঠিয়ে দেব।

    আচ্ছা।

    রনি লাইব্রেরি ঘর থেকে চলে যাচ্ছে, মজিদ সাহেব একদৃষ্টিতে ছেলের দিকে তাকিয়ে আছেন। তাঁকে অসম্ভব চিন্তিত মনে হচ্ছে। চিন্তার প্রধান কারণ রনি যে ছড়াটা বলল সেই ছড়া। এই ছড়া রনির আসল বাবা বলতেন। রনিকে কোলে নিয়ে দোলাতে দোলাতে বলতেন–টাবে টাবে দুটা ভাত খাবে। রনির এই ছড়া মনে থাকার কোনো কারণ নেই। তাহলে ব্যাপারটা কী? ভৌতিক কোনো ব্যাপার অবশ্যই না। তিনি মনে করেন না–রনির মৃত বাবা রনিকে নিয়ে রিকশায় ঘুরছেন। তবে কিছু একটা ঘটছে। সেই কিছুটা কী?

    রনিকে নাশতা দেবার সময় ইদরিস মিয়া গলা নিচু করে বলল, আফনেরে রিকশায় নিয়া যে ঘুরছে সে কে জানেন?

    রনি বলল, না।

    কাউরে যদি না বলেন তাইলে বলতে পারি।

    আমি কাউরে বলব না।

    আল্লাহর নামে কসম কাটেন। বলেন, আল্লাহর কসম, কাউরে বলব না।

    আল্লাহর কসম, কাউরে বলব না।

    আফনেরে রিকশায় নিয়া ঘুরছে আফনের আসল পিতা।

    উনি তো মারা গেছেন।

    ঘটনা তো ঐখানেই। বড়ই জটিল ঘটনা।

    মৃত মানুষ কি ফিরে আসতে পারে?

    ক্ষেত্র বিশেষে পারে ভাইজান। ক্ষেত্র বিশেষে পারে। আমি একদিন বড় সাহেবরে আপনের ঘরে দেখেছি। চেয়ারে বইসা দোল খাইতেছেন।

    সত্যি?

    যদি মিথ্যা বলি আমার মাথায় যেন বজ্রাঘাত হয়। বড় সাহেবের সঙ্গে আমার কথাবার্তাও হইছে।

    কী কথা হইছে?

    আমারে জিজ্ঞাসা করেছেন–ইদরিস মিয়া, আছ কেমন? আরো অনেক আলাপ হইছে, সেইসব আপনেরে বলা যাবে না। খুবই জটিল অবস্থা ভাইজান। খুবই জটিল অবস্থা। বাড়িতে পুলিশ আনা হইছে–সিআইডি, ডিআইবি কোনো লাভ নাই।

    লাভ নাই কেন?

    এইটা এখন পুলিশের বিষয় নাই। অন্য বিষয় হইয়া গেছে। মুনশি মওলানা কিছু করলেও করতে পারে। দেখি আপনের জন্যে কোনো তাবিজ কবচের ব্যবস্থা নিতে পারি কি-না। তাড়াতাড়ি নাশতা শেষ করেন। আপনের ঘরে পুলিশের অফিসার বসা।

     

    আফসারউদ্দিন সাহেব রনির ঘরে ঢুকে খুবই মজা পাচ্ছেন। আগ্রহ নিয়ে রনির খেলনা দেখছেন। একটি খেলনা তাঁর মন হরণ করেছে। কাচের একটা পাখি তার সামনে রাখা বাটিতে চুমুক দিয়ে পানি খেয়েই যাচ্ছে। পাখির তৃষ্ণা দূর হচ্ছে না।

    তিনি রনিকে জিজ্ঞেস করলেন, এই খেলনাটা কি ব্যাটারিতে চলে?

    রনি বলল, না।

    আফসারউদ্দিন বললেন, ব্যাটারি ছাড়া এটা কীভাবে হচ্ছে?

    রনি বলল, আপনি তো ডিটেকটিভ। আপনি বের করুন।

    সায়েন্সের ব্যাপার তো বুঝতে পারছি না। জিনিসটা খুবই ইন্টারেস্টিং।

    পাখিটার পানি খাওয়া বন্ধ করার কোনো উপায় আছে?

    হাত দিয়ে ধরলে পানি খাওয়া বন্ধ হবে। ছেড়ে দিলে আবার পানি খাওয়া শুরু করবে।

    আফসারউদ্দিন এসেছেন রনিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে। এখন তার কাজ হচ্ছে কিছুক্ষণ পর পর হাত দিয়ে ধরে পাখির পানি খাওয়া বন্ধ করা, আবার হাত ছেড়ে দিয়ে পানি খাওয়ানো শুরু করা। রনি রকিং চেয়ারে দোল খেতে খেতে ভদ্রলোকের কাণ্ড দেখছে এবং বেশ মজা পাচ্ছে। কোনো বয়স্ক মানুষকে সে বাচ্চাদের খেলনা নিয়ে এভাবে খেলতে দেখে নি।

    রনি বলল, আপনার একটা জিনিস কিন্তু আমার কাছে আছে।

    আফসারউদ্দিন বললেন, কী জিনিস?

    আপনার নকল দাড়ি। আজ যাবার সময় নিয়ে যাবেন।

    আমার নকল দাড়ি তোমার কাছে গেল কীভাবে?

    আপনি চিন্তা করে বের করুন কীভাবে আমার কাছে গিয়েছে। আপনি ডিটেকটিভ মানুষ। ডিটেকটিভদের অনেক বুদ্ধি হয়। ফেলুদার অনেক বুদ্ধি?

    ফেলুদা কে?

    ফেলুদা কে আপনি জানেন না?

    না তো।

    খুব নাম করা ডিটেকটিভ।

    জানি না তো।

    ফেলুদার খুবই বুদ্ধি। যত বড় ক্রিমিনাল হোক ফেলুদার হাতে ধরা পড়বেই। আপনি না এসে আমার কাছে যদি ফেলুদা আসতেন, তাহলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে বলতে পারতেন কোন সবুজ গাড়িটা নাজমা ম্যাডামের রিকশাকে ধাক্কা দিয়েছে। উনি সঙ্গে সঙ্গে সবুজ গাড়ি ড্রাইভারকে অ্যারেস্ট করে ফেলতেন।

    আফসারউদ্দিন অবাক হয়ে বললেন, সবুজ গাড়ির ব্যাপারটা কী? এখানে সবুজ গাড়ি কোত্থেকে এল?

    রনি বলল, সেটা আমি আপনাকে বলব না। আপনি খুঁজে বের করুন।

     

    আর শুনুন, পাখির এই খেলনাটা আপনি নিয়ে যান। এটা আমি আপনাকে দিলাম। উপহার।

    আরে না, তোমার খেলনা আমি কেন নেব? কী বলো তুমি!

    আপনাকে এই খেলনাটা নিতেই হবে। আপনি যদি না নেন, আমি আপনার সঙ্গে কোনো কথাই বলব না।

    আশ্চর্য ছেলে তো!

    আমি মোটেই আশ্চর্য ছেলে না। আমি আমার বাবার মতো হয়েছি।

    তোমার বাবা কি সবাইকে খেলনা দিয়ে বেড়াতেন?

    বাবার কোনো জিনিস দেখে কেউ যদি বলতো–সুন্দর! বাবা তাকে সঙ্গে সঙ্গে সেই জিনিস উপহার হিসেবে দিয়ে দিতেন। ইদরিস চাচা আমাকে বলেছেন।

    খোকা শোনো, তুমি খুবই ভালো ছেলে, তোমাকে আমার পছন্দ হয়েছে। তোমার খেলনা আমি নেব না। আমার যখন খেলনাটা দেখতে ইচ্ছা করবে, তখন এসে দেখে যাব। এখন আমার প্রশ্নের জবাব দাও।

    প্রশ্নের জবাব দিতে আমার ভালো লাগে না।

    ভালো লাগে না এমন অনেক কাজ আমাদের কিন্তু করতে হয়। তোমার দুধ খেতে ভালো লাগে না, তোমাকে কিন্তু দুধ খেতে হয়। তাই না?

    হ্যাঁ।

    যা প্রশ্ন করি সত্যি জবাব দিও। তুমি তো প্রচুর মিথ্যা বলো।

    মিথ্যা বলি?

    অবশ্যই। আজ যে লোকটার কথা বললে, মাথায় ক্রিকেটারদের হ্যাট, তার গায়ে লাল চাদর, সবই মিথ্যা। তোমাকে ছড়া বলেছে–টাবে টাবে দুটা ভাত খাবে। এই ছড়ার ব্যাপারটা তুমি জানো। ইদরিস মিয়া তোমার বাবার বিষয়ে গল্প করার সময় এই ছড়ার কথা বলেছে। লোকটার বর্ণনাও তুমি ইদরিসের কথা অনুযায়ী করেছ। যাতে সবাই মনে করে তুমি তোমার বাবাকেই রিকশায় দেখেছ। তুমি তোমার বাবাকে নিয়ে একধরনের রহস্য তৈরি করার চেষ্টা করছ।

    রনি রকিং চেয়ারে দুলুনি বন্ধ করে তাকিয়ে আছে। এখন তার কাছে মনে হচ্ছে লোকটার বুদ্ধি ফেলুদার মতো না হলেও খুব কমও না।

    রনি।

    জি।

    ইদরিস মিয়া যে বলে তোমার ঘরে সে তোমার বাবাকে দেখেছে তা কি তুমি জানো?

    জানি।

    সে কী দেখেছে সেটা জানো?

    কী দেখেছে?

    সে তোমাকেই দেখেছে। তুমি আমার নকল দাড়ি পরে চাদর গায়ে এখন যেভাবে দোল খাচ্ছ সেইভাবে দোল খাচ্ছিলে। ভালো কথা, লাল চাদরটা কোথায়?

    রনি বলল, কাবার্ডে আছে।

    আফসারউদ্দিন বললেন, আমার ধারণা একই লোক তোমাকে রিকশায় করে দুবার ঘুরেছে। লোকটার নাম বলো।

    নাম জানি না।

    তার উদ্দেশ্যটা কী তুমি কি জানো?

    না।

    উদ্দেশ্য খারাপ না এইটুকু বোঝা যাচ্ছে। লোকটা একটা খেলা খেলার চেষ্টা করছে। সে তার খেলাতে তোমাকে নিয়ে নিয়েছে। তুমি নিজেও খেলছ। কেন খেলছ তুমি জানো না।

    রনি বলল, আপনার বুদ্ধি ফেলুদার মতোই।

    আফসারউদ্দিন ভুরু কুঁচকে বললেন, ফেলুদা ব্যাপারটা কী আমাকে বুঝিয়ে বলো তো।

    রনি বলল, আপনাকে একটা বই দিয়ে দেব। বইটার নাম গ্যাংটকে গণ্ডগোল, বইটা পড়লেই আপনি বুঝবেন।

    বইটা কি এখন দেবে?

    হ্যাঁ।

    বেশ তাহলে দাও আমি চলে যাই।

    আর প্রশ্ন করবেন না?

    না, বেশি প্রশ্ন করতে আমার ভালো লাগে না।

    আফসারউদ্দিন আবারো পাখিটা নিয়ে খেলতে শুরু করলেন। রনি এসে তার পাশে দাঁড়াল। আফসারউদ্দিন লজ্জিত মুখে বললেন, পাখির পানি খাওয়ার বিষয়টা বুঝতে পারছি না বলে এটা নিয়ে খেলে যাচ্ছি। কোনো জিনিস না বুঝতে পারলে আমার অস্থির লাগে। তোমার ব্যাপারটাও বুঝতে পারছি না বলে অস্থির লাগছে।

    রনি বলল, শুরুতে আমি ভেবেছিলাম আপনি ভালো ডিটেকটিভ না, এখন মনে হচ্ছে ভালো ডিটেকটিভ।

    আফসারউদ্দিন বললেন, আমি যে ভালো ডিটেকটিভ তার প্রমাণ দেব? তুমি যে লোকটির সঙ্গে রিকশায় করে ঘুরেছ, তার নাম তুমি জানো, তাকে তুমি চেনো। মিথ্যা করে বলেছ তাকে তুমি চেনো না। লোকটার নাম হাব্বত আলি। এই বাড়িতে আগে এসেছিল।

    আপনি কীভাবে বুঝলেন তার নাম হাব্বত আলি?

    তুমি একটা বুদ্ধিমান ছেলে। বুদ্ধিমান ছেলে নিতান্তই অপরিচিত কারো সঙ্গে রিকশায় উঠবে না। হাব্বত আলি তোমার পরিচিত। প্রথম দিনেই তাকে তুমি পছন্দ করেছিলে। আমি তোমাদের বাড়ির বুয়া এবং ইদরিস মিয়ার কাছে শুনেছি, তুমি অনেকক্ষণ তার সঙ্গে গল্প করেছ। তুমি যে রিকশায় আজ তোমাদের বাড়িতে এসেছ, সেই রিকশাওয়ালার সঙ্গে আমি কথা বলেছি। সে লোকটার যে বর্ণনা দিয়েছে সেই বর্ণনা শুনেছি। এখন বুঝতে পারছ?

    হুঁ।

    এরপরেও কি তুমি আমার সঙ্গে মিথ্যা কথা বলবে?

    না।

    ভেরি গুড। এখন বইটা দাও চলে যাই।

    আফসারউদ্দিন বই নিয়ে চলে গেলেন।

     

    রাতে ঘুমুতে যাবার আগে আগে রনিকে টেলিফোন করল লুতপাইন। তার গলা ভারি। গলাটা শোনাচ্ছে অন্যরকম। মনে হচ্ছে একটা ছেলে কথা বলছে। রনি বলল, কে?

    আমি লুতপা।

    তোমার গলা এরকম শোনাচ্ছে কেন?

    আমার জ্বর এসেছে। জুর এলে আমার গলা অন্যরকম হয়ে যায়। কাল আমি স্কুলে যাব না।

    স্কুলে না যেতে পারলে যাবে না। আমাকে বলছ কেন?

    তুমি স্কুলে গিয়ে যখন দেখবে আমি নেই তখন তোমার খারাপ লাগবে, এইজন্যে তোমাকে আগেই বলছি।

    আমার খারাপ লাগবে কেন?

    কারণ তোমার সঙ্গে আমার Love হয়েছে এইজন্যে।

    তুমি এরকম অসভ্য কথা আর কখনো আমাকে বলবে না।

    আচ্ছা বলব না।

    আর আমাকে কখনো টেলিফোন করবে না।

    আচ্ছা করব না।

    আমার কাছে কখনো ছবিও চাইবে না। তোমাকে আমি আর কোনো ছবি একে দেব না।

    যেগুলি দিয়েছ সেগুলি কি ফেরত নিয়ে যাবে?

    নিতেও পারি।

    প্লিজ ফেরত নিও না।

    তুমি যদি আমাকে আর টেলিফোন না কর তাহলে ফেরত নেব না।

    আর টেলিফোন করব না।

    প্রমিজ?

    লুতপা বলল, প্রমিজ। বলতে বলতেই তার কান্না পেয়ে গেল। সে কেঁদে ফেলল। তবে কোনো শব্দ করল না। তারপরেও কী করে যেন রনি ব্যাপারটা বুঝে গেল। সে গম্ভীর হয়ে বলল, কাঁদছ কেন?

    লুতপাইন ফেঁপাতে ফেঁপাতে বলল, আমার জ্বর এসেছে। মাথা ব্যথা করছে এইজন্যে কাঁদছি।

    রনি খট করে টেলিফোন নামিয়ে রাখল।

    ⤶ ⤷
    1 2 3 4 5 6 7
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleজীবনকৃষ্ণ মেমোরিয়াল হাইস্কুল – হুমায়ূন আহমেদ
    Next Article ছায়াবীথি – হুমায়ূন আহমেদ

    Related Articles

    হুমায়ূন আহমেদ

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    ইস্টিশন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    উড়ালপঙ্খী – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    এই বসন্তে – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    এই মেঘ, রৌদ্রছায়া – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    হুমায়ূন আহমেদ

    এইসব দিনরাত্রি – হুমায়ূন আহমেদ

    December 23, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Generic selectors
    Exact matches only
    Search in title
    Search in content
    Post Type Selectors
    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Our Picks

    আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    ইস্টিশন – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025

    উড়ালপঙ্খী – হুমায়ূন আহমেদ

    December 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }