Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    ডিজিটাল ফরট্রেস – ড্যান ব্রাউন

    ড্যান ব্রাউন এক পাতা গল্প381 Mins Read0

    ০৯০. ক্রিপ্টোর সাইরেন

    অধ্যায় : ৯০

    ক্রিপ্টোর সাইরেন এখনো জ্বলছে। স্ট্র্যাথমোরের কোন ধারণা নেই কতক্ষণ আগে বেরিয়ে গেছে সুসান। ট্রান্সলেটার যেন তাকে অভিশাপ দিচ্ছে এই অন্ধকারেও।

    সেইসাথে বলে চলেছে, তুমি বেঁচে গেছ… বেঁচে গেছ তুমি…

    হ্যাঁ, বেঁচে গেছি আমি। কিন্তু সম্মানহীনতায় বেঁচে থেকে কী লাভ?

    এবং সম্মানহানির সম্ভাবনাই প্রকট। সে ডিরেক্টরের কাছ থেকে লুকিয়ে রেখেছে তথ্য। দেশের প্রধান ডাটাব্যাঙ্কে ঢুকিয়ে দিয়েছে একটা ভাইরাস। এখন, সারা জীবন দেশপ্রেমিকের মত কাজ করে শেষ বেলায় দুর্নাম নিয়ে নেমে যেতে সায় দেয় না মন।

    আমি বেঁচে গেছি… ভাবে সে।

    তুমি একটা মিথ্যুক… মনেরই আরেক অংশ জানান দেয় সাথে সাথে।

    কথা সত্যি। সে মিথ্যাবাদী। অনেকের সাথেই সে সততা ঠিক রাখেনি। সুসান ফ্লেচার তাদের একজন। অনেক ব্যাপারেই জানায়নি সে। কিন্তু সেসব নিয়ে অকল্পনীয় লজ্জায় নুয়ে পড়ছে এখন।

    অনেক অনেক বছর ধরে স্ট্র্যাথমোরের স্বপ্নে শয়নে সুসান ফ্লেচারের নাম। অনেক দিন ধরে সে সুসানের জন্য ঘুমের মধ্যেই কেঁদে উঠেছে। সে কথা কাউকে জানানো যায় না। জানানো যায়নি। আর কোন মেয়ের মধ্যে বুদ্ধিমত্তা আর গুণের এমন সমাহার দেখেনি সে কোনদিন।

    তার স্ত্রী অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু সুসানকে দেখে হাল ছেড়ে দিতে দেরি করেনি। বেভ স্ট্র্যাথমোর কখনোই স্বামীকে দোষারোপ করত না। ব্যথাটাকে ভিতরে রাখার চেষ্টা করত সে। কিন্তু আজকাল ব্যাপারটা সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। জানিয়েছে সে, বিবাহিত জীবনের ইতি এখানেই। অন্য কোন মহিলার ছায়ায় বাকি জীবন কাটানোর কোন মানে হয় না।

    আস্তে আস্তে সাইরেনের শব্দ স্ট্র্যাথমোরকে টেনে তোলে কল্পনার ভুবন থেকে। পথ খুজছে তার মন। একটা মাত্র পথ বাকি। একটা মাত্র বিকল্প।

    কি বোর্ডে চোখ রেখে স্ট্র্যাথমোর টাইপ করতে লাগল। মনিটরটা ঘুরিয়ে লেখা পরখ করার মত ধৈর্য নেই তার। আঙুল চলছে ধীর গতিতে। সুস্পষ্টভাবে।

    প্রিয়তম বন্ধুরা, আমি আজ আমার জীবন নিয়ে নিচ্ছি…

    এভাবেই কোন প্রশ্ন উঠবে না। কেউ তাকে দোষ দিবে না। সে এ পৃথিবীর কোন জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়বে না। মনের কথাগুলো আর বেরিয়ে পড়বে না কিছুতেই। হয়ত মারা যাবে… কিন্তু আর কোন প্রাণ নেয়ার মানে হয় না।

    অধ্যায় : ৯১

    ক্যাথেড্রালে সব সময় অন্ধকার রাত নেমে থাকে। উপরে অনেক উঁচুতে ছাদ, চারপাশে অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত গ্রানাইটের দেয়াল। জায়গাটাকে আলোকিত করার মত বাতি পাওয়া সহজ কথা নয়। একটা মাত্র কাঁচ আছে। উপর থেকে আলো টেনে আনছে লাল আর নীলে।

    ইউরোপের আর সব বড় বড় প্রাচীন ক্যাথেড্রালের মত সেভিল ক্যাথেড্রালও ক্রসের আকারে বানানো। ডানে আর বামে কনফেশনাল, স্যাংচুয়ারি আর বাড়তি সিট।

    একটা রশি দিয়ে ভিতর থেকে বাজানোহচ্ছে ঘন্টাটা। গম্ভীর আওয়াজ পাক্কা খায় দেয়ালে দেয়ালে। বেকারের ধন্যবাদ জানানোর মত অনেক ব্যাপার আছে। এখনো শ্বাস নিচ্ছে সে। এখনো বেঁচে আছে। সত্যি এ অলৌকিক ব্যাপার।

    প্রিস্ট ওপেনিং প্রেয়ারের জন্য তৈরি হচ্ছে। আশপাশ পরীক্ষা করে নিল বেকার। শার্টে লাল ছোপ আছে। থাকারই কথা। রক্ত পড়ছে না তাতেই বাঁচোয়া। খুব বড় কোন চোট লাগেনি, ধারণা করে সে।

    পিছনে সশব্দে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দরজা। জানে বেকার, সে ফাঁদে পড়ে গেছে, যদি ফলো করা হয়ে থাকে। আগের দিনের স্প্যানিশ চার্চগুলোকে বানানো হয়েছিল দুর্গের মত করে। মুরিশ মুসলিমদের হাত থেকে রক্ষার এক একটা কেল্লা হিসাবে। সেখানে একাধিক দরজা নেই।

    বাইশ ফুটি দরজাটা বন্ধ হয়ে গেল। বেকার বন্ধ হয়ে আছে ঈশ্বরের ঘরে। চোখ বন্ধ করল সে। মাথা গুঁজে থাকল পিউতে। পুরো ভবনে সেই একমাত্র মানুষ যার কালো পোশাক নেই।

    কোথাও কণ্ঠ উচ্চকিত হল।

    .

    চার্চের পিছনে একটা গড়ন পাশ দিয়ে আস্তে আস্তে সামনে আসছে। দরজাটা বন্ধ হয়ে যাবার আগ মুহূর্তে তড়িঘড়ি করে একটা ছায়ামূর্তি ঢুকে পড়েছিল। ছায়ায় ছায়ায় এগিয়ে আসছে সে। নিজের প্রতি একটা বাকা হাসি উপহার দিল সে। শিকারটা মজাদার হবে। বেকার এখানেই আছে… আমি অনুভব করছি তাকে। আস্তে আস্তে এগিয়ে যাচ্ছে সে একটা একটা করে বেঞ্চি। মরার জন্য ভাল জায়গা। ভাবে সে। আমিও যেন এমন কোথাও মারা যাই।

    .

    ঠান্ডা মেঝেতে হাটু ঠেকিয়ে বেকার নেমে আসে আরো নিচে। মাথা আরো নিচু করা। পাশের লোকটা বিরহয়ে তাকাচ্ছে। ঈশ্বরের ঘরে এমন বিচিত্র কাজ করা কি ঠিক?

    এনফার্মো। ক্ষমা চাইল বেকার, অসুস্থ।

    বেকার জানে, নিচু হয়ে থাকতে হবে। পাশের বেঞ্চিতে একটা পরিচিত নড়াচড়া টের পেল সে। এই সে লোক। চলে এসেছে এখানেও।

    জানে সে, খাকি কোটটা একেবারে স্পষ্ট দেখা যাবে কালোর রাজ্যে। চুলে ফেললেও রক্ষা নেই। সাদা অক্সফোর্ড শার্ট আরো প্রকট করে তুলবে ব্যাপারটা।

    পাশের লোকটা তাকাল তার দিকে, ট্যুরিস্টা! আমি কি কোন ডাক্তার যেকে আনব?

    নো। গ্রাসিয়াস। এস্টো বিয়েন।

    লোকটা চোখ কটমট করে তাকাল, তাহলে উঠে বসুন!

    প্রোটোস্ট্যান্টরা বলে বেড়ায় ক্যাথলিকরা লম্বা কাজে বেশি আগ্রহী। কথাটা যেন সত্যি হয়। কতক্ষণ চলবে অনুষ্ঠান শেষ হলেই উঠে দাঁড়াতে হবে, আর সবাইকে বের হতে দিতে হবে। খাকিতে সে শেষ!

    হাইম গাওয়া হচ্ছে এখন চার্চে। বুড়ো লোকটা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। পা নামিয়ে রাখতে রাখতে ব্যথা ধরে গেছে। ধৈর্য ধর… বলল সে নিজেকেই, ধৈর্য ধর!

    পায়ের ধাক্কা খেয়ে চোখ তুলল বেকার। পুরোদস্তুর লাথি বলা যায় সেটাকে। ছুচোমুখো এক লোক চ্ছিয়ে আছে।

    সে চলে যেতে চাচ্ছে? দাঁড়াতে হবে আমাকে!

    ইশারা করণ সে ডিঙিয়ে যেতে। লোকটা রাগে ব্লেজারের কোণা ধরে একটা কাকি দিল। দেখল বেকার, পাশ থেকে অন্যেরাও উঠে গেছে। সারির অন্য সবাই অপেক্ষা করছে তার উঠে যাবার জন্য।

    শেষ! কী করে সম্ভব! এইমাত্র শুরু হল ব্যাপারটা!

    তারপর সব স্পষ্ট হয়ে গেল।

    স্প্যানিয়ার্ডরা আগে কম্যুনিয়ন করে!

    অধ্যায় : ৯২

    সাবলেভেলে নেমে যাচ্ছে সুসান। মাথার উপর দু সেকেন্ড সময় নিয়ে নিয়ে জ্বলছে ওয়ার্নিং লাইট। চারপাশে থিকথিকে ধোয়া, বাষ্প। বাষ্প উঠছে ট্রান্সলেটারের গায়ের সবদিক থেকে। পায়ের তলা পিচ্ছিল। তিনতলা নিচে কোথাও সার্কিট ব্রেকারটা আছে।

    উপরে বেরেটা হাতে নিয়ে নিয়েছে স্ট্র্যাথমোর। মেসেজ লেখা হয়ে গেছে। এখন শুয়ে পড়ার পালা। যেখানে দাঁড়িয়ে ছিল সে, শুয়ে পড়ল। শুয়ে চিন্তা করছে সে, কাজটা কাপুরুষের মত হয়ে যাচ্ছে। সব কথা মনে পড়ল ভাব। স্পেনের কথা, ডিজিটাল ফোট্রেসের কথা, পরিকল্পনার কথা- স্য।

    অনেক বেশি মিথ্যা বলে ফেলেছে সে। এটাই বাঁচার একমাত্র পথ… লজ্জার হাত থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখার একমাত্র পথ। অস্ত্রটাকে ধীরে তাক করে সে দিকে। তারপর টেনে দেয় ট্রিগার।

    গুলির শব্দ শুনতে পায় সুসান মাত্র দু ধাপ নামার পরই। ভিতরের গুমগুমে আওয়াজে ঢাকা পড়ে যায় শব্দটা। তবু সুসান কখনো টিভি ছাড়া কোথাও গুলির শব্দ না শুনলেও ঠিক ঠিক বুঝে ফেলে ব্যাপারটা।

    মুহূর্তে পুরো ব্যাপারটা স্পষ্ট হয়ে যায় তার চোখে। কমান্ডারের স্বপ্ন আর স্বপ্নভঙ্গের সাথে ডাটাব্যাঙ্কের দুঃস্বপ্নের জন্ম- কমান্ডার! নো!

    থমকে গেছে মন। এখন কী করতে হবে? সামনে চলতে হবে। কিন্তু পা চলছে না।

    কমান্ডার!

    এক মুহূর্ত পর টের পায় সে, সিঁড়ি ভেঙে উঠে যাচ্ছে উপরে। কী বিপদ থাকতে পারে, তা ভাবছে না মোটেও।

    গনগনে নরক থেকে উঠে এল যেন লে। ক্রিপ্টো ফ্লোর এখনো অন্ধকার।

    সুসান নিজেকে অভিশাপ দেয় বোরেটা স্ট্র্যাথমোরের কাছে রেখে যাবার জন্য। সেই করেছে ভুলটা। নাকি বেরেটা রাখা ছিল নড থ্রি তে? তাকায় সে নড থ্রির দিকে। মনিটরের ম্লান আলোয় দেখা যাচ্ছে একেবারে নিথর পড়ে থাকা হেলকে। স্ট্র্যাথমোরের কোন চিহ্ন নেই। আতঙ্কিত হয়ে অফিসের দিকে ছুটল সে।

    তারপর নড় থ্রির কী একটা ব্যাপার বুঝতে না পেরে আবার এগিয়ে গেল হেলের দিকে। গ্ৰেণ হেল পড়ে আছে নিথর হয়েই কিন্তু কিছু একটা অন্যরকম।

    হাত দুটা মমির মত পড়ে নেই দু পাশে। সেগুলো উঠে গেছে মাথার উপর। সেখানে একটা জিনিস ধরা।

    কী ধরা পরীক্ষা করতে গিয়ে পিলে চমকে গেল সুসানের। বেরেটা।

    তাহলে সে অস্ত্রটা রেখে গিয়েছিল কাউচের উপর?

    হেল? হ্যালো?

    কোন জবাব নেই।

    আরো কাছে এসে বাকি ব্যাপারটা বুঝল সুসান। হেলের মাথার চারপাশে কালচে কী যেন। আর মাথায় একটা গর্ত।

    রক্তে ভেসে গেছে নড় থ্রির কার্পেট।

    আতঙ্কে ঠিকরে বেরুতে চায় তার চোখ দুটা। তাকিয়ে থাকে সে হেলের দিকে। সে এ কাজ করবে এমন আশা করাও দুষ্কর। হঠৎ কেন যেন তার মনে পড়ল গ্রেগ হেল কখনো আত্মহত্যা করতে পারে না।

    এরপরই চোখটা চলে গেল পাশে রাখা একটা নোটের দিকে।

    .

    প্রিয়তম বন্ধুরা, নিচের পাপগুলোর জন্য আমি আজ আমার জীবনহরণ করছি…

    .

    সব কথা আছে সেখানে। নর্থ ডাকোটার না থাকার কথা, এসনেই টানকাড়োকে খুন করার জন্য মার্সেনারি ভাড়া করার কথা, আঙটি চুরি, ফিল চার্ট্রাকিয়ানকে খুনের দায়, ডিজিটাল ফোট্রেস বিক্রি করার দায়।

    এবং সবার শেষে যে কথা লেখা তা বিশ্বাস্য নয়।

    তাকিয়ে থাকে সুসান।

    .

    সর্বোপরি, আমি ডেভিড বেকারের ব্যাপারেও দুঃখিত। ক্ষমা করে দিও আমাকে। ক্ষমতার খোঁজে আমি একেবারে অন্ধ হয়ে গিয়েছিলাম।

    .

    হেলের শরীরের পাশে কাঁপছে সুসান। পিছনে কে যেন এসে দাঁড়াল।

    ওহ মাই গড! বলল গড়নটা, কী হয়েছে?

    অধ্যায় : ৯৩

    কম্যুনিয়ন।

    হুলোহট মুহূর্তে দেখে ফেলে বেকারকে। খাকি ব্লেজারটা মিস করার কোন কারণই নেই। একপাশে রক্তের একটু ছোপ। সে জানে, শিকার ফাঁদে আটকা পড়ে গেছে। হিজ এ ডেড ম্যান!

    হাতের আঙুলে টিপে টিপে তার আমেরিকান কন্ট্যাক্টকে জানাতে চায় সুসংবাদটা। শীঘ্রি। খুব শীঘ্রি।

    সবার সাথে চার্চ ছাড়বে না সে। শিকার একেবারে ফাঁদে পড়ে গেছে। এখন শুধু সাইলেন্সারের উপর ভরসা। এত বেশি শান্ত সাইলেন্সর দুনিয়ায় পাওয়া যাবে না। ভদ্রোচিত একটা কাশি দেয় সেটা। যে কোন শিকারকে যে কোন ভিড়ে নিমিষে হাওয়া করে দেয়া যাবে।

    বেশি আগ্রহে এগিয়ে যায় হুলোহট। কিন্তু সুস্পষ্ট নিয়ম আছে। মাত্র দুটা লাইন।

    নড়ছে এখনো হুলোহট। দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে সামনে। জ্যাকেটের পকেটে রাখা রিভলভারের স্পর্শ নেয় আঙুল ঠেকিয়ে। চলে এসেছে মুহূর্তটা। এ পর্যন্ত ডেভিড বেকার যতটা ভাগ্যের হাতে পড়ে বেঁচে গেছে এতটা আশা করাও অন্যায়।

    খাকি ব্লেজারটা মাত্র দশজন মানুষের সামনে। সামনে মুখ করে আছে। মাথা নামানো।

    পিছনে চলে যাবে সে। তারপর পিছন থেকেই গুলি ছুড়বে দুটা। চট করে এগিয়ে যাবে। ধরবে এভাবে, যেন কোন বন্ধু। নামিয়ে আনবে পিউর উপর। সে ফাঁকে হাতের কাছে চলে যাবে আঙুল। খুলে ফেলবে আঙটি। এমন একটা ভাব করবে, যেন সাহায্যের জন্য বাইরে যাচ্ছে। চলে যাবে। একটুও সন্দেহ করবে না কেউ।

    পাঁচজন… চারজন… তিনজন…

    পকেট থেকে রিভলভারটা বের করল হুলোহট। নামিয়ে রাখছে নিচে। হিপ লেভেল থেকে বেকারের স্পাইনে গুলি করতে পারে। এ পথে হার্টে যাবার আগে লাঙ কিম্বা স্পাইনে আঘাত হানাবে গুলি। যদি হার্ট মিস হয়ে যায় তবুও মারা যাবে বেকার। ফুসফুস মারাত্মকভাবে ক্ষতবিক্ষত হবে। পৃথিবীর অনেক অগ্রসর দেশগুলোয় হয়ত তেমন গুরুতর সমস্যা নয়, কিন্তু স্পেনে, সমস্যা।

    দুজন… এক।

    হুলোইট পৌঁছে গেছে গন্তব্যে। নর্তকের মত ডানে চলে এল সে মুহূর্তে। খাকি ব্লেজারের কাঁধে হাত রাখল। লক্ষস্থির করল… গুলি করল পর পর দুটা।

    মুহূর্তে শরীরটা স্থির হয়ে গেল। এরপর পড়ে যাচ্ছে। হাতের উপর নিয়ে নিল হুলোহট শরীরটাকে। এক মুহূর্তে শরীরটা শুইয়ে দিল পিউর উপরে। চার্চের বেঞ্চ দিয়ে রক্ত চুঁইয়ে নিচে পড়বে। কেউ বুঝতে পারবে না প্রথমে। আশপাশের লোকজন চোখ তুলে তাকাল। কোন নজর নেই হুলোহটের। সে এক মুহূর্তে চলে যেতে পারে।

    লোকটার প্রাণহীন হাত তুলে নিল সে। আঙটিটার খোঁজে হাতড়াচ্ছে। কোন কিছু নেই। আবার হাতড়াল সে। খালি। লোকটাকে রাগে নিজের দিকে সরিয়ে আনে হুলোহট। চেহারাটা ডেভিড বেকারের নয়।

    রাফায়েল ডি লা মাজা, সেভিলের এক ব্যাঙ্কার, মারা গেল সাথে সাথে। এখনো তার হাতে ধরা পঞ্চাশ হাজার পেসেতা ধরা। আমেরিকান লোকটা সস্তা কালো কোটের জন্য দিয়েছিল টাকাটা।

    অধ্যায় : ৯৪

    মিজ মিল্কেন কনফারেন্স রুমের জলরঙের ছবির দিকে অপলক চোখে তাকিয়ে আছে। কোন মরার কাজ করছে ফন্টেইন? পেপার কাপটা তুলে নিল সে। ফেলে দিল ট্র্যাশ ক্যানে।

    ক্রিপ্টোতে কিছু একটা ঘটছে! আই ক্যান ফিল ইট! নিজেকে সত্যি প্রমাণ করার একটা মাত্র পথ বাকি এখন। নিজে চলে যেতে হবে। প্রয়োজনে ডাকা যাবে জাব্বাকে। হিলে শব্দ তুলে চলে গেল সে দরজার কাছে।

    কোত্থেকে যেন হাজির হল ব্রিঙ্কারহফ, যাচ্ছ কোথায়?

    বাসায়।

    পথ করে দিল না ব্রিঙ্কারহফ।

    মিজ তাকাল, ফন্টেইন বলেছে তোমাকে আমি যেন বেরিয়ে যেতে না পারি, তাই না?

    অন্যদিকে তাকায় ব্রিঙ্কারহফ।

    চ্যাড, আমি বলে রাখছি তোমাকে- ক্রিপ্টোতে কিছু একটা ঘটছে। বড় ধরনের কিছু একটা। জানি না কেন ফন্টেইন একেবারে চুপ মেরে আছে, কিন্তু ট্রান্সলেটারের কপাল খারাপ। সেখানে আজ রাতে কিছু একটা ভাল হচ্ছে না?

    মিজ, বলল ব্রিঙ্কারহফ বিজ্ঞের মত, ডিরেক্টরকে ব্যাপারটা হ্যান্ডল করতে দাও।

    তোমার কোন ধারণা আছে ট্রান্সলেটরের কুলিং সিস্টেম নষ্ট হয়ে গেলে কী ঘটবে?

    শ্রাগ করল ব্রিঙ্কারহফ। চলে গেল জানালার দিকে। পাওয়ার যে কোন সময় চলে আসবে।

    সরিয়ে ফেলল পর্দাটা।

    এখনো অন্ধকার?

    কোন জবাব দিল না ব্রিঙ্কারহফ এবারো। একেবারে চুপ মেরে গেছে সে। নিচে আজব এক দৃশ্য দেখেছে। পুরো ক্রিপ্টো: ডোমে এ্যাম্বুলেন্সের মত আলো ঘুরছে। উঠে এসেছে ঘুরন্ত বাষ্প।

    আতঙ্কের একটা শিহরন বয়ে গেল পি এর শরীরে, ছুটল সে সামনে, ডিরেক্টর! ডিরেক্টর!

    অধ্যায় : ৯৫

    দ্য ব্লাড অব ক্রাইস্ট… দ্য কাপ অব স্যালভেশন…

    চার্চের বেঞ্চে পড়ে থাকা দেহটার দিকে ঝুঁকে আসে আশপাশের লোকজন। ঘুরে যায় হুলোহট। সে এখানেই আছে। এখানেই কোথাও আছে। অল্টারের দিকে তাকায় সে।

    ত্রিশ সারি সামনে পবিত্র কমনিয়ন চলছে। বিনা বাধায়। পাদ্রি গুস্থাভে হেরেরা, হেড ক্যাথলিক বেয়ারার, মাঝের দিকের নিরব জটলার দিকে তাকায় অবাক হয়ে। মাঝে মাঝেই বয়েসি লোকেরা দম হারিয়ে বসে পড়ে। কখনো তাদের আরো বিচিত্র সব অবস্থায় পড়তে হয়।

    অন্যদিকে হুলোইট চারদিকে ছড়িয়ে ফেলছে তার দৃষ্টি পাগলের মত। কনিয়নের দিকে চলে গেছে শত লোক। বেকার তাদের মধ্যে আছে কিনা কে জানে! পঞ্চাশ গজ দূর থেকে গুলি করে বসতে আপত্তি নেই তার।

    .

    এল কুয়ের্পো ডি জিসাস। এল প্যান ডেল সিয়েলো।

    বেকারকে কম্যনিয়ন দেয়া তরুণ প্রিস্ট গররাজির একটা দৃষ্টি হানে বেকারের দিকে। লোকটার কষ্যনিয়ন নেয়ার অত্যুগ্র আগ্রহ দেখতে পায় সে, কিন্তু হন্তদন্ত হয়ে এগিয়ে আসার মানে কী!

    মাথা বাউ করে ওয়েফারটা যথা সম্ভব ভালভাবে চিবিয়ে নেয় সে। পিছনে কিছু একটা ঘটছে, বুঝতে পারে। ঘাড় না ঘুরিয়েই আশা করে পোশাক বদলে নেয়া লোকটার উপর কোন দুর্ঘটনা যেন না নেমে আসবে না। আশা করে, খাকি প্যান্টটা দেখা যাবে না জ্যাকেটের জায়গাটুকু ছাড়িয়ে।

    ভুল। দেখা যাচ্ছে। স্পষ্ট।

    লোকজন ওয়াইন গিলে নিয়ে পথ করে দাঁড়াচ্ছে। কোন তাড়া নেই বেকারের। সে দাঁড়িয়ে থাকে স্থির। কিন্তু কনিয়নের জন্য দাঁড়িয়ে আছে দু হাজার মানুষ। প্রিস্ট মাত্র আটজন।

    ___ বেকারের পাশেই, যখন হলোহট ধরে ফেলল খাকি প্যান্টের অস্তিত্ব।

    ___ এয়া মুয়ের্টো! হিসহিস করল লোকটা। তুমি এর মধ্যেই মারা গেছ।

    সেন্টার আইসলের দিকে এগিয়ে আসছে হুলোহট। পিছন থেকে দুটা গুলি। সে আঙটিটা পেয়ে যাবে। ম্যাথিয়ুস গ্যাগোতে সেভিলের সবচে বড় ট্যাক্সি স্ট্যান্ড। মাত্র হাফ ব্লক দূরে।

    হাত বাড়ায় সে অস্ত্রের জন্য।

    এডিয়োস, সিনর বেকার…

    .

    লা স্যাঙ্গে ডি ক্রিপ্টো, লা কোপা ডি লা স্যালভেসিওন।

    রেড ওয়াইনের ভুরভুরে গন্ধ নাকে এসে লাগছে। হাতে পলিশ করা রূপালি চ্যালিসটা নামিয়ে আনছে পাদ্রি হেরেরা। পান করার ক্ষেত্রে একটু আগেভাগেই নেমে পড়লাম দেখছি! ভাবে বেকার। ঝুঁকে আসে সামনে। কিন্তু রূপার গবলেটটা চোখের লেভেলে এসে সরে গেল। নড়াচড়া টের পাওয়া যাচ্ছে। রূপার ঝকঝকে পাত্রে দেখা যায় একটা গড়ন তরিঘরি করে এগিয়ে আসছে সামনে।

    ধাতুর একটা ঝলক দেখা যাচ্ছে। কোন এক অস্ত্র বের করা হয়েছে পিছনে কোথাও। মুহূর্তে সামনে আরো ঝুঁকে পড়ে গেল বেকার এক ধাক্কায়। ছলকে পড়ল মদ। পড়ে গেছে প্রিস্টও। সামনে একটু ছোটাছুটি পড়ে গেল। খক করে কাশল একটা সাইলেন্সর। পড়ে গেল বেকার। পাশেই মার্বেল খসিয়ে দিল বুলেট।

    কী করবে ভেবে নেয়ার সময় নেই। সামনে ছুটল সে। একজন ক্লার্জি বেরিয়ে আসছিল সেখান দিয়ে, সম্ভবত সবাইকে আশীর্বাদ করার জন্য। কোন পরোয়া না করে এগিয়ে গেল সে সেদিকেই। পিছলে গেল মার্বেলের গায়ে। এরপর কাঠের ধাপ।

    ব্যথা। দৌড়াচ্ছে বেকার ড্রেসিং রুম ধরে। জায়গাটা অন্ধকার। আইসল থেকে চিৎকার আসছে। পিছনে সশব্দ পদক্ষেপ। ডাবল ডোর পেরিয়ে কোন এক স্টাডিতে চলে এল সে। পালিশ করা মেহগনিতে সাজানো জায়গাটা। দূরের দেয়ালে বড়সড় ক্রুসিফিক্স ঝুলছে।

    থেমে গেছে বেকার। ডেড এন্ড। ক্রসের কাছে চলে এসেছে সে। হুলোহট এগিয়ে আসছে দ্রুত। শব্দ পায় সে। কুসিফিক্সের দিকে তাকিয়ে নিজের ভাগ্যকে অভিশাপ দেয় বেকার।

    গডড্যাম ইট! চিৎকার করে ওঠে ক্ষোভে।

    বা পাশে হঠাৎ কাঁচ ভাঙার শব্দ পেয়ে চড়কির মত ঘুরে যায় বেকার। লাল রোব পরা এক লোক আতঙ্কিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে বেকারের দিকে। মুখ মুছে নিয়ে হলি কনিয়নের জন্য রাখা মদের ভাঙা বোতলটা লুকানোর চেষ্টা করে পায়ের নিচে।

    সালিডা! চিৎকার করে বেকার, সালিডা! বেরুতে দিন আমাকে।

    কার্ডিনাল গুয়েরা সাথে সাথে ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের কথা শোনে। এক অকল্যানের প্রতিভূ ঢুকে পড়েছে তার পবিত্র স্টাডিতে। এখন বেরিয়ে যেতে চাচ্ছে ঈশ্বরের ঘর থেকে। তাকে বের করে দেয়াই ভাল।

    বা পাশের একটা পর্দার দিকে নির্দেশ করে ফ্যাকাশে কার্ডিনাল। সেই পর্দার পিছনে লুকিয়ে আছে একটা পথ। সে পথটা করে নিয়েছে তিন বছর আগে। বাইরের কান্ট্রিইয়ার্ডে চলে গেছে সেটা। সরাসরি। কার্ডিনাল চার্চের সামনের দরজা। দিয়ে সাধারণ পাপীর মত প্রবেশ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল।

    অধ্যায় : ৯৬

    সুসান কাঁপতে কাঁপতে বসে পড়েছে নড থ্রির একটা চেয়ারে। স্ট্র্যাথমোর তার পরনের কোটটা খুলে গায়ে দিয়ে দিয়েছে। বাইরে বিপদ সঙ্কেতের আলো।

    পুকুরে যেভাবে শব্দ করে বরফ ফেটে যায়, সেভাবে শব্দ করল ট্রান্সলেটারের গা।

    পাওয়ার বন্ধ করে দেয়ার জন্য নিচে যাচ্ছি, বলল স্ট্র্যাথমোর আশ্বস্ত করার ভঙ্গিতে, ফিরে আসব দ্রুত।

    দশ মিনিট আগের লোকটা আর নেই। কমান্ডার ট্রেভর স্ট্র্যাথমোর আবার আগের কাজ ফিরে পেয়েছে। সুস্থির, কর্মব্যস্ত।

    হেলের সুইসাইড নোটের শেষ লাইনগুলো মাথায় নড়ছে সারাক্ষণ। ডেভিড বেকারের ব্যাপারে সে দুঃখিত।

    সুসান ফ্লেচারের দুঃস্বপ্ন শুরু হয়েছে এবার ভালভাবেই। ডেভিড বিপদে আছে… কি ব্যাপারটা আরো গুরুতর। হয়ত তা আরো খারাপ কোন ঘটনায় চলে গেছে।

    ডেভিড বেকারের ব্যাপারে আমি সত্যি সত্যি দুঃখিত।

    নোটের দিকে তাকায় সে। হেল সাইনও করেনি। শুধু শেষে নামটা লিখে দিয়েছে। গ্রেগ হেল। আগে লেখাটা লিখেছে। কমান্ড দিয়েছে প্রিন্টের। তারপর গুলি করেছে নিজেকে। হেল একবার বলেছিল, আর কখনোই জেলে ফিরে যাবে না- প্রতিজ্ঞা রক্ষা করেছে সে অক্ষরে অক্ষরে।

    ডেভিড… ফুঁপিয়ে ওঠে সে, ডেভিড!

    ***

    ঠিক সে মুহূর্তে, ক্রিপ্টো ফ্লোরের দশ ফুট নিচে, কমান্ডার স্ট্র্যাথমোর তার প্রথম ল্যান্ডিং শেষ করেছে। আজকের দিনটা কী অদ্ভুতভাবেই না চলছে! যা করার কথা স্বপ্নেও ভাবেনি সে তেমন সব কাজই করতে হল।

    এটা একটা সমাধান। এটা একমাত্র সমাধান!

    অনেক ব্যাপারে ভাবতে হবে। দেশ এবং সম্মান। কমান্ডার স্ট্র্যাথমোর জানে এখনো সময় ফুরিয়ে যায়নি। এখনো শাট ডাউন করা যাবে ট্রান্সলেটারকে। আঙটিটা ব্যবহার করে সেভ করা যাবে দেশের সবচে দামি ডাটাব্যাঙ্কটাকে। ইয়েস, ভাবে সে, এখনো সময় আছে হাতে।

    চারপাশের বিদ্ধস্ত অবস্থার দিকে তাকায় সে। আলো জ্বলছে, নিভছে। বিচিত্র শব্দ করছে ট্রান্সলেটার। প্রতি পদক্ষেপে সে দেখতে পাচ্ছে তরুণ ক্রিপ্টোগ্রাফার গ্রেগ হেলের অবাক দৃষ্টিটা। তাকিয়ে আছে হেল নিস্পলক। তার জীবন গেছে দেশের স্বার্থে…

    গেছে সম্মানের স্বার্থে।

    এন এস এতে আরো একটা স্ক্যান্ডাল হলে আর রক্ষা ছিল না।

    .

    সেলুলারের আওয়াজে মনোযোগ কেটে গেল স্ট্র্যাথমোরের। সাইরেন আর হিসহিসে বাষ্পের কারণে প্রায় শোনাই যায় না শব্দটা। কে ফোন করেছে না দেখেই সে কথা বলে উঠল।

    স্পিক!

    আমার পাস কি কোথায়? পরিচিত এক কষ্ঠ বলে উঠল।

    হু ইজ দিস? চিৎকার করে উঠল স্ট্র্যাথমোর।

    ইটস নুমাটাকা। পাল্টা হুঙ্কার ছাড়ল অপর প্রান্ত, আপনি আমাকে এটা একটা পাস কি দিবেন বলে ওয়াদা করেছিলেন।

    চলছে স্ট্র্যাথমোর।

    আমি ডিজিটাল ফোট্রেস চাই! হিসহিস করে উঠল নুমাটাকা।

    ডিজিটাল ফোর্ট্রেস বলে কিছু নেই। পাল্টা গুলি চালায় স্ট্র্যাথমোর।

    কী!

    কোন আনব্রেকেবল এ্যালগরিদমের অস্তিত্ব নেই কোথাও।

    অবশ্যই আছে। ইন্টারনেটে দেখেছি আমি! দিনের পর দিন আমার লোকজন এটাকে আনলক করার চেষ্টা করছে!

    এটা একটা এনক্রিপ্টেড ভাইরাস- বোকার হদ্দ! তোমার কপাল ভাল খুলতে পারছ না।

    কিন্তু–

    দ্য ডিল ইজ অফ! চিৎকার করল স্ট্র্যাথমোর, আমি নর্থ ডাকোটা নই! নর্থ ডাকোটা বলে কেউ নেই! ভুলে যাও কেনিকালে বলেছিলাম কথাটা। বন্ধ করে দিল সে সেলুলার ফোনটা। রিঙার অফ করে নামিয়ে রাখল বেল্টে। এরপর আর কেউ বিরক্ত করবে না।

    .

    বিশ হাজার মাইল দূরে, প্লেট গ্লাস উইন্ডোর পাশে অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে টকোগেন নুমাটাকা। উমামি সিগার ঝুলছে ঠোঁট থেকে। চোখের সামনে থেকে ফস্কে গেল জীবনের সবচে বড় ডিলটা।

    .

    নেমে যাচ্ছে স্ট্র্যাথমোর। দ্য ডিল ইজ অফ! নুমাটেক কর্পোরেশন কখনো আনব্রেকেবল এ্যালগরিদম হাতে পাবে না… এন এস এও কখনো পাবে না কোন ব্যাকডোর।

    খুব সাবধানে নুমাটেককে বেছে নিয়েছিল স্ট্র্যাথমোর। নুমাটাকার কপোরেশন কোড বানানোয় প্রথম সারির। লোকটা আমেরিকানদের দু চোখে দেখতে পারে না। পুরনো জাপানি। পৃথিবীর সফটওয়্যারের উপর আমেরিকার কর্তৃত্ব তো দূরের কথা, আমেরিকান পোশাক বা খাবারও তার দু চোখের বিষ।

    .

    স্ট্র্যাথমোর এসব পরিকল্পনার কথা বলতে চায় সুসানকে। কিন্তু সবটা বলা যাবে না। বলা যাবে না টানাডাকে খুন করার কথা। তার জীবন নিয়ে হাজার জীবন রক্ষা করা গেল। সুসান পুরোমাত্রায় মানবতাবাদী। আমিও মানবতাবাদী, ভাবে স্ট্র্যাথমোর, কিন্তু এমন হওয়ার বিলাস করার সুযোগ আমার নেই।

    টানকাডোকে কে মারবে সে ব্যাপারে কোন দ্বিধা ছিল না স্ট্র্যাথমোরে মনে। টানকাড়া স্পেনে আছে। আর স্পেন মানেই হুলোহট। বেয়াল্লিশ বছর বয়েসি পর্তুগিজ মার্সেনারি কমান্ডারে প্রিয় লোকদের একজন। এন এস এর জন্য কাজ করছে সে আজ অনেক বছর। লিসবোনে জন্ম, উত্থান লিসবোনে। সারা ইউরোপ জুড়ে এন এস এর জন্য কাজ করেছে। তার কোন খুনের জের ধরে ফোর্ড মিডোসে আসেনি কোন অভিযোগ। এ এলাকা ধরাছোঁয়ার বাইরে, আরো বাইরে স্ট্র্যাথমোর এবং স্বয়ং হুলোহটও কেমন করে যেন সবকিছুর বাইরে থেকে যায়।

    একটাই সমস্যা, হুলোহট বধির। ফোনে তার সাথে যোগাযোগের কোন ব্যবস্থা নেই। এন এস এর নতুনতম খেলনা দিয়ে সাজিয়ে দিয়েছে তাকে স্ট্র্যাথমোর। মনোকল কম্পিউটার। একটা স্কাই পেজার কিনে সেটাকে সেই ফ্রিকোয়েন্সিতে টিউন করে নিয়েছে। তখন থেকেই হুলোহটের সাথে তার যোগাযোগ শুধু নিশ্চিত নয়, বরং কোনভাবেই সেটার নাগাল পাওয়া যাবে না।

    হুলোহটের কাছে পাঠানো প্রথম মেসেজটায় কিছু ভুল বুঝাবুঝির সুযোগ ছিল। পরে তারা ঠিক করে নিয়েছে। এনসেই টানকাভোকে খুন কর। তুলে নাও পাস কি টা।

    স্ট্র্যাথমোর কখনোই জানে না কী করে জাদুটা ঘটায় হুলোহট। এবারো তাই হল। এনসেই টানকাড়ো মারা গেছে। কর্তৃপক্ষ ব্যাপারটাকে হার্ট এ্যাটাক বলে ধরে নিয়েছে। পাবলিক প্লেসে মারা যাওয়া দরকার ছিল। কিন্তু সাধারণ মানুষ খুব দ্রুত চলে এসেছে। পাস কির জন্য সার্চ না করেই তাকে পালাতে হয়।

    স্ট্র্যাথমোর জানে, শ্রবণশক্তিহীন খুনিকে সেভিল মর্গে পাঠানো আর আত্মহত্যা করা একই ব্যাপার। তার পর পরই এক ঢিলে দুই পাখি শিকারের ব্যাপারটা তার মাথায় আসে। সেদিন ভোরে, ছটা ত্রিশ মিনিটে কল করে সে ডেভিড বেকারকে।

    অধ্যায় : ৯৭

    ফন্টেইন কনফারেন্স রুমে চলে এল বোমার মত। পায়ের পাশে পাশেই আছে। ব্রিঙ্কারহফ আর মিজ।

    দেখুন! জানালার দিকে দেখায় মিজ।

    ফন্টেইন জানালায় চোখ রাখতেই চড়কগাছ হয়ে যায় সেগুলো। এটা অবশ্যই প্ল্যানের অংশ ছিল না।

    ব্রিঙ্কারহফের কথার তালে তালে থুথু ছিটকে পড়ছে আশপাশে, নিচে মরার ডিস্কো শুরু হয়েছে।

    ট্রান্সলেটার গত কয়েক বছরে এ খেলা একবারো দেখায়নি। তেতে উঠেছে মেশিনটা, ভাবে ফন্টেইন। স্ট্র্যাথমোর কেন এখনো বন্ধ করেনি তা ভেবে পায় না সে। মনস্থির করতে এক মুহূর্ত সময় লাগে তার।

    ইন্টারঅফিস ফোনের দিকে হাত চলে যায় তার সাথে সাথে। ক্রিপ্টোর নাম্বার পাঞ্চ করে। এক্সটেনশন ভাল নেই, এটা বোঝনোর জন্য বিপ করতে শুরু করল রিসিভারটা।

    ড্যামইট!

    এবার সে ডায়াল করে স্ট্র্যাথমোরের প্রাইভেট নাম্বারে। বাজছে ফোন। ছটা রিঙ হয়ে গেছে।

    ফোনটাকে ধরে রেখে চেইনে আটকানো বাঘের মত পায়চারি করছে ডিরেক্টর। দেখে ব্রিঙ্কারহফ আর মিজ। এক মিনিট কেটে যাবার পর রাগে লাল হয়ে উঠল ফন্টেইনের চেহারা।

    অবিশ্বাস্য! ক্রিপ্টো ফেটে পড়ছে আর তিনি ফোন তুলছেন না।

    অধ্যায় : ৯৮

    ইলোহট কার্ডিনালের চেম্বার থেকে বেরিয়ে এল আলোতে। তিনদিকে দেয়াল। সামনে তারের বেড়া। সেইসাথে গেটটা খোলা। দূরে সান্তা ক্রুজের গায়ে গা লাগানো ঘরগুলো। না। দূরে যেতে পারেনি সে। আশপাশেই আছে।

    সামনের প্যাটিওটা সেভিলে বিখ্যাত। এখানে বিশটা ফুল ফোঁটা কমলা গাছ। আছে। ইংলিশ অরেঞ্জ মার্মালেড নামে বিখ্যাত এটা। অনেক আগে এক ইংরেজ এখানে এসে চার্চ থেকে বেশ কয়েকটা গাছ কিনে নিয়ে ফলগুলো ইংল্যান্ডে নিয়ে যায়। কিন্তু টক ফল থেকে খাবার হয় না। পাউন্ড পাউন্ড চিনি মিশিয়ে সেটাকে খাবার যোগ্য করে তোলা হয়। সে থেকেই এ কিংবদন্তীর সূত্রপাত।

    বাগানের ভিতর দিয়ে এগিয়ে যায় হুলোহট। হাতের সামনে আধা ভোলা আছে গানটা। গাছগুলো অনেক পুরনো। একই সাথে লম্বা। নিচের ডালটাতেও হাত যাবে না। আর গুঁড়ি এত চিকন যে পিছনে লুকানোর কোন উপায় নেই। সোজা উপরে তাকায় সে। গিরাল্ডার দিকে।

    গিরাল্ডার প্যাচানো সিঁড়ির পথ আগলে আছে দড়ি আর ছোট কাঠের সাইন। চারশো উনিশ ফুট টাওয়ারে চোখ চলে যায় তার। চিন্তাটা বিরক্তিকর। কাঁপছে না রশি। বেকার এত বোকামি করবে না। উপর থেকে নেমে আসার কোন পথ নেই।

    .

    ছোট পাথরের কিউবিকলের উপরে চলে এল ডেভিড বেকার শেষ ধাপটা টপকে। চারধারে উঁচু দেয়াল। বেরুনোর কোন পথ নেই।

    আজ সকালে ভাগ্য যেন বেকারের বিপরীতে।

    অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আসার পরই ধাক্কা খেল সে দুরজার সাথে। ছিঁড়ে গেল জ্যাকেট। কতটুকু পিছনে আছে হুলোহট তার নেই ঠিক। সিদ্ধান্ত নিল, সামনের সিঁড়ি ধরে উঠে যাবে। রশি টপকে যাবার পর উপরে ওঠা শুরু করেই বুঝতে পারল কোথায় যাচ্ছে সে।

    কিন্তু দেরি হয়ে গেছে ততক্ষণে।

    সরু ফাঁকা দিয়ে তাকায় বেকার। ওয়্যার রিমের লোকটা নিচে। অনেক নিচে। তার পিছনটা বেকারের দিকে ফিরানো।

    ব্যথা করছে গুলি লাগা অংশে।

    প্লাজা পেরিয়ে যাও! জোর দিয়ে লোকটাকে যেন বাধ্য করবে সে কাজটা করতে।

    .

    নিচে, মাটিতে টাওয়ারের জান্তব ছায়া পড়ছে। সেখানে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে হুলোহট। আলো আসার চৌকো ছিদ্রগুলোর একটাকে একটু বেকে যেতে দেখেছে সে।

    তাকায়নি উপরে। সোজা ঘুরে রওনা দিয়েছে সিঁড়ির দিকে।

    অধ্যায় : ৯৯

    কনফারেন্স রুমে পায়চারি করতে করতে বাঘের মতই গর্জাচ্ছে ফন্টেইন, এ্যাবোর্ট! গডড্যাম ইট এ্যাবোর্ট!

    ডিরেক্টর, স্ট্র্যাথমোর এ্যাবোর্ট করতে পারবেন না! বলল মিজ।

    কী!

    তিনি চেষ্টা করেছেন, স্যার।

    মানে?

    চারবার। ট্রান্সলেটার কোন এক ধরনের অশেষ লুপে আটকা পড়ে গেছে।

    জিসাস ক্রাইস্ট!

    কনফারেন্স রুমের ফোনটা চিৎকার শুরু করে দিল। হাত ছুড়ছে ডিরেক্টর। অবশ্যই স্ট্র্যাথমোর। সময় মত!

    ফোনটা তুলে নিল ব্ৰিষ্কারহফ, ডিরেক্টরস অফিস।

    অপ্রস্তুত দৃষ্টি বিনিময় করল সে নিজের সাথে।

    জাব্বা। বলল সে, তোমাকে চাচ্ছে। মিজের দিকে তাকিয়ে।

    ডিরেক্টর এর মধ্যেই ফোনের দিকে চলে যাচ্ছিল। ভন্ম কুয়েকে দৃষ্টি হানল সে মিজের দিকে।

    স্পিকার অন করে দিল মিজ।

    গো এ্যাহেড, জাব্বা।

    জাব্বার ধাতব শব্দ কনফারেন্স রুমে বোমা মারল যেন, মিজ! আমি মেইন ডাটাব্যাঙ্কে। এখানে বিচিত্র কিছু ব্যাপার দেখা যাচ্ছে। কে জানে-।

    ড্যামইট, জাব্বা! এবার খেঁকিয়ে উঠল মিজ, এ কথাটাই আমি তোমাকে অনেকক্ষণ আগে থেকেই বোঝানোর চেষ্টা করছি!

    কিছু নাও হতে পারে। আবার-

    কথাটা আর বলো না। এটা কিছু না নয়। যাই ঘটুক না কেন, সিরিয়াসলি নাও। খুব বেশি সিরিয়াসলি। আমার ডাটা ভুল হয়নি। কখনো হয়নি, কখনো হবে না। তাকাল সে একটু সবার দিকেও, জাব্বা, এতে আর অবাক হবার কী আছে? স্ট্র্যাথমোর বাইপাস করেছে গান্টলেটকে।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleসুখীজীবন ও কাজের সন্ধানে – ডেল কার্নেগি
    Next Article ডিসেপশন পয়েন্ট – ড্যান ব্রাউন

    Related Articles

    ড্যান ব্রাউন

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    ড্যান ব্রাউন

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    ড্যান ব্রাউন

    দ্যা লস্ট সিম্বল – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    ড্যান ব্রাউন

    অরিজিন – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    ড্যান ব্রাউন

    ইনফার্নো – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    ড্যান ব্রাউন

    ডিসেপশন পয়েন্ট – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.