Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    জাতিভেদ – ক্ষিতিমোহন সেন

    ক্ষিতিমোহন সেন এক পাতা গল্প11 Mins Read0

    ০২. ভারতের জাতিভেদ

    ভারতে জাতিভেদের কথা বলিতে গেলেই প্রথমে জাতি কথাটার একটা সংজ্ঞা দেওয়া উচিত। জাতি জিনিসটা কি তাহা এই দেশে আমরা সবাই বুঝি। তাই বলিয়া ভাষাতে তাহার একটা সংজ্ঞানির্দেশ করা সহজ নহে। যুরোপীয় পণ্ডিতেরা নানা ভাবে এই বিষয়টা বুঝাইতে গিয়া অনেক সময় হার মানিয়াছেন। এদেশে জাতি জন্মগত। জাতির বাহিরে বিবাহ নিষিদ্ধ। মৃত্যুর পরে শবসৎকার এবং জীবিত থাকিতে আহারাদি, স্বজাতির মধ্যেই এতকাল সীমাবদ্ধ ছিল। এমন শহরে বাস, বিদেশ ভ্রমণ, হোটেল-রেস্টরাণ্ট প্রভৃতির ফলে এবং নূতন শিক্ষাদীক্ষার প্রভাবে আহারাদিগত আচারবিচার ক্রমে শিথিল হইয়া আসিতেছে।

    এদেশে উচ্চতম জাতি ব্রাহ্মণ। তাঁহাদের মধ্যেও উচ্চনীচ অসংখ্য ভেদ। প্রদেশগত ভেদও গণনার অতীত। তাই ব্রাহ্মণদের মধ্যে কোন শ্রেণী উচ্চতম তাহা বলা অসম্ভব। বহু প্রদেশের বহু শ্রেণীর ব্রাহ্মণই সর্বোচ্চতার দাবি করেন। নিম্নতম জাতি যে কী তাহাও বলা কঠিন। এই উভয় কোটির মধ্যে স্তরের আর অন্ত নাই।

    যে-সব জাতির জল ব্রাহ্মণাদি উচ্চ জাতির লোকেরা ব্যবহার করেন তাহারা জল-আচরণীয় অর্থাৎ ভালো জাতি। যাহাদের দেওয়া ঘৃতপক্ক খাদ্য ও মিষ্টান্ন ব্রাহ্মণেরা গ্রহণ করেন তাহারা আরও ভালো জাতি। সাধারণ স্বশ্রেণীর লোকের হাতে ছাড়া কাহারও হাতে ভাত ডাল বা রুটি ব্রাহ্মণেরা খান না।

    দক্ষিণ-ভারতে স্পর্শবিচার আরও প্রবল। সেখানে যাহাদের স্পর্শে ব্রাহ্মণেরা অশুচি হন না ও যাহাদের জন ব্রাহ্মণের আচরণীয় তাহারাই ভালো জাতি। যাহাদের জন ব্রাহ্মণীরাও আচরণ করিতে পারেন তাহারা আরও ভালো জাতি। যাহাদের স্পর্শে ও জলে ব্রাহ্মণ বিধবারও অশুচিত্ব ঘটে না তাহারা তদপেক্ষা ভালো জাতি।

    নীচ জাতির জল অনাচরণীয়, তাহাদের স্পর্শে অশুচিত্ব ঘটে। যাহাদের স্পর্শে মৃৎপাত্রও অশুচি হয় তাহারা আরও নীচ জাতি। যাহাদের স্পর্শে ধাতুপাত্র পর্যন্ত অশুচি হয় তাহাদের স্থান আরও নীচ। ইহাদের অপেক্ষাও যাহাদের জাতি নীচ তাহারা মন্দিরপ্রাঙ্গণে প্রবেশ করিলেও মন্দির অশুচি হয়। কোনো কোনো জাতি গ্রাম বা নগরে প্রবেশ করিলে গোটা গ্রাম বা নগরই অশুচি হয়। এই সব বিষয়ের বিচার শ্রীযুক্ত শ্রীধর কেতকর মহাশয় তাঁহার রচিত ‘The History of Caste in India’ নামক পুস্তকে ভালো করিয়া করিয়াছেন (পৃ. ২৪, ২৫)।

    এখনকার দিনে এই সব ছোঁয়াছুঁই ব্যাপারে অনেক স্থলে লোকের মতামতের অনেকখানি নড়চড় দেখা দিয়াছে। যাঁহারা ভাগ্যক্রমে উচ্চজাতির মধ্যে জন্মিয়াছেন তাঁহারাও অনেক সময় এতটা বাছবিচার পছন্দ করেন না, আর যাঁহারা দুর্ভাগ্যক্রমে তথাকথিত নীচজাতির মধ্যে জন্মিয়াছেন তাঁহারাও আর নিজেকে একেবারে হীন বা পতিত বলিয়া মানিয়া লইতে রাজি নহেন এবং উচ্চপক্ষীয়দের সমকক্ষতা দাবি করেন। নীচজাতির মধ্যে এখনও কিন্তু অনেক সময়েই নীচতর জাতিকে দাবাইয়া রাখিবার প্রয়াসটি রীতিমতই দেখা যায়।

    উচ্চতর জাতীয় লোকেরা অনেকেই এখনো বর্ণাশ্রমব্যবস্থাকে ভালোই বলেন। স্বামী দয়ানন্দ বলেন, “ভারতের এই অসংখ্য জাতিভেদের স্থলে মাত্র চারিটি জাতি থাকুক, সেই চাতুর্বর্ণ্যও নির্ণিত হউক গুণকর্মের দ্বারা। বেদের অধিকার হইতে কোনো বর্ণই বঞ্চিত না হউক।”

    মহাত্মা গান্ধী অস্পৃশ্যতার বিরোধী কিন্তু তিনি বর্ণাশ্রমের বিরোধী নহেন। শ্রীযুক্ত লক্ষ্মী নরসু ‘A Study of Caste’ নামক পুস্তকে মহাত্মাজীর কিছু মত উদ্ধৃত করিয়াছেন (P. 131)। তাহাতে দেখা যায় মহাত্মাজী বলেন, “Varnashrama is inherent in human nature, and Hinduism has reduced it to a science. It does attach by birth. A man cannot charge his Varna by choice.” অর্থাৎ, “বর্ণাশ্রম মানুষের স্বভাবনিহিত, হিন্দুধর্ম তাহাকেই বৈজ্ঞানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করিয়াছে। জন্মের দ্বারা বর্ণ নির্ণীত, ইচ্ছা করিলেও ইহার ব্যত্যয় ঘটিতে পারে না।” দেখা গেল এই বর্ণভেদ জন্মগত। ব্রাহ্মণ হইতে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় হইতে ক্ষত্রিয়, বৈশ্য হইতে বৈশ্য, শূদ্র হইতে শূদ্র উৎপন্ন। এখন এই ভেদের মূল কোথায়?

    সাধারণত সকলে ঋগ্বেদের পুরুষসূক্তকেই (১০ম মণ্ডল, ৯০ সূক্ত) এই বর্ণভেদের মূল মনে করেন। তাহাতে দেখা যায়,

    ব্রাহ্মনোহস্য মুখমাসীদ বাহূ রাজন্যঃ কৃতঃ।
    উরূ তদস্য যদ্বৈশ্যঃ পদ্ভ্যাং শূদ্রো অজায়ত।। —ঋগ্বেদ, ১০.৯০.১২
    অর্থাৎ, “সেই প্রজাপতির মুখ হইল ব্রাহ্মণ, বাহু হইল রাজন্য অর্থাৎ ক্ষত্রিয়, ইঁহার উরু হইল বৈশ্য এবং পদদ্বয় হইতে জন্মিল শূদ্র।” ইহাতে দেখা যায় জাতি লইয়াই মানুষ সৃষ্ট হইল। ঋগ্বেদে ব্রাহ্মণ শব্দ খুবই বিরল, তাহাও জ্ঞানী বা পুরোহিত অর্থে ব্যবহৃত। ক্ষত্রিয় শব্দও বড় একটা দেখা যায় না। বৈশ্য ও শূদ্রের উল্লেখ দেখা যায় মাত্র পুরুষসূক্তের ঐ শ্লোকটিতেই।

    এখন পণ্ডিতদের মতে ঋগ্বেদের দশম মণ্ডল অনেকটা অর্বাচীন অর্থাৎ আধুনিক। তাহাতে দেখা যায় মাত্র চারিটি বর্ণ। তাহার দ্বারা আমাদের দেশের অসংখ্য জাতিবিভাগের মীমাংসা হয় কেমন করিয়া? মুখে আমরা চাতুর্বর্ণ্য বলিলে কি হইবে? সেন্সস দেখিলে দেখা যায় জাতি তো প্রায় চারি হাজার, তাহার মধ্যেও ভেদ-বিভেদের অন্ত নাই।

    চারি বর্ণের উৎপত্তি সম্বন্ধে এই যে সংশয় ও মতভেদ ইহা সেই যুগেও ছিল। প্রাচীনকালেও পুরুষসূক্তের এই মত সকলে মানিয়া লইতে পারেন নাই। বিষ্ণুপুরাণ আর এক স্থানে বলেন, “ভার্গ হইতে ভার্গভূমি পুত্র হইলেন। তাঁহা হইতেই  চাতুর্বর্ণ্য প্রবর্তিত হইল।”

    ভার্গস্য ভার্গভূমিঃ, অতশ্চাতুবর্ণ্যপ্রবৃত্তিঃ।। —বিষ্ণুপুরাণ, ৪র্থ অংশ, ৮, ৯
    দক্ষ প্রজাপতি ব্রহ্মার দক্ষিণ অঙ্গুষ্ঠ হইতে জাত।
    ব্রহ্মণশ্চ দক্ষিণাঙ্গুষ্ঠজন্মা দক্ষপ্রজাপতিঃ।। —বিষ্ণুপুরাণ, ৪, ১, ৫

    মহাভারতে দেখি আদি সৃষ্টির কথা কহিতে গিয়া জনমেজয়কে বৈশম্পায়ন বলিতেছেন, “ব্রহ্মার ছয়টি মানসপুত্র, মরীচি অত্রি অঙ্গিরা পুলস্ত্য পুলহ ক্রতু। মরীচির পুত্র কশ্যপ, কশ্যপ হইতে এই সব প্রজা সৃষ্ট।”

    ব্রহ্মণো মানসাঃ পুত্রা বিদিতাঃ ষন্‌মহর্ষযঃ।
    মরীচিরত্র্যঙ্গিরসৌ পুলস্ত্যঃ পুলহঃ ক্রতুঃ।
    মরীচেঃ কশ্যপঃ পুত্রঃ কশ্যাপাৎ তু ইমাঃ প্রজাঃ।। –আদিপর্ব, ৬৫, ১০-১১
    ব্রহ্মার মানসপুত্রদের কথা সকল পুরাণেই আছে। তাঁহাদের সন্ততিই তো ব্রাহ্মণেরা। ব্রহ্মার বরুণযাগের অগ্নি হইতে ভৃগুর জন্ম, তাহার পর চলিল তাঁহার সন্ততিধারা (আদিপর্ব, ৫, ৭-৮)।

    গীতাতে তো দেখি ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলিতেছেন, “চাতুর্বণ্য আমি সৃষ্টি করিয়েছে গুণকর্মানুসারে।”
    চাতুর্বর্ণ্যং ময়া সৃষ্টং গুণকর্মবিভাগশঃ।।–৪, ১৩

    বিষ্ণুপুরাণের মতে গৃৎসমদের পুত্র শৌনকই চাতুর্বর্ণ্য প্রবর্তিত করেন।
    গৃৎসমদস্য শৌনকশ্চাতুর্বর্ণ্যপ্রবর্তয়িতাভূত।।–বিষ্ণুপুরাণ, অংশ ৪. ৮, ১০

    হরিবংশও বলেন, “শুনক হইলেন গৃৎসমদের পুত্র। শুনক হইতে শৌনক নামে পরিচিত ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয় বৈশ্য শূদ্র জাতীয় বহু পুত্র জন্মে।”
    পুত্রো গৃৎসমদস্যাপি শুনকো যস্য শৌনকাঃ।
    ব্রাহ্মণাঃ ক্ষত্রিয়াশ্চৈব বৈশ্যাঃ শূদ্রাস্তথৈব চ।।–২৯ অধ্যায়, ১৫১৯-২০

    এই হরিবংশেই আর একটি মতেরও উল্লেখ দেখা যায়। শিবির সন্তান রাজা বলিকে ব্রহ্মা বর দেন, “তুমি বর্ণচতুষ্টয়ের স্থাপয়িতা হইবে।”

    চতুরো নিয়তান্‌ বর্ণান্‌ ত্বং চ স্থাপয়িতেতি হ।।–ঐ ৩১, ১৬৮৮

    হরিবংশে আরও একটি মতের কথা জানা যায়। “অক্ষয় হইতে ব্রাহ্মণেরা, ক্ষর হইতে ক্ষত্রিয়েরা, বিকার হইতে বৈশ্যেরা, ধূমবিকার হইতে শূদ্রেরা উৎপন্ন।
    অক্ষরাদ্‌ ব্রহ্মণাঃ সৌম্যাঃ ক্ষরাৎ ক্ষত্রিয়বান্ধবাঃ।
    বৈশ্যা বিকারতশ্চৈব শূদ্রা ধূমবিকারতঃ।।–হরিবংশ, ভবিষ্য পর্ব, ২১০, ১১৮১৬

    নানাপুরাণে সৃষ্টিকথা নানাভাবে বর্ণিত। এখানে সকলগুলির উল্লেখ করা সম্ভব নহে। তবু আরও দুই-একটা কথার উল্লেখ করা যাইতেছে। বৃহদারণ্যক উপনিষদে দেখি
    ব্রহ্ম বা উদমগ্র আসীদ্‌ একমেব তদেক্যসন্‌ ন ব্যভবৎ তচ্ছ্রেয়োরূপম্‌ অত্যসৃজত ক্ষত্রম্‌।–১, ৪, ১১

    একমাত্র এই ব্রহ্মই অগ্রে ছিলেন, একা বলিয়া তিনি বৈভবহীন ছিলেন, তাই তিনি শ্রেয়োরূপ ক্ষত্রিয়কে সৃষ্টি করিলেন। এখানে প্রথমে ক্ষত্রিয়সৃষ্টির কথাই পাইতেছি।

    মহাভারতে শান্তিপর্বে অর্জুনের প্রশ্নের উত্তরে শ্রীকৃষ্ণ বলিতেছেন “দেবদেব বরপ্রদ নারায়ণের বাকুসংযমকালে তাঁহার মুখ হইতে ব্রাহ্মণেরা প্রথমে প্রাদুর্ভূত হইলেন। পরে ব্রাহ্মণ হইতে অন্যান্য বর্ণ প্রাদুর্ভূত হইল।”
    বাক্যসংযমকালে হি তস্য বরপ্রদস্য দেবদেবস্য ব্রাহ্মণাঃ প্রথমং প্রাদুর্ভুতা ব্রাহ্মণেভ্যশ্চ শেষা বর্ণাং প্রাদুর্ভূতাঃ।।–মহাভারত, শান্তিপর্ব, ৩৪২, ২১

    তাহার পরে দেখা যায় যেহেতু ব্রাহ্মণ হইতেই অন্য তিনটি বর্ণ সৃষ্ট তাই তাহারাও ব্রাহ্মণের জ্ঞাতির স্বরূপ।

    তস্মাদ্বর্ণা ঋভবো জ্ঞাতিবর্ণাঃ
    সাংসৃজ্যন্তে তস্য বিকার এব।।–মহাভারত, শান্তিপর্ব, ৬০, ৪৭

    এখানে টীকাকার নীলকণ্ঠ বলিতেছেন, “যেহেতু তিন বর্ণের মধ্যে ব্রাহ্মণই যজ্ঞস্রষ্টা, তাই তাহা হইতে জাত সকল বর্ণই যজ্ঞসংযোগবশতঃ ঋজু অর্থাৎ সাধু।”
    যস্মাৎ ত্রিষু বর্ণেষু ব্রাহ্মণো যজ্ঞস্রষ্টা তস্মাত সর্বেহপি বর্ণা ঋজবঃ এব যজ্ঞসংযোগাৎ। (তত্র টীকা)

    মহর্ষি জৈমিনিও বলেন, “চতুর্মুখ ব্রহ্মা সৃষ্টির প্রারম্ভে অগ্রে ব্রাহ্মণগনকেই সৃজন করিয়াছিলেন, পশ্চাৎ পৃথক পৃথক সমস্ত বর্ণ তাঁহাদেরই বংশে উৎপন্ন হইয়াছে।”
    সসর্জ ব্রাহ্মণানগ্রে স্ররষ্ট্যাদৌ স চতুমুখঃ।
    সর্বে বর্ণাঃ পৃথক পশ্চাৎ তেষাং বংশেষু জজ্ঞিরে।।–পদ্মপুরাণ, উৎকলখণ্ড, ৩৮, ৪৪

    এই জন্যই মহাভারত বলিলেন, “পূর্বে জগতে একমাত্র বর্ণ ছিল, তারপর কর্মক্রিয়াবিশেষবশতঃ চতুর্বর্ণ প্রতিষ্ঠিত হইল।”
    একবর্ণমিদং পূর্বং বিশ্বমাসীদ যুধিষ্ঠির।
    কর্ম-ক্রিয়াবিশেষেণ চতুর্বর্ণং প্রতিষ্ঠিতম্‌।।

    শান্তিপর্বের ১৮৮ অধ্যায়ে দেখা যায় মহর্ষি ভৃগুরও বর্ণের উৎপত্তি সম্বন্ধে এই একই মত। বিষ্ণুপুরাণে চতুর্থাংশে কয়েকটি অধ্যায়ে দেখান হইয়াছে মনুর নানা পুত্র হইতেছে নানা জাতির উৎপত্তি।

    বিভিন্ন প্রদেশের পুরাণে আবার জাতিসৃষ্টি সম্বন্ধে বিভিন্ন রকমের কথা পাওয়া যায়। মহিশূর প্রদেশের একটি পুরাণ কথাতে পাই যে বৈশ্যবংশ নিজপাপে ব্রহ্মার শাপে নির্মূল হইয়া যায়। পরে বল্কল ঋষি কুশনির্মিত সহস্য মানুষকে প্রাণ দান করিয়া সহস্র গোত্রের বৈশ্য সৃষ্টি করিলেন।(১) কাজেই মানুষ ও জাতি সৃষ্টি সম্বন্ধে আমাদের শাস্ত্রে অসংখ্য মত রহিয়াছে। ভাগবতেও দেখিতে পাই,
    এক এব পুরা বেদঃ প্রণবঃ সর্ববাত্ময়ঃ।
    দেবো নারায়ণো নান্য একাগ্নির্বর্ণ এব চ।।–৯, ১৪, ৪৮

    শ্রীধর স্বামীর ভাষ্যানুসারে অর্থ পাই যে পূর্বে সর্ববাঙ্ময় প্রণবই একমাত্র ছিল বেদ। একমাত্র দেবতা ছিলেন নারায়ণ, আর কেহ নহেন। একমাত্র লৌকিক অগ্নিই ছিলেন অগ্নি, এবং বর্ণ ছিল যাহার নাম হংস।

    কারণ পুরাণেও আছে,
    আদৌ কৃতযুগে বর্ণো নৃণাং হংস ইতি স্মৃতম্‌।
    আদিতে সত্যযুগে মানুষের হংস নামেই একমাত্র জাতি ছিল।

    সেই সত্যযুগে পাপপুণ্যের সৃষ্টি হয় নাই, তখন বর্ণাশ্রম ব্যবস্থা হয় নাই, কাজেই তখন বর্ণসঙ্করও ছিল না!
    অপ্রবৃত্তিঃ কৃতযুগে কর্মণোঃ শুভপাপয়োঃ।
    বর্ণাশ্রমব্যবস্থাশ্চ ন তদাসন্‌ ন সঙ্করঃ।।–বায়ুপুরাণ, ৮, ৬০

    —————-
    ১. Nanjun Dayya Ananta Krishna Iyer, ‘Mysore Tribe and Caste’, Vol. IV. P. 403

    1 2
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleভারতের সংস্কৃতি – ক্ষিতিমোহন সেন
    Next Article কবীর – ১ – ক্ষিতিমোহন সেন

    Related Articles

    ক্ষিতিমোহন সেন

    কবীর – ১ – ক্ষিতিমোহন সেন

    August 6, 2025
    ক্ষিতিমোহন সেন

    ভারতের সংস্কৃতি – ক্ষিতিমোহন সেন

    August 6, 2025
    ক্ষিতিমোহন সেন

    ভারতীয় মধ্যযুগে সাধনার ধারা – ক্ষিতিমোহন সেন

    August 6, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.