Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    টাইম মেশিন – এইচ জি ওয়েলস

    এইচ জি ওয়েলস এক পাতা গল্প97 Mins Read0

    ১১. সবুজ পোর্সেলিনের প্রাসাদ

    ১১। সবুজ পোর্সেলিনের প্রাসাদ

    এইসব কথা ভাবতে ভাবতেই বনের পথ ফুরিয়ে এসেছিল। দূর থেকে সবুজ পোর্সেলিনের প্রাসাদ দেখতে পেলাম। তারপর আরও কিছুটা হাঁটার পর বেলা প্রায় বারোটার সময়ে এসে পৌঁছালাম ভাঙাচোরা প্রাসাদের সামনে। জানলায় দেখলাম ধূলিমলিন ভাঙা কাচের টুকরো, মরচে-ধরা ধাতুর ফ্রেম থেকে বড় বড় সবুজ পাতাগুলো খসে পড়ে গেছে নিচে। খুব উঁচু একটা ঘাসজমির ওপর দাঁড়িয়ে ছিল প্রাসাদটা। উত্তর-পূর্বদিকে মস্ত চওড়া একটা বাড়ি দেখে কিন্তু বেশ অবাক হয়ে গেলাম। আন্দাজে মনে হল, একসময়ে ওয়ার্ডসওয়ার্থ আর ব্যাটার সি ছিল ওই জায়গায়। সাগরের প্রাণীগুলো যে কোথায়, তা অবশ্য ভেবে পেলাম না।

    প্রাসাদ পরীক্ষা করে দেখলাম বাস্তবিকই তা আগাগোড়া পোর্সেলিনে তৈরি। সামনের দিকে বিচিত্র হরফে এককালে কিছু লেখা ছিল, কিন্তু তা পড়া সম্ভব হল না আমার পক্ষে। দরজার পেল্লায় পাল্লাগুলো অনেক আগেই খসে পড়েছিল কবজা থেকে। কাজেই ভেতরে ঢুকতে কোনও অসুবিধা হল না। সামনেই দেখলাম মস্ত লম্বা একটা গ্যালারি, দুপাশের সারি সারি জানলা দিয়ে আলো আসছে ভেতরে। দেখেই মনে হল, এ মিউজিয়াম না হয়ে যায় না। টালি দিয়ে বাঁধানো মেঝেতে পুরু হয়ে জমেছে ধুলো, ওপরে ধুলোর চাদরে ঢাকা-পড়া এদিকে-সেদিকে ছড়ানো কত আশ্চর্য আর অদ্ভুত জিনিস। হলের ঠিক মাঝখানে অতিকায় একটা কঙ্কালের নিচের অংশ পড়ে থাকতে দেখলাম। বাঁকা পা দেখে বুঝলাম কঙ্কালটা মেগাথিরিয়াম জাতীয় কোনও অধুনালুপ্ত প্রাণীর। পুরু ধুলোর মাঝে মাথার খুলি আর ওপরের হাড়গুলো পড়ে ছিল। পাশের খানিকটা অংশ ছাদ থেকে বৃষ্টির জল পড়ে অনেকদিন আগেই ক্ষয়ে ধুলোয় মিশে গেছে। গ্যালারিতে ব্রন্টোসরাসের একটা বিপুল কঙ্কালও দেখলাম। আমার অনুমান তাহলে মিথ্যে নয়, এটা মিউজিয়ামই বটে। পাশের ঢালু তাকগুলোর ধুলো ঝেড়ে পেলাম আমাদের যুগের পরিচিত কাচের আলমারি। ভেতরের জিনিসগুলোর অম্লান অবস্থা দেখে বুঝলাম প্রত্যেকটি আলমারি নিশ্চয় এয়ার-টাইট করা।

    বুঝতেই পারছেন, আগামীকালের সাউথ কেন্সিংটনের এক ভাঙা স্তূপের মাঝে স্তম্ভিত হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম আমি। যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলাম, নিশ্চয় এককালে পৃথিবীর জীববিজ্ঞান বিভাগ ছিল সেখানে। কত রকমারি জীবাণু যে দেখলাম, তার ইয়ত্তা নেই। জীবাণু আর ছত্রাক লোপ পাওয়ার ফলে যদিও ক্ষয়ের প্রকোপ শতকরা নিরানব্বই ভাগ কমে গিয়েছিল; তবুও মূল্যবান বহু জীবাণু ধংসের হাত থেকে রেহাই পায়নি। এখানে-সেখানে খুদে মানুষের প্রায়-নষ্ট বহু জীবাণু দেখলাম ধুলোয় মলিন হয়ে উঠেছে। কোথাও টুকরো টুকরো হয়ে ঝুলছে তাকের ওপর। কতকগুলো আলমারির তো কোনও চিহ্নই পেলাম না, বোধহয় মর্লকরা সরিয়েছে সেগুলো। চুঁচ পড়ার শব্দ শোনা যায় এমনি গভীর নৈঃশব্দ্য চেপে বসেছে চারদিকে। পুরু ধুলোয় পা বসে যাচ্ছিল আমাদের। উইনা একটা সামুদ্রিক শজারু নিয়ে খেলা করছিল, আমায় চুপ করে দাঁড়াতে দেখে দৌড়ে এসে হাত ধরে দাঁড়াল পাশে।

    এই একটা হলের আকার দেখে মনে হল, সবুজ পোর্সেলিনের প্রাসাদে শুধু আদিম জীববিজ্ঞানের গ্যালারিই নেই, ঐতিহাসিক গ্যালারি, এমনকী গ্রন্থাগার থাকাও অস্বাভাবিক নয়। গত যুগের মানুষদের বিপুল প্রতিভার এই বিরাট নিদর্শন দেখে স্তম্ভিত না হয়ে পারলাম না। আর-একটু এগতে প্রথম গ্যালারির সঙ্গে আড়াআড়িভাবে আর-একটা ছোট গ্যালারি দেখলাম। এখানে দেখলাম রাশি রাশি খনিজ পদার্থ। হঠাৎ এক টুকরো গন্ধক দেখে ভাবলাম, গান-পাউডার তৈরি করলে কেমন হয়? তা-ই দিয়ে সাদা স্ফিংক্স-এর ব্রোঞ্জের দরজা উড়িয়ে টাইম মেশিন উদ্ধার করা তো নিতান্ত ছেলেখেলা। কিন্তু শোরা পেলাম না কোথাও। নাইট্রেট জাতীয় কোনও কেমিক্যালসই পেলাম না। বলা বাহুল্য, অনেক বছর আগে সেসব উবে মিলিয়ে গেছে বাতাসে। গন্ধকটা কিন্তু তবুও হাতছাড়া করতে মন চাইল না। গ্যালারির মধ্যে আর বিশেষ কিছু দেখার ছিল না। বিশেষ করে খনিজ পদার্থের মাথামুন্ডু যখন আমি বুঝি না, তখন এ হল থেকে বেরিয়ে আর-একটা ভাঙাচোরা হলে প্রবেশ করলাম। এককালে বোধহয় জীববিদ্যার বিভাগ ছিল এখানে– যদিও কিছু আর চেনার উপায় ছিল না তখন। জীবজন্তুর কতকগুলো ধুলো-পড়া টুকরো টুকরো মূর্তি, জারে রাখা শুকনো মমি–জারের স্পিরিট অবশ্য অনেক আগেই উবে গিয়েছিল; দুষ্প্রাপ্য গাছপালার বাদামি একটু ধুলো; বাস, আর কিছু নেই। মানুষ জাতটা কীভাবে দুভাগ হয়ে মর্লক আর ইলয়ে এসে ঠেকেছে, তা দেখতে পেলাম না বলে খুব হতাশ হলাম। এরপর ঢুকলাম একটা মস্ত বড় গ্যালারিতে। একে তো হলটা বড়, তার ওপর আলো কমে আসায় দুপাশের দেওয়ালও দেখা যাচ্ছিল না ভালো করে। ঘরের মেঝে ঢালু হয়ে নেমে গেছে নিচের দিকে। দুরে দুরে অবশ্য ছাদ থেকে বড় বড় সাদা কাচের গ্লোব ঝুলছিল, যদিও বেশির ভাগই আর আস্ত ছিল না। কাচের ফানুস দেখেই বুঝলাম, একসময়ে কৃত্রিম আলোর ব্যবস্থা ছিল জায়গাটায়। দুপাশে মস্ত উঁচু উঁচু মেশিনের সারি চলেছে, এক-একটা মেশিন যে কত বড় তা আপনাদের বলে বোঝাতে পারব না। সব মেশিনেই মরচে ধরেছে, কতকগুলো ভেঙেচুরে গেছে। জানেন তো, যন্ত্রপাতির ওপরে আমার একটু দুর্বলতা আছে, তাই তন্ময় হয়ে গেলাম মেশিনগুলোর মধ্যে। কিন্তু বুঝলাম না কী কাজে লাগত এত মেশিন।

    হঠাৎ গা ঘেঁষে দাঁড়াল উইনা। চমকে উঠেছিলাম আমি। আর তখনই লক্ষ করলাম, গ্যালারির মেঝে তখনও ঢালু হয়ে নেমে চলেছে নিচের দিকে। যেদিক দিয়ে এসেছি, সেদিকটা দেখলাম বেশ খানিকটা উঁচুতে। সরু সরু জানলা দিয়ে আলো ঝরে পড়ছে সেখানে। কিন্তু পথটা যতই ঢালু হয়ে নেমেছে নিচের দিকে, ততই কমেছে জানলার সংখ্যা আর আলোর পরিমাণ। মেশিনগুলোর জটিলতা তখনও আমার মাথায় ঘুরছে, আনমনা হয়ে চলতে চলতে আলো যে আস্তে আস্তে কমে এসেছে তা লক্ষ করিনি। কিন্তু উইনার ভয় ক্রমাগত বেড়েই চলেছে দেখে মেশিনের চিন্তা ছেড়ে ভালো করে তাকালাম সামনের দিকে। দেখলাম, গ্যালারি আরও খানিকটা নেমে নিঃসীম অন্ধকারের মাঝে হারিয়ে গেছে। থমকে গিয়ে চারপাশে তাকাতেই দেখি, আগের চাইতে ধুলো অনেক কমে এসেছে, মেঝেও আর ততটা মসৃণ নয়। আরও সামনে অন্ধকারের দিকে ছোট ছোট কতকগুলো পায়ের ছাপ দেখতে পেলাম।

    তৎক্ষণাৎ বুঝলাম, এ ছাপ মর্লকদের পায়ের ছাপ হয়ে যায় না। বুঝলাম, যন্ত্রপাতি নিয়ে মাথা ঘামাতে গিয়ে এতটা সময় নষ্ট করা কোনওমতেই উচিত হয়নি আমার। বিকেল গড়িয়ে এল। অথচ তখনও পর্যন্ত আত্মরক্ষার জন্যে কোনও হাতিয়ার, কোনও আশ্রয়, এমনকী আগুন জ্বালাবার কোনও বন্দোবস্তও করে উঠতে পারিনি। তারপরেই গ্যালারির নিচে দূর অন্ধকারের মধ্যে থেকে ভেসে এল অদ্ভুত রকমের খসখস শব্দ–যে শব্দ আমি শুনেছি কুয়োর নিচে।

    হঠাৎ মাথায় একটা মতলব এল। পাশের মেশিনটা থেকে লিভারের মতো একটা লোহার ডান্ডা বেরিয়ে ছিল। মেশিনটার ওপর উঠে দুহাতে লিভারটা আঁকড়ে ধরে সব শক্তি দিয়ে চাপ মারলাম পাশের দিকে। মিনিটখানেক জোর দেওয়ার পর খসে এল লিভারটা। দেখলাম মর্লকদের পাতলা খুলি ফাটানোর পক্ষে ওই ডান্ডাই যথেষ্ট। সেই মুহূর্তে দারুণ ইচ্ছে হল, নিচে নেমে গিয়ে কতকগুলো খুলি চুরমার করে আসি। কিন্তু পাছে শেষ পর্যন্ত টাইম মেশিনটা হারাতে হয়, এই ভয়ে এগলাম না। ভাবছেন নিজের বংশধরদের খুন করার এত পাশব ইচ্ছে কেন? আরে মশাই, সে কদর্য জীবগুলোকে দেখলে আপনারও ওই একই ইচ্ছে হত৷

    এক হাতে উইনা আর এক হাতে লোহার ডান্ডা নিয়ে উঠে এলাম ওপরে, ঢুকলাম পাশের আরও বড় একটা হলে। দেখে মনে হল যেন সামরিক গির্জায় ঢুকে পড়েছি। ফালি ফালি ছেঁড়া জীর্ণ নিশান ঝুলছে এদিকে-সেদিকে। বইয়ের মতো কতকগুলো জিনিস দেখলাম, যদিও বই বলে আর চেনা যায় না তাদের। বোর্ড আর চিড়-খাওয়া ধাতুর মলাট দেখেই বুঝলাম, একসময়ে প্রচুর বই স্থান পেয়েছিল এই ঘরে।

    তারপর একটা চওড়া সিঁড়ি বেয়ে এলাম যে ঘরে, একসময়ে বোধহয় শিল্প বিষয়ক বিভাগ ছিল সেখানে। ঘরের একদিকের ছাদ ধসে পড়লেও বাকি অংশে প্রতিটি জিনিস সাজানো ছিল পরিষ্কারভাবে। ব্যস্তসমস্ত হয়ে ইতিউতি দেখতে দেখতে যা চাইছিলাম, তা পেলাম। এক কোণে বায়ুনিরোধক একটা দেশলাইয়ের বাক্স। দুরুদুরু বুকে ঘষলাম একটা কাঠি, ফস করে জ্বলে উঠল কাঠিটা। যাক, তাহলে ভিজে ওঠেনি কাঠিগুলো। মহানন্দে ইচ্ছে হল, দুহাত তুলে নাচি। কিন্তু এ বয়সে নাচা শোভা পায় না, তাই গলা ছেয়ে The Land of the Leal গাইলাম বেশ কিছুক্ষণ ধরে। বীভৎস প্রাণীগুলোকে জব্দ করার একটা জুতসই হাতিয়ার পেয়ে আমার আনন্দ যেন আর বাধা মানতে চাইল না।

    স্মরণাতীত বছরের পরও একেবারে তাজা অবস্থায় দেশলাই পাওয়া যে কতটা সৌভাগ্যের ফলে সম্ভব, সেই কথাই ভাবতে ভাবতে আর-একটা জিনিস দেখে মনটা আবার নেচে উঠল। ভেবেছিলাম জিনিসটা কয়েক টুকরো মোম। ইচ্ছে ছিল বাতি বানানো যাবে, তাই মুখবন্ধ কাচের জারটা ভেঙে ফেললাম। কিন্তু যা পেলাম, তা মোম নয়। গন্ধ থেকে বুঝলাম কর্পূরের টুকরো। হতাশ হয়ে ফেলে দিতে যাচ্ছিলাম, হঠাৎ মনে পড়ল কর্পূর তো দাহ্য পদার্থ। জ্বালিয়ে দিলে বাতির মতো চমৎকার আলো দেবে। সুতরাং পকেটে চালান করে দিলাম টুকরোগুলো। কিন্তু স্ফিংক্স-এর দরজা ওড়ানোর জন্যে কোনও বিস্ফোরক পেলাম না। লোহার ডান্ডা দিয়ে সে কাজ সারব, এই মতলব আঁটতে আঁটতে মহানন্দে বেরিয়ে এলাম ঘর ছেড়ে।

    সে দীর্ঘ অপরাহের খুঁটিনাটি বর্ণনা শোনানোর মতো জোরালো স্মৃতিশক্তি আমার নেই। পরপর সাজিয়ে সব বলাও সম্ভব নয়। মনে আছে, মরচে-পড়া অস্ত্রের একটা লম্বা গ্যালারিতে ঢুকেছিলাম। লোহার ডান্ডা ফেলে দিয়ে কুড়ল নিই কি তলোয়ার নিই, এই দোটানায় পড়লাম সেখানে। দুটোই তো আর বয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। শেষকালে ভেবে দেখলাম ব্রোঞ্জের দরজার পক্ষে লোহার ডান্ডাই আদর্শ হাতিয়ার, তা-ই মনস্থির করে তলোয়ার ফেলে রেখে গেলাম অন্যদিকে। দেখলাম প্রচুর বন্দুক, পিস্তল আর রাইফেল। বেশির ভাগ অস্ত্রেই মরচে ছাড়া আর কোনও পদার্থ নেই। কতকগুলো এক ধরনের নতুনরকম ধাতুতে তৈরি মনে হল। সেগুলো অবশ্য মোটামুটি চলনসই অবস্থায় ছিল। কিন্তু কার্ট্রিজ আর গান-পাউডার যা ছিল, তা অনেকদিন আগেই নষ্ট হয়ে মিশে গেছে ধুলোয়। আর একদিকে দেখি সারি সারি দেবমূর্তি সাজানোপলিনেশিয়ান, মেক্সিকান, গ্রিসিয়ান, ফোনিশিয়ান–কোনও দেশই বাদ যায়নি। কী খেয়াল হল, দক্ষিণ আমেরিকার একটা বিদঘুটে দানোর নাকের ওপর লিখে রাখলাম আমার নাম।

    যতই বিকেল গড়িয়ে আসতে লাগল, ততই কমতে লাগল আমার আগ্রহ। ধূলিধূসর নিথর পুরীর একটার পর একটা গ্যালারি পেরিয়ে চললাম আমি। কোনওটায় শুধু ভাঙা পাথর আর মরচে-পড়া ধাতুর রাশি, কোনওটায় ছড়ানো দুষ্প্রাপ্য সামগ্রী। আচমকা চোখে পড়ল টিন-খনির একটা মডেল, তারপরেই হঠাৎ দেখলাম এয়ার-টাইট কৌটোয় পাশাপাশি সাজানো দুটো ডিনামাইট কাটিজ! ইউরেকা বলে চেঁচিয়ে উঠলাম সোল্লাসে। দারুণ আনন্দে তখুনি চুরমার করে ফেললাম কৌটোটা। কিন্তু তার পরেই কীরকম সন্দেহ হল। একটু ইতস্তত করে গ্যালারির কোণে কার্ডিজ রেখে আগুন দিলাম সলতেতে। এমন নিরাশ আর কখনও হইনি আমি। পাঁচ-দশ-পনেরো মিনিট অপেক্ষা করলাম, কিন্তু বিস্ফোরণ আর হল না। বুঝলাম ও দুটো নিছক ডামি ছাড়া আর কিছু না।

    তারপরেই প্রাসাদের মধ্যে ছোট্ট একটা প্রাঙ্গণে এসে পড়লাম আমরা। বেশ পরিষ্কার ঘাসজমির ওপর দেখলাম তিনটে ফলের গাছ। খিদে পেয়েছিল খুব। কাজেই ফলাহারের পর ঘাসের ওপর একটু জিরিয়ে নিলাম। নিরাপদ আশ্রয়স্থান তখনও মেলেনি অথচ রাত এল ঘনিয়ে। মনে মনে ভাবলাম, আর দরকারও হবে না। মর্লকদের দূরে ঠেকিয়ে রাখার পক্ষে এক বাক্স দেশলাই যথেষ্ট। ঠিক করলাম, বাইরে আগুনের কুণ্ড জ্বালিয়ে আজ রাতটা কাটিয়ে কাল সকালেই লোহার ডান্ডা দিয়ে ভাঙব ব্রোঞ্জের দরজা।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleকল্পগল্প সমগ্র – এইচ জি ওয়েলস
    Next Article ইবনে বতুতার সফরনামা – এইচ. এ. আর. গিব

    Related Articles

    এইচ জি ওয়েলস

    কল্পগল্প সমগ্র – এইচ জি ওয়েলস

    July 15, 2025
    এইচ জি ওয়েলস

    দ্য ওয়ার অব দ্য ওয়ার্ল্ডস – এইচ জি ওয়েলস

    July 15, 2025
    এইচ জি ওয়েলস

    ভাবীকালের একটি গল্প – এইচ জি ওয়েলস

    July 15, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.