Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025

    মহাস্থবির জাতক – প্রেমাঙ্কুর আতর্থী

    September 24, 2025

    হিউয়েন সাঙের দেখা ভারত – প্রেমময় দাশগুপ্ত

    September 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    জীবন যেখানে যেমন – আরিফ আজাদ

    লেখক এক পাতা গল্প152 Mins Read0

    ০৩. আসমানের আয়োজন

    [এক]

    ছমিরুদ্দিন ভাই আমার প্রতিবেশী। পেশায় টুপি-বিক্রেতা। নিজের হাতে টুপি বানিয়ে বিক্রি করেন। পেশাটা মূলত পৈত্রিক সূত্রেই পাওয়া। উনার বাবা জমিরুদ্দিন সরদার হাতে-কলমে ছেলেকে এই বিদ্যে শিখিয়ে গেছেন। দিব্যি যে ব্যবসা করছেন, তা অবশ্য নয়। কোনোরকমে দিনগুজার যাকে বলে। ছমিরুদ্দিনের তাতে কোনো আফসোস নেই যদিও; তবু তার মুখে একটা কথা প্রায়ই শোনা যায়, বাপে আমাগো লাইগা এক্কান মসজিদ ছাড়া আর কিছু রাইখ্যা যায় নাই।

    কথাটা মিথ্যে নয়। মানুষ সন্তানাদির জন্যে ব্যাংক-ব্যালেন্স, জায়গা-জমিসহ নানা স্থাবর-অস্থাবর সহায়-সম্পত্তি করে গেলেও জমিরুদ্দিন চাচা রেখে গেছেন কেবল একটি মাটির মসজিদ। সারাজীবন নিজের হাতে যা কামাই করেছেন, তার মধ্যে যেটুকু সঞয়াদি ছিলো, তা দিয়েই বাড়ির নিকটে জমি কিনে তাতে নিজ হাতে মাটির একটি মসজিদ তুলেছেন। জমিরুদ্দিন চাচার স্বপ্নই ছিলো এটা।

    আমরা তখনো অনেক ছোটো। দেখতাম চাচা সারাদিন হেঁটে হেঁটে টুপি বেচতেন। সাথে থাকতো ছমিরুদ্দিন। আমাদের দেখলেই চাচা হাঁক ছেড়ে বলতেন, ‘ও বাজানেরা, আমি মসজিদ বানাইতেছি এক্কান। তোমরা নামায পইড়তে আইসো কিন্তু। আইলেই তোমাগো আমি লজেন্স দিমু।’

    লজেন্সের লোভে আমরা চাচার মসজিদটা দেখতে যেতে চাইতাম। কিন্তু বাবা বাগড়া দিতো। বলতো, ‘জমির পাগলার কথা হুইনো না। খাইতে ভাত পায় না আবার হেতে বানাইব মসজিদ! ব্যাঙের হইছে গিয়া সর্দি-জ্বর! লজেন্সের লোভ দেখাইয়া তোমাগোরে নিয়া হাটে বেইচ্যা দিব কইলাম।’

    ছেলে ধরে নিয়ে বেচে দেওয়ার একটা রটনা তখনো গ্রামাঞ্চলে মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত ছিলো। হঠাৎ হঠাৎ শোনা যেতো অমুক বাড়ির অমুকের ছেলেকে ভরদুপুরে ছেলেধরা নিয়ে গেছে। সারা তল্লাটে হইচই পড়ে যেতো। বাবা-মায়েরা আমাদের ওপর বাড়িয়ে দিতে বাড়তি নজরদারি। দুপুরের ঘুম তুলে রেখে মাঠ দাপিয়ে বেড়ানোর আমাদের যে আদিম উৎসব, সেই উৎসব চুলোয় যায় এই ছেলেধরা গুজবের তোপে। কি সকাল, কি দুপুর বা বিকেল–বাচ্চাকাচ্চারা বাইরে বেরোলেই বিপদ। ওত পেতে আছে ছেলেধরার দল। কিন্তু সেই ছেলেধরার দলকে কেউ কোনোদিন চোখের দেখা আর দেখল না। কেবল মানুষের মুখে মুখেই ছড়িয়ে পড়েছিলো তাদের খ্যাতির বাহার।

    ‘জমিরুদ্দিন চাচা লজেন্সের লোভ দেখিয়ে আমাদের হাটে বেচে দেবে’ –বাবার এই কথা আমার বিশ্বাস হলো না। যে লোক টুপি বেচে, যে লোকের মাথায় টুপি, মুখে লম্বা দাড়ি, সে তোক মিথ্যে কথা বলতে পারে? সে লোক ছেলেধরা হতে পারে?

    এক দুপুরে, বাড়ির সকলের চোখ ফাঁকি দিয়ে আমি বেরিয়ে পড়লাম জমিরুদ্দিন চাচার বানানো মসজিদ দেখতে। আমাদের পাশাপাশি বাড়ি হলেও মাঝখানে রয়েছে একটা মৃতপ্রায় নদী। এককালের ভরা-যৌবনা নদীটা এখন তার ভগ্নাবশেষ নিয়ে কোনোমতে এখানে টিকে আছে। যদিও মৃতপ্রায় নদী, স্রোতের বালাই নেই কোনো, তবু একসিনা পানি তাতে বর্তমান থাকে সর্বদাই। সেই পানির গা জুড়ে বসতি গড়ে থাকে অসংখ্য কচুরিপানা। এই একসিনা পানি ডিঙিয়ে, কচুরিপানার আস্তরণ সরাতে সরাতে জমির চাচার মসজিদ দেখতে যাওয়ার কোনো মানে হয় না। আমি অন্যপথ ধরলাম। আধ ক্রোশ পথ ঘুরে ঠিক ঠিক পৌঁছে গেলাম জমিরুদ্দিন চাচার বাড়িতে।

    বড় একটা জারুল গাছের নিচে বৃদ্ধ মানুষের শরীরের মতন জবুথবু হয়ে থাকা একটা ঘর। ঘরের দেয়াল গলে বাইরে বেরিয়ে যেতে চাইছে যেন। সামনের খুঁটিগুলো জমিরুদ্দিন চাচার জীবনের প্রতিচ্ছবির মতোই; দুঃখের ভারে নুইয়ে পড়েছে। ভীষণ বর্ষার বিপন্ন সময়ে এই ঘর কতোখানি বিপজ্জনক তা দেখামাত্রই আঁচ করতে পারা যায়। তবুও, জীবন কি থেমে থাকে? শ্বাপদসংকুল অরণ্যের মাঝ থেকে মধু সংগ্রহ করতে যাওয়া মৌয়ালেরা ভালো করেই জানে ঘন জঙ্গলের কোথাও শিকারের লোভে হাঁ করে আছে কোনো ক্ষুধার্ত বাঘ, কিংবা কোনো তরুলতার গায়ে লেপ্টে আছে বিষধর কোনো সাপ। উভয়ের মারণাঘাতে মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী জেনেও তারা গহিন অরণ্যে পা বাড়ায়। কারণ, জীবনে বাঁচবার যন্ত্রণা মৃত্যুযন্ত্রণার চাইতেও মাঝে মাঝে প্রবল হয়ে ওঠে।

    জমিরুদ্দিন চাচার জীর্ণ এই গৃহখানা দেখলে এমনই বিপদের সংকেত পাওয়া যায়। যেকোনো মুহূর্তে, যেকোনো ঝড়ে একটা ধ্বংসস্তূপের আগাম চিত্র যেন চোখের সামনে ভেসে ওঠে। অথচ এই ঘরেই চাচা জমিরুদ্দিন বাস করে যাচ্ছেন বছরের পর বছর। এখানেই তিনি টুপি বানান। এখানেই সংসার এবং হয়তো এখানেই তার জীবনের পরিসমাপ্তি।

    মাথার ওপর থেকে দুপুরের সূর্য সরে হালকা পশ্চিমে চলে গেছে। এখন বিকেল। আমি দেখলাম, ছমিরুদ্দিনকে সাথে নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এলেন জমিরুদ্দিন চাচা। একজনের হাতে কোদাল আর অন্যজনের হাতে বড় একটা পাতিল। আমাকে দেখে চিনে ফেলল ছমিরুদ্দিন। বয়স তখন কতো আর হবে? তেরো বা চৌদ্দ। ছমিরুদ্দিন আমাকে হাতের ইশারায় কাছে ডাকলো। আমি কাছে এলে জমিরুদ্দিন চাচা বললেন, ‘কাশেমের বাপের পোলা না তুমি?’

    আমি স্মিত হেসে বললাম, ‘জে, চাচা।‘

    ‘মসজিদ দেখবার আইছো?’

    ‘হ।‘

    ‘মা শা আল্লাহ! মা শা আল্লাহ। ছমির, পকেটে লজেন্স আছেনি?’

    ‘নাই বাপজান!’, ছমির উত্তরে বললো।

    ‘ঘরেত্তুন দুইডা লজেন্স নিয়া আয়। তাত্তাড়ি যা। পুলাডারে দুইডা লজেন্সই দে।’

    ছমির পাতিল মাটিতে রেখে লজেন্স আনতে যায়। ঘরের কপাট খুলতে গেলে ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দ হলো। চোখের পলকেই ছমির লজেন্স নিয়ে ফিরে আসে। আমার হাতে লজেন্স দু-খানা পুরে দিয়ে সে বললো, ‘দুইডাই তোর।‘

    সত্যি কথা হলো, লজেন্সের লোভে আমি জমির চাচার আস্তানায় হানা দিইনি। আমি এখানে এসেছি কেবল মসজিদটা দেখার জন্য। সেই মসজিদ, যার গল্প জমির চাচা সারা গ্রামময় করে বেড়ায়। তার স্বপ্ন। তার জীবনাকাঙ্ক্ষা। একদিন সেই মসজিদে একটা মিনার হবে। সেই মিনার হতে আযানের ধ্বনি ছড়িয়ে পড়বে সর্বত্র।

    দুই জনের কাফেলায় আমি তৃতীয় জন হিশেবে যুক্ত হয়ে গেলাম। খুব বেশি নয়, জমিরুদ্দিন চাচার বসত-ভিটা থেকে অল্প উত্তর-দক্ষিণে গেলেই একটা উঁচু ঢিপি এলাকা। বৃষ্টি-বাদলে পানি ওঠার সম্ভাবনা নেই। এই উঁচু উর্বর জমিতে চাষ হচ্ছে একটা নতুন স্বপ্নের। জমিরুদ্দিন চাচার স্বপ্ন। স্বপ্নের নাম মসজিদ।

    মসজিদের জন্য জমিরুদ্দিন চাচা যার কাছ থেকে জমি কিনেছেন তার নাম নয়ন ব্যাপারী। আমরা হাঁটতে হাঁটতে সেই উঁচু ঢিপি এলাকায় এসে দেখি গলায় গামছা ঝুলিয়ে নয়ন ব্যাপারী বসে আছে। তার ঠোঁট দুটো রক্তজবা ফুলের মতন লাল। আমাদের দেখে সে মুখ থেকে পানের পিক ফেলে জোর গলায় বললো, ‘আইছো জমিরুদ্দিন?

    ‘হ মিয়া ভাই।‘

    ‘তোমার মসজিদ কদ্দূর?’

    ‘এই তো, হইয়া যাইব।‘

    ‘কই, কিছুই তো চোখে দেহিনা।‘

    জমিরুদ্দিন চাচা হাসে। হেসে বলে, ‘সময় হইলেই দেখা যাইব মিয়া ভাই। কথাগুলো বলে জমির চাচা ছমিরুদ্দিন আর আমাকে নিয়ে একটু তফাতে চলে • এলেন। বুঝতে পারলাম এটাই সেই মসজিদের জায়গা। জমিরুদ্দিন চাচা খানিকক্ষণ একদৃষ্টে জায়গাটার দিকে তাকিয়ে রইলেন। অপলক। এরপর ছমিরুদ্দিনকে উদ্দেশ্য করে বললেন, ‘কাজে লাইগা পড় বাজান।

    কাজে লেগে গেলো বাপ-বেটা দুজনেই। জমিরুদ্দিন চাচা কোদাল দিয়ে মাটি সমান করে, আর উদ্বৃত্ত মাটি পাতিলে ভরে দূরে ফেলে আসে ছমিরুদ্দিন। কখনো ছমিরুদ্দিন খোঁড়ে, চাচা মাথায় বয়ে নিয়ে যায় মাটি। খানিক বাদে আবার দেখা মিললো নয়ন ব্যাপারীর। কাঁধে সেই গামছা ঝোলানো। ব্যাপারীদের বৈশিষ্ট্যই বোধকরি এ রকম। নয়ন ব্যাপারী বললো, আমি কই কি জমিরুদ্দিন, মসজিদ বানাইবার চিন্তাটা তুমি বাদ দেও।

    নয়ন ব্যাপারীর কথায় কোনো উত্তর করে না জমিরুদ্দিন চাচা। একমনে নিজের কাজ করে যাচ্ছে। নয়ন ব্যাপারী আবার বললো, ‘মসজিদ বানাইবো মহল্লার মাইনষে মিইল্লা। তুমি একাই মসজিদ বানাইবা কিল্লাই? এতে তোমার ফায়দা কী জমিরুদ্দিন? তার চাইতে তুমি এক্কান কাজ করো। জমিখানায় আবাদ করো। ফসল লাগাও। সবজি লাগাও। ফসলাদি বেইচা তোমার আরামেই দিন কাটবো। টুপি বেইচা আর কয় টেকাই কামাও, কও তো?’

    মাথা তুলে নয়ন ব্যাপারীর দিকে তাকান জমিরুদ্দিন চাচা। তার চাহনিতে স্বপ্নে ভর করে চলার এক অদম্য স্পৃহা। স্বপ্নকে জলাঞ্জলি দেওয়ার প্রস্তাব সেই স্পৃহায় যেন আগুন ধরিয়ে দিলো। সেই আগুনের সবটুকু পারলে জমিরুদ্দিন চাচার চোখ ফুড়ে বেরিয়ে আসে। কিন্তু আসে না। চাচা ধৈর্য ধরে আর বলে, ‘ভালা কথাই কইছেন মিয়া ভাই। তয়, মসজিদ বানানের চাইতে বড় আরামের কাজ আর কী আছে কও? এইডাই তো লাভের ব্যবসা।

    নয়ন ব্যাপারীর কথা হালে পানি পেলো না। মুখের ভেতরে চিবোতে থাকা পানটাকে থু মেরে দুরে নিক্ষেপ করে ব্যাপারী বললো, ‘মসজিদ আবার লাভের ব্যবসা ক্যামনে হয় মিয়া?

    জমিরুদ্দিন চাচা হাসলো। স্ফীত হাসি হেসে বললো, ‘সব লাভ কি আর চোখে দেহন যায় গো মিয়া ভাই?

    চাচার কথায় দমে যায় না ব্যাপারী। পুনরায় বলে, তোমার কথাবার্তা বুঝি না বাপু। তোমার ভালার লাগি কইছিলাম। পুলা মাইয়ার ভবিষ্যৎ আছে। তুমি বুড়া হইছ। নিজের সারাজীবনের সম্বল দিয়া যা-ও এক্কান জমি জুড়াইলা, সেইখানে আবার মসজিদ বান্ধনের ঝোঁক! তুমি চোখ বুজার পরে এই পোলা মাইয়াগো দেখবো কেডায় সেই কথা কুনোদিন ভাবছোনি মিয়া?’

    আবারও মাথা তুলে তাকায় জমিরুদ্দিন চাচা। তার মুখে এখনো সেই মধুর স্ফীত হাসি। হাসিটা আনন্দের না তাচ্ছিল্যের বোঝা যাচ্ছে না। চাচা মুখে হাসি ধরে রেখেই বললো, ‘ব্যাপারী ভাই, আমারে যেমনে আল্লাহ দেখতাছে, আমার পোলা-মাইয়াগোরেও আল্লাহ দেখবো। হাত-পাও নিয়া যখন জন্মাইছে, আল্লাহর জমিনে তাগো জন্যি কী আর খাওনের অভাব হইব? আমার বাপে চইলা গেলো এমনে কইরা, আমিও যাই-যাই, আমার পোলাপানও চইলা যাইব, ইন শা আল্লাহ।

    জমিরুদ্দিন চাচার কথাগুলো গভীর মনোযোগ দিয়ে শুনলাম। বেশ নতুন কিছু কথা। এমন কথা আমার কিশোর মন এর আগে কখনোই শোনেনি। ছমিরুদ্দিন শুনেছে কি? বলতে পারছি না। জমির চাচা ওখানেই থেমে গেলে পারতেন। কিন্তু তিনি থামলেন না। বলে যেতে লাগলেন অনর্গল, ‘আল্লাহ কুরআনে কি কইছে হুনো নাই, মিয়া ভাই? আল্লাহ কইছেন, যারাই আল্লাহর ওপর ভরসা করবো, তাগো লাইগা আল্লাহ এমন জায়গা থেইকা রিজিক পাঠাইব, যা মানুষ চিন্তাও করার পারবো না। এইডাই আল্লাহর ওয়াদা। আল্লাহর ওয়াদা মিথ্যা হয়, কও? আমি আল্লাহর উপরেই ভরসা করসি। আমার সন্তানগো জন্যে আমার টুপি বেচার ব্যবসাই সই। ওই ব্যবসাতেই আমার যা আয় হয় তা দিয়াই আমি চলমু। আমার পরে আমার ছেলেমেয়ে চলবো। বেচা-বিক্রি কম হইলে কম খামু। সমস্যা নাই কোনো। কিন্তু আল্লাহর ঘর বানানির যে স্বপন দেখছি মিয়া ভাই, এই স্বপন পুরা না কইরা মইরা গেলে বড় আপসোস থাইকা যাইবো’

    দমে যাবার পাত্র নয় নয়ন ব্যাপারী। জমির চাচার কথাগুলোকে পাত্তা না দিয়ে বললেন, ‘এমন বুজরুকি কথাবার্তা শুনতে ভালোই লাগে জমিরুদ্দিন। রিজিকের বন্দোবস্ত কইরা যদি খালি কথাতেই পেট ভইরতো, তাইলে তো ভালাই আছিলো। কথায় বলে, অভাব যখন দুয়ারে আইসা দাঁড়ায়, ভালোবাসা তখন জানলা দিয়া পলায়।

    এবার জোরেই হেসে ফেললেন জমিরুদ্দিন চাচা। হাসতে হাসতে বললেন, ‘মিয়া ভাই, যে রিজিক আসমান থেইকা আসে, তার লাগি এতো পেরেশানি কিয়ের?

    শেষ চালটা চেলেই দিলেন জমির চাচা। নয়ন ব্যাপারী আর কথা বাড়ায়নি। জমিরুদ্দিন চাচার যুক্তি এবং আবেগের কাছে নাস্তানাবুদ হয়ে ভগ্ন মনোরথে প্রস্থান করলো বাড়ির উদ্দেশ্যে। কাজে আবার ডুব দিলো জমিরুদ্দিন চাচা। ছমিরুদ্দিনও একমনে কাজ করে যাচ্ছে। মাটি খুঁড়ছে। পাতিলে ভরছে। আমিও লেগে পড়লাম তাদের সাথে! মসজিদ বানানোর কাজ। শরীক হওয়ার মধ্যেই কেমন যেন আনন্দ!

    দেখতে দেখতে অল্প কয়েকদিনের মধ্যে জমির চাচার মসজিদ দাঁড়িয়ে গেলো। মাটির মসজিদ। ছনের পাতার ছাউনি। মসজিদের ভেতরে একটা মাদুর আর একটি জায়নামায। এই মসজিদে প্রতিদিন আযান হয়। আযান দেয় জমির চাচা। মুসল্লী দুজন। ওরা বাপ-বেটা। মুসল্লী কি কখনো বাড়বে? মানুষ কি দলবেঁধে কখনো আসবে এই স্বপ্নের মসজিদে সালাত পড়তে? প্রশ্নগুলোর উত্তর আসার আগেই প্রস্থানের সময় হয়ে এলো জমির চাচার। একদিন খুব ভোরে, সুবহে সাদিকের প্রাক্কালে জমিরুদ্দিন চাচা ইন্তেকাল করেন।

    [দুই]

    এরপর, অনেকগুলো দিন পার হলো। অনেকগুলো বছর। চাকরির উদ্দেশ্যে আমি পাড়ি জমিয়েছি বহুদূরের শ্বেতপাথরের দেশে। এই দেশে মস্ত মস্ত দালান। এখানে দিগন্তবিস্তৃত ফসলি মাঠ নেই, নেই একটু বসে জিরিয়ে নেওয়ার মতন শতবর্ষী পুরোনো কোনো বটবৃক্ষ। এখানে চাঁদ আর তারার মাঝে মিতালি নেই, সূর্যের প্রথম কিরণে গা ডুবিয়ে বসে থাকার আনন্দ নেই। এখানে ইটের ইমারতের আড়ালে ঢাকা পড়ে থাকে রাতের রুপোলি চাঁদ।

    মায়ের কাছে গল্প শুনি, আমাদের গ্রামও নাকি আর আগের মতো নেই। জায়গায় জায়গায় স্কুল হচ্ছে। হাসপাতাল হচ্ছে। রাস্তাঘাটগুলো পাকা হচ্ছে। শহরের সাথে তৈরি হচ্ছে সেতুবন্ধ। মা বলে, গ্রামের চেহারাটাই নাকি পাল্টে গেছে। কেমন পাল্টে গেছে কে জানে!

    অনেকবছর পরে আমার বাড়ি যাওয়ার ছুটি মিললো। চোখেমুখে আমার সে কি আনন্দ! আমি ফিরে যাবো আমার মায়ের কাছে, আমার গ্রামের কাছে। যাক না। পাল্টে গ্রাম! উঠুক না বড় বড় দালান সেখানে! আমার গ্রাম তো। ওখানেই যে আমার নাড়ি পোঁতা। এক অদ্ভুত টান! নাড়ির টান।

    গ্রামে ঢুকেই আমি বিস্ময়াভিভূত হয়ে পড়লাম। এটাকে গ্রাম না বলে উপ-শহর বললেই ভালো মানাবে। আমাদের সেই অজপাড়াগাঁ, যেখানে দিনদুপুরে বিরাজ করতো মৃত্যুর মতন নিস্তব্ধতা, সেখানে এখন লোক আর লোকাঁচারের সে কি আওয়াজ, সে কি হই-হুঁল্লোড়! চারিদিকে মানুষের সে কি কর্মচাঞ্চল্য! একদিন যা ছিলো মরুভূমির মতো বিরান, তা এখন মুখরিত হয়ে আছে মানুষের পদাঘাতে। কাঁচা মাটির সোঁদা গন্ধ খুঁজে পাওয়া এখানে দুষ্কর হয়ে যাবে। আলোকায়নের এই আলো ঝলমলে যুগে আমাদের গ্রাম যেভাবে আগাচ্ছে, তাতে তার শহর হতে যে আর খুব বেশি দেরি নেই, তা সহজে অনুমেয়।

    একদিন হঠাৎ জমিরুদ্দিন চাচার সেই মসজিদের কথা মনে পড়লো। আমার চোখের সামনে দিয়ে যে স্বপ্ন তরতর করে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল একদিন, সেই স্বপ্নের সর্বশেষ অবস্থা জানতে ব্যাকুল হয়ে উঠলো মন। একজন সরল-সিধে বৃদ্ধ মানুষের চোখে যে স্বপ্নকে সেদিন আমি ঝকমক করতে দেখেছিলাম, গোটা বিদেশ-বিভুঁইয়ে, পৃথিবীর পথে-প্রান্তরে ঘুরেও সেই স্বপ্ন, সেই স্বাপ্নিক দুটো চোখ আর স্বপ্নের সেই উচ্ছ্বাস আর কোথাও খুঁজে পাইনি। ধরণির কোথাও দেখা মেলেনি আর একটা জমিরুদ্দিন চাচার।

    আমি ছুটে গেলাম জমিরুদ্দিন চাচার মসজিদ দেখার জন্যে। চাচাঁদের বাড়ি আর আমাদের বাড়ির মাঝে যে বিশাল বিস্তৃর্ণ বিল ছিলো একসময়, সেই বিল জুড়ে এখন মানুষের ঘর-বসতি। যে পানির সমুদ্র সাঁতরে একদিন যেতে ভয় পেয়েছিলাম জমির চাচার বাড়ি, সেই অথৈ পানির বিল এখন মানুষের পদচারণায় সরগরম। বিলের মাঝ দিয়ে একটা সুন্দর, সর্পিল রাস্তা এঁকেবেঁকে চলে গেছে বিলের অপর প্রান্তে। এই বিস্তৃর্ণ জলাশয়, যাতে ছিলো কচুরিপানার অবাধ রাজত্ব আর হাঁসেদের জলকেলির অভয়ারণ্য, সেটা যে একদিন এমন নগর হয়ে উঠবে তা কে জানতো?

    একটা সুউচ্চ, সুবিশাল গম্বুজের ঠিক শীর্ষদেশে গিয়ে আমার দৃষ্টি নিবদ্ধ হলো। একটা আকাশভেদী মিনার যেন মহাশূন্যে পাড়ি জমাতে চাইছে প্রাণপণে। এটা কি নয়ন ব্যাপারীর সেই উঁচু ঢিপিটাই, যেখানে একদিন মাটি খুঁড়ার কাজ করেছি আমি, ছমিরুদ্দিন আর বয়োবৃদ্ধ জমির চাচা? স্বপ্নও কি এতোটা অবিশ্বাস্য, এতোটা বিস্ময়কর হতে পারে? নিজের চোখ দুটোকে যদি অবিশ্বাস করা যেতো আমি হয়তো তা-ই করতাম। কিন্তু যে সুদৃশ্য ইমারত আমার সামনে বর্তমান, যে আকাশছোঁয়া মিনার আমার দৃষ্টিজুড়ে, তা তো স্বপ্ন নয়, দিবালোকের মতো তা স্পষ্ট, আমার অস্তিত্বের মতোই তা সত্য।

    এটাই সেই উঁচু ঢিপি এবং এটাই সেই মসজিদ। একদিন এখানেই নিজ হাতে জমিরুদ্দিন চাচা ছড়িয়ে গিয়েছিলেন স্বপ্নের বীজ। সেই স্বপ্ন-বীজ আজ মহিরুহ হয়ে আকাশ ছুঁয়েছে। এই মসজিদকে ঘিরে গড়ে উঠেছে আরও অনেকগুলো দোকানপাট। কয়েকটা স্কুল। সাথে লাগোয়া একটা সুতার কারখানা। আমি যেন একটা অমীমাংসিত স্বপ্নের সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছি। আমার খুব করে জানতে মন চাচ্ছে, কেমন আছে ছমিরুদ্দিন?

    ছমিরুদ্দিন এখন বিশাল বড় ব্যবসায়ী। টুপি বুননের কাজটাকে সে এখন মস্ত বড় ব্যবসায় পরিণত করেছে। তার বোনের বিয়ে দিয়েছে ভালো গেরস্ত পরিবার দেখে। স্ত্রী-পুত্র আর কন্যা নিয়ে তারও এখন বনেদি সংসার।

    আমাকে দেখে শুরুতেই চিনতে পারল না ছমিরুদ্দিন ভাই। আমি বললাম, আমারে চিনো নাই ভাই? আমি কাশেমের বাপের পোলা। হাত উঁচিয়ে বললাম, ‘ওই যে। দইনের মাঠ, ঐখানেই আমগো বাড়ি। একদিন তোমাগো মসজিদ দেখবার লাগি আইছিলাম। মনে পড়ে?

    ছমিরুদ্দিন খুশিতে যেন লাফিয়ে উঠলো। বললো, ‘হয় হয়! আবু তাহের না তোর নাম? কেমন আছোস ভাই আমার? কখন আইছিলি?

    ছমিরুদ্দিন ভাই আমাকে চিনলেন ঠিক ঠিক। আমার নামও মনে আছে তার। আমি বললাম, ‘আইছি গনা কয়দিন হইছে। কী অবস্থা ভাই কও তো? গাও গেরাম তো চিনবার পারি না। মসজিদের দিকে আঙুল উঁচিয়ে বললাম, ‘এইডাই তো তোমাগো সেই মসজিদ, তাই না?

    ‘হ৷’

    চোখেমুখে এক-পৃথিবী বিস্ময় ধরে রেখে জানতে চাইলাম, ‘কেমনে কী হইলো কও তো?’

    হাতে থাকা হিশেবের খাতাটা বন্ধ করতে করতে ছমিরুদ্দিন বললো, ‘ম্যালা কাহিনি আবু তাহের। সব কমুনে। চল আগে চা খাই।‘

    চা খেতে খেতে গল্প জুড়েছে ছমিরুদ্দিন ভাই। কীভাবে কী থেকে কী হয়ে গেলো তার সবিস্তার বর্ণনায় লেগে গেলো সে। এই মসজিদ, এই টুপির ব্যবসা এই পর্যায়ে আসার কাহিনি হিশেবে ছমিরুদ্দিন ভাই যা বললো তা এ রকম–’শহর থেকে কিছু মানুষ এসে এখানে একটা কারখানা করতে চাইলো। তারা পছন্দ করলো মসজিদের পাশের এই উঁচু জমিটাই। বর্ষাকালে পানি ওঠার ভয় ছিলো না বলেই তারা বেছে নেয় জায়গাটা। কারখানা হওয়ার বছরখানেকের মধ্যে এখানে আস্তে আস্তে গড়ে ওঠে স্কুল আর মাদ্রাসা। কারখানায় যারা কাজ করতো, তারা পরিবার নিয়ে দূরদূরান্ত থেকে এখানে চলে আসতে থাকে। গড়ে ওঠে জনবসতি। লোকজনে ভরে ওঠে নির্জন অল। তখন একটা মসজিদের খুব দরকার পড়ে যায় এলাকায়। সবাই মিলে ঠিক করলো জমির চাচার মসজিদটাকেই তারা মেরামত করে বড় করবে। ছমিরুদ্দিনের কাছে প্রস্তাব দিলে সে রাজি হয়ে যায়। সেই মসজিদ সংলগ্ন বাড়তি কিছু অংশে তারা ছমিরুদ্দিনের জন্য একটা দোকান বানিয়ে দিলো। সেই থেকে ছমিরুদ্দিন আর গ্রামে গ্রামে গিয়ে টুপি বেচে না। দোকানে বসেই ব্যবসা করে। আস্তে আস্তে তার টুপির সুনাম এবং প্রশংসা ছড়িয়ে পড়ে গ্রাম থেকে শহরে। শহরের বড় বড় ডিলারেরা তার কাছে এসে টুপির অর্ডার দিয়ে যায়। বেড়ে যায় ছমিরুদ্দিনের ব্যস্ততা। খুলে যায় রিজিকের দরজা। দিন যায় আর ছমিরুদ্দিনের ভাগ্য খুলতে থাকে। একটা দোকান থেকে ছমিরুদ্দিন এখন একটা আস্ত কারখানার মালিক।

    ছমিরুদ্দিন আমাকে বলতে থাকে তার ভাগ্য বদলের গল্প, আর আমার স্মৃতি অতীত থেকে তুলে নিয়ে আসে জমিরুদ্দিন চাচার ওইদিনের বলা সেই কথাগুলো। চাচা একদিন নয়ন ব্যাপারীর চোখে চোখ রেখে, পরম ভরসার পারদ বুকে নিয়ে বলেছিলেন, আল্লাহ কুরআনে কী কইছে হ্রনো নাই, মিয়া ভাই? আল্লাহ কইছেন, যারাই আল্লাহর ওপর ভরসা করবো, তাগো লাইগা আল্লাহ এমন জায়গা থেইকা রিজিক পাঠাইব যা মানুষ চিন্তাও করতে পারবো না। এইডাই আল্লাহর ওয়াদা। আল্লাহর ওয়াদা মিথ্যা হয়, কও? আমি আল্লাহর ওপরেই ভরসা করছি। আমার সন্তানগো জন্যে আমার টুপি বেচার ব্যবসাই সই। ওই ব্যবসাতেই আমার যা আয় হয় তা দিয়াই আমি চলমু। আমার পরে আমার ছেলেমেয়ে চলবো। বেচা-বিক্রি কম হলে কম খামু। সমস্যা নাই কোনো। কিন্তু আল্লাহর ঘর বানানির যে স্বপন দেখছি। মিয়া ভাই, এই স্বপন পুরা না কইরা মইরা গেলে বড় আপসোস থাইকা যাইবো’

    ধূমায়িত চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছি আর মনে পড়ছে নয়ন ব্যাপারীকে বলা জমির চাচার শেষ কথাগুলো, সত্যিই তো! যে রিজিক আসমান থেইকা আসে, তার লাগি এতো পেরশানি কিয়ের?

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleএবার ভিন্ন কিছু হোক – আরিফ আজাদ
    Next Article প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ – ২ – আরিফ আজাদ

    Related Articles

    তসলিমা নাসরিন

    সেইসব অন্ধকার – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    আমার প্রতিবাদের ভাষা – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    অগ্রন্থিত লেখার সংকলন – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    বন্দিনী – তসলিমা নাসরিন

    August 21, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    নির্বাসন – তসলিমা নাসরিন

    August 20, 2025
    তসলিমা নাসরিন

    নেই, কিছু নেই – তসলিমা নাসরিন

    August 20, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025
    Our Picks

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025

    মহাস্থবির জাতক – প্রেমাঙ্কুর আতর্থী

    September 24, 2025

    হিউয়েন সাঙের দেখা ভারত – প্রেমময় দাশগুপ্ত

    September 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }