Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    সমগ্র কিশোর সাহিত্য – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়

    September 2, 2025

    ছোটগল্প – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়

    September 2, 2025

    টেনিদা সমগ্র – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়

    September 2, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    টেনিদা সমগ্র – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়

    নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় এক পাতা গল্প790 Mins Read0

    ৫. ঝাউ-বাংলোয়

    ঝাউ-বাংলোয়

    আমরা কজনে হাঁ করে সেই ছুঁচোবাজির নাচ দেখলাম। তারপর ঝোপের মধ্যে ঢুকে যখন সেটা ফুস করে নিবে গেল তখনও কারও মুখে একটা কথা নেই। পার্কটা তখন ফাঁকা, ঘন শাদা কুয়াশায় চারদিক ঢাকা পড়ে গেছে, আশেপাশে যে আলোগুলো জ্বলে উঠেছিল, তারাও সেই কুয়াশার মধ্যে ড়ুব মেরেছে। আর আমরা চারজন যেন কোনও রোমাঞ্চকর গোয়েন্দা কাহিনীর মধ্যে বসে আছি।

    টেনিদাই কথা কইল প্রথম।

    —হাঁ রে, এটা কী হল বল দিকি?

    হাবুল একটা চীনেবাদাম মুখে দিয়ে গিলতে গিয়ে বিষম খেল। খানিকক্ষণ খকখক করে কেশে নিয়ে বললে–এইটা আর বুঝতে পারলা না? সেই কদম্ব পাকড়াশি আমাগো পিছে লাগছে।

    আমি বললুম—হয়তো বা কাগামাছি নিজেই এসে ছুঁড়ে দিয়েছে ওটা।

    টেনিদা বলল–ধুত্তোর, এ তো মহা ঝামেলায় পড়া গেল! কোথায় গরমের ছুটিতে দিব্যি কদিন দার্জিলিঙে ঘুরে যাব, কোত্থেকে সেই মিচকেপটাশ লোকটা এসে হাজির হল। তারপর আবার সবুজদেড়ে সাতকড়ি সাঁতরা কী এক জাপানী বৈজ্ঞানিক কাগামাছি না বগাহাঁছি ভালো লাগে এসব?

    হাবুল দুঃখ করে বললে– বুঝলা না, আমাগো বরাতই খারাপ। সেইবারে ঝণ্টিপাহাড়িতে বেড়াইতে গেলাম—কোঙ্কিা এক বিকট ঘুটঘুটানন্দ জুটল।

    ক্যাবলা বললে–তাতে ক্ষেতিটা কী হয়েছিল শুনি? ওদের দলটাকে ধরিয়ে দিয়ে সবাই একটা করে সোনার মেডেল পাওনি?

    টেনিদা মুখটাকে আলুকাবলির মতো করে বললে, আরে রেখে দে তোর সোনার মেডেল। ঘুটঘুটানন্দ তবু বাঙালী, যাহোক একটা কায়দা করা গিয়েছিল। আমি ডিটেকটিভ বইতে পড়েছি, এ-সব জাপানীরা খুব ডেঞ্জারাস হয়।

    হাবুল মাথা নেড়ে বললে, হ-হ, আমিও পড়ছি সেই সব বই। আমাগো ধইরা-ধইরা পুটুত-পুটুত কইরা এক একখান ইনজেকশন দিব, আর আমরা ভাউয়া ব্যাঙের মতো চিতপটান হইয়া পইড়া থাকুম। তখন আমাগো মাথার খুলি ফুটা কইর‍্যা তার মইধ্যে বান্দরের ঘিলু ঢুকাইয়া দিব।

    আমি বললুম—আর তক্ষুনি আমাদের একটা করে ল্যাজ বেরুবে, আমরা লাফ দিয়ে গাছে উঠে পড়ব, তারপর কিচমিচ করে কচিপাতা খেয়ে বেড়াব। আর আমাদের টেনিদা—

    হাবুল বলল—পালের গোদা হইব। যারে কয় গোদা বান্দর।

    ধাঁই করে টেনিদা একটা গাঁট্টা বসিয়ে দিলে হাবুলের চাঁদির ওপর। দাঁত খিঁচিয়ে বললে–গুরুজনের সঙ্গে ইয়ার্কি? আমি মরছি নিজের জ্বালায় আর এগুলো সব তখন থেকে ফাজলামো করছে। অ্যাঁই—ভাউয়া ব্যাঙ মানে কী রে?

    হাবুল বললে–ভাউয়া ব্যাঙ! ভাউয়া ব্যাঙেরে কয় ভাউয়া ব্যাঙ।

    ক্যাবলা বিরক্ত হয়ে বলল—আরে ভেইয়া আব উস বাতচিত ছোড় দো, লেকিন টেনিদা, আমার একটা সন্দেহ হচ্ছে।

    –কী সন্দেহ শুনি?

    —আমার মনে হল, ওই বুড়োটাই ছুঁচোবাজি ছেড়েছে।

    আমরা তিনজনে একসঙ্গে চমকে উঠলাম।

    —সে কী!

    —আমার যেন তাই মনে হল। বুড়ো ওঠবার আগে নিজের পকেটটা হাতড়াচ্ছিল, একটা দেশলাইয়ের খড়খড়ানিও যেন শুনেছিলুম।

    আমি বললুম—তবে বোধহয় ওই বুড়োটাই—

    হাবুল ফস করে আমার কথাটা কেড়ে নিয়ে বললে– কাগামাছি।

    টেনিদা মুখটাকে ডিমভাজার মতো করে নিয়ে বললে–তোদের মুণ্ডু। ও নিজেই যদি কাগামাছি হবে, তা হলে কাগামাছির নামে ভয় পাবে কেন? আর আমাদের ঝাউ বাংলোয় যেতে নেমন্তন্নই বা করবে কেন?

    হাবুল আবার টিকটিক করে উঠল—প্যাটে ইনজেকশন দিয়া দিয়া ভাউয়া ব্যাঙ বানাইয়া দিব, সেইজন্য।

    —ফের ভাউয়া ব্যাঙ! টেনিদা আবার হুঙ্কার ছাড়ল—যদি ভাউয়া ব্যাঙ-এর মানে বলতে না পারিস

    —ভাউয়া ব্যাঙ-এর মানে হইল গিয়া ভাউয়া ব্যাঙ।

    টেনিদা একটা লম্বা হাত বাড়িয়ে হাবুলের কান পাকড়াতে যাচ্ছিল, হাবুল তিড়িং করে লাফিয়ে সরে গেল-ভাউয়া ব্যাঙ-এর মতই লাফাল খুব সম্ভব। আর ক্যাবলা দারুণ বিরক্ত হল।

    —তোমরা কি বসে বসে সমানে বাজে কথাই বলবে নাকি? ঝাউবাংলোতে যাবার ব্যবস্থা করতে হবে না?

    টেনিদা দমে গেল।

    —যেতেই হবে?

    ক্যাবলা বললে–যেতেই হবে। কদম্ব পাকড়াশি দুনম্বর চকোলেট পাঠিয়ে ভিতু বলে ঠাট্টা করে গেল, ছুঁচোবাজি ছেড়ে আমাদের চ্যালেঞ্জ করলে, সেগুলো বেমালুম হজম করে চলে যাব? আমাদের পটলডাঙার প্রেটিজ নেই একটা?

    আমি আর হাবুল বললুম—আলবাত!

    —ওঠো তা হলে। বজ্ৰবাহাদুরের গাড়িটাই ঠিক করে আসি। কাল ভোরেই তো বেরুতে হবে।

     

    সত্যি কথা বলতে কী, আমি ভালো করে ঘুমুতে পারলুম না। রাত্তিরে মাংসটা একটু বেশিই খাওয়া হয়ে গিয়েছিল। অনেকক্ষণ ধরে শরীরটা হাঁইফাই করতে লাগল। তারপর স্বপ্ন দেখলুম, একটা মস্ত কালো দাঁড়কাক আমার মাথার কাছে বসে টপটপ করে মাছি খাচ্ছে, একটা একটা করে ঠোক্কর দিচ্ছে আমার চাঁদিতে। আর ফ্যাকফ্যাক করে বুড়ো মানুষের মতো বলছে যাও না একবার নীলপাহাড়ি, তারপর কী হাঁড়ির হাল করি দেখে নিয়ো।

    আঁকপাঁক করে জেগে উঠে দেখি, পুরো বত্রিশটা দাঁত বের করে হাবুল সেন দাঁড়িয়ে। তার হাতে একটা সন্দেহজনক পেনসিল। তখন আমার মনে হল, দাঁড়কাক নয়, হাবুলই পেনসিল দিয়ে আমার মাথায় ঠোকর দিচ্ছিল।

    বললুম—এই হাবলা কী হচ্ছে?

    হাবুল বললে–চায়ের ঘণ্টা পইড়া গেছে। রওনা হইতে হইব না নীল-পাহাড়িতে? তরে জাগাইতে আছিলাম।

    —তাই বলে মাথায় পেনসিল দিয়ে ঠুকবি?

    হাবুলের বত্রিশটা দাঁত চিকচিক করে উঠল—বোঝস নাই, একসপেরিমেন্ট করতাছিলাম।

    —আমার মাথা নিয়ে তোর কিসের এক্সপেরিমেন্ট শুনি?

    —দেখতাছিলাম, কয় পার্সেন্ট গোবর আর কয় পার্সেন্ট ঘিলু।

    কী ধড়িবাজ, দেখেছ একবার। আমি দারুণ চটে বললুম—তার চাইতে নিজের মাথাটাই বরং ভালো করে বাজিয়ে নে। দেখবি গোবর—সেন্ট পার্সেন্ট।

    –চ্যাতস ক্যান? চা খাইয়া মাথা ঠাণ্ডা করবি, চল।

    টেনিদা আর ক্যাবলা আগেই চায়ের টেবিলে গিয়ে জুটেছিল, আমি গেলুম হাবুলের সঙ্গে। চা শেষ না হতেই খবর এল, বজ্ৰবাহাদুর তার গাড়ি নিয়ে হাজির।

    ক্যাবলা বললে–নে, ওঠ ওঠ। আর গোরুর মতো বসে বসে টোস্ট চিবতে হবে না।

    —নিজেরা তো দিব্যি খেলে, আর আমার বেলাতেই —

    –আটটা পর্যন্ত ঘুমুতে কে বলেছিল, শুনি?—টেনিদা হুঙ্কার ছাড়ল।

    কথা বাড়িয়ে লাভ নেই, ওরাই দলে ভারি। টোস্টটা হাতে নিয়েই উঠে পড়লুম। সন্দেশ দুটোও ছাড়িনি, ভরে নিলুম জামার পকেটে। যাচ্ছি সেই নীলপাহাড়ির রহস্যময় ঝাউ-বাংলোয়, বরাতে কী আছে কে জানে। যদি বেঘোরে মারাই যেতে হয়, তাহলে মরবার আগে অন্তত সন্দেশ দুটো খেয়ে নিতে পারব।

     

    শেষ পর্যন্ত আমরা আমাদের দুর্দান্ত অ্যাঁডভেঞ্চারে বেরিয়ে পড়লুম। আরও আধঘণ্টা পরেই।

    দার্জিলিং রেল স্টেশনের পাশ থেকে আমাদের গাড়িটা ছাড়তেই টেনিদা হাঁক ছাড়ল—পটলডাঙা–

    আমরা তিনজন তক্ষুনি শেয়ালের মতো কোরাসে বললুম—জিন্দাবাদ।

    বজ্ৰবাহাদুর স্টিয়ারিং থেকে মুখ ফেরাল। তারপর তেমনি পরিষ্কার বাংলায় জিজ্ঞেস করল—কী জিন্দাবাদ বললেন?

    চারজনে একসঙ্গে জবাব দিলুম—পটলডাঙা।

    –সে আবার কী?

    লোকটা কী গেঁয়ো, আমাদের পটলডাঙার নাম পর্যন্ত শোনেনি। আর সেখানকার বিখ্যাত চারমূর্তি যে তার গাড়িতে চেপে একটা লোমহর্ষক অ্যাঁডভেঞ্চারে চলেছি, তা-ও বুঝতে পারছে না।

    টেনিদা মুখটাকে স্রেফ গাজরের হালুয়ার মতো করে বললে–পটলডাঙা আমাদের মাদারল্যান্ড।

    হাবুল বললে–উঁহু, ঠিক কইলা না। মাদারপাড়া।

    —ওই হল, মাদারপাড়া। যাকে বলে—

    ক্যাবলা বললে–ডি-লা গ্রান্ডি মেফিস্টোফিলিস।

    বজ্ৰবাহাদুর কিছুক্ষণ হাঁ করে চেয়ে রইল, কী বুঝল সে-ই জানে। তারপর নিজের মনে কী একবার বিড়বিড় করে বলে গাড়ি চালাতে লাগল।

    আমরাও মন দিয়ে প্রকৃতির শোভা দেখতে লাগলুম বসে বসে। পাহাড়ের বুকের ভেতর দিয়ে বাঁকে বাঁকে পথ চলেছে, কখনও চড়াই, কখনও উতরাই। কত গাছ, কত ফুল, কোথাও চা বাগান, কোথাও দুধের ফেনার মতো শাদা শাদা ঝরনা পথের তলা দিয়ে নীচেকুয়াশাঢাকা খাদের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। ঘুম বাঁ-দিকে রেখে পেশক রোড ধরে আমরা তিস্তার দিকে এগিয়ে চলেছি।

    আমার গলায় আবার গান আসছিল—এমন শুভ্র নদী কাহার, কোথায় এমন ধূম্র পাহাড়—কিন্তু বজ্ৰবাহাদূরের কথা ভেবেই সেই আকুল আবেগটা আমাকে ঠেকিয়ে রাখতে হল। একেই লোকটার মেজাজ চড়া তার ওপর ডি-লা গ্রান্ডি মেফিস্টোফিলিস শুনেই চটে রয়েছে। ওকে আর ঘাঁটানোটা ঠিক হবে না। পুবং-এর ঘি-দুধ খাওয়াবে বলেছে, তা ছাড়া গাড়ি তো ওরই হাতে। আমার গানের সুরে খেপে গিয়ে যদি একটু বাঁ দিকে গাড়িটা নামিয়ে দেয়, তা হলেই আর দেখতে হবে না। হাজার ফুট খাদ হা-হা করছে সেখানে।

    হঠাৎ ক্যাবলা বললে–আচ্ছা টেনিদা?

    —হুঁ।

    —যদি গিয়ে দেখি সবটাই বোগাস?

    –তার মানে?

    মানে, ঝাউবাংলোয় সাতকড়ি সাঁতরা বলে কেউ নেই? ওই সবুজ দাড়িওয়ালা লোকটা আমাদের ঠকিয়েছে? রসিকতা করেছে আমাদের সঙ্গে!

    টেনিদার সে-জন্য কোনও দুশ্চিন্তা দেখা গেল না। বরং খুশি হয়ে বললে–তা হলে তো বেঁচেই যাই। হাড়-হাবাতে কাগামাছির পাল্লায় আর পড়তে হয় না।

    হাবুল বললে–কষ্টডাই সার হই।

    –কষ্ট আবার, কিসের? বজ্ৰবাহাদুরের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে টেনিদা বললে–পুবং-এর ছানা তা হলে আছে কী করতে?

    গাড়িটা এবার ডানদিকে বাঁক নিলে। পথের দুধারে চলল সারবাঁধা পাইনের বন, টাইগার ফার্নের বন ঝোপ, থরে থরে শানাই ফুল। রাস্তাটা সরু-ছায়ায় অন্ধকার, রাশি রাশি প্রজাপতি উড়ছে। অত প্রজাপতি একসঙ্গে আমি কখনও দেখিনি। দার্জিলিং থেকে অন্তত মাইল বারো চলে এসেছি বলে মনে হল।

    বজ্ৰবাহাদুর মুখ ফিরিয়ে বলল–নীলপাহাড়ি এরিয়ায় এসে গেছি আমরা।

    নীলপাহাড়ি! আমরা চারজনেই নড়ে উঠলুম।

    ঠিক তক্ষুনি ক্যাবলা বললে–টেনিদা, দেখেছ? ওই পাথরটার গায়ে খড়ি দিয়ে কী লেখা আছে?

    গলা বাড়িয়ে আমরা দেখতে পেলুম, বড় বড় বাংলা হরফে লেখা : ছুঁচোবাজি।

    সঙ্গে সঙ্গেই আর একটা পাথরের দিকে আমার চোখ পড়ল। তাতে লেখা : কুণ্ডুমশাই।

    হাবুল চেঁচিয়ে উঠল—আরে, এইখানে আবার লেইখ্যা রাখছে : হঁড়িচাঁচা।

    টেনিদা বললে– ড্রাইভার সায়েব, গাড়ি থামান। শিগগির।

    বজ্ৰবাহাদুর কটমট করে তাকাল—আমি ড্রাইভার নই, মালিক।

    –আচ্ছা, আচ্ছা, তা-ই হল। থামান একটু।

    –থামাচ্ছি। বলে তক্ষুনি থামাল না বভ্রুবাহাদুর। গাড়িটাকে আর-এক পাক ঘুরিয়ে নিয়ে ব্রেক কষল। তারপর বললে–নামুন। এই তো ঝাউ-বাংলা।

    আমরা অবাক হয়ে দেখলুম, পাশেই একটা ছোট টিলার মতো উঁচু জায়গা। পাথরের অনেকগুলো সিঁড়ি উঠেছে সেইটে বেয়ে। আর সিঁড়িগুলো যেখানে শেষ হয়েছে সেখানে পাইন আর ফুলবাগানে ঘেরা চমৎকার একটি বাংলো। ছবির বইতে বিলিতি ঘরদোরের চেহারা যেমন দেখা যায়, ঠিক সেই রকম। চোখ যেন জুড়িয়ে গেল।

    আমরা আরও দেখলুম, চোখে নীল গগ, বাঁদুরে টুপিতে মাথা মুখ ঢাকা, গায়ে ওভারকোট আর হাতে একটা লাঠি নিয়ে সেখানে দাঁড়িয়ে আছেন সাতকড়ি সাঁতরা।

    বাঁদুরে টুপির ভেতর থেকে ভরাট মোটা গলার ডাক এল—এসো এসো! খোকারা, এসো! আমি তোমাদের জন্যে সেই কখন থেকে অপেক্ষা করে আছি।

    আর সেই সময় একটা দমকা হাওয়া উঠল, কী একটা কোত্থেকে খরখর করে আমার মুখে এসে পড়ল। আমি থাবা দিয়ে পাকড়ে নিয়ে দেখলুম, সেটা আর কিছুই নয়-চকোলেটের মোক।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81 82 83 84 85 86 87 88 89 90 91 92 93 94 95 96 97 98 99 100 101 102 103
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleফাউণ্ডেশন অ্যাণ্ড এম্পায়ার – আইজাক আসিমভ
    Next Article ছোটগল্প – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়

    Related Articles

    নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়

    সমগ্র কিশোর সাহিত্য – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়

    September 2, 2025
    নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়

    ছোটগল্প – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়

    September 2, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    সমগ্র কিশোর সাহিত্য – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়

    September 2, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    সমগ্র কিশোর সাহিত্য – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়

    September 2, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    সমগ্র কিশোর সাহিত্য – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়

    September 2, 2025

    ছোটগল্প – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়

    September 2, 2025

    টেনিদা সমগ্র – নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়

    September 2, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.