Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    ডিজিটাল ফরট্রেস – ড্যান ব্রাউন

    ড্যান ব্রাউন এক পাতা গল্প381 Mins Read0

    ১০০. ধাপ টপকে যাচ্ছে হুলোহট

    অধ্যায় : ১০০

    এক এক বারে তিনটা করে ধাপ টপকে যাচ্ছে হুলোহট। উপরে আছে সে! আটকে গেছে ডেভিড বেকার। ল্যান্ডিঙে একটা করে পাঁচফুটি ক্যান্ডেল স্ট্যান্ড আছে। নিরাপত্তার জন্য ব্যবহার করতে পারে ডেভিড বেকার। হুলোহটের গানের ক্ষমতা তারচে অনেক বেশি।

    এখানে সাবধানে চলতে হবে। আমেরিকান নয়। ট্যুরিস্টরা মরেছে আগেও। মরবে পরেও। কোন সাইন নেই। কোথাও হয়ত হ্যান্ডরেইল নেই, কোথাও ক্ষয়ে যাওয়া ধাপ। এটা স্পেন। তুমি যদি পড়ে যাও, মরবে নিজের দোষে। কে বানিয়েছে, সে চিন্তা করার সময় পাবে না।

    অর্ধেক পথ বাকি।

    উপরের স্টেয়ারকেসটা খালি। ডেভিড বেকার তাকে চ্যালেঞ্জ করেনি। সবদিক দিয়ে সুবিধায় আছে সে। নিচ থেকে যে কোন সময় গুলি করা যাবে। বেকার কিছুতেই পিছনে চলে আসতে পারবে না। উপরের শেষ ধাপটা পেরিয়ে অন্ধকার থেকে আলোয় আসবে সে।

    কিলিং বক্স। হাসে হুলোহট মুখ মুচকে।

    উপরে উঠে এলে যদি দরজার পাশে থাকে বেকার, গুলি খেয়ে বেঘোরে প্রাণটা খোয়াবে। যদি তা না হয়, এগিয়ে যাবে হুলোহট সময় নিয়ে। তারপর আচমকা…

    সাবজেক্ট: ডেভিড বেকার-টার্মিনেটেড

    অবশেষে সময় চলে এসেছে। আবার মুচকি হাসি দেখা দেয় হুলোহটের মুখের কিনারায়। অস্ত্রটা চেক করে নেয় সে।

    উঠে এসেছে হুলোহট। প্রথমেই দরজার পাশ দিয়ে গুলি ছোড়ে। তারপর ছোটখাট হুঙ্কার ছেড়ে চলে আসে ভিতরে। তাকায় চারদিকে। নেই। ডেভিড বেকার মিলিয়ে গেছে হাওয়াতে।

    .

    জার্ডিন ডিলোস নারাপ্পোসের তিনশ পঁচিশ ফুট উপরে, তিন তলা নিচে, ডেভিড বেকার গিরাল্ডার বাইরে ঝুলে আছে। যেন কেউ জানালা ধরে চিন আপে ব্যস্ত। হুলোহট উপরে উঠে আসার সময় বেকার তিন তলা নেমে গিয়ে বাইরে ঝুলে পড়েছে।

    শক্ত ওভারহেড সার্কের জন্য প্রতিদিন বিশ মিনিট কসরৎ করত বেকার। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানায় সে এখন এ ক্ষমতার জন্য। বাইসেপ খুবই শক্তিশালী। শক্তিমত্ত হাত থাকা সত্ত্বেও বেকার এখন নিজেকে টেনে তুলতে পারছে না। জ্বলছে কাধ। একটা পাশ যেন অবশ হয়ে যাবে আস্তে আস্তে। ভাঙা কাঁচের মত যেন ছুটে যাবে হাতটা দেহ থেকে।

    উপর থেকে খুনি নেমে আসবে ঝড়ের বেগে। চোখে পড়বে আঙুল।

    উপর থেকে দ্রুত পদধ্বনি নেমে আসছে। সেইসাথে নেমে আসছে পায়ের মালিকও। এখন অথবা কখনো না। চোখ বন্ধ করে দাঁতমুখ খিঁচিয়ে নিজেকে তোলার চেষ্টা করে সে।

    কব্জির কাছে ছড়ে যাচ্ছে চামড়া। সিসার মত ভারি পা। শরীরের একটা পাশ জখম। এগিয়ে আসছে শব্দ। সমস্ত জোর খাঁটিয়ে নিজেকে তুলে ফেলে বেকার। তারপর আর একটু আসতে বাকি খুনির, এমন সময় ছুটতে শুরু করে নিচের দিকে।

    .

    টের পায় হুলোহট, তার নিচেই কোথাও ছুটে যাচ্ছে বেকার। একটু নেমে এসে দেখতে পায় জানালাটা। দ্যাটস ইট! এক মুহূর্তের জন্য চোখে পড়া নিচের ছুটন্ত অবয়বটা লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে সে।

    স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, সর্বক্ষণ একশো আশি ডিগ্রি নিচে আছে বেকার। একই গতিতে ছুটছে। গুলির নিশানা করা যাবে না এভাবে। দেখাই যাবে না। ভিতরের। দিকে থাকায় বেকারকে পার হতে হচ্ছে বেশি জায়গা। একসাথে চার পাঁচ ধাপ নামতে হচ্ছে তাই।

    সাথে লেগে থাকল হুলোহট। মাত্র একটা গুলির ব্যাপার। জানে সে বেকার তলায় পৌঁছে গেলেও যাবার কোন পথ বাকি থাকবে না। কোথায় দৌড়ারে সে?

    নামছে তারা। সমান তালে। প্রতিবার একটা করে তলা পার হয় আর একবার করে ছায়া দেখা যায় বেকারের। একচোখ ছায়ার দিকে আর এক চোখ সিঁড়ির কোণার দিকে নিবদ্ধ রেখেছে হুলোহট।

    হঠাৎ একটা তলায় বেকারের ছায়া দেখা গেল না। পেয়ে গেছি তাকে!

    এদিকে শেষ হয়ে এসেছে গিরাল্ডার ধাপগুলো। আর মাত্র দু তিন তলা। নেমে আসছে হুলোহট সবেগে। এবং ফাঁদে পড়ে গেল নিমিষেই। দু পায়ের মাঝখানে থাকা লোহার বারটাকে আগে লক্ষ্য করেনি সে। সোজা উড়ে গিয়ে দেয়ালে বাড়ি খেল।

    আগেই ছুটে গেছে অস্ত্রটা।

    মাথায় লাগেনি। বেঁচে গেল। এবং বেঁচে গিয়ে গড়িয়ে নামতে লাগল সিঁড়ি ধরে। পরপর পাঁচবার পূর্ণ তিনশ ষাট ডিগ্রি রোটেশনের পর থেমে গেল সে। আর বারো ধাপ। তার পরই প্যাটিও।

    অধ্যায় : ১০১

    ডেভিড বেকার কখনো হাতে গান তুলে নেয়নি। এই প্রথম। গিরান্ডা সিঁড়ির ধাপে প্যাচানো বিদ্ধস্ত দেহ পড়ে আছে। হুলোহটের দেহ।

    সাবধানে ধরে রেখেছে সে গানটাকে। তাক করে রেখেছে। একটা মাত্র মোচড় খাক শরীরটা, নির্মমভাবে গুলি করবে সে। কিন্তু কোন নড়াচড়া নেই।

    মারা গেছে হুলোহট।

    হাটু গেড়ে বসে পড়ল বেকার। অনেক অনেক বছর পর কেন যেন দু চোখ। ফেটে অশ্রু আসছে। এভাবে বেঁচে যাবার কোন কারণই নেই! এখন আবেগের সময় নয়। গো হোম, বেবি!

    নড়ার চেষ্টা করছে ডেভিড বেকার। শক্তি যেন নিঃশেষিত হয়ে গেছে। পাথরের স্টেয়ারকেসে থামে সে।

    তাকায় সে পড়ে থাকা দেহটার দিকে। কোথায় যেন দৃষ্টি হুলোহটের। চোখ পাকিয়ে আছে সে। চশমাটা কী করে যে ঠিক আছে আল্লা মালুম। চশমা থেকে একটা তার চলে গেছে শার্টের নিচে। কী আছে আর কী নেই সেসব নিয়ে আগ্রহ হারিয়ে গেছে অনেক আগেই।

    প্রথমবারের মত হাতের আঙটিতে চোখ রাখে সে পূর্ণ দৃষ্টি সহ। না। লেখাটা ইংরেজি নয়। এটা জীবনেরচেও দামি?

    * * *

    গিরাল্ডা থেকে বেরিয়ে এসে চোখ ধাঁধানো সূর্যের নিচে চলে এল বেকার। এক মুহূর্ত থমকে দাঁড়ায় সে। ঘ্রাণ নেয় কমলা ফুলের। চলা শুরু করে সামনে।

    চট করে সামনে এসে থামল অদ্ভুত একটা ভ্যান মিলিটারি পোশাকের দুজন নেমে এল সাথে সাথে।

    ডেভিড বেকার?

    কী করে জানে লোকগুলো আমার নাম? হু… হু আর ইউ?

    আমাদের সাথে আসুন, প্লিজ।

    অদ্ভুত চোখে তাকিয়ে আছে সে তাদের দিকে। কেন যেন তার ভাল লাগছে না।

    খাট লোকটা পাথুরে দৃষ্টি হানল তার দিকে, দিস ওয়ে, মিস্টার বেকার। এখনি।

    ঘুরে গেল বেকার। চলে যাবার জন্য। একটা মাত্র পা বাড়াল সে।

    লোকগুলোর মধ্যে একজন সাথে সাথে একটা গান বের করে নিল। গুলি করল বিনা দ্বিধায়।

    বেকারের বুকে অদ্ভুত একটা অনুভূতি। রকেটের মত উঠে এল ব্যথাটা মাথায়। আঙুল শক্ত হয়ে গেছে। পড়ে গেল সে। এক মুহূর্ত পর চারধারে নেমে এল গভীর অমানিশা।

    অধ্যায় : ১০২

    স্ট্র্যাথমোর এগিয়ে গেল ট্রান্সলেটারের দিকে। কোত্থেকে যেন ফোঁটা ফোঁটা পানি পড়ছে। পাশেই দানবীয় কম্পিউটারটা গর্জাচ্ছে। গর্জে উঠছে কানে তালা লাগিয়ে দেয়া সাইরেনের আওয়াজ।

    নিচে, মেইন জেনারেটরের উপর পড়ে আছে ফিল চার্ট্রাকিয়ান। যেন হ্যালোইনের কোন বীভৎস দৃশ্য।

    কিছু করার ছিল না স্ট্র্যাথমোরের। এগিয়ে আসে চার্ট্রাকিয়ান। তখন নিচেই ছিল সে। সরু পথ ধরে পাগলের মত চিৎকার করছে, ভাইরাস! ভাইরাস আছে এখানে একটা!

    পথ আগলে দাঁড়ায় ট্র্যাথোর। কিন্তু কোন বাধা মানবে না সিস-সেক। ধ্বস্ত ধ্বিস্তি শুরু হয়। কোন পথ নেই কমান্ডারের সামনে। কাজটা করতেই হয় তাকে।

    একটু চিৎকার। তারপর পড়ে যায় সে নিচে। ফিল চার্ট্রাকিয়ান। পড়ে যায় জেনারেটরের উঁচু লোহার বারের উপর।

    ঠিক তখনি স্ট্র্যাথমোর অবাক হয়ে দেখে বিস্ফারিত নেত্রে তাকিয়ে আছে গ্রেগ হেল উপর থেকে। তখনি জানা হয়ে যায় স্ট্র্যাথমোরের, মারা যেতে হবে হেলকে।

    বাস্তবে ফিরে এল সে। ফ্রেয়ন পাম্পের অন্য পাশে সার্কিট ব্রেকার। শুধু লিভারটা চেপে দিতে হবে। প্রাণ হারাবে বাকি পাওয়ার। এরপর মূল জেনারেটর চালু করার পালা। আলো বাতাস ফিরে আসবে। আবার ফ্রেয়ন কুলিং সিস্টেম প্রাণ ফিরে পাবে।

    কিন্তু সমস্যা একটাই। শরীরটা সরাতে হবে জেনারেটরের উপর থেকে। নয়ত আবার পাওয়ার ফেইলুর হবে।

    নেমে গিয়ে পোড়া অবশিষ্ট শরীর ধরে টানা শুরু করে স্ট্র্যাথমোর। পিচ্ছিল হাতটা। রাবারের মত নরম। এক এক ইঞ্চি করে নেমে আসছে সেটা। আতঙ্ক এসে ভর করে তার উপর। চার্ট্রাকিয়ানের অন্য হাতটার দিকে অবাক হয়ে তাকায় সে। সেটা ভেঙে গেছে কনুই থেকে।

    .

    উপরে বসে আছে সুসান ফ্লেচার। হেলের লাশের পাশে। এত সময় কেন লাগছে জানে না সে। মিনিটের পর মিনিট অতি কষ্টে কেটে যায়। মন থেকে সরাতে পারছে না ডেভিডকে। ডেভিড বেকারের ব্যাপারে আমি সত্যি সত্যি দুঃখিত।

    আর একটু হলেই ছুটে যেত সে ট্র্যাপডোরের দিকে। চলে গেল পাওয়ার।

    অন্ধকারে হারিয়ে গেল মরদেহ। হারিয়ে গেল কম্পিউটারের সামান্য আলো। স্ট্র্যাথমোরের কোটটা জড়িয়ে নেয় সে গায়ে। বসে থাকে।

    অন্ধকার।

    নিরবতা।

    ক্রিপ্টোতে এত নিরবতা কখনোই ছিল না। সব সময় মৃদু গুঞ্জন তুলত নিচের জেনারেটর। সেটা এখন আর নেই।

    চোখ বন্ধ করল সুসান। প্রার্থনা করছে। ঈশ্বর যেন ভালবাসার মানুষটাকে রক্ষা করে।

    সরাসরি মিরাকলে বিশ্বাস করে না সুসানও। কিন্তু কাঁপনটা আসছে কোত্থেকে ভেবে পায় না সে। অলৌকিক সাড়া নয়। স্ট্র্যাথমোরের পকেটের পেজার থেকে। মেসেজ এসেছে তার স্কাইপেজারে।

    .

    ছ তলা নিচে জমাট অন্ধকারকে উপভোগ করছে কমান্ডার ট্রেভর স্ট্র্যাথমোর। হাত থেকে চার্ট্রাকিয়ানের মাংস সরিয়ে ফেলতে ফেলতে ভাবে, আমি একজন বেঁচে যাওয়া মানুষ।

    ডিজিটাল ফোট্রেসের জন্য মনে কোন আফসোস নেই এখন আর। হঠৎ টের পেল সে, জীবনের মূল্য দেশপ্রেম আর সম্মানেরচে বেশি। আমি জীবনটা কাটিয়ে দিয়েছি সম্মান আর দেশের জন্য কিন্তু ভালবাসা? ভালবাসা চলে যাচ্ছে কাছ থেকে। তরুণ প্রফেসর তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিচ্ছে সুসানকে। সে অর্জন করেছে। সে নিরাপত্তা দিয়েছে তাকে। সে এগিয়ে যাবে সুসানের দিকে। জানাবে, প্রমাণ করবে, ভালবাসা সব ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারে।

    সম্মান, দেশ, ভালবাসা- ডেভিড বেকার তিনটার জন্যই প্রাণ হারাচ্ছে।

    অধ্যায় : ১০৩

    __ পথ দিয়ে উঠে এল স্ট্র্যাথমোর এগিয়ে আসছে সুসানের দিকে। তার __ দিকে।

    __ আলোয় ভাসছে ক্রিপ্টো ফ্লোর। অক্সিজেনবাহী রক্তের মত ফ্রেয়ন বয়ে __ লেটারের গায়ে। প্রাণ ফিরে এসেছে সর্বত্র।

    বেঁচে যাওয়া এক মানুষ। নড় থ্রির সামনে দাঁড়ানোর পর হিসহিস করে __ দরজা।

    দাঁড়িয়ে আছে, যেন বৃষ্টিতে ভিজেছে, যেন স্ট্র্যাথমোর ভার্সিটির ছাত্র, সোয়েটারটা ধার দিয়েছে সুসানকে। তরুণ ভাবটা ফিরে এল তার __

    এ মেয়েকে তো সে চিনে না। কোমল ভাবটুকু একেবারে উবে গেছে __ থেকে। শক্ত। শুধু অশ্রু দু চোখে।

    __?

    __রে একটা ফোঁটা ঝরে পড়ল গাল বেয়ে নামতে নামতে।

    ব্যাপার? দাবি করল কমান্ডার।

    __র ধারা বয়ে গেছে হেলের কার্পেটে। থিকথিকে হয়ে গেছে শুকিয়ে __ একবার শরীরটার দিকে। তারপর আবার সুসানের দিকে। জানে সে? __ জানা সম্ভব নয় কখনো!

    __ন? কী ব্যাপার?

    না সুসান।

    উডের ব্যাপারে চিন্তা হচ্ছে?

    __রর ঠোঁটে একটু বাক দেখা দিল।

    __ডের নাম আসার পরই কী যেন হয়ে গেল সুসানের ভিতরে। রক্তে __ত্য। মুখ খুলল কথা বলার জন্য। কোন কথা যোগাল না সেখানে।

    না সরিয়ে ব্লেজার থেকে কাঁপতে কাঁপতে একটা জিনিস বের করল।

    __মোর অবাক হয়ে দেখল বেরেটা তাক করা তার দিকে। কিন্তু সেটা __লের হাতে ধরা। সুসানের হাতের জিনিসটা অন্যরকম।

    মুহূর্তে চিনতে পারল সে জিনিসটাকে।

    ভালবাসার জন্য বোকামি করে ফেলেছে সে এক মুহূর্তে। দিয়ে দিয়েছে স্কাইপেজারটা। পোশাকের সাথে।

    এবার শক্ত হয়ে গেল স্ট্র্যাথমোর।

    সুসানের কাঁপতে থাকা হাত থেকে পড়ে গেল পেজারটা হেলের পায়ের কাছে। এমন দৃষ্টিতে তাকাল সে স্ট্র্যাথমোরের দিকে, যেখানে একই সাথে বিস্ময় আর প্রবল ঘৃণা উপচে পড়ছিল। কখনো এ দৃষ্টির কথা ভুলতে পারবে না সে।

    নড থ্রি ধরে সুসান ফ্লেচার ছুটে গেল তার পাশ দিয়ে।

    কমান্ডার চলে যেতে দিল তাকে। তারপর নিচু হয়ে তুলে নিল পেজারটা। কোন নতুন মেসেজ নেই। সুসান সবগুলোই পড়ে ফেলেছে। লিস্ট ধরে নেমে গেল সে।

    সাবজেক্ট: এনসেই টানকাডো- টার্মিনেটেড
    সাবজেক্ট: পিয়েরে ক্লচার্ডে- টার্মিনেটেড
    সাবজেক্ট: হ্যান্স হুবার- টার্মিনেটেড
    সাবজেক্ট: রোসিও ইভা গ্রানাভা- টার্মিনেটেড

    আতঙ্কের ধারা বয়ে গেল স্ট্র্যাথমোরের শরীরে। আমি ব্যাখ্যা করব! বুঝতে পারবে সে! সম্মান এবং দেশ! কিন্তু লিস্টটা এখনো শেষ হয়ে যায়নি। এমন এক মেসেজ আছে সেখানে যেটাকে কখনোই ব্যাখ্যা করতে পারবে না।

    কাঁপতে কাঁপতে শেষ মেসেজটা পড়ল সে।

    সাবজেক্ট: ডেভিড বেকার- টার্মিনেটেড।

    ঝুলিয়ে দিল মাথাটা কমান্ডার ট্রেভর স্ট্র্যাথমোর।

    তার স্বপ্নের ইতি এখানেই।

    অধ্যায় : ১০৪

    সুসান বেরিয়ে গেল নড থ্রি থেকে।

    সাবজেক্ট: ডেভিড বেকার- টার্মিনেটেড

    যেন স্বপ্নের ঘোরে ক্রিপ্টোর মূল দরজার কাছে চলে গেল সে।

    গ্রেগ হেলের কথা এখনো মাথায় ঘুরছে।

    সুসান! স্ট্র্যাথমোর মেরে ফেলবে আমাকে!

    সুসান! তোমার প্রেমে পড়েছে স্ট্র্যাথমোর!

    কোড দিল সে দরজায়। কোন সাড়া নেই। হয়ত ইলেক্ট্রিক সার্জে মেমোরি চলে গেছে। এখনো ফাঁদে পড়ে আছে সে।

    আচমকা পিছন থেকে একজোড়া হাত জড়িয়ে ধরল তাকে। হেলের মত শক্তিশালী নয়। গা ঘিনঘিন করে উঠল সুসানের।

    সুসান, আমি ব্যাখ্যা করতে পারব সবকিছু।

    সরে যাবার চেষ্টা করল সে।

    আরো দ্রুত আটকে রাখল কমান্ডার।

    চিৎকারের চেষ্টা করল সুসান। কোন আওয়াজ জোগাল না কণ্ঠে। ছুটে যাবার চেষ্টা করল। চেষ্টা করল দৌড় দেয়ার। পিছন থেকে ধরে রাখা হাত দুটার শক্তিও একেবারে কম নয়।

    আমি ভালবাসি তোমাকে ভালবেসেছি সব সময়।

    সুসানের পাকস্থলি উথলে উঠছে সর্বক্ষণ।

    আমার সাথে থাক।

    সুসানের মনে একে একে দৃশ্যগুলো উঠে এল ডেভিডের অনিন্দ্যসুন্দর স্বপ্নভরা সবুজ চোখগুলো, গ্রেগ হেলের রক্তে ভেসে যাওয়া শরীর, ফিল চার্ট্রাকিয়ানের গলা পোড়া শরীর, সব।

    ব্যথা চলে যাবে। ভালবাসবে তুমি আবার।

    কোন কথাই শুনছে না সুসান।

    আমাদের জন্যই করেছি কাজটা। আমরা একে অন্যের জন্য তৈরি হয়ে এসেছি। সুসান! ভালবাসি তোমাকে!

    নিচ থেকে ট্রান্সলেটারের গুমগুমে আওয়াজ উঠে এল। ফ্রেয়ন সময় মত উঠে আসতে পারেনি।

    কমান্ডার ছেড়ে দিল সুসানকে। তাকাল দুই বিলিয়ন ডলারের কম্পিউটারের দিকে।

    নো! মাথা আকড়ে ধরল সে।

    নো!

    ছ তলা রকেটটা কাঁপছে। বজ্রনিনাদ আসা কাঠামোর দিকে এগিয়ে গেল স্ট্র্যাথমোর। ট্রান্সলেটারের টাইটানিয়াম-স্ট্রোনটিয়াম প্রসেসরগুলো এইমাত্র জ্বলে গেছে।

    অধ্যায় : ১০৫

    আগুনের গোলাটা উঠে আসছে। উঠে আসছে তিন মিলিয়ন সিলিকন চিপকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিয়ে। গর্জন করছে জ্বালামুখের মত। ভিতর থেকে দানব বেরিয়ে আসবে যে কোন সময়। আগুনের গোলায় পরিণত হবার জন্য পাগল হয়ে গেছে পৃথিবীর সবচে দামি কম্পিউটারটা।

    .

    আস্তে আস্তে সুসানের দিকে ফিরে তাকায় স্ট্র্যাথমোর। ক্রিপ্টো ডোরের সামনে দাঁড়িয়ে আছে সে। অনড়। অশ্রুতে ভেসে গেছে তার চোখ। দেখাচ্ছে দেবীর মত।

    শিজ এন এ্যাঞ্জেল।

    চলে গেছে সব। বিশ্বাস, ভালবাসা, সম্মান, সব। এত বছরের সমস্ত সাধনা চলে গেছে দূরে। বহুদূরে। সে আর কখনোই সুসান ফ্লেচারকে পাবে না। কখনো না।

    সুসান তাকিয়ে আছে ট্রান্সলেটারের দিকে। জানে, সিরামিকের খোলসে এগিয়ে আসছে রাগে অন্ধ হয়ে যাওয়া আগুনের একটা গোলা। এগিয়ে আসছে তার দিকে। তাদের দিকে। জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিবে সব।

    মাত্র কয়েক মুহূর্ত। ক্রিপ্টো ডোম পরিণত হবে আগ্নেয়গিরিতে।

    মন ছুটতে বলছে। পা স্থবির। ডেভিডের শরীরের ভার যেন সেখানে। মনের কোন গহীন থেকে যেন উঠে আসছে তার কষ্ট।

    পালাও, সুসান। পালাও।

    কিন্তু সুসান জানে, পালানোর কোন পথ নেই। আগ্নেয়গিরির মতই বন্ধ জ্বালামুখে পড়ে আছে সে। এখন আর ভয় নেই। মৃত্যু নিভিয়ে দিবে সব জ্বালা।

    কাঁপছে ক্রিপ্টোর শক্তিশালী ভিত। যেন ভিতর থেকে উঠে আসবে বিকটদর্শন কোন সাগরদাননা। উঠে আসবে অনেক অনেক গভীর থেকে। ডেভিডের কণ্ঠ এখনো হাল ছেড়ে দেয়নি।

    পালাও, সুসান! পালাও!

    স্ট্র্যাথমোর এগিয়ে আসছে তার দিকে। লোকটাকে অচেনা লাগে কেন? ধূসর চোখজোড়া কি মৃত? মনের ভিতরে জেগে থাকা দেশপ্রেমিকের মৃত্যু হয়েছে অনেক আগেই, সেই বীরের কোন অস্তিত্ব নেই। এখন শুধুই ঘৃণ্য এক খুনি সে।

    এগিয়ে এসেছে তার হাতজোড়া। নোংরা নাকি এগুলো? ঘিনঘিন করে উঠল সুসানের গা।

    ফরগিভ মি, চট করে মুখ নামাল লোকটা সুসানের গালে। টানছে এখনো।

    যেন কোন মিসাইল উঠে যাবে এখন, এভাবে কাঁপছে ট্রান্সলেটার। কাঁপছে পুরো ক্রিপ্টো। আরো জোরে জাপ্টে ধরল স্ট্র্যাথমোর তাকে। আমাকে ধর, সুসান। খুব প্রয়োজন তোমাকে!

    ভালবাসি তোমাকে! ভালবাসি তোমাকে! অন্য একটা কণ্ঠ চিৎকার করছে ভিতরে ভিতরে। গুমরে মরছে।

    সেটাই মুহূর্তে জ্যান্ত করে তুলল সুসানকে।

    উপরে উঠে এসেছে অপ্রতিরোধ্য আগুন। যে কোন সময় জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিবে পুরো এলাকা। ছুটতে শুরু করে সুসান সিঁড়ি ধরে। স্ট্র্যাথমোরের ক্যাটওয়াক ধরে। পিছনে আরো বিকট শব্দ তুলছে ট্রান্সলেটার।

    মুহূর্তে সিলো খাপে উঠে এল আগুন। এক পলক। শতছিন্ন করে দিল পুরো আবরণটাকে। ত্রিশ ফুট পর্যন্ত ছড়িয়ে গেল টুকরাগুলো। ক্রিপ্টোর অক্সিজেনে ভরা বাতাস ধেয়ে গেল ভ্যাকয়ামের দিকে।

    ব্যানিস্টারটা ধরে আছে সুসান উপরের ল্যান্ডিঙে গিয়ে যখন বাতাসের তীব্র ঝটকা আঘাত করল তাকে।

    সুসান দেখতে পায়, ট্রান্সলেটারের পাশে দাঁড়িয়ে আছে ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সির ডাকসাইটে ডেপুটি ডিরেক্টর অব অপারেশন কমান্ডার ট্রেভর স্ট্র্যাথমোর। তাকিয়ে আছে তার দিকে। শূণ্য দৃষ্টিতে। তার চারপাশে তৈরি হচ্ছে ঝড়। মুখ খুলল সে। অস্ফুটে শেষ শব্দটা উচ্চারণ করল, সুসান।

    বাতাসের স্পর্শে জ্বলে উঠল ট্রান্সলেটারের মুখ। আলোর তীব্র একটা ঝলকের সাথে সাথে কমান্ডার স্ট্র্যাথমোর মানুষ থেকে ইতিহাসে পরিণত হল।

    বিস্ফোরণটা সুসানকে আঘাত করার সাথে সাথে স্ট্র্যাথমোরের অফিসের ভিতরে পনের ফুট দূরে ছিটকে পড়ল সে। শুধু অসহ্য তাপের কথাই মনে আছে তার।

    অধ্যায় : ১০৬

    ডিরেক্টরের কনফারেন্স রুমের অফিসে, ক্রিপ্টো ডোমের অনেক উপরে, তিনটা মুখ দেখা দিল। রুদ্ধশ্বাস। বিস্ফোরণটা পুরো এন এস এ কমপ্লেক্সকে কাঁপিয়ে দিয়েছে সাথে সাথে। লেল্যান্ড ফন্টেইন, চ্যাড ব্রিঙ্কারহফ, মিজ মিল্কেন- তিনজনেই নিখাদ বিস্ময় নিয়ে অপলক তাকিয়ে থাকে।

    শত্তুর ফুট নিচে, জ্বলজ্বল করছে ক্রিপ্টো ডোম। পলিকার্বনেট কাঁচের দেয়াল এখনো অটুট। কিন্তু তার নিচেই লকলক করে উঠল আগুনের একটা দুর্দান্ত শিখা। গম্বুজের ভিতরেই কালো ধোয়া আড়াল করে দিল সমস্ত দৃশ্য।

    তিনজনই নিচে তাকিয়ে আছে নিখাদ বিস্ময় নিয়ে।

    ফন্টেইন তাকিয়ে আছে এখনো। চোখ না ফিরিয়েই কথা বলে উঠল, মিজ, এখনি সেখানে ক্রু নামিয়ে দাও… জলদি।

    স্যুটের অপর প্রান্ত থেকে জ্যান্ত হয়ে উঠল ফন্টেইনের ফোন।

    জাব্বা।

    অধ্যায় : ১০৭

    সুসান জানে না কতটা সময় পেরিয়ে গেছে। গলায় যেন আগুন ধরে গেছে, জেগে উঠল সে। ডেস্কের পিছনে একটা কার্পেটে শুয়ে আছে। ঘরে শুধু অদ্ভুত কমলা রঙের আলো। চারদিকে জ্বলন্ত প্লাস্টিকের গন্ধ। যে ঘরটায় বসে আছে এখন সেটা আর কোন ঘর নেই। পরিণত হয়েছে খোলসে। জ্বলছে পর্দাগুলো। প্লেক্সিগ্নাসের বাইরে শুধু ধোয়া।

    এরপরই পুরোটা মনে পড়ে গেল তার।

    ডেভিড।

    দরজার কাছে চলে এল সে সাথে সাথে। কোত্থেকে যেন শক্তি এসে ভর করেছে শরীরে। বাইরে, ক্যাটওয়াক বলতে কিছু নেই। পঞ্চাশ ফুট নিচে ধাতুর টগবগে অবয়ব দেখা যায়। ক্রিপ্টো ফ্লোরের দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে সুসান। আগুনের সমুদ্র। ট্রান্সলেটারের ভিতর থেকে বলকে বলকে বেরিয়ে আসছে লাভার মত গলিত ধাতু, প্লাস্টিক। ধোয়া উঠছে।

    সুসান চেনে জিনিসটাকে। সিলিকন স্মোক। প্রাণঘাতী বিষ।

    ক্রিপ্টো মারা যাচ্ছে, সেইসাথে আমিও।

    একটা মাত্র পথ খোলা। স্ট্র্যাথমোরের এলিভেটর। কিন্তু সেটার টিকে থাকার কোন কারণ নেই। এ ব্লাস্ট সহ্য করার কথা নয় ইলেক্ট্রনিক সাপ্লাইয়ের।

    কিন্তু সামনে এগিয়ে যেতে যেতেই মনে পড়ে গেল, এটা চলে বাইরের পাওয়ারে।

    জানে সে, এটা তৈরি হয়েছে রিইনফোর্সড কংক্রিট দিয়ে।

    চারধারে ধোয়া। এগিয়ে গেল এলিভেটরের দিকে। গিয়েই দেখতে পেল সেখানে বাটনগুলো অন্ধ হয়ে গেছে।

    বাটনে বারবার চাপ দিয়ে ঘুরে যায় সে দরজার দিকে। এরপর হঠাৎ দেখতে পায় জিনিসটাকে।

    কল বাটন এখনো নষ্ট হয়ে যায়নি। কালো আস্তর পড়েছে শুধু। হাতের ছাপের নিচ থেকে হাল্কা আলো আসছে।

    পাওয়ার আছে!

    চাপ দিল সে। ক্যারিজ এখানেই, দরজার পিছনে আওয়াজ উঠছে। খুলছে না কেন মরার দরজাটা!

    থোয়ার আড়ালে ছোট একটা সেকেন্ডারি প্যাড দেখতে পায় সে। এ থেকে জেড পর্যন্ত বাটন সেটায়।

    সাথে সাথে মনে পড়ে যায় সুসানের। পাসওয়ার্ড!

    .

    স্ট্র্যাথমোর কখনো পাসওয়ার্ড বলেনি তাকে। এগিয়ে আসছে সিলিকনের বাম্প। আচ্ছন্ন হয়ে যাচ্ছে মন।

    মনের গহীন থেকে আবার কথা বলে উঠল ডেভিড।

    পালাও সুসান! পালাও!

    প্যাডের নিচে পাঁচটা খালি ঘর। তার মানে পাঁচ অক্ষরের পাসওয়ার্ড। সম্ভাব্যতা যাচাই করল সুসান। ছাব্বিশের সাথে পাঁচ পাওয়ার। ১১৮৮১৩৭৬টা সম্ভাব্যতা। প্রতি সেকেন্ডে একটা করে আন্দাজ করলেও উনিশ সপ্তাহ লেগে যাবে…

    .

    পড়ে আছে সুসান কি প্যাডের পাশে। তার মনে ঘুরছে কমান্ডারের কথাগুলো। আমি তোমাকে ভালবাসি, সুসান! ভালবেসেছি সব সময়! সুসান! সুসান! সুসান…

    জানে, মারা গেছে লোকটা। তবু তার কষ্ঠ মনের সবখানে ঝড় তুলছে।

    সুসান… সুসান…

    আর তারপরই, এক মুহূর্তে মনে এসে গেল ব্যাপারটা।

    জানে সে।

    তীব্র বিষক্রিয়ায় কাঁপতে কাঁপতে উঠে দাঁড়াল। কি প্যাডে চাপ দিল কয়েকটা অক্ষর।

    এস… ইউ… এস… এ… এন

    এক মুহূর্ত পর, খুলে গেল দরজা।

    অধ্যায় : ১০৮

    দ্রুত নেমে গেল স্ট্র্যাথমোরের এলিভেটর। তাজা বাতাস লাগল সুসানের গায়ে। ভরে উঠল ফুসফুস। সরে যাচ্ছে এবার এলিভেটররূপী যানটা। থেমে গেল এক সমর। খুলে গেল দরজা।

    কাশতে কাশতে সিমেন্টের করিডোরে নেমে এল সুসান ফ্লেচার। নিচু সিলিঙওয়ালা একটা টানেলে আছে সে। দুটা হলুদ লাইন চলে গেছে সামনে। অন্ধকারে।

    আন্ডারগ্রাউন্ড হাইওয়ে…

    সামনে এগোয় সে। দেয়াল ধরে ধরে। পিছনে বন্ধ হয়ে যায় দরজা।

    আবার সুসান পড়ে গেছে নিকষ কালো অন্ধকারে।

    নিরবতা। দেয়ালে মৃদু গুমগুম আওয়াজ।

    আওয়াজটা আস্তে আস্তে প্রকট হয়ে উঠছে।

    আলো আসছে কোত্থেকে যেন। সামনেই কি পথ? দ্রুত ছুটে আসছে আলো। এরপরই বুঝতে পারে সে। শেষরক্ষা করে সরে গিয়ে। তীব্রবেগে পাশ কেটে চলে যায় একটা গাড়ি।

    এবার আবার শব্দটা ওঠে পিছন থেকে। এগিয়ে আসছে গাড়িটা।

    মিস ফ্লেচার! অবাক বিস্ময় ঝরে পড়ছে কণ্ঠ থেকে।

    কার্টের উপরে বসে থাকা পরিচিত অবয়বটার দিকে তাকায় সে।

    জিসাস! ঠিক আছেন তো আপনি? আমরা মনে করেছি বেঁচে নেই!

    শূণ্য দৃষ্টি সুসানের।

    চ্যাড ব্রিঙ্কারহফ। ডিরেক্টরিয়াল পি এ।

    সুসানের মুখে কথা যোগায় না, ট্রান্সলেটার…

    ফরগেট ইট! উঠে পড়ুন।

    .

    অন্ধকার টানেলকে আলোকিত করে দিয়ে এগিয়ে যায় কার্ট।

    মেইন ডাটাব্যাঙ্কে একটা ভাইরাস ঢুকে পড়েছে। বলল ব্রিঙ্কারহফ।

    জানি।

    আমাদের আপনার সহায়তা দরকার।

    স্ট্র্যাথমোর, সে…

    জানি। গান্টলেটকে বাইপাস করেছে।

    আর…খুন করেছে ডেভিডকে।

    ব্রিঙ্কারহফের চেহারা সিরিয়াস, চলে এসেছি, মিস ফ্লেচার। জাস্ট হোল্ড অন।

    .

    হাই স্পিড কেনসিংটন গলফ কার্ট একটা মোড় ঘুরেই থেমে গেল। পাশেই একটা হলওয়ে। হাল্কা আলোয় নেয়ে গেছে জায়গাটা।

    কাম অন। বেরিয়ে যেতে সাহায্য করছে ব্রিঙ্কারহফ।

    নেমে গেছে হলওয়েটা। টাইল বসানো। রেইল ধরে হাল্কা ধোয়ার মধ্যে নেমে যাচ্ছে তারা। বাতাস ঠান্ডা সামনে।

    মাটির আরো গভীরে গিয়ে হলওয়েটা সরু হয়ে যায়। তাদের পিছনে কোথাও শক্ত আওয়াজ তোলে কারো আসার শব্দ। দুজনেই থেমে ঘুরে দাঁড়ায়।

    তাদের দিকে এগিয়ে আসছে বিশাল এক কালো মানুষ। এর আগে কখনো সুসান দেখেনি তাকে। এগিয়ে এসে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সে।

    কে? দাবি করল লোকটা।

    সুসান ফ্লেচার। বলল ব্রিঙ্কারহফ।

    বিশাল লোকটা ধনুকের মত বাকা করে ফেলল ভ্রু।

    আর কমান্ডার?

    মাথা নাড়ল ব্রিঙ্কারহফ।

    কোন কথা বলল না লোকটা। একটু নজর সরিয়েই আবার তাকাল সুসানের দিকে। বাড়িয়ে দিল হাত। লেল্যান্ড ফন্টেইন। বলল সে, আপনি ঠিক আছেন দেখে আনন্দিত।

    তাকিয়ে রইল সুসান। সব সময় জানত একদিন দেখা হবে ডিরেক্টরের সাথে। এভাবে ভাবেনি কখনো।

    আসুন, মিস ফ্লেচার, বলল ডিরেক্টর, যতভাবে সম্ভব সহায়তা চাই আমরা।

    .

    সামনের স্টিলের দেয়ালে একটা কোড লিখল লেল্যান্ড ফন্টেইন। তারপর হাত রাখল ছোট কাঁচের প্যানেলে। আলোর ঝলক। পর মুহূর্তেই সরে গেল বিশাল দেয়াল।

    ক্রিপ্টোরচে গোপন একটা মাত্র চেম্বার আছে এন এস এ তে। সুসান বুঝতে পারে, ঢুকছে সে সেখানে।

    অধ্যায় : ১০৯

    মূল ডাটাব্যাঙ্কের কমান্ড সেন্টারটা দেখতে সিল করা নাসা মিশন কন্ট্রোলের মত। ত্রিশ ফুট বাই চল্লিশ ফুট ভিডিও ওয়ালের দিকে তাক করা আছে ডজনখানেক ওয়ার্কস্টেশন কম্পিউটার। সবগুলোতে ডাটা উঠছে। অনেক টেকনিশিয়ান ছোটাছুটি করছে এখান থেকে সেখানে।

    বিরাট ফ্যাসিলিটির দিতে তাকিয়ে আছে সুসান। দুশ পঞ্চাশ মেট্রিকটন মাটি খোঁড়া হয়েছে এটাকে গড়ন দেয়ার জন্য। চেম্বারটা মাটির দুশ চোদ্দ ফুট গভীরে, এখানে বোমা হামলা বা পারমাণবিক হামলাতেও কিছু হবে না।

    মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে জাব্বা। রাজার মত আদেশ দিচ্ছে সবাইকে। তার পিছনে উজ্জ্বল হয়ে আছে একটা মেসেজ। সুসানের কাছে খুব পরিচিত।

    শুধু সত্যিই এখন আপনাদের বাঁচাতে পারে।
    এন্টার পাস কি—

    পোডিয়ামের দিকে ফন্টেইনকে অনুসরণ করে সুসান। যেন কোন দুঃস্বপ্ন।

    ডিরেক্টরকে আসতে দেখে চোখ তুলল জাব্বা, আমি কারণ ছিল দেখেই গান্টলেট বানিয়েছিলাম।

    গান্টলেট ইজ গন।

    পুরনো খবর, ডিরেক্টর। স্ট্র্যাথমোর কোথায়?

    কমান্ডার স্ট্র্যাথমোর নেই।

    কাব্যিক ন্যায়বিচার।

    মাথা ঠান্ডা রাখ, জাব্বা, আদেশ করল ডিরেক্টর, স্পিড বাড়াও। ভাইরাসটা কতটুকু খারাপ?,

    ভাইরাস? আপনাদের মনে হয় এটা ভাইরাস?

    মাথা ঠান্ডা রাখল ফন্টেইন। কম্পিউটারের ব্যাপারগুলো ঈশ্বরই ভাল জানে।

    এটা কোন ভাইরাস না?

    ভাইরাসের রেপ্লিকেশন স্ট্রিং থাকে। এখানে এমন কিছু নেই।

    সুসান সামনে ঝুঁকে এল।

    তাহলে হচ্ছেটা কী? আমার মনে হয়েছিল কোন ভাইরাসে ধরেছে।

    ব্যাখ্যা করছে জাব্বা, ভাইরাস রেপ্লিকেট করে। ক্লোন তৈরি করে। ইঁদুরেরচে দ্রুত বের করে দেয় বাচ্চা। আপনি চাইলে তাকে ক্রস ব্রিড করতে পারেন, যদি জানা থাকে। দুঃখজনক হলেও সত্যি, এ প্রোগ্রামের সেসব বালাই নেই। এর মনে একটাই চিন্তা। একটাই ফোকাস। আসলে এর উদ্দেশ্য সফল না হলে আত্মহত্যা করবে। ডিজিটাল আত্মহত্যা। তাকায় জাব্বা সবার দিকে, লেডিস এ্যান্ড জেন্টলমেন, কম্পিউটার জগতের আরেক দুধর্ষের সাথে পরিচিত হোন, দ্য ওয়ার্ম।

    ওয়ার্ম? ব্রিঙ্কারহফ বুঝতে পারে না।

    ওয়ার্ম। বলল জাব্বা, কোন জটিলতা নেই। ইট শিট ক্রল। দ্যাটস ইট। খাও, ত্যাগ কর, সামনে এগোও। মৃত্যুময় সরলতা। প্রোগ্রাম অনুযায়ী কাজ। করে।

    ফন্টেইন তাকায় জাব্বার দিকে। সরু চোখে, আর এই ওয়ার্ম কী কাজ করার জন্য প্রোগ্রামড?

    কোন ধারণা নেই। এখন এটা সর্বক্ষণ ছোটাছুটিতে আছে। আক্রমণ করছে আমাদের ডাটার উপর। এরপর এটা যে কোন কাজ করতে পারে। সব ফাইল ডিলিট করে দেয়ার অধিকার রাখে সে, হোয়াইট হাউসের প্রিন্টারে একটা মিকি মাউসের ছবিও প্রিন্ট করতে পারে।

    ফন্টেইনের কষ্ঠ এখনো শিতল, তুমি কি থামাতে পারবে এটাকে?

    আমার কোন ধারণা নেই, তাকায় জাব্বা স্ক্রিনের দিকে, নির্ভর করছে প্রোগ্রামার কতটা খারাপ তার উপর। কেউ কি আমাকে জানাবে এই লেখাটার মানে কী?

    শুধু সত্যিই এখন আপনাদের বাঁচাতে পারে।
    এন্টার পাস কি—

    তাকায় জাব্বা। দেখুন ডিরেক্টর, ব্ল্যাকমেইল। আমি জীবনেও এমন কিছু দেখিনি।

    এটা এনসেই টানকাডোর কাজ। বলল সুসান শান্তভাবে।

    জাব্বার চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল সাথে সাথে টানকাডো?

    সে ট্রান্সলেটারের ব্যাপারে একটা স্বীকারোক্তি চেয়েছিল। এজন্য

    স্বীকারোক্তি? বাধা দিল ব্রিঙ্কারহফ, টানকাডো চায় ট্রান্সলেটারের ব্যাপারটা আমরা স্বীকার করে নিই? কিন্তু দেরি হয়ে গেছে এ এতক্ষণে?

    সুসান আরো কিছু বলতে চাচ্ছিল কিন্তু জাব্বা কথা বলে ওঠে, মনে হচ্ছে টানকাডো একটা কিল কোড বানিয়েছে।

    সবাই ঘুরে গেল।

    কিল কোড? দাবি করল ব্রিঙ্কারহফ।

    নড করছে জাব্বা, পাস কি। ওয়ার্ম নষ্ট করার পাস কি। টানকাছে আমাদের দিবে। আমরা সেটা টাইপ করব। ব্যস।

    ফন্টেইন কথা বলে ওঠে, হাতে সময় কতক্ষণ?

    এক ঘন্টার মত।

    প্রেস কনফারেন্স ডাকার সময় আছে শুধু। রিকমেন্ডেশন–

    রিকমেন্ডেশন? চোখ পাকায় জাব্বা, আপনি এখানে ইয়ে করা বাদ দিয়ে এসব বলছেন?

    ইজি! সাবধান করে দিল ডিরেক্টর।

    ডিরেক্টর, এখন ডাটাব্যাঙ্কের মালিকানা এনসেই টানকাডোর হাতে। সে যা চায় তাই দিয়ে দিন। যদি চায় ট্রান্সলেটারের কথা প্রচার করতে, সি এন এন কে ডাকুন, তারপর খুলে দিন পরনের শর্টস।

    চুপ করে আছে ফন্টেইন।

    কীসের জন্য অপেক্ষা করছেন, ডিরেক্টর? টানকাড়োকে ফোনে ধরুন! হয় কিল কোড় নয়ত মরণ।

    কেউ নড়ল না।

    আপনারা কি হাদারাম? ডাকুন টানকাড়োকে। জানান, ভেঙে পড়েছি আমরা! আমার কাছে এখনি কিল কোডটা হাজির করতে হবে। এখনি! পকেট থেকে সেলুলার বের করে সে, আমাকে নাম্বারটা জানান। দর কষাকষি না করে সব তুলে দিব তার হাতে!

    তড়পানোর কোন দরকার নেই, বলল সুসান, মারা গেছে টানকাড়ো।

    মারা গেছে? জোকের মুখে নুন পড়ল যেন, কুচকে গেল জাব্বা, তাহলে… আমরা… কিল কোড়…।

    তার মানে আমাদের একটা নতুন পথ ধরে এগিয়ে যেতে হবে।বলল ডিরেক্টর।

    জাব্বার চোখে তখনো নগ্ন আতঙ্ক যখন পিছনে কেউ একজন চিৎকার করছে।

    জাব্বা! জাব্বা!

    শোশি কুটা। বিশাল প্রিন্টআউট নিয়ে ছুটে আসছে সে। আতঙ্কে নীল হয়ে গেছে চোখমুখ।

    জাব্বা! ওয়ার্ম! আমি এইমাত্র জানতে পেরেছি এটার কাজের উদ্দেশ্য।

    জাব্বার হাতে তুলে দিল সে কাগজটা, আমি এইমাত্র সিস্টেম ইউটিলিটি প্রোব থেকে বের করলাম! ওয়ার্মের এক্সিকিউট কমান্ড আইসোলেট করেছি। প্রোগ্রামিংয়ের দিকে একবার তাকিয়ে দেখ! দেখ এর পরিকল্পনাটা কী!

    সিস-সেকের হাত থেকে তুলে নিল জিনিসটা জাব্বা।

    তারপর এক মুহূর্ত তাকিয়ে থেকে মুঠি পাকাল হাত।

    ওহ্ জিসাস! টানকাডো… ইউ বাস্টার্ড!

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleসুখীজীবন ও কাজের সন্ধানে – ডেল কার্নেগি
    Next Article ডিসেপশন পয়েন্ট – ড্যান ব্রাউন

    Related Articles

    ড্যান ব্রাউন

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    ড্যান ব্রাউন

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    ড্যান ব্রাউন

    দ্যা লস্ট সিম্বল – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    ড্যান ব্রাউন

    অরিজিন – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    ড্যান ব্রাউন

    ইনফার্নো – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    ড্যান ব্রাউন

    ডিসেপশন পয়েন্ট – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.