Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025

    মহাস্থবির জাতক – প্রেমাঙ্কুর আতর্থী

    September 24, 2025

    হিউয়েন সাঙের দেখা ভারত – প্রেমময় দাশগুপ্ত

    September 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • বুদ্ধদেব গুহ
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    • 🔖
    • ➜]
    Subscribe
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    টিনটোরেটোর যীশু – সত্যজিৎ রায়

    উপন্যাস সত্যজিৎ রায় এক পাতা গল্প80 Mins Read0

    ০৯. ইন্সপেক্টর মহাদেব মণ্ডল

    ৯

    সন্ধের দিকে ইনস্পেকটর মণ্ডল এলেন। মহাদেব মণ্ডল। নামটা শুনলেই যে একটা গোলগাল নাদুসনুদুস চেহারা মনে হয়, মোটেই সেরকম নয়। বরং একেবারেই উলটো। লালমোহনবাবু পরে বলেছিলেন, ‘নামের তিনভাগের দু’- ভাগই যখন রোগা, তখন এটাই স্বাভাবিক, যদিও সচরাচর এটা হয় না।’ এখানে অবিশ্যি নাম বলতে লালমোহনবাবু ‘দারোগা’ বোঝাতে চেয়েছিলেন।

    দেখলাম ফেলুদার নাম যথেষ্ট জানা আছে ভদ্রলোকের।

    ‘আপনি ত খড়গপুরের সেই জোড়া খুনের রহস্যটা সমাধান করেছিলেন, তাই না? সেভেনটি এইটে?’

    যমজ ভাইয়ের একজনকে মারার কথা, কোনো রিস্ক না নিয়ে দুজনকেই খুন করেছিল এক ভাড়াটে গুণ্ডা। ফেলুদার খুব নামডাক হয়েছিল কেসটাতে।

    ফেলুদা বলল, ‘বর্তমান খুনের ব্যাপারটা কী বুঝেছেন?’

    ‘খুনী ত যিনি ভেগেছেন তিনিই,’ বললেন ইনস্পেকটর মণ্ডল। ‘এ বিষয়ে ত কোনো ডাউট নেই, কিন্তু কথাটা হচ্ছে মোটিভ নিয়ে।’

    ‘একটা মহামূল্য জিনিস নিয়ে খুনী ভেগেছেন সেটা জানেন কি?’

    ‘এটা আবার কী ব্যাপার?’

    ‘এটা আবিষ্কারের ব্যাপারে আমার সামান্য অবদান আছে।’

    ‘জিনিসটা কী?’

    ‘একটা ছবি। স্টুডিওতেই ছিল। সেই ছবিটা নেবার সময় বঙ্কিমবাবু গিয়ে পড়লে পরে খুনটা অসম্ভব নয়।’

    ‘তা ত বটেই।’

    ‘আপনি সাংবাদিক ভদ্রলোকটিকে জেরা করেছেন?’

    ‘করেছি বৈ কি। সত্যি বলতে কি, দু’দুটি সম্পূর্ণ অচেনা লোক একই সঙ্গে বাড়িতে এসে রয়েছে এটা খুবই খটকার ব্যাপার। ওঁর ওপরেও যে আমার সন্দেহ পড়েনি তা না, তবে জেরা করে মনে হল লোকটি বেশ স্ট্রেট- ফরওয়ার্ড, কথাবার্তাও পরিষ্কার। তাছাড়া, যে মূর্তিটা মাথায় মেরে খুন করা হয়েছে বলে আমার বিশ্বাস, তাতে স্পষ্ট আঙুলের ছাপ পাওয়া গেছে। তার সঙ্গে এনার আঙুলের ছাপ মেলে না।’

    ‘রুদ্রশেখরবাবুর ট্যাক্সির খোঁজটা করেছেন? ডব্লু বি টি ফোর ওয়ান ডবল টু?’

    ‘বা-বা, আপনার ত খুব মেমারি! —খোঁজ করা হয়েছে বৈকি। পাওয়া গেছে সে ট্যাকসি। রুদ্রশেখরকে এখান থেকে নিয়ে গিয়ে সদর স্ট্রীটে একটা হোটেলে নামায়। সে হোটেলে খোঁজ করে ভদ্রলোককে পাওয়া যায়নি। অন্য হোটেল-গুলোতেও নাম এবং চেহারার বর্ণনা দিয়ে খোঁজ করা হচ্ছে, কিন্তু এখনো কোনো খবর আসেনি। মহামূল্য ছবি যদি নিয়ে থাকে তাহলে ত সেটাকে বিক্রী করতে হবে। সে কাজটা কলকাতায় হবারই সম্ভাবনা বেশি।’

    ‘সে ব্যাপারে পুরোপুরি ভরসা করা যায় বলে মনে হয় না।’

    ‘আপনি বলছেন শহর ছেড়ে চলে যেতে পারে?’

    ‘দেশ ছেড়েও যেতে পারে।’

    ‘বলেন কি!’

    ‘আমার যদ্দূর ধারণা আজই হংকং-এ একটা ফ্লাইট আছে।’

    ‘হংকং! এ যে আন্তর্জাতিক পুলিশের ব্যাপার হয়ে দাঁড়াচ্ছে মশাই। হংকং চলে গেলে আর মহাদেব মণ্ডল কী করতে পারে বলুন!’

    ‘হংকং যে গেছে এমন কোনো কথা নেই। তবে আপনি না পারলেও আমাকে একটা চেষ্টা দেখতেই হবে।’

    ‘আপনি হংকং যাবেন?’ বেশ কিছুটা অবাক হয়েই জিগ্যেস করলেন নবকুমারবাবু।

    ‘আরো দু’একটা অনুসন্ধান করে নিই,’ বলল ফেলুদা, ‘তারপর ডিসাইড করব।’

    ‘যদি যাওয়া স্থির করেন ত আমাকে জানাবেন। ওখানে একটি বাঙালী ব্যবসাদারের সঙ্গে খুব আলাপ আছে আমার। পূর্ণেন্দু পাল। আমার সঙ্গে কলেজে পড়ত। ভারতীয় হ্যান্ডিক্রাফ্‌টসের দোকান আছে। সিন্ধী-পাঞ্জাবীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মন্দ করছে না।’

    ‘বেশ ত। আমি গেলে তাঁর ঠিকানা নিয়ে নেব আপনার কাছে।’

    ‘ঠিকানা কেন? আমি তাকে কেব্‌ল করে জানিয়ে দেব, সে আপনাদের এসে মীট করবে এয়ারপোর্টে। প্রয়োজনে তার ফ্ল্যাটেই থাকতে পারেন আপনারা।’

    ‘ঠিক আছে, ঘুরে আসুন’, ফেলুদাকে উদ্দেশ করে বললেন মিঃ মণ্ডল, ‘যদি পারেন আমার জন্য কিছু বিলিতি ব্লেড নিয়ে আসবেন ত মশাই। আমার দাড়ি বড় কড়া। দিশি ব্লেডে সানায় না।’

    মিঃ মণ্ডল বিদায় নিলেন।

    ‘যাক্‌, তাহলে শেষমেষ আমাদের পাস্‌পোর্টটা কাজে লাগল’, আমরা তিনজনে আমাদের ঘরে গিয়ে বসার পর বললেন লালমোহনবাবু। দু বছর আগে বম্বের প্রেসিডেন্ট হোটেলের একজন আরব বাসিন্দা খুন হয়। ফেলুদার বন্ধু বম্বের ইনস্পেকটর পটবর্ধন মারফৎ কেসটা ফেলুদার হাতে আসে। সেই সূত্রেই আমাদের আবু ধাবি যাবার কথা হয়েছিল। সব ঠিক, পাসপোর্ট-টাসপোর্ট রেডি, এমন সময় খবর আসে খুনী পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।—‘কান ঘেঁষে বেরিয়ে গেল, তপেশ ভাই!’ আক্ষেপ করে বলেছিলেন লালমোহনবাবু। ‘কাঠমাণ্ডু ফরেন কান্ট্রি ঠিকই, কিন্তু পাসপোর্ট দেখিয়ে ফরেনে যাবার একটা আলাদা ইয়ে আছে।’

    সেই ইয়েটা এবার হলেও হতে পারে।

    লালমোহনবাবু হংকং-এর ক্রাইম রেট সম্বন্ধে কী একটা মন্তব্য করতে যাচ্ছিলেন, এমন সময় দরজার বাইরে একটা মৃদু কাশির শব্দ পেলাম।

    ‘আসতে পারি?’

    সাংবাদিক রবীন চৌধুরীর গলা।

    ফেলুদা ‘আসুন’ বলাতে ভদ্রলোক ঘরে ঢুকে এলেন। আমার আবার মনে হল এঁকে যেন আগে দেখেছি, কিন্তু কোথায় সেটা বুঝতে পারলাম না।

    ফেলুদা চেয়ার এগিয়ে দিলেন ভদ্রলোকের দিকে।

    ‘আপনি শুনলাম ডিটেকটিভ?’ বসে বললেন ভদ্রলোক।

    ‘আজ্ঞে হ্যাঁ। সেটাই আমার পেশা।’

    ‘জীবনী লেখার কাজটাও অনেক সময় প্রায় গোয়েন্দাগিরির চেহারা নেয়। এক-একটা নতুন তথ্য এক-একটা ক্লু-এর মতো নতুন দিক খুলে দেয়।’

    ‘আপনি চন্দ্রশেখর সম্বন্ধে নতুন কোনো তথ্য পেলেন নাকি?’

    ‘স্টুডিও থেকে চন্দ্রশেখরের দুটো বাক্স আমি আমার ঘরে নিয়ে এসেছিলাম। তাতে বেশির ভাগই চিঠি, দলিল, ক্যাশমেমো, ক্যাটালগ ইত্যাদি, কিন্তু সেই সঙ্গে কিছু খবরের কাগজের কাটিং-ও ছিল। তার মধ্যে একটা খুবই গুরুত্ব- পূর্ণ। এই দেখুন।’

    ভদ্রলোক পকেট থেকে একটা খবরের কাগজের টুকরো বার করে ফেলুদার দিকে এগিয়ে দিলেন। তার একটা অংশ লাল পেনসিল দিয়ে মার্ক করা। তাতে লেখা—

    La moglie Vittoria con in figlio Rajsekhar annuncio con profondo dolore la scomparsa del loro Rudrasekhar Neogi.

    —Roma, Juli 27, 1955

    ‘এ ত দেখছি ইটালিয়ান ভাষা’, বলল ফেলুদা।

    ‘হ্যাঁ, কিন্তু আমি ডিকশনারি দেখে মানে করেছি। এতে বলছে—স্ত্রী ভিত্তোরিয়া ও ছেলে রাজশেখর গভীর দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছে—“লা স্কমপারসা দেল লোরো রুদ্রশেখর নিয়োগী”—অর্থাৎ, দ্য লস্‌ অফ দেয়ার রুদ্রশেখর নিয়োগী।’

    ‘মৃত্যু সংবাদ?’ ভুরু কুঁচকে বলল ফেলুদা।

    ‘রুদ্রশেখর ডেড?’ চোখ কপালে তুলে বললেন জটায়ু।

    ‘তা ত বটেই। এবং তিনি মারা যান ১৯৫৫ সালের সাতাশে জুলাই।’ তার সঙ্গে এটাও জানা যাচ্ছে যে তিনি বিয়ে করেছিলেন, এবং রাজশেখর নামে তাঁর একটি ছেলে হয়েছিল।’

    ‘সর্বনাশ! এ যে বিস্ফোরণ!’ ফেলুদা খাট ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়েছে। ‘আমার নিজেরও সন্দেহ হয়েছিল, কিন্তু এই ভাবে হাতে-নাতে প্রমাণ পাওয়া যাবে সেটা ভাবতে পারিনি। আপনি কবে পেলেন এটা?’

    ‘আজই দুপুরে।’

    ‘ইস্‌—লোকটা সট্‌কে পড়ল। কী মারাত্মক ধাপ্পাবাজী!’

    ‘আমি কিন্তু প্রথম থেকেই সন্দেহ করেছিলাম, কারণ আমি কোনো প্রশ্ন করলে হয় উনি এড়িয়ে যাচ্ছিলেন, না হয় ভুল জবাব দিচ্ছিলেন। শেষে অবিশ্যি প্রশ্ন করা বন্ধই করে দিয়েছিলাম।’

    ‘যাক্‌গে। এই নিয়ে এঁদের এখন কিছু জানিয়ে কোনো লাভ নেই। এখন লোকটাকে ধরা নিয়ে কথা। তারপর অবিশ্যি শাস্তি যেটা দরকার সেটা হবে। আপনি সত্যিই গোয়েন্দার কাজ করেছেন। অনেক ধন্যবাদ।’

    রবীনবাবু চলে গেলেন। আমাদের অনেক উপকার করে গেলেন ঠিকই, কিন্তু তাও ওঁর সম্বন্ধে খট্‌কা লাগছে কেন?

    ওঁর সার্টের এক পাশে রক্তের দাগ কেন?

    ফেলুদাকে বললাম।

    লালমোহনবাবুও দেখেছেন দাগটা, এবং বললেন, ‘হাইলি সাস্‌পিশাস।’

    ফেলুদা শুধু গম্ভীরভাবে একটা কথাই বলল, ‘দেখেছি।’

    *

    আমরা সন্ধে সাতটায় বৈকুণ্ঠপুর থেকে বেরিয়ে পড়লাম। রওনা দেবার ঠিক আগে নবকুমারবাবু আমাদের সঙ্গে দেখা করতে এসে একটা অপ্রত্যাশিত ব্যাপার করলেন। ফেলুদার হাতে একটা খাম গুঁজে দিয়ে বললেন, ‘এই নিন মশাই, সামনে আপনাদের অনেক খরচ আছে। এতে কিছু আগাম দিয়ে দিলাম। আমাদেরই হয়ে আপনি তদন্তটা করছেন এ ব্যাপারে আপনার মনে যেন কোনো দ্বিধা না থাকে।’

    ‘অনেক ধন্যবাদ।’

    ‘আর আমি পূর্ণেন্দুকে কাল একটা টেলিগ্রাম করে দেব। আপনি যদি যান তাহলে ফ্লাইট নাম্বার জানিয়ে এই ঠিকানায় ওকে একটা তার করে দেবেন। ব্যস্‌, আর কিচ্ছু ভাবতে হবে না।’

    খামে ছিল পাঁচ হাজার টাকার একটা চেক।

    ‘জাল-রুদ্রশেখরকে খোঁজার কী করবেন?’ ফেরার পথে লালমোহনবাবু জিগ্যেস করলেন।

    ‘ওঁর পাত্তা পাবার আশা কম, যদি বা ভদ্রলোক হংকং গিয়ে থাকেন।’

    ‘গেছে কি না-গেছে সেটা জানছেন কি করে?’

    ‘জানার কোনো উপায় নেই। তাকে দেশের বাইরে যেতে হলে তার নিজের নামে যেতে হবে; তার পাসপোর্টও হবে নিজের নামে। নবকুমারবাবুর বাবাকে যে পাসপোর্ট দেখিয়েছিলেন ভদ্রলোক, সেটা জাল ছিল তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ক্ষীণদৃষ্টি বৃদ্ধের পক্ষে সেটা ধরার কোনো সম্ভাবনা ছিল না। কিন্তু এয়ারপোর্টে ত আর সে ধাপ্পা চলবে না। তার আসল নামটা যখন আমরা জানি না, তখন প্যাসেঞ্জার লিস্ট দেখে কোনো লাভ নেই।’

    ‘তাহলে?’

    ‘একটা ব্যাপার হতে পারে। আমার মনে হয় সেই আর্মেনিয়ান ভদ্রলোকের নাম ঠিকানা নিতে জাল-রুদ্রশেখরকে একবার হীরালাল সোমানির কাছে যেতেই হবে। সোমানি সম্বন্ধে যা শুনলাম, এবং তাকে যতটুকু দেখেছি, তাতে মনে হয় না সে নাম ঠিকানা দেবে। এত বড় দাঁও সে হাতছাড়া করবে না। ছলেবলে কৌশলে সে জাল-রুদ্রশেখরের হাত থেকে ছবিটা আদায় করবে। তারপর সেটা নিয়ে নিজেই হংকং যাবে সাহেবকে দিতে।’

    ‘তাহলে ত সোমানির নাম খুঁজতে হবে প্যাসেঞ্জার লিস্টে।’

    ‘তা ত বটেই। ওটার উপরই ত নির্ভর করছে আমাদের যাওয়া না-যাওয়া।’

    লালমোহনবাবুর চট্‌ করে চোখ কপালে তোলা থেকে বুঝলাম উনি একটা কুইক্‌ প্রার্থনা সেরে নিলেন যাতে হংকং যাওয়া হয়। যদি যাওয়া হয় তাহলে চীনে ভাষা শেখার প্রয়োজন হবে কিনা জিগ্যেস করাতে ফেলুদা বলল, ‘চীনে ভাষায় অক্ষর কটা আছে জানেন?’

    ‘কটা?’

    ‘দশ হাজার। আর আপনার জিভে প্লাস্টিক সার্জারি না করলে চীনে উচ্চারণ বেরোবে না মুখ দিয়ে। বুঝেছেন?’

    ‘বুঝলাম।’

    পরদিন সকালে আপিস খোলার টাইম থেকেই ফেলুদা কাজে লেগে গেল।

    আজকাল শুধু এয়ার ইন্ডিয়া আর থাই এয়ারওয়েজে হংকং যাওয়া যায় কলকাতা থেকে। এয়ার ইন্ডিয়া যায় সপ্তাহে একদিন—মঙ্গলবার, আর থাই এয়ারওয়েজ যায় সপ্তাহে তিনদিন—সোম, বুধ আর শনি—কিন্তু শুধু ব্যাংকক্‌ পর্যন্ত; সেখান থেকে অন্য প্লেন নিতে হয়।

    আজ শনিবার, তাই ফেলুদা প্রথমে থাই এয়ারওয়েজেই ফোন করল।

    পাঁচ মিনিটের মধ্যেই প্যাসেঞ্জার লিস্টের খবর জানা গেল।

    আজই সকালে হীরালাল সোমানি হংকং চলে গেছেন। আমরা সবচেয়ে তাড়াতাড়ি যেতে পারি আগামী মঙ্গলবার, অর্থাৎ তরশু। তার মানে হংকং-এ তিনটে দিন হাতে পেয়ে যাচ্ছে হীরালাল সোমানি।

    সুতরাং ধরে নেওয়া যেতে পারে আমরা যতদিনে পৌঁছাব ততদিনে ছবি সোমানির হাত থেকে সাহেবের হাতে চলে যাবে।

    তাহলে আমাদের গিয়ে কোনো লাভ আছে কি?

    কথাগুলো অবিশ্যি ফেলুদাই বলছিল আমাদের শুনিয়ে শুনিয়ে।

    লালমোহনবাবু কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললেন—

    ‘টিনটোরেটোর ইটালিয়ান উচ্চারণটা কী মশাই?’

    ‘তিনতোরেত্তো’, বলল ফেলুদা।

    ‘নামের গোড়াতেই যখন তিন, আর আমি যখন আছি আপনাদের সঙ্গে, তখন মিশন সাক্‌সেসফুল না হয়ে যায় না।’

    ‘যাবার ইচ্ছেটা আমারও ছিল পুরোমাত্রায়’, বলল ফেলুদা, ‘কিন্তু যাবার এত বড় একটা জাস্টিফিকেশন খুঁজে পাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব হত না।’

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleগোরস্থানে সাবধান! – সত্যজিৎ রায়
    Next Article শঙ্কু একাই ১০০ – সত্যজিৎ রায়

    Related Articles

    উপন্যাস কল্লোল লাহিড়ী

    ইন্দুবালা ভাতের হোটেল – কল্লোল লাহিড়ী

    May 28, 2025
    উপন্যাস বুদ্ধদেব গুহ

    কোয়েলের কাছে – বুদ্ধদেব গুহ

    May 23, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    রবার্টসনের রুবি – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    বোম্বাইয়ের বোম্বেটে – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    রয়েল বেঙ্গল রহস্য – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    উপন্যাস সত্যজিৎ রায়

    যত কাণ্ড কাঠমাণ্ডুতে – সত্যজিৎ রায়

    April 3, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo

    Your Bookmarks


    Reading History

    Most Popular

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025

    দোকানির বউ

    January 5, 2025

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025
    Our Picks

    ঘনাদা সমগ্র ৩ – প্রেমেন্দ্র মিত্র

    September 24, 2025

    মহাস্থবির জাতক – প্রেমাঙ্কুর আতর্থী

    September 24, 2025

    হিউয়েন সাঙের দেখা ভারত – প্রেমময় দাশগুপ্ত

    September 24, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    • Login
    • Sign Up
    Forgot Password?
    Lost your password? Please enter your username or email address. You will receive a link to create a new password via email.
    body::-webkit-scrollbar { width: 7px; } body::-webkit-scrollbar-track { border-radius: 10px; background: #f0f0f0; } body::-webkit-scrollbar-thumb { border-radius: 50px; background: #dfdbdb }