Close Menu
এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    What's Hot

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)
    • 📙
    • লেখক
    • শ্রেণী
      • ছোটগল্প
      • ভৌতিক গল্প
      • প্রবন্ধ
      • উপন্যাস
      • রূপকথা
      • প্রেমকাহিনী
      • রহস্যগল্প
      • হাস্যকৌতুক
      • আত্মজীবনী
      • ঐতিহাসিক
      • নাটক
      • নারী বিষয়ক কাহিনী
      • ভ্রমণকাহিনী
      • শিশু সাহিত্য
      • সামাজিক গল্প
      • স্মৃতিকথা
    • কবিতা
    • 🔖
    • লিখুন
    • চলিতভাষার
    • শীর্ষলেখক
      • শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
      • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
      • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
      • সত্যজিৎ রায়
      • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
      • জীবনানন্দ দাশ
      • আশাপূর্ণা দেবী
      • কাজী নজরুল ইসলাম
      • জসীম উদ্দীন
      • তসলিমা নাসরিন
      • তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
      • মহাশ্বেতা দেবী
      • মাইকেল মধুসূদন দত্ত
      • মৈত্রেয়ী দেবী
      • লীলা মজুমদার
      • শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
      • সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
      • সমরেশ মজুমদার
      • হুমায়ুন আহমেদ
    Subscribe
    সাইন ইন
    এক পাতা গল্প বাংলা গল্প | Bangla Golpo | Read Best Bangla Stories @ Ekpatagolpo (Bangla)

    ডিজিটাল ফরট্রেস – ড্যান ব্রাউন

    ড্যান ব্রাউন এক পাতা গল্প381 Mins Read0

    ০৬০. আয়না ঘেরা করিডোর

    অধ্যায় : ৬০

    টু-টোন আয়না ঘেরা করিডোরটা ধরে চলে গেল ড্যান্স ফ্লোরের দিকে। এ জায়গাটা নিরব। পিছন থেকে একজোড়া শক্তিশালী হাত যে তাকে আকড়ে ধরছে, টের পেল টু-টোন।

    এডওয়ার্ডো? হেই, ম্যান, তুমি নাকি? তার পকেটে হাত ঢুকে গেছে। ওয়ালেটের কাছে। এডি? চেষ্টা করে তরুণ পাঙ্ক।

    কোন জবাব নেই।

    আমাকে বিরক্ত করোনা। এক লোক ম্যাগানের খোঁজ করছিল।

    মানুষটা আলতো করে ধরল টু-টোনকে।

    হেই, এডি, ম্যান! কাট ইট আউট! চিৎকার করে ঘুরে দাঁড়ায় সে। আয়নায় দেখতে পায়, গড়নটা আর যারই হোক, তার কোন বন্ধুর নয়।

    লোকটাকে একেবারে পাথুরে দেখায়। নিষ্প্রাণ চোখজোড়া উঁকি দিচ্ছে মোটা কাঁচের ওয়্যার রিম চশমা থেকে। লোকটা আরো জোরে চেপে ধরে তাকে দেয়ালের সাথে। কানের কাছে মুখ নিয়ে এসে বিচিত্র হিসহিসে গলায় প্রশ্ন তোলে, এ্যাডোন্ডে ফিউ? কোথায় গেছে সে?

    পাঙ্ক জমে গেল আতঙ্কে।

    এ্যাডোন্ডে ফিউ? আবার প্রশ্ন তুলল লোকটা, এল আমেরিকানো?

    দ্য… দ্য এয়ারপোর্ট। এ্যারোপুয়ের্টো।

    এ্যারোপুয়ের্টো? টু-টোনের ঠোঁটজোড়ার নড়াচড়া খেয়াল করছে লোকটা ক্ষন দিয়ে।

    নড় করল পাঙ্ক।

    টেনিয়া এল এনিলো? আঙটিটা পেয়েছে?

    আতঙ্কে জমে গিয়ে দ্রুত মাথা নাড়ল টু-টোন। না।

    ভিস্তে এল এনিলো? দেখেছ আঙটিটা?

    থামল টু-টোন। কী জবাব দিবে ভেবে পাচ্ছে না। কোনটা সঠিক হবে?

    ভিস্তে এল এনিলো? আরো চাপ দিল লোকটা।

    হ্যাঁ বোধকভাবে মাথা নাড়ল টু-টোন। দেখেছে সে। আশা একটাই, সততার মূল্যায়ন হবে।

    হয়নি।

    কয়েক সেকেন্ড পর টু-টোন পড়ে গেল ফ্লোরে। ভেঙে গেছে তার ঘাড়।

    অধ্যায় : ৬১

    একটা মেইনফ্রেমের সামনে থামল এসে জাব্বা। মুখে একটা পেইনলাইট, শোল্ডারিং আয়রন হাতে, পেটে গুঁজে রাখা আছে বিশাল ব্লুপ্রিন্ট। সেলুলার ফোনটা জীবিত হয়ে ওঠার ঠিক আগে সে একটা বিকল মাদারবোর্ডে কেরামতি খেলিয়ে নিয়েছিল।

    শিট! কেবলের দঙ্গলে ফোন তুলল সে, জাব্বা হিয়ার।

    জাব্বা, মিজ বলছি।

    এক রাতে দুবার? মানুষ কথা বলা শুরু করেছে তাহলে?

    ক্রিপ্টোতে সমস্যা।

    আমরা আগেই এ নিয়ে কথা বলেছি। মনে আছে না?

    পাওয়ার প্রব্লেম।

    আমি কোন ইলেক্ট্রিশিয়ান নই। ইঞ্জিনিয়ারকে ডাক।

    ডোমটা অন্ধকার হয়ে আছে।

    তুমি নানা ভ্যাজাল দেখতে পাচ্ছ। বাসায় গিয়ে ফ্রেশ একটা ঘুম দাও দেখি!

    পিচকালো। অস্থির হয়ে উঠল মিজ।

    আফসোসের সুরে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে পেলাইটটা নামিয়ে রাখল জাব্বা, মিজ, সবচে বড় কথা, আমরা সেখানে একেবারে আলাদা পাওয়ারের ব্যবস্থা করেছি যেন কোন গন্ডগোল না হয়। এটা কখনোই পিচকালো হবে না। পরের কথা হল, আমি এখন ক্রিপ্টোকে যতটা চিনি তারচে ভালভাবে চেনে স্ট্র্যাথমোর। তাকে কল করছ না কেন?

    কারণ কাজটা তার সাথেই হবে। সে কী যেন লুকাতে চেষ্টা করছে।

    চোখ মটকাল জাব্বা, মিজ, সুইটি, সিরিয়াল কেরল নিয়ে গলদঘর্ম হচ্ছি আমি এখানে। তুমি যদি কোন ডাটা চাও তো আমি কেটে ফেলতে পারি। নাহলে সোজা ইঞ্জিনিয়ারকে কল কর।

    জাব্বা, ব্যাপারটা সিরিয়াস। আমি অনুভব করছি।

    সে অনুভব করছে? ব্যাপারটা তাহলে অফিশিয়াল, ভাবল জাব্বা। মিজের মুড চড়ে গেছে। স্ট্র্যাথমোর উদ্বিগ্ন না হলে আমিও উদ্বিগ্ন নই।

    ক্রিপ্টো ইজ পিচব্ল্যাক, ড্যামইট!

    হয়ত স্ট্র্যাথমোর কোন কাজ করছে।

    জাব্বা! আমি এখানে মশকরা করতে বসিনি!

    ওকে, ওকে! হয়ত কোন জেনারেটর জ্বলে গেছে। এখানকার কাজটা ফুরিয়ে গেলেই ক্রিপ্টোতে একটা ঢু মেরে-

    অক্সিলারি পাওয়ারের খবর কী? যদি একটা জেনারেটর চলে যায় তাহলে অন্য অক্স জেনারেটরগুলো কাজ করছে না কেন? আরো ক্ষেপে উঠছে মিজ।

    জানি না। হয়ত স্ট্র্যাথমোর এখনো ট্রান্সলেটারকে চালু রেখেছে আর তাই সেটা শুষে নিচ্ছে বিকল্প পাওয়ারটুকু।

    তাহলে সে কেন এ্যাবোর্ট করছে না? হয়ত কোন ভাইরাস। আগেইতো তুমি ভাইরাসের কথা বলেছিলে।

    ড্যামইট, মিজ! এবার জাব্বার খেপে ওঠার পালা, আমি আগেই বলেছি ক্রিপ্টোতে কোন ভাইরাস নেই! প্যারানয়েডের মত কথাবার্তা বন্ধ করবে?

    লাইনে অনেকক্ষণ নিরবতা ঝুলে থাকে।

    ওহ, শিট, মিজ, মাফ চাওয়ার ভঙ্গিতে বলল জাব্বা, আমাকে ব্যাখ্যা করতে দাও। প্রথমেই আমরা গান্টলেট দিয়ে কাজ করি। সেখানে কোন ভাইরাস যেতে পারবে না। পরের কথা হল, যদি কোন পাওয়ার সাপ্লাই কাট আউট হয়ে যায় সেটা হার্ডওয়্যারের ব্যাপার। ভাইরাস কখনো একটা ভবনের পাওয়ার নষ্ট করে দিতে পারবে না। তাদের লক্ষ্য ডাটা আর সফটওয়্যার। ক্রিপ্টোতে আর যাই হোক না কেন, ভাইরাসঘটিত কোন সমস্যা নেই।

    নিরবতা।

    মিজ, লাইনে আছ?

    বরফ শিতল গলা মিজের, জাব্বা, আমার করার মত একটা কাজ আছে। কাজটা পালন করার জন্য আমি ধমক খেতে রাজি নই। যখন প্রশ্ন তুলব একটা মাল্টিবিলিয়ন ডলার ফ্যাসিলিটি কেন অন্ধকারে আছে, সাথে সাথে একটা প্রফেশনাল এ্যাপ্রোচ চাইব আমি।

    ইয়েস, ম্যাম।

    হ্যাঁ-নাতেই চলবে। এমন কোন সম্ভাবনা আছে কি, ক্রিপ্টোতে ভাইরাসঘটিত সমস্যা দেখা দিয়েছে?

    মিজ… আমি আগেই বলেছি–

    ইয়েস অর নো। ট্রান্সলেটারে কোন ভাইরাস ধরার সম্ভাবনা আছে?

    না, মিজ। এটা টোটালি ইম্পসিবল।

    থ্যাঙ্ক ইউ।

    হেসে একটু হাল্কা করার চেষ্টা করে হেড সিস-সেক, যদি তুমি মনে কর অ্যাথমোর নিজেই একটা ভাইরাস রাইট করে আমার গান্টলেটকে পাশ কাটিয়ে দিয়েছে তাহলে কথা ভিন্ন।

    অনেকক্ষণ চুপ করে থাকে দুজনেই।

    এবার কথা বলে ওঠার সময় মিজের কণ্ঠটাতে আরো শিতল শোনাচ্ছে, স্ট্র্যাথমোর গান্টলেটকে পাশ কাটাতে পারে?

    দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল জাব্বা, ইট ওয়াজ এ জোক, মিজ।

    কিন্তু জানে সে, অনেক দেরি হয়ে গেছে।

    অধ্যায় : ৬২

    বন্ধ করে দেয়া ট্র্যাপডোরের পাশে বসে কমান্ডার আর সুসান বিতর্কে নেমে গেছে, কী করতে হবে এরপর তা নিয়ে বিতর্ক।

    নিচে ফিল চার্ট্রাকিয়ান মরে পড়ে আছে, যুক্তি দেখায় স্ট্র্যাথমোর, আমি যদি কোন সহায়তার জন্য কল করি তাহলে ক্রিপ্টো সার্কাসে পরিণত হবে।

    তাহলে কী করতে চান আপনি?

    একটু ভাবে স্ট্র্যাথমোর, আমাকে জিজ্ঞেস করোনা কীভাবে ঘটল ব্যাপারটা। তাকায় সে নিচের দিকে। ট্র্যাপডোরের দিকে, কিন্তু বোঝা যাচ্ছে নিচে আটকে রেখেছি নর্থ ডাকোটাকে। দারুণ লাকি ব্যাপার, যদি তুমি প্রশ্ন তোল। আমার যদূর মনে হয় টার্মিনালেই কোথাও লুকিয়ে রেখেছে সে টানকাডোর পাস-কি টা। হয়ত বাসাতেও একটা কপি আছে। যাই করুক না কেন, আটকা পড়ে গেছে সে।

    তাহলে বিল্ডিং সিকিউরিটিকে ডেকে তার বারোটা বাজানো হচ্ছে না কেন?

    এখনই না। স্ট্র্যাথমোর বলল, ট্রান্সলেটারের রানের ব্যাপারগুলো যদি সিস সেকরা দেখার চেষ্টা করে তাহলে আমাদের পুরো এক সেট নতুন সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে। তার আগে ডিজিটাল ফোট্রেসের সমস্ত নমুনা মুছে ফেলতে চাই।

    নড করল সুসান। ভাল পরিকল্পনা। সিকিউরিটি যখন গ্রেগ হেলকে সাবলেভেল থেকে টেনে তুলে চার্ট্রাকিয়ানের ব্যাপারে জেরা করবে তখন সারা পৃথিবীকে ডিজিটাল ফোট্রেসের কথা জানিয়ে দেয়ার হুমকি দিতে পারে। কিন্তু প্রমাণ বলতে কিছু থাকবে না। কমান্ডারের চাল ঠিকই আছে। … :

    অশেষ রান? আনব্রেকেবল এ্যালগরিদম? কী আজেবাজে কথা! হেল কি বার্গফস্কি প্রিন্সিপলের কথা জানে না?

    এখন, এ কাজটা আগে করতে হবে আমাদের পরিকল্পনার ছক করে নিচ্ছে স্ট্র্যাথমোর, টানকাডোর সাথে হেলের সমস্ত সম্পর্কের ব্যাপার ধুয়েমুছে ফেলব আমরা। গান্টলেট বাইপাসিঙের তথ্যগুলোও ধামাচাপা দিব। ধামাচাপা দিব চার্ট্রাকিয়ানের সমস্ত তথ্য। সরিয়ে ফেলব রান মনিটরের রেকর্ডগুলোও। হাপিস হয়ে যাবে ডিজিটাল ফোর্ট্রেস। সেটা কখনোই এখানে ছিল না। আমরা হেলের কপিও লুকিয়ে ফেলব ভিতরে। ডেভিড টানকাডোর কপিটা নিয়ে আসবে।

    ডেভিড! ভাবে সুসান। মাথা থেকে চিন্তাটা সরিয়ে দিতে চায় সে। বর্তমান– সমস্যা নিয়ে ভাবতে চায়।

    সিস-সেক ল্যাবের ব্যাপারগুলো আমি হ্যাঁন্ডেল করছি, বলছে স্ট্র্যাথমোর, সব। আর তুমি দেখবে নড থ্রি। হেলের সমস্ত ই-মেইল ডিলিট করে দাও। সরিয়ে দাও টানকাডো আর ডিজিটাল ফোট্রেসের নাম-নিশানা।

    ওকে। আমি হেলের পুরো ড্রাইভটা ডিলিট করে দিব। রি ফরম্যাট করব সবটুকু।

    না! এমন কাজ আবার করতে যেও না। সেখানে হেলের পাস-কিটা থাকার কথা। আমার সেটা চাই।

    আপনি পাস-কি চান? আমি মনে করলাম পাস-কি ধ্বংস করাই আমাদের মিশন।

    ঠিক তাই। কিন্তু আমার একটা কপি প্রয়োজন। এই মরার ফাইলটা একবার ক্র্যাক করে ওপেন করে তাকাতে চাই টানকাডোর কাজের দিকে।

    সুসান তাকিয়ে থাকে কমান্ডারের দিকে। তার কথা হয়ত ঠিক, কিন্তু এই প্যানডোরার বাক্স খোলাটা ভাল হবে কিনা বোঝে না সে। হয়ত এটা খুবই ইন্টারেস্টিং… তবু! এখন এই বিষাক্ত প্রোগ্রামটা নিজের ভল্টেই আটকা পড়ে আছে। যখনি একবার ডিসাইফার করা হবে… কমান্ডার, আমার মনে হয় এটাকে–

    আই ওয়ান্ট দ্য কি!

    সুসান জানে, ডিজিটাল ফোট্রেসের কথা শোনার পর থেকেই তার মনে একটা মাত্র চিন্তা কাজ করছে- কীভাবে টানকাড়ো লিখল এটা? তাকাল কমান্ডারের দিকে, আপনি কি দেখার পর সাথে সাথে এ্যালগরিদমটাকে ডিলিট করে দিবেন?

    কোন চিহ্নই রাখব না।

    ভ্রুকুটি হানল সুসান। নড থ্রির হার্ডড্রাইভটায় একটা মাত্র পাস কি খুঁজে বের করা আর বিশাল খড়ের গাদায় সুই খোঁজা একই কথা। কম্পিউটার সার্চে কাজ হয় তখনি যখন জানা যায় কী খোঁজা হচ্ছে। কিন্তু ব্যাপারটা অজানা থাকলে হতাশা নেমে আসবে। সুসান আর তার সাথের লোকজুল এক ধরনের সার্চিং শুরু করেছে যার নাম আনকনফার্মিটি সার্চ। পুরো কম্পিউটারের প্রতিটা অক্ষরকে সার্চ করার নির্দেশ দেয়া হয়। সেগুলো নিয়ে তুলনা করা হয় এবং বেমক্কা কিছু চোখে পড়লেই বিপোর্ট দেয়া হয়।

    সুসান জানে, যৌক্তিকভাবেই পাস-কি খুঁজে বের করার দায়িত্ব তাকে দেয়া হবে। দীর্ঘশ্বাস ফেলল সে। সব ঠিকমত চললে সার্চ শেষ করতে আধঘন্টার মত লাগবে।

    তাহলে কাজে নেমে পড়া যাক। কাঁধে একটা হাত রেখে অন্ধকার নড থ্রির দিকে এগিয়ে নিয়ে গেল স্ট্র্যাথমোর।

    মাথার উপরের স্বচ্ছ কাঁচের ভিতর দিয়ে তারাভরা আকাশ উঁকি দেয়। সুসান জানে না সেভিলে বসে সেই একই ধরনের তারা ডেভিডও দেখতে পাচ্ছে কিনা।

    নড থ্রির ভারি কাঁচের দরজার কাছে চলে এসেছে তারা। দীর্ঘশ্বাস গোপন করার কোন চেষ্টা নেই স্ট্র্যাথমোরের। নড থ্রির কি প্যাড অন্ধকার।

    ড্যামইট! বলল সে, নো পাওয়ার। ভুলে গিয়েছিলাম।

    স্লাইডিং ডোরগুলোর দিকে তাকায় স্ট্র্যাথমোর। কাঁচের বিপরীতে হাত দিয়ে চাপ দেয়। চাপ দেয় খুলে ফেলার জন্য। হাতের ঘাম মুছে ফেলে আবার চেষ্টা করে। একটু খুলে যায় দরজাগুলো।

    একটু অগ্রগতি টের পেয়ে হাত লাগায় সুসানও। এক ইঞ্চির মত সরে যায় দরজা। ধরে রাখে তারা। কিন্তু চাপ প্রচন্ড। আবার বন্ধ হয়ে গেল সেটা।

    হোল্ড অন, বলল সুসান, এগিয়ে এল স্ট্র্যাথমারের সামনে, ওকে, ট্রাই নাউ।

    চেষ্টা করল তারা সবটুকু শক্তি নিঙড়ে দিয়ে। ভিতর থেকে নীল আলোর রেখা দেখা যায়। টার্মিনালে এখনো পাওয়ার আছে। ট্রান্সলেটারের কাছে এটা গুরুত্বপূর্ণ, তাই পাওয়ার আছে এখানেও।

    জায়গা বদল করে তারা। মওকামত হাত বসায় স্লাইড ডোরে। আরো প্রবল চাপ দেয় দুজনে। খুলে যাচ্ছে। স্লাইডিঙ ডোরটা খুলে যাচ্ছে আস্তে আস্তে। ইঞ্চি ইঞ্চি করে। ফুটখানেক ফাঁকা করা গেল সেগুলোকে।

    হাল ছেড়ে দিওনা, বলল স্ট্র্যাথমোর, আর মাত্র কয়েক ইঞ্চি।

    ফাকা জায়গাটায় কাধ গলিয়ে দিল সুসান। চাপ দিচ্ছে সমান তালে।

    হালকা শরীরটা ঢুকে গেল ফাঁকে। ঢুকে গেল সুসান। স্ট্র্যাথমোর আর তার যৌথ মিশন শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোন কাজ হবে না, জানে তারা দুজনেই

    ঝপ করে নেমে এল দরজাটা। আর একটু হলেই চিড়েচ্যাপ্টা করে দিত সুসানকে।

    জিসাস! সুসান- ঠিক আছতো?

    ফাইন।

    চারপাশে তাকায় সে। নঙ খ্রি খালি: শুধু কম্পিউটার মনিটরগুলোর আলোয় আলোকিত। ভূতুড়ে একটা ভাব খেলা করছে সর্বত্র। দরজার ফাঁক দিয়ে স্ট্র্যাথমারের দিকে তাকায় সে। নীলচে আলোয় কমান্ডারের চেহারা ভাল দেখাচ্ছে না।

    সুসান, সিস-সেক থেকে ফাইলগুলো ডিলিট করার জন্য আমাকে বিশ মিনিট সময় দাও। সব ফাইল সরানো হলে আমার টার্মিনালে গিয়ে সাথে সাথে ট্রান্সলেটারকে এ্যাবোর্ট করব।

    করলেই ভাল, বলল সুসান ভারি কাঁচের দরজায় চোখ রেখে। জানে সে, ট্রান্সলেটার যে পর্যন্ত অক্স পাওয়ার দখল করে রাখবে সে পর্যন্ত এখানেই বন্দি হয়ে থাকতে হবে। নড থ্রি তে।

    স্ট্র্যাথমোর ছেড়ে দিল দরজাটা। ক্রিপ্টোর অন্ধকারে চলে যাচ্ছে কমান্ডার। পিছনদিকটা দেখতে পায় সুসান।

    অধ্যায় : ৬৩.

    এরিপুয়ের্টো দ্য সেভিলার দিকে নতুন কেনা ঝরঝরে ভেসপা গলা খাকারি দিতে দিতে এগিয়ে যাচ্ছে তাকে পিঠে নিয়ে। চেহারা ফ্যাকাসে। হাতঘড়িতে রাত দুটা বেজে গেছে।

    মূল টার্মিনালের কাছে এসে চলন্ত বাইকটাকে ছেড়েছুঁড়ে নেমে পড়ল সাইডওয়াকে। পেভমেন্টে ধাক্কা খেয়ে হুশ ফিরল যেন বিচিত্র দ্বিচক্র্যানটার। থেমে গেল ওটা রাগে গজরাতে গজরাতে। রিভলভিং ডোরের কাছে এসে থামল বেকার। আর কখনো না। মনে করিয়ে দিল নিজেকে।

    টার্মিনাল ঝকঝকে। মৃদু আলোয় ভাসছে। একজন জেনিটর পরিষ্কার করছে মেঝে। আর কেউ নেই কোথাও। ইবেরিয়া এয়ারলাইন্সের টিকেট এজেন্ট এগিয়ে আসছে কাছে। ব্যাপারটা ভাল ঠেকল না বেকারের কাছে।

    ছুটে এল সে, এল ভুয়েলো এ লোস এস্টাভোস ইউনিডোস?

    আকর্ষণীয় আন্দালুসিয়ান তরুণী ক্ষমা চাওয়ার ভঙ্গিতে তাকাল চোখ তুলে, এ্যাকাবা ডে স্যালির। এইমাত্র আপনি মিস করেছেন।

    বাতাসে ঝুলে রইল কথাটা অনেকক্ষণ।

    আমি মিস করেছি! ঝুলে পড়ল বেকারের কাধ। ফ্লাইটে কোন স্ট্যান্ডবাই রুম ছিল?

    অনেক। প্রায় খালি। কিন্তু কাল সকাল আটটার

    আমার এক বন্ধু যেতে পারল কিনা জানা খুব প্রয়োজন। স্ট্যান্ডবাইয়ে ফ্লাই করার কথা মেয়েটার।

    ভ্রু কোচকায় মেয়েটা, স্যরি, স্যার। আজ রাতে অনেক স্ট্যান্ডবাই প্যাসেঞ্জার ছিল। আমাদের প্রাইভেসি ক্লজ বলে

    খুব জরুরি। আমার শুধু জানতে হবে সে যেতে পারল কিনা। এই সব।

    প্রেমঘটিত মান-অভিমান?

    জানা কি খুব প্রয়োজন?

    নাম কী তার?

    ম্যাগান।

    আপনার মেয়ে বন্ধুর কোন লাস্টনেম আছে?

    ধীরে শ্বাস ছাড়ল বেকার। আছেতো অবশ্যই, আমি জানি না। আসলে পরিস্থিতি অনেক জটিল। আপনি বললেন প্লেনটা প্রায় খালি ছিল, যদি–

    লাস্ট নেম ছাড়া আমি কিছুই করতে পারব না…

    আসলে, থামিয়ে দিল বেকার, আপনি কি সারারাত এখানে ছিলেন?

    নড করল মহিলা, সেভেন টু সেভেন।

    তাহলে আপনি তাকে হয়ত দেখেছেন। একেবারে টিন এজার। পনের-ষোল বছর বয়স হবে। চুল- মুখ থেকে কথাটা বের হয়ে যাবার আগে টের পেল বেকার, ভুল হচ্ছে কোথাও।

    সরু চোখ তুলল মেয়েটা, আপনার লাভারের বয়স পনের বছর?।

    না! বাতাসের জন্য হাসফাস করছে যেন বেকারের গলা, আই মিন… শিট! আপনি যদি আমাকে সহায়তা করতে পারতেন… খুব জরুরি।

    আই অ্যাম স্যরি। ঠান্ডা সুরে বলল এজেন্ট।

    আসলে ব্যাপারটা যেমন মনে হচ্ছে তেমন নয়। আপনি যদি শুধু

    গুড নাইট, স্যার। সামনের মেটাল গ্রেটটা নামিয়ে দিয়ে পিছনের রুমে চলে গেল মহিলা।

    রাগে গরগর করতে করতে আকাশের দিকে তাকায় সে। স্মথ… নিজেকে কষে গাল লাগাতে ইচ্ছা হচ্ছে তার, ভেরি স্মথ… খোলা আবহাওয়ায় তাকায় সে। কেউ নেই কোথাও। মেয়েটা নিশ্চই আঙটি বেচে দিয়ে চলে গেছে। কী করবে আর? গলা চড়াল। তাকাল জেনিটারের দিকে, একটা মেয়েকে দেখেছেন নাকি?

    এহ? মেশিন বন্ধ করে তাকায় বুড়ো লোকটা।

    উনা নিনা? আবার বলল বেকার, পেলো রুজো। আজুল, এ ব্লাঙ্কো। লাল সাদা-নীল চুল।

    হাসল লোকটা। খুবি বাজে শোনাচ্ছে। ফিরে গেল কাজে।

    * * *

    ডেভিড বেকার খালি এয়ারপোর্ট কনকর্সের ভিতরে অসহায়ভাবে দাঁড়িয়ে আছে। কী করতে হবে এরপর সে বিষয়ে বিন্দুমাত্র ধারণা নেই। বিকালটা যেন ভুলে ভরা কোন নাটক। স্ট্র্যাথমোরের কথাগুলো মাথায় বোমা ফাটাচ্ছে, আঙটি পাবার আগে আর ফোন করবেন না। হতাশা মাথাচাড়া দিল। ম্যাগান যদি আঙটিটা বিক্রি করে দিয়ে প্লেনে চড়ে বসে থাকে, তাহলে আর তা পাবার কোন সম্ভাবনাই নেই। কোথায় গেছে কেউ বলতে পারবে না।

    চোখ বন্ধ করে মনোযোগ আনার চেষ্টা করছে বেকার। এরপর কী করতে হবে? এক মুহূর্তে ব্যাপারটা মাথায় চলে আসে। প্রথমেই কোন না কোন রেস্ট রুমে লম্বা ছুটি কাটাতে হবে।

    অধ্যায় : ৬৪

    হালকা আলোয় নড থ্রির নিরবতায় দাঁড়িয়ে আছে সুসান। কাজটা একেবারে সরলঃ হেলের টার্মিনালে ঢোক, কি-টা বের কর, টানকাডোর সাথে তার সমস্ত যোগাযোগের প্রমাণ নষ্ট করে দাও। ডিজিটাল ফোট্রেসের কোন চিহ্ন কোথাও রাখা যাবে না।

    প্যানডোরার বাক্সটা খুলে ফেলা হবে ডিজিটাল ফোট্রেসকে খুললে। এদিকে নর্থ ডাকোটা আটকা পড়েছে। আশা একটাই, ডেভিড যেন ভালয় ভালয় তার মিশন শেষ করে।

    নড থ্রির আরো গভীরে যেতে যেতে মাথা পরিষ্কার করে নিতে চায় সুসান। এই চির পরিচিত পরিবেশেও কী যেন ঠিক নেই। শুধুই আলোর অভাব? কে জানে! দরজার দিকে তাকায় সে। বন্ধ। বিশ মিনিট! আউড়ে নেয় মনে মনে।

    হেলের টার্মিনালে যাবার সময় একটা বিচিত্র গন্ধ পায় সে। নড থ্রিতে এমন কোন গন্ধ থাকার কথা নয়। ডিআয়োনাইজার নষ্ট হয়ে গেছে কিনা কে জানে! গন্ধটা খুবই পরিচিত। কেন যেন অজানা অনুভূতি হচ্ছে। হেলের কথা ভাবছে সে। লোকটা কোন কিছুতে আগুন ধরিয়ে যায়নিতো? ভেন্টের দিকে চোখ তুলে তাকায়। কিন্তু না, গন্ধটা যেন আশপাশ থেকেই আসছে।

    ল্যাটিসের দরজা আর কিচেনেটের দিকে চোখ ফেলে সে। সাথে সাথে চিনতে পারে গন্ধটা। কলোজেন… আর ঘামের গন্ধ।

    সারা গায়ের রোম সরসর করে দাঁড়িয়ে গেল। অন্ধকার থেকে একজোড়া চোখ দেখছে তাকে। আতঙ্কে একেবারে হতবাক হয়ে পড়ে সুসান গ্রেগ হেল সাবলেভেলে বন্দি হয়নি- সে এখানেই আছে। নড় থ্রি তে।

    স্ট্র্যাথমোর ট্র্যাপডোরটা বন্ধ করে দেয়ার আগেই চলে এসেছে এখানে। নিজে নিজেই দরজা খোলার মত শক্তি তার কিলবিলে পেশিতে আছে।

    একবার সুসান শুনেছিল একেবারে নিখাদ আতঙ্ক ভয়ানক, প্যারালাইজড করে দেয় মানুষকে- এখন বুঝতে পারছে সেটা সত্যি নয়। অসাড় হয়ে যায়নি সে। পিছিয়ে যাচ্ছে নিজের অজান্তেই। একটা মাত্র চিন্তা মাথায় এস্কেপ।

    পিছিয়ে যাচ্ছে সুসান। প্রতি মুহূর্তে, একটু একটু করে। পিছনে কী যেন ধাক্কা খেল তার সাথে। একেবারে নিরব ঘরটায় আওয়াজ উঠল প্রচন্ড। চোখ সরায়নি গ্রেগ হেলের উপর থেকে এক মুহূর্তের জন্যও।

    এগিয়ে আসছে লোকটা কিচেনেট ছেড়ে। দু পা ছড়িয়ে বসে ছিল সেখানে আয়েশ করে, চুলার পাশে। এখন তীব্র গতিতে এগিয়ে আসছে।

    হাত ছুড়ল সুসান শূণ্য লক্ষ্য করে। আঘাত করল হেলের গায়ে। কোন কাজ হল না। সে যেন পাথরে হামলে পড়েছিল। আকড়ে ধরল হেল তার হাতজোড়া।

    বাধা দিল সুসান। জোরে মোচড়াতে লাগল শরীর। কীভাবে যেন শরীরের সমস্ত শক্তি একত্র করে ফেলল সে। কনুই দিয়ে জোরে আঘাত করে বসল কার্টিলেজের উপর। থ্যাচ করে শব্দ উঠল একটা। নাক ধরে বসে পড়ল হেল সাথে সাথে।

    সান অফ এ- ব্যথায় চিৎকার করে উঠল সে।

    দরজার সামনের প্রেশার প্যাডে দাঁড়িয়ে মনেপ্রাণে চাচ্ছে সুসান যেন এ মুহূর্তে স্ট্র্যাথমোর পাওয়ার অফ করে দেয় ট্রান্সলেটারের। যেন সে বেরিয়ে যেতে পারে। তার বদলে নিজেকে আবিষ্কার করল দরজার বিপরীতে, আঘাত করছে সেখানে উন্মত্তের মত।

    রক্তে ভেসে যাওয়া নাক নিয়ে হাজির হল হেল। এক মুহূর্তে আবারো জড়িয়ে ফেলল তাকে। একহাত বা স্তনে চলে গেছে, অন্যটা উরুসন্ধিতে। কাঁচ থেকে দূরে সরিয়ে আনা হচ্ছে সুসান ফ্লেচারকে।

    চিৎকার করল সে। হাত-পা ছুঁড়ে চেষ্টা করল নিজেকে সরিয়ে নিতে।

    অবিশ্বাস্য শক্তিতে টেনে আনা হল তাকে। আনা হল হেলের টার্মিনালের পাশে। তারপর সর্বশক্তি একত্র করে ছুঁড়ে দেয়া হল সেখানে। পুরু কার্পেটের কল্যাণে তেমন ব্যথা পেল না সুসান।

    চোখে চোখে তাকায় সে। সেখানে কী একটা যেন আছে। ভয়? রাগ? গ্রেগ হেলের চোখজোড়া খুটিয়ে দেখছে সুসানকে। আতঙ্কের নতুন একটা ধাক্কা লাগল। সুসানের মনে।

    দু পায়ের কাছে চলে এল হেল। চোখ খুটিয়ে দেখছে। আত্মরক্ষার জন্য সুসান যা শিখেছিল তার সবই পালিয়ে যাচ্ছে কোথায় যেন। চেষ্টা করে সে বাধা দেয়ার। কোন সাড়া নেই। অসাড় হয়ে গেছে সুসান ফ্লেচার…

    চোখ বন্ধ করল সে।

    ওই, প্লিজ, গড! নো!

    অধ্যায় : ৬৫

    মিজের অফিসে পায়চারি করছে ব্রিঙ্কারহফ, কেউ গান্টলেট বাইপাস করতে পারবে না, অসম্ভব!

    ভুল, পাল্টা বাক্যবাণ চালায় মিজ, জাব্বার সাথে এইমাত্র আমার কথা হয়েছে। গত বছর সে একটা বাইপাস বানিয়েছিল।

    আমিতো কখনো শুনিনি!

    কেউ শোনেনি।

    মিজ, যুক্তি দেখাতে চায় পিএ, জাব্বা সিকিউরিটির ব্যাপারে খুবি কড়া। সে কখনোই বাইপাসের জন্য কোন সুইচ-,

    স্ট্র্যাথমোর তাকে বাধ্য করেছে। মাঝখানেই কথা বলে উঠল সে।

    ব্রিঙ্কারহফ এখন যেন পড়ে ফেলতে পারছে মিজের মন।

    গত বছরের কথা মনে আছে, প্রশ্ন তোলে সে, যখন স্ট্র্যাথমোর ঐ এন্টি সেমিটিক টেরোরিস্ট রিঙের বিরুদ্ধে লাগল ক্যালিফোর্নিয়ায়?

    নড করল ব্রিঙ্কারহফ। গত বছর এত বড় কাজ খুব কমই করেছে স্ট্র্যাথোর। ট্রান্সলেটারকে ব্যবহার করে সে বড় এক রহস্যের কিনারা করে। লস এ্যাঞ্জেলসের এক হিব্রু স্কুলে হামলার ষড়যন্ত্রের কথা ফাস হয়ে গিয়েছিল তখন। কোডটা ভাঙা হয় বোমা ফাটার মাত্র বারো মিনিট আগে। অন্য কেউ হলে ভেবে পেত না কী করবে, কীভাবে করবে। স্ট্র্যাথমোর ঠান্ডা মাথায় কয়েকটা ফোন করেই বানচাল করে দেয় হামলা। বাঁচায় স্কুলের তিনশ বাচ্চাকে।

    মনে আছে, না? বলল মিজ। জাব্বা বলেছিল আসলে বোমা ফাটার ছ ঘন্টা আগে জানতে পারে স্ট্র্যাথমোর।

    ঝুলে পড়ল ব্রিঙ্কারহফের চোয়াল, তাহলে এতক্ষণ অপেক্ষা করল কেন স্ট্র্যাথমোর…

    কারণ সে, ট্রান্সলেটারকে কাজে লাগাতে পারছিল না। সর্বক্ষণ গান্টলেট অস্বীকার করে যাচ্ছিল। এর মধ্যে এমন সব পাবলিক কি ছিল যেগুলো এর আগে ট্রান্সলেটারে যায়নি। সেগুলো ঠিক করতে জাব্বার পাকা ছ ঘন্টা সময় লাগে।

    একেবারে স্থবির হয়ে পড়েছে যেন ব্রিঙ্কারহফ।

    তাই গান্টলেটের এই বাইপাস।

    জিসাস! তাহলে তোমার কথাটা কী?

    আমার মনে হয় আজকে স্ট্র্যাথমোর গান্টলেটের বাইরে দিয়েই ফাইলটা প্রবেশ করিয়েছিল।

    তো?

    ফাইল নিয়ে আমার কোন আপত্তি নেই। আপত্তি ভাইরাস নিয়ে।

    লাফিয়ে উঠল ব্রিস্কারহফ, ভাইরাস? কে ভাইরাসের ব্যাপারে কথা বলছে?

    এটাই একমাত্র ব্যাখ্যা। শান্ত সুর মিজের, জাব্বা বলেছে ট্রান্সলেটার এতক্ষণ বিজি থাকতে পারে শুধুমাত্র ভাইরাসের কল্যাণে। আর

    এক মিনিট! স্ট্র্যাথমোর বলল তো, সব ঠিকই আছে।

    মিথ্যা কথা বলেছে।

    তুমি বলতে চাও স্ট্র্যাথমোর ইচ্ছা করে একটা ভাইরাস পাস করিয়েছে ট্রান্সলেটারের ভিতরে?

    সে জানেও না।

    চুপ করে থাকে ব্রিঙ্কারহফ।

    এতে অনেক ব্যাপারের ব্যাখ্যা দাঁড়ায়। সারারাত সে কী করছে অফিসে? নিজের কম্পিউটারে ভাইরাস ঢোকাচ্ছে?

    না। শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছে। এখন ট্রান্সলেটারকে এ্যাবোর্ট করে অক্স পাওয়ার নিতে পারছে না সেজন্যই।

    চোখ মটকায় ব্ৰিষ্কারহফ। এর আগেও মিজ আবোলতাবোল বকেছে, কিন্তু আজকের মত নয়। জাব্বার তো কোন মাথাব্যথা নেই!

    জাব্বা আস্ত একটা বোকা, ব্যস।

    ব্রিঙ্কারহফ যেন অবাক হয়ে গেছে। কেউ কখনো জাব্বাকে বোকা বলেছি। শুয়োরের বাচ্চা বলেছে, কিন্তু বোকা? কখনো না।

    জাব্বার এন্টি ইনস্টিভ প্রোগ্রামিংয়ের উঁচু উঁচু ডিগ্রিগুলোর উপর তুমি মেয়েলি সন্দেহ চাপাচ্ছ?

    কড়া দৃষ্টি দিল মিজ। এক দৃষ্টিতেই ভষ্ম করে দিবে যেন।

    আচ্ছা, আচ্ছা, মিজ, শান্ত হও। মানলাম স্ট্র্যাথোর তোমার দু চোখের বিষ–

    এখানে আবার স্ট্র্যাথমোর আসছে কোত্থেকে আমরা শুধু নিশ্চিত হব যে ম্যাথমোর গান্টলেট বাইপাস করেছে, তারপর সোজা কল করব ডিরেক্টরকে।

    তাহলে স্ট্র্যাথমোরকে কল করে জানিয়ে দিব, তাকে একটা লিখিত স্টেটমেন্ট দিতে হবে।

    হতাশ হল মিজ, দেখ, এর মধ্যেই সে একবার মিথ্যা কথা বলে ফেলেছে। ফন্টেইনের অফিসের চাবি আছে তোমার কাছে?

    অবশ্যই। আমি তার পি এ!

    আমার দরকার। চাবিগুলো।

    মিজ, ফন্টেইনের অফিসে তোমাকে ঢুকতে দিব আমি এমন মনে করার কোন কারণ নেই।

    দিতেই হবে। আমি একটা ট্রান্সলেটার কিউ লিস্টের জন্য আবেদন জানাব। স্ট্র্যাথমোর যদি ম্যানুয়ালি গান্টলেটকে বাইপাস করে থাকে তাহলে সাথে সাথে জানা হয়ে যাবে আমাদের।

    এর সাথে মিস্টার ফন্টেইনের অফিসের কী সম্পর্ক?

    কিউ লিস্ট শুধু ফন্টেইনের প্রিন্টারে আসে। ভাল করেই জান তুমি!

    কারণ, এটা ক্লাসিফাইড, মিজ!

    দিস ইজ এন ইমার্জেন্সি! আমি সে লিস্টটা দেখতে চাই।

    মিজ, শান্ত হয়ে বস! তুমি ভাল করেই জান আমার পক্ষে–

    বিগ ব্রাদারের কি বোর্ডে চোখ রাখল মিজ, এখনি একটা কিউ লিস্ট পয়েন্ট করছি। ভিতরে ঢুকে যাব, তুলে আনব প্রিন্টআউটটা, বেরিয়ে আসব। এখন চাবিটা দিয়ে দাও।

    মিজ…

    ঘুরে বসল মিজ, দেখ, ত্রিশ সেকেন্ডের ব্যাপার। এখন, সব ঠিক থাকলে তুমি বগল বাজাতে বাজাতে বাড়ি ফিরে যাবে।

    তুমি ডিরেক্টরের প্রাইভেট স্যুটের ক্লাসিফাইড তথ্য চাচ্ছ। একবার ধরা পড়ে গেলে কী হবে ভেবে দেখতে একবার!

    ডিরেক্টর এখন সাউথ আমেরিকায়।

    স্যরি। পারব না। হাতে হাত ক্রস করে হাটা ধরল ব্রিঙ্কারহফ।

    মিজ পিছনে যেতে যেতে তিরিক্ষি মেজাজে বলল, ও, পারবে না মানে, অবশ্যই পারবে।

    এরপর বিগ ব্রাদারের অপারেট মহিলা তার ভিডিও আর্কাইভের শরনাপন্ন হল।

    .

    নিজের ঘরে চলে গিয়ে ব্রিঙ্কারহফ গজগজ করছে, পারব না। কখনই চাবি দিতে পারব না।

    এমন সময় মিজের ঘর থেকে বিচিত্র কিছু আওয়াজ আসতে লাগল। এগিয়ে গেল সে। শব্দগুলো উত্তেজিত।

    মিজ?

    কোন জবাব নেই।

    যান্ত্রিক কণ্ঠগুলো কেমন যেন পরিচিত। দরজা খুলে দিল সে। ঘরটা একেবারে খালি। মিজের চেয়ারও খালি। শব্দ আসছে উপর থেকে। উপরে তাকিয়েই অসুস্থ বোধ করল ব্রিঙ্কারহফ। একই দৃশ্য বারোটা মনিটরে। যেন কোন দলীয় নৃত্য।

    বসে পড়ল ডিরেক্টরের পি এ।

    চ্যাড?

    শব্দটা আসছে পিছন থেকে। তাকাল সে। দাঁড়িয়ে আছে মিজ।

    চাবিটা, চ্যাড।

    মনিটরের দিকে তাকায় সে। ঢাকার চেষ্টা করে দৃশ্যগুলো। কিন্তু মাথার উপরের দৃশ্যতো আর থামিয়ে রাখা যাবে না! সবখানে সে। কার্মেন হুয়েটার ছোট, মধুতে ভেসে যাওয়া বুকের উপর মুখ রেখে নানা ধরনের আওয়াজ করছে।

    অধ্যায় : ৬৬

    বেকার পথটুকু পেরিয়ে গিয়ে এগিয়ে যায় রেস্টরুমের দিকে। পুরুষদের রেস্টরুমের যাচ্ছেতাই অবস্থা দেখে না পেরে যায় মহিলাদেরটায়।

    হোলা? কোন জবাব নেই।

    আর দ্বিধা না করে ঢুকে পড়ে সে। চিরাচরিত স্প্যানিশ বাথরুম। চৌকো। টাইল বসানো। ইউরিনালের অবস্থা তথৈবচ। নোংরা আঠালো পানি চারধারে। সবখানে ছড়িয়ে আছে সস্তা পেপার টাওয়েল।

    কোথায় সুসান? একা একাই স্টোন ম্যামোরে চলে গেছে? ভাবে সে, কতক্ষণ ধরে পচছি এখানে?

    ইউরিনালে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে মাত্র পজিশন নিয়েছে এমন সময় আওয়াজ এলপিছন থেকে।

    হেই!

    লাফিয়ে উঠল বেকার। প্রাণপণ চেষ্টা করছে জিপারটা লাগিয়ে নিতে।

    আ- আমি, আই আই এ্যাম স্যরি…

    মেয়েটা তাড়া দিল। বয়স সতেরো হবে। সেভেনটিন পত্রিকার মডেলদের মত। সাদা স্লিভলেস ব্লাউজ, পরনের পাজামাটাও সুন্দর।

    কী করছ এখানে?

    আমি… মানে মেন্স টয়লেটটা…

    মেয়েটার চুল লালচে। সুন্দর পরীর মত লাগছে। এগিয়ে গেলে অবাক হয় বেকার।

    হাতে কীসের যেন দাগ।

    মাঝরাতে এয়ারপোর্টের বাথরুমে ড্রাগ নিবে সে এখন। মা-বাবা হয়ত অনেক কষ্টে তাকে একটা ভিসা ক্রেডিট কার্ড যোগাড় করে দিয়েছে।

    ঠিক আছিতো তুমি?

    আমি ঠিকই আছি। বেরোও এখান থেকে।

    নিজেকে শোনায় সে, ডেভিড, ভালয় ভালয় কেটে পড়। কে কী করছে সেসব দেখার সময় না এখন।

    তার মন থেকে সরে গেছে এন এস এ, ডেপুটি ডিরেক্টর বা সেই সোনার আঙটিটা।

    এক্ষুণি!

    নড করল বেকার। হাসল ছোট্ট করে, বি কেয়ারফুল।

    অধ্যায় : ৬৭

    সুসান? চেহারায় চেহারা ঠেকিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে বলল হেল।

    বসে আছে সে। সুসানের দু উরুতে দু পা ঠেকিয়ে। নাক থেকে টপটপ করে ঝরছে রক্ত। গলার পিছনে দলা পাকিয়ে উঠে আসছে বমি। তার বুকে হাত ঠেকিয়ে আছে হেল।

    কোন অনুভূতি নেই তার। সে কি আমাকে স্পর্শ করছে?

    সুসান! চিৎকার করে উঠল হেল কানের কাছে, তুমি আমাকে এখান থেকে বের করে আন!

    বোবার মত তাকিয়ে থাকে সুসান।

    বের করে আন আমাকে! স্ট্র্যাথমোর চার্ট্রাকিয়ানকে খুন করেছে। দেখেছি * আমি!

    কথাগুলোর কোন মানেই যেন নেই সুসানের কাছে। স্ট্র্যাথমোর খুন করেছে চার্ট্রাকিয়ানকে? মিথ্যা কথা বলছে সে।

    স্ট্র্যাথমোর জানে দেখে ফেলেছি আমি! সে আমাকেও ছাড়বে না!

    এক্স মেরিনের ভিতরে ডিভাইড এ্যান্ড কনকয়্যার নীতি দেখতে পাচ্ছে সুসান। আগে বিভক্ত কর, তারপর বাকিটা আপসে আপ চলে আসবে।

    কথা সত্যি! বলল সে চিৎকার করে, সিকিউরিটিকে ডাকতে হবে! তুমিও কম বিপদে নেই!

    একটা বর্ণও বিশ্বাস করছে না সে।

    পায়ের চাপটা কমিয়ে এনেছে হেল। কথা বলার জন্য মুখ খুলছে আবার।

    সে সুযোগ আর পায়নি সে। পায়ে রক্ত চলাচলের অনুভূতি হতেই কী যেন হয়ে গেল সুসানের ভিতরে। সর্বশক্তি দিয়ে উঠিয়ে দিল সে হাঁটুটা উপরের দিকে। গ্রেগ হেলের দু পায়ের ফাঁকে।

    সেখানকার টিস্যু থেতলে যাচ্ছে, টের পায় সে।

    কাটা কলাগাছের মত পড়ে গেল হেল। সাথেসাথে। পড়েই জাভৰ স্বরে গো গোঁ করতে করতে নড়াচড়া শুরু করল।

    একটা মুহূর্ত অপেক্ষা না করে সুসান এগিয়ে যায় সামনের দিকে। গিয়েই বুঝতে পারে, এ দরজা খোলার সাধ্য তার নেই।

    মুহূর্তে বুদ্ধি খেলে যায় মাথায়। সর্বশক্তি দিয়ে মেহগনি কাঠের একটা ভারি রিভলভিং টেবিল টেনে নেয় পিছনে। তারপর একইভাবে ঠেলে আনে সামনে।

    টেবিলের গতি বেড়ে যাচ্ছে প্রতি মুহূর্তে। সুসান জানে না কাঁচটা কতটুকু শক্ত। বুলেটপ্রুফও হতে পারে। সেক্ষেত্রে আর বেরিয়ে যাবার কোন আশা নেই।

    কিন্তু না, আঘাত হানল টেবিলটা। মুহূর্তে লক্ষ হীরার মত কাঁচ ছড়িয়ে পড়ল বাইরে। টেবিলটা এখনো সামনের দিকে চলছে। জোরে। হারিয়ে যাচ্ছে অন্ধকারের আড়ালে।

    একটু ইতস্তত করে সে। তাকায় নড় থ্রির অন্ধকারে।

    সেখানে এখনো পড়ে আছে গ্রেগ হেল।

    আর অপেক্ষা না করে বাইরে পা বাড়ায় সে।

    অধ্যায় : ৬৮

    কাজটা খুব সহজ, তাই না? প্রশ্ন তুলল মিজ। ঝিকিয়ে উঠছে তার দাঁতগুলো হাসির দমকে দমকে।

    কোন কথা বলল না ব্রিঙ্কারহফ।

    যাবার আগে ইরেজ করে দিচ্ছি, ওয়াদা করল মিজ, যদি তুমি আর তোমার স্ত্রী প্রাইভেট কালেকশনে রাখতে চাও ভিডিওটা তাহলে অবশ্য অন্য কথা…

    শুধু ড্যাম প্রিন্টআউটটা নাও, তারপর বেরিয়ে এস।

    সি, সিনর। কড়া পুয়ের্টোরিকান এ্যাকসেন্টে বলল মিজ। ফন্টেইনের ডাবল ডোরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে প্রতি মুহূর্তে।

    ডিরেক্টরিয়াল স্যুটের বাকি কামরাগুলোর সাথে মোটেও মিল নেই লেল্যান্ড ফন্টেইনের অফিসঘরটার। কোন গাছপালা নেই, নেই ছবির বালাই বা এ্যান্টিক ঘড়ি। কাঁচে ঘেরা টেবিলের সামনে বিশাল কালো এক চেয়ার। চামড়ায় মোড়া। পিছনে বিশাল পিকচার উইন্ডো। ফ্রেঞ্চ কফিপটের সাথে তিনটা ফাইল কেবিনেটও আছে। চাঁদ উঠেছে ফোর্ট মিডের উপরে।

    প্রাইভেট প্রিন্টারে একটা প্রিন্ট আউট দেখা যাচ্ছে।

    এগিয়ে গিয়ে সাবলীলভাবে মিজ তুলে নিল সেটা। তারপর পড়ার চেষ্টা করল।

    পড়া যাচ্ছে নাতো!

    মিজ, বাইরে গিয়েও পড়তে পারবে।

    আগে দেখে নিই।

    কী দেখে নিবে? এটা ডিরেক্টরের প্রাইভেট কোয়ার্টার। এখানে থাকা যাবে না–

    জানতাম।

    কী?

    আমি জানতাম, স্ট্র্যাথমোর বাইপাস করেছে গান্টলেটকে। দেখ!

    ছুটে গেল ব্রিঙ্কারহফ, হোয়াট দ্যা…?

    লিস্টটায় গত ছত্রিশ কোডের নাম আছে। আছে গান্টলেটের দেয়া একটা করে চার ডিজিটের কোড। সর্বশেষটার পাশে লেখা- ম্যানুয়াল এ্যাবোর্ট।

    জিসাস! অবিশ্বাসে তাকিয়ে থাকে ব্রিঙ্কারহফ, আবারো মিজের কথা সত্যি হল!

    ইডিয়টটা! দেখ এখানে! গান্টলেট দুবার রিজেক্ট করেছে ফাইলটাকে। মিউটেশন স্ট্রিঙ! তার পরও সে কাজটা করল কীভাবে?

    ব্রিঙ্কারহফের হাটু কাঁপছে। সব সময় মহিলা ঠিক ঠিক ব্যাপার ধরে ফেলে কী করে কে জানে!

    তাদের কেউ খেয়াল করেনি ডিরেক্টরের অফিসের খোলা দরজায় দাঁড়িয়ে আছে একটা বিশাল বপু।

    জিজ! মুখ ভেঙচায় ব্রিঙ্কারহফ, তোমার কী মনে হয়? ভাইরাস?

    এছাড়া আর কী হবে?

    তোমাদের কারো মাথাব্যথা নয় সেটা! পিছন থেকে বোমা মারল যেন গম্ভীর একটা কণ্ঠ।

    সাথে সাথে পাথর হয়ে গেল দুজনে।

    সম্বিৎ ফিরতেই পাঁই করে ঘুরল ব্রিঙ্কারহফ। এক নজরেই চিনে নিয়েছে অবয়বটাকে।

    ডিরেক্টর! বাতাস টানতে টানতে বলার চেষ্টা করল ব্রিঙ্কারহফ, ওয়েলকাম হোম, স্যার।

    কোন জবাব দিল না বিশাল অবয়ব।

    আ-আমি মনে করেছিলাম, আমি মনে করেছিলাম আপনি দক্ষিণ আমেরিকায়।

    লেল্যান্ড ফন্টেইন চারধারে তাকায় আরেকবার।

    হ্যাঁ। ছিলাম। এখন এখানেই আছি।

    অধ্যায় : ৬৯

    হেই, মিস্টার!

    একটা খালি পে ফোন বুথের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল বেকার। থমকে দাঁড়ায় সে। তারপর তাকায় পিছনে। সেই মেয়েটা, বাথরুমের মেয়েটা।

    মিস্টার, থামুন!

    এখন আবার কী হল? নিজেকে জিজ্ঞেস করে সে। প্রাইভেসির কথা তুলে বারোটা বাজানোর চেষ্টা করবে নাতো?

    হেই, আপনি আমার পিলে চমকে দিয়েছিলেন! বলল মেয়েটা কাছে এসে।

    আসলে, ভুল জায়গায় ছিলাম আমি।

    আমার কথাটা পাগলাটে শোনাবে, বিন্দুমাত্র ইতস্তত না করেই বলল মেয়েটা, আপনি আমাকে কিছু টাকা ধার দিতে পারেন না?

    কীজন্য? ড্রাগের জন্য নাতো?

    বাড়ি ফেরার জন্য টিকেট দরকার।

    ফ্লাইট মিস করেছ?

    না। টিকেট হারিয়ে ফেলেছি। তারা আমাকে আর উঠতে দিবে না। এয়ারলাইন্সগুলো এত বাজে হয় না! আরেকটা কেনার মত টাকা নেই আমার কাছে।

    তোমার বাবা-মা কোথায়? স্টেটসে।

    তাদের সাথে কথা বলেছ?

    চেষ্টা করেছি। মনে হয় কারো ইয়টে উইকএন্ড কাটাচ্ছে।

    মেয়েটার দামি কাপড়চোপড়ের দিকে তাকায় সে। তোমার কোন ক্রেডিট কার্ড নেই?

    আছে, কিন্তু ড্যাডি বাতিল করে দিয়েছে। মনে করে আমি নেশা করি।

    আসলেই কর?

    অফকোর্স নট! আহত একটা দৃষ্টি ফুটে আছে মেয়েটার চোখেমুখে।

    কাম অন! বলল সে, দেখে মনে হয় ধনী লোক আপনি। আমাকে বাড়ি যাবার জন্য কিছু টাকা ধার দিন, গিয়েই শোধ করে দিব।

    বেকার বুঝতে পারছে যে টাকা দিবে সে তার পুরোটাই গিয়ে পৌঁছবে কোন ড্রাগ ডিলারের কাছে। ট্রিয়ানায়।

    প্রথম কথা হল, আমি কোন ধনী লোক নই। শিক্ষক। আর আমি যা করব তা হল, তোমার নেশার গোষ্ঠি উদ্ধার করব, একটা টিকেট কেটে দিতে পারি তোমার জন্য।

    একেবারে শক পেয়ে যেন থমকে গেল মেয়েটা। কেটে দিবেন? আরো বড় হয়ে গেল তার চোখদুটা, ও গড! বাড়ি ফেরার জন্য একটা টিকিট কেটে দিবেন? থ্যাঙ্ক ইউ।

    বেকারের মুখে কোন কথা যোগাল না। মুহূর্তটাকে ভিন্নভাবে নিয়েছে সে।

    তাকে জাপ্টে ধরেছে মেয়েটা। কী বিশ্রী গ্ৰীষ্মরে বাবা! চোখমুখে আনন্দের অশ্রু, ও, থ্যাঙ্ক ইউ! আমি এখান থেকে বেরিয়ে যেতে পারলেই বাঁচি।

    কোনক্রমে হাতের বাধন আলগা হতেই নিজেকে ছাড়িয়ে নেয় বেকার। তাকিয়ে থাকে হাতের দিকে।

    ও, এটা? প্রশ্ন তোলে মেয়েটা।

    মনে হয় বললে তুমি নেশা কর না।

    আরে, এটা ম্যাজিক মার্কার। এগুলো সরিয়ে দেয়ার জন্য অর্ধেকটা চামড়া তুলেই ফেলেছি। কালির দাগ।

    আরো কাছে চলে যায় বেকারের দৃষ্টি। সেখানে সত্যি সত্যি উল্কির চিহ্ন। একটা সাইনও আছে।

    কিন্তু চোখগুলো এত লাল কেন?

    হেসে ফেলল মেয়েটা। কাঁদছিলামতো! আগেই বলেছি না, ফ্লাইট মিস হয়ে গেছে?

    আবার হাতের দিকে চলে গেল বেকারের দৃষ্টি।

    একটু অপ্রস্তুত ভাব মেয়েটার চোখেমুখে। তুমি পড়তে পারছ লেখাগুলো, তাই না?

    আরো সামনে ঝুঁকে পড়ল সে। পড়তে পারছে। মেসেজটা পানির মত স্বচ্ছ। চারটা হাল্কা ওয়ার্ড পড়েই গত বারো ঘন্টা চলে এল চোখের সামনে।

    আলফানসো তের হোটেলে চলে গেল সে মুহূর্তে। জার্মান লোকটা বলেছিল কথাটা। রোষ কষায়িত নেত্রে। ফক অফ উন্ড ডাই।…

    ঠিক আছতো তুমি? অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে মেয়েটা।

    চোখ সরাল না সে হাত থেকে। হাতের দিকে তাকিয়ে আছে সে। সেখানে মাত্র চারটা শব্দ।

    ফাক অফ এ্যান্ড ডাই।

    ব্লন্ড মেয়েটা তাকায় নিচে। তারপর আরো অপ্রস্তুত হয়ে বলে, এক বন্ধু লিখেছিল… বোকা, তাই না?

    বেকার কোন কথা বলতে পারে না। ফাঁক অফ এ্যান্ড ডাই। ফক অফ উন্ড ডাই। অবিশ্বাস্য! মুহূর্তে পুরো ব্যাপারটা মনে পড়ে যায় তার। জার্মানকে শেষমেষ জিজ্ঞেস করেছিল, আর কিছু জানে কিনা। জার্মান বলেছিল কথাগুলো। সে গালি দেয়নি। কথাগুলো যে আছে সেটা জানানোর চেষ্টা করেছে।

    চোখ তুলে আনে বেকার আস্তে আস্তে। চোখ উঠে আসে মেয়েটার মুখাবয়বে। মাথার ব্লন্ড চুলের মধ্যে এখনো সাদা আর নীলের ছোঁয়া লেগে আছে। ক্ষীণ।

    তু-তুমি… তুমি নিশ্চই কানের দুল পর না?

    অবাক চোখে তাকায় মেয়েটা তার চোখের দিকে। পকেট থেকে একটা ছোট জিনিস বের করে চোখের সামনে ধরে। সেখানে স্কাল পেন্ডেন্টটা ঝুলছে।

    ক্লিপ অন? প্রশ্ন করে সে। হেল, ইয়েস, জবাব দেয় মেয়েটা, আমি কান ছিদ্র করে কোন দুল পরি না।

    1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13
    Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email Reddit VKontakte Telegram WhatsApp Copy Link
    Previous Articleসুখীজীবন ও কাজের সন্ধানে – ডেল কার্নেগি
    Next Article ডিসেপশন পয়েন্ট – ড্যান ব্রাউন

    Related Articles

    ড্যান ব্রাউন

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    ড্যান ব্রাউন

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    ড্যান ব্রাউন

    দ্যা লস্ট সিম্বল – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    ড্যান ব্রাউন

    অরিজিন – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    ড্যান ব্রাউন

    ইনফার্নো – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    ড্যান ব্রাউন

    ডিসেপশন পয়েন্ট – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Add A Comment
    Leave A Reply Cancel Reply

    Demo
    Most Popular

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Demo
    Latest Reviews

    বাংলা গল্প শুনতে ভালোবাসেন? এক পাতার বাংলা গল্পের সাথে হারিয়ে যান গল্পের যাদুতে।  আপনার জন্য নিয়ে এসেছে সেরা কাহিনিগুলি, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে। সহজ ভাষায় এবং চিত্তাকর্ষক উপস্থাপনায়, এই গল্পগুলি আপনাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে। এখানে পাবেন নিত্যনতুন কাহিনির সম্ভার, যা আপনাকে বিনোদিত করবে এবং অনুপ্রাণিত করবে।  শেয়ার করুন এবং বন্ধুদের জানাতে ভুলবেন না।

    Top Posts

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    অনুরাধা

    January 4, 2025

    হর্ষবর্ধনের বাঘ শিকার

    January 4, 2025
    Our Picks

    রবিনসন ক্রুসো – ড্যানিয়েল ডিফো

    August 19, 2025

    দ্য দা ভিঞ্চি কোড – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025

    এঞ্জেলস এন্ড ডেমনস – ড্যান ব্রাউন

    August 19, 2025
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
    • Home
    • Disclaimer
    • Privacy Policy
    • DMCA
    • Contact us
    © 2025 Ek Pata Golpo. Designed by Webliance Pvt Ltd.

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Sign In or Register

    Welcome Back!

    Login below or Register Now.

    Lost password?

    Register Now!

    Already registered? Login.

    A password will be e-mailed to you.